ব্যবহার করা কপালের টিপটার আঠা নষ্ট হলেও মেয়েরা সেটা যত্ন করে রেখে দেয়। এক জোড়া কানের দুলের একটা হারিয়ে গেলেও অন্যটা ফেলে না। পুরোনো শাড়িটা, ভাঙা চুড়িটা, নষ্ট হয়ে যাওয়া মোবাইলটা কাজে লাগবেনা জেনেও তুলে রাখে, সবকিছুর কারণ হলো মায়া। মেয়েরা মায়ার টানে ফেলনা জিনিসও ফেলে না- জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের এই উক্তির যথার্থতা বোঝা যাবে বাঙালি কন্যাদের সাজ ঘরের আয়না জোড়া রাশি রাশি টিপ দেখলেই।
বাঙালি নারীর সাজে টিপের স্থান থাকবে না তা তো চিন্তাই করা দায়। শাড়ি,চুড়ি বা ফুল যাই পড়া হোক না কেন ছোট্ট একটা টিপে চেহারা ফিরে পায় চিরচেনা মায়া। টিপ এমনই সাজসজ্জার একটি অনুষঙ্গ যা ব্যবহারে প্রয়োজন হয় না কোনো উৎসবের বা পার্বণের। খুব ব্যস্ত দিনেও হালকা একটা টিপে সাজে আসবে বৈচিত্র্য।
দেশি ফ্যাশনের অনলাইন দোকান বাঙালির স্বত্বাধিকারী ও টিপশিল্পী ঊর্মি রহমান বলেন, টিপ নিয়ে আমরা এখন অনেক বেশি শৌখিন। এক রঙা টিপের বদলে কাঠ, ধাতব, কাপড়, ভেলভেট, পাট, পাথর, এপ্লিক বা রং করা টিপের প্রতি মোহ এখন বেশি। টিপের নকশায় এতটাই পরিবর্তন এসেছে যে একটি টিপ তৈরিতে সময়ের দরকার হয় কয়েক ঘণ্টা। তাই আলাদা ঘরানার এই টিপগুলো সংরক্ষণে আলাদা কিছু উপায় মেনে চলতে হবে। তবেই দীর্ঘদিন উজ্জ্বল ও আঠাযুক্ত থাকবে শখের টিপ।
জেনে নিন
১. টিপের আঠা বা গাম একটু কমে গেলেই আয়নায় লাগিয়ে তা অনেক দিন ব্যবহার করা একেবারেই ভুল উপায়। টিপ ভালো রাখতে অবশ্যই ধুলা থেকে দূরে রাখতে হবে।
২. বাসায় থাকা পলি কাগজ বা বেকিং কাগজে টিপ লাগিয়ে রায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণই সঠিক উপায়। এতে অনেক দিন টিপের আঠা ও টিপ দুটোই ভালো থাকে।
৩. টিপের জন্য বিশেষ ধরনের আঠা না থাকলে চোখের বাড়তি পাপড়ি লাগানোর আঠা ব্যবহার করা যাবে। এতে টিপের রং নষ্ট হবে না।
৪. টিপের ধাতব অংশ কালো হয়ে গেলে পেস্ট দিতে ব্রাশ করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললেই পরিষ্কার হবে।
৫. কাঠের টিপে বার্ণিশ স্প্রে করা যাবে।
৬.পাথর, কাপড়, পাট ভেলভেট বা রং করা টিপ পানিতে ধোয়া যাবে না। নরম ব্রাশ দিয়ে ধুলা পরিষ্কার করতে হবে।
* রিফাত পারভীন, ঢাকা