অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা প্রত্যেক প্রতিযোগীর সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই জুড়ে থাকে দেশের মানুষের প্রত্যাশা, আবেগ, ভালোলাগা। প্রতিটি ইভেন্টের প্রথম তিন স্থানাধিকারীকে যে যথাক্রমে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হয় একথা আমরা সবাই জানি, কিন্তু কেমন হবে বলুন তো যদি এই পদকের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে আপনি নিজেও জড়িয়ে থাকেন?? বিশ্বাস করা কঠিন তাই না, কিন্তু টোকিও ২০২০ অলিম্পিক সমস্ত জাপানবাসীকে দিয়েছে এমনই এক দুষ্প্রাপ্য সুযোগ। কিভাবে এই অসম্ভব সম্ভব হলো এবার সেটাই বলি। জাপানে অলিম্পিক আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয় প্রায় বছর তিনেক আগে। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস নাগাদ টোকিও অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি জাপানের সমস্ত নাগরিকের কাছে এক অদ্ভুত আবদার করে বসলেন। আগামী দু'বছর, অর্থাৎ মার্চ ২০১৯ এর মধ্যে প্রত্যেকের কাছে যত বাতিল, পুরোনো মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও অন্যান্য ব্যক্তিগত ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র রয়েছে সেগুলো অলিম্পিকের পদক তৈরির জন্য "দান" করতে। ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র, অলিম্পিকের পদক, যোগাযোগটা খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন, কিন্তু একটু ভেবে দেখলে কাজটা অসাধ্য নয়। সোনা, রুপো ও তামার মতন ধাতু খুব ভালো তড়িৎ পরিবাহী হওয়ার ফলে আধুনিক যেকোনো ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের সার্কিটে এদের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। এদের মধ্যে আবার সোনার ক্ষয় খুব কম হয় বলে প্রায় প্রতিটি স্মার্ট ফোনের মধ্যেই প্রায় ২০০ মিলিগ্রামের মতন সোনা ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন সূক্ষ কানেকশনের কাজে।
টোকিও অলিম্পিক আয়োজক কমিটি লক্ষ্য করলেন বাতিল ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধাতুর এই বিপুল সম্ভারকে। ২০২০ মেডেল প্রজেক্ট নামের এই দেশব্যাপী কর্মকান্ডের প্রথম অংশ অর্থাৎ মানুষের কাছ থেকে ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হলো প্রায় ১৬০০টি মিউনিসিপ্যালিটির হাতে, যাতে শুধু শহর নয়, গ্রামের মানুষও যোগ দিতে পারে এই পরিকল্পনায়। আর এর ফলও হলো আশ্চর্য। গোটা জাপানের প্রায় ৯০% অঞ্চলের মানুষ সাগ্রহে জমা দিলেন তাঁদের ফেলে দেওয়া মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি যন্ত্র এবং দু'বছরের শেষে গোটা পৃথিবী অবাক হয়ে দেখলো ইলেক্ট্রনিক্স বর্জ্য বা e-waste নিয়ন্ত্রণের এক আশ্চর্য সফল বাস্তবায়ন। e-waste প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে আধুনিক প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র যেমন সহজলভ্য হয়েছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাতিল যন্ত্রের সংখ্যা। ২০১৯-২০ সালের হিসেবে গড়ে প্রত্যেকটি মানুষ সারা বছর প্রায় ৮ কেজির মতন e-waste তৈরি করে যা এখন পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টোকিওর এই মেডেল প্রজেক্টে দু বছরের শেষে সংগ্রহ করা e-waste এর পরিমাণ দাঁড়ালো প্রায় ৭৯ টন বা ৭২,০০০ কিলোগ্রাম যার মধ্যে মোবাইল ফোনের সংখ্যাই প্রায় ৬০ লক্ষ। এই সমস্ত যন্ত্র থেকে অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকের অংশ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ধাতব অংশকে গলিয়ে পাওয়া গেল প্রায় ৩২ কেজির মতন সোনা, ৩,৫০০ কেজি রুপো ও ২,২০০ কেজি ব্রোঞ্জ, যা থেকে তৈরি করা হলো অলিম্পিক প্যারাঅলিম্পিকের সমস্ত ইভেন্টের জন্যে প্রায় সব মিলিয়ে ৫,০০০ পদক। আর এর ফলেই টোকিও অলিম্পিক হয়ে উঠলো ইতিহাসের প্রথম অলিম্পিক যেখানে সমস্ত পদক তৈরি হয়েছে রিসাইকেল করা ধাতু থেকে। আর প্লাস্টিকের অংশগুলো আরো বিভিন্ন প্লাস্টিকজাতীয় বর্জ্য বিশেষ করে সমুদ্র থেকে পাওয়া প্লাস্টিকের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে পদক নেবার সময় প্রতিযোগীদের দাঁড়ানোর স্ট্যান্ড, যা পরে জলের বোতল তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। প্রসঙ্গত, অলিম্পিক আয়োজনের বিশাল ব্যায়ের প্রশ্ন বারবারই লজ্জায় ফেলেছে আয়োজক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটিকে। তাই গত রিও অলিম্পিক (২০১৬) থেকেই পদক তৈরিতে রিসাইকলেড ধাতু ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। রিওতে দেওয়া সমস্ত রুপোর পদক ও প্রায় ৩০% সোনার পদকের জন্যে প্রয়োজনীয় রুপো জোগাড় করা হয়েছিল রিসাইক্লিংএর মাধ্যমে। তবে ১০০% এর নজির এই প্রথম।
ইলেক্ট্রনিক্স বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে জাপানের এই অনন্য সাফল্যের ফলে অলিম্পিকের পরিবেশ বান্ধব ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হলো তেমনই গোটা পৃথিবী পেল e-waste সামলানোর এক নতুন দিগন্ত। তাই ভাবতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে আজ নীরাজ চোপড়া, মিরাবাই চানু বা পি ভি সিন্ধুর গলায় অলিম্পিকের যে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জের মেডেল শোভা পাচ্ছে কিছু বছর আগে পর্যন্ত তাই ছিল কয়েকজন জাপানির রোজকার ব্যবহারের স্মার্টফোনটি।
টোকিও অলিম্পিক আয়োজক কমিটি লক্ষ্য করলেন বাতিল ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রের মধ্যে থাকা বিভিন্ন ধাতুর এই বিপুল সম্ভারকে। ২০২০ মেডেল প্রজেক্ট নামের এই দেশব্যাপী কর্মকান্ডের প্রথম অংশ অর্থাৎ মানুষের কাছ থেকে ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হলো প্রায় ১৬০০টি মিউনিসিপ্যালিটির হাতে, যাতে শুধু শহর নয়, গ্রামের মানুষও যোগ দিতে পারে এই পরিকল্পনায়। আর এর ফলও হলো আশ্চর্য। গোটা জাপানের প্রায় ৯০% অঞ্চলের মানুষ সাগ্রহে জমা দিলেন তাঁদের ফেলে দেওয়া মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ইত্যাদি যন্ত্র এবং দু'বছরের শেষে গোটা পৃথিবী অবাক হয়ে দেখলো ইলেক্ট্রনিক্স বর্জ্য বা e-waste নিয়ন্ত্রণের এক আশ্চর্য সফল বাস্তবায়ন। e-waste প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে আধুনিক প্রযুক্তি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র যেমন সহজলভ্য হয়েছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাতিল যন্ত্রের সংখ্যা। ২০১৯-২০ সালের হিসেবে গড়ে প্রত্যেকটি মানুষ সারা বছর প্রায় ৮ কেজির মতন e-waste তৈরি করে যা এখন পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
টোকিওর এই মেডেল প্রজেক্টে দু বছরের শেষে সংগ্রহ করা e-waste এর পরিমাণ দাঁড়ালো প্রায় ৭৯ টন বা ৭২,০০০ কিলোগ্রাম যার মধ্যে মোবাইল ফোনের সংখ্যাই প্রায় ৬০ লক্ষ। এই সমস্ত যন্ত্র থেকে অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকের অংশ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ধাতব অংশকে গলিয়ে পাওয়া গেল প্রায় ৩২ কেজির মতন সোনা, ৩,৫০০ কেজি রুপো ও ২,২০০ কেজি ব্রোঞ্জ, যা থেকে তৈরি করা হলো অলিম্পিক প্যারাঅলিম্পিকের সমস্ত ইভেন্টের জন্যে প্রায় সব মিলিয়ে ৫,০০০ পদক। আর এর ফলেই টোকিও অলিম্পিক হয়ে উঠলো ইতিহাসের প্রথম অলিম্পিক যেখানে সমস্ত পদক তৈরি হয়েছে রিসাইকেল করা ধাতু থেকে। আর প্লাস্টিকের অংশগুলো আরো বিভিন্ন প্লাস্টিকজাতীয় বর্জ্য বিশেষ করে সমুদ্র থেকে পাওয়া প্লাস্টিকের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে পদক নেবার সময় প্রতিযোগীদের দাঁড়ানোর স্ট্যান্ড, যা পরে জলের বোতল তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। প্রসঙ্গত, অলিম্পিক আয়োজনের বিশাল ব্যায়ের প্রশ্ন বারবারই লজ্জায় ফেলেছে আয়োজক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটিকে। তাই গত রিও অলিম্পিক (২০১৬) থেকেই পদক তৈরিতে রিসাইকলেড ধাতু ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। রিওতে দেওয়া সমস্ত রুপোর পদক ও প্রায় ৩০% সোনার পদকের জন্যে প্রয়োজনীয় রুপো জোগাড় করা হয়েছিল রিসাইক্লিংএর মাধ্যমে। তবে ১০০% এর নজির এই প্রথম।
ইলেক্ট্রনিক্স বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে জাপানের এই অনন্য সাফল্যের ফলে অলিম্পিকের পরিবেশ বান্ধব ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হলো তেমনই গোটা পৃথিবী পেল e-waste সামলানোর এক নতুন দিগন্ত। তাই ভাবতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে আজ নীরাজ চোপড়া, মিরাবাই চানু বা পি ভি সিন্ধুর গলায় অলিম্পিকের যে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জের মেডেল শোভা পাচ্ছে কিছু বছর আগে পর্যন্ত তাই ছিল কয়েকজন জাপানির রোজকার ব্যবহারের স্মার্টফোনটি।