শিশুর দাঁত সুস্থ ও ক্যাভিটিমুক্ত রাখতে প্রতিদিন দাঁত ব্রাশের বিকল্প নেই। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো একই ধরনের টুথব্রাশ ও টুথপেস্ট শিশুর জন্য নয়। এ ছাড়া এদের মুখ ও দাঁতের যত্নেও রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা।
ছয় মাস বয়স পর্যন্ত অর্থাৎ দাঁত ওঠার আগে শিশুদের মাড়ি নরম কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। শিশুর ৬ মাস থেকে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত খেয়াল করা জরুরি যে সে সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করছে কি না।
টুথপেস্ট
এক থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফ্লোরাইডমুক্ত টুথপেস্ট দিতে হবে। এ সময় বিভিন্ন রং ও স্বাদের জেল টুথপেস্ট দেওয়া যেতে পারে। শিশুর পছন্দের স্বাদ ও রং অনুযায়ী টুথপেস্ট বাছাই করুন। এ বয়সী শিশুরা কুলি করতে পারে না। অনেক সময় টুথপেস্ট গিলে ফেলে। এ ধরনের জেল ব্যবহারে ফ্লোরোসিস হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
তিন বছর বয়স থেকে ফ্লোরাইড আছে এমন টুথপেস্ট ব্যবহার করা প্রয়োজন। ফ্লোরাইড এক প্রকার প্রাকৃতিক খনিজ, যা দাঁতকে শক্তিশালী করে, দাঁত ক্ষয় রোধ করে এবং মুখের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। তবে ব্রাশ করার পর অবশ্যই মুখ ভালোভাবে ধুয়ে কুলি করতে হবে। ফ্লোরাইড শিশুদের দাঁতের সুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর হলেও বেশি পরিমাণে ফ্লোরাইড ব্যবহার দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। তাই কেনার আগে টুথপেস্টে কত শতাংশ ফ্লোরাইড রয়েছে, তা দেখে নেওয়া জরুরি। শিশুদের টুথপেস্টে ফ্লোরাইডের পরিমাণ কম থাকবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের টুথপেস্ট শিশুরা ব্যবহার করলে ফ্লোরোসিস হতে পারে। ফ্লোরোসিস হলো দাঁতের ওপর ছোট ছোট সাদা একধরনের দাগ। অনেক সময় দাঁত ভেঙেও যায়।
শূন্য থেকে তিন বছর বয়সী শিশুদের একটি চালের দানার সমান পেস্ট দিয়ে ব্রাশ করাতে হবে। তিন বছর বা তার বেশি বয়সী শিশুদের একটি মটরদানার পরিমাণ পেস্ট দিতে হবে। সকালে নাশতার পর এবং রাতে খাবার পর দাঁত ব্রাশ করতে হবে।
টুথব্রাশ
জন্মের পর থেকে শিশুর মাড়ি এবং জিহবা নরম সুতি কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ছয় মাস বয়স থেকে দাঁত ওঠা শুরু করলে ফিঙ্গার টুথব্রাশ ব্যবহার করে দাঁত পরিষ্কার করা যাবে। এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ছোট মাথার টুথব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। শলাকাগুলো হবে নরম এবং এর মাথাগুলো হবে গোলাকার। ব্রাশের হাতল এমন হতে হবে যেন শিশু স্বাচ্ছন্দ্যে হাতের মুঠোয় ধরতে পারে। ৫ থেকে ১০ বছর বয়সে অধিকাংশ শিশুই সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করে না। তাই দাঁতে ক্যাভিটি বা ক্ষয় বেশি হয়। প্রতিবার কমপক্ষে দুই মিনিট করে দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করাতে হবে শিশুদের।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. শারমীন জামান, ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল সার্জন, ফরাজী ডেন্টাল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, বনশ্রী, ঢাকা।