What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected মেঘের পরে মেঘ.......... (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
# এক
"কি ভাবছেন মি. আবির সাহেব"?
সূর্যের উতপ্ততা শেষে অস্তি যাওয়ার সময় যে
লাল আভা ছড়িয়ে যায় সেটা সৌন্দর্যের
প্রতীক। সৌন্দর্য মিশে থাকে প্রকৃতিতে, মনের
গভীরে। চেহারার মাঝে কখনই সৌন্দর্য
বিকাশিত করে না। তাই প্রকৃতির সৌন্দর্য ও
মনের সৌন্দর্য বিদ্যমান সবার মাঝে।
বিকেলের শান্ত সময়ে ছাদে দাঁড়িয়ে প্রকৃতি
দেখছি আর ভাবছি। তখনি জান্নাত এসে
কথাটি বললো..
- কী হল,: কি ভাবছেন হুমম?
- জ্বি কিছু না। আর আপনি এখানে কেনো?
- চা খাবেন চলুন। আচ্ছা থাকুন আমিই চা নিয়ে
এখানে আসছি। (আমার হাত ধরে)
কথাটি বলতে বলতে জান্নাত আমার হাত ধরল।
আমি ওর স্পর্শে কেঁপে উঠলাম। এই কাঁপুনি আর
তার স্পর্শ এলোমেলো করে দিচ্ছে আমার সব
অনুভূতি। হারিয়ে যেতে বসলাম কল্পনার
প্রকৃতিতে। কিন্তু না তখনি মনে পড়ল, আমার যে
বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে। চাইলেই সব হয়
না। ততক্ষনে জান্নাত আমার হাত ছেড়ে দিয়ে
চা এনে সামনে ধরলো।
- এই নিন, চা খেয়ে বলবেন কেমন হল।
আমি মেয়েটির আচরনে বেশ অবাক হচ্ছি। কারন
এই মেয়ে আমার সাথে এমন আচরন করছে হঠাৎ
কেনো সেটা বুঝতে পারছি না। এক চুমুক দিয়ে
বললাম..
- হুমম খুব সুন্দর চা বানান আপনি বেশ টেস্টি।।
- হিহিহি,,থ্যাংকস।
জান্নাতের দিকে তাকালাম। ঠোটের
কোনে লেগে আছে সেই মিষ্টি হাসিটা। এই
হাসিতে মনকে কেমন অসহ্য রকম শিহরনের
অন্তস্তুপে পৌঁছে দেয়। দেখে মনে হল দেবি
আফ্রোদিতি আমার সামনে দাঁড়িয়ে টোল
পড়া হাসি দিচ্ছে। আমি ওর হাসির তাড়নায়
পুনরায় ওর প্রেমে মত্ত হতে লাগলাম। শত চেষ্টা
করেও নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ।
- আপনার কষ্টে হবে না? (জান্নাত)
- কেনো?
- আমি চলে গেলে কষ্ট হবে না আপনার?
- নাহ তো,কেনো কষ্ট হবে?
- নাহ মানে ভাবলাম হয়ত কষ্ট হবে।
হালকা অস্পষ্ট অসমান প্রতিহিংসাময় চাহনি
দিয়ে জান্নাত চায়ে চুমুক দিল। আমি মনে মনে
নিস্বঙ্গতার হাসি দিলাম। আচ্ছা মেয়েটি
কেন আমাকে বোঝে না? আমার যে কষ্ট এর
আগে থেকেও হচ্ছে। মানুষের কষ্টগুলো যদি কথা
বলতে পারতো তবে মানুষ তখনি দুনিয়া ত্যাগ
করে চলে যেত। কষ্ট হল অস্ফুট নিরব বস্তু আর এতেই
যদি এত যন্ত্রনা সৃষ্টি করে তাহলে কথা বলতে
পারলে নাজানি আরো কি হতো।
- আচ্ছা আমাকে আপনি বিয়ে কেনো
করেছিলেন? (আমি)
জান্নাত আমার থেকে কথাটি শোনা মাত্রই
মাথাটা নিচু করে ফেলল। কেন জানি মনে হল
প্রশ্নটা কেমন বিদঘুটে। তবুও আমার জানা
দরকার।
- কি হল বলুন?
- আসলে পরিবারের চাপে পড়ে করতে
হয়েছিল।
- হাহাহাহ
- হাসলেন যে? (জান্নাত)
- একবারো কি ভেবেছেন আপনার এই কাজের
জন্য আমার কী হবে? ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে
দিচ্ছেন আমাকে সেটা কী বুঝতে পারছেন?
পরিবারের চাপে পড়ে আপনি যেমন বিয়ে
করেছেন তেমনি আমার জীবনটাও কষ্টের
নির্লিপ্ত সাগরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে
দিলেন। কেনো করলেন এমন?
জান্নাত আমার মুখে এসব শুনে মাথাটা আরো
নিচু করল। আমি আবার প্রকৃতির উদাসিনতার
দিকে মনোযোগী হলাম। সন্ধ্যা নেমে গেছে
একটু আগেই। তখনি জান্নাত বললো...
- আমি ভিতরে চলে গেলাম। আপনিও আসুন। আর
কাল ভোরে চলে যাবো। আপনি একটু কষ্টকরে
ডিভোর্স লেটারটা পাঠিয়ে দিয়েন।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম।
দেখলাম জান্নাত আসতে হেটে চলে যাচ্ছে
রুমে। আমি ছাদের এক কর্ণারে ইজি
চেয়ারটাতে যেয়ে বসলাম। স্মৃতিপাতা গুলো
আজ ঝরে পড়তে ইচ্ছে জাগছে ওদের। তাই ধপ
করে বসে মনে পড়তে লাগল দুইমাস আগে ঘটে
যাওয়া ঘটনাগুলো।
# দুই
আব্বু আম্মু গ্রামে থাকে। ২ মাস আগে গ্রামে
যেতেই আম্মু আব্বু জান্নাতের সাথে আমাকে
বিয়ে দিয়ে দেয়। বাসর রাতে রুমে ঢোকার
সাথে সাথেই জান্নাত আমাকে বলেছিল..
- আমি জানি আজ কি রাত। এই রাতে গ্রাম শহর
দেশ আলাদা থাকে না। গ্রাম শহর মিলে
তৈরী হয় নতুন একটি শহর। সেই শহরে থাকে
পরিপূর্ণতাময় ভালোবাসার নীলাচল। আপনি
চাইলেই সেই নীলাচলের গভীরতায় মিশে
যেতে পারেন। আমার মাঝে সৃষ্টি করতে
পারেন আপনার ভালোবাসার দুরবীন। কিন্তু
বিশ্বাস করুন আপনার সাথে আমার সেই
ভালোবাসার নীলাচল গড়ার বিন্দু মাত্রই
ইচ্ছে নেই।
কথাগুলো শুনে আমি থ হয়ে গেলাম। ভাবলাম
আমার সাথে ও মজা করছে। তাই আবার বললাম..
- আপনি আমার সাথে ফান করছেন তাই না?
- আপনি কি আমার বিয়াই নাকি যে ফান
করবো। আমি সিরিয়াস।
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে বিছানাতে বসে পড়লাম।
বাসর রাতে কোনো মেয়ে এমন কথা বলতে
পারে? মেয়েরা এই রাতে নার্ভাস থাকে।
ঘোমটা টেনে ঘাটের মাঝখানে বসে থাকে
মাথাটা নিচু করে। কিন্তু এ মেয়ে তো এক
নাগাড়ে কথা বলে দিল। মনে হয় আমাকে
বোকা বানানোর জন্যই এমন করছে। কিছু বলতে
যাবে তখনি ঘোমটা সরিয়ে জান্নাত বললো..
- দেখুন আবির সাহেব। আমি ফান করছি না।
বিশ্বাস করুন আমি এ বিয়ে করার জন্য রাজি
ছিলাম না। পরিবারের চাপে করতে হয়েছে।
আব্বু রাগি হওয়াতে ওনার সামনে না বলতে
পারিনি। অনেকবার কথাগুলো আপনাকে
বিয়ের আগে বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু
পারিনি ভয়ে। প্লীজ কিছু মনে কইরেন না।
আমি বোকার মত চোখ বড় করে তাকিয়ে আছি।
কি বলবো ভেবে না পেয়ে বললাম..
- কাউকে ভালোবাসেন?
- হুমম
- আমাকে তো আগে বলতে পারতেন।
- ভয়ে বলি নাই। আর তাছাড়া অর্ক তো এখন
চাকরি করে না।
- ছেলেটির নাম অর্ক?
- হুমমম,
- ওহ আচ্ছা বেশ আমি আপনাকে ওনার কাছে
যাবার ব্যবস্থা করে দিবো। এ ব্যাপারে
নিশ্চিত থাকুন।
আমার কথাশুনে জান্নাত অবাকক হয়ে তাকায়।
সদ্য বিয়ে করা বরের থেকে এমন কথা শুনে
জান্নাত হয়ত অবাক হয়েছে। তাই মাথাটা
আবার নিচু করে বলল..
- আপনি অনেক ভালো। দেখবেন আমার থেকেও
আপনার ভালো বউ হবে একদিন।
আমি কথাটি শুনে হাসলাম। সেই হাসিতে
কোনো রং ছিল না। ছিল বিষাদের এক
রংবোর্ড। যেই বোর্ডে রং এর দলা থাকলেও
আঁকার মাঝে বিষাদের প্রতিচ্ছবি।
তারপর জান্নাতকে শহরে নিয়ে চলে আসি।
আসার আগে আব্বু আম্মুর দিকে তাকিয়ে
হেসেছিলাম। তারাও আমার হাসিতে
হেসেছিল। কিন্তু আমার হাসিটা ছিল অন্য
জগতের। আর ওনাদের হাসি ছিল আমার খুশির
জগতের প্রতিরুপ।
এখানে চাকরি করি আমি। রোজ বিকেলের পর
বাসায় এসে দেখতাম জান্নাত মুড অফ করে
ছাদে বা ব্যালকনিতে বসে থাকতো। খুব
খারাপ লাগতো। এই কদিনে আমি ওর প্রতি
আকৃষ্ট হয়ে গেছি। সে চলে যাবে জেনেও
ভালোবেসে ফেলেছি। আমার চার দেয়ালে
কেবল জান্নাত এর চলাচল।
আজ অফিস শেষ করে এসেই শুনি জান্নাত কাল
চলে যাবে অর্কের কাছে। সে নাকি এখন
চাকরি পেয়েছে। আমিও কিছু বলি নাই। তবে
আসতে করে বলেছিলাম "চিন্তা করবেন না
ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবেন" কথাটি বলেই
চলে আসি ছাদে।
# তিন
"এই যে উঠুন, সকাল ৬টা বাজে। আমাকে রেখে
আসবেন অর্কের কাছে চলুন"
কথাটি শুনেই ধড়ফড় করে উঠলাম। কাল রাতে
পুরোনো কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে
ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি। ঘুম ভাংল
জান্নাতের ডাকে। আর উঠেই বিষাক্তময়
কথাটি শুনতে হল। মুখে হাসির রেখা এনে
বললাম..
- আমাকে ৩০ মিনিট সময় দেন ম্যাডাম আমি
এখনি ফ্রেশ হয়ে আসছি আপনি ততক্ষনে গুছিয়ে
নেন।
- আমার গোছানো শেষ আপনি গুছিয়ে নিন
যান।
আমি জান্নাতের দিকে তাকালাম না।
তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমে এসে কান্না করলাম। ও
নাকি আগেই গুছিয়ে রেখেছে। হায়রে কি
তাড়া ওর। একবারো আমার কথা ভাবছে না।
একবারো বোঝার চেষ্টা করছে না আমার কষ্ট
হবে কিনা আসলেই। এতটা স্বার্থপর কেনো সে?
আমি বেরিয়ে এলাম ফ্রেশ হয়ে। টেবিলে
যেয়ে দেখি ও খাবার নিয়ে বসে আছে।
- খেয়ে নেন তাড়াতাড়ি। অর্ক ফোন
দিয়েছিল। অমুক কাজি অফিসের সামনে ও
দাঁড়িয়ে আছে।
- নাহ আজ খাবো না। বাসায় এসেই খাবো।
- তাহলে চলুন বেরিয়ে পড়ি
আমি জান্নাতের দিকে একবার তাকালাম।
মেয়েটি চোখে কাজল, ঠোটে হালকা
লিপিষ্টিক আর মুখে হালকা মেকাপ আর নীল
শাড়িতে এ যেন গ্রীস দেবির মত সুন্দর লাগছে।
আমি একবার তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নিলাম।
কারন এ সৌন্দর্য দেখার অধিকার আমার নেই।
আমি যে এক তিমাত্রীক খেলার গুটি।
বেরিয়ে পড়লাম জান্নাতকে নিয়ে।
গাড়িতে বসে আছি। আমি চালাবো আর
জান্নাত পাশে বসবে। কেমন একটা ফাকা
ফাকা লাগছে। আমি আর ওর দিকে তাকালাম
না। এক টানে পৌছে গেলাম গুলসানের বলা
কাজি অফিসের সামনে।
- চলে এসেছি নামন। (আমি)
- হুমমম
গাড়ি সাইড করে রাস্তার একপাশে দাড়িয়ে
আছি। জান্নাতের গা থেকে ভেসে আসছে
কড়া পারফিউম এর মন মাতানো গন্ধ। যার মাঝে
আবার কেমন ডুবতে বসতে চলেছি। আড়চোখে ওর
দিকে তাকালাম। মুখে বিরক্তির ছাপপ হয়ত অর্ক
সাহেবের জন্য অপেক্ষা করছে।
নীল চুড়ি ভর্তি হাতটার দিকে তাকালাম।
একবার ঐ হাত ধরতে খুব ইচ্ছে হল। কিন্তু
অধিকারহীন পরমানুষ আমি শুধু শুধু অথিকার
দেখিয়ে কি লাভ। মেহেদি রাঙা হাতে
নীল চুড়ি ওহ যা লাগছে না চিকন হাতে আরো
বেশ মানিয়েছে।
- অর্ক কখন আসবে?(আমি)
- চলে আসবে। আপনি চলে যান।
- কেনো?
- কারন অর্ক যদি আপনার সাথে দেখে হয়ত
খারাপ কিছু হবে। তাই আরকি আর তাছাড়া
আপনারও কষ্ট হবে।
- কই নাতো,আমার কষ্ট হবে না।
- হিহিহি,,আমি জানি হবে কিনা এখন যান।
আমি আর দাঁড়ালাম না। সোজা চলে আসলাম
সেখান থেকে। চলে আসলাম রমনা পার্কে একা
সময় কাটাতে। আজ ইচ্ছে হচ্ছে খুব পতিতালয়ে
যেয়ে আমার নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আসি।
মনের যত রাগ আজ না হয় সেখানেই শোধন করে
আসি।
এসব ভাবছি আর রমনা পার্কে কাপলদের দেখছি।
তারা একে অন্যের হাতে হাত রেখে হাটছে।
মেয়েটি ছেলেটির কাথে মাথা রেখে বসে
আছে। বুকটা ধড়াস করে উঠল। কারন আমি তো
কাউকে এর আগে ভালোবাসিনি।
ভেবেছিলাম বিয়ের পর বউকে ভালোাসবো
আর এভাবেই প্রেম করবো। কিন্তু আফসুস
ভালোবাসলাম তবে হল না তার সাথে প্রেম।
হলনা মনের মিল। হল না নতুন শহর গড়া। আমার
মনের আকাশে মেঘের পরে মেঘ জমেছে।
"ধোঁয়াশাতে একলা আমি তোমার স্মৃতি মনে,
তোমার স্মৃতি আমার মাঝে নিসঙ্গতা আনে"
# চার
লেক, রমনা পার্ক আর টি.এস.সির প্রাঙ্গনে
কাপলদের ঘোরাফেরা দেখে বিকেলে
বাসায় আসলাম। বাড়ির বড় গেট খুলেই আমি
তো অবাক। কারন বাড়ির দরজা হালকা
লাগোয়া তবে খোলা। আমি দৌড়ে দরজার
কাছে গেলাম। ভাবলাম হয়ত চোর এসেছে।
দরজা ঠেলে চিৎকার করে বলতে যাবো "এই
কেরে ঘরে" তখনি চোখ গেল সোফাতে।
দেখি নীল শাড়ি পরে জান্নাত বসে আছে।
আমি একবার ওর দিকে তাকালাম। একবার চোখ
ডললাম। কিন্তু না এযে সত্যিই জান্নাত।।
- এতক্ষন কোথায় ছিলে তুমি? (জান্নাত)
আমি চমকে উঠলাম। মেয়েটি আমাকে তুমি
করে বলছে। কিন্তু কেনো আবার ফিরেও
এসেছে কিন্তু কেনো???
- কি হল বলো. সেই কখন থেকে তোমার জন্য
অপেক্ষা করে আছি।
- ইয়ে মানে কেনো?
- কেনো আবার? একসাথে ঘুরবো বলে।।
- মানে? তোমার না আপনার অর্ক কোথায়?
- অর্ক? কে অর্ক?
- মানে কি? অর্ক কে মানে? আপনারই তো
বয়ফ্রেন্ড।
কথাটি শুনে জান্নাত উচ্চস্বরে হেসে উঠল।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। কি বলে
মেয়েটা?
- আরে ধুরর গাধা, গর্দভ, বান্দর, হনুমান হাম্বা
একটা। কোনো অর্ক টর্ক নেই। আমি তো কেবল
তোমাকে পরিক্ষা নেয়ার জন্য এতদিন এমন
করেছি। দেখছিলাম আমার হাজবেন্ড টা কেমন
হয়। কিন্তু সে একটা হাদারাম। আস্তো
হাদারাম।।ওরে গাধা এখনকার সময় কি
বয়ফ্রেন্ড থাকা সত্তেও বিয়ে করে নাকি?
পালিয়ে যায় গাধা কোথাকার।
আমি জান্নাতের কথায় হাসবো না কাঁদবো
বুঝতে পারছি না। তবে প্রচন্ড রাগ হলো। আমি
হেটে ওর কাছে যেয়ে গালে কষে দুইটা চড়
দিলাম।।জান্নাত গালে হাত দিয়ে কান্না
করে বললো...
- আমাকে মারলে কেনো?
- ছি,,এতটা কষ্ট দেবার কোনো মানে হয়?
- সরি।
- রাখো তোমার সরি। তোমার জন্য আমার মনের
মাঝে যে ভালোবাসা ছিল সেটা আজ
থেকে আর নেই
- প্লীজ আবির মাফ করে দাও। আমি আর কষ্ট
দিবো না।
পাশে যেয়ে বসলাম দুরুত্ব রেখে। জান্নাত
গালে হাত দিয়ে তখনও গাল ফুলিয়ে কান্না
করছে। চোখের কাজল লেপ্টে গেছে।
- সরি আবির আমি জানতাম না এমন হবে। তুমি।
যে আমাকে ভালোবাসো তা জানতাম তবে
এমন হবে বুঝিনি।
- ভালো।
- সরি তো।
- হুমমম,,,থাকো বাই।
- বাই মানে কি?
- তোমাকে তো বলি নাই। আমারো একটা
গার্লফ্রেন্ড আছে। নাম অরনি। ভার্সিটিতে
থাকাকালীন প্রেম। (মিথ্যে বললাম
রাগানোর জন্য)
- কিহহ? ঐ আমাকে বলোনি কেনো?
- এমনি, তুমি তো অর্ককে ভালোবাসো তাই
মনে করেছিলাম আমার রাস্তা পরিস্কার।
- রাস্তা পরিস্কার মানে? আমি তো অর্ক
নামের কাউকেই চিনি না। আর তুমি কিনা...
- তো আমি কি করবো। এখন থাকো অরনি
অপেক্ষা করছে। কাজী অফিসের সামনে
আসতে বলেছি।
- এই আমি সতীনের ঘর করবো? তোমার অরনির
নিখুজি করে। এখান থেকে এক পা বাড়ালেই
পা কেটে রেখে দিবো উহু।
- তা দাও তবুও সে আমাকে ভালোবাসবে। তুমি
তো আর বাসবে না।
- ঐ বান্দর কে বলেছে ভালোবাসি না। আমিও
ভালোবাসি।
- কাকে?
- আমার বরকে।
- কে বর?
- তুমি, তোমাকে ভালোবাসি।
- ওহ, ভালো, টাটা।
কথাটি বলেই যেয় উঠতে গেছি ওমনি জান্নাত
আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি তো অবাক। এই প্রথম
জান্নাত আমার এত কাছে। ওর সেই পারফিউম এর
গন্ধ এখনো আসছে। শ্যাম্পু করা চুলেন ঘ্রান
মাতিয়ে তুলছে। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না
করছে মেয়েটি। ঠিক তখনি সব রাগ যেন কেমন
পানি হয়ে গেল। আমিও শক্ত করে জড়িয়ে
নিলাম।
- প্লীজ আমাকে ছেড়ে যেও না। আমিও
তোমাকে আগে থেকেই ভালোবাসি বলেই
তো বিয়ে করেছি।
- কে যাচ্ছে চলে? অরনি বলে তো কেউ নেই।
এমনি মিথ্যে বললাম।
- কিহহহ,, দাড়াও তোমাকে বলাচ্ছি মিথ্যে।
(বুকে কিল ঘুসি)
- আরে থামো থামো।।তুমিও কষ্ট দিছো আমিও
দিলাম। কাটাকাটি।
- নাহ কাটাকাটি না। এখনি বের হবো।
তোমার হাত ধরে ঘুরবো সারা জায়গা।
- ওকে, তুমি যা বলবে।
- এই তো গুড বর।।
- পেত্নী বউ।
খানিক মিষ্টি ঝগড়া শেষে বের হলাম আমি
আর জান্নাত ব্যস্ত রাস্তার মাঝে। দুজনে
হাটছি। জান্নাত আমার কাধে মাথা রেখে
হাটছে। সন্ধ্যা নেমে এসেছে। ল্যামপোস্টের
আলোতে দেখতে তাকে আরো অপরুপ লাগছে।
আমি হাটছি আর মনে মনে বলছি..
"চিন্তা কে নিয়ে, চিন্তিত হয়ে, ভাবনার
সাগরে দিয়েছিনু ডুব,
পুষ্প তুমি রইলে কোথায়?
পাপড়ি তোমার দেখবো বলে, রয়েছি উৎসুক।"
(১২২)

"------------(সমাপ্ত)------------"
 

Users who are viewing this thread

Back
Top