What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ ২০২২ : রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি (1 Viewer)

Joined
Aug 2, 2018
Threads
244
Messages
21,963
Credits
140,759
Guitar
Statue Of Liberty
Helicopter
Television
Laptop Computer
Lollipop
2f75gV4h.jpg

বিবি-বাচ্চাদের নিয়ে শেষ ঢাকার বাইরে বেরাতে গেছি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কক্সবাজার-টেকনাফে। ডিসেম্বর মাসে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ থাকে দীর্ঘ দিন। বেরানোর জন্যও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ার সময়টাই বেস্ট। এবার ইচ্ছে ছিলো ডিসেম্বরেই উত্তরবঙ্গ বেরাতে যাওয়ার, যদিও এই সময়টায় ঐ দিকে প্রচন্ড শীত থাকে। নানান কারণে ডিসেম্বররে যাওয়া হয়ে উঠেনি, তবে শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ রাতে বেরিয়ে পরি উত্তরবঙ্গের পথে। আমাদের এবারের ভ্রমণটিকে বলা যেতে পারে হ্যারিটেজ ট্রিপ। তাহলে প্রথম থেকেই শুরু করি।

বিবি-বাচ্চাদের আবদার ছিলো ট্রেনে যাবার। তাই প্রথমেই অনলাইনে দ্রুতজান ট্রেনের ঢাকা টু পঞ্চগড় (কমলাপুর টু বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন) টিকেট কেটে নেই। যথা সময়ে ব্যাগ-প্যাগ নিয়ে স্টেশনে পৌছে দেখা গেলো ট্রেন আসেনি। ঘন্টা খানেক পরে ট্রেন এসে পৌছায়। সব মিলিয়ে প্রায় ঘন্টা দেড়েক লেইটে ট্রেন রওনা দেয় কমলাপুর থেকে। দেখতে দেখতে সময় কাটে, ট্রেন এগিয়ে চলে। কিন্তু মাঝ রাতের আগেই আমি সিন্ধান্ত নেই পঞ্চগড়ে পর্যন্ত না গিয়ে বিরামপুরে নেমে যাবো। আগে প্লান ছিলো পঞ্চগড় থেকে দেখতে দেখতে বিরামপুরে এসে শেষ করবো। এখন ঠিক করলাম বিরামপুর থেকে দেখতে দেখতে পঞ্চগড়ে গিয়ে শেষ করবো। যেই ভাবা সেই কাজ, ভোর সাড়ে চারটার সময় ট্রেন পৌছায় বিরামপুরে। আমরাও নেমে পরি সেখানে। একটি ভ্যান নিয়ে চলে আসি রাসিন রেস্ট হাউসের সামনে। ছোট ভাই রাসিন জানে আমি ৫ তারিখে আসবো, অথচো আজ ৩ তারিখ ভোরেই এসে হাজির হয়েছি। হোটেলের কর্মচারিকে কয়েকবার বেল বাজানোর পরে ঘুম থেকে তোলা গেলো। রাসিনকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ পাঠিয়ে ঘুম দিলাম ভোরে।

সকালে সাড়ে ৮টার দিকে রাসিন সকালের নাস্তা পরটা-ডিম ভাজি-ডাল ভূনা-মিষ্টি পাঠিয়ে দিলো রুমে। সকাল ৯টার দিকে বিবি-বাচ্চাদের ডেকে তুলে দিলাম ঘুম থেকে। সকলে দ্রুতই তৈরি হয়ে নিলো ভ্রমণ শুরুর জন্য। সকালের নাস্তা শেষে বেরিয়ে এলাম বাইরে। রাসিনের সাথে দেখা হলো, কথা হলো। জানালাম আজ সারা দিনের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছি। সন্ধ‍্যার দিকে ফিরবো। রাসিন বারবার করে বলে দিলো রাতের খাবার ওর বাড়িতেই খেতে হবে। রাজি হতেই হলো। রাসিনকে বিদায় দিয়ে চলে এলাম সিএনজি স্টেশনে। ৮০০ টাকায় একটি সিএনজি রিজার্ভ করলাম নির্দিষ্ট কয়েকটি যায়গায় আমাদের ঘুরিয়ে আনবে।

3n1kqYth.jpg
 
আজকের দিনের আমাদের প্রথম গন্তব্য রতনপুর জমিদার বাড়ি বা রখুনি কান্ত জমিদার বাড়ি
সিএনজি ছুটে চললো রতনপুরের দিকে। চারপাশে তখনো বেশ কুয়াশা আর ঠান্ডাটাও প্রচন্ড। বাইরের বরফ শীতল বাতাশ ছুড়ির ফলার মতো এসে বিধছে শরীরে। সিএনজির দুইপাশের পর্দা নামিয়ে দিয়ে মোটামুটি ভাবে বাতাস আটকে দেয়া গেলো। সকাল সারে দশটা নাগাদ পৌছে গেলাম দিনের প্রথম গন্তব্য রতনপুর জমিদার বাড়িতে।


জমিদার বাড়ি সম্পর্কে উইকি ও অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যায় -
ব্রিটিশরা অষ্টাদশ শতকে ফুলবাড়ি জমিদারের পক্ষে খাজনা আদায়কারী হিসাবে রাজকুমার সরকারকে বিরামপুরের রতনপুর কাচারীতে প্রেরণ করে। এখান থেকে তিনি বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ফুলবাড়ী এলাকার প্রজাদের নিকট থেকে খাজনা আদায় করতেন। আদায়কারী রাজকুমার সরকারের কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে জমিদার তার বোনকে রাজকুমারের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের উপহার হিসেবে সাড়ে ৬শ বিঘা জমিসহ রতনপুর কাচারী উপহার দেন।


ApnDDvuh.jpg

 
JAD8BvQh.jpg

সেই সময় সেখানে প্রতাপশালী সাঁওতাল রঘু হাসদার আড়াইশত একর জমি ও অঢেল অর্থের মালিক ছিলেন। রাজকুমার বঘু হাসদার কাছ থেকে ৫ বস্তা কাঁচা টাকা ধারে নিয়ে অন্য জমিদারের আরো ৩০০ একর জমি নিলামে কিনে নেন। এ ঘটনার ২বছর পর রঘু হাসদার ২৫০ বিঘার ফলের বাগান চতুরতায় দখল করে নিয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে উপকারী রঘু হাসদাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করেন। মোট ১২শ বিঘার ফলদ, বনজ ঔষধি জমির মালিক ধূর্ত জমিদার রাজকুমার আরাম আয়েশের জন্য বিলাস বহুল এই সুদৃশ্য দ্বিতল অট্রালিকা নির্মাণ করেন।
 
ki2Ke42h.jpg


জমিদার রাজকুমারের রতন কুমার সরকাররখুনি কান্ত সরকার নামে দুই পুত্র সন্তান ছিলো। বড় ছেলে রতন কুমারের বয়স যখন ১৬ বছর তখন মন্দিরের পুকুরে গোসল করতে গিয়ে সে মারা যায়। পুত্র শোকে কিছুদিন পরে রাজকুমারের মৃত্যু হয়। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে অঢেল সম্পদ, বাগান ও পুকুরসহ ১২শ বিঘা জমিদারী লাভ করেন রখুনি কান্ত সরকার।

 
Rt8bi2oh.jpg

রখুনি কান্ত সরকার জমিদার থাকাকালীন সময়ে তার বাড়িতে ১০০টি বিড়াল পুশেছিলেন, বিড়ালগুলোর দুধের বাটি দিলেও দুধ পান করত না যতক্ষন পর্যন্ত মালিকের হুকুম না হত।

জমিদার রখুনি কান্ত সরকারের কোন সন্তান ছিলনা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে রখুনী কান্ত বাবু স্বস্ত্রীক একটি মহিষের গাড়িতে চড়ে রাতের আঁধারে কলকাতার উদ্দ্যেশে পাড়ি জমান।

কিছু কাল জমিদার বাড়িটি ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহার হলেও ঝূঁকিপূর্ণ হওয়ায় এটি এখন এক রকম পরিত্যাক্ত হয়ে পরে আছে। শুধু একটি মাত্র ঘর পাশের স্কুলেটি ব্যবহারর করে।

 
জমিদার বাড়িটি দোতলা, আরো ভালো ভাবে বললে বলতে হবে দেড় তলা। সামনের অংশের সদর দিয়ে ভিরতে ঢুকে গেলে নিচে সম্মুখ অংশ পেরিয়ে উপরে উঠার সিড়ি। অনায়াসেই এখনো দোতলায় উঠে যাওয়া যায়। উপরে কয়েকটি রুম ছিলো নিশ্চয় একসময়। আর সামনের আংশ ছিলো উন্মুক্ত।

CZmmcSPh.jpg



 

Users who are viewing this thread

Back
Top