স্যামন, শেলফিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, লবস্টার, শ্রিম্প, মলাস্কস, ওয়েস্টার, ক্লাম, ক্র্যাব, স্কালোপস, স্কুইড—দেশে জনপ্রিয় হওয়া সামুদ্রিক খাবার বা সি ফুড। বর্তমানে দেশে অনেকের খাদ্যতালিকায় যুক্ত হয়েছে এমন নানান সামুদ্রিক খাবার। এসব খাবারের বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। তবে সামুদ্রিক খাবার গ্রহণে সতর্কতা মেনে চলা ভালো।
পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
● সামুদ্রিক খাবার পুষ্টিগুণে ভরপুর। বিশেষত সামুদ্রিক মাছ যেমন শেলফিশ, স্যামন, শ্রিম্পে উচ্চমাত্রার প্রোটিন, কিছু নির্দিষ্ট ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। খাবারের পাতে ৮৫ গ্রাম সামুদ্রিক মাছ মানবদেহে জিংকের দৈনিক চাহিদার ২১ ভাগ, লৌহের ১৩ ভাগ, সেলেনিয়ামের ৯৯ ভাগ এবং ভিটামিন বি১২-এর শতভাগ চাহিদা পূরণে সক্ষম।
● যাঁরা হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপেডেমিয়ায় ভুগছেন, তাঁরা গরু-খাসির মাংস, মগজের মতো অনেক খাবার খেতে পারেন না। তাঁদের জন্য উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ সামুদ্রিক খাবার চমৎকার একটি বিকল্প হতে পারে।
● সামুদ্রিক খাবার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায় ও নার্ভাস সিস্টেমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
● স্যামন, সার্ডিন, অয়েস্টার ও শ্রিম্পে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে, যা হাড়ের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়।
নিষেধ ও সতর্কতা
● সামুদ্রিক খাবারে উচ্চমাত্রার মার্কারি রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক খাবার খাওয়া মা ও শিশু উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইলিশ বা উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে ওমেগা-৩-এর চাহিদা পূরণ করা উত্তম।
● যাঁদের রক্তে পিউরিন বা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি কিংবা যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বাতের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা সামুদ্রিক খাবার এড়িয়ে চলবেন।
● সামুদ্রিক মাছ কিংবা খাবারে প্রোটিন ও মিনারেলের পরিমাণ অনেক বেশি। যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না।
● সামুদ্রিক খাবার বা শুকনো সামুদ্রিক মাছে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদ্রোগের রোগীদের অল্প পরিমাণে খেতে হবে।
● শ্রিম্প, ওয়েস্টার, ক্র্যাব, স্কালোপস, স্কুইড ইত্যাদি সামুদ্রিক খাবার খেলে অনেকের এলার্জি দেখা দেয়। অনেক সময় তাৎক্ষণিক শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। তাই যাঁদের এলার্জির সমস্যা আছে, তাঁরা আগে থেকেই না জেনে নতুন কোনো সামুদ্রিক খাবার খাবেন না।
● বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে, কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ করে সামুদ্রিক খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
[FA]pen[/FA] লেখক: ফাহমিদা হাশেম | জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ঢাকা