ঐতিহাসিক ১৯মার্চকে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘এই প্রতিরোধ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতিকে তরান্বিত করে এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণকেও উৎসাহিত করে।’
তিনি বলেন, ১৯ মার্চের ঘটনা মূলত তৎকালীন শাসকগোষ্ঠির অত্যাচার, নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেরই বহিঃপ্রকাশ।
আজ সোমবার বিকেলে গাজীপুর শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে ১৯মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের ৪৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বীর ও শহীদদের নাগরিক গণসংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের নতুন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে। এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বিগত দিনে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক মিথ্যাচার করেছে।’
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস শিক্ষা দেয়ার অপচেষ্টা হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘যারা ইতিহাস বিকৃতি করেছে তারা সবকিছু জেনেশুনে করেছে। তারা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভয় পায় বলেই এসব করেছে এবং করছে।’
মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি এখনো একাত্তরে তাদের পরাজয়ের গ্লানি ভুলতে পারেনি উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘এসব অপশক্তি সুযোগ পেলেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠতে চায়। এরা দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের শত্রু। তাই দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের যেকোন ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টাকে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে।’
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন সবুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
এর আগে প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে মোজাম্মেল হক রাষ্ট্রপতিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। রাষ্ট্রপতিও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও মোজাম্মেল হক পরস্পরকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নৃত্য ও কোরাস পরিবেশিত হয়। সন্ধ্যায় বর্ণিল আতশবাজি প্রজ্বলিত ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে কারা সপ্তাহ-২০১৮ উদ্বোধন এবং বিকালে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।