What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made #Valentines_Day_Special (1 Viewer)

Joined
Apr 9, 2022
Threads
100
Messages
100
Credits
7,417
#Valentines_Day_Special

লেখা: মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম

...............................................................................

সকাল ১০টা,

গভীর ঘুমের দেশে তলিয়ে আছে তামিম। সারারাত জেসিকার সাথে ফোনে প্রেমালাপ করার পর সকালের দিকে ঘুমিয়েছে তাই এখনও ঘুমিয়ে আছে।

এর মাঝে কয়েকবার তার মা ডেকে গিয়েছেন কিন্তু সে কোনো সাড়া দেয় নি।

কিছুক্ষণ পর তামিমের মা আবারও ফিরে এসেছেন তার আদরের বাদর ছোটছেলেকে ডাকার জন্য।

তার দুই ছেলে তনি আর তামিম। বড় ছেলে তনি যতটা শান্ত ছোটছেলে তামিম তার থেকে বেশি দুরন্ত।

তনি বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন দেশে ব্যবসা করছে। সে এবং তার পরিবার তাদের অন্যবাড়িতে বসবাস করে।

এদিকে তামিমও পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসা করছে হাত খরচ চালানোর মতো। আসলে ব্যবসা তাদের রক্তে রয়েছে। তামিমের বাবাও একজন ব্যবসায়ী।

...

ছেলেকে এভাবে এত বেলা পর্যন্ত ঘুমাতে দেখে তিনি আবারও ডাকা শুরু করলেন-

মা: তামিম উঠ ঘুম থেকে অনেক বেলা হয়ে গিয়েছে ,আজকে শুক্রবার নামাজে যেতে হবে। উঠে সকালের নাস্তা করে নাও।

তামিম: আম্মু একটু পরে উঠি তুমি এখন যাও।

মা: আর কতক্ষণ ঘুমাবা? একটু পরে তোমার ভাইয়ার বাসায় যাব সে খেয়াল আছে? আজকে আমাদের ঐ বাসাতে দাওয়াত।

তামিম: হ্যাঁ জানি তোমরা চলে যাও আমি নামাজ পড়ে আমার কিছু কাজ আছে সেগুলো শেষ করে যাব চিন্তা কর না। তুমি আব্বুকে নিয়ে চলে যাও।

মা: আচ্ছা ঠিক আছে যাওয়ার সময় দরজা ভালোভাবে আটকে রেখে যেও কেমন? আমরা এখন বের হচ্ছি।

তামিম: আচ্ছা যাও আমি ঘুমাই।

...

এরপর তামিমের মা তামিমকে দরজা বন্ধ করতে বলে চলে গেলেন। তামিমও তার মা-বাবা'কে বিদায় জানিয়ে আবারও ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে যায়।

কিন্তু তার এই ঘুম বেশিক্ষণ টিকে রইল না কারণ তার ফোনটি বেজে উঠল বিকট শব্দে।

এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ফোনটি হাতে নিয়ে দেখে জেসিকা ফোন দিয়েছে তাই ফোনটি ধরার পর ওপাশ থেকে জেসিকা বলে-

জেসিকা: কী জনাব ঘুম ভাঙছে আপনার?

তামিম: ঘুমাতে আর দিলে কোথায়? সকাল থেকে আম্মুর ডাকাডাকি এখন আম্মুর পর তুমি ফোন দিয়েছ।

জেসিকা: আচ্ছা তাহলে সারাদিন ঘুমাও কেউ ফোন দিবে না।

তামিম: নাহ এখন আর ঘুম আসবে না। কী কর এখন?

জেসিকা: এই শাড়ী পরছিলাম।

তামিম: পরা হয়ে গিয়েছে নাকি এখনও পরছ?

জেসিকা: নাহ পরা হয়ে গিয়েছে।

তামিম: ওহ তা শাড়ী পরে কার সাথে ঘুরতে যাবা?

জেসিকা: কোথায় আর যাব? আমার জামাইত এখনও পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে তাহলে কার সাথে যাব ঘুরতে।

তামিম: ওহ এই ব্যপার শোন না বাসা থেকে বের হয়ে যাও এখনই।

জেসিকা: তুমি আসতেছ এখন?

তামিম: নাহ।

জেসিকা: তাহলে?

তামিম: তুমি আমার বাসায় চলে এসো।

জেসিকা: কী বল মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে না কী?

তামিম: কেন মাথা খারাপ হবে?

জেসিকা: তুমি আমাকে বাসায় ডাকতেছ,লোকে দেখলে কী বলবে? আর আমি বিয়ের আগে তোমার বাসায় কেন যাব?

তামিম: আরে বাবা আমি কী তোমাকে খারাপ কিছু করতে বলছি নাকী?

জেসিকা: বাসায় ডাকা মানেইত কিছু করবা।

তামিম: তোমার কী আমাকে এমন মনে হয়? পাঁচ বছর ধরে প্রেম করছি কখনও তোমাকে সেইভাবে ছুয়ে দেখেছি বল?

জেসিকা: নাহ তবে।

তামিম: আব্বু-আম্মু ভাইয়ার বাসাতে গিয়েছেন সেখানেই দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করবেন তাই দুপুরে আর রান্না-বান্না করেন নাই। আমার ভাইয়ার বাসায় যেতে রাত হয়ে যাবে কারণ বাসায় কিছু কাজ রয়েছে তাই তুমি এসে রান্না করে দিয়ে যাও।

জেসিকা: ইসস শখ কত আমি মনে হয় তোমার বিয়ে করা বউ,যে রান্না করে দিয়ে আসব।

তামিম: বউ হতে কতক্ষণ?

জেসিকা: হুম দেখা যাবে এখনও বাসায় বলতে পারলে না আমার কথা।

তামিম: সময় আসুক বলে দিব। তুমি দ্রুত চলে এসো।

জেসিকা: আচ্ছা আমি আসছি।

...

জেসিকার সাথে কথা শেষ করে তামিম বিছানা থেকে উঠে বাথরুমে চলে যায় গোসলের জন্য কারণ একটু পরেই নামাজে যেতে হবে তাকে।

গোসল শেষে খাওয়া-দাওয়ার পর কম্পিউটারে বসে তার ব্যবসার কাজ নিয়ে। তখনই তার বাসার কলিংবেলটি বেজে উঠে।

তার আর বুঝতে বাকী রইল না যে জেসিকা চলে এসেছে তাই সে দ্রুত দরজা খুলতে চলে যায়। দরজা খুলে দেখে জেসিকা দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে। জেসিকাকে আজকে শাড়ীতে দেখে তামিমের মাথা খারাপ হয়ে যায়।

জেসিকাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে শাড়ীর সাথে হাল্কা মেকআপ নিয়েছে যার জন্য তাকে অনেক মানিয়েছে।

তামিমকে এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে জেসিকা বলল-

জেসিকা: কী এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকবে নাকী আমাকে ভিতরে আসতে বলবে?

তামিম: উপস ভুলেই গিয়েছিলাম আসো ভিতরে। (হাত টেনে ভিতরে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়)

জেসিকা: এবার বল তোমাদের রান্নাঘর কোথায়? রান্না করে দিয়েই আমি চলে যাব।

তামিম: আস্তে একটু বস বিশ্রাম নাও এই প্রথম এসেছো আমার বাসায়। আগে বল কী খাবে?

জেসিকা: নাহ কিছু খাব না তুমি আমাকে বল রান্নাঘর কোথায় আর কী রান্না করব?

তামিম: বস তোমাকে একটু দেখে নেই আজ খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে, মন চাইছে আজকেই সব ভূলগুলো করে ফেলি।

জেসিকা: মোটেও না এতবছর যখন চুপ ছিলে আজকেও থাকো সব বিয়ের পর হবে।

তামিম: আচ্ছা একটু কাছে আসো না তোমাকে ভালোভাবে দেখি।

তামিম জেসিকার কাছে আসতে চায় কিন্তু জেসিকা তামিমকে ধাক্কা দিয়ে সরে যায় অন্যদিকে কিন্তু তামিম তাকে ছাড়ার পাত্র নয়।

তামিম এখন জেসিকার কাছে এগিয়ে যাচ্ছে আর জেসিকা পিছনের দিকে সরে যাচ্ছে এভাবে এগোতে এগোতে একপর্যায়ে দেওয়ালের সাথে পিঠ ঠেকে যায় তার আর যাওয়ার পথ থাকে না। এদিকে তামিম তার খুব কাছে চলে এসেছে দুজনের নিশ্বাস এখন শোনা যাচ্ছে।

তামিম তার মুখটি বাড়িয়ে নিয়ে আসছে জেসিকার মুখের কাছে জেসিকা এখন চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে তামিমের ঠোঁটের স্পর্শের অপেক্ষায়।

তামিম তার মুখ জেসিকার মুখের কাছে নিয়ে এসে বলে " রান্নাঘরের দরজা ঐপাশে"

তামিমের এ কথা শুনে জেসিকা চোখ খুলে দেখে তামিম তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। জেসিকা আর কিছু না বলে দৌড়ে রান্নাঘরে চলে যায়।

রান্নাঘরের এদিক ওদিক ঘুরে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে রান্না শুরু করে দেয়।

এদিকে তামিম তার কাজ করে যায় কিছুক্ষণ পর আযান দিলে নামাজে চলে যায়।

নামাজ পড়ে এসে দেখে জেসিকার রান্না শেষ হয়ে গিয়েছে তাই দুজনে খাওয়া-দাওয়া করে নেয়।

খাওয়া শেষ করে দুজনে বসে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করে এবং মুভি দেখে। শুয়ে শুয়ে মুভি দেখতে দেখতে কখন যে দুজনে ঘুমিয়ে যায় কেউ বুঝতে পারে না।

হঠাত কলিংবেলের শব্দে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই সময় কে আসতে পারে ভেবে পায় না তামিম কিন্তু পরমূহুর্তে মনে পড়ে যায় তার আব্বু-আম্মুর বিকালে ফিরে আসার কথা।

এবার তাদের ধরা খাওয়ার পালা কী করবে বুঝতে পারছে না।

জেসিকা এবার বলে-

জেসিকা: এই এখন কী হবে?

তামিম: আমিও তাই ভাবছি আব্বু-আম্মু চলে আসছেন এখন কী করব?

জেসিকা: আমার উচিৎ ছিল রান্না করে দিয়ে চলে যাওয়া এভাবে শুয়ে মুভি দেখে ঘুমানো ঠিক হয় নাই।

তামিম: সেসব কথা পরে ভাবা যাবে এখন তোমাকে কোথায় লুকানো যায় সেটা ভাবতে হবে।

জেসিকা: আচ্ছা আমি খাটের নীচে লুকিয়ে যাই।

তামিম: সেই কপাল আমার নাই আমাদের সব খাট হল বক্স করা নিচে জায়গা নাই।

জেসিকা: তাহলে কী করব? বাথরুমে চলে যাই।

তামিম: আমাদের বাসায় দুইটা বাথরুম একটা আব্বু-আম্মুর ঘরে অন্যটা ডাইনিংরুমে। আব্বু-আম্মুর বাথরুমে তারা রাত্রে ব্যবহার করেন। এছাড়া সবসময় ডাইনিংয়েরটাই ব্যবহার করা হয়।

জেসিকা: তাহলে কোথায় লুকাবো এদিকেত কলিংবেল বেজেই চলেছে।

তামিম: আচ্ছা তুমি বিছানাতে শুয়ে পড় কোলবালিশ কোলে নিয়ে আমি তোমার উপর ল্যাপ উঠিয়ে দিচ্ছি ঠিক আছে।

জেসিকা: আচ্ছা ঠিক আছে।

এরপর জেসিকাকে ল্যাপ নিয়ে সুন্দরভাবে ঢেকে দিয়ে তামিম দৌড়ে যায় দরজা খুলতে।

দরজা খুলে দেখে তার আব্বু-আম্মু আর ভাইয়া-ভাবি দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু তারা তামিমকে দেখে অবাক হয়ে যায় কারণ তামিমের হাতে রয়েছে বিশাল বড় একটি চকলেট কেক।

চকলেট কেকটি হাতে নিয়ে তামিম বলল " সারপ্রাইজ,শুভ বিবাহ বার্ষিক আব্বু-আম্মু"

তামিমের আব্বু-আম্মু ছেলের এমন কান্ড দেখে অবাক হয়ে যান। তবে তাদের অবার হওয়ার শেষ ছিল না যখন তামিমের বড় ভাই আর ভাবি দুজনেও তামিমের সাথে এক হয়ে মা-বাবাকে সারপ্রাইজ দেয়।

আসলে এগুলো তাদের পূর্ব পরিকল্পিত।

ছেলে-মেয়েদের এমন কান্ড দেখে মা-বাবা দুজনেই খুশি। তারা তাদের নিজেদের ঘরে ঢুকে আরও অবাক হয়ে যায় কারণ তাদের ঘর আজকে খুব সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে।

সব শেষে তারা খুব খুশি হয়েছেন। এখন প্রস্তুতি চলছে কেক কাটার জন্য।

যখন কেক কাটা হবে তখন সবাইকে বাধা দিয়ে তামিম বলে " আরও একটি সারপ্রাইজ বাকি আছে তোমাদের সবার জন্য"

সবাই তামিমের দিকে তাকায় প্রশ্নের দৃষ্টিতে। তামিম তাদের তোয়াক্কা না করে দৌড়ে নিজের ঘরে চলে যায় এবং কিছুক্ষণ পর তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়।

ড্রয়িংরুমে উপস্থিত সকলেই অবাক হয়ে যায় কারণ তামিম এবার সাথে করে জেসিকাকে নিয়ে এসেছে।

সবার সামনে এখন তামিম আর জেসিকা দাঁড়িয়ে আছে। জেসিকা লজ্জায় মাথা তুলে দাড়াতে পারছে না।

তামিমের ভাই-ভাবিও জানেন না এ বিষয়ে তাই তারাও এখন অবাক। বাসার ভিতর এখন থমথমে পরিবেশ কারও মুখে কোনো কথা নেই।

নীরবতা ভেঙ্গে তামিম নিজেই বলতে শুরু করল-

" আব্বু-আম্মু,ভাইয়া-ভাবি ওর নাম জেসিকা আমরা একে অপরকে ভালোবাসি"

এই কথাটি বলতে তামিমের বুক কেপে যায় ভাবছে এখনই থাপ্পড় পড়বে তার মুখের উপর।

দুজনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। জেসিকা ভাবছে আজ কী হবে তাদের দুজনের?

সবার নীরবতা ভেঙ্গে তামিমের আব্বু বললেন-

আব্বু: কতদিন ধরে তোমাদের সম্পর্ক?

তামিম: পাঁচ বছর ধরে।

আব্বু: এতদিন পর এখন বলার সময় হল?

তামিম: আসলে সেভাবে সুযোগ করে উঠতে পারি নাই।

আব্বু: আজকে ধরা না পড়লে হয়ত জানতেও পারতাম না।

তা তোমরা কী জানতে এ বিষয়ে? (তামিমের ভাইয়া-ভাবিকে উদ্দেশ্য করে)

ভাইয়া-ভাবি: নাহ আব্বু আমরা জানতাম না কিছুই।

আব্বু: তা এভাবে কী এর আগেও এখানে নিয়ে এসেছো?

তামিম: নাহ আব্বু আজকেই প্রথম নিয়ে এসেছি। বিশ্বাস কর আমাদের মধ্যে খারাপ কোনো সম্পর্ক নেই আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। তাছাড়া আজকে এসব আয়োজন আমার একা হাতে করা সম্ভব ছিল না তাই ওকে নিয়ে এসেছি আমার সাহায্য করার জন্য।

আব্বু: ওহ, তা তোমার বাসা কোথায়? (জেসিকাকে উদ্দেশ্য করে)

জেসিকা: জ্বী আংকেল সোনাডাঙ্গাতে (খুলনা)।

আব্বু: বাবা কী করেন?

জেসিকা: বাবা ব্যবসায়ী।

আব্বু: কয় ভাইবোন তোমরা?

জেসিকা: আমার ছোট একটা ভাই আছে।

আব্বু: আমার ছেলেকে ভালোবাসো?

জেসিকা: জ্বী আংকেল।

আব্বু: তোমার বাসার ঠিকানা আর তোমার বাবার ফোন নাম্বার দিয়ে যাও আমি তার সাথে কথা বলব। এভাবে তোমাদেরকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

এরপর জেসিকা তার বাবার ফোন নাম্বার আর ঠিকানা দিয়ে চলে যেতে চায় তখন আব্বু তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে-

আব্বু: কোথায় যাচ্ছ?

জেসিকা: বাসায়।

আব্বু: কী ভেবেছ এতো সহজে তোমাকে যেতে দিব? সারাদিন অনেক কষ্ট করেছ। আমি জানি আমার এই অলস ছেলে তোমাকে দিয়েই সব কাজ করিয়েছে তাই এখন কোথাও যেতে পারবে না একবারে রাত্রে খাওয়া-দাওয়া করে যাবে কেমন?

জেসিকা: জ্বী ঠিক আছে আংকেল।

এবার তামিমের আব্বু সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন " কী সবাই চুপ হয়ে আছো কেন? নাও আজকে আনন্দ কর"

এরপর সবাই মিলে উদযাপন করে তামিমের আব্বু-আম্মুর বিবাহ বার্ষিকী।

রাত ১০টা..

এখন ফাকা রাস্তায় তামিম আর জেসিকা দুজনে পাশাপাশি হাত ধরে হাটছে।

বাইরে ঠান্ডা হাওয়া বইছে আর এই হাওয়াতে দুজনের শরীর কিছুটা শিউরে উঠছে।

কিছুক্ষণ হাটার পর জেসিকা বলল-

জেসিকা: আজকে যে ভয়টা পেয়েছিলাম কী বলব তোমাকে। তবে তোমার সাহসের তারিফ করতে হবে। যা পাঁচ বছর ধরে পার নাই আজকে খুব সুন্দরভাবে পেরে গিয়েছ অবশ্য এর পিছনে ধরা পড়ে যাওয়া এই বিষয়টি জড়িয়ে আছে তা না হলে তুমি আজকেও বলতে পারতে না।

তামিম: কে বলেছে পারতাম না?

জেসিকা: তুমি যে পরিমাণ ভীতু কীভাবে বলতে আব্বু-আম্মুকে?

তামিম: এই যে আজ বলে দিলাম সব কিছু।

জেসিকা: সেটাত ধরা পড়ে যাওয়ার কারণে।

তামিম: নাহ এসব ছিল আমার পরিকল্পনা।

জেসিকা: মানে?

তামিম: আচ্ছা জেসিকা তোমার সাথে আমার প্রেম পাঁচ বছর ধরে,কিন্তু কখনও তোমাকে আমি আমার বাসায় ডেকেছি বল? যতই আমার মা-বাবা বাইরে থাকুক না কেন।

জেসিকা: নাহ।

তামিম: তাহলে আজ কেন ডেকেছি তুমি একটিবারও বুঝতে পারলে না। আজকে এই সব কিছু আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে। ঐটুকু ঘর সাজানো আমি নিজেও করতে পারতাম তবে তোমাকে নিয়ে এসেছি আমার বাসায় আজকে আব্বু-আম্মুর সাথে দেখা করানোর জন্য।

জেসিকা: বাব্বাহ তোমার অনেক বুদ্ধি।

তামিম: হুম আর দেখেছ কীভাবে সবার সাথে ভালোবাসা দিবস পালন করলাম। আজ যদি তোমার সাথে ঘুরতে যেতাম তাহলে বাসায় সময় দিতে পারতাম না। বাসায় সময় দিতে যেয়ে তোমাকে সময় দিতে পারতাম না তাই সবাইকে একসাথে নিয়ে সময় কাটিয়েছি কারণ আমি চাই না আমার ভালোবাসার মানুষগুলোকে কষ্ট দিতে।

জেসিকা: হুম আমি খুব ভাগ্যবতী তোমার মতো একজন মানুষকে আমার জীবনে পেয়ে।

তামিম: আমিও ঐটাই বলি হা হা হা।

জেসিকা: তবে তোমাকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ।

তামিম: কেন?

জেসিকা: আজকে তোমার সুযোগ ছিল আমাকে কাছে পাওয়ার জন্য। তুমি চাইলে এটা করতে পারতে আমার বাধা দেওয়ার সুযোগ ছিল না।

তামিম: কী হত তাহলে? আমি নাহয় তৃপ্তি পেতাম কিন্তু তুমি কষ্ট পেতে আর আমাকে অন্যসব ছেলের মতো ভেবে নিতে। আসলে জেসিকা একদিন ভোগ করার থেকে সারাজীবন ভোগ করার মজাটাই আলাদা। আমি তোমাকে সারাজীবনের জন্য চাই।

জেসিকা: আমি তোমাকে হারাতে চাই না তামিম। তুমি আসলেই একজন মহৎ মানুষ আমাকে আজকে যে সম্মান দিয়েছ এতেই আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি।

তামিম: হুম এইবারের ভালোবাসা দিবসে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে কর আগামীতে গর্ভবতী হয়ে যাবে।

জেসিকা: যাও ফাজিল ছেলে কোথাকার। আমি তোমাকে বিয়ে করব কোন বাবদ তুমি এখনও আমাকে বিয়ের জন্য প্রপোস করেছ? এখনই কর নাহলে কিন্তু বিয়ে করব না।

তামিম: এখনই করতে হবে?

জেসিকা: হ্যাঁ,এখনই করতে হবে আজকে ভালোবাসা দিবস তাই আজকেই আমাকে বিয়ের প্রপোজ কর।

তামিম: এখনত রাত হয়ে গিয়েছে ভালোবাসা দিবসও শেষ।

জেসিকা: কে বলেছে ভালোবাসা দিবস শেষ? এখন বাজে রাত ১০:৩০ এখনও অনেক সময় বাকী আছে।

তামিম: কিন্তু আমার কাছে ত কোনো ফুল বা আংটি নেই তাছাড়া আমি কোনো ছন্দ কবিতাও বলতে পারি না যে প্রপোজ করব।

জেসিকা: কিচ্ছু লাগবে না তুমি শুধু আমাকে প্রপোজ করলেই হচ্ছে।

তামিম: আচ্ছা ঠিক আছে।

...

এরপর তামিম জেসিকার সামনে দাঁড়িয়ে তার দুই হাত নিজের হাতের মাঝে শক্ত করে ধরে। এরপর বলে "Will you Marry Me Jessica?"

তামিমের কথা শেষ হতেই জেসিকা চোখ বন্ধ করে এক নিশ্বাসে বলে " Yes I do."

এরপর দুজনে হাত ধরাধরি করে নিজ গন্ত্বব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।

<<<<<<<<<<সমাপ্ত>>>>>>>>>

(সবাইকে জানাই ভালোবাসা দিবস এবং পহেলা ফাল্গুনের শুভেচ্ছা। ভালো থাকবেন,ধন্যবাদ।)

Copyright: February 14,2020 at 05:21 AM.

Maruf Tamim (Author).
 

Users who are viewing this thread

Back
Top