ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটেন বা ব্যায়াম করেন, রোজায় তাঁদের নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
রোজায় আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও খাওয়ার সময়সূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ডায়াবেটিস রোগীদের যেহেতু একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও সঠিক সময়সূচির খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হয়, তাই তাঁদের এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। অবশ্য কিছু জটিল রোগী ছাড়া বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগী বড় কোনো সমস্যা ছাড়াই রোজা রেখে থাকেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা সাধারণত সারা বছর নিয়মিত হাঁটা, জগিং, ব্যায়াম ইত্যাদি করে থাকেন। ব্যায়াম রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা। ব্যায়ামের মধ্যে সবচেয়ে সহজ হচ্ছে হাঁটা। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে। দিনের যেকোনো সময় হাঁটা যায়। এ ছাড়া ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, দড়িলাফ ইত্যাদি হাঁটার বিকল্প ব্যায়াম হতে পারে। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে এসব ব্যায়াম কীভাবে করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান অনেক ডায়াবেটিস রোগী।
এবার রোজা চলছে গ্রীষ্মকালে। অতিরিক্ত গরমে অধিক ঘামের কারণে এমনিতেই পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তার সঙ্গে যদি রোজা রেখে দিনের বেলা কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তা ছাড়া ব্যায়ামের সময় আমাদের শরীরে সঞ্চিত শর্করা খরচ হয়। কাজেই রোজায় দিনের বেলা অতিরিক্ত কায়িক শ্রমে শরীরের শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে।
তাই যে ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটেন বা ব্যায়াম করেন, রোজায় তাঁদের নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
রোজা রেখে দিনের বেলা বেশি ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম না করাই ভালো। ইফতার বা রাতের খাবারের এক ঘণ্টা পর হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করতে পারেন বা হাঁটতে পারেন। সাহ্রির আগেও হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে পারেন। রোজাদার ডায়াবেটিস রোগীরা তারাবিহর নামাজ পুরো ২০ রাকাত পড়লে তা ব্যায়ামের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। তাই রোজায় অতিরিক্ত ব্যায়াম না করলেও চলে।
এদিকে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিরাপদ নয়। কাজেই নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করতে পারেন—
● বাসার বারান্দায় অথবা ছাদে ইফতারের পর অথবা সাহ্রির আগে হাঁটুন।
● সম্ভব হলে বাসায় ট্রেডমিল বা সাইক্লিং মেশিনে ব্যায়াম করতে পারেন। বাড়িতে টেবিল টেনিস বা এ–জাতীয় ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা থাকলে তা খেলতে পারেন।
● তরুণেরা অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে দড়িলাফ দিতে পারেন।
● মহামারির এ সময়ে বাড়ির বাইরে খেলার মাঠ, জনসমাগমস্থল, সুইমিংপুল কিংবা জিমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
● পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতারের পর থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
● রোজা রাখা অবস্থায় দুর্বল লাগলে, মাথা ঝিমঝিম, চোখে ঝাপসা, অতিরিক্ত ঘাম, হাত-পা কাঁপা অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে।
● রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৩ দশমিক ৯ মিলিমোল বা এর কম কিংবা ১৬ দশমিক ৬ মিলিমোল বা এর বেশি হলে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত।
● চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা পুনর্নির্ধারণ করে নিন।
* ডা. এ হাসনাত শাহীন | কনসালট্যান্ট, ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা
রোজায় আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও খাওয়ার সময়সূচিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। ডায়াবেটিস রোগীদের যেহেতু একটি সুনিয়ন্ত্রিত ও সঠিক সময়সূচির খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হয়, তাই তাঁদের এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়। অবশ্য কিছু জটিল রোগী ছাড়া বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগী বড় কোনো সমস্যা ছাড়াই রোজা রেখে থাকেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা সাধারণত সারা বছর নিয়মিত হাঁটা, জগিং, ব্যায়াম ইত্যাদি করে থাকেন। ব্যায়াম রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা। ব্যায়ামের মধ্যে সবচেয়ে সহজ হচ্ছে হাঁটা। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে। দিনের যেকোনো সময় হাঁটা যায়। এ ছাড়া ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌড়ানো, সাঁতার কাটা, সাইক্লিং, দড়িলাফ ইত্যাদি হাঁটার বিকল্প ব্যায়াম হতে পারে। তবে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে এসব ব্যায়াম কীভাবে করবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান অনেক ডায়াবেটিস রোগী।
এবার রোজা চলছে গ্রীষ্মকালে। অতিরিক্ত গরমে অধিক ঘামের কারণে এমনিতেই পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তার সঙ্গে যদি রোজা রেখে দিনের বেলা কায়িক শ্রম বা ব্যায়াম করা হয়, তাহলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তা ছাড়া ব্যায়ামের সময় আমাদের শরীরে সঞ্চিত শর্করা খরচ হয়। কাজেই রোজায় দিনের বেলা অতিরিক্ত কায়িক শ্রমে শরীরের শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে।
তাই যে ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটেন বা ব্যায়াম করেন, রোজায় তাঁদের নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।
রোজা রেখে দিনের বেলা বেশি ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম না করাই ভালো। ইফতার বা রাতের খাবারের এক ঘণ্টা পর হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম করতে পারেন বা হাঁটতে পারেন। সাহ্রির আগেও হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে পারেন। রোজাদার ডায়াবেটিস রোগীরা তারাবিহর নামাজ পুরো ২০ রাকাত পড়লে তা ব্যায়ামের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। তাই রোজায় অতিরিক্ত ব্যায়াম না করলেও চলে।
এদিকে করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময় সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বাড়ির বাইরে বের হওয়া নিরাপদ নয়। কাজেই নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করতে পারেন—
● বাসার বারান্দায় অথবা ছাদে ইফতারের পর অথবা সাহ্রির আগে হাঁটুন।
● সম্ভব হলে বাসায় ট্রেডমিল বা সাইক্লিং মেশিনে ব্যায়াম করতে পারেন। বাড়িতে টেবিল টেনিস বা এ–জাতীয় ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা থাকলে তা খেলতে পারেন।
● তরুণেরা অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে দড়িলাফ দিতে পারেন।
● মহামারির এ সময়ে বাড়ির বাইরে খেলার মাঠ, জনসমাগমস্থল, সুইমিংপুল কিংবা জিমে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
● পানিশূন্যতা দূর করতে ইফতারের পর থেকে সাহ্রি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
● রোজা রাখা অবস্থায় দুর্বল লাগলে, মাথা ঝিমঝিম, চোখে ঝাপসা, অতিরিক্ত ঘাম, হাত-পা কাঁপা অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে।
● রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৩ দশমিক ৯ মিলিমোল বা এর কম কিংবা ১৬ দশমিক ৬ মিলিমোল বা এর বেশি হলে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত।
● চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা পুনর্নির্ধারণ করে নিন।
* ডা. এ হাসনাত শাহীন | কনসালট্যান্ট, ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগ, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা