What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (1 Viewer)

এমন সময়ে ইন্দ্রানি এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, “বাপরে এ যে দেখি চাঁদের হাট লেগেছে।” ঋতুপর্ণার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি ঋতুদি কেমন আছো?”

ঋতুপর্ণার হয়ে সুপর্ণা উত্তর দেয়, “ঋতুদি ভালো আছে, তোর কি খবর? তোর বরটা কোথায়?”

ইন্দ্রানি দূরে দাঁড়িয়ে থাকা ওর স্বামীকে দেখিয়ে বলে, “ওই যে দাঁড়িয়ে আছে।”

সুপর্ণা, প্রতিভা খিলখিল করে হেসে জিজ্ঞেস করে, “তোর মা তাহলে বেশ ভালো জামাই সেবা করছে, তাই না?”

ইন্দ্রানির কান গাল লাল হয়ে যায় সুপর্ণা প্রতিভার কথা শুনে, ঠোঁট চেপে হেসে উত্তর দেয়, “ইসস নিজেদের চরকায় তেল দাও না।”

সুপর্ণা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “তুই পাঠিয়ে দিস আমি তেল মালিশ করে দেব খানে।” বলেই সবাই একসাথে হেসে ফেলে।

ঋতুপর্ণা সুপর্ণাকে চিমটি কেটে বলে, “তোমার মুখে কোন ট্যাক্স নেই তাই না।”

সুপর্ণা ঠোঁট চেপে হেসে বলে, “কেন গো নিজে একটা জুটিয়ে নিয়েছ তাই এখন ইন্দ্রানির নতুন বরকে দেখে হিংসে হচ্ছে নাকি?” তারপরে গলা নামিয়ে ঋতুপর্ণার কানেকানে বলে, “মেয়েটা আমার আদি আদি করে একসা হয়ে গেল। একটু ছাড় দাও না, মেয়েটাকে।”

ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে উত্তর দিল ঋতুপর্ণা, “আদি কি করবে না করবে তাতে আমি ওকে বাধা দিয়েছি নাকি?”

সুপর্ণা উত্তর দেয়, “তুমি যে ছেলেকে আঁচলের তলায় লুকিয়ে রেখেছ।”

পাশ থেকে কাকলি বলে ওঠে, “ছাড়ো ছাড়ো সুপর্ণাদি, যে ছেলে আজকে মায়ের আঁচলের তলায় থাকে তারা কিন্তু বিয়ের পরে বউয়ের আঁচলের তলায় লুকায়।”

চাপা হাসি দিয়ে উত্তর দেয় ঋতুপর্ণা, “আদি আমার সেই ধরনের ছেলে নয়।”

সুপর্ণা ওর সাথে গলা মিলিয়ে সায় দেয়, “না না আদিত্য একদম ওই ধরনের ছেলে নয়। ইসস ওর পা ধুয়ে জল খাওয়া উচিত এমন মাতৃ ভক্ত ছেলে।”

“মাতৃভক্ত” তা সত্যি, ভক্তি ভালোবাসা সব কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে ঋতুপর্ণার আদিত্য ওকে ভীষণ ভাবে ভালোবাসে আর সেই আদিকে কাছে পাবে বলেই এই সাজ।

ইন্দ্রাণী গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করে, “সুপর্ণাদি তুমি ধুয়ে জল খাও নাকি? আমি তো বাবা একেবারে মুখ দিয়েই চুষে জল খাই।” হিহি করে আবার এক চোট হাসির কলতান ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিভা কানেকানে জিজ্ঞেস করে, “পাইপের সাইজটা বেশ বড়তো না কিছুদিন পরে অন্য কোন জল খেতে অন্য পাইপের খোঁজে যাবি?”

ইন্দ্রাণী চোখ টিপে বলে, “শাবল এক্কেবারে শাবল। তোমার ওই শান্তনুদাকে দেখে মনে হয় না শাবল আছে।”

প্রতিভা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “বাড়ি আসিস শান্তনু দেখিয়ে দেবে, শাবল না শাল গাছ।”
 
সুপর্ণা ঋতুপর্ণার বাজুতে একটা ছোট চিমটি কেটে জিজ্ঞেস করে, “আজকে এক্কেবারে নতুন বউয়ের সাজে এসেছ কি ব্যাপার। সে আসছে নাকি?”

ঋতুপর্ণা চাপা হাসি দিয়ে উত্তর দেয়, “যে আসার সে অনেক আগেই এসে গেছে।”

সবাই হাঁ হাঁ করে ওঠে, “কোথায় কোথায় একটু দেখাও না। প্লিস প্লিস...”
ঋতুপর্ণা ঠোঁট চেপে হেসে উত্তর দেয়, “লুকিয়ে রেখেছি পাছে তোমাদের পাল্লায় পড়ে হারিয়ে যায়।”

সুপর্ণা, কাকলি আর বাকিরা মন্ডপের এদিকে ওদিকে একবার তাকিয়ে দেখে নেয়, কোন অজানা ব্যাক্তি দেখলেই ওর দিকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে ঋতুপর্ণাকে জিজ্ঞেস করে, “ওই নাকি গো।”

ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে উত্তরে জানিয়ে দেয়, ওর মনের মানুষ এই মন্ডপে উপস্থিত আছে কিন্তু সবার চোখের আড়ালে। কেউই আর ঋতুপর্ণার গুঢ় কথাটা ধরতে সক্ষম হয় না। ওদের চোখ নতুন মানুষের খোঁজে এদিকে সেদিকে খুঁজে বেড়ায়। ঋতুপর্ণার চঞ্চল চিত্ত নিজের মনের মানুষটাকে খুঁজে বেড়ায়। ওকে একা ফেলে কোথায় গেল ছেলেটা। মহিলাদের আবর্তে ওর শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়, ছেলের দেখা না পেয়ে ওর বুকের অবস্থা জল বিহীন মাছের মতন হাঁসফাঁস করে উঠছে। মণিমালাকে মন্ডপের এক কোনায় দেখে আস্বস্ত বোধ করে। ক্ষনিকের জন্য মাথার মধ্যে আশঙ্কা জ্বলে উঠেছিল। আদির কথা গুলো মনে পড়ে যায়, গভীর ভালোবাসা, গভীর প্রেমে সিঞ্চিত বার্তা ওর হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করে দিয়েছে। ওর বুকে শুধু মাত্র মায়ের জায়গা ছাড়া আর কেউই নেই। সেই জন্যেই নতুন বউয়ের সাজে সজ্জিত হয়ে এসেছে দেবী বরন করতে।

লোকজনের ভিড় বেড়ে উঠল মন্ডপে, আরো অনেকে এসে গেছে দেবী বরনের জন্য। দেবী বরনের সিঁদুর খেলা শুরু। সুপর্ণা এগিয়ে এসে ওর মাথায় সিঁদুর লাগিয়ে দেওয়ার উপক্রম করতেই বাধা দেয় ঋতুপর্ণা। ওর চোখ দেখে আর সিঁদুর মাখানোর সাহস পেল না সুপর্ণা তবে এক মহিলা এগিয়ে এসে ঋতুপর্ণার গালে লাল রঙের আবির লাগিয়ে দিল। ঋতুপর্ণা বাধা দেওয়ার আগেই সুপর্ণাও এক মুঠো আবির ওর গালে লাগিয়ে দিল। ঋতুপর্ণা বুঝল যে এদের হাত থেকে নিস্তার নেই তাই নিজেও এক মুঠো আবির নিয়ে এক এক করে মহিলাদের মাখাতে লাগলো। ওর ঘিয়ে রঙের তসরের শাড়ির বুকের দিকে বেশ কিছু অংশ আবিরের রঙে লাল হয়ে উঠল। এয়োস্ত্রি মহিলারা একে অপরকে মাথায় গালে যেখানে পারছে সিঁদুর লাগিয়ে উত্যক্ত করে তুলছে। ভাগ্যিস আটপৌরে ধাঁচে শাড়ি পরার জন্য ওর বুকের দিকে কেউ নজর দিতে পারেনি। শুধু মাত্র গালেই সিঁদুর আর আবির লাগিয়েছে সবাই।

এর মধ্যে কোথা থেকে সুপর্ণা একগাদা আবির এনে ঋতুপর্ণার মাথায় ঢেলে দিল। বাধা দেওয়ার আগেই ঋতুপর্ণার মাথা ভর্তি হয়ে গেল লাল আবিরে। আবিরের গন্ধে আর নাকের ওপরে আবির পড়তেই ঋতুপর্ণার মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করে উঠল, কিছু কি মেশানো ছিল ওই আবিরে?

মাথা ঝেড়ে আবির ফেলে চোখ মেলে সুপর্ণার দিকে তাকাতেই সুপর্ণা একগাল হেসে বলে, “এইটা কিন্তু সিঁদুর নয় কিছু বলতে পারবে না।” বলেই চোখ টিপে ফিসফিস করে বলে, “যাকে মনে ধরেছ সে দেখলে একদম পাগল হয়ে যাবে।”

ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে জবাব দেয়, “তার ব্যাপারে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। তার জায়গা অনেক আগেই পাকা পোক্ত হয়ে রয়েছে।” বলে আলতো করে বুকের বাম দিকে দেখিয়ে দেয়।

নাকের ওপরে লাল টকটকে আবির, মাথা ভর্তি আবির নিয়ে ঋতুপর্ণার উৎসুক নয়ন একবার ছেলের খোঁজে এদিকে সেদিকে ঘুরে বেড়ায়। মন আনচান করে ওঠে, গেল কোথায় এখন দেখা পাচ্ছে না।
 
পর্ব তেরো (#5)

আদি কিছু পরে পার্থ, মনিষ আর বাকিদের সাথে বেরিয়ে এলো। ঋতুপর্ণা মহিলাদের থেকে একটু ফাঁকায় সরে এসে আদিকে কাছে ডাকে। মায়ের ডাক শুনে দৌড়ে আসে আদি। মায়ের মাথা ভর্তি লাল টকটকে আবির, নাকের ডগায় বেশ কিছু আবির, গালে সিঁদুর, মাকে লাল পাড় তসরের শাড়িতে সাক্ষাৎ নবৌঢ়ার মতন দেখাচ্ছে।

ছেলের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কোথায় ছিলিস রে? এতক্ষন দেখা পাইনি কেন?”

আদি মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “একটু ওইদিকে গিয়েছিলাম।”

ঋতুপর্ণা আদির গা শুঁকে প্রশ্ন করে, “মদ খেয়েছিস?”

আদি মাথা চুলকে উত্তর দেয়, “এই সামান্য, একটু খানি ব্যাস।”

ঋতুপর্ণা আঙ্গুল নাড়িয়ে সাবধান করে বলে, “ওই একটুতেই যেন থাকে।”

আদি মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে বলে, “তোমাকে তো সিঁদুরে লাল করে দিয়েছে।” বলেই চোখ টিপে ফিসফিস করে বলে, “এইবারে কিন্তু আর দূরে সরে থাকতে পারবে না।”

রঞ্জিত শুধু ওর গাল হয়নি, দুপুর থেকেই ওর বুকের রক্তে ভীষণ হিল্লোল দেখা দিয়েছিল সেটা আদির অগোচর থেকে যায়। মনের আগল খুলে যায় ছেলের কথা শুনে। হৃদয় প্রায় গলার কাছে এসে চেঁচিয়ে ওঠে, এই সাজ, এই আবির সব তোর জন্যেই। মাথা একটু ঝিমঝিম, চোখ ঢুলুঢুলু হয়ে যায় আদির দিকে তাকিয়ে। পুজো মন্ডপ না হলে দুইহাতে ছেলেকে জড়িয়ে বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে নিত। যেভাবে ছেলে ওর দিকে তাকিয়ে তাতে ওর হৃদয় গলে জল হয়ে যায়। বেশিক্ষণ ওই ভীষণ চাহনির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না ঋতুপর্ণা।

চাপা হেসে আদির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে, “যা এইবারে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য তোদের ডাক পড়বে।”

বয়স্ক উদ্যোক্তারা বিসর্জনের জন্য তাড়া দিতেই আদি, পার্থ মনিষ আর বাকি ছেলেরা মন্ডপে উঠে যায় প্রতিমা তোলার জন্য। বিসর্জন দিতে গঙ্গার ঘাটে যাবে, তার জন্য ট্রাকের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। বল দুগগা মাই কি জয়, ধ্বনিতে মন্ডপ মুখরিত করে প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি নিল সবাই। মেয়েরা যাবে কি যাবে না সেই নিয়ে আলোচনা উঠল। ঋতুপর্ণা জানিয়ে দিল যেহেতু ওর ছেলে যাচ্ছে সুতরাং সেও বিসর্জনে যাবে।

আদিকে মন্ডপে উঠতে দেখে সুপর্ণাও আবির হাতে মন্ডপে উঠে গেল। ছেলেদের দিকে দেখে আদির গায়ে এক গাদা আবির লাগিয়ে হেসে বলল, “বিসর্জনে যাচ্ছো আর আবির মাখোনি? এটা কি।”

গায়ে মাথায় আবির লাগতেই সতর্ক হয়ে গেল আদি। মদ খেয়ে মাথাটা একটু ঝিমঝিম করছে তাতে আবার আবিরের মাতাল করা একটা গন্ধ আর নধর দেহ বল্লরী নিয়ে সুপর্ণা ওর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। সুপর্ণা লাল রঙের ব্লাউজে ঢাকা সুগোল উন্নত স্তন জোড়ার আন্দোলন দেখে আদির রক্ত উত্তেজিত হয়ে ওঠে। লাল পাড় সাদা শাড়িটা যে ভাবে দেহের সাথে পেঁচিয়ে রেখেছে তাতে ঢাকার চেয়ে অনাবৃত অংশ বেশি। শাড়ির কুঁচি নাভির বেশ নিচে, থলথলে নরম পেটের অধিকাংশ উপচে বেরিয়ে। ব্লাউজের সামনের দিকটাও বেশ গভীর। হাসির ফলে উন্নত সুগোল স্তনের আন্দোলনে আদির বুকের রক্তের সাথে সাথে আশেপাশের পুরুষের বুকের মধ্যেও হিল্লোল জেগে ওঠে।

আদিও পকেট থেকে আবির বের করে এক মুঠো আবির সুপর্ণার গালে মাথায় লাগিয়ে দিয়ে হেসে ওঠে, “একা কি শুধু আমি নাকি? আমিও তোমাকে মাখাতে জানি।”

সুপর্ণাকে আবির মাখানোর পরক্ষনেই ওর চোখ চলে গেল দুরে মায়ের দিকে। ঋতুপর্ণা ততক্ষনে অন্য মহিলাদের সাথে গল্পে ব্যাস্ত, সেই দেখে আদি আস্বস্ত হয়। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে সুপর্ণার আবির রঞ্জিত চেহারা দেখে মজা পায়।

সুপর্ণা ওর পাঞ্জাবির ভেতরে হাত ঢুকিয়ে একগাদা সবুজ লাল মেশানো আবির ঢেলে হেসে বলে, “এইবারে কোথায় যাবে।” কঠিন লোমশ বুকের ওপরে হাত বুলিয়ে আবির মাখিয়ে ঠোঁট টিপে হেসে বলে, “যা একটা বডি বানিয়েছ মাইরি।”

সুপর্ণার কথা শুনে আদি চোখ ছোটছোট করে গলা নামিয়ে উত্তর দেয়, “আরো আছে সময় হলে জানতে পারবে।”

সুপর্ণা ওর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কানেকানে জিজ্ঞেস করে, “চুপিচুপি দেখাবে নাকি?”

আদিও মুচকি হেসে উত্তর দেয়, “সব জিনিস কি আর সবার সামনে দেখানো যায় নাকি, একান্তে দেখাব।”

কথাটা বলার পরক্ষনেই আদি আবার একবার মায়ের দিকে দেখে নেয়, ওর মা যদি দেখতে পায় তাহলে আর ওকে আস্ত রাখবে না। দুপুরের পরেই ওদের মধ্যে যা কথোপকথন হয়েছে তাতে আদির বুকের মাঝে শুধু মাত্র ঋতুপর্ণা। কিন্তু এইভাবে যদি কেউ আগ বাড়িয়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে নিজেকে উজাড় করে আবির মাখায় তাহলে কোন পুরুষের সিংহ শুয়ে থাকবে।

ভিড়ের সাহায্যে সুপর্ণা আদির গায়ের ওপরে প্রায় ঢলে গিয়ে বাজুতে চিমটি কেটে বলে, “কাল কোথায় গিয়েছিলে গো তোমরা?”

প্রশ্ন শুনে আদির পা থেকে মাথার চুল পর্যন্ত খাড়া হয়ে যায়, একি মায়ের সাথে এইসব নিয়েও কি কথাবার্তা হয়ে গেছে নাকি? না না, মা একদম ভুল পথে পা দেবে না, নিশ্চয় অন্য কিছু বলেছে। আদি চোখ টিপে বলে, “ঠাকুর দেখলাম, তবে তুমি সাথে গেলে ভালো হতো।”
 
সুপর্ণা ওর বাজুর সাথে স্তন চেপে ধরে ফিসফিস করে বলে, “তোমাদের সাথে আর কে গিয়েছিল, প্লিস বল না?”

আদি বুঝতে পারল যে সুপর্ণা ওকে খুঁচিয়ে মায়ের ব্যাপারে জানতে ইচ্ছুক তাই ইয়ার্কির ছলে উত্তর দিল, “গিয়েছিল একজন ব্যাস এইটুকু বলব।” চোখ টিপে কনুই দিয়ে সুপর্ণার কোমল স্তনের মাঝে আলতো গুঁতো দিয়ে বলে, “ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় খুলে বলব।”

আদি আরো একবারে ভিড়ের মধ্যে তাকিয়ে মাকে খোঁজার চেষ্টা চালায়। ভিড়ের মধ্যে ঋতুপর্ণা হারিয়ে গেছে। অনেক মহিলারা বিসর্জনের যাওয়ার জন্য তৈরি, তবে প্রতিমার ট্রাকে সবার জায়গা হবে না বলে অন্য একটা ম্যাটাডোর তৎক্ষণাৎ ভাড়া করে আনা হয়েছে।

ছেলেরা প্রতিমা তুলে ধরতেই সবার মুখে দুর্গা ঠাকুরের জয় জয় কার আর মহিলাদের উলুধ্বনি। প্রায় জনা দশেক ছেলে মিলে একত্রে দুর্গার প্রতিমা ট্রাকে উঠিয়ে দিল। ট্রাকে উঠানোর পরে ছেলে মেয়েদের সেই প্রতিমা ঘিরে নাচ শুরু হয়ে গেল। পুরুষের মধ্যেই অনেকে আদির সাথে একটু একটু মদ খেয়েছিল, সময়ের সাথে আর ঢাকের তালে তাদের নাচ দ্বিগুন গতি নিল। কে কার গায়ের ওপরে ঢলে পড়ে তার ঠিক ঠিকানা নেই। নাচের তালে সুপর্ণা এবং আরো বেশ কয়েকজন মহিলা পিছিয়ে থাকল না। বেশ কিছু মেয়েরা, বউয়েরা নাচের মধ্যে নেমে পড়ল।

ঋতুপর্ণা চুপচাপ হাসি হাসি মুখে ওদের নাচ দুর থেকেই উপভোগ করতে লাগলো। ছেলেকে উদ্দাম নাচতে দেখে বেশ ভালো লাগলো সেই সাথে ভালো লাগলো বিকেলের কথা ভেবে। এই উদ্দাম উচ্ছল ছেলেটাকেই আশ্রয় করে ওর বাকি জীবন কাটতে চলেছে। এই কয়দিনে ওদের মাঝের সম্পর্ক একদম বদলে গেছে। ইচ্ছে করেই আজকে দশমীর দিনে ছেলের কথা ভেবেই এই শাড়ি, এই গয়না পরেছিল। অন্য মহিলারা কেউই ওর মতন সেজে নয়, সবার চোখ বারেবারে ওর আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে বেড়ায়। ছেলেকে দেখে আর ওর উদ্দাম নাচ দেখে আর ঢাকের তালে তালে মাঝে মাঝে নিজেরও খুব নাচতে ইচ্ছে করে, কিন্তু চঞ্চল মন শান্ত করে বয়স্ক মহিলাদের সাথে একদিকে দাঁড়িয়ে ছেলের নাচ দেখে। মাঝে মাঝে সুপর্ণা যে আদির গায়ে নাচতে নাচতে ঢলে পড়ছে সেটা ওর দৃষ্টি অগোচর হয় না। সুপর্ণা কি আদির কানেকানে ফিসফিস করে কিছু বলল নাকি? হয়তো ওর চোখের ভুল।

বেশ কিছুক্ষন নাচের পরে প্রতিমা নিয়ে নদীর দিকে যাত্রা শুরু হল। বড় ট্রাকে প্রতিমার সাথে ঢাকি, কাঁসা বাদকের সাথে সাথে আদি, মনিষ পার্থ, সোসাইটির বয়স্ক বেশ কয়েকজন কর্তা ব্যাক্তি। পেছনের একটা ম্যাটাডোরে মহিলারা উঠে পড়েছে সেই সাথে। মণিমালা আসতে চেয়েছিল কিন্তু সুপর্ণা ভিড়ের অজুহাত দেখিয়ে বারন করে দিয়েছে। গঙ্গার পাড়ে পৌঁছাতে বেশ রাত হয়ে এলো। গঙ্গার পাড় লোকে লোকারণ্য, তিল ধারনের জায়গাটুকু অবশিষ্ট নেই। প্রচুর লোক সমাগম সেই সাথে প্রতিমা বিসর্জনের দৌড়, জলের মধ্যে পুলিস লঞ্চের ঘোরাফেরা, ঘাটে পুলিস মানুষে ছয়লাপ। অনেক কষ্টে ট্রাক থেকে দেবী প্রতিমা নামিয়ে এনে নদীর ঘাটে আনা হল। নদীর ঘাটেও বিসর্জনের আগে এক চোট ছেলেরা নেচে নিল ওইদিকে ভিড়ের জন্য পুলিসে তাড়া মারে, বয়স্করা তাড়া দেয়, কিন্তু তাতে আদিরা, পার্থরা দমবার পাত্র নয়। উদ্যোক্তারা বললে যে নৌকা করে মাঝ নদীতে গিয়ে বিসর্জন দিতে। আদি, মনিষ পার্থ সেদিকে কান দিল না, ওরা নিজেরাই মায়ের প্রতিমা জলে নামিয়ে বিসর্জন দেবে।

বাকি মহিলাদের সাথে ঘাটে নেমে ঋতুপর্ণা অথৈ জন সমুদ্রের মাঝে পড়ে গেল। ভিড় বাঁচিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে, একদিকে একটু খালি জায়গা পেয়ে সেদিকে দাঁড়িয়ে গেল। গঙ্গা থেকে ভেসে আসা ঠাণ্ডা জলো বাতাসে ওর হৃদয় ভরিয়ে দিল। ঠিক গতরাতে এইভাবেই হারিয়ে গিয়েছিল ছেলের সাথে, সেখানেও গঙ্গার তীরে একাকী দুই নর নারী হাতে হাত রেখে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল তারপরে রাতের বেলা একাকী নির্জন রিসোর্টের রুমের মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিল ওর মাতৃসত্বা। সেই ঠাণ্ডা বাতাস ওর হৃদয়ের গভীরে গত রাতের প্রেমিকা সত্বা চাগিয়ে তোলে। প্রতিমা কাঁধে বাকি ছেলেদের সাথে আদিও জলে নেমে পড়েছে। একটু একটু করে হাঁটু পর্যন্ত জলের মধ্যে আদি নেমে গেছে। মাথাটা হটাত করে ঝিমঝিম করে ওঠে ঋতুপর্ণার। চারপাশের শোরগোলে আর দুর্গার প্রতিমা দেখে কেমন যেন হারিয়ে যায়। এতো শুধু মাটির প্রতিমার বিসর্জন, আসল ঠাকুর সবসময়ে ওদের মাঝেই বিচরন করে। বুকের অন্দরে লুকিয়ে থাকা প্রেমিকা সেই প্রতিমা বিসর্জন দেখে আগল খুলে বেরিয়ে পড়ল। মৃদু কেঁপে উঠল ঋতুপর্ণার সর্বাঙ্গ, না ঠাণ্ডা বাতাসে নয়, নিজের মাতৃসত্বাকে বিসর্জন দিয়ে প্রেমিকা সত্বাকে জাগিয়ে নেওয়ার পূর্ব মুহূর্ত দেখা দিয়েছে ওর হৃদয়ের গভীরে। এক এক করে অনেক প্রতিমা বিসর্জন হয়ে গেল, আদি আর বাকিরা এখন হাঁটু জল থেকে নেমে গিয়েছে কোমর জলে। ঢাকের বাদ্যি প্রবল হয়ে উঠল চারপাশে, কাঁসার ঘন্টা, উলুধ্বনি সব কিছুতেই কেমন যেন মোহাচ্ছন্ন হয়ে উঠল ঋতুপর্ণা।

কোমর জলে দাঁড়িয়ে ওর অনন্ত প্রেমিক, ওর হৃদয়ের কাঙ্ক্ষিত পুরুষ প্রতিমা কাঁধে তুলে এক পাক ঘুরছে। সেই দেখে ঋতুপর্ণার হাত দুটো মুঠো হয়ে শক্ত হয়ে যায়। হৃদয়ের গভীর থেকে আওয়াজ আসে, “আদিত্য সান্যাল, আমার পরম সৌভাগ্য যে তুই আমার কোলে ছেলে হয়ে জন্মেছিস। সারা জীবন ধরে, পাপ অথবা পুন্য যা কিছু অর্জন করেছিলাম সেই সবের ফলে তোকে নিজের কোলে পেয়েছি। তোর প্রখর রোদের তাপে নিজেকে হারিয়ে দিয়ে তোর উপযুক্ত পাত্রী হওয়ার চেষ্টা করব।”

প্রতিমা নিয়ে দ্বিতীয় পাক দিতে শুরু করে দিয়েছে ছেলেরা। ঋতুপর্ণার চোখের মণি শুধু মাত্র ওর ছেলের দিকেই নিবদ্ধ, কানের মধ্যে আর কোন শব্দ প্রবেশ করে না শুধু মাত্র নদীর কুলুকুলু ধ্বনি ছাড়া আর আদির সেই ছোটো মিষ্টি ডাকনাম “কুচ্চি সোনা তোতা পাখী” ছাড়া। আদির দ্বিতীয় পাকের সাথে সাথে ওর বুকের পাঁজর বলে ওঠে, “ওরে আমার দুষ্টু মিষ্টি দস্যি ছেলে, আমি তোর সাহস তোর শক্তি হয়ে থাকব। মিষ্ট বচনে তোকে সন্তুষ্ট রাখতে সর্বদা সচেষ্ট হব এবং আমার যতদূর সাধ্য সেই অনুযায়ী তোর দেখার সকল ভার মাথা পেতে গ্রহন করে নেব। আমার ভরন পোষণ সবকিছু তোর হাতে তুলে দিতে রাজি, তুই আমাকে যে ভাবে রাখবি আমি সেইভাবেই থাকব।”

“বল দুগগা মাই কি জয়, আসছে বছর আবার হবে” আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে তৃতীয় পাকের জন্য তৈরি আদি আর বাকি ছেলেরা। ঋতুপর্ণার হৃদয় আদির সাথে সাথে পাক খায়, এক এক পাকে ওর মাতৃ সত্বা হারিয়ে প্রেমিকা, দয়িতা, সুন্দরী রমণীর সাজে সেজে ওঠে, জেগে ওঠে এতদিনের লুক্কায়িত ঋতুপর্ণা। “হে আদিত্য, আমার পুত্র, আমার প্রেমিক, আমার প্রান, আমি সর্বদা কায় মনোবাক্যে তোর সেবা তোর নির্দেশ পালন করে চলবো। তোর প্রতি আমার অচল ভক্তি, অচল প্রেম অচল ভালোবাসা আমাকে পরিপূর্ণ নারীর গৌরব প্রদান করুক। হোক না আমাদের ভালোবাসা অবৈধ কিন্তু বাইরের কেউ না জানলেই হোক। তুই শুধু আমার থাকবি আর আমি শুধু তোর হয়েই থাকব।”

ঋতুপর্ণার চোখের মণি মন্ত্র মুগ্ধের মতন শুধু মাত্র ছেলেকেই দেখে চলেছে। আদির সর্বাঙ্গ জলে ভিজে গেছে সেদিকে বিন্দু মাত্র খেয়াল নেই, দুই হাতের পেশি শক্ত হয়ে ফুলে উঠেছে। বাকিদের সাথে প্রবল উৎসাহে চতুর্থ পাকের জন্য তৈরি হয়ে গেল আদি, মনিষ, পার্থ আর বাকি ছেলেরা। ঋতুপর্ণার হৃদয় চতুর্থ বারের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠল। “হে আমার প্রাণপুরুষ, তোর দাসী হয়েই বাকি জীবন কাটিয়ে দেব। তোর জন্যে নিজেকে সাজিয়ে ঢেলে উজাড় করে তোর সুখে নিজের সুখ, তোর আনন্দে নিজের আনন্দ খুঁজতে চেষ্টা করব। আমাদের এই সম্পর্ক শ্রেষ্ঠ করতে সচেষ্ট হব। পবিত্র বসনে ভূষণে সজ্জিত হয়ে তোর সাথে রতিক্রীড়ায় লিপ্ত হয়ে তোকে সর্বাঙ্গিক ভাবে সুখি করতে চেষ্টা করব।” বুকের পাঁজর এই কথাগুলো বলা মাত্রই কেঁপে উঠল ঋতুপর্ণার সর্বাঙ্গ। বুক ভরে শ্বাস নিল ঋতুপর্ণা, শেষ বাধা যেটা ছিল সেটাও শেষ পর্যন্ত নিজের হৃদয় থেকে কাটিয়ে দিল।

চতুর্থ পাক শেষে আদি প্রতিমা নিয়ে পঞ্চম পাকের প্রস্তুতি নিল। ঋতুপর্ণা চোখ ঢুলুঢুলু হয়ে এলো, বুকের মধ্যে অসীম চাওয়া অসীম পাওয়াটা কেমন যেন ভীষণ ভাবে জেগে উঠল। নদীর ঠাণ্ডা বাতাস এখন আর ঠাণ্ডা নয়, ভীষণ আগুন জ্বলে উঠেছে ওর হৃদয়ে। সঙ্গমের কথা চিন্তা করতেই সব আগল খুলে মেলে ধরে ঋতুপর্ণার প্রেমাদ্র হৃদয়। পঞ্চম পাকের সাথে সাথে হৃদয় বলে ওঠে, “আমি সাহসিকতার সাথে তোর সকল দুঃখ তোর সকল সুখের সম্মুখীন হব এবং তুই যাতে সন্তুষ্ট থাকবি তাতেই আমি সন্তুষ্ট হয়ে থাকব। তোর সুখেই আমার সুখ তোর দুঃখেই আমার কান্না, জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত শুধু তোর প্রানের সহচরী হয়েই জীবন ব্যাতিত করব।”

দেবী প্রতিমা নিয়ে আদি ষষ্ঠ পাকের জন্য তৈরি, ওইদিকে নদীর ঘাটে ঋতুপর্ণা কোমল হৃদয়ে ষষ্ঠ বারের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিতে তৈরি। “আমি সুখের সাথেই সমস্ত ঋতুতে তোর দেখাশুনা করে যাবো। তুই যেখানে আমাকে নিয়ে যাবি আমি সেখানেই তোর ছায়া হয়ে তোর পাশে পাশে থাকব। আমাকে বঞ্চিত করিস না রে সোনা, তুই ছাড়া এই জীবনে আমার আর কেউ নেই। আমি কখনই তোকে বঞ্চনা করব না আর এক সন্মান আমিও তোর থেকে আশা করি।”

ঋতুপর্ণা শেষ পাকের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নেয়। এই পাকের পরে প্রতিমার সাথে সাথে মাতৃহৃদয়ের বন্ধনের সাথে সাথে প্রেমিকা হৃদয় একাত্ম হয়ে যাবে। এরপর থেকে ও শুধু মাত্র আদির প্রেমিকা, আদির অঙ্কিতা আদির দোসর। হৃদয়ের সকল ধমনী সপ্তম পাকের সাথে সাথে পাক খেয়ে উঠল, চোখ চেপে বন্ধ করে ইষ্ট নাম নিল ঋতুপর্ণা। পাপ পুন্য, সমাজ সংসার, নিষিদ্ধ অবৈধ সবকিছুর উর্ধে ওর হৃদয় ভাসছে। চোখের সামনে শুধু মাত্র আদির চেহারা আর নদীর জল ছাড়া আর কিছুই নেই। বুক ভরে শ্বাস নিতেই ওর বুকের মধ্যে শান্ত আগুনের সাথে সাথে অনাবিল প্রেমের জোয়ার দেখা দিল। বুকের প্রত্যেকটা ধমনী, সর্বাঙ্গের সকল শিরা উপশিরা, সর্বাঙ্গের সকল রোমকূপ একসাথে উন্মিলিত হয়ে উঠল, “হে আদিত্য, আজ থেকে আমি শুধু তোমার। তোমার পুন্যে আমার পুন্য, তোমার ধর্মে আমার ধর্ম। আমি তোমার ছায়া হিসাবে, তোমার যথার্থ সহচরী হিসাবে তোমার রাজ্ঞী হিসাবে তোমার সকল কার্যে পূর্ণ সহায়তা করব। ধর্ম অর্থ কাম সম্পাদনে তোমার ইচ্ছেকেই আমি কায়মনোবাক্যে অনুসরন করব। আজ থেকে তোমাকে আমার হিয়ার অভ্যন্তরে স্থান দিয়ে দিলাম, এই দেহ এই মন এই প্রান শুধু তোমাকেই সমর্পণ করলাম।”

প্রবল হর্ষ ধ্বনির সাথে সাথে দেবী প্রতিমা জলের মধ্যে নিক্ষেপ করে দিল আদি। সেই সাথে তলিয়ে গেল ঋতুপর্ণার অতীতের সব সত্বা। জেগে উঠল এক নতুন ঋতুপর্ণা, চোখের কোলে এক বিন্দু আনন্দ অশ্রু ওকে ভাসিয়ে দিল। নিস্পলক নয়নে আদির দিকে তাকিয়ে দেখল ঋতুপর্ণা। ওর দয়িত, ওর ছেলে প্রতিমার সাথে সাথে গঙ্গার জলে ডুব দিল। আদির সর্বাঙ্গ ভিজে, লোমশ ছাতির সাথে লেপটে গেছে সাদা পাঞ্জাবি, মাথা থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে। ওর দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখল একবার। ছেলের চোখের সাথে চোখ মেলাতেই কেমন যেন অবশ হয়ে এলো ঋতুপর্ণার কোমল নধর মদালসা দেহ বল্লরী। নিজের বুকের আগুনে শিক্ত বলিষ্ঠ দেহটাকে বেঁধে ফেলে উষ্ণতা দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে উঠল। ছেলের বলিষ্ঠ বাহুপাশে নিজেকে বেঁধে নিরাপত্তা আর ভালোবাসার আগুনে নিজেদের জ্বালিয়ে নিতে আকুল হয়ে উঠল ওর তৃষ্ণার্ত হিয়া। জল থেকে উঠে আসা মূর্তিময় বলিষ্ঠ সুপুরুষ ওর ছেলে নয়, ওর হৃদয়ের কর্তা।

আদিকে ঠাণ্ডা জল থেকে উঠে আসতে দেখে প্রেমিকার হৃদয় হুহু করে ধেয়ে যায়। ইসস ছেলেটা ভিজে কাকের মতন হয়ে গেছে, ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো।
গঙ্গার ঠাণ্ডা জলে ভিজে ছেলের কাঁপুনি দেখে ঋতুপর্ণা ভিড় ঠেলে এগিয়ে যায়, “আদি, বাবা এইদিকে আয়।”

অত ভিড়ের মধ্যে আদি মাকে খুঁজে পায় না, মায়ের ডাক ওর কানে পৌঁছায় না। জল থেকে মনিষ, শ্যামল, পার্থের সাথে উঠে আসতেই একজন ছেলে ওদের একপাশে ডেকে নিয়ে হাতের মধ্যে মদের গেলাস ধরিয়ে দিয়ে গলায় ঢালতে বলে। বলে একটু মদ খেলে গা গরম হয়ে যাবে। ঠাণ্ডা জল থেকে উঠে প্রচন্ড ঠাণ্ডা লাগছিল আদির, এতক্ষন প্রতিমার সাথে থাকার ফলে ঠাণ্ডাটা সেই ভাবে অনুভব করতে পারেনি। মাথা ঝাঁকিয়ে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে একবার মাকে খোঁজার চেষ্টা করল, কিন্তু ভিড়ের মধ্যে মায়ের দেখা কোথাও পেল না। ছেলেটার হাত থেকে গেলাস নিয়ে পরপর দুই গেলাস মদ গলায় ঢেলে নিল আদি। গলা দিয়ে জ্বলন্ত লাভার মতন মদের স্রোত টের পেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীর গরম হয়ে গেল, সেই সাথে দেহটা একটু টলে উঠল। মাথা চেপে ধরে একটু জল মুছে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলো।

ভিড় ঠেলে ঋতুপর্ণা প্রবল চেষ্টা করে আদির দিকে যেতে। ছেলেটা জল থেকে উঠে ঠাণ্ডায় কাঁপছে কিন্তু ভিড়ের ধাক্কা ধাক্কির ফলে কিছুতেই কাছে যেতে পারছে না। ভীষণ ব্যাকুল হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণার হৃদয়, গলা ফাটিয়ে চেঁচাতে ইচ্ছে করে, দৌড়ে ওকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে, কিন্তু এই ভিড় কিছুতেই ওকে এগিয়ে যেতে দিচ্ছে না।

হটাত করে ওর চোখ পড়ে গেল সুপর্ণার দিকে। আদির দিকে গামছা হাতে পা বাড়িয়ে দিয়েছে। থমকে গেল ঋতুপর্ণা, সুপর্ণা কখন গামছা নিয়ে এসেছে?
 
পর্ব তেরো (#6)

সুপর্ণাকে ওই ভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে আদির দিকে এগিয়ে যেতে দেখে ঋতুপর্ণার পা দুটো নদীর ঘাটের ওপরে কে যেন পেরেক দিয়ে পুঁতে দিল। একটু ভালো করে দেখে ঋতুপর্ণা বুঝতে পারল যে সুপর্ণার হাতে ওটা গামছা নয়, ওটা সুপর্ণার শাড়ির লাল আঁচল মেলে ধরে এগিয়ে গেছে আদির দিকে। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় ঋতুপর্ণার, এই মাত্র মাতৃসত্বা ঋতুপর্ণাকে বিসর্জন দিয়ে প্রেমিকা ঋতুপর্ণা ওর বুকের মধ্যে জেগে উঠেছিল। ওর বুকের ধন প্রানের মানিকের দিকে অন্য এক নারী এইভাবে এগিয়ে যাওয়াতে ভীষণ ভাবে আহত হয়ে গেল ঋতুপর্ণা। প্রেমে বিভোর কপোতীর মতন ঋতুপর্ণা চেয়েছিল, ওর প্রান পুরুষ আদি জল থেকে উঠে আসা মাত্রই প্রেমিকা রূপে নিজেকে উজাড় করে জড়িয়ে ধরবে। সবার চোখে এক মা নিজের ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছে কিন্তু শুধু মাত্র ঋতুপর্ণার হৃদয় আর আদির হৃদয় জানবে ওদের গোপন নিষিদ্ধ ভালোবাসার কাহিনী।

সুপর্ণা মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে আঁচল উঁচু করে ধরে আদির দিকে এগিয়ে বলল, “ইসসস একদম ভিজে একসা হয়ে গেছ। এস এস আমি তোমার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম।”

নেশামত্ত আদি ঢুলুঢুলু চোখে নধর লাস্যময়ী শ্যামলী রমণী সুপর্ণার দিকে এগিয়ে গেল। আঁচল উঁচু করে ধরার ফলে সুপর্ণার ব্লাউজে ঢাকা স্তন অনাবৃত হয়ে পড়ে। বিসর্জনের আগে পেটে দুই গেলাস মদ চড়িয়ে নিয়েছিল। নদীর ঠাণ্ডা জলে সেই নেশা একদম কেটে গিয়েছিল। কিন্তু বিসর্জনের পরে আরো দুই গেলাস পেটে পড়তেই আগের সুরার সাথে এইবারের সুরা মিশে ওর রক্ত উত্তপ্ত করে তুলল। সেই সাথে আঁচল উঁচু করে স্তন উঁচিয়ে সুপর্ণার ওর দিকে ধেয়ে আসা দৃশ্য দেখে আদির রক্ত আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে ওঠে। গভীর কাটা ব্লাউজের ভিতরে বন্দী স্তন জোড়া মুক্তির আশায় ছটফটিয়ে ওঠে। ত্রস্ত পায়ে আদির দিকে যাওয়ার ফলে সুপর্ণার স্তনে প্রবল হিল্লোল দেখ দেয়। আদিকে ঘাটের একদিকে টেনে নিয়ে যায়, সেদিকে একটু অন্ধকার একটু জন বিরল। সুপর্ণার অনাবৃত স্তন বিভাজিকা দেখে আদির উন্মত্ত রক্তে আগুন ধরে যায়। রক্তে চড়ে নেশার আগুন, সেই সাথে চোখের সামনে দেখের আগুন। যেদিকে সুপর্ণা আদিকে টেনে নিয়ে গেল সেদিকে একটু অন্ধকার, চারপাশে অচেনা লোকের ভিড় তাই সুপর্ণা আর আদির বিশেষ অসুবিধে হল না।

সুপর্ণা আঁচল উঁচু করে আদিকে কাছে ডেকে বলে, “আদি মাথাটা নিচু কর মুছিয়ে দেই।” ওর কোনদিকে কোন খেয়াল নেই।

আদি সুপর্ণার এক ধাপ নিচে দাঁড়িয়ে ছিল তাই ওর মাথা নিচু করতেই সুপর্ণার কোমল স্তনের মাঝে গুঁজে দিতে পারল। স্তনের মাঝে ভিজে মাথার পরশে মৃদু কেঁপে ওঠে সুপর্ণার কামার্ত দেহ, উহহ উহহ করতে করতে আঁচল দিয়ে আদির মাথা মুছাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। আদির নাকে ভেসে আসে সুপর্ণার মদমত্তা দেহের মাতাল সুবাস। নেশার ফলে নাক গুঁজে দেয় সুপর্ণার উন্নত স্তনের মাঝে। সুপর্ণা কঁকিয়ে উঠে আদির মাথা খামচে ধরে।

মিহি কণ্ঠে আদিকে বলে, “ইসসস কি দস্যি ছেলেরে বাবা।”

আদি এক হাতে সুপর্ণার নরম কোমর জড়িয়ে, উন্নত স্তনের মাঝে নাক মুখ ঘষে দিয়ে বলে, “উম্মম ভীষণ মিষ্টি গন্ধ তোমার গায়ে।” অন্য হাতে নরম অনাবৃত পেটের ওপরে চেপে বলে, “শুধু মাথাই মুছিয়ে দেবে না আর কিছু মুছিয়ে দেবে?”

আদির কথা শুনে শিহরন খেলে যায় সুপর্ণার সর্বাঙ্গে, আঁচলের আড়ালে আদির মাথা বুকের ওপরে চেপে ধরে বলে, “অনেক কিছুই মুছিয়ে ধুইয়ে শান্ত করে দেব।”

আদির এক হাত সুপর্ণার পাঁজর ঘেঁষে স্তনের নিচে পৌঁছে যায়। আঁচলের আড়ালে কি উত্তপ্ত ঘটনা ঘটে চলেছে সেটা কারুর গোচর হয় না। ব্লাউজের তলা দিয়ে কোমল স্তনের চেপে বলে, “তোমাকে এইখানেই কিছু একটা করতে ইচ্ছে করছে।” বলতে বলতে আদি দেরি না করেই ব্লাউজের ওপর দিয়েই সুপর্ণার কোমল স্তনের ওপরে কঠিন থাবা বসিয়ে দেয়।

আদির আর সুপর্ণা নিজেদের কাম খেলায় এতই মত্ত হয়ে ওঠে যে আশেপাশের কিছুই ওদের খেয়াল থাকে না। বিশেষ করে ঋতুপর্ণা যে ওদের অদুরে দাঁড়িয়ে সেটাও খেয়াল পড়েনি ওদের। ঋতুপর্ণা বিস্ফোরিত জ্বলন্ত নয়নে অদুরে হতবাকের মতন দাঁড়িয়ে। ওর চোখ জোড়া ভীষণ ভাবে জ্বলতে শুরু করে দেয়। বুকের কাছে আঁচল চেপে ধরে হৃদয় ভাঙা কান্নার ভীষণ শব্দ গিলে নিতে চেষ্টা করে। আদিকে ওই ভাবে লম্পটের মতন সুপর্ণার স্তন বিমর্দন করতে দেখে ওর পাঁজরের হাড় এক এক করে ভাঙতে শুরু করে দেয়। ঈর্ষার প্রবল আগুনে দগ্ধ হয়ে যায় ঋতুপর্ণার সর্বাঙ্গ। এই একটু আগেই নিজের সত্বাকে বিসর্জন দিয়ে এসেছে ওই নদীর জলে আর সেই জল থেকেই ওর পুত্র উঠে এসে সোজা ওর বয়সী অন্য এক নারীর স্তনের ছোঁয়ায় নিজেকে উত্তেজিত করে তুলছে। এই দৃশ্য কিছুতেই সহ্য করতে পারে না ঋতুপর্ণা। সারা শরীর কাঠ হয়ে থরথর করে কাঁপতে শুরু করে দেয়। হায় ঈশ্বর কাকে ভালবাসবে ওর এই হৃদয়, এর চেয়ে এই নদীর জলে ডুব দিয়ে মৃত্যু বরন করা ভালো।

গরম কোমল স্তনের ওপরে কঠিন আঙ্গুলের পেষণে মিহি গলায় কঁকিয়ে উঠল সুপর্ণা, “ইসসস কি করছ তুমি।”

আঁচলের ভেতর থেকে সুপর্ণার অনাবৃত বক্ষ বিভাজিকায় শিক্ত উত্তপ্ত চুম্বন এঁকে দিয়ে আদি বলে, “কি নরম গো তুমি, এইখানেই ভীষণ ভাবে চটকাতে ইচ্ছে করছে।”

অনাবৃত ত্বকের ওপরে শিক্ত উত্তপ্ত ঠোঁটের ছোঁয়া পেয়েই কেঁপে ওঠে সুপর্ণা, আদির মাথার চুল আঁকড়ে ধরে নিজের স্তনের খাঁজে চেপে ধরে, অন্য হাতে আদি কাঁধ খামচে মাথাটা আরো বেশি গভীরে ঢুকিয়ে দেয়। আদিও এক হাতে সুপর্ণার স্তন পিষতে চটকাতে শুরু করে দেয়, অন্য হাতে কোমর জড়িয়ে শাড়ির ওপর দিয়েই নরম নিতম্বের ওপরে হাত বুলিয়ে দেয়। আদির বলিষ্ঠ বাহুডোরে বাঁধা পড়ে সুপর্ণা ছটফট করে ওঠে। আদি বেশ কিছুক্ষণ সুপর্ণার স্তনের পিষে আদর করে আঁচলের তলা থেকে মাথা বের করে ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে বলে, “আমার একটু ম্যাসাজ খুব জরুরি।”

সুপর্ণা এক হাতে আদির কাঁধ খামচে অন্য হাত ওদের দেহের মাঝে নিয়ে যায়। জিন্সের ওপর দিয়েই আদির ঊরুসন্ধির ওপরে বুলিয়ে উদ্ধত পুরুষাঙ্গের চারপাশে কোমল আঙ্গুল পেঁচিয়ে ধরে মিহি কণ্ঠে বলে, “তোমার যখন সময় হবে চলে এসো, আমি ম্যাসাজ করে দেব।”

এক হাতে স্তন আদর করতে করতে আদি বলে, “তুমি আমাকে করবে আমি তোমাকে করব।”

ভিমকায় পুরুষাঙ্গের দীর্ঘ বরাবর আঙ্গুল বুলিয়ে কঁকিয়ে ওঠে সুপর্ণা, “উফফফ কি বিশাল গো, এত্ত বড় নাকি?”

আদিও সুপর্ণার কোমল নিতম্ব আলতো চটকে ধরে বলে, “একেবারে জায়গা মতন মেপে নিও কত বড়।”

সুপর্ণা এক ধাপ ওপরে থাকার ফলে ওদের ঊরুসন্ধি পরস্পরের সাথে মিশে যায়। আদি সুপর্ণার কোমর জড়িয়ে কঠিন উদ্ধত পুরুষাঙ্গ দিয়ে সুপর্ণার উরুসন্ধিতে একটা ধাক্কা মারে। কঠিন উদ্ধত পুরুষাঙ্গের ধাক্কা খেয়ে কেঁপে ওঠে সুপর্ণার সারা শরীর। “ইসসস একি করছ তুমি, এইখানেই নাকি তা বলে?” মিহি গাড় কণ্ঠে কঁকিয়ে ওঠে সুপর্ণা।

আদি একটু একটু করে সুপর্ণার কোমর জড়িয়ে ওর ঊরুসন্ধি নিজের দিকে টেনে ধরে নিজের উদ্ধত পুরুষাঙ্গ শাড়ির কুঁচি ভেদ করে ঊরুসন্ধির মধ্যে গুঁজে দেয়। ভারি কোমল নিতম্বের ওপরে আলতো চাঁটি মেরে আদি ফিসফিস করে বলে, “মা মেয়েকে একসাথে ম্যাসাজ করব।”

সুপর্ণা আদির প্যান্টের সামনের উঁচু হয়ে থাকা পুরুষাঙ্গের ওপরে আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে মিহি গাড় কণ্ঠে বলে, “তোমারটা আমার কচি মেয়ে নিতে পারবে না, আমিই আগে নেব।”
 
আদিও গোঙাতে গোঙাতে বলে, “আচ্ছা, ভালো করে আগে গাছ দেখব তার পরে ফল খাবো।”

সুপর্ণার শরীরে ভীষণ কাঁপুনি ধরে আসে। আদির কাঁধের ওপরে মাথা গুঁজে মিহি কামার্ত কণ্ঠে বলে, “ওই ভাবে খোঁচা দিলে কিন্তু বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না আদি। ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে গো।”

এক হাতের থাবায় মনের সুখে সুপর্ণার স্তন পিষ্ট করে দেয়, মাঝে মাঝে ব্রা, ব্লাউজের ওপর দিয়েই শক্ত স্তনের বোঁটা আঙ্গুলের মাঝে ধরে মুচড়ে দুমড়ে দেয়। ভীষণ ভাবে শিহরিত হয় সুপর্ণার সর্বাঙ্গ। নিতম্বের খাঁজে হাত চেপে সুপর্ণাকে কাছে টেনে বলে, “কবে সময় হবে?”

সুপর্ণা পারলে আদির বুকের মধ্যে সেঁধিয়ে যায় এমন অবস্থা। কাঁধ কামড়ে ধরে মিহি কণ্ঠে বলে, “সময় তো যখন তখন। রাত দুটো নাগাদ চলে এসো না প্লিস। মণিকে, নন্দনকে তাড়াতাড়ি খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেব। তোমাকে ছাড়া বেশিক্ষন আর থাকতে পারব না আদিইইই...”

ভিড়ের আড়ালে আর আবছা অন্ধকারে নিজেকে ঢেকে রাখে ঋতুপর্ণা। ওর কানে ওদের কথাবার্তার ভেসে আসে, মনে হয় যেন ওর কানের মধ্যে কেউ টগবগে ফুটন্ত লাভা ঢেলে দিয়েছে। ঋতুপর্ণার মাথায় চিনচিন করে ব্যাথা করতে শুরু করে দেয়। এই লম্পট ছেলের প্রেমে পড়ল শেষ পর্যন্ত। ছিঃ যাকে নিজের বাহুডোরে বেঁধে সারাজীবন কাটিয়ে দেবে বলে স্বপ্ন দেখেছিল সেই পুরুষ কি না ওর সামনে সবার সামনে ওর বয়সী অন্য এক নারীকে জড়িয়ে ধরে মত্ত কামোন্মাদ খেলায় মেতে উঠেছে। ঈর্ষার আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় ঋতুপর্ণার আদ্র হৃদয়। ওর ভালোবাসা খানখান করে দিয়েছে আদি। কি ভাষায় তিরস্কার দেবে খুঁজে পায় না। নয়নের জল গড়িয়ে কোমল লাল গাল বেয়ে গঙ্গার ধারার মতন বয়ে চলে। অশ্রু নয়, ওর বুকের পাঁজর ভেঙে ধমনীর রক্ত বইছে ওর দুই চোখ হতে। ঋতুপর্ণা ওইখানে দাঁড়ানোর মতন শক্তি হারিয়ে ফেলল, ওর সারা শরীর ভীষণ ভাবে জ্বলতে শুরু করে দিল, মাথা ঘুরতে শুরু করে দিল। সারা পৃথিবী দুলছে ওর চোখের সামনে, নদীর ঘাট, মানুষের ভিড় সব কিছু মিলিয়ে গেল, চোখের সামনে ঘন কালো নিকষ অন্ধকার। মাথা চেপে ধরে বুক চেপে ধরে ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ওইখান থেকে সরে এলো।

আদি দুই হাতে সুপর্ণার কোমর জড়িয়ে ওর কোমল নধর দেহ নিজের দেহের সাথে মিশিয়ে দিয়ে কানেকানে বলে, “রাতে তাহলে দরজা খোলা রেখে দিও, আমি কিন্তু আসব তোমার ম্যাসাজ নিতে।”

সুপর্ণা দুই ঊরু মেলে আদির কাঁধ খামচে ঊরুসন্ধির সাথে ঊরুসন্ধি মিশিয়ে দিয়ে নিজেকে পিষতে পিষতে মিহি কণ্ঠে কঁকিয়ে ওঠে, “আমি তৈরি থাকব আদিইই, আর যে তর সয় না, ইসসস ওফফফ এইখানে মারবে নাকি?”

আদি সুপর্ণার পিঠের ওপরে হাত রেখে নরম স্তন জোড়া নিজের কঠিন পেশিবহুল বুকের সাথে মিশিয়ে দিয়ে বলে, “তোমার ওইখানে মারব, তোমাকে ছিঁড়ে কুটে খাবো কিন্তু। তোমার খালে আজ রাতে কুমির নামাবো, সুপর্ণা।”

সুপর্ণা মিউমিউ করে ওঠে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, ছিঁড়ে কুটে যে ভাবে ইচ্ছে সেভাবে খেও, ওফফ আদিইই আমি ভেসে গেলাম।” মিহি কামার্ত কণ্ঠে গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে আদির কাঁধ খামচে ধরে নিথর হয়ে যায় সুপর্ণার দেহ।

আদিও মত্ত দেহে সর্ব শক্তি দিয়ে সুপর্ণাকে ভিড় ভর্তি নদীর ঘাটে বলিষ্ঠ বাহুডোরে বেঁধে ফেলল। প্রবল এক ধাক্কায় নিজের উদ্ধত পুরুষাঙ্গ সুপর্ণার মেলে ধরা ঊরুসন্ধির মাঝে গুঁজে দিয়ে দুইজনেই পরস্পরের আলিঙ্গনে শক্ত হয়ে পড়ল। বেশ কিছুক্ষন ওই ভাবে নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার পরে সুপর্ণা ঢুলুঢুলু অর্ধ নিমীলিত চোখে মুচকি হাসতে হাসতে আদির দিকে তাকিয়ে রইল। নেশার ঘোরে সুপর্ণার সাথে কি করেছে সেটা একটু পরে টের পেল আদি যখন সুপর্ণাকে ছেড়ে ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখল। মত্ত আদির রক্ত রাঙ্গা চোখে সুপর্ণার দিকে লোলুপ দৃষ্টি হেনে ইতর এক হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিল সুপর্ণার শিক্ত পিচ্ছিল কোমল যোনি গহ্বর ছিন্নভিন্ন করার জন্য রাতের বেলায় ওর বাড়িতে আসবে। সুপর্ণা রক্ত রঞ্জিত চেহারা নিয়ে লাজুক হেসে ওর তফাতে সরে গেল।
 
পর্ব তেরো (#7)

সুপর্ণাকে ছেড়ে আদি এদিকে ওদিকে তাকিয়ে দেখল। মাকে কোথাও দেখতে পেল না। এতক্ষন মায়ের কথা একদম মনে ছিল না। আশেপাশে তাকিয়ে দেখল, অনেক লোকের ভিড় কিন্তু ওদের লোকজন কোথায়? মাথাটা একটু ঝিমঝিম করতে শুরু করে দিল। মাথার রগ ধরে সুপর্ণার দিকে তাকাতেই দেখে সুপর্ণা আর ওইখানে দাঁড়িয়ে নেই। ওকে ছেড়ে দিয়ে কখন ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেছে। দূরে এক জায়গায় পার্থ, মনিষ, শঙ্করকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেল।

মনিষকে প্রশ্ন করল আদি, “আমার মাকে দেখেছিস রে?”

পার্থ মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দেয়, “তোর মা, কমল জেঠিমার সাথে ওইদিকে কোথাও আছে।”

আদিও কাঁধ ঝাঁকা দিয়ে ঘাট থেকে বেরিয়ে এলো। দূরে মাকে অন্য মহিলাদের সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আস্বস্ত হল আদি, যাক তাহলে মা ওর আর সুপর্ণার ব্যাপারে কিছু টের পায়নি। ভিজে পাঞ্জাবি এতক্ষনে ওর দেহের উত্তাপে অনেকটা শুকিয়ে গেছে, জিন্স জাঙ্গিয়া এখন ভিজে। নধর পুরুষ্টু দেহের অধিকারিণী সুপর্ণাকে দলে মথিত করে ওর দেহের কামানল ভীষণ ভাবে জাগ্রত হয়ে উঠেছে। জিন্সের আড়ালে ওর ভিমকায় পুরুষাঙ্গ ভীষণ ভাবে ফনা তুলে দাঁড়িয়ে। ওর ঊরুসন্ধির ওপরে ভিজে পাঞ্জাবিটা ভীষণ অসভ্যের মতন লেপটে থাকায় উদ্ধত পুরুষাঙ্গের আকার অবয়ব সুউচ্চ পাহাড়ের মতন সামনের দিকে উঁচিয়ে থাকে। সেদিকে নেশামত্ত আদির বিশেষ খেয়াল থাকে না। মাকে দেখতে পেয়ে ধড়ে প্রান ফিরে পেল যেন। স্মিত হেসে অপরাধির মতন মাথা চুলকাতে চুলকাতে মায়ের দিকে এগিয়ে এলো।

ঋতুপর্ণা ছেলের উন্মত্ত নেশাগ্রস্ত চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে দুই চোখ রক্ত জবার মতন লাল হয়ে গেছে। ছেলেকে দেখতে পেয়েই ওর সর্বাঙ্গ বয়ে ক্রোধাগ্নি দাউদাউ করে জ্বলে উঠল। ওর দুই চোখ দিয়ে আগুন ঠিকরে বেরিয়ে পড়ল। আদিকে পারলে এখুনি মেরে ফেলে নিজে আত্মহত্যা করে। ইসস, একে তো ছেলের প্রেমের জোয়ারে অঙ্গ ভাসিয়ে ভীষণ পাপ করেছে তার ওপরে ছেলেকে এক অন্য নারীর সাথে লম্পটের মতন সর্ব সমক্ষে জড়াজড়ি চটকা চটকি করতে দেখে আরো বেশি করে ওর হৃদয় টুকরো হয়ে গেছে। কত স্বপ্ন দেখেছিল ঋতুপর্ণা, প্রতিমা বিসর্জনের সাথে মাতৃত্ব বিসর্জন দিয়ে পুত্রের দয়িতা হয়ে যাবে চিরদিনের জন্য।

আদি মায়ের পাশে দাঁড়াতেই ঋতুপর্ণার মনে হল যেন কেউ ওকে বিষাক্ত ছোবল মেরেছে। আহত ক্ষুব্ধ হৃদয়ে চাপা গর্জে উঠল ঋতুপর্ণা, “একদম আমার সাথে কথা বলবি না।”

আদি কিছুই ভেবে পেল না মায়ের এই রূপ পরিবর্তনের আসল কারন। মাথা চুলকে প্রশ্ন করে, “কি হল মা, আমার যে বড় ঠাণ্ডা লাগছে, প্লিস তাড়াতাড়ি বাড়ি চল।”

ঋতুপর্ণার নিচের ঠোঁট দাঁতে কেটে বুক ভাঙা অশ্রুর বন্যা আগল দিয়ে বেঁধে রেখে আহত ভঙ্গুর কণ্ঠে গর্জে ওঠে, “আমি তোকে চিনি না, কেন আমার সাথে কথা বলছিস তুই।”

ঋতুপর্ণা আর অপেক্ষা করল না, আদিকে ওর পাশে দাঁড়াতে দেখে ওর সারা শরীর দাউদাউ করে আগুনে জ্বলছিল সেই ঝলসানো ক্রোধের আগুনে আর জ্বলতে ইচ্ছে করছিল না আদির সামনে। যাবার আগে ঘাড় ঘুড়িয়ে ছেলের দিকে রক্ত চক্ষু হেনে তাকিয়ে দেখে। হতবাক আদি চুপচাপ ঘাটের কাছে দাঁড়িয়ে নিস্পলক চোখে মায়ের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। কি করেছে ও, কিছুই ভেবে পায় না। মা কেন হটাত করে ওর ওপরে রেগে গেল তার কারন কিছুতেই খুঁজে পেল না আদি। আদির সামনে দিয়েই একটা ট্যাক্সি নিয়ে ঋতুপর্ণা বেরিয়ে গেল।

ট্যাক্সিতে চাপতেই মায়ের রক্ত চক্ষু দেখে আদি বুঝে গেল যে মা ওদের দেখে ফেলেছে। ওর সাদা পাঞ্জাবির ওপরে সিঁদুরের দাগ, সারা বুকের ওপরে আবিরের ছোপ ছোপ দাগ। জল থেকে উঠে নিশ্চয় এই দাগ পড়বে না। ওর মা জেনে গেছে হয়ত ওদের দেখে ফেলেছে। নিজেকে তিরস্কার করে উঠল আদি, মরমে মরে যেতে ইচ্ছে করল।

আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে নিজেকে ধিক্কার দিতে দিতে চেঁচিয়ে উঠল আদি, “মা প্লিস যেও না মা...” ট্যাক্সির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে বেশ কিছুদুর চলে গেল কিন্তু ট্যাক্সিটা সামনের বাঁকে হারিয়ে গেল। গলা ফাটা কান্না ঠিকরে বেরিয়ে এলো আদির বুক চিরে, “মা গো, প্লিস ছেড়ে যেও না মা।” ওর দুইপাশ দিয়ে বেশ কত গুলো ট্যাক্সি বেরিয়ে গেল। মাথা চেপে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠল আদি, “মা গো, প্লিস ফিরে এসো।”

কিন্তু সেই হৃদয় বিদারক কান্না শোনার জন্য ঋতুপর্ণা ওইখানে উপস্থিত ছিল না। ট্যাক্সি নিয়ে অনেক আগেই আদিকে ছেড়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। সারাটা রাস্তা মুখের মধ্যে আঁচল গুঁজে কেঁদে গেল ঋতুপর্ণা। এতটা পথ ওকে একা যেতে হবে। আর ওর দেহে শক্তি নেই, এর চেয়ে মৃত্যু বেশি সুখের। ভালোবাসা সত্যি যে মৃত্যু ডেকে আনে সেটা নিজের জীবন দিয়ে সেদিন অনুধাবন করল ঋতুপর্ণা।

আদি দৌড়ে মনিষের কাছ থেকে দুশো টাকা চেয়ে নিয়ে একটা ট্যাক্সি ধরে বাড়ির উদেশ্যে রওনা দিল। ওর মাথাটা ভীষণ ব্যাথা করতে শুরু করে দিয়েছে, চোখের সামনে শুধু মাত্র মায়ের জল ভরা চোখ আর কানে ভেসে আসে ভগ্ন হৃদয়ের ব্যাথিত কান্না। নিজের ওপরে বিরক্তি ভাব জেগে উঠল, কেন মদের নেশায় সুপর্ণার সাথে উন্মাদের মতন জড়াজড়ি করতে গেল। মা তো নিজে থেকেই ওর কাছে সমর্পিত হয়ে গেছে, দুপুরে সেই আশ্বাস মাকে দিয়েছে। ঋতুপর্ণা আর ওর মা নয়া, সাক্ষাৎ প্রেমিকা, ওর হৃদয়ের রাজ্ঞী, রসবতী অপ্সরারূপ ধারন করে ওর সামনে নিজেকে উজাড় করে প্রেমে ভরিয়ে তুলতে এসেছিল। তবে কেন সেই রাজ্ঞীকে ছেড়ে পঙ্কিল নারীর দিকে পা বাড়িয়ে দিল আদি।

বাড়ি পৌঁছে উন্মাদিনীর মতন হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণা। দরজা খুলে কোন রকমে নিজের ঘরে ঢুকে বিছানায় নিজেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। দুই হাতে বালিশটা মুখের মধ্যে চেপে ধরে ডাক ছেড়ে কেঁদে ওঠে ঋতুপর্ণার ভগ্ন হৃদয়। হে ভগবান, কাকে ভালোবেসে ফেলল শেষ পর্যন্ত। ওর জীবনের সব কিছুই অন্ধকারে পরিপূর্ণ, প্রথমে স্বামীর কাছে প্রতারিত হল, দ্বিতীয় বার প্রদীপের কাছে। তবে ওই দুই বার প্রতারিত হয়েও বাঁচার এক আশা ওর বুকের মধ্যে ছিল, কারন ওই সময়ে ওর কাছে ওর প্রান প্রিয় ছেলে ছিল। যার জন্যে ওকে বাঁচতে হতো। কিন্তু সেই ছেলেই আজকে প্রতারনা করল। আর কি নিয়ে এই জীবন কাটাবে ঋতুপর্ণা। ও যে সব কিছুই হারিয়ে ফেলেছে।

খোলা দরজা দিয়ে হুড়মুড়িয়ে আদি ঢুকে পড়ল বাড়ির মধ্যে। বসার ঘরের আলো আগে থেকেই নেভানো, চারদিকের আলো নেভানো শুধু মাত্র মায়ের ঘরে একটা মৃদু আলো জ্বলছিল। মৃদু কান্নার আওয়াজ আদির কানে ভেসে আসতেই আদি চোখ বন্ধ করে প্রমাদ গোনে। সত্যি নেশার বশে মাকে প্রচন্ড আঘাত দিয়েছে, এই পাপের এই আঘাতের ক্ষমা নেই। আজ মায়ের সাজ দেখেই বুঝে গিয়েছিল যে এতদিন যে ঋতুপর্ণাকে দেখে এসেছে সেই ঋতুপর্ণা এক নতুন রূপ ধারন করে ওর সামনে অবতারন করবে। প্রেয়সী ঋতুপর্ণাকে এত বড় আঘাত আদি কি করে দিল। আদি সদর দরজা বন্ধ করে তালা মেরে, পা টিপে টিপে মায়ের ঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। ওর মা বিছানায় লুটিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে ফুলে ফুলে উঠছে। মায়ের বুক ভাঙা কান্না দেখে আদির ভীষণ কান্না পায়।

কাঁপা গলায় ডাক দেয় ঋতুপর্ণাকে, “মা।”

ঋতুপর্ণার কানে সদর দরজা বন্ধ করার আওয়াজ এসেছিল কিন্তু রাগে দুঃখে ঘৃণায় ছেলের দিকে মুখ তুলে তাকাতে ঘৃণা বোধ করল। ছেলের দিকে হাত নাড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে ক্ষুব্ধ বাঘিনীর মতন গর্জে উঠল, “একদম আমার কাছে আসবি না, দুর হয়ে যা আমার সামনে থেকে।”

আদি অপরাধীর মতন দরজার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে নিচু গলায় ক্ষমা চেয়ে বলল, “মা আমাকে ক্ষমা করে দাও। নেশার ঘোরে কি করে ফেলেছি ঠিক নেই।”

অশ্রু শিক্ত নয়ন মেলে আদির দিকে তাকাল ঋতুপর্ণা। ওর চোখ কেঁদে কেঁদে লাল হয়ে গেছে, চোখের কাজল ধুয়ে নরম গোলাপি গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। মায়ের আহত রূপ দেখে আদির বুক কেঁপে উঠল। দাঁতে দাঁত পিষে ছেলের দিকে রোষকষিত চাহনি নিয়ে তাকিয়ে গর্জে উঠল, “নেশার ঘোরে না অন্য কিছু? কেন এখানে কেন এসেছিস? ওই মুখপুড়ি সুপর্ণার কাছে যা না।” আদি এক পা এগিয়ে আসতে যায় মায়ের দিকে। ঋতুপর্ণা বিছানা ছেড়ে উঠে চেঁচিয়ে ওঠে, “একদম আমার কাছে আসবি না, এক পা এগোলে কিন্তু আমি আত্মহত্যা করব।”

ঋতুপর্ণা বিছানা থেকে ছটফটিয়ে উঠতেই ওর আঁচল খুলে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে। প্রবল ক্রন্দনের ফলে ওর লাল ব্লাউজে ঢাকা পীনোন্নত স্তন জোড়া কেঁপে কেঁপে ওঠে। নিজের আলুথালু বেশের দিকে খেয়াল থাকে না ঋতুপর্ণার। মাথার চুল এলোমেলো, সাক্ষাৎ মা চামুন্ডার রূপ ধারন করে ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে।
 
আদি চেঁচিয়ে ওঠে, “না মা আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি ভুল করে ফেলেছি প্লিস ক্ষমা করে দাও।”

মায়ের হৃদয় হয়ত ছেলেকে ক্ষমা করে দিত কিন্তু এযে এক প্রেমিকার হৃদয়। ভালোবাসার পাত্রকে অন্য এক নারীর বুকের মধ্যে মাথা গুঁজতে দেখলে কোন প্রেমিকার সহ্য হয় না। ঋতুপর্ণা চেঁচিয়ে ওঠে আদি দিকে, “না আমি তোর মা নই, আজ থেকে তোর মা মরে গেছে।”

আদির বুক ধড়ফড় করে ওঠে, তাহলে কি ওর মা ওর জন্মের সত্য জেনে ফেলেছে, সুভাষ কি মাকে ফোন করে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছে? আদি চাপা ক্রন্দনরত কণ্ঠে বলে, “না মা, আমি তোমাকে ছেড়ে এক মুহূর্তের জন্য বাঁচতে পারব না। তুমিই আমার মা আমার সব কিছু।”

ঋতুপর্ণার কানে ছেলের কোন স্তুতি বানী প্রবেশ করে না। বাম হাতে গাল মুছে ভাঙা বুকে গর্জে ওঠে, “তুই একদম তোর বাবার মতন লম্পট চরিত্রহীন হয়েছিস।”

সুভাষের নাম কানে যেতেই আদির সকল ধমনী সতর্ক হয়ে যায়, না আদি কখন সুভাষের মতন নয়। আদি কান্না থামিয়ে মাকে বুঝাতে চেষ্টা করে, “না আমি বাবার মতন কখনো নই।”

ফোঁপাতে ফোঁপাতে রাগে দুঃখে ঘৃণায় কাঁপতে কাঁপতে বলে, “সুভাষের মতন তুই, একশ বার ওর মতন। আমাকে ছেড়ে দিলেও তোর মধ্যে ঠিক ঢুকে রয়েছে আমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য। মদের নেশায়, যৌবনের দেহের নেশায় তুই উন্মাদ, তুই পাগল এক শুয়োর, যাকে পারিস যেখানে পারিস স্থান কাল পাত্র না দেখে শুরু করে দিস।”

বারেবারে সুভাষের সাথে তুলনা করাতে আদি খেপে যায়, মায়ের দিকে এক পা এগিয়ে চাপা কণ্ঠে গর্জে ওঠে, “না আমি সুভাষের মতন একদম নই।”

আদিকে এগিয়ে আসতে দেখে ঋতুপর্ণার সারা দেহ রিরি করে জ্বলে ওঠে তীব্র ঘৃণার আগুনে। আদি সামনে আসতেই ওর গালে সপাটে এক চড় কষিয়ে দিয়ে ধরা গলায় বলে, “তুই আমাকে আজকে সত্যি শেষ করে দিলি রে আদি। কেন কেন শেষ করে দিলি? কেন আমার বুক ভেঙে দিলি রে?” হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে ঋতুপর্ণা। “আমি যে আজকে তোর জন্যেই নিজেকে সাজিয়েছিলাম, তুই কি একটু বুঝেছিস? আমি যে আজকে মাতৃত্ব বিসর্জন দিয়ে তোর কাছে ছুটে আসতে চেয়েছিলাম সেটা কি একবারের জন্য ভাবিস নি।”

চড় খেয়ে আদি মাথা নিচু করে মায়ের সামনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, সত্যি ওর কিছুই বলার নেই। কোন মুখে ক্ষমা চাইবে, এই কয়েক ঘন্টা আগে, দুপুরে খাওয়ার পরেই মাকে কোলের মধ্যে নিবিড় আলিঙ্গন পাশে বদ্ধ করে কত ভালোবাসার কথা বলেছিল। আর সেই মিষ্টি কুচ্চি তোতা পাখীর হৃদয় এক মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিল। এক বারের জন্য ভেবে দেখল না কোথায় আছে, একবারের জন্য ভেবে দেখল না মা যদি দেখতে পায় তাহলে মায়ের কি অবস্থা হবে।

আঁচলটা মাটি থেকে তুলে নিল ঋতুপর্ণা। আদি ঝাপসা চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে, ওর ভাষা হারিয়ে গেছে। ঋতুপর্ণা কয়েক পা পেছনে সরে গিয়ে আদির হাতের নাগালের বাইরে চলে গেল। আঁচলটা গলার চারপাশে ফাঁসের মতন চেপে ধরে কেঁদে উঠল, “যখন সুভাষ আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল তখন শুধু মাত্র তোর মুখ চেয়েই বেঁচে ছিলাম। আজকে তুইও আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিস, এই জীবন আর না থাকাই ভালো।” বলে গলার চারপাশে আঁচলের ফাঁস দিয়ে বেঁধে দিল। ওর চোখ দুটো, কোটর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসার যোগাড়। সারা চেহারা রক্ত শুন্য হয়ে আসছে। ফাঁসটা চেপে বসতেই ওর শ্বাস নালী রুদ্ধ হয়ে যায়। ঋতুপর্ণা কাঁপা গলায় হাঁসফাঁস করতে করতে ঝাপসা চোখে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি চললাম তুই যা পারিস তাই করিস।”

মায়ের গলার ফাঁসের দৃশ্য দেখে আদির বুকের পাঁজর কেঁপে উঠল, চেঁচিয়ে আকাশ বাতাস বিদীর্ণ করে চেঁচিয়ে উঠল, “মা, নাহহহ...”

মাকে হাঁসফাঁস করতে দেখে আদি দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে পাশের টেবিল থেকে একটা কাঁচের ফুলদানী উঠিয়ে নিয়ে নিজের জানুর ওপরে মেরে ভেঙে দিল। ওর মাথার তখন ঠিক নেই কি করবে। ঝনঝন করে কাঁচের ফুলদানী ভেঙে গেল। একটা বড় কাঁচের টুকরো ডান হাতে চেপে ধরে বাম হাতের কব্জির ওপরে বসিয়ে দিল। একটু একটু করে কাঁচের টুকরো আদির কঠিন কব্জির মধ্যে ঢুকে যেতেই রক্তের রেখা দেখা দিল।

ঝাপসা চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে রক্ত মাখা কবজি দেখিয়ে চেঁচিয়ে উঠল আদি, “তুমি না থাকলে আমার বেঁচে থাকার কোন অর্থ নেই মা।”

********** পর্ব তেরো সমাপ্ত **********
 
পর্ব চোদ্দ (#1)

মাথা ভর্তি এলো চুল, এলোকেশী ঋতুপর্ণার উন্মাদিনীর মতন চেহারা, পান পাতার মতন মিষ্টি মুখাবয়ব জুড়ে ভীষণ বেদনার চিহ্ন, ফর্সা গর্দানে আঁচলের ফাঁস, লাল টকটকে ঘটি হাতা ব্লাউজে ঢাকা পীনোন্নত স্তন জোড়া শ্বাসের কষ্টে ফুলে ফুলে উঠছে। মায়ের এই ভয়ঙ্কর বিরহিণী রূপ দেখে আদির মাথা ঝিমঝিম করে ওঠে। বাম কব্জির ওপরে কাঁচের টুকরো চেপে ধরে নেশায় টলমল করতে করতে গুঙিয়ে ওঠে, “মা গো, তুমি যদি আমাকে ছেড়ে চলে যাও তাহলে আমিও আর বেঁচে থাকব না, মা।”

ঋতুপর্ণা শুধু মাত্র ছেলেকে পরীক্ষা করার জন্যেই গলায় আঁচলের ফাঁস লাগিয়েছিল, দুঃখে যদিও ওর বুক ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল তাও লড়াই না করেই নিজের ভালবাসাকে নিজের অধিকারকে এই ভাবে হারিয়ে যেতে দিত না। ছেলেকে হাতের কবজি কাটতে দেখে বুক কেঁপে ওঠে ঋতুপর্ণার। নিরুপায় আদিও শুধুমাত্র মাকে ভয় দেখানোর জন্যেই কবজি কাটার অভিনয় করেছিল, জানতো, ওই বুক ফাটা নারীর অন্দর মহলে কোথাও এখনো মাতৃ হৃদয় লুকিয়ে আছে। প্রেমিকা সত্বা হয়তো আত্মহত্যা করতে পারে কিন্তু মাতৃ হৃদয় কখনো ছেলেকে ছেড়ে যাবে না, আর সেই সুযোগটাই আদির দরকার ছিল। নেশায় টলমল করলেও ওর বুদ্ধি বিবেক কিছুটা কাজ করছিল তখন।

ছেলের কব্জিতে রক্তের রেখা দেখে ঋতুপর্ণা থমকে যায়। বুঝতে বিন্দু মাত্র দেরি হয় না যে ওর একমাত্র পুত্র নিজের কর্মে ভীষণ অনুতপ্ত না হলে কবজি কেটে রক্ত বের করে তার প্রমান দিত না। বুক কেঁপে ওঠে ঋতুপর্ণার, আত্মহত্যার কথা ভুলে আদির বুকের ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কেঁদে ওঠে, “ও রে আদি একি করছিস।” বলে ওর হাত চেপে ধরে।

আদি ভীষণ জোরে মাথা নাড়িয়ে মায়ের হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে বলে, “না মা, আমি দোষী, তোমাকে দুঃখ দিয়েছি, আমার সাজা পাওয়া উচিত।” নেশাগ্রস্ত আদি বুক ফাটা দুঃখে একটু টলে যায়।

আদিকে টলে যেতে দেখতেই ঋতুপর্ণার বুক কেঁপে ওঠে। ইসসস পশ্চাতাপে অনুতপ্ত ছেলেটার বুক সত্যি ভেঙে যাচ্ছে। আর নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে না ঋতুপর্ণা। আদির দুই হাত শক্ত করে ধরে বুকের ওপরে মাথা ঠুকে কাঁদতে কাঁদতে বলে, “আমাকে জ্বালাতে তোর খুব ভালো লাগে তাই না।”

মায়ের মাথার আবিরে আর কপালের লাল সিঁদুরে আদির সাদা পাঞ্জাবির বুক লাল হয়ে ওঠে। জল ভরা চোখে মায়ের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে ধরা গলায় বলে, “আর তোমাকে কোনোদিন জ্বালাবো না মা, এই শেষ বারের মতন আমাকে ক্ষমা করে দাও। এই শেষ বার, এই মুহূর্ত থেকে আমি শুধু তোমার, শুধু তোমার।”

এলোকেশী ঋতুপর্ণা আদির বুকের ওপরে মাথা ঠুকতে ঠুকতে ফুঁপিয়ে ওঠে, “তুই সত্যি বড্ড জ্বালাতে জানিস রে আদি, শুধু জ্বালাতেই জানিস, আমার মন পড়তে জানলি না রে।”

মায়ের থুতনিতে আঙ্গুল দিয়ে নিজের দিকে তুলে ধরে, কব্জির একফোঁটা রক্ত মায়ের কপালে লাগিয়ে দেয়। প্রশস্ত ফর্সা ললাটে ছেলের উষ্ণ রক্তের পরশে ঋতুপর্ণার সর্বাঙ্গ জুড়ে তীব্র আলোড়ন দেখা দেয়। ছলছল চোখে রক্ত মাখা ললাট নিয়ে আদির দিকে তাকিয়ে থাকে। মায়ের মুখ আঁজলা করে ধরে মায়াবী অশ্রুশিক্ত চোখের তারায় চাহনি নিবদ্ধ করে ধরা গলায় বলে, “মা গো, এই রক্তের শপথ নিয়ে বলছি মা, আজ থেকে এই মুহূর্ত থেকে আমি শুধু তোমার, আর কোনোদিন তোমাকে কোন দুঃখ দেব না।”

ছেলের একফোঁটা উষ্ণ রক্ত ওর প্রশস্ত ফর্সা ললাট বেয়ে নাক বেয়ে নাকের ডগা লাল করে দেয়। ছেলের হাত জোড়ার ওপরে হাত রেখে গালের ওপরে ছেলের হাতের উষ্ণতা চেপে ধরে ছলছল চোখ নিয়ে আঁতকে ওঠে, “তুই একি করলি রে আদি। আমি যে শুধু মাত্র তোকে...” না আর বেশি বলতে পারল না। এই রক্ত মাখা শপথ বাক্যের অর্থ ওর অজানা নয় কিন্তু ছেলের সাথে অবৈধ নিষিদ্ধ প্রগাড় প্রেমের সম্পর্ককে কোন নাম দিতে চায়নি ঋতুপর্ণা। ঋতুপর্ণা শুধু মাত্র চেয়েছিল ওর আদি, ওর ছেলে শুধু মাত্র ওর হয়েই থাক, এই ভালোবাসার কথা কেউ জানবে না শুধু মাত্র ওদের বুকের মাঝে, এই চার দেয়ালের মাঝে আঁকা থাকবে।

ঋতুপর্ণা ধুপ করে বিছানায় বসে পড়ে, কিছুই আর ভাবতে পারছে না। রক্তের ফোঁটা ধিরে ধিরে ওর নাকের ডগায় এসে জমে গেছে। আদি মায়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। হটাত ছেলেকে হাঁটু গেড়ে বসতে দেখে অবাক হয়ে যায়, বুক দুরদুর করে কেঁপে ওঠে, এরপরে কি করবে ওর ছেলে। রক্তে সুরার দাপানি অনেকটা কমে এসেছে। মাকে এখন আর সেই এলোকেশী চন্ডির মতন লাগছে না। তাও মায়ের চোখে জলের রেখা ওকে ভাবিয়ে তোলে।
 
ছেলে মায়ের পায়ের পাতায় রক্ত মাখিয়ে দিয়ে ধরা গলায় বলে, “তুমি আমার মা, আমার জননী আমার সবকিছু। এই তোমার পা ছুঁয়ে শপথ করছি এর পরে যেদিন আমার বুকে অন্য কেউ আসবে সেদিন যেন আমার শেষ দিন হয়।”

পায়ের পাতা লাল করে দিয়েছে ছেলে। ছেলের কাঁধে হাত রেখে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকে ঋতুপর্ণা। ওর নরম লালচে গালের ওপরে অশ্রুর রেখা শুকিয়ে এসেছে। বাম হাতের উলটো পিঠ দিয়ে চোখের কোল আর গাল মুছে অভিমানী ভাবব্যক্তি ফুটিয়ে বলে, “সেই দিন যেন কোনোদিন না আসে রে আদি, সেদিন এলে আমিও কিন্তু সত্যি সত্যি গলায় দড়ি দেবো।”

আদি হাঁটু গেড়ে সোজা হয়ে মায়ের সামনে বসে যায়। ঋতুপর্ণার জোড়া হাঁটু আদির বুকের ওপরে লাগে। আদি ধিরে ধিরে মায়ের হাঁটুর ওপরে হাতের পাতা মেলে বুলিয়ে দেয়। ধিরে ধিরে ঋতুপর্ণার ঊরু জোড়া ছেলের কঠিন হাতের পরশে অবশ হয়ে যায়, কিন্তু তাও হাঁটু জুড়ে ছেলের বুকের সাথে লাগিয়ে বসে থাকে।

আদি মায়ের ছলছল মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস স্মিত হেসে করে, “সত্যি করে বলতো, তুমি সত্যি কি গলায় আঁচলের ফাঁস লাগিয়ে দিতে?”

ছেলের কথা শুনে হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা, “ধ্যাত, দুষ্টু, লড়াই না করেই তোকে ছেড়ে দেব এমন ভাবলি কি করে? যদি সত্যিই মরতে হতো তাহলে বাড়ি ঢুকে আমার মৃতদেহ দেখতে পেতিস। তোর জন্য অপেক্ষা করতাম না। তুইও তো শুধু শুধু আমাকে ভয় দেখাতে গেলি, তাই না?”

আদি মুচকি হেসে উত্তর দেয়, “তোমার রণচণ্ডী এলোকেশী মূর্তি দেখে সত্যি এক মুহূর্তের জন্য ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। দেখলাম কিছু একটা করা উচিত না হলে তোমাকে থামানো অসম্ভব। তাই...”

“তুই না ভীষণ শয়তান” বলেই ঋতুপর্ণা ছেলেকে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। ওর সারা বুক তোলপাড় হয়ে যায়, সর্বাঙ্গ জুড়ে ভীষণ ভালোলাগা আর অনাবিল আনন্দের ছোঁয়া জেগে ওঠে। মায়ের নরম হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে চেপে ধরে আদি। চাঁপার কলি নরম আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে ধরে, ওর কঠিন আঙ্গুলের চাপে মায়ের কোমল আঙ্গুল গুলো একটু একটু করে গলে যায়। গরম হয়ে যায় ওর ধমনীর রক্ত, মদের ধারা মাথায় উঠে তান্ডব শুরু করার পূর্ব মুহূর্তের আনাগোনা শুরু করে দেয়।

মায়ের কপালে কপাল ঠেকিয়ে ধরা গলায় বলে ওঠে, “মা গো আমি তোমাকে ভীষণ ভাবে ভালোবাসি, শুধু তোমার আশ্রয়ে বাকি জীবন কাটাতে চাই। আমাদের এই একাকীত্ব জীবনে আমরাই পরস্পরের বন্ধু হয়েছি। আমি তোমার সব আশা সব চাহিদা পুরন করব। তুমি আমার হৃদয়ের শক্তি, আমার মুক্তি, আমার সাহস, আমার উৎসাহ আমার সুখ আমার দুঃখ। তোমাকে পাশে করেই আমি দৈহিক, মানসিক আর চারিত্রিক শক্তি অর্জন করব।” মায়ের হাত দুটোর ওপরে গরম ঠোঁট চেপে মিহি ধরা গলায় বলে, “আমি প্রতিজ্ঞা করছি আমি তোমার ভরন পোষণের জন্য যা কিছু দরকার সেই সবকিছুই আমি উপার্জন করে তোমাকে ফলে ফুলে ভরিয়ে দেব। আমি তোমার সুরক্ষার দিকে নজর দেব।” ঋতুপর্ণার চোখ জোড়া আবার জলে ভরে ওঠে, বিরহের জ্বালা কাটিয়ে আনন্দাশ্রু বইতে শুরু করে দেয়। মায়ের নরম গালে চুমু খেয়ে বলে, “মা গো, তুমি আমার জীবনে শুধু মাত্র মায়া মমতা স্নেহ নিয়ে আসোনি। তুমি আমার জীবনে প্রেম ভালোবাসা, পবিত্রতা এবং সৌভাগ্য এনে আমাকে ভরিয়ে তুলেছ। আমি আমাদের দুইজনার মনোরঞ্জন, সুখ এবং ঐশ্বর্যের জন্য যা কিছু দরকার তা আমি উপার্জন করে আনব।” কথা গুলো শুনতে শুনতে প্রবল প্রেমের উচ্ছ্বাসে ঋতুপর্ণার বুক উপচে ওঠে। কাঁপা ঠোঁটে কিছু বলতে চেষ্টা করে ছেলেকে, কিন্তু আদি মায়ের ঠোঁটের ওপরে আঙ্গুল রেখে চুপ করিয়ে দিয়ে বলে, “আমার মিষ্টি কুচ্চি সোনা, আমার তোতাপাখী, আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসতে চাই, তোমাকে নিয়েই জীবনের সমস্ত ঋতু উপভোগ করতে চাই।” মায়ের ঠোঁটের ওপরে আলতো ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে, “মিষ্টি কুচ্চি সোনা, তোমাকে নিজের করে নিয়ে, তোমার সুখে নিজের সুখ, তোমার আনন্দে নিজের আনন্দ খুঁজে পেতে চাই। তোমাকে এক নারীর, এক প্রেমিকার পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে তোমাকে সর্বাঙ্গিক ভাবে ভরিয়ে তুলতে চাই। আমার মিষ্টি সখী, আমার প্রানের প্রিয়তমা সোনা তোতাপাখী, আজ থেকে আমি শুধু তোমার আর তুমি শুধু আমার। আমি আমার জীবন তোমার হাতে সমর্পণ করলাম।”

ছেলের এহেন গভীর প্রেমের উক্তি শুনে ওর বুক ভেসে যায়। আদি মায়ের হাত ছেড়ে নরম কোমর জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে আনে। আদির বুকেও ওপরে ঋতুপর্ণার পীনোন্নত স্তন জোড়া পিষে যায়। আঁচলহীন অনাবৃত ঊর্ধ্বাঙ্গের আঁটো কাঁচুলির পীনোন্নত নিটোল বক্ষযুগল মুক্তির আশায় ছটফট করে ওঠে। মৃদু শ্বাসের ফলে ধিরে ধিরে উষ্ণ স্তন জোড়া মিশিয়ে দেয় আদির চওড়া ছাতির ওপরে।

ঋতুপর্ণা, ছেলের গলা জড়িয়ে, মাথা কাছে টেনে কপালে চুমু খেয়ে অভিমানী কণ্ঠে মিষ্টি হেসে বলে, “উঁহু, শুধু মাত্র ফাঁকা বুলিতে কিন্তু কাজে দেবে না।” কথা গুলো বলতে বলতে ছেলের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ছেলের মাথা আঁকড়ে ধরে চোখের তারায় মায়াবী হাসি ফুটিয়ে মিহি প্রেমঘন কণ্ঠে বলে, “কাজে দেখাতে হবে তবেই কিন্তু বিশ্বাস করব।”

আদি মায়ের কোমর চেপে ধরে, মায়ের কোমল নিটোল স্তনের ওপরে নিজের কঠিন প্রশস্ত ছাতি পিষে ধরে বলে, “মিষ্টি তোতা পাখী, তুমি আমার স্বপ্নের রানী, শেষবারের মতন আমার কথা বিশ্বাস কর।” মায়ের নিটোল স্তনের পরশে ওর বুকের ধমনীর মাঝে তোলপাড় করে রক্তের ধারা। একটু কেঁপে ওঠে আদি, মিহি আদুরে কণ্ঠে বলে, “মা গো বড় ঠাণ্ডা লাগে যে, একটু গরম করে দাও না প্লিস।”

ছেলের মিহি আবেদন বাক্য ওর কানের মধ্যে গরম লাভার মতন প্রবেশ করে ওর সারা শরীর জুড়ে কামানলের আগুন দেখা দেয়। ছেলের পাঞ্জাবীর বোতাম খুলতে খুলতে মিষ্টি রাগ দেখিয়ে বলে, “ভিজে গেঞ্জি পাঞ্জাবী পরে থাকলে ঠাণ্ডা তো লাগবেই।” আদি দুই হাত উঁচু করে মাকে ওর পাঞ্জাবী খুলতে সাহায্য করে। ভিজে পাঞ্জাবী গেঞ্জি খুলে দেয় ছেলের। লোমশ ছাতি দেখে ঋতুপর্ণার বুকের মাঝে তীব্র আন্দোলন দেখা দেয়। আঁচল দিয়ে ছেলের ভিজে বুক মুছাতে মুছাতে ভুরু কুঁচকে অভিমানী কণ্ঠে বলে, “ওই সব না করলে এতক্ষনে এই ভিজে কাপড় চোপড় পরে থাকতে হতো না।”

লোমশ পেটান চওড়া ছাতির ওপরে মায়ের নরম পেলব আঙ্গুলের আঁকিবুঁকির পরশে আদির নগ্ন ঊর্ধ্বাঙ্গ শিউরে ওঠে। দাঁতে দাঁত চেপে নেশাযুক্ত কণ্ঠে মাকে চাপা হাসি দিয়ে বলে, “ইসস তাহলে কি আর তুমি এইভাবে আমাকে মুছিয়ে দিতে নাকি?”

ঋতুপর্ণা চোখের তারায় দুষ্টু মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে বলে, “একবার বলে দেখতিস, তা না করে সোজা গঙ্গা থেকে উঠে চলে গেলি।” বলেই পাশে রাখা বরন কুলো থেকে এক মুঠো আবির তুলে হাসতে হাসতে আদির গালে মাথায় লাগিয়ে দিয়ে বলে, “তোকে আবির লাগানো হলো না।”

কর্কশ গালের ওপরে মায়ের নরম হাতের ছোঁয়া পেয়ে আদির বুকের রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে। আদিও এক মুঠো আবির নিয়ে মায়ের মাথায় আর দুই নরম গালে ঘষে বলে, “ইসস শুধু তুমি পারো নাকি আমিও পারি।”

মাথায় আবির পড়তেই ঋতুপর্ণার মাথা একটু ঝিমঝিম করে ওঠে। নাকের মধ্যে আবিরের মত্ত মাতাল সুবাসে ওর বুকের এক কোনায় মত্ত কামিনীর রাগ বেজে ওঠে। নরম গালের ওপরে ছেলের উত্তপ্ত কঠিন হাতের পরশে সর্বাঙ্গ বয়ে মৃদু হিল্লোল খেলে যায়। আদি মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরে কাছে টানতে চেষ্টা করে।

ছেলের কঠিন আলিঙ্গনপাশে ছটফট করে ওঠে অভিমানী রমণী, “না না, এইবারে অত সহজে ভুলবো না। আগে প্রমান দিতে হবে তবেই। এতদিন শুধু নারীরা নিজেদের ভালোবাসা প্রেম ভক্তির প্রমান দিয়ে এসেছে, এইবারে তোর পালা।”

মায়ের নরম গালে আবিরের রঙে রাঙিয়ে দেয়, নাকের ডগায় একফোঁটা রক্তের দাগ। সারা চেহারা জুড়ে ভীষণ কামনার আগুন দেখে আদির শরীর গরম হয়ে যায়। ওর নেশা একটু একটু করে ওকে জ্বালাতে শুরু করে দেয়। মায়ের অভিমানী কণ্ঠ শুনে বুঝতে দেরি হয় না যে মায়ের রাগ অনেকটা জল হয়ে গেছে। বুকের ওপরে নিটোল স্তন জোড়ার পরশে ওর বুকের রক্ত একটু একটু করে উত্তপ্ত হতে শুরু করে দেয়। জিন্সের ভেতরে ওর পুরুষাঙ্গ ধিরে ধিরে ফনা তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে। ইসস, এই আবিরে মাকে যা দেখাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে এখুনি কোন সময় নষ্ট না করে এই সাদা ধবধবে বিছানায় মাকে ফেলে চড়ে বসে। ছিঁড়ে কুটে মায়ের নধর লাস্যময়ী তীব্র যৌন আবেদনে মাখামাখি দেহ পল্লবকে কুটিকুটি করে ফেলে নিজের ভালোবাসার প্রমান দেয়। মায়ের কোমর জড়িয়ে ধরেতেই, ঋতুপর্ণা ঊরু জোড়া আরো মেলে ধরে আদিকে কাছে টেনে ধরে। নগ্ন পেশিবহুল পুরুষের ঊর্ধ্বাঙ্গের সাথে কমনীয় নারীর নিটোল পীনোন্নত স্তন জোড়া ধিরে ধিরে পিষ্ট হয়ে যায়।

মায়ের নরম কোমর শক্ত থাবার মাঝে চটকাতে চটকাতে কাতর কণ্ঠে বলে, “মা গো, কি করলে তোমার এই বুকে একটু স্থান পাওয়া যাবে বলতে পারো।”

ছেলের হৃদয়ের ধুকপুকানি নিজের অনাবৃত বক্ষ বিভাজিকায় অনুভব করতে পারে ঋতুপর্ণা। ছেলের বুকের মাঝে যেন আগুন জ্বলছে আর সেই আগুন ধিরে ধিরে ওর উন্মুক্ত বক্ষ বিভাজিকায় ধিরে ধিরে ছড়িয়ে পড়ছে। ছেলের সাথে বড্ড দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করে ঋতুপর্ণার। ধরা তো পড়বেই তবে এত সহজে কেন। ছেলেও ওর বাঁধনে ধরা দেবে, তাই না ছুট্টে ওর বুকের মাঝে এসেছে আর সে নিজেও ওই নদীর জলে মাতৃত্ব বিসর্জন দিয়ে এসেছে এই লোমশ বলিষ্ঠ পুরুষের বুকে হারিয়ে যাওয়ার জন্য।

ছেলের কাঁধ ধরে নিজের বুকের ওপর থেকে উঠিয়ে অভিমানী ভাবব্যক্তি ফুটিয়ে ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “বুকে আর স্থান পাওয়া যাবে না। যা সর, অনেক আবির খেলা, ভালোবাসার খেলা হয়েছে, এইবারে ছাড়।” বলেই ছেলের বুকের ওপরে আলতো ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে।

আদি মুচকি হেসে মায়ের কোমর ছেড়ে ঊরুর ওপরে হাতের পাতা মেলে ধরে বলে, “আচ্ছা, বুকে না হয় নাই দিলে এই রাঙা পায়ে একটু শরণ দাও।”

কাজল কালো মায়াবী চোখে ছেলের দিকে নিস্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে ঋতুপর্ণা। আদির নেশামত্ত রক্ত চোখের দৃষ্টি মায়ের আবেশ জড়ানো চোখের মণির ওপরে নিবদ্ধ হয়ে যায়। শাড়ির নিচ দিয়ে পায়ের পাতায় হাত বুলিয়ে ধিরে ধিরে পেলব পায়ের গুলির ওপরে হাত বুলিয়ে দেয়। নগ্ন উষ্ণ পায়ের গুলির ওপরে তপ্ত হাতের ছোঁয়ায় ঋতুপর্ণার ঊরু জোড়া অবশ হয়ে আসে। ধিরে ধিরে ঊরু মেলে ধরে আদির হাতের ছোঁয়ায়। আদিও হাঁটু গেড়ে সামনের দিকে এগিয়ে আসে। এক হাতে মায়ের কোমর জড়িয়ে অন্য হাতের পাতায় শাড়ি উঁচু করে দেয় হাঁটু পর্যন্ত। ঋতুপর্ণার ফর্সা দুই পা হাঁটু পর্যন্ত অনাবৃত হয়ে যায়। ছেলের কঠিন অদম্য আঙ্গুলের পরশে ছেলের চুল খামচে ধরে ঋতুপর্ণা। মায়ের বুকের ওপরে মাথা রেখে দেয় আদি। তপ্ত শ্বাসের মায়ের সুগভীর বক্ষ বিদলন ভাসিয়ে দেয়। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে ঋতুপর্ণা চোখে বুজে ফেলে ঋতুপর্ণা। ওর শ্বাস ধিরে ধিরে ঘন হয়ে আসে। কর্কশ গালের ওপরে মায়ের মোলায়ম উপরি বক্ষের ত্বকের ছোঁয়ায় আদির শ্বাস ফুলে ওঠে। আদির নেশামত্ত ঢুলুঢুলু চোখের সামনে মায়ের লাল আঁটো ব্লাউজে ঢাকা পীনোন্নত স্তন জোড়া সামনের দিকে ভীষণ ভাবে উঁচিয়ে। ঘন শ্বাসের ফলে স্তন জোড়া ভীষণ ভাবে ওঠানামা করে আদির নেশামত্ত রক্ত লাল চাহনির সামনে। আদির বুকের রক্তে নেশার সাথে সাথে প্রেমোন্মাদ লাভা জাগ্রত হয়ে, মায়ের শ্বাসের তালেতালে ওর শ্বাস ফুলতে শুরু করে দেয়।

মায়ের মায়াবী কাজল কালো ঢুলুঢুলু চোখের দিকে ঢুলুঢুলু চাহনি নিয়ে তাকিয়ে বলে, “তোমার দেহের উত্তাপে নিজেকে ভরিয়ে দিতে চাই। মিষ্টি কুচ্চি তোতা পাখী, প্লিস সোনা মা, একটু তোমার বুকে ঠাঁই দাও। আমার বড় ঠাণ্ডা লাগছে মা। কিছু একটা কর।” বলতে বলতে মায়ের উন্মুক্ত বক্ষ বিভাজিকায় আলতো চুমু খায়।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top