[HIDE]জনের কথায় মা শিউরে উঠলো, আমিও একটু চমকে গেলাম। শয়তানটা কি বলতে চাইছে? "বংশের প্রধান পুরুষের প্রান বাচাঁবে" মানে? আমি জিজ্ঞেস করলাম, "এর মানে কি? কার প্রান? আর আমি কিভাবে বাঁচাবো?" জন হাঁটু গেঁড়ে বসলো আমাদের সামনে, তারপর মা আর আমার দিকে তাকিয়ে একটু বিষন্ন মুখ করে বল্ল," কি আর বলি, শুনলে তোমাদেরও মন খারাপ হবে, তাও বলছি, আসলে আমি একটু বেশি বেশি সুধা খেয়ে ফেলেছিলাম, তাতে আমার কিডনি গুলো বিগড়ে গেছে....এখন সেগুলো পাল্টাতে হবে। ডাক্তারের কাছে গেছিলাম, বলে দিল কিডনি লাগবে নতুন আর সেগুল বসাতেও অনেক খরচ। আমি যখন বললাম আমার টাকা নেই, তখন বল্ল, তাহলে নিজের জন্যে একটা কিডনি, আর আমাদের বিক্রী করার জন্যে একটা কিডনি জোগাড় করে নিয়ে এস, তাহলে তোমার আর কোনও খরচাই লাগবেনা। তাই শুনে আমি ডাক্তার কে বল্লাম, যে আমার তো দুটো কিডনিই গেছে, একটা পাল্টালে হবে? ডাক্তার ব্যাটা বলে কি জানো? দুটোই পাল্টে দেব, শুধু বেচার জন্যে আরও দুটো কিডনি বেশি আনলেই হবে, আর হ্যাঁ, এটাও বল্ল যে আমার জন্যে ফ্যামিলির কারো কিডনি হলেই ভালো হয়"।[/HIDE][HIDE][/hide][HIDE][/hide]
[HIDE]
এই অবধি বলে জন থামলো, আর ততক্ষনে আমি যা বোঝার বুঝে গেছি, এই কসাইটা আমার আর মার কিডনি বেঁচে নিজের প্রান বাঁচাতে চাইছে। জন কে এতো দিন আমি যতটা ঘেন্না করতাম, ভাবতাম তার থেকে বেশি ঘেন্না করা বোধ হয় সম্ভব না, কিন্তু আজ বুঝতে পারলাম, পৃথিবীর সমস্ত ঘৃণাও জনের জন্য যথেষ্ট না। রাগে আমার সারা শরীর যেন জ্বলতে লাগলো। ঘাড়টা ঘুড়িয়ে মার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মার দু চোখ ভয়ে বিস্ফারিত হয়ে গেছে, মুখ হাঁ হয়ে গেছে, মুখ দিয়ে কোনো কথা বেরচ্ছেনা। আমি এবার জনের দিকে তাকালাম, শুয়ারটা আগের মতই আমাদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে আছে, মুখটা বিষন্ন, কিন্তু চোখের দিকে তাকালেই একটা শয়তানি হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে বল্লাম, "কই, তোকে দেখে তো মনে হচ্ছেনা যে তুই অসুস্থ" । জন খিক্ খিক্ করে হেসে বল্ল, "আরে ডাক্তার বাবুকে যখন বল্লাম যে কিডনি শুধু না, দুটো গোটা মানুষ সাপ্লাই দেব, যা অরগ্যান লাগবে সব বেচতে পারবেন, তখন তিনি খুশি হয়ে একটা ইঞ্জেক্শন ঠুসে দিলেন, আর বল্লেন, এর জোরে আমি সাত দিন একদম চাংগা থাকব। ব্যাস্, আর কি? ইঞ্জেক্শন টা নিয়ে বাইরে বেড়িয়েই তোর খোঁজ শুরু করলাম। এক দুদিন কোনও খোঁজই পেলাম না। তারপর বুদ্ধি গজাল মাথায়....ছিপ ফেল্লাম মাছ ধরার জন্যে। দিয়ে দিলাম কাগজে একটা বিজ্ঞাপন তোর মার জবানিতে" । আমার মাথার ভিতর যেন একটা বাজ পরলো। এতোক্ষনে বুঝলাম মা আমায় দেখে এতো অবাক হয়ে ছিল কেন!!!! যে বিজ্ঞাপন দেখে আমি এতো বছর বাদে ঘরে ফিরলাম, সেটা এই শয়তানটার পাতা ফাঁদ ছিল!!! যখন মা আমায় দেখে অত অবাক হয়েছিল, তখন আমার একটু খটকা লেগেছিল, কিন্তু এত গুল বছর পর মাকে কাছে পাওয়ার আনন্দে সে সব আর খেয়াল করিনি। মা একবার আমার মুখের দিকে আর একবার জনের মুখের দিকে দেখছিল, তারপর জিজ্ঞেস করল, "কি বিজ্ঞাপন? কি বলছে এই লোকটা?" আমি মাথাটা নিচু করে আস্তে আস্তে সব ঘটনা বল্লাম মা কে। মা শিউরে উঠে বল্ল, "তুই তো আমায় একবারও বলিসনি এটার কথা! বল্লেই আমি ঠিক বুঝে যেতাম যে এই জানোয়ারটার কোনো ষড়যন্ত্র আছে এর পিছনে"। আমি কোনও উত্তর দিলাম না। মা এবার জনের দিকে তাকিয়ে বল্ল, " তুই কি করে জানলি যে ও বাড়ি এসেছে?"। জন কিছু বলার আগেই আমি উত্তার দিলাম, "আজ দুপুরে আমরা যখন বেরচ্ছিলাম, তখন সেই ট্যাক্সি ড্রাইভারটার অদ্ভুত ভাবে পালিয়ে যাওয়া টা মনে নেই তোমার? ওই লোকটা জনের লোক ছিলো নিশ্চয়ই" । জন আমার কথা শুনে হেসে উঠল, বল্ল, "তুই সত্তিই খুব বুদ্ধিমান ছেলে" । মা আবার জন কে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, আমি থামিয়ে দিয়ে বল্লাম, "মা, এই পশুটার কাছে কিছু চেয়ে লাভ নেই...শুধু শুধু মুখ নষ্ট" । জন আমার কথা শুনে একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে, উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
[/HIDE]