মানুষের মধ্যে হস্তমৈথুনের হার নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন রকমের জরিপ ও গবেষণা হয়েছে। আলফ্রেড কিনসের ১৯৫০-এর দশকের এক গবেষণায় বলা যায়, মার্কিন নাগরিকদের মাঝে ৯২% পুরুষ ও ৬২% নারী তাঁদের জীবনকালে অন্তত একবার হস্তমৈথুন করেছেন। ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষের মাঝে করার একটি জরিপেও কাছাকাছি ফলাফল পাওয়া যায়। জরিপে দেখা যায় ১৬ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে ৯৫% পুরুষ ও ৭১% নারী তাঁদের জীবনের যে-কোনো সময়ে অন্তত একবার হস্তমৈথুন করেছেন। সাক্ষাৎকারের চার সপ্তাহ আগে হস্তমৈথুন করেছেন এমন পুরুষের হার ৭১% ও নারী ৩৭%। অপর দিকে ৫৩% পুরুষ ও ১৮% নারী জানিয়েছেন যে, তাঁরা এই সাক্ষাৎকারের ১ সপ্তাহ আগে হস্তমৈথুন করেছেন।
২০০৯ সালে নেদারল্যান্ড ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সাথে যুক্তরাজ্যেও বয়সন্ধি কালীন ছেলে-মেয়েদের কমপক্ষে প্রতিদিন হস্তমৈথুন করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়। অর্গাজম বা রাগমোচনকে শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে শিশু গর্ভবতীর ও সহবাস সংক্রামক রোগের হারের প্রাপ্ত উপাত্ত লক্ষ্য করে, তা কমিয়ে আনতে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়, এবং এটিকে একটি ভালো অভ্যাস হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
আজকাল অনেক চিকিৎসালয়ে স্পার্ম-ব্যাংক থাকে; হস্তমৈথুনের মাধ্যমেই সেখানে রোগীর শরীর থেকে স্পার্ম কালেকশন করা হয়ে থাকে। অথচ শারিয়ার বিধান অনুযায়ী নিরীহ এই সহবাস টি একবারে হারাম। আপনি যদি কখনও গোপনে গোপনে এই ভয়ঙ্কর কাজে নিয়োজিত থাকেন, মনে রাখবেন যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সিক্রেট পুলিশবাহিনী অর্থাৎ ফেরেশতাগণ আপনার প্রতিটি আচরণ রেকর্ড করে রাখছে।
আপনি নিজের সাথে নিজে ব্যভিচার করছেন, তার প্রতিটি ইভেন্ট ভিডিও করে রাখছে ফেরেশতারা। রোজ হাশরের দিন তা আপনার সামনে উপস্থাপিত করা হবে এবং এই জঘন্য কাজের জন্যে কঠিন শাস্তি পেতে হবে আপনাকে। পরকালে আপনি যে শাস্তি পাবেন তা নিশ্চিত, কারণ ফেরেশতাদের ভিডিও চিত্রে আপনার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হবে। তবে শারিয়া-দারোগা ইহকালে কীভাবে আপনাকে শাস্তি দেবে সেই বিষয়ে আমি কিঞ্চিৎ ধন্দে আছি। লোকে অপকর্মটি করে থাকে অত্যন্ত গোপনে। শারিয়ার দৃষ্টিশক্তি যদি শকুনের মতো প্রবলও হয়, তথাপী প্রতিটি লোকের টয়লেটে কিংবা বাথরুমে তার মরাল পুলিশ বাহিনী পাঠানো কোন মতেই সম্ভব নয়।
এমতবস্থায় ভূপৃষ্ঠে হস্তমৈথুনজনিত পাপের শাস্তি কার্যকর করার মতো শক্তি শারিয়ার আছে বলে মনে হয় না। তাই বলে আপনার নিশ্চিন্ত হওয়ার কোন কারণ নাই, উওণ সহবাস পালনরত সহবাস -ম্যানিয়াকদের জন্যে পরকালে অপেক্ষা করে আছেন সংক্ষুব্ধ আল্লাহ স্বয়ং। কঠিন শাস্তি দেবেন তিনি। সেই শাস্তির ধরণ কী হবে তা কি আপনি জানতে চান? ইসলামের দিকপালরা কঠিন গবেষণা করে আবিস্কার করেছেন যে এই জঘন্য ব্যভিচারের প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ পুনরুত্থানের দিন প্রতিটি মৈথুনকারীর হাত গর্ভবতী হয়ে কবর থেকে বেরুবে!আপনার সংকীর্ণ জ্ঞানে আপনি এতদিন জেনে এসেছেন যে শুধুমাত্র স্ত্রী-প্রজাতিই গর্ভধারণ করতে পারে। পুরুষ মানুষ, বিশেষ করে তার হাত গর্ভবতী হয়, এই থিওরী আপনার কাছে অভিনব বলে মনে হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, আল্লাহপাক সর্বশক্তিমান, তার পক্ষে সবই সম্ভব। কেন, তিনি কি পুরুষ মানুষের ছোঁয়া ছাড়া কুমারীকে মা বানান নি (বিবি মরিয়ম)? তিনি কি মেনোপজে যাওয়া অশীতিপর বৃদ্ধাকে গর্ভবতী করেননি (জাকারিয়া নবীর স্ত্রী)? হাত কেন, তিনি ইচ্ছে করলে আপনার গায়ের লোমের মধ্যেও গর্ভসঞ্চার ঘটিয়ে দিতে পারেন। ব্যক্তিগতভাবে এই থিওরী আমি সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করি। কিন্তু একটি হিসেব আমি কিছুতেই মেলাতে পারছি না। পুরুষ মৈথুনকারীদের হাত গর্ভবতী হলো ঠিক আছে।
মৈথুনকারী যদি স্ত্রীলোক হয়?
ইসলামী শাস্ত্র বিধান দিয়ে রেখেছে উওণ সহবাস কারীরা ম্যানিয়াক, রোজ হাশরের দিন তারা গর্ভিনী দু'খান হাত নিয়ে কবর থেকে বেরুবে। মেয়েদের কী হবে, ডাবল প্রেগনান্সির ভার নিয়ে তারা কবর থেকে বেরুবে কিনা, সে সম্পর্কে ইসলামী শাস্ত্রবিদরা নীরব। হযরত আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন 'যে ব্যক্তি স্বীয় হস্তের সহিত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় (অর্থাৎ মাস্টারবেশন করে), সে অভিশপ্ত' (তফসির মাজহারি, ভলিউম-১২, পৃ-৯৪)।
সাইদ বিন জুবায়ের বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন 'আল্লাহতায়ালা এক দল লোককে শাস্তি দিবেন, কারণ তারা নিজেদের গোপনাঙ্গের সাথে খেলা করত'। আতা (রাঃ) বলেন – 'কিছুসংখ্যক লোক এমন ভাবে পুনরুত্থিত হবে যেন তাদের হস্তদ্বয় গর্ভবতী, আমার মনে হয় তারা সেই সব লোক যারা হস্তমৈথুন করে'।
উপরোক্ত শাস্তির কথা বিবেচনা করে আমাদের মোমেন ও মোমেনা বান্দাদের কি উচিৎ নয় এই ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত থাকা?