"টিনের চালে কাক...আমি তো অবাক!"
মূল লেখকঃ জনাব আসিফ রহামান জয়
-স্যার, আমাদের দেশের স্মার্ট মেয়েরা ইদানিং 'হাসবেন্ড'কে আহলাদী করে 'হাবী' বলে ডাকছে- ব্যাপারটা কি আপনি লক্ষ্য করেছেন?
রুস্তম আলীকে আমি মোটামুটি এড়িয়ে চলি। এড়িয়ে চলার কারনও আছে। ব্যাটা কিছুদিন পরপর বিদঘুটে সব প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়। সে প্রশ্ন করেই খালাস, আমি হাতড়ে-পাতড়ে এসব বিদ্ঘুটে প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়াই। সে মনে হয় উত্তরের ধার ধারে না, আগের প্রশ্নের উত্তর পাবার আগেই সে আবার নতুন ধরনের বিদঘুটে প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়। কি মুশকিল!
আমি গলা খাকারী দিলাম। রুস্তম আলী সরাসরি আমার আন্ডারে কাজ না করলেও সে আমার বেশ জুনিয়র। ওর ইমিডিয়িট বসের বস আমার কলিগ। স্মার্ট মেয়েরা তাদের 'হাসবেন্ড'কে 'হাবী' বলে ডাকুক আর 'জানু' বলে ডাকুক তা নিয়ে আমার সাথে কথা বলার কি আছে? আর বলবি বল, আমার রুমে এসে বল। লিফটের মধ্যে ছয়জন লোক গায়ে গা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে দুই-তিনজনকে ডিংগিয়ে আমাকে এই প্রশ্ন করার কি মানে? আমি একটু বিরক্ত হয়ে ভুরু কুঁচকে বললাম-
-তাই নাকি?
-জী স্যার। অনেকেই এখন ডাকছে। বিশেষ করে করপোরেট মেয়েরা বেশী বেশী ডাকছে।
থার্ড ফ্লোর। লিফট থেমে গেলো।
আমি লিফট থেকে বের হয়ে আমার রুমের দিকে এগুচ্ছি। আমার পিছন পিছন রুস্তম আলী। আমি রুমের দরজার সামনে এসে দাড়ালাম। রুস্তম আলীর দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বললাম-
-রুস্তম আলী সাহেব।
-জী স্যার।
-আপনার যদি আমাকে কিছু বলার দরকার হয়, তাহলে আমাকে আগে বলে নেবেন-স্যার, আপনার সাথে কথা আছে। অথবা আমার রুমে এসে পারমিশন নিয়ে তারপর কথা বলবেন। হুট করে রাস্তা-ঘাটে, যেখানে-সেখানে আমার সাথে আন-অফিশিয়াল বিদ্ঘুটে কথা-বার্তা বলার চেষ্টা করবেন না। বোঝা গেছে?
-জী স্যার।
-গুড।
আমি রুমের দরজা খুলে ঢুকলাম। সিটে বসে দরজার দিকে তাকাতেই দেখি ভদ্রলোক দরজা ঠেলে মাথা ঢুকিয়ে হাসি মুখে তাকিয়ে আছেন। দেখে মায়াই লাগলো। আমি বললাম-
-কিছু বলবেন?
-জী স্যার। আসবো?
-আসেন।
-স্যার, আজকে নোট খাতা বের করতে হবে না।
আমার হাত অটোমেটিক ড্রয়ারে চলে গিয়েছিলো। রুস্তম আলী যখনই বিদঘুটে কিছু বলে, আমি নোট করে রাখি। সেই নোট খাতা থাকে ড্রয়ারে।
-বসেন। বসে বলেন দেখি কি বলতে চান।
রুস্তম আলী সামনের চেয়ারটায় বসলো।
-স্যার... 'হাসবেন্ড' তো মাসকুলিন ফর্ম। জেন্ডারের কথা বলছি। এর ফেমিনিন ওয়ার্ডটা কি?
-হাসবেন্ডের ফেমিনিন হবে ওয়াইফ। হাসবেন্ড-ওয়াইফ। স্বামী-স্ত্রী। পুংলিঙ্গ-স্ত্রীলিঙ্গ।
-হাসবেন্ডকে (husband) আদর করে বা আল্লাদী করে শর্ট করে 'হাবী' (hubi) বলছে। তাহলে ওয়াইফ (wife) কে কি বলবে?
আমি উম উম করতে থাকি। কি বলবে? কি বলবে? 'ওয়াইফ' তো এমনিতেই ছোট শব্দ। ছেটে ছুটে কি বলা যায়? আমতা আমতা করে বললাম-
-কি বলা যায়...ইয়ে মানে...ওয়াইফি… ওয়াইফি বলা যায়। হাসবেন্ডকে যদি 'হাবা' বলে ডাকতো তাহলে ওয়াইফকে 'ওয়াফা' বলা যেতো। কিন্ত 'হাবি' যদি পুংলিঙ্গ হয় তাহলে স্ত্রীলিঙ্গ 'ওয়াইফি' হওয়াই যুক্তিযুক্ত।
-একজ্যাক্টলি স্যার। আমারো তাই মনে হয়। কিন্তু প্রব্লেম অন্য জায়গায়।
আমি আগ্রহ নিয়ে জানতে চাই-
-কি প্রব্লেম?
-ওয়াইফি বানান কি হবে?
-প্রব্লেম কিসের? হাবি যদি 'hubi' হয়, তাহলে ওয়াইফি বানান 'wifi' হবে।
-স্যার, প্রব্লেম তো ওটাই। ওয়াইফ এর শর্ট ফর্ম যদি ওয়াইফি হয় আর বানান যদি wifi হয়, তাহলে যেসব রেস্টুরেন্টে 'free wifi' লেখা থাকে, সেসব রেস্টুরেন্টে কি যাওয়া ঠিক হবে?
মূল লেখকঃ জনাব আসিফ রহামান জয়
-স্যার, আমাদের দেশের স্মার্ট মেয়েরা ইদানিং 'হাসবেন্ড'কে আহলাদী করে 'হাবী' বলে ডাকছে- ব্যাপারটা কি আপনি লক্ষ্য করেছেন?
রুস্তম আলীকে আমি মোটামুটি এড়িয়ে চলি। এড়িয়ে চলার কারনও আছে। ব্যাটা কিছুদিন পরপর বিদঘুটে সব প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়। সে প্রশ্ন করেই খালাস, আমি হাতড়ে-পাতড়ে এসব বিদ্ঘুটে প্রশ্নের উত্তর খুজে বেড়াই। সে মনে হয় উত্তরের ধার ধারে না, আগের প্রশ্নের উত্তর পাবার আগেই সে আবার নতুন ধরনের বিদঘুটে প্রশ্ন নিয়ে হাজির হয়। কি মুশকিল!
আমি গলা খাকারী দিলাম। রুস্তম আলী সরাসরি আমার আন্ডারে কাজ না করলেও সে আমার বেশ জুনিয়র। ওর ইমিডিয়িট বসের বস আমার কলিগ। স্মার্ট মেয়েরা তাদের 'হাসবেন্ড'কে 'হাবী' বলে ডাকুক আর 'জানু' বলে ডাকুক তা নিয়ে আমার সাথে কথা বলার কি আছে? আর বলবি বল, আমার রুমে এসে বল। লিফটের মধ্যে ছয়জন লোক গায়ে গা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে দুই-তিনজনকে ডিংগিয়ে আমাকে এই প্রশ্ন করার কি মানে? আমি একটু বিরক্ত হয়ে ভুরু কুঁচকে বললাম-
-তাই নাকি?
-জী স্যার। অনেকেই এখন ডাকছে। বিশেষ করে করপোরেট মেয়েরা বেশী বেশী ডাকছে।
থার্ড ফ্লোর। লিফট থেমে গেলো।
আমি লিফট থেকে বের হয়ে আমার রুমের দিকে এগুচ্ছি। আমার পিছন পিছন রুস্তম আলী। আমি রুমের দরজার সামনে এসে দাড়ালাম। রুস্তম আলীর দিকে তাকিয়ে থমথমে গলায় বললাম-
-রুস্তম আলী সাহেব।
-জী স্যার।
-আপনার যদি আমাকে কিছু বলার দরকার হয়, তাহলে আমাকে আগে বলে নেবেন-স্যার, আপনার সাথে কথা আছে। অথবা আমার রুমে এসে পারমিশন নিয়ে তারপর কথা বলবেন। হুট করে রাস্তা-ঘাটে, যেখানে-সেখানে আমার সাথে আন-অফিশিয়াল বিদ্ঘুটে কথা-বার্তা বলার চেষ্টা করবেন না। বোঝা গেছে?
-জী স্যার।
-গুড।
আমি রুমের দরজা খুলে ঢুকলাম। সিটে বসে দরজার দিকে তাকাতেই দেখি ভদ্রলোক দরজা ঠেলে মাথা ঢুকিয়ে হাসি মুখে তাকিয়ে আছেন। দেখে মায়াই লাগলো। আমি বললাম-
-কিছু বলবেন?
-জী স্যার। আসবো?
-আসেন।
-স্যার, আজকে নোট খাতা বের করতে হবে না।
আমার হাত অটোমেটিক ড্রয়ারে চলে গিয়েছিলো। রুস্তম আলী যখনই বিদঘুটে কিছু বলে, আমি নোট করে রাখি। সেই নোট খাতা থাকে ড্রয়ারে।
-বসেন। বসে বলেন দেখি কি বলতে চান।
রুস্তম আলী সামনের চেয়ারটায় বসলো।
-স্যার... 'হাসবেন্ড' তো মাসকুলিন ফর্ম। জেন্ডারের কথা বলছি। এর ফেমিনিন ওয়ার্ডটা কি?
-হাসবেন্ডের ফেমিনিন হবে ওয়াইফ। হাসবেন্ড-ওয়াইফ। স্বামী-স্ত্রী। পুংলিঙ্গ-স্ত্রীলিঙ্গ।
-হাসবেন্ডকে (husband) আদর করে বা আল্লাদী করে শর্ট করে 'হাবী' (hubi) বলছে। তাহলে ওয়াইফ (wife) কে কি বলবে?
আমি উম উম করতে থাকি। কি বলবে? কি বলবে? 'ওয়াইফ' তো এমনিতেই ছোট শব্দ। ছেটে ছুটে কি বলা যায়? আমতা আমতা করে বললাম-
-কি বলা যায়...ইয়ে মানে...ওয়াইফি… ওয়াইফি বলা যায়। হাসবেন্ডকে যদি 'হাবা' বলে ডাকতো তাহলে ওয়াইফকে 'ওয়াফা' বলা যেতো। কিন্ত 'হাবি' যদি পুংলিঙ্গ হয় তাহলে স্ত্রীলিঙ্গ 'ওয়াইফি' হওয়াই যুক্তিযুক্ত।
-একজ্যাক্টলি স্যার। আমারো তাই মনে হয়। কিন্তু প্রব্লেম অন্য জায়গায়।
আমি আগ্রহ নিয়ে জানতে চাই-
-কি প্রব্লেম?
-ওয়াইফি বানান কি হবে?
-প্রব্লেম কিসের? হাবি যদি 'hubi' হয়, তাহলে ওয়াইফি বানান 'wifi' হবে।
-স্যার, প্রব্লেম তো ওটাই। ওয়াইফ এর শর্ট ফর্ম যদি ওয়াইফি হয় আর বানান যদি wifi হয়, তাহলে যেসব রেস্টুরেন্টে 'free wifi' লেখা থাকে, সেসব রেস্টুরেন্টে কি যাওয়া ঠিক হবে?