What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

একরাম হত্যায় তোলপাড় (1 Viewer)

Status
Not open for further replies.

Nirjonmela

Administrator
Staff member
Administrator
Joined
Mar 1, 2018
Threads
2,763
Messages
23,288
Credits
826,885
Pistol
Crown
Thread Title Style (One)
Profile Music
DVH68qx.jpg


রাজধানীসহ সারাদেশে মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে 'বন্দুকযুদ্ধে' শতাধিক ব্যক্তি নিহত হলেও অভিযানকে সমর্থন করেছেন বিভিন্ন মহল। কিন্তু টেকনাফ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হওয়ার ঘটনা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে গোটা অভিযানকেই। আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। সরব হয়ে উঠেছেন সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীরা। কাউন্সিলর একরামুল কি আসলেই মাদক ব্যবসায়ী? নাকি কারো ষড়যন্ত্র বা ভুলের শিকার তিনি এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একরামুল ইয়াবা গডফাদার ছিলেন এবং তার অগাধ বিত্তবৈভরের খবর প্রচার করা হলেও মিলছে না এসবের যথার্থতা। 'বন্দুকযুদ্ধে' একরামের মৃত্যুর পর তিনি প্রতিহিংসার শিকার, পরিবারের এমন দাবির মধ্যে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। বিশেষ করে ঘটনার পাঁচদিন পর গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার প্রেসক্লাবে একরামের পরিবারের সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগ এবং ১৪ মিনিটের একটি মর্মস্পর্শী অডিও রেকর্ড সরকারি মহলকে নাড়া দিয়েছে, বিব্রত করেছে। সবমহল থেকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি উঠেছে। র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে একরামুল হক পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর। এ ছাড়াও তিনি টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের ১৩ বছর দায়িত্বপালনকারী সাবেক সভাপতি, টেকনাফ বাসস্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও টেকনাফ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ছিলেন। ২৯ মে দিবাগত রাত ১টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের নোয়াখালিয়াপাড়ায় র‌্যাব-৭ এর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তিনি। র‌্যাবের দাবি, ওই সময় ১০ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি, ৫ রাউন্ড গুলির খোসা এবং একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। কিন্তু একরামের পরিবারের দেয়া অডিও রেকর্ডে রয়েছে ঘটনার ভিন্নরকম মর্মস্পর্শী বর্ণনা।

একরামের পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, একরামের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কাদের বলেন, একরাম আমাদের পার্টির একজন কর্মী। যদি তিনি নিরাপরাধ হন তাহলে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে। কিন্তু যেই অপরাধী হোক না কেন, সরকার কাউকে ছাড় দেবে না।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল বলেছেন, টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ না পাওয়া গেলেও একরাম নিহত হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত করবেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। তদন্ত শেষে ওই ম্যাজিস্ট্রেট যে রিপোর্ট দেবেন তার ভিত্তিতেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, তারা এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অডিও রেকর্ডটি দেননি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি কেউ অন্যায় কাজ করে থাকে, কিংবা প্রলুব্ধ হয়ে বা স্বপ্রণোদিত হয়ে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে কিছু করে থাকে, তাহলে তার বিচার হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

টেকনাফ থানার ওসি রনজিৎ কুমার বড়–য়া জানান, একরামুলের নাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় থাকলেও থানায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে যে একটি মামলা ছিল তা ২০১০ সালেই নিষ্পতি হয়েছে।

অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বন্দুকযুদ্ধে একরাম হত্যার পর অডিও প্রমাণ করে মাদকবিরোধী অভিযানে সরকারের ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল।

এদিকে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার অডিও ফাঁস করার পর একরামের পরিবার এলাকাছাড়া। তারা আছেন চট্টগ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায়। একরামের স্ত্রী আয়েশা বেগম অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহংসার শিকার। একরাম মাদক ব্যবসার মতো ঘৃণিত পেশার সঙ্গে কখনো জড়িত ছিলেন না। বরং ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এই প্রতিবাদী রাজনীতিক। আয়েশা বলেন, গত ২৬ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফে দায়িত্বরত সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা জমি কেনার কথা বলে একরামকে ডেকে নিয়ে যান। তিনি বলেন, রাত ১১টার পরও একরাম বাড়ি ফিরে না আসায় স্বামীর মোবাইল নম্বরে কয়েকবার ফোন দেই। প্রতিবারই আমাদের সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলেছেন একরাম। আয়েশা বলেন, সবশেষ রাত ১১টা ৩২ মিনিটে তিনি ফোন রিসিভ করলেও কথা বলেননি। ওই সময় মোবাইলের অপর প্রান্তের সব কথা আমরা শুনতে পেরেছি। আমরা শুনছিলাম কত নির্মম পরিস্থিতি তিনি পার করেছেন। কি নির্দয়ভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর আর্তনাদ এখনো আমার কানে বাজছে।

আয়েশা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মাদক নির্মুল অভিযানকে সমর্থন করি। কিন্তু এ অভিযানে যেন আমার স্বামীর মতো নিরাপরাধ কেউ নির্মম হত্যার শিকার না হয়। কোনো নারী যেন অকালে স্বামীহারা না হয়। কোনো সন্তান যেন পিতৃহারা না হয়। এসব প্রমাণাদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তার কর্মী কখনোই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এটা একরামের মৃত্যুর পর হলেও প্রমাণ করতে চাই আমরা।

একরামের দুই শিশু কন্যা তাহিয়া হক (১৩) ও নাহিয়ান হক (১১) এখন বাকরুদ্ধ। তারা যেন কাঁদতেও ভুলে গেছে। কান্না চাপা কণ্ঠে তাহিয়া জানায়, হয়ত পৃথিবীর কোনো সন্তান তার জন্মদাতার এমন মৃত্যু যন্ত্রণা দেখেনি। কতোটা নির্দয়ভাবে মানুষ মানুষকে হত্যা করে উল্লাস করতে পারে, অডিও রেকর্ড তার প্রমাণ।

নিহত একরামের ভাই নজরুল ইসলাম বলেন, কেন এমনভাবে হত্যা করা হলো, কি অপরাধ ছিল তার এ কথার সদুত্তর নেই কারো কাছে। আরেক ভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকান্ড অতীতের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। অন্য ভাই আবদুর রাজ্জাক বলেন, তাদের সঙ্গে কারো শত্রুতা নেই। তবে কেন এভাবে আক্রোশ করা হলো তাদের সঙ্গে।

এদিকে টেকনাফের একাধিক রাজনৈতিক নেতা বলেছেন, একরামের সঙ্গে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির নানা বিষয়ে মতবিরোধ ছিল। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অপরাধবিষয়ক অনুষ্ঠানে একরামের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সাজানো হয়েছিল তার কোনোটার সত্যতা মিলছে না। অভিযোগ উঠেছে একরামকে ফাঁসাতে ওই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছিল মোটা অঙ্কের টাকায়।
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top