প্রায় ৮.৭ মিলিয়ন প্রজাতির প্রাণীকে ঘিরে আমাদের এই গ্রহ। তাই যদি বলা হয় যে আমরা অনেকেই প্রাণীদের সম্পর্কে কিছু তথ্য সম্পূর্ণ ভুল জানি, তবে তা আশ্চর্যের বিষয় হবে না। কিছু প্রাণী এবং তাদের আচরণ বিজ্ঞানীদের কাছে এখনো রহস্যময় থাকলেও দীর্ঘমেয়াদী গবেষণার এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তারা কিছু রহস্য ও ভুল ধারণা দূর করতে সক্ষম হয়েছে।
আসুন জেনে নেয়া যাক প্রাণীজগৎ এর এমন কিছু জানা-অজানা ভুল ধারণা সম্পর্কে।
১০. বাদুড়
ভুল ধারনা: বাদুড় চোখে দেখতে পায় না
প্রায়শই অন্ধকারের সাথে কিংবা ডাইনি এবং কালো যাদুর সাথে সংযুক্ত থাকায় এই প্রাণীটিকে নিয়ে তৈরি হয় হরেক রকম পুরাকথা এবং ভুল ধারণা। এর কারণেই বাদুরকে অমঙ্গল আশংকা হিসেবেই ধরা হয়। তবে এটা কেবল কুসংস্কার ছাড়া কিছুই নয়।
Source: San Diego Zoo Animals
বাদুড় সাধারণত রাতে বা সন্ধ্যায় দেখা যায়। কৌতূহলী মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কেন বাদুর কেবল রাতেই শিকার করে? এই প্রশ্নের জবাবে প্রায় সবাই বলবে বাদুর চোখে দেখতে পায় না তাই। যদিও কথাটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বাদুড় দিনের বেলা স্পষ্ট দেখতে পায়, কিন্তু চোখের ব্যবহার খুব বেশি একটা করেনা কারণ এদের দৃষ্টিশক্তি অত্যন্ত ক্ষীণ।
তাহলে বাদুর চলাফেরা কিভাবে করে? এদের গন্ধ এবং শ্রবণের চমৎকার ইন্দ্রিয় থাকায় এগুলোর ব্যবহার করে সহজেই চলতে পারে। বাদুড়ের কান শব্দোত্তর তরঙ্গের শব্দ শুনতে সক্ষম। চলার সময় বাদুড় ক্রমাগত মুখ দিয়ে শব্দোত্তর তরঙ্গের শব্দ তৈরি করে এবং সেই শব্দ তার চারপাশ থেকে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এলে বাদুড় সেই প্রতিধ্বনি থেকেই আশেপাশের সম্ভাব্য বাধা-বিঘ্ন সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে ও তা এড়িয়ে চলতে পারে। তবে মাঝে মাঝে বৈদ্যুতিক তারের মধ্য দিয়ে চলাচল করার ক্ষেত্রে তরঙ্গের প্রতিধ্বনির ব্যাঘাত ঘটে এবং তারের উপস্থিতি টের না পেয়ে বৈদ্যুতিক শক খেয়ে মারা যায়।
ভুল ধারনা: একটি কেঁচো কে দুইভাগে ভাগ করলে, তা দুইটি কেঁচো হিসেবে বেচে থাকবে।
কেঁচোর দুইটি শেষপ্রান্ত আছে, একটি হলো মাথা এবং আরেকটি লেজ। মাথাটি তার পুরু প্রান্তের শেষে। মাথাটি একটি নতুন লেজ তৈরি করবে যদি তা শেষ প্রান্তের আগে কাটা হয়। লেজটি কাটার পর কিছুক্ষণ নড়াচড়া করবে কিন্তু তা নতুন মাথা তৈরি করবে না নতুন কেঁচো সৃষ্টির জন্য।
কেঁচো - Source: Animals Town
শুধুমাত্র “প্লানারিয়ান ফ্লাটওয়ারম” ব্যতিক্রম যা নিজের দেহ নতুনভাবে তৈরি করতে পারে নিজের দেহের প্রকৃত মাপের এক তৃতীয়াংশ থেকে। ইহা নিজের মাথা আবার তৈরি করতে পারে এবং নিজের পুরনো স্মৃতিসহ পরিপূর্ণ হতে পারে।
৮. হাঁস
ভুল ধারণা: হাঁস উড়তে পারেনা
যে সব পাখি উড়তে পারে না তাদের উড্ডয়ন ক্ষমতাহীন পাখি বলে। এই শ্রেণীর হাজারো প্রাণী থাকলেও হাঁস কিন্তু মোটেও এদের মধ্যে একটি নয়। কিছু বন্য হাঁস প্রতি ঘণ্টায় ৫০ মাইল উড়ে যেতে পারে।
এক্ষেত্রে অনেকেই হয়তো ভাবছেন তাহলে হাঁসকে তো কখনোই উড়তে দেখলাম না। এর কারণ হলো তাদের ওজন। ওজনের কারণে এরা বেশিক্ষণ উড়তে পারেনা। এর আরেকটি কারণ হলো এদের চারটির মধ্যে তিনটি প্রজাতিই অর্থাৎ বেশিরভাগ প্রজাতি উড়তে পারেনা। এমনকি যারা উড়তে পারে তারাও তাদের ওজনের কারণে স্থলে বা পানিতে থাকে।