What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

শূন্য খাঁচা / কলির কেষ্ট (2 Viewers)

[[১১]]

মিঠুর সাথে কথা বলে একটু সাহস পাচ্ছি মনে।রাতে ফোনে অরুকে সব বললাম,ও যেন রাজিই ছিলো এই ব্যাপারে।হা শুভ আমিও এটাই ভাবছিলাম বাসা থেকে সমস্যা করলে আমরা কোর্টম্যারেজ করবো,তারপর বিয়েটা একবার হয়ে গেলে আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।তাছাড়া তুমি তো আর অযোগ্য পাএ না।
-হুম সেটা ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
-ভালো করছো!এই শোন না কিছুদিন পরই তো পহেলা ফাল্গুন তোমাদের ক্যাম্পাসে রাতে কতো অনুষ্ঠান হয়।বিশেষ করে ফানুষ উড়ানোটা শুনেছি দারুন হয়!!?
-আমিও শুনেছি।
-শুনেছো মানে!!দেখোনি কখনো??
-না গো কখনো যায়নি!!
-হে ভগবান!এ কেমন ছেলেরে বাবা!!তোমার ক্যাম্পাস আর তুমিই কখনো যাওনি অনুষ্ঠানে,তাও আবার ছেলে হয়ে।আমি তো মেয়ে বলে আমাকে রাতে বের হতে দেয়না।
-বুঝলাম!!এখন আসল কথা বলো?!
-হুম আসলে আমার রাতে ওই অনুষ্ঠান দেখার খুব ইচ্ছা কিন্তু বাসা থেকে তো যেতে দেয় না। নিয়ে যাবে আমায়??করুন ভাবে বললো অরু।
-সে না হয় যাবো কিন্তু তোমাকে তো বের হতেই দিবেনা তাহলে যাবে কি করে।
-সে আমি জানিনা!!যা বুদ্ধি করার তুমি করবে।বাচ্চা মেয়েদের আবদার করার মত করে অরু বললো!!
-আচ্ছা ভেবে দেখি।এখন তাহলে ঘুমিয়ে পরো।

এই প্রথম একটা ইচ্ছা প্রকাশ করলো অরু,কিন্তু কিভাবে কি করি সেটাই ভাবছি!!অফিসের কাজের চাপ মোটামুটি ভালোই কাটছে অফিসের দিন,ডিউটি করতে করতে কখন যে সময় চলে যায় বুঝতেই পারিনা।পুরো সপ্তাহের অফিসের ক্লান্তি দুর হয় সপ্তাহ শেষে অরুর সাথে দেখা করে।খুব সাদামাটা আমাদের ভালবাসার দিনগুলো,তবুও কত রঙ্গিন লাগে।বিশেষ কোন চাহিদা নেই আমাদের মধ্যে,না আছে উচ্চাকাঙ্খা,একদিন শুক্রবারে দেখার করার সময় একটা প্যাকেট দিলো।
-কি এতে?
-খুলেই দেখো না!
-আমি প্যাকেটা যত্ন করে খুললাম,খুলে দেখি খুব সুন্দর নীল রংয়ের একটা পাঞ্জাবী।
-পছন্দ হয়েছে তোমার?
-পছন্দ হবেনা কেন!?খুব পছন্দ হয়েছে।কিন্তু শুধু শুধু খরচ করার কি দরকার ছিলো?!
-একদম কথা বলবে না।তাহলে কিন্তু আমি খুব রাগ করবো। শোন পহেলা ফাল্গুন আমার সাথে তুমি এটা পরে রাতে অনুষ্ঠান দেখতে যাবে।
-সে না হয় গেলাম,কিন্তু কি ভাবে সেটাই ভাবছি সোনা।
-সেটা আমি ঠিক করেছি। জানতাম তুমি পারবে না।
-সত্যি হার মানলাম তোমার কাছে,কিন্তু তুমি যেহেতু উপায় বের করেছো সো আমি চিন্তা মুক্ত হলাম।এখন বলো কি উপায় বের করলে?
-দেখ মা যেহেতু সব জানে তাই মাকে সত্যিটা বলবো,আর মাকে দিয়ে বাবাকে বলাবো সাথে আমিও বলবো যে বান্ধবীর জন্মদিনের একটা ঘরোয়া অনুষ্ঠান আছে ওখানে যাবো।
-হুম বুদ্ধি খারাপ না।ওকে তাহলে তাই হবে।তারপর সেদিনের মত দুজন বিদায় নিলাম।

দিনগুলা স্বপ্নের মত কেটে চলেছে।ইতি মধ্যো একটা সুখবর পেলাম মায়ের কাছ থেকে।মা বাবা কে আমার আর অরুর বিষয়টা বলেছে,এমনকি অরুর ছবিও দেখিয়েছে।ছেলের যখন পছন্দ আর মেয়েটাও দেখতে ভালো।আর ছেলেও ভালো বেতনের চাকরি করছে তাই বাবার এ বিয়েতে অমত নেই। সব থেকে বড় অবাক হলাম মায়ের পরের কথা শুনে,সেটা হলো মায়ের সাথে অরুর প্রতিদিন কথা হয়,যেটা আমি হালকা আন্দাজ করেছিলাম আগেই,কিন্তু অরুর সাথে যে বাবার ও ফোনে কথা হয়েছে একবার সেটা আজ শুনলাম। এতোটা আমি স্বপ্নেও আশা করিনি।তবুও মনটা খুশি অন্তত আমার পরিবারের কারো অমত নেই।

রাতে অরুর সাথে কথা বলে একটু রাগ দেখালাম,কেন এসব আমাকে বলেনি।ওর সোজা কথা এই যে মিষ্টার আমার উপর রাগ দেখিয়ে লাভ নেই।পারলে বাবাকে বলো।
এর ভিতর বাবা এলো কোথা থেকে??
অরু এবার যেটা বললো সেটা পরো বিস্ময়কর ব্যাপার!!কারণ বাবা তোমাকে বলতে মানা করেছে।এখন তুমি বলো বিয়ের আগেই যদি শশুরমশায়ের কথা না শুনি তাহলে কিভাবে হবে!?

না অরুর উপর আর কোন রাগ নেই।বাবা কেমন গম্ভীর থাকে সব সময় সেও যে এতো মজা করতে জানে জানতামই না। যাক সবাই খুশি মানে আমি মহা খুশি।আরো ভাল খুশির খবর এই কয়েক মাসের ভিতর অরুও আর অসুস্থ হয়নি।

দেখতে দেখতে ফাল্গুন চলে এলো,সেদিন সন্ধ্যাবেলা প্লান মাফিক অরু আমার বাসার সামনে রিক্সা নিয়ে হাজির,আমি ওর দেওয়া নীল পাঞ্জাবি সাথে ব্লু জিনস।নিচে নেমে দেখি অরু রিক্সাতে বসে আছে।ওকে দেখে আমি বলেই ফেললাম ওয়াও দারুন লাগছে বেবি তোমাকে!!
হয়েছে আর আদিখ্যেতা করতে হবে না।তাড়াতাড়ি উঠে এসো।রিক্সায় উঠেও আমি ওর থেকে চোখ সরাতে পারছি না,অরু একটা নীল রংয়ের শাড়ী সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ,আর তার উপর আমার দেওয়া নীল চাদরটা জরিয়ে রেখেছে,ফাল্গুন মাসের প্রথম শীতটা চলে গেছে তবুও রাতে একটু একটু ঠান্ডা লাগে।ওর শরীর থেকে মন মাতানো এক পারফিউমের গন্ধ আসছে নাকি এটাই ওর শরীরের গন্ধ সেটা নিয়ে রীতিমতো আমার মনে মনে এক যুদ্ধ বেঁধে গেল।আমি যেন সব কিছু হা করে গিলছি।

-কি হলো ওমন হাভাতের মত করে কি দেখছো?
-অরুর কথায় স্বমিত**হলাম!না মানে তোমাকে দেখছি।এতো সুন্দর লাগছে আজ!তুমি এতো সুন্দর আগেতো বুঝতে পারিনি।
-অরু একটু লজ্জা পেল,,ধ্যাত তুমি বাড়িয়ে বলছো।
দুজনে হাতে হাত রেখে বসে আছি,নিজেদের ভিতরেই বিভোর হয়ে গেছি,রিক্সাওয়ালার ডাকে হুশ ফিরলো,স্যার চলে এসেছি।ভাড়া মিটিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকলাম,আধো আলো ভাবে সাজানো পুরো ক্যাম্পাস,রঙ্গীন আলোয় আমার নীল পরীকে আরো সুন্দর লাস্যময়ী লাগছে।

কিছুক্ষণ পর কনসার্ট শুরু হলো, দুজনে দেখছি মঞ্চে নাচা গানা হচ্ছে,অরু খুব আনন্দ করে উপভোগ করছে অনুষ্ঠান আর আমি উপভোগ করছি আমার নীল পরীর হাসি উজ্জ্বল চাঁদের মত মুখখানি।এসব অনুষ্ঠান আমার বিশেষ ভালো লাগেনা,কিন্তু আজ ভালো লাগছে কারণ আমি আমার ভালবাসার ইচ্ছা পূরণ করতে পেরেছি।এদিক মাঠের অপর সাইট থেকে শোনা গেল এখনি ফানুস উড়ানো হবে।সাথে সাথে কিছু আতশ বাজী ফুটে উঠলো,ওমনি অরু আমার হাত ধরে টানতে টানতে সেদিকে ছুটলো,একটু ভীড়ের বাইরে আসতেই বললাম
-কি হলো??
-আরে শুনলে না ফানুস উড়াবে,তাড়াতাড়ি চলো না হলে দেরি হয়ে যাবে দেখতে পারবো না।অরুকে মনে হচ্ছে একটা দশ বছরের ফুটন্ত বাচ্চা যে কিনা শাড়ী পরেও ছুটাছুটি করছে। এই ক্যাম্পাসে প্রতিটা জায়গা আমি হাতের তালুর মত চিনি,আমি বললাম কিন্তু এদিক দিয়ে যাওয়া যাবে না,রেলিং দেওয়া আছে,গেট ওই দিকে।
আরে ওদিক দিয়ে যেতে গেলে দেরি হয়ে যাবে,তখনি একটা ফানুস আকাশে উড়লো, দেখছো শুরু হয়ে গেছে ,চলো রেলিং টপকে যাই!অরুর কথায় আমি জাষ্ট অবাক শাড়ী পরে রেলিং টপকাবে কিন্তু আজ যেন অরুই সমগ্র ব্রক্ষান্ডের অধিষ্ঠরী কেউ ওকে থামাতে পারবে না,অগ্রত ওর পিছে ছুটলাম,আশ্চর্যজনক ভাবে ও রেলিং টপকালো কিন্তু আমি পারছিনা টাইট জিনসের জন্য।পরে অরুর সাহায্যে ওপাশে গেলাম।তারপর ফানুষ উড়ানো দেখলাম,অরুর আনন্দ দেখে নিজেকে সার্থক পুরুষ মনে হলো।।
 
[[১২]]

ফানুশ উড়ানো দেখা শেষ করে,বললাম বাসায় যাবে তো এখন?
এতো তাড়া কিসের?আমার সাথে থাকতে বুঝি ভালো লাগছে না?আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললো জানো জীবনে এতো আনন্দ আজ দ্বিতীয় বার পেলাম,প্রথমবার পেয়েছি তোমাকে ভালবেসে,আর আজ! এতো স্বাধীনভাবে কখনো এনজয় করতে পারিনি।কোথাও গেলে হয় মা না হয় বাবা থেকেছে।

থ্যাংকু সোনা আমাকে এতো সুন্দর একটা সময় উপহার দেওয়ার জন্য।চলোনা কোথাও নিরিবিলি একটু বসি।তোমার ক্যাম্পাস তুমি তো সবই চেনো। আমি অরুকে সাথে নিয়ে মাঠ থেকে একটু দুরে ক্যাম্পাসের দক্ষিণ দিকে একটা ছোট কিন্তু সুন্দর সিড়ি বাঁধানো পুকুর ঘাট আছে ওদিকে নিয়ে গেলাম কারণ নিরিবিলি বসে কথা বলার মত ওর থেকে উত্তম আর কোন জায়গা ক্যাম্পাসে নেই।

দুজনে হাত ধরে চলতে চলতে পুকুর পারে এলাম।কি জায়গাটা সুন্দর না?আমার ময়নাপাখির পছন্দ কি কখনো খারাপ হতে পারে।দুজনে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে একটু শেষের দিকে জলের কাছাকাছি একটাতে বসলাম।অরু আমার পাশে আমার শরীর ঘেসে আমার কাঁধে মাথা রেখে বসলো,ওর চুল থেকে ভেসে আসা সুন্দর মিষ্টি গন্ধটা আমার মনটাকে আরো সতেজ করে দিলো।আমি আমার একটা হাত দিয়ে অরুর একটা হাত চেপে ধরে নিলাম।কেউ কোন কথা বলছিনা,দুজনে আপন মনে বসে আছি আর রাতের আকাশের মিটিমিটি তারা দেখছি।আমি নিজে থেকেই অরুর হাতে একটু চাপ দিলাম,হঠাৎই অরু একটা ভারী নিঃশ্বাস নিলো।ওর নরম হাতের আঙ্গুল গুলা টিপতে ভালো লাগছিলো,আর আমি সেটাই করে চলেছি।ক্রমশ অরুর শ্বাস নিঃশ্বাস বাড়ছে।সব নিরবতা ভেঙ্গে আমিই বললাম কি সোনা কি হচ্ছে শরীর খারাপ লাগছে।তবুও অরু কোন কথা না বলে শুধু মাথা নাড়ালো,,না।

আমি আর কথা না বলে চুপ হয়ে গেলাম,হয়ত ও এই পরিবেশটা উপভোগ করছে কথা বলে সেটা নষ্ট করতে চাই না।আমি আবার ওর হাতের আঙ্গুল গুলো নিয়ে খেলতে লাগলাম,একটু পর আমার কাঁধে ভিজা স্পর্শ পেলাম,অরুকে কাঁধ থেকে তুলে সামনা সামনি করতেই দেখি ওর চোখে জল!!কি হয়েছে?? কাঁদছো কেন??আমি উদ্বেগ হয়ে জানতে চাইলাম।

-কিছু না,এমনিতেই!
- না বলো কাঁদছো কেন??প্লিজ!!
-এবার অরু জোরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,আমি আর পারছিনা শুভ,আমি আর পারছিনা তোমাকে ছেড়ে থাকতে,কবে আমাকে নিয়ে যাবে বলো??কবে?কখনো এমন মনে হয় হয়ত তোমাকে আমার পাওয়াই হবেনা।
-এ কথা বলছো কেন?তুমি তো জানোই মোটামুটি সবই ঠিক করে ফেলেছি।।প্লিজ চুপ করো এখন,আচ্ছা বাসা থেকে যাই বলুক আমরা আগামী সপ্তাহে বিয়ে করবো।আমি অরুর চোখ মোছাতে মোছাতে বললাম।
-সত্যি বলছো!!?নাকি মন ভোলানো কথা বলছো?
-সত্যি বলছি গো।এবার একটু হাসো!??

তারপর অরু যে হাসি দিলো,সেটা আমি কেন ;আমার মত লেখক হাজার বার জন্ম নিলেও তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবে না।ওর সাদা দাঁতের হাসি যেন মুক্তোর মত ঝড়ে পরছে,আর সেই মুক্তোর আলোর ঝর্না যেন ওর সারা মুখে ছড়িয়ে পরেছে,আকাশের চাঁদ যেন ওর সাথেও হেসে উঠে আরো উজ্জ্বল আলোতে ভরিয়ে দিল পৃথিবীলোককে,চাঁদের আলোয় অরুর ভেজা ভেজা চোখ যেন মনির মত জ্বল জ্বল করছে,ফাগুনের দক্ষিণা বাতাস যেন হঠাৎই এক দোলা দিয়ে গেল,অরু হাসি থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রাখলো,আমি সম্মহনের মত ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আছি,কি মায়া আছে ওই চোখে,আমাকে যেন চুম্বকের মত টানছে,কারো মুখে কোন কথা নেই সব কথা যেন চোখে চোখে হচ্ছে,এ কোন মায়াজাল,প্রকৃতি যেন নতুন ভাবে সাজতে চায়, চাঁদের আলো পুকুরের জলকে আরো চকচকে করে তুলছে,একটু দুরে ক্যাম্পাসের বাগানের দিক থেকে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক আসছে, ফাগুনের এই মূহুতেই হয়ত কবি লেখকরা প্রেমে পরতো।তাই বার বার তাদের লেখায় এই ফাগুনের কথা বার বার উঠে এসেছে।আমি আমার দু হাত আমার প্রেয়শীর মুখের দু পাশে রাখলাম,অরুর শরীর একটু কেঁপে উঠলো,কি হতে চলেছে সেটা কেউই জানি না,আস্তে আস্তে দুজনের মুখের দুরুত্ব কমে যাচ্ছে

অরুর শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত ও উত্তপ্ত হচ্ছে,কিন্তু ও কিছু বলছেনা। নিজের শরীরের এত কাছে অপ্সরার মতো সুন্দরী শ্রেয়সী ললনার উপস্থিতি,আমাকে পাগল করে দিচ্ছে।তাহলে কি কিছু হতে চলেছে,কই আগে তো এমন হয়নি কখনো তাহলে কি সেই সময় আসন্ন,যেটা নারী পুরুষের আদিম প্রবৃত্তি,অরুর মুখটা এখন আমার মুখের থেকে মাএ কয়েক ইঞ্চি দুরে,আমি চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখতে পারছি,ওর কমলা লেবুর মত রসালো নরম ঠোঁটটা তিরতির করে কাঁপছে।
আমার গরম নিঃশ্বাস ওর মুখে পরতেই চোখ বুজে নিলো,আর ঠোঁট দুটো ঈষৎ ফাঁক হয়ে গেল।

দুজনের সব জ্ঞান বুদ্ধি যেন লোপ পেলো স্থান কাল এখানে যেন তুচ্ছ বিষয়,না আর কোন অপেক্ষা নয় আর সেটা সম্ভব ও না,আমি অরুর মাথার পিছনে হাত দিয়ে দ্রুত ওর মুখটা নিজের ঠোটের কাছে নিয়ে আসলাম।

আর প্রায় সাথে সাথে ঝড়ের গতিতে দু জোড়া ঠোট একে অপরের সাথে মিশে একাকার হয়ে গেল!অরুও প্রবল আগ্রহে ওর ঠোঁট দিয়ে ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মত আমার ঠোঁট চুষতে লাগলো।অনিভিজ্ঞ তাই মাঝে মাঝে অরুর মুক্তোর মত দাঁতের কামড় ঠোঁটে পাচ্ছি।সেই কামড়টায় যেন তখন আমার কাছে,নতুন‌ জীবনের হাতছানির মত।এখানে কে কাকে বেশি চাচ্ছে বোঝার উপায় নেই।আমিও অরুর ঠোঁটের ওপরে জিভের প্রলেপ লাগাতে লাগলাম,
অরুও‌ সমান তালে আমার পুরুষালি ঠোটটাকে চুষতে লাগলো।দুজনেই অনভিঙ্গ কিন্তু মনে হচ্ছে আমাদের কত কালের শেখা জিনিস।
চুমু থেকে যে লালাটা উৎপন্ন হচ্ছিল,সেটাকে চুষে চুষে পান করতে লাগলাম।জিভে জিভ ঠেকিয়ে,অরুর ঠোঁটের ফাঁকে জিভটা ঢুকিয়ে দিয়ে,ওর সুধারস পান করতে লাগলাম অনবরত।

আমার হাতটা নিজের অজান্তে কখন যেন নেমে গেছে ওর পিঠে,এখনো দুজনে চাতক পাখির ন্যায় চুষে চলেছি নিজেদেরকে।আমার হাত দুটো খেলা করে বেড়াচ্ছে এখনো ওর পিঠে,অরুর পিঠে সুখের পরশের ছোয়া দিতে দিতে কখন যে নেমে এসেছে ওর পাতলা সরু কোমড়ে।

খোলা কোমড়ে আমার গরম হাতের ছোঁয়া পেতেই জোরে কামড়ে ধরলো আমার ঠোঁট, যেন ছিড়ে নিতে চায় আমার শক্ত ঠোঁট দুটো,অরুর শরীরের ছোঁয়াতে আমার শরীরের প্রতিটি লোম কূপ যেন জেগে উঠেছে,ধমনীর প্রতিটি শিরা উপশিরায় রক্তরা ফেরারি ভাবে ছুটছে,কোমড় বেয়ে আমার শক্ত গরম অথচ সুখের পরশ আাঁকা হাতটা অরুর চিতল মাছের মত মশৃন পেটের উপর পরতেই যেন সহ্যের সময়সীমা অতিক্রম করে ফেললো,
এখনি থামাতে না পারলে সামনে ঝড় আসন্ন।সে ঝড় মোকাবেলা করার সাধ্য এখন আমাদের কারোর নেই।আমার দুষ্টু হাত পেটের মশৃন তেলতেলে চামড়ায় পিছলে গিয়ে অরুর নাভী কুন্ডের উপর পরতেই।ওহ উফফম্ম শুভ,প্লিজ আর না!! বলতে বলতে আমার ঠোঁট থেকে নিজেকে আলাদা করলো অরু।আমার ঠোঁট থেকে নিজে মুক্ত হয়েই হাফাতে লাগলো অরু। ওর বুক দুটো তখনো কামাড়ের হাপরের মত উঠা নামা করছে।আমিও যেন হুশে এলাম।

আর না সোনা,এরপর আর নিজেকে সামলাতে পারবো না। কোন মতে হাফাতে হাফাতে বললো অরু।আমিও‌ যেন একটু লজ্জা পেলাম।সরি সোনা আমিও এমনটা হবে ভাবিনি।
অরু আমার মুখ হাত দিয়ে চেপে বললো না শুভ সরি বলে এই সুন্দর সময়টা কে অপমান কোরো না।এখানে কারো দোষ নেই।আমরা কেউই মুনি ঋষি না।যেটা হয়েছে সেটা পবিত্র প্রেমের এক বহিঃপ্রকাশ। আমিও চেয়েছিলাম তোমাকে,তবুও দেখ দ্বীর্ঘ দু বছর পর আমরা নিজেদের স্বাদ নিলাম।আমার এতটুকুও ইচ্ছা করছিলো না নিজেকে আটকাতে কিন্তু।এর বেশি কিছু হলে যে আর নিজেকে সামলাতে পারতাম না গো।তখন স্থান কাল ভুলে তোমার চরনে নিজেকে জ্বলাঞ্জলি দেওয়া ছাড়া আমার আর কোন উপায় থাকতো না।

আমি উঠে দাঁড়িয়ে অরু কেউ দাঁড় করিয়ে শক্ত করে বুকে জরিয়ে নিলাম,হয়ত দুজনের মাঝ দিয়ে একটু বাতাসও প্রবেশ করতে পারবেনা।আমি জানি সোনা সেটা,আর কয়টা দিন ওয়েট করো আমি সব ঠিক করে দিবো।সেদিন আরো কিছু সময় দুজন ওখানে থেকে প্রথম চুম্বনের রেশ গায়ে মেখে বাসার উদ্দেশ্য পা বাড়ালাম।।
 
[[১৩]]

-সারা!! সারা!!হে আর ইউ ওকে??
-ওহ সরি স্যার!
-কি হলো তোমার?কোথায় হারিয়ে গেছিলে?
-কিছু মনে করবেন না স্যার,আপনাদের রোমান্টিক দৃশ্যর কথা শুনতে শুনতে আমি নিজেই যেন সেই রাতের পুকুর ঘাটে হারিয়ে গেছিলাম।হোয়াট এ মোনেন্ট স্যার।

হোয়াট দ্যা ফাক!শালা মাদার ফ্যাকার,হঠাৎই সারা নোংরা ভাষা ব্যবহার করলো।
-হে,সারা হোয়াট হ্যাপেন্ড? এগুলা কি বলছো।
-এবার একটু লজ্জিত ভাবে সারা বললো,সরি স্যার আপনার সামনে এসব কথা বলে ফেললাম।আসলে আমার এক্স বয়ফ্রেন্ডের কথা মনে পরে গেছিলো,শালা রক্ত চোষা, নারীকে কিভাবে সম্মান করতে হয়,মনে হচ্ছে ওকে ডেকে এনে আপনার কাছ থেকে শেখাই।সত্যি স্যার ম্যাডাম ইজ ভেরি লাকী।তো স্যার তারপর কি হলো বলুন।আই এম ভেরি এক্সসাইটেড!!

কি আর শুনবে সারা,আমার সব কিছু যে শেষ এখান থেকেই।আমি আর একটা সিগারেট জ্বালিয়ে লম্বা একটা টান দিলাম।সারা ইফ ইউ ডোন্ড মাইন্ড,তোমার কাছে হালকা ড্রিংকস হবে?
আমার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালো!! স্যার আপনি ড্রিংকস করবেন!! ওহ মাই গড!আই কান্ট বিলিভ দিস!
হা খুব অল্প যদি দিতে পারো নিয়ে এসো,বাট প্লিজ আমি যেন সহ্য করতে পারি,জাষ্ট ওয়ান পেক!!ওকে আপনার ইচ্ছা। বলে সারা চলে গেল ওর রুমে।সত্যি আমি খাবো এটা।খেয়েই দেখি যদি কথা বলতে গিয়ে কষ্টটা কমে।

সারা একটু পর আসলো হাতে দু গ্লাসে তরল।স্যার নিন।আমি গন্ধ নিতে গেলাম,নো স্যার কোন খারাপ গন্ধ নেই।ব্রান্ডেড অরেন্স ফ্লেভার।আমি আর কিছু না ভেবে সারা কে চেয়ার্স বলে এক ঢোকে গলার নিচে পার করলাম। সত্যি কোন খারাপ গন্ধ নেই কিন্তু এই প্রথম পেটে মাল পরাতে একটু শরীরটা ঝাকুনি দিয়ে উঠলো।সেটা দেখে সারা নিজে থেকে একটা এগিয়ে দিয়ে বললো,স্যার এটা টানুন দারুন ফিলিংক্স আসবে।আমি ওর কথা মত সিগারেটে টান দিলাম, একটু পর খুব রিল্যাক্স অনুভব করলাম।


বাসায় এসে মা কে ডেকে বললাম আমাদের বিয়ের ব্যাপাটা নিয়ে কি ভাবলো।মা বললো অরুর সাথে কথা বলে জানলাম দিন দশেক পর ওর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হবে তাই তোর বাবা বলছিলো।পরীক্ষাটা মিটে গেলেই কথা বলতে যাবে অরুর বাড়িতে।

হুম অরুও বলেছিলো পরীক্ষার কথা।কিন্তু আগামী সপ্তাহে বিয়ে করবো এই কথা দেওয়ার সময় তো এটা ভাবিনি।তাছাড়া মা বাবা খারাপ ডিসিশন ও নেয়নি পরীক্ষার ভিতর এসব শুরু হলে,পরীক্ষাটাই খারাপ হবে। তাছাড়া আমার আর অরুর ফিলিংসের কথা তো আর মা বাবা কে বলা যায় না। যদি তাড়া রাজি না থাকতো সেটা আলাদা বিষয়।সব ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিলাম,যে পারিবারিক ভাবে যেদিন হয় হবে।আগামী সপ্তাহে আমরা কোর্টম্যারেস করবো,এতে অন্তত অরু কিছুটা চিন্তামুক্ত থাকবে।আর যদি আমাদের বিয়ের ব্যাপারে দু পরিবারের কারো অমত না থাকে তাহলে এই কোর্টম্যারেজের বিষয়টা চিরতরে গোপন থাকবে।আর যদি রাজি না হয় তখন এটা আমরা সবার সম্মুখে আনবো।

সব কিছু ঠিকঠাক চলছে,আমাদের কোর্টম্যারেজের দিন ঠিক করলাম,বুধবার ওই দিন অরুর কলেজে এ্যাডমিট আনতে পাবে।আজ শনিবার আর চারদিন বাকি,আমিও অফিস থেকে অগ্রীম তিন দিনের ছুটি নিয়ে রাখলাম,আর মিঠুকে কল করে দিনক্ষণ সব বললাম।মিঠু কথা দিলো বাকিটা ও ম্যানেজ করে নিবে।

এখন আমিও একটু টেনশন ফ্রি আছি সব প্লান করা হয়ে গেছে। প্লান মাফিক বিয়ের দিনের দুদিন আগে সন্ধ্যায় অরুর ফোনে কল দিলাম কিন্তু ওর বোন কল ধরলো,ওর কাছ থেকে জানতে পারলাম,আজ আবার একটু অরু অসুস্থ হয়ে পরেছে তাই এখন ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছে উঠলে ফোন দিবে বলছে।ফোন রাখার পর একটু টেনশন হচ্ছে কারণ অনেকদিন এই সমস্যাটা হয়নি আজ আবার হঠাৎ কেন এমন হলো।এদিকে প্লান মাফিক আর সময় আছে দুদিন।যাক সময় আরো পাওয়া যাবে আগে আমার অরু সুস্থ হোক,সেদিন রাতে আবার যখন অরুকে কল করলাম ওর বোন ধরলো।
-হ্যালো শুভ দা দিদির শরীর খুব খারাপ এই মাএ দিদিকে নিয়ে হাসপাতালে এলাম।তাড়া হুরোয় তোমাকে ফোন দিতে পারিনি।
-আচ্ছা ঠিক আছে।আমি আবার পরে কল করবো।কি হয় না হয় আমাকে জানিও প্লিজ!

না কিছু ভালো লাগছে না আর!! অজানা আশংকায় বুক কাঁপছে।রাতেও অরুর সাথে কথা বলতে পারলাম না।অনামিকাও আর কল করেনি।আমি কয়েকবার চেষ্টা করেও প্রথম দিকে কল গেলেও সেগুলা রিসিভ করেনি কেউ,তারপর ফোন সুইচ অফ বলেছে।রাতে খাবারও খেতে ইচ্ছা করলো না,মাকেও অরুর অসুস্থার কথাটা জানালাম।মা আমাকে চিন্তা করতে নিষেধ করলো,বললো সব ঠিক হয়ে যাবে,সারারাত ছটফট করতে করতে ভোরের দিকে একটু চোখটা বুজে এসেছে।খুব সকালে একটা অচেনা নম্বর থেকে কল আসার শব্দে ঘুম ভাংলো।আমি চোখ মুছতে মুছতে রিসিভ করতেই।
-কান্না ভেজা কন্ঠে বললো শুভদা আমি অনামিকা।
-হা বলো!কাঁদছো কেন?কি হয়েছে?আমার কন্ঠে উদ্বেগ!
-শুভদা!! শুভদা,,,দিদি,,আর জোরে কান্নার আওয়াজ।শুভদা দি,,দিদি আর নেই!!!
-আমি চিৎকার করে উঠলাম,,নেই মানে??
-দিদি বিশ মিনিট আগে আমাদের ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে।।

আমার হাত থেকে ফোন ছিটকে পরে গেছে।মাথার ভিতর বনবন করে ঘুরছে।চারপাশ অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে আমার।সারা শরীরে কাঁপুনি দিয়ে গলা ফাটিয়ে অরু বলে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারালাম।যখন জ্ঞান ফিরলো আমি বিছানায় শুয়ে আছি পাশে মা বাবা বসে আছে।উনাদের চোখেও জল।আমি মাকে দেখেই আবার ডুকরে কেঁদে উঠলাম মা আমার সব শেষ হয়ে গেছে মা অরু,,অরু আমাকে ছেড়ে চলে গেছে মা!!চলে গেছে আমাকে ছেড়ে!!আমাকে কি সান্ত্বনা দিবে মা নিজেও কান্নায় ভেঙ্গে পরেছে।তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে মা বললো।
-যাওয়া আসার উপর তো কারো হাত নেই বাবা!একটু শান্ত হ!আমাদেরও কি কম কষ্ট হচ্ছে আমরাও তো ওকে নিজেদের মেয়েই ভেবে নিয়েছিলাম।এখন উঠ বাবা!একবার ভেবে দেখ ওর বাবা মায়ের এখন কি অবস্থা,এখন ভেঙ্গে পরলে চলবে।উনাদের পাশেও তো একটু দাঁড়াতে হবে।

ইতি মধ্যো খবর পেয়ে মিঠুও চলে এসেছে,মিঠু ও আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে চলেছে।আমি হঠাৎ এবনরমাল ব্যবহার করছি,কখনো হাসছি কখনো কাঁদছি,বাবা আর মিঠু মিলে আমাকে সামলাচ্ছে।আমি অরুর কাছে যাবো বলে জেদ করছি। তারপর বাবা আর মিঠু আমাকে নিয়ে অরুর বাসার দিকে রওনা দিলো।আমি এতো কেঁদেছি আমার চোখ দিয়ে আর জল বের হচ্ছেনা।গলার স্বরও ফ্যাকাসে হয়ে গেছে,কি বলছি নিজেই বুঝতে পারছিনা।

অরুর বাসায় গিয়ে দেখতে পেলাম লোক জনের ভীর,আর তার সামনে বাইরে খাটের উপর সাদা
কাপড়ের নিচে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে আমার অরু আমার ভালবাসা কলিজার টুকরা।নিজেকে আর সামলাতে পারছিলাম না ছুটে যেতে চাচ্ছিলাম অরুর কাছে।আমার এ অবস্থা দেখে অনেক কষ্টে বাবা আর মিঠু আমাকে বাইরে বের করে আনলো।দেখ বাবা তুই অরু কে ভালবাসিস সেটা তুই অরু আর আমরা দুই পরিবার জানি কিন্তু প্রতিবেশীরা তো জানে না।ওদের একটা সম্মান আছে।তাছাড়া অরুও ভাল মেয়ে ছিলো,এখন তুই যদি পাগলামি করে ওর কাছে যাস তাহলে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগবে।তখন আমার অরু মায়ের মত লক্ষী পবিত্র মেয়েটা মরে গিয়েও লোকের নানা বদনাম শুনতে হবে।তুই কি তাই চাস!!?লক্ষী ছেলে আমার পাগলামি করিস না।এসব বলে বাবা আমাকে শান্ত করতে লাগলো।বাবা যে এভাবেও কথা বলে যেন আজ জানতে পারলাম।অরু তুমি আমায় সব দিয়ে গেলে দেখিয়ে গেলে,শুধু নিজে ফাঁকি দিলে।
 
[[১৪]]

যথা সময়ে মৃত দেহের সৎকার হবে,তাই সেই প্রস্তুতি চলছে। আক্কেল আন্টিকে দেখার মত না কেঁদে কেঁদে চোখ দুটো জবা ফুলের মত লাল করে ফেলেছে।আর অনামিকার অবস্থা তো আরো খারাপ,কে ওর সাথে দুষ্টুমি করবে,কে ছুটকি বলে ডাকবে এসব প্রলাপ বকে কেঁদে চলেছে।আমাকে মিঠুর কাছে রেখে বাবা অরুর বাবার কাছে গেল।একটু পর আসলে জানতে পারলাম এখনই শ্মশানের উদ্দেশ্যে বের হবে।কিন্তু যে কথাটা শুনে আরো কষ্ট পেলাম সেটা হলো আমাদের আর ওদের একই শ্মশান,আর সেটা আমাদের এলাকার ভিতর অর্থাৎ যে অরুর বউ হয়ে আমার এলাকায় যাবার কথা ছিলো সে লাশ হয়ে যাবে আমার বাড়ির সামনে দিয়ে।

তারপর সবাই মিলে আমার অরুকে শ্মশানে নিয়ে গেলো। আমিও গেছিলাম সাথে সর্বক্ষণ বাবা আর মিঠু ছিলো,যদি আমি কিছু করে বসি সেই ভয়ে।আমি দূরে বসে আছি আর আমার ভালবাসা চিতার আগুনে জ্বলতেছে দাউ দাউ করে।সে আগুনে যেন আমার হ্নদয়টাও পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।একসময় সব শেষ হয়ে গেল পরে রইল শুধু ছাই।সবার অলক্ষ্যে আমি সেদিন এক মুঠো চিতা ভম্ম নিয়েছিলাম।

বাসায় ফিরতে বিকাল হয়ে গেল,এসে বাথরুমে ঢুকলাম শাওয়ারের জলে চোখের জল মিশিয়ে স্নান সারলাম।সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি খাওয়ার ইচ্ছাও নাই তবুও মা জোর করে মুখে তুলে অল্প খাইয়ে দিলো। আজকের দিনে আমাদের সাত জন্মের বাঁধনে বাঁধা পরার কথা ছিলো।অথচ কি থেকে কি হয়ে গেল।

আজ পূর্নিমা আকাশে চাঁদের উজ্জ্বল প্রকাশ,আমি ছাদে যেতে চাচ্ছি মা বাবা কিছুতেই যেতে দিবেনা।উনাদের ভয় যদি আমি কিছু করে বসি।অনেক বুঝিয়ে অরুর দেওয়া পাঞ্জাবিটা গায়ে দিয়ে আর শ্মশান থেকে আনা চিতা ভম্ম নিয়ে ছাদে গেলাম।ছাদে উঠে মনে হলো তারারা আজ যেন বেশি উজ্জ্বল হয়ত আমার অরু কে পেয়ে ওরা আনন্দে মেতেছে,অথচ আমার আলো সব নিভে গেছে।অরুর চিতা ভম্মটা কিছুটা পাঞ্জাবীতে মাখালাম তারপর বসে বসে চাঁদ দেখছি,পাঞ্জাবি আর ভম্ম থেকে অরুর শরীরের মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি। যেন অরু আমার সাথেই আছে।

কিছুদিন আর অফিস যাইনি,কোন কিছুতে আর ভালো লাগা কাজ করেনা।নিজেকে ঘর বন্দী করে ফেললাম,কিন্তু তাতে কষ্ট কমবার থেকে বাড়ছে।সবার পরামর্শে অফিসে যাওয়া শুরু করলাম,কাজে ডুবে থাকলে ভালো লাগবে এই ভেবে।মাঝে মাঝে শ্মশানে যাই,অরুর সাথে কথা বলি আপন মনে।না আর এখানে থাকা যায় না,অরুকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারিনা।ওর স্মৃতি আমার পিছু ছাড়েনা।অফিসের চুক্তি অনুসারে দু বছর জব করে।সব ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিলাম।

তারপরের সব ঘটনাই তো তুমি জানো সারা!!

আমার বলা শেষ হতেই কাঁন্নায় ভেঙ্গে পরলো সারা,আমারও নেশার ঘোর কেটে গেছে নিজেও অশ্রুসিক্ত!ওদিকে একই ভাবে কেঁদে চলেছে সারা।আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম শান্ত হও সারা।দেখো আমি নিজেই আর এখন কাঁদিনা।আমার সান্ত্বনাতে আরো জোরে কেঁদে উঠলো,আর কাঁদো কাঁদো কন্ঠেই বললো,স্যার আপনার মনে এতো কষ্ট এটা আগে কখনো বুঝতে পারিনি।আপনার মত এতো গভীর ভাবে ভালো বাসতেও কখনো কাউকে দেখিনি।যতো দিন বাঁচবো আপনি আর অরু ম্যাডামকে কখনো ভুলবো না।কিন্তু স্যার ম্যাডামের কি হয়েছিলো সেদিন??

সেটা আমি তখন জানতে পারিনি,পরে অরুর বোন অনামিকার কাছ থেকে জেনেছিলাম সেদিনের ঘটনা,এমনিতে তো অরু সেদিন সন্ধ্যাবেলা অসুস্থ ফিল করছিল তাই ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পরে সেটা তোমাকে আগেই বলেছি।তারপর রাতে আমি কল করার আগে ওর ঘুম ভাঙ্গে তখন একটু ভালো ফিল করছিলো,অরুর মা অর্থাৎ আন্টি ভাবছিলো অরু অনেকদিন যাবত ভালোই আছে কিন্তু এই বিয়ের ব্যাপার গুলো নিয়ে ভাবতেই হয়ত টেনশনে শরীরটা আবার খারাপ করছে,সেদিন রাতেই আন্টি আক্কেল কে আমার আর অরুর ব্যাপারে বলে,সব শুনে আঙ্কেল একটু রাগারাগি করে তার মেয়ে এমন প্রেম করে বিয়ে করবে সেটা তার পছন্দ না,তার স্বভাব অনুযায়ী আন্টিকে একটু বকাবকি করে।ঠিক সেই সময় অরু ওয়াশরুমের দিকে আসে সাথে অনামিকাও ছিলো,আর বাবা মায়ের কথা তার কানে যায়।এসব শোনা মাএই অরু ছুটে নিজের রুমে চলে যায়। অনামিকা সাথে গেলেও অরু ওকে বলে বাইরে যেতে ও একটু রেস্ট নিবে।অনামিকা যখন বাইরে আসে আর মা বাবার পরবর্তী কথা শোনার জন্য দরজার বাইরে দাঁড়ায়।তখন ওর বাবা ডাঃ এর সাথে কথা বলছে ফোনে মেয়ের বার বার এমন হবার কারণ জানতে,ডাঃ ও অরুর বাবাকে বলে,দেখেন এমনিতে অরু মামনির শরীরে কোন সমস্যা নাই,জাষ্ট ওর খাবারের প্রতি ইন্টারেষ্টটা কম,সে জন্য আমি মেডিসিন দিতে পারি।কিন্তু আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি যে অরু যখন কোন কিছু নিয়ে উত্তেজিৎ অথবা টেনশন করে ওর এই সমস্যটা বেশি হয়।তাই আমি সাজেস্ট করবো,ওর মনের উপর বেশি চাপ না দিতে।আর ভালো ছেলে দেখে বিয়েও দিতে পারেন হয়ত ভালো সঙ্গী পেলে অনেক রিলিফ পাবে।অথবা আপনারা ওর সাথে খোলামেলা কথা বলুন যে ও কি চায়,ওর কোন গোপন সমস্যা কিংবা কোন এফেয়ার আছে কিনা।দেখুন ও যেটাই বলুক রাগ করবেন না,আজ কাল এ্যাফেয়ার থাকাটা দোষের কিছু না।আর যদি সেটা থাকে আর ছেলে ভালো হলে আমি বলবো যতো তাড়াতাড়ি পারেন ওদের সাহায্য করুন বাবা না বন্ধু হিসেবে।

ডাঃ এর সাথে কথা বলার পর আঙ্কেল আমার সম্পর্কে জানতে চায় আন্টির কাছে।আন্টি সব বলে,আর সব শুনে আঙ্কেল আমাদের বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় কারণ যোগ্য পাএ হিসেবে আমি কোন অংশে কম না।এটা শোনার পর অনামিকা ছুটে যায় ওর দিদির কাছে এই সু-সংবাদ দেবার জন্য,কিন্ত গিয়ে কয়েকবার ডেকেও অরু সারা দেয়না,আর দেখে অরু কাঁপতেছে,ও তখন চিৎকার করে ওর বাবা মা কে ডাকে,তারপর হাসপাতাল, অরুর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো তাই অক্সিজেন দেওয়া হয় কিন্তু ভোরের দিকে ও সেটাও আর নিতে পারছিলো না।তারপর কি হলো সবটাই শুনলে তুমি সারা!!আমার ধারণা ও অতিরিক্ত টেনশন, সাথে নিজের অসুস্থার জন্য এমনটা হয়েছে।তাছাড়া অরু যদি আঙ্কেল আন্টির সম্পূন কথা শুনতো তাহলে হয়তো আজ আমি আর অরু একসাথে থাকতাম!!

আমার কি কপাল দেখছো সারা,ছেলে মেয়ে রাজী পরিবারের সবাই রাজী কিন্তু একসাথে থাকাটা হলোনা। জানো সারা সেই ভম্ম মাখা নীল পাঞ্জাবিটা আমার কাছে এখনো আছে।আজ পর্যন্ত ওটা আমি পরিস্কার করিনি,কারণ তাতে আমার অরুর স্পর্শ যে ধুয়ে যাবে।রোজ পূর্নিমা রাতে ওটা আমি গায়ে দিয়ে একা একা অরুর সাথে কথা বলি।আমার কোন নেশা নেই সারা শুধু পূর্নিমা কবে আসবে সেই নেশায় বুদ হয়ে থাকি।

-থাক স্যার প্লিজ!!আর বলবেন না,আমি আর শুনতে পারছিনা!!
-আমিও এক দ্বীর্ঘশ্বাস ছেড়ে। একটা সিগারেট ধরলাম।সারা!!
-হা স্যার বলুন!??
-আমার একটা উপকার করবে??ওর উত্তরের আশা না করেই বললাম।আমি আর এখানে থাকবো না।একটু কষ্ট করে কালকেই একটা বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিবে। আর আমি কাল সকালেই অফিসে যেয়ে রিজাইন লেটার টা দিয়ে আসবো।
-একি কি বলছেন স্যার!আপনি সত্যি চলে যাবেন??তাহলে আমার যে খুব খারাপ লাগবে স্যার।
-তুমি খুব ভালো মেয়ে সারা! কিন্তু তুমি সবই শুনলে আমার বাধাটা কোথায়।সো প্লিজ আর কিছু বলোনা।কত বছর দেশে যায়নি,মা বাবা আর কি দোষ করেছে বলো!!??
-আমি জানি আমি আপনাকে আটকাতে পারবো না।কিন্তু যাবার আগে একটা জিনিস চাইবো দিবে শুভ!!
-সারার মুখে আমার নাম শুনে একটু অবাক হলাম।গত চার বছর ধরে অকে বলে আসছি বাসায় স্যার বলবে না।শুনলো না আজ নাম ধরছে,একটু বেশিই অবাক হলাম!!
-কি দিবে না শুভ??
-হুম বলো কি চাই।দেবার মত কি আছে আমার?যদি থাকে দিবো। কিন্তু প্লিজ এমন কিছু চেয়ো না যেটা অন্য কাউকে ভাগ দিতে পারবো না !!
-না তেমন কিছু চাইবো না।আর অরু ম্যাডামের মত ভাগ্যবতীও আমি না।আর আমি অরু ম্যাডামের ভালবাসায় ভাগও বসাতে চাইনা!!বলে একটু থামলো সারা,আমার কাছে একটু সরে এসে বললো, আমাকে একটা শুভ দিবে??
-আমি বুঝতে না পেরে।সারার দিকে তাকিয়ে থাকলাম!?
-বুঝলে না তাই তো??আমায় একটা বাচ্চা দিবে??করুণ ভাবে বললো সারা!!
 
[[১৫]]

সারার কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে গেল।জোরে করে হাত চালালাম সারা ছিটকে পরলো বিছানাতে।তুমি কি বলছো তুমি জানো??তোমাকে সব খুলে বলার এই প্রতিদান??ছিঃ সারা ছিঃ আমি ভাবতেই পারছিনা। মনের রাগে কথা গুলা ছুড়ে দিলাম সারার দিকে।আমার জীবনে অরু ছাড়া কেউ‌ আসতে পারেনি আর পারবেও না। আমার ভালবাসার কথা শুনে তুমি এই প্রতিদান দিবে,সত্যি বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে!

আমি কথা গুলো বলে দাঁড়িয়ে আছি রাগে দুঃখে আমার শরীর ফুসছে,সারা বিছানা থেকে কাঁদতে কাঁদতে উঠে আমার দিকে তাকালো,ওর ঠোঁটের এক কোন কেটে রক্ত বের হচ্ছে আমার আঘাতের কারণে।ওর ঠোঁটের রক্ত আর করুণ চোখ দেখে।নিজের প্রতি নিজের ঘৃনা লাগছে শেষ পর্যন্ত একটা মেয়ের গায়ে হাত তুললাম।
সরি সারা!আমি নিজেকে আটকাতে পারিনি।বাট তুমি যেটা বলেছো সেটাও ভালো বলোনি।

সারা ঠোঁট মুছতে মুছতে উঠে একেবারে আমার পায়ের কাছে বসে পরলো।আমি জানি স্যার আমি ভুল করেছি,এমনটা চাওয়া আমার উচিত হয়নি।কিন্তু সত্যি বলছি শুভ আমি কোন লোভ লালসা কিংবা অধিকারের জন্য এগুলা বলিনি। আমি অরু ম্যাডাম কে দেখিনি। কিন্তু তার কথা শুনে আমি আমার মনে বড় বোনের জায়গায় তাকে বসিয়েছি।আমি আপনাদের ভালোবাসাকে সম্মান করি।তাই সব ভেবেই এ কথা বলেছি!!
-বাঃ বাঃ খুব ভালো সারা!!এই তোমার শ্রদ্ধা ,ভালবাসা ,সম্মানের নমুনা??
আমাকে ভুল বুঝোনা শুভ। আমি তোমাদের কাহিনী শুনে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি!
আমি সারার দিকে তাকালাম,কি সিদ্ধান্ত?
আমি আর বিয়ে করবো না শুভ!!ওর কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম!!মানে কি??কি বলছো এসব??

-হা শুভ!ঠিকই বলছি।দেখো শুভ আমার বলতে বাঁধা নেই এই ফ্রি সেক্সের দেশে আমার এই ২৫ বছরের শরীরে অনেক শরীরী সুখ পেয়েছি,চাইলে আরো পাবো,কিন্তু কোথায় পাবো মনের সুখ বলতে পারো শুভ?? হা তোমাকে আমার ভালো লাগে,তুমি চাইলে তোমার সাথে যেতেও আমার আপত্তি নেই।কিন্তু আমি জানি সেটা সম্ভব না।আর তুমিও যে দেশে গিয়ে বিয়ে করবে না সেটাও আমি জানি।ভারতীয় পুরানের গল্পে শুনেছি,বড় বড় মুনি ঋষিদের দ্বারা রাজা বাদশাহদের পত্নীরা গর্ভবতী হত।আর তারা হতো বলশালী ধার্মিক ভালো এক জন মানুষ।সেখানে হ্নদয়ের কোন বন্ধন ছিলো না।আর আমি তো তোমাকে আমার হ্নদয়টা দিয়ে বসে আছি।তুমি আমার কাছে মুনি ঋষির থেকে কম কিছু না।তাই তোমার মত পবিএ একটা মানুষের এই দুনিয়াতে তোমার পরে কারো অস্তিত্ব থাকবে না,এটা আমি ভাবতেও পারিনা।অরু দি থাকলে হয়তো আমার এ সৌভাগ্য কখনো হতো না।আমার কিছু চাইনা শুভ,কখনো তোমার খোঁজও করবো না।যাবার আগে প্লিজ তোমার রক্তের ধারা আমার ভিতর দিয়ে যাও।ওকে বুকে নিয়েই বাকিটা জীবন কাঁটিয়ে দিবো।তাছাড়া এদেশে সিঙ্গেল মাদার হওয়া কোন দোষের না।

সারার কথা শুনে সত্যি আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি,শুধু চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছে,হে ঈশ্বর কি দিয়ে গড়েছো এই নারীকে!! এদের মনে এতো মায়া মমতা,সব কি তুমি এদেরই দিয়েছো।মন্দির মসজিদের থেকে পবিত্রার নিরিখে কোন অংশে কম না এ নারী মন!! পায়ের কাছ থেকে সারাকে ধরে তুলে ওর চোখ মুছিয়ে দিলাম,তারপর ফার্স্ট এইড কিটের ব্যাগ থেকে তুলা আর স্যাভলন দিয়ে ওর কাঁটা জায়গা পরিস্কার করে দিলাম।দেখো সারা তুমি যেটা চাচ্ছো আমি সত্যি অরু বাদে কারুর সাথে ওটা করবো স্বপ্নেও ভাবিনি। তোমায় দেখে শরীর হয়ত জাগতে পারে কিন্তু মন!সে তো আর নিজের ইচ্ছায় জাগেনা। ওকে তুমি যা বললে তাই হবে। তুমি আমার টিকিটের ব্যবস্থা করো।
 
[[১৬]]

আমি জানি শুভ তোমার মন কখনো পাবো না!বলে এক বড় দ্বীর্ঘশ্বাস ছাড়লো সারা।ওকে তুমি থাকো আমি একটু বের হবো,তোমার যাবার সব ব্যবস্থা করি।সারা বেড়িয়ে যেতেই আমিও একটা সিগারেট ধরিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম,অফিসে চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে একটা মেইল করতে হবে।কাজ শেষ করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম বড় একটা শাওয়ার নেবার প্রয়োজন,স্নান করে বের হলাম,তবুও সারার দেখা নাই,ঘড়ি দেখলাম রাত ৯ টা বাজে।প্রায় ১০ টা নাগাদ সারা এলো।সরি গো অনেক দেরি হয়ে গেলো,তোমার বুঝি অনেক ক্ষুধা লাগছে।কিছুক্ষণ আগেও স্যার ছাড়া কথা বলতো না,হে নারী কতো রুপ তোমার।না সমস্যা নেই তুমি ফ্রেস হয়ে নাও তারপর খাবো দুজনে।

তোমার টিকিটের ব্যবস্থা করে এলাম সকাল ১০ টায় ফ্লাইট,কথাটা বলতেই সারার চোখ টলমল করে উঠলো,তোমার সাথে হয়ত আর কখনো দেখাই হবেনা দ্রুত চোখ মুছে নিতে নিতে বললো।এভাবে মায়া বারিও না সারা,যাও ফ্রেস হয়ে নাও।আমার হাতে টিকিটটা দিয়ে ওর হাতের বাকি প্যাকেট গুলো নিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।কত বছর পর দেশে ফিরবো,সবাই থাকবে সেখানে শুধু অরু থাকবে না!!

সারা ফ্রেস হবার পর সারার বাইরে থেকে কিনে খাবার দিয়েই রাতের ডিনার করা হলো।খাবার শেষে আমি আমার রুমে এসে সিগারেট জ্বালিয়ে জানালার কাছে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে আছি।এই দেশে আমি আর মাএ কয়েক ঘন্টার অতিথি,হঠাৎ সারার ডাকে পিছন ফিরে তাকাতেই ,,,,, হা হয়ে গেলাম।কেমন লাগছে গো আমাকে??ও মাই গড!!তুমি শাড়ি পড়ছো??কোথায় পেলে??আগে বলো কেমন লাগছে?
দারুন লাগছে তোমাকে,তোমাকে দেখে যেন দেশের কথা মনে পরলো,কত কাল পর শাড়ি পড়া কাউকে দেখলাম।সত্যি নীল রংয়ের শাড়িতে দারুন দেখাচ্ছে সারাকে,যে কেউ দেখলে বাঙালী ভাববে প্রথমে।যদিও প্রথম শাড়ি পরেছে সারা তাই ঠিক মত পরতে পারেনি,তবুও সুন্দর লাগছে,সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ

তোমার টিকিটের জন্য বাইরে গেলাম,তখন অনেক খুজে একটা বাঙালী শপ থেকে কিনেছি।
কেন করছো তুমি এতো সব সারা??
জানিনা শুভ!!শুধু এতোটুকু বলতে পারি ভাল লাগছে আজ তোমার জন্য নতুন ভাবে সাজতে!
সারা এগিয়ে এসে বিছানাতে বসলো,আমিও ধীরে ধীরে যেয়ে বসলাম বিছানাতে।
দুজনের কেউ আর কোন কথা বলছিনা,কারণ এরপরে কি ঘটতে চলেছে দুজনেই জানি।সারা ওর মনটা আমাকে উৎসর্গ করেছে আর আমি অরুকে।কি পাবে সারা আমার দেহ নিয়ে?এ দেহ যে নশ্বর,আত্মা বা মন সে অবিনশ্বর কিন্তু সে আত্মা যে আমার অরুর আত্মার সাথে মিশিয়ে ফেলেছি অনেক আগে। সেখানে আর কারো প্রবেশাধিকার নেই।

দুজনের কেউই নড়াচড়া পর্যন্ত করছিনা,যার যার মত ভেবে চলেছি,আমাকে ক্ষমা করো অরু,এ দেহ যে একজন ভিক্ষা চেয়েছে একটি বারের জন্য।সে যে বড্ডো ভালবেসে ফেলেছে আমায়,কিন্তু আমার তো সে উপায় নেই,আমি যে সব তোমাকে দিয়ে বসে আছি,আজ যে আমার এই দেহ ভিক্ষা দেওয়া ছাড়া উপায় নেই!! ক্ষমা করো আমায়!!

আমি উঠে রুমের আলোটা নিভিয়ে,নীল রংয়ের ডিম লাইটা জ্বালিয়ে দিলাম।সারার কাছাকাছি যেয়ে ওর পাশে বসলাম,সারা!!আমার দিকে তাকালো ও।আমি পারবো না সারা প্লিজ!সারা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,এমন অনুভুতি সারা জীবনে আমার আর কারো জন্য হয়নি শুভ।আমার খেয়াল ছিল না তুমি কত অভিজাত ও পবিএ একজন মানুষ।অতি সাধারণ এক মেয়ের বুকের ভিতরে যতই তোলপাড় হোক সেটাতে তোমার কর্ণপাত করা সাজে না।

দেখলাম সারা চোখের কোন চিক চিক করছে।নিজেকে খুব অপ্রস্তুত আর বিব্রত লাগছে। মনটাও কেমন জানি খচখচ করছে কিন্তু আমি যে অরুর কথা ভুলতেই পারছিনা।আবার একজন মানুষের এমন নিঃস্বার্থ ভালবাসার নিবেদন উপেক্ষাও করতে পারছিনা।মনে মনে আবারও অরুর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলাম।

তার পর হাত বাড়িয়ে সারাকে টেনে নিলাম নিজের কাছে।সারা কাছে এসে উঠে দাঁড়িয়ে আবার নিচু হয়ে আমার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো।আমি এবারও চূড়ান্ত অবাক হলাম,সারা যেন আজ আমায় অবাক করার দায়িত্ব নিয়েছে।কোথা থেকে এতো জানলো মেয়েটা!!এসব কেন করছো??সারা এবার সরাসরি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,এতোটুকু অধিকারও কি আমার নেই?? সারার করুণ মুখ দেখে আমার মুখে কথা জুরালো না।আরো একবার অরুর কাছে ক্ষমা চেয়ে,সারাকে শক্ত করে জরিয়ে নিলাম বুকের সাথে।

অামার সাড়া পেয়ে পাগলের মত আমাকেউ চেপে ধরলো সারা ওর বুকে।

এ শহরে কোন রমনী চাইলে তার শরীর ক্ষুধার্ত থাকার কথা নয়। অথচ সারাকে তাই মনে হচ্ছে।

উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রঙ। টানা টানা চোখ।মরালীর মত গ্রীবা।এত সুন্দর গ্রীবা আমি অরু ছাড়া আর কারো মাঝে দেখেনি।বুক দুটো ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে ব্লাউজ আর শাড়ি ভেদ করে।জর্জেটের নীল শাড়িটা খাপে খাপে মিশে আছে শরীরের সাথে।ফলে প্রতিটি বাঁক শাড়ির উপর থেকেই প্রকটভাবে বোঝা যাচ্ছে।নিতম্ব দুটি গোল আর ভরাট।বঙ্কিমীয় ভাষায় একেই বোধ হয় বলে পীনোন্নত পয়োধর।
“তুমি খুব সুন্দর সারা।অনেক ভালো কাউকে পেতে পারতে! আরো একবার সারাকে নিজের সিদ্ধান্তের থেকে সরে আসার সুযোগ দিলাম।হয়ত বা সুন্দর বাহ্যিক দিক থেকে পেতে পারি কিন্তু আমি যে তোমার দেহের নয় মনের সৌন্দর্য দেখেছি শুভ।অন্য পুরুষ হলে এতোক্ষণে আমাকে কুরে কুরে খেয়ে শেষ করে দিতো!! আমার আমাকে হতাশ করো না প্লিজ!!
 
[[১৭]]

এই দৃশ্য গুলো আর চোখের সামনে দেখতে ভালো লাগছে না দ্রুত এই পার্টটা শেষ করার প্রয়োজন।দেখো সারা আমি এই প্রথম কোন নারীর সাথে মিলিত হতে যাচ্ছি আর আমার মনের সংশয়টাও তোমার অজানা নয়।তাই তুমি নিজেই নিজেকে উন্মুক্ত করো।আমার বলা মাএই সারা আস্তে আস্তে শাড়ির আঁচলটা নিজের হাতে সরিয়ে দিলো।তারপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে শাড়িটা খুলে ছুড়ে ফেললো মেঝেতে।আমার সামনে এক ২৫ বছর বয়সী যুবতি নারী শুধু মাএ ব্লাউজ আর পেটিকোট পরে আছে।মন না চাইলেও শরীরের ধর্ম জাগা,জীবনে প্রথম নারীদের এমন রুপ দেখে প্যান্টের ভিতর আমার পুরুষ সিংহ জেগে উঠছে।তারপর সারা নিজ হাতে ব্লাউজের হুকটা খুলে দিলো,ওটা খুলে দিতেই অসম্ভব সুন্দর বক্ষবন্ধনিতে আটকানো একজোড়া স্তন দেখতে পেলাম। ব্রার বাধন ছিড়ে বেরিয়ে আসার জন্য লড়াই করছে স্তন গুলি।এবার পেটিকোটের ফিতায় হাত দিলো সারা।রশিটা ঢিলে করে টান দিতেই খুলে গেল।সারা পরনে এখন শুধু নীল প্যান্টি আর নীল ব্রা।

অামি সারা কে এই অবস্থায় দেখবো কখনো কল্পনাও করিনি।তারপর অভিঙ্গ হাতে নিজের ব্রার হুকটা খুলে দিলো। বাধন মুক্ত হয়ে তাগড়া ঘোড়ার মত সামেনের দিকে লাফ দিল স্তন দুটি।খাড়া আর নিটোল। নিপল গুলি প্রায় কালচে।রঙটা হালকা হতে হতে নীচের দিকে নেমে গেছে।

সারা থেমে গেল,প্লিজ শুভ বাকি টুকু তুমি নিজে হাতে খুলে দাও!!অনুনয় করে বললো সারা

অামি হাটু গেড়ে সারার সামনে। দুই থাইয়ের দুইপাশ দিয়ে আঙ্গুল ঢুকিয়ে প্যান্টিটা নামিয়ে দিলাম কোমড়ের নীচে।তারপর সারা নিজেই পা গলিয়ে বের করে আনলো।
সারাকে একদম নিরাভরণ বাঙালী মেয়ের মত লজ্জা পেতে দেখলাম এই প্রথম।লজ্জায় লাল হয়ে গেল সারা।দুই হাতে চোখ ঢাকলো।তারপর ঝাপ দিল অামার বুকে।

অরু ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো কিংবা কোন নারীর সান্ন্যিধ্যে আসবো ভাবিনি।নিজের শরীরে পোষাক মুক্ত নারী দেহের ছোঁয়া পেতেই ধমনীতে রক্ত চলাচল বেড়ে গেল।চোখের সামনে এক আধো আলোতে যুবতী দেহের দর্শন করার ইচ্ছা আমার নেই। তাই সারাকে বিছানাতে ঠেলে ফেলে দিয়েই,নিজেকে বিবস্ত্র করলাম।

অামার লিঙ্গ তখন লোহার মত শক্ত হয়ে উঠেছে,তখনো বিছানাতে শুয়ে আছে সারা,আমার আট ইঞ্চি উদ্ধিত লিঙ্গ দেখে চোখ বড় বড় করে তাকালো।আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সারার বুকের উপর নিয়ে গেলাম নিজেকে,অভিঙ্গ সারা জানে আমাকে পেতে হলে ওকেই প্রধান ভুমিকা নিতে হবে। তাই আমার মুখটা ওর মুখের কাছে যেতেই আমার ঠোঁটটা নিজের ঠোঁটের সাথে মিশিয়ে নিলো,সারা এমন ভাবে আমাকে চুষছে যেন এজন্মে সেটা শেষ হবার নয়।আমিও কয় একটা প্রতুউত্তর দিয়ে নিজেকে উঠিয়ে আনলাম ওর শরীরের উপর থেকে।তারপর বিছানা থেকে নেমে,মেঝেতে দাঁড়িয়ে সারার দুই পা নিজের কাধের উপর তুলে নিলাম।আমার ইশারায় লিঙ্গের মুখটা নিজেই সেট করে দিলো ওর গরম যৌনিতে। তারপর আস্তে করে একটু খানি চাপ দিলাম।ফস কর একটা শব্দের সাথে মুন্ডিসহ ইঞ্চি তিনেক ঢুকে গেল সারার যৌনি গহ্ববে।আমি থামলাম,ভিতরটা এতো গরম হয় জানতাম না। সারা মাঝারী উচ্চতার মেয়ে।ও জানে ওর যোনীর গভীরতাও কম।আমার লোহার মত শক্ত লিঙ্গটা নিতে সারা একটু কষ্ট হতে পারে।সেভাবে নিজেকে প্রস্তুত করলো সারা।আমি লম্বা দম নিয়ে ঠেসে দিলাম লোহার মত শক্ত আর মোটা পেরেক।

সারার মুখ দেখে মনে হল একটা আগুনের শিক তার যোনী ভেদ করে ঢুকছে তো ঢুকছেই।এর যেন কোন শেষ নেই।কোন বিরতি না দিয়ে কোন মায়া না করে এক ঠেলায় পুরো আট ইঞ্চি লিঙ্গটা ঢুকিয়ে দিলাম সারার যৌনি গহ্বরে।অনন্তকাল পরে মনে হল অামি থেমেছি। খুব জোরে চিৎকার দিতে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলো সারা।আমার লিঙ্গটা খাপে খাপে মিশে আছে সারা গুদের ভিতর।

সারা তখনো ব্যথায় দাঁত চেপে আছে কারণ ও নিজেই বলেছে আমার সাথে থাকতে এসে প্রায় টানা দুই বছর অব্যবহৃত আছে ওর যৌনিটা।সারা একদম কামড়ে ধরলো অামার শক্ত লিঙ্গটাকে। পুরো লিঙ্গটা ঢুকে যাওয়ার পর অামি আবার বিরতি নিলাম কারণ এটাই আমার প্রথম নারী দেহের স্বাদ নেওয়া। এতোটুকুতেই যেন হাঁফিয়ে উঠেছি।একটু ঝুলে নিচু হতেই, খুব গভীর করে চুমু খেল সারা আমার ঠোটে।ও যেন বলতে চাইছে প্রস্তত হও।আসছে ঝড়।

কথায় বলে হাঁসের বাচ্চাকে সাঁতার শিখাতে হয়না।আমার ভিতরেও যেন এক আদিম প্রবৃদ্ধি কাজ করলো সব কিছু যেন কত জন্ম ধরে শেখা আমার।

প্রথমে খুব স্লো আর আস্তে শুরু করলাম।লিঙ্গটা অর্ধেকমত বের করে আবার খুব ধীরে ধীরে সেটা প্রবেশ করালাম।বার দশেক এমন করার পর মোটামুটি ধাতস্থ হয়ে গেল সারা। আস্তে আস্তে চাপ বাড়াতে লাগলাম।আস্তে আস্তে বাড়ছে ঠাপের গতি।ঠাপের সুখে সারা ওর পা দিয়ে আমার গলা চেপে চেপে ধরছে।অামিও ঠাপের পাশাপাশি সারার ঠোটে চুমু খাচ্ছি আর জিব চুষছি।আর কোমড়ের গতি বাড়াচ্ছি, সারাকে সংগম করতে করতে অরুর মুখটা ভেসে উঠছে বার বার।অরুর মুখটা ভেসে উঠতেই বুকের ভিতরটা যন্ত্রনায় কুঁকড়ে উঠলো সব রাগ গিয়ে পরলো সারার উপর,আমি আরো অধিক দ্রুত কোমড় নাড়াতে শুরু করলাম।সারাও সুখে শিৎকার দিতে লাগলো,কতোক্ষণ এ খেলা চললো জানা নেই।হঠাৎই চোখে অন্ধকার দেখলাম,সারার যৌনি গভীরে আমার লিঙ্গটা যেন আরো ফুলে ফেঁপে উঠছে,তলপেটে নিচ থেকে কিছু বেরবার চেষ্টা করছে।আমি আরো জোরে গতি বাড়ালাম,সারা দেখলাম কাঁটা কবুতরের মত ছটফট করতে করতে একম চিতল মাছের মত বেঁকে গিয়ে বিছানা থেকে কিছুটা উঁচু হয়ে আবার বিছানাতেই মিশে গেল।ওর যৌনি থেকে বের হয়ে আসা গরম তরল আমার লিঙ্গ মুখে পরতেই আর নিজেকে রাখতে পারলাম না।

জীবনের প্রথম সংগম তাই আর নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব হলো না।
অামি শেষ কয়েকটা ঠাপ দিলাম বুনো মোষের শক্তি দিয়ে।অরু অরু বলে চিৎকার দিয়ে, চিরিক চিরিক করে গরম বীর্য ঢেলে দিলাম সারার যৌনির ভিতরে। সারা পরম আনন্দে তা গ্রহন করলো ওর উর্বর জমিতে। আবেগময় প্রলম্বিত সংগম সত্যি সত্যি আনন্দদায়ক।সারা বুকের উপর মাথা রেখে হাপাতে লাগলাম।সারা আমার মাথাটাকে বুকের মাঝে জোরে চেপে ধরে আদর করতে লাগলো।আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে সারা বললো শেষ পযন্ত অরুকেই দেখতে পেলে শুভ!!! আমি কোন উত্তর দিলাম না।

ক্লান্ত পরিশ্রান্ত আমি আর সারা দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। তারপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছি জানিনা।সারা কখন চলে গেছে নিজের ঘরে তা অামার জানা নেই।সকালে মাথার চুলে সারার আঙুলের ছোয়া পেয়ে আস্তে আস্তে ঘুমের গভীর থেকে উঠে আসলাম।
মনে হল দূর থেকে কে যেন ডাকছে আমায়।শুনা যায় কি যায় না।যখন পুরো ঘুম ভাংলো বেলা তখন আটটা।

চোখ খুলতেই সারা শরীরে ব্যথা ব্যথা অনুভব করছি।মনে পরলো কাল রাতের কথা।আলস্য যেন কাটে না।মুখের উপর ঝুকে আছে সারা।এই মাত্র স্নান করে এসেছে বুঝা যায়।চুলের ডগা বেয়ে ফোটা ফোটা জল পড়ছে। পাতলা সুতির একটা নীল শাড়ী পড়ে আছে চুলের জলে শাড়ীটা ভিজে লেপ্টে আছে তলপেটের সাথে। হাতে ধুমায়িত চায়ের কাপ।মুখে রমণক্লান্ত পরিতৃপ্তির হাসি।এই মূহুর্তে সারাকে অামার কাছে সদ্য ফোটা ফুলের মত পবিত্র আর দেবী প্রতিমার মত সুন্দর মনে হল।

তারপরই অরুর কথা মনে পরলো,অরু আজ নেই,থাকলে সারার সাথে এই মূহুর্তটা কখনো আসতো না,শেষ পর্যন্ত চল্লিশ বছরের ধ্যান আমার ভাঙ্গতেই হলো।আমার জন্য সারার জীবনটাও নষ্ট হলো।না আর শুয়ে থাকা যায়না উঠে সারার হাত থেকে চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে বাথরুমে ঢুকলাম,ধুয়ে মুছে ফেললাম কালকের সব স্মৃতি।ফ্রেস হয়ে আসার পর সারা খেতে দিলো।কালকের পর থেকে সারার সাথে আর কথা হয়নি,কেন জানি ওর চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা করছে।খাওয়া শেষে সারা আমাকে ব্যাগ গুছাতে সাহায্য করলো,দশটায় ফ্লাইট আর বেশি লেট করা যাবে না।সব গুছিয়ে নিয়ে বের হলাম সাথে সারাও এলো,তখনো ও আমার সাথে কথা বলেনি।বিমান বন্দরে এসে পৌছালাম সাড়ে নয়টায়,আর বেশি দেরি নেই এবার বিদায় নিতেই হবে।

সারা আমার সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে,আমি ওর হাত দুটো ধরতেই আমার দিকে তাঁকালো,আমায় ক্ষমা করে দিও সারা!!এ কথা বলতেই অঝড়ে কেঁদে উঠলো সারা,আমি হঠাৎই অপ্রস্তুত হয়ে পরলাম।সারা প্নিজ চুপ করো।আর কখনো আমাদের দেখা হবেনা তাই না শুভ??কাঁন্না ভেজা চোখে আমার দিকে তাঁকিয়ে কথাটা বললো সারা।জানিনা সারা!! কিন্তু সত্যি বলছি তোমাকে কখনো ভুলবো না।আমি দেশে ফিরে তোমাকে অবশ্যই জানাবো।কখনো কোন প্রয়োজন হলে আমায় কল করো।এবার যেতে হবে,প্লিজ হাসি মুখে বিদায় দাও।সারা কোন মতে নিজের চোখটা মুছে নিচু হয়ে আবার আমার পায়ে প্রনাম করলো।কি আশির্বাদ দিবো তোমায়!!! যদি পরজন্ম বলে কিছু থাকে তোমাকে না পাই অনন্ত তোমার কাছে যেন থাকতে পারি এই আশির্বাদ করো আমায় শুভ।বুকফাঁটা এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আমার মুখ থেকে কিছুই বের হলো না।এই প্রথম আমি নিজের মন থেকে সারাকে জরিয়ে ধরে ওর কপালে,এক চুম্বন এঁকে দিলাম।সারার করুন মুখটাও খুশিতে জ্বলে উঠলো। ভালো থেকো সারা!!! বলে পা বাড়ালাম ভিতরের দিকে।
 
[[১৮]]

যেতে যেতে পিছনে ফিরে তাকাতে দেখলাম অশ্রুসিক্ত চোখে চাতক পাখীর ন্যায় আমার ফেলে আসা পথপানে চেয়ে আছে সারা।হাত নাড়িয়ে শেষবারের মত বিদায় জানালাম,সারাও হাত নাড়ালো,আর পিছু ফিরে না চেয়ে হাঁটা শুরু করলাম।

সঠিক সময়ে প্লেন উড়লো,সারার জন্য খুব খারাপ লাগছে।জানিনা এক ফোঁটা বীর্যের সেই ক্ষমতা আছে কিনা,অবিকল এক মানুষের জন্ম দেওয়া কিংবা তার ভিতর পবিএ প্রেমের ভাব আনার। কিন্তু আমি জানি যে বীজ আমি বপন করলাম সারার উর্বর ভুমিতে তা বিফলে যাবেনা। কারণ এক ফোঁটা বীর্যের থেকে বীর্য ধারনের পাএ আর সঠিক পরিচর্যার মহত্ব অনেক গুন বেশি।জানি তোমার কাছে সুরক্ষিত থাকবে এই ধরীত্রিতে আমার শেষ রক্তের ফোঁটা। ভালো থেকো সারা!!আর ক্ষমা কোরো আমায়।এসব ভাবতে ভাবতে মাথাটা ভাড়ি হয়ে এলো। সিটে মাথাটা এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজলাম।আর চোখে ভেসে উঠলো আমার অরুর হাসি মাখা মিষ্টি মুখটা!!!!!!!

***************সমাপ্ত*****************
 

Users who are viewing this thread

Back
Top