শিশু বয়সের খাবারে অ্যালার্জি নির্ণয়ে রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ও সুনির্দিষ্ট খাবার চিহ্নিত করা জরুরি। এ জন্য রক্তে কিছু পরীক্ষা ও বিশেষ পদ্ধতিতে অ্যালার্জি পরীক্ষা করা হয়।
শিশু বয়সে কোনো নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণের পর অ্যালার্জিজনিত নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এটা মূলত দুই ধরনের। এক, খাবার বা খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত কোনো উপকরণ বা রাসায়নিক পদার্থ থেকে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া। যেমন দুগ্ধজাত উপাদান সহ্য না হওয়া। দুই, অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া। এটা ইমিউনোলোজিক প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। রক্তে উচ্চমাত্রার আইজি-ই পাওয়া যায়। যেমন গরুর দুধ, ডিম, বাদাম বা মটরদানার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি। শিশুদের খাবারজাত এ ধরনের অ্যালার্জির সঙ্গে জিনগত সম্পৃক্ততাও রয়েছে।
খাবারে অ্যালার্জির উপসর্গ
● ত্বকে লাল লাল ছোপ, চুলকানো, চামড়ার নিচের আস্তরণসহ ফুলে যাওয়া।
● চোখ খচখচ করা, চোখ লাল, পানি ঝরা।
● নাক বন্ধ, হাঁচি, গলা চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলায় কর্কশ আওয়াজ, শুষ্ক কাশি প্রভৃতি।
● শ্বাসকষ্ট, শ্বাসে শাঁইশাঁই শব্দ ইত্যাদি।
● ঠোঁট, জিব ফুলে যাওয়া। ঠোঁটের চারপাশ লাল বর্ণ ও চুলকানো।
● বমি ভাব, বমি, পেট কাড়ানো-ব্যথা, ডায়রিয়া।
● হৃদ্যন্ত্র দ্রুত বা কম স্পন্দন, রক্তচাপ কমে যাওয়া, মূর্চ্ছা যাওয়া।
নানা রকম অ্যালার্জি
● কারও কারও মুরগির ডিমে অ্যালার্জি থাকে। এমনটা হয়ে থাকলে তার অন্যান্য ডিমে অ্যালার্জি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। শিশুর ডিমে অ্যালার্জি সাধারণভাবে ০-১ বছর বয়সে শুরু হয় এবং ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তা ৭ বছর বয়সে ঠিক হয়ে যায়।
● গরুর দুধে অ্যালার্জি সাধারণত ০-১ বছর বয়সে শুরু হয়। ৭৬ শতাংশ ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি ৫ বছর বয়সে লোপ পায়।
● মটর বা বীজ–জাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকে অনেকের। এ ধরনের অ্যালার্জি শিশুর ১-২ বছরে শুরু হয়। প্রায় ২০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে এ সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। বাকিদের সারা জীবন সমস্যা হয়।
● কোনো কোনো খাবার, যেমন সামুদ্রিক মাছ, গম, সয়াবিন, আপেল, গাজর—এসবে অ্যালার্জি হতে পারে একেক বয়সে। আবার একটা নির্দিষ্ট বয়সে আপনা–আপনি সেরে যায়। এ ছাড়া গরুর দুধ ও ডিমে অ্যালার্জি প্রায় ৫০ শতাংশ স্কুল বয়সে সেরে যায়। তবে কখনো কখনো দেখা যায়, মটর বা বীজে অ্যালার্জি প্রায় সারা জীবনের জন্য থেকে যায়। এমনটা হয়ে থাকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে।
যা করতে হবে
● শিশু বয়সের খাবারে অ্যালার্জি নির্ণয়ে রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ও সুনির্দিষ্ট খাবার চিহ্নিত করা জরুরি। এ জন্য রক্তে কিছু পরীক্ষা ও বিশেষ পদ্ধতিতে অ্যালার্জি পরীক্ষা করা হয়।
● কোন খাবারে শিশুর অ্যালার্জি, তা চিহ্নিত করতে হবে। শিশুর খাবারের তালিকা থেকে ওই সব খাবার সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ও অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মেনে এসব খাবার অল্প অল্প করে নির্দিষ্ট বয়সে আবার শুরু করতে হবে।
* অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী | সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
শিশু বয়সে কোনো নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণের পর অ্যালার্জিজনিত নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এটা মূলত দুই ধরনের। এক, খাবার বা খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত কোনো উপকরণ বা রাসায়নিক পদার্থ থেকে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া। যেমন দুগ্ধজাত উপাদান সহ্য না হওয়া। দুই, অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া। এটা ইমিউনোলোজিক প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। রক্তে উচ্চমাত্রার আইজি-ই পাওয়া যায়। যেমন গরুর দুধ, ডিম, বাদাম বা মটরদানার মতো খাবার থেকে অ্যালার্জি। শিশুদের খাবারজাত এ ধরনের অ্যালার্জির সঙ্গে জিনগত সম্পৃক্ততাও রয়েছে।
খাবারে অ্যালার্জির উপসর্গ
● ত্বকে লাল লাল ছোপ, চুলকানো, চামড়ার নিচের আস্তরণসহ ফুলে যাওয়া।
● চোখ খচখচ করা, চোখ লাল, পানি ঝরা।
● নাক বন্ধ, হাঁচি, গলা চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলায় কর্কশ আওয়াজ, শুষ্ক কাশি প্রভৃতি।
● শ্বাসকষ্ট, শ্বাসে শাঁইশাঁই শব্দ ইত্যাদি।
● ঠোঁট, জিব ফুলে যাওয়া। ঠোঁটের চারপাশ লাল বর্ণ ও চুলকানো।
● বমি ভাব, বমি, পেট কাড়ানো-ব্যথা, ডায়রিয়া।
● হৃদ্যন্ত্র দ্রুত বা কম স্পন্দন, রক্তচাপ কমে যাওয়া, মূর্চ্ছা যাওয়া।
নানা রকম অ্যালার্জি
● কারও কারও মুরগির ডিমে অ্যালার্জি থাকে। এমনটা হয়ে থাকলে তার অন্যান্য ডিমে অ্যালার্জি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। শিশুর ডিমে অ্যালার্জি সাধারণভাবে ০-১ বছর বয়সে শুরু হয় এবং ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তা ৭ বছর বয়সে ঠিক হয়ে যায়।
● গরুর দুধে অ্যালার্জি সাধারণত ০-১ বছর বয়সে শুরু হয়। ৭৬ শতাংশ ক্ষেত্রে এই অ্যালার্জি ৫ বছর বয়সে লোপ পায়।
● মটর বা বীজ–জাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকে অনেকের। এ ধরনের অ্যালার্জি শিশুর ১-২ বছরে শুরু হয়। প্রায় ২০ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে এ সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। বাকিদের সারা জীবন সমস্যা হয়।
● কোনো কোনো খাবার, যেমন সামুদ্রিক মাছ, গম, সয়াবিন, আপেল, গাজর—এসবে অ্যালার্জি হতে পারে একেক বয়সে। আবার একটা নির্দিষ্ট বয়সে আপনা–আপনি সেরে যায়। এ ছাড়া গরুর দুধ ও ডিমে অ্যালার্জি প্রায় ৫০ শতাংশ স্কুল বয়সে সেরে যায়। তবে কখনো কখনো দেখা যায়, মটর বা বীজে অ্যালার্জি প্রায় সারা জীবনের জন্য থেকে যায়। এমনটা হয়ে থাকে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের ক্ষেত্রে।
যা করতে হবে
● শিশু বয়সের খাবারে অ্যালার্জি নির্ণয়ে রোগের ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা ও সুনির্দিষ্ট খাবার চিহ্নিত করা জরুরি। এ জন্য রক্তে কিছু পরীক্ষা ও বিশেষ পদ্ধতিতে অ্যালার্জি পরীক্ষা করা হয়।
● কোন খাবারে শিশুর অ্যালার্জি, তা চিহ্নিত করতে হবে। শিশুর খাবারের তালিকা থেকে ওই সব খাবার সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ও অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মেনে এসব খাবার অল্প অল্প করে নির্দিষ্ট বয়সে আবার শুরু করতে হবে।
* অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরী | সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল