What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (4 Viewers)

আদি মনিমালার মাথার পেছনে চাঁটি মেরে ইয়ার্কি মেরে বলে, “দেখলিতো আমার ধুতি খুলল না।”

মণিমালা হেসে কুটোপুটি হয়ে উত্তর দিল, “ভাগ্যিস খোলেনি না হলে কি হত বল তো? একদম এহ যাহ হয়ে যেত।”

আদি ওর কান মুলে বলে, “এইবারে তোর শাড়ির পালা কিন্তু...”

ঋতুপর্ণা চাপা হাসি দিয়ে আদির দিকে তাকায়। যেন জিজ্ঞেস করতে চেষ্টা করে, কি চলছে। কচি মনিমালার হাসি আর উৎফুল্ল ভাব দেখে ঋতুপর্ণার নিজের পুরানো দিনের কথা মনে পড়ে যায়। হৃদয়ের গভীরে কচি প্রেমের দোলা, সারা অঙ্গ এক ভীষণ উৎফুল্ল আনন্দে ভরপুর। মণিমালা যেন উপচে পড়ছে উচ্ছ্বাসে। এতদিন মনিমালার এই রূপ ঋতুপর্ণার চোখে কোনোদিন পড়েনি অথবা খেয়াল করেনি। মণিমালা আগে মাঝে মাঝে আদির কথা জিজ্ঞেস করতো কিন্তু বাচ্চা মেয়ের অহেতুক প্রশ্ন ভেবে এতদিন এড়িয়ে গেছে সেইসব চোখের ঝলক। আদির চেয়ে বয়সে অনেক ছোট হলেও মণিমালা বড় হয়ে উঠেছে, ক্লাস টেনে পড়ে। আজকালের মেয়েরা বয়সের চেয়ে তাড়াতাড়ি বড় হয়ে ওঠে, মণিমালা কোন অংশে ব্যতিক্রম নয়। মনিমালার কচি উচ্ছ্বাসে ঋতুপর্ণার হৃদয়ের এক কোনায় শরতের নির্মল মলয়ের উদয় হয়। এক লহমায় অনেক কিছুই ভেবে বসে ঋতুপর্ণা। আপন মনে মাথা ঝাঁকিয়ে আদির দিকে তাকিয়ে দেখে। আদি আর মনিমালার বাচ্চা সুলভ মারামারি দুষ্টুমি আর বাচ্চা সুলভ বলে মনে হল না। মনে হল কোথায় যেন এই ছবিটাতে নিজে বড় বেমানান। আদির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে মণিমালা আপন মনে অনেক কিছুই বকবক করে যাচ্ছে, আদিও মাঝে মাঝে উত্তর দিচ্ছে আর মাঝে মাঝে ওর দিকে তাকিয়ে দেখছে।

ঘড়ি দেখল ঋতুপর্ণা, রাত দশটা বাজে কিন্তু মন্ডপে ভিড় প্রতি নিয়ত বেড়েই চলেছে। অষ্টমীর পুজো বলে কথা, এখন ভিড় বাড়বেই, ভিড় কমতে কমতে রাত গড়িয়ে হয়তো সকাল হয়ে যাবে। গত কয়েক বছর ঠিক ভাবে পুজো দেখা হয়ে ওঠেনি। এইবারে ভেবেছিল তিস্তা কৌশিক আরো অন্যেরা মিলে ঠাকুর দেখতে যাবে। যদিও ঠাকুর দেখা উপলক্ষ মাত্র, আসলে একটু বাড়ির বাইরে বের হতে চেয়েছিল ঋতুপর্ণা। এতদিন গৃহবন্দি হয়ে ওর হৃদয় মুক্তির জন্য আকুলি বিকুলি করছিল। একটু নির্জনে নিভৃতে ছেলের পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু শহরের এই ভিড়ের মধ্যে সেই সুযোগ কিছুতেই আর হয়ে ওঠে না।

আদির বাজুতে একটা চিমটি কেটে ঋতুপর্ণা জিজ্ঞেস করল, “কি রে তিস্তা তো যাচ্ছে না, তাহলে কি করা যাবে?”

আদি একটু ভেবে চিনতে উত্তর দেয়, “আগামী কাল আমি আর তুমি বিকেলে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে যাবো।”

ঋতুপর্ণার হৃদয় খুশিতে নেচে ওঠে, “সেটাই ভালো হবে, শুধু আমি আর তুই। রাতে কি প্লান তাহলে, আমি কিন্তু কিছুই রান্না করিনি, ভেবেছিলাম...”

আদি মায়ের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলে, “চলো বাইরে কোথাও খেয়ে আসি।”

পাশেই সুপর্ণা দাঁড়িয়ে ছিল, ওদের কথাবার্তা শুনে বলল, “আরে ঋতুদি বাইরে কেন যাবে, চল আমাদের বাড়ি চল।”

মণিমালা সেই শুনে আদির দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেসে দিল। আদিও প্রতিউত্তরে একটু হেসে দিল। সুপর্ণার বাড়ি সোসাইটির কাছেই, বেশি দেরি হল না ওদের বাড়ি পৌঁছাতে। দুতলা বাড়ি, যদিও বেশি বড় নয়, ওপরের তলায় সুপর্ণা থাকে আর নিচের তলায় সামনের একটা বড় ঘরে বিউটি পার্লার খুলেছে। ঋতুপর্ণা কখনো আগে সুপর্ণার বাড়িতে আসেনি, বরাবর সুপর্ণা ওর বাড়িতে এসে প্রসাধনি করে যেত। সুপর্ণা নিজের বিউটি পার্লার ঘুরিয়ে দেখায়। বড় ঘরটা বেশ সুন্দর করে সাজানো, একদিকে দেয়াল জুড়ে বড় আয়না বসানো, তার সামনে চারখানা চেয়ার পাতা। চেয়ার গুলো বেশ দামী, কুশন দেওয়া, হেলান দিলে পেছনে নেমে যায় তাতে বেশ সুবিধে হয়। সবকটা চেয়ার পর্দা দিয়ে ঘিরে ছোট ছোট কেবিনের আকার দেওয়া হয়েছে। ঘরের একপাশে একটা কাঠের দেওয়াল দেওয়া।

সুপর্ণা ঠোঁট টিপে হেসে ঋতুপর্ণাকে সেই কাঠের দেওয়ালে ঘেরা জায়গা দেখিয়ে কানেকানে বলে, “এটা ম্যাসাজের জায়গা বুঝলে। তোমার যদি ইচ্ছে থাকে তাহলে চলে এসো একদিন।”

ঋতুপর্ণার কান লাল হয়ে যায় ওই কথা শুনে, আশেপাশে তাকিয়ে দেখে ওর ছেলে ওর দিকে কি লক্ষ্য করছে নাকি? আদিকে দেখতে পেল না ঋতুপর্ণা, ওকে নিয়ে মনে হয় মণিমালা উপরে চলে গেছে।

সুপর্ণার পিঠে আলতো চাঁটি মেরে বলে, “আমার দরকার পড়লে তোমাকে বাড়িতেই ডেকে নেব।”

সুপর্ণা চাপা হাসি দিয়ে উত্তর দেয়, “ইসসস...”

রাতের খাবারের সময়ে বেশ হাসি মজায় কেটে যায়। খাওয়া দাওয়া গল্প গুজব করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে ওদের বেশ রাত হয়ে যায়।

বাড়িতে ঢুকে আদি আড়ামোড়া খেয়ে হাওয়ায় হাত পা ছুঁড়তে ছুঁড়তে বলে, “নেচে আমার গা হাত পা বড্ড ব্যাথা করছে।” বলেই মায়ের দিকে মুচকি হেসে তাকায়।

সেই চটুল হাসির অর্থ ধরে ফেলে ঋতুপর্ণা, তাও অবুঝের ভান করে ঠোঁট টিপে হেসে বলে, “ভালো করে এখন হাত মুখ ধুয়ে ঘুমিয়ে পড়, সকালের মধ্যে এই ব্যাথা পালিয়ে যাবে।”

আদি কয়েক পা মায়ের দিকে এগিয়ে যেতেই ঋতুপর্ণা নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ায়। মনের মধ্যে ঝড় ওঠে, এই বুঝি ছেলে ওকে জড়িয়ে ধরে ব্যাথা প্রশমন করে দিতে আবদার করে। কয়েক ঘন্টা আগেই ধুতি পরার মুহূর্তের ছবি ওর চোখের সামনে ভেসে উঠতেই, বুকের ওপরে হাত চেপে বুকের মধ্যে বিষাক্ত কামনার দংশন চেপে ধরে। মায়ের হটাত করে ঠোঁট কামড়ে ওর দিকে তির্যক ভাবে তাকিয়ে থাকা, তারপরে স্তন বিভাজিকায় হাত রেখে চেপে ধরা কোন কিছুই দৃষ্টি অগোচর হয় না আদির।

আদি মুচকি হেসে মায়ের কানে কানে বলে, “না না তোমার কথা বলছিলাম না মানে বলছিলাম এই যে আগামী কাল একবার সুপর্ণা কাকিমার কাছে যাবো ম্যাসাজ করতে।”

কটমট করে আদির দিকে তাকায় ঋতুপর্ণা, হাত তুলে মৃদু ধমক দিয়ে বলে, “সুপর্ণার বাড়িতে গেলে কিন্তু ঠ্যাং ভেঙে দেব শয়তান।”

তারপরে কিছুক্ষণ আদির মুখের দিকে একভাবে তাকিয়ে অনুধাবন করতে চেষ্টা করে ঋতুপর্ণা। আসলে সুপর্ণার কাছে যাওয়া হয়ত একটা বাহানা, হয়ত আদি কচি মনিমালার রূপের প্রেমে পড়ে গেছে। মনিমালার চোখে প্রেমের আগুন ঋতুপর্ণার দৃষ্টির অগোচর হয়নি, আদিও মন্ডপে ওর পাশে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ গল্প গুজব করেছে। সত্যতা যাচাই করে দেখতে হবে, তবে ছেলের ওপরে ওর অগাধ বিশ্বাস, কোন কিছু হলে নিশ্চয় ওকে জানিয়ে দেবে।

আদি মাথা দুলিয়ে সুবোধ বালকের মতন উত্তর দেয়, “আচ্ছা বাবা আচ্ছা, সুপর্ণা কাকিমার কাছে যাবো না।”

ঋতুপর্ণা হাই তুলে মুচকি হেসে বলে, “বেশি ব্যাথা ট্যাথা জমিয়ে রাখিস না। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড় কালকে নবমী।”

আদি পাঞ্জাবি খুলে পেশি গুলো ঋতুপর্ণার লোলুপ চোখের সামনে নাড়িয়ে বলে, “ব্যাথা জমলে কি করব সেটা বললে না তো?”

ঋতুপর্ণা ওর গালে আলতো চাঁটি মেরে বলে, “যা দুষ্টু, অনেক ন্যাকামো মেরেছিস এইবারে শুয়ে পড়।”

আদি মায়ের কোমর জড়িয়ে গালে ছোট একটা চুমু খেয়ে বলে, “ওকে সোনা ডারলিং, গুড নাইট।”

ঋতুপর্ণা চুম্বনের উত্তরে আদির বুকের কাছে ঘন হয়ে এসে ওর কপালে গালে মাথায় বেশ কয়েকটা ভিজে গাড় চুমু খেয়ে বলে, “গুড নাইট সোনা।”
 
পর্ব বারো (#6)

দুপুরে পর থেকে সাজগোজের শুরু। ঋতুপর্ণার হৃদয় খুশিতে ভরপুর, অনেকদিন পরে বেড়াতে বের হবে। আসলে খুশিটা বেড়াতে যাওয়ার জন্য নয়, ছেলে পাশে থাকবে ওকে ভিড়ের মধ্যে আগলে নিয়ে যাবে, একাকী দুইজনা নিভৃতে গাড়ির মধ্যে বসে থাকবে, খুশিটা এই নিয়ে। একবারের জন্য মনে হয় সেই ছোট বেলার ঋতুপর্ণা হয়ে যেতে। ইস, কত ভালো হতো আবার সেই পুরানো দিন যদি ফিরে পেতো। অনেকদিনের অপেক্ষার অবসান, কাঙ্খিত পুরুষের সন্ধান পেয়েছে ওর শুন্য হৃদয়। না না সেই ছোটবেলা ফিরে পেতে চায় না ঋতুপর্ণা, তাহলেই আবার অনেক কিছুই হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এই বেশ, এই বিষাক্ত প্রেমে নিজেদের শরীর মন ডুবিয়ে ভেসে যাওয়াতেই অনাবিল আনন্দ, অনাবিল সুখ। একসাথে পুত্রের ভালোবাসা তার সাথে কাঙ্খিত পুরুষের প্রেম, কোন জননীর কপালে এই সুখ জোটে! ঋতুপর্ণার জানা নেই।

“এই আদি একটু শোন তো এইখানে।” আলমারি খুলে এক গাদা শাড়ি বের করে চেঁচিয়ে ডাক পাড়ে ছেলেকে। কিছুতেই ঠিক করে উঠতে পারছে না কোন শাড়িটা পরবে।

আদি ভাত খেয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করছিল। মায়ের সাজতে ঘন্টা দু'য়েক, ততক্ষণে অনায়াসে একটা ছোট ঘুম দেওয়া যায়। ধ্যাত, এই মহিলা কিছুতেই ওকে শান্তিতে একটু ঘুমাতে দেবে না। “কি হল তোমার?” চেঁচিয়ে উত্তর দেয় আদি।

ঋতুপর্ণা এক গাদা শাড়ি হাতে আদির ঘরের পর্দা সরিয়ে ভেতরে ঢুকে মধু ঢালা গলায় জিজ্ঞেস করে, “হ্যাঁ রে সোনা, কিছুতেই বুঝতে পারছি না কোন শাড়ি পরব।”

আদি মায়ের হাতে এক গাদা শাড়ি দেখে ধন্দে পড়ে যায়। মেয়েদের মন বোঝা বড় দায়, একটা তুঁতে রঙের জর্জেট জালের শাড়ি, একটা কচি কলাপাতা রঙের পাতলা স্বচ্ছ শাড়ি, একটা আকাশি নীল রঙের কটকি শাড়ি, একটা কাঁচা হলদে রঙের সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্কের শাড়ি। আদি মাথা চুলকে একবার মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে নেয়। ঋতুপর্ণা এক এক করে এক একটা শাড়ি আঁচলে জড়িয়ে আদিকে দেখাতে শুরু করে আর জিজ্ঞেস করে কোনটা পরবে।

আদি বেশ খানিকক্ষণ দেখার পরে মাকে বলে, “ওই কাঁচা হলদে রঙের শাড়িটা পরলে ভালো দেখাবে।”

ঋতুপর্ণা নাক কুঁচকে মুখ ব্যাজার করে বলে, “উহু, এর আঁচলটা অতটা সুন্দর লাগছে না রে।”

আদি ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “মেয়েদের এই হচ্ছে প্রবলেম, জিজ্ঞেস ঠিক করবে কিন্তু যখন মতামত জানাব তখন ফুট কাটতেই হবে।” আরো একটু দেখে বলে, “কচি কলাপাতা রঙের শাড়িটা পর, ওটা তো ভালো। আগে মনে হয় না পরেছো।”

ঋতুপর্ণা কচি কলাপাতা রঙের শাড়িটা কাঁধের ওপরে আঁচলের মতন জড়িয়ে একটু এদিক ওদিক ঘুরে বলে, “এর জমিনটা অত কাজ করা নয়। নবমীর ঠাকুর দেখতে যাবো একটা ভালো শাড়ি না পরলে হয়।”

আদি খেপে যায়, “ধুত্তেরি, তোমার যা ইচ্ছে হয় সেটা পরো না। যদি এই ছিল তাহলে অত গুলো শাড়ি হাতে এইখানে কি করছ? এটার এইখানে প্রবলেম, ওটার ওইখানে প্রবলেম। তোমার মাথায় প্রবলেম।”

অভিমানী ঋতুপর্ণা মুখ বেঁকিয়ে আদিকে রাগত কণ্ঠে বলে, “যাঃ তুই একাই যা ঠাকুর দেখতে, আমি যাবো না।”

মায়ের অভিমানী চেহারা দেখে আদির বুক ব্যাথা করে উঠল। এক লাফে বিছানা ছেড়ে উঠে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থুতনিতে আঙ্গুল ছুঁইয়ে বলল, “আচ্ছা বাবা,” বলে মায়ের কপালে ছোট একটা চুমু খেয়ে বলল, “তুঁতে রঙের শাড়িটা পর তাহলে। মনে হয় এটাতে কোন প্রবলেম নেই।” ওর কথা শুনে ঋতুপর্ণা হেসে ফেলে। মাথা দুলিয়ে জানায়, না এটাই পরবে। আদি মায়ের কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে প্রেমকাতর কণ্ঠে বলে, “অভিমান করলে তোমাকে ভারি সুন্দরী দেখায়, তবে...” বলেই বুকের ওপরে একটা কিল মেরে বলে, “এইখানে বড্ড ব্যাথা করে।”

ঋতুপর্ণা রক্তে রঞ্জিত লজ্জিত চোখে আদির দিকে তাকিয়ে লাজুক হেসে বলে, “এই যাঃ আর ওই মেকি বুলি ঝাড়তে হবে না। ম্যাসাজ নিতে তো সুপর্ণার কাছে যাচ্ছিলিস, যা না।”

আদি মায়ের কোমর জড়িয়ে নধর কোমল দেহের সাথে কঠিন দেহ মিশিয়ে আদর করে বলে, “খাঁটি সোনা ছেড়ে কে ওই ইমিটেসানের দিকে তাকায় বল। সুপর্ণা, তিস্তা সব মেকি, সব কিছুই টেম্পোরারি একমাত্র তুমি খাঁটি।”

ছেলের বুকের ওপরে হাতের তালু মেলে বলে, “আচ্ছা বাবা, এখন আমাকে একটু ছাড়, আমি সাজতে শুরু করি, তুই পারলে একটু রেস্ট নিয়ে নে।”

আদি মায়ের গালে বেশ কয়েকটা চুমু খেয়ে, পিঠের ওপরে হাত বুলিয়ে আদর করে বলে, “ওকে ডারলিং, আপনার আদেশ শিরোধার্য। কিন্তু আমি কি পরব?”

ছোটবেলা থেকে বরাবর ওর মা-ই ওর জামা কাপড়ের দেখাশোনা করে এসেছে। কুড়ি বাইশ বছর বয়স হলে হবে কি, নিজের গেঞ্জি জাঙ্গিয়া পর্যন্ত মা কিনে এনে দেয়, শার্ট আর জিন্সের কথা না হয় ছেড়েই দেওয়া যাক। ঋতুপর্ণা ছাড়া আদির এক পাও চলে না। ঋতুপর্ণা একটু চিন্তায় পড়ে গেল, এই স্বচ্ছ তুঁতে রঙের ভীষণ আকর্ষক শাড়ি পরে তো আর ছেলের সাথে ঘুরতে বেরোন যায় না, আদিকে অন্তত মানানসই কিছু পরতে হয়। ওর মুখের দিকে একবার তাকিয়ে দেখে নিল, গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি, পুরুষত্ব ঠিকরে পড়ছে ছেলের বলিষ্ঠ দেহের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। বুকের পেশি গুলো বেশ ফুলো ফুলো, বুকের ওপরে বেশ লোম, দুই হাতেও লোম। উফফফ ভাবতে ভাবতে ওর শরীর জুড়ে ছটফটানিটা হটাত করে বেড়ে গেল। ধুতি পরাতে গিয়ে ওর নরম আঙ্গুলে আদির ঘন কালো কুঞ্চিত যৌন কেশের ছোঁয়া লেগে গিয়েছিল। ভাবতেই ওর গা শিরশির করে উঠল।

ঠোঁট কেটে চোখ বেঁকিয়ে হেসে বলে, “বাইরে হয়তো একটু ঠাণ্ডা পড়তে পারে, তুই তোর ওই গ্রে কালারের ব্লেজার পরে নিস। একটা গ্রে জিন্স আর সাদা গেঞ্জি পরে নিস।” আদির বুকের কাছে ঘন হয়ে এসে মুখ তুলে মিহি আদুরে কণ্ঠে বললে, “আসলে কি জানিস...” মায়ের ভাসা ভাসা চোখের চাহনি দেখে আদির হৃদপিণ্ডের ধুকপুক ক্ষণিকের জন্য থেমে গেল। ঋতুপর্ণা ভাসা ভাসা গলায় বলল, “বড্ড ...” আর কিছু বলতে পারল না। তার আগেই ওর মনে হল ছেলের ভীষণ দৃষ্টি ওকে চুম্বকের মতন টেনে ধরে নিজের মধ্যে সেঁধিয়ে নিয়েছে।

আদি বুঝে গেল মায়ের চোখের অব্যক্ত বানী। মাথা নামিয়ে মায়ের নাকের ডগায় আলতো জিব বুলিয়ে বলল, “বুঝে গেছি কি চাইছো।” আদিও পড়তে পারে মায়ের চোখের ভাষা।

ছেলে ওর চোখের ভাষা পড়ে ফেলেছে বুঝতে পেরেই লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণার সারা মুখমন্ডল। শাড়ি হাতে আদিকে একটু ধাক্কা মেরে নিজের বুক থেকে সরিয়ে বলে, “আচ্ছা আমি তৈরি হতে যাচ্ছি।”
 
আদি মাকে ছেড়ে দিয়ে মুচকি হেসে জানিয়ে দিল, “দরকার পড়লে ডাক দিও।” আদি জানে মায়ের ডাক পড়বেই, কারন এই তুঁতে রঙের শাড়ির ব্লাউজটা ভীষণ আকর্ষক, বেশ আঁটো আর সামনের দিকে গভীর কাটা। পিঠের দিকে কিছু নেই বললেই চলে, ব্লাউজের কাপড় দিয়েই পেছনের বাঁধনি, কোন হুক নেই।

আদি মুচকি হেসে নিজের বিছানায় গড়িয়ে পড়ল। সারা অঙ্গে ছন্দ তুলে কোমর বেঁকিয়ে নিতম্ব দুলিয়ে ঋতুপর্ণা বেরিয়ে গেল আদির ঘর থেকে। ওর চোখের ঝলসানি দেখে আদি পাগল হয়ে গেল। এত পাশে থেকেও মনে হল মায়ের সাথে প্রতি মুহূর্ত কেমন যেন পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে, কিছুতেই যেন মাকে নিজের করে নিতে পারছে না। যজ্ঞ স্থানে, কাষ্ঠ ঘৃত কর্পূর তেল সব মজুত কিন্তু সেই আগুনের ফুলকি কেমন যেন বারংবার সামনে এসেও সঠিক ভাবে জ্বলতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি খেয়ে তিস্তাকে একটা ফোন করল আদি। জানতে পারল যে কৌশিকের কয়েকজন বন্ধু মিলে ওরা সবাই দিঘা বেড়াতে গেছে আর সেইখানে উদ্দাম মজা করছে। আদি মুচকি হেসে জেনে নিল ওদের মজার আসল ঘটনা, তিস্তা বিশেষ কিছু না লুকিয়ে জানিয়ে দিল যে বেশ ভালোই মজা হচ্ছে কৌশিকের বন্ধুদের সাথে আর তাদের গার্ল ফ্রেন্ডদের সাথে। আদিও বেশ কিছুক্ষণ পরে জামা কাপড় পরে তৈরি হয়ে নিল। চারটে বাজে, পাঁচটায় সন্ধ্যে নেমে যাবে, এরপরে বের হলে রাস্তায় প্রচন্ড ভিড় হবে মন্ডপে প্রচন্ড ভিড় হয়ে যাবে। ঠিক ভাবে ঠাকুর দেখা হবে না। তবে ঠাকুর দেখা উপলক্ষ্য মাত্র, আসলে মায়ের কাছে থাকতে চায় আদি, মায়ের ত্বকের সাথে ত্বক মিলিয়ে ভিড়ের মধ্যে মাকে জড়িয়ে মায়ের বুকের মধ্যে নিরাপত্তার আবেশ সঞ্চার করতে চায়।

আদি বসার ঘরে বসে থাকে অধীর অপেক্ষায়, কখন মা ডাক পাড়বে, বলবে আদি প্লিস আমার ব্লাউজটা একটু বেঁধে দিয়ে যাবি। আদির অপেক্ষার অবসান আর কিছুতেই হয় না, চিত্ত ব্যাকুল হয়ে ওঠে, ওদিকে ওর ডাক আর আসে না।

অধৈর্য হয়ে আদি নিজেই মাকে ডাক দেয়, “কি হল কতদুর সাজ হল?”

ঋতুপর্ণা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছিল, সাজা গোজা সব শেষ। নিজেই পিঠের বাঁধনি বেঁধে নিয়েছে, জানতো আদিকে ডাক দিলেই ওর যাওয়া হয়ে যাবে। ছেলের পুরুষালী বাহুর বেষ্টনীতে বাঁধা পড়তে ওর কোমল শিক্ত চিত্ত যে ব্যাকুল হয়নি তা নয় তবে আদি এমন ভাবে দেখবে আর জড়িয়ে ধরবে তাতে বের হতে আরো বেশি দেরি হয়ে যাবে, ওর পুরুষ্টু জঙ্ঘা দুটো মাখনের মতন গলে পড়ে যাবে, ঊরুসন্ধি ভিজে যাবে, চ্যাপচ্যাপে যোনি রসে ভেজা প্যান্টি পরে ঠাকুর দেখতে যেতে বড্ড অসুবিধে হবে।

আদির ডাকের উত্তরে সাড়া দিয়ে ঋতুপর্ণা পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে এলো, “বড্ড তাড়া মারিস তুই।” বলেই নয়নের কোনায় ঝিলিক মেরে জিজ্ঞেস করে, “কি রে এইবারে ঠিক আছে? তোর মনের মতন হয়েছে তো?”

আদি হাঁ করে দাঁড়িয়ে মাকে দেখে। তুঁতে রঙের স্বছ পাতলা শাড়ির পরতে পরতে আগুন ঝিলিক খেলে বেড়াচ্ছে। ঋতুপর্ণার তীব্র মদমত্তা কামোন্মত্ত ভরা যৌবনের পসরা নিয়ে আদির সামনে দাঁড়িয়ে। আঁচল জুড়ে ছোট ছোট রুপোলী ফুলের কাজ। পটল চেরা ডাগর চোখের কোণে টানা কাজল রেখা, চোখ দুটো ভাসা ভাসা প্রচন্ড আবেগ মাখানো অথচ যেন কত কথা লুকিয়ে। শাড়ির রঙের সাথে মিলিয়ে কপালে নীল রঙের বড় টিপ আঁকা। চোখের পাতায় নীলচে রঙের আবরন, চোখের পাতা টানাটানা। ঘন কালো মেঘের মতন কেশরাশি ঘাড়ের কাছে একটা খোঁপা করে বাঁধা তাতে আবার একটা কাঠের ক্লিপ। নরম ঠোঁট জোড়া গাড় লাল রঙে রাঙ্গানো, দুটো পদ্ম কুঁড়ি মনে হয়। কানে মুক্তোর লম্বা দুল, মাথা নাড়ানোর সাথে সাথে দুই কানে মুক্তোর ঝিলিক, সেই সাথে লাল ঠোঁটের পেছন থেকে সারি সারি মুক্তোর ঝিলিক। ঋতুপর্ণার রূপে উন্মাদনার শেষ সীমান্তে পৌঁছে যায় আদির বুক। মনে হয় এখুনি জড়িয়ে ধরে চুম্বনে চুম্বনে লালচে গাল, নরম লাল ঠোঁট জোড়া কামড়ে নিংড়ে শেষ করে দেয়। গলায় মুক্তোর হার, একটা ছোট হার গলায় চেপে বসে আরেকটা লম্বা মুক্তোর হার স্তন ছাড়িয়ে স্তনের মাঝে দুলছে। আদির হাত নিশপিশ করে ওঠে, ওই মুক্তোর হারের জায়গায় নিজের হাত দুটো থাকলে কি হত। ছোট আঁটো ব্লাউজের সামনের দিকে বেশ গভীর কাট, স্তন বিভাজিকার অধিকাংশ উন্মুক্ত হয়ে উপচে বেরিয়ে পড়েছে। মনে হচ্ছে বুকের ওপরে দুটো বড় বড় গোল আকারের কিছু বসানো। ব্লাউজের হাতা দুটো জালের, সম্পূর্ণ রোমহীন বাহুমুল অনাবৃত হয়ে জালের হাতা থেকে ঠিকরে বেরিয়ে পড়েছে। বাহুমুলের কচি ভাঁজ দেখে আদির পুরুষাঙ্গ সটান দন্ডবত হয়ে কুর্নিশ জানিয়ে দিল। আঁচলের নিচের দিকে চোখের দৃষ্টি চলে গেল আদির। শাড়ির কুঁচি নিম্ন নাভির বেশ নিচে বাঁধা, সোনার কোমর বিছা দেখা যাচ্ছে না, হয়ত শাড়ির কুঁচির মধ্যে ঢুকে পড়ে গেছে। কিন্তু গভীর নিম্ন নাভির নিচে থলথলে পলি জমানো উপত্যকা স্বরূপ তলপেট দেখে আদির চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। মৃদু তালে চলনের ফলে নুপুরের নিক্কন ধ্বনি ওর কানে এসে পৌঁছায়। পায়ের দিকে তাকিয়ে বিশেষ কিছুই দেখতে পেল না আদি তবে দুই রাঙ্গা পায়ে তখন মেহেন্দির রঙ্গে মাখামাখি। দুই হাতে কবজি পর্যন্ত তখন মেহেন্দির রঙ আবছা হয়ে রয়েছে, মুছে যায়নি। ডান হাতের কব্জিতে মুক্তোর মোটা ব্রেসলেট, বাম হাতের কব্জিতে সোনার ঘড়ি। সাক্ষাৎ দেবী প্রতিমা, অসামান্য দ্যুতি ছড়িয়ে অসামান্য যৌন আবেদনে অঙ্গ ভিজিয়ে ওর সামনে দাঁড়িয়ে। রক্তের তীব্র আলোড়ন কোন রকমে সংযত রেখে মায়ের পা থেকে মাথা পর্যন্ত বারেবারে চোখ বুলিয়ে গিলে খেয়ে নেয়। আদির পায়ের মাঝের বৃহৎ যৌনাঙ্গ অশ্লীল ভাবে ফনা তুলে দাঁড়িয়ে পড়ে।

বার কতক ঢোঁক গিলে আদি ফ্যাস ফ্যাসে গলায় বলে, “কাউকে মারতে যাচ্ছ নাকি গো?”

আদির দিকে এক পা একপা করে এগিয়ে এসে মিহি আবেগ জড়ানো, হৃদয় কাঁপানো গলায় বলে, “না রে সোনা,...” বাকিটা আর মুখ থেকে বের হল না ঋতুপর্ণার, “নিজেই মরতে যাচ্ছি... মরেই গেছি তোর ভালোবাসার আগুনে...”

আদি মায়ের ভারি নিতম্বের দিকে একভাবে তাকিয়ে গজগামিনীর চলনে মুগ্ধ হয়ে বুক চাপড়ে বলে, “অন্যের কথা জানি না তবে আমি মরে যাবো তোমার এই রূপে।”

আদির কাছ থেকে সরে গিয়ে বাড়ির চাবি নিতে নিতে বলে, “মরতে ভয় পাস নাকি রে?”

আদি মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “মরতে সবাই ভয় পায়, মা।”

চাবির গোছা ক্লাচের মধ্যে ঢুকিয়ে ছেলের বুকের কাছে সরে এসে আবেগ জড়ানো মিহি গলায় বলে, “মরতে সকলকে একদিন হবেই আদি, তাই বলে আজকের বেঁচে থাকার রসদ থেকে নিজেকে কেন বঞ্চিত করা। মৃত্যু হচ্ছে ভালোবাসার আরেক নাম। মৃত্যু কখনো কালো নয়, মৃত্যু সুমধুর, মৃত্যু সব ছেড়ে সব ত্যাগ করে দেওয়ার অন্য নাম। ভালোবাসার জন্য যদি ত্যাগ না করতে পারিস তাহলে ভালোবাসা প্রকৃত ভালোবাসা নয়। অন্যের ভালোতে বাস করাকে বলে ভালোবাসা।”

আদি কিছু বুঝল কিছু বুঝল না ওর চোখে শুধু মাত্র ওর প্রেমিকা, ওর মা ঋতুপর্ণার ছবি। মায়ের মুখের দিকে ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে বলে, “কি বললে কিছুই বুঝলাম না তবে এইটুকু বুঝলাম যে আমি...” বেশি আর বলতে পারল না আদি... তোমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি।

ঋতুপর্ণার নরম কোমর দুই হাতের থাবার মধ্যে আঁকড়ে ধরে কাছে টেনে মুখের ওপরে মুখ নামিয়ে দিল আদি। তিরতির করে কেঁপে উঠল ঋতুপর্ণার সারা অঙ্গ, এক মৃদু কম্পন বয়ে গেল ওর সারা শরীর বয়ে। দুইজনে একাত্ম হয়ে হারিয়ে যেতে চাইল দুইজনের মাঝে। পরস্পরের চোখের তারা এক হয়ে গেল। ঋতুপর্ণার সারা বুক জুড়ে ভীষণ আবেগ দেখা দিল, চোখের পাতা ভারি হয়ে নেমে এলো। আদির মাথা ঝুঁকে গেল মায়ের চাঁদপানা মুখমণ্ডলের ওপরে। শ্বাসের ঘনত্ব বেড়ে উঠল দুইজনের, ঘন আবেগ মাখানো উষ্ণ শ্বাসে মা আর ছেলে নিজেদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল।

বুকের চিনচিন ভীষণ ভাবে বেড়ে উঠতেই ছেলের বুকের ওপরে ক্লাচ দিয়ে আলতো বাড়ি মেরে মিহি পরিহাস ছলে বলল, “কিরে এখন দেরি হচ্ছে না, তখন যে বড্ড তাড়া দিচ্ছিলিস।”

আদি ঋতুপর্ণার নাকের ডগার সাথে নাকের ডগা আলতো ঘষে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ঝরিয়ে বলল, “তোমাকে দেখার দেরি হচ্ছিল এখন তুমি আমার সামনে দেরি আর নেই।”

ঋতুপর্ণার পায়ের পাতা টানটান হয়ে গেল, পায়ের বুড়ো আঙ্গুল শক্ত হয়ে উঠল ছেলের এই প্রেম জড়ানো ভীষণ ভাষাতে। সারা শরীর কিলবিল করে উত্তেজিত হয়ে উঠল, ইচ্ছে করে একটু বুড়ো আঙ্গুলে ভর দিয়ে ছেলের গলা দুই পেলব বাহু দিয়ে জড়িয়ে নিজেকে হারিয়ে দিতে। দাঁতে দাঁত পিষে সাপের মতন হিস হিস করে বলল, “ঠাকুর দেখতে যাবি না সোনা।” শেষের দিকে ওর গলা খাদে নেমে গেল, একদম আর ইচ্ছে নেই এই বাহু বেষ্টনী থেকে নিজেকে মুক্ত করে বাইরে যেতে। কত ভালো হত যদি আদি ওকে এইভাবে সারা জীবন জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকত।

আদির চোখের পাতা অবশ হয়ে আসে মায়ের শ্বাসের উষ্ণ তাপে, “বাইরের প্রতিমা দেখে কি হবে। আমার মা আমার দেবী আমার প্রতিমা তাকেই পুজো করতে চাই তাকে নিয়েই থাকতে চাই।”

ছেলের এই ভীষণ প্রনয় প্লাবিত বাক্যে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারল না ঋতুপর্ণা। প্রেমের আবেগে ওর চোখের কোনায় জলের রেখা দেখা দিল। ফ্যাস ফ্যাসে গলায় ছেলেকে মৃদু কণ্ঠে বলে, “সোনা রে...” আর বলতে পারল না ঋতুপর্ণা। ছেলের বুকের ওপরে মাথা গুঁজে ফুঁপিয়ে উঠল।

মায়ের মৃদু কান্না দেখে আদি চেপে ধরে ঋতুপর্ণাকে বুকের সাথে মিলিয়ে নিয়ে মাথায় ঠোঁট চেপে ধরে বলে, “প্লিস মা কেঁদো না, তোমার চোখে জল একদম সহ্য করতে পারি না।”

চোখের কোনা মুছে মিষ্টি হেসে আদির দিকে তাকিয়ে উত্তর দিল ঋতুপর্ণা, “এই জল দুঃখের নয় রে সোনা।” চোখের কোনা থেকে এক চিলতে জল আঙ্গুলের ডগায় নিয়ে ওর দিকে তুলে ধরে বলে, “মাঝে মাঝে মনে হয়...” তিরতির করে কম্পমান ঠোঁট জোড়া আর কিছু বলতে পারল না, কিন্তু ওর বুকের পাঁজর ওর লুকিয়ে থাকা ভালোবাসা চেঁচিয়ে উঠল। “তোর সাথে হারিয়ে যাই, অন্য কোথাও চলে যাই যেখানে কেউ আমাদের চিনবে না, শুধু আমি আর তুই আর আমাদের এই ভালোবাসা কেউ বুঝবে না রে সোনা। অবৈধ না পাপ না বিষাক্ত জানি না কিন্তু তুই আমাকে ভরিয়ে দিয়েছিস, আমাকে হারিয়ে দিয়েছিস। অজানা দ্বীপে নিয়ে আমাকে পাগল করে দিয়েছিস।” কিছুক্ষণ আদির ভাসা ভাসা চোখের দিকে ঝাপসা চোখে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, “চল সোনা এইবারে চল।”

আদি হারিয়ে গিয়েছিল মায়ের কাজল টানা শিক্ত চোখের মাঝে। ওর চোখের কোনা একটু টানটান করে উঠেছিল মায়ের গলা শুনে। নিজেকে প্রোবোধ দিয়ে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে মাকে বলল, “চল মা, বাইরে যাই, বাড়িটা বড্ড গুমোট হয়ে উঠছে, একটু শান্ত বাতাসে শ্বাস নিতে ইচ্ছে করছে।”

ঋতুপর্ণা মিষ্টি হেসে বলল, “চল এইবারে বেরিয়ে না পড়লে কোন ঠাকুর দেখতে পাব না সব জায়গায় প্রচন্ড ভিড় হয়ে যাবে।”
 
পর্ব বারো (#7)

বিল্ডিং থেকে নিচে নেমেই সামনের মাঠের পুজোর মন্ডপে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক লোকের চোখ চলে গেল ঋতুপর্ণার দিকে। পাশে আদি নেই, গাড়ি আনতে বেসমেন্টে গেছে। কয়েক জন চেনা পরিচিত মহিলাদের সাথে দেখা হয়ে গেল ঋতুপর্ণার। ওর সাজের আগুনে অনেকের চোখ ঝলসে গেল। পরিচিতদের মধ্যে কাকলি কাছে এগিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে, “বের হচ্ছ নাকি?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “হ্যাঁ”। অন্য একজন মহিলা পাশ থেকে বলল, “এই কারো সাথে যাচ্ছো?” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে ওদের সকলের কৌতূহলে জল ঢেলে উত্তর দিল, “ছেলের সাথে বের হচ্ছি।” আসল খবর কে আর জানে, ঋতুপর্ণা যে আদির প্রেমে দেহ বল্লরী শিক্ত করে প্রেম সাগরে নিমজ্জিত। অন্য একজনে অবিশ্বাসের গলায় জিজ্ঞেস করল, “ছেলের সাথে? ধুত।” কানের কাছে ফিসফিস করে বলল, “সুপর্ণার কাছে শুনলাম যে তুমি নাকি...” সুপর্ণার তাহলে সারা পাড়া গল্প করে বেড়িয়েছে। কথাটা জানতে পেরেই ঋতুপর্ণা একটু রেগে গেল, কিন্তু সেই রাগ কপট হাসির পেছনে লুকিয়ে বলল, “না না, ছেলে বড় হয়েছে, এই বয়সে কি আর সেই সব করা যায় নাকি।” কেউ একজন উত্তর দিল, “তোমার আর বয়স। তোমাকে না বড্ড হিংসে হয়। এই পোড়া রূপ থাকলে আমি সারা কোলকাতা চরিয়ে খেতাম।” ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে বারেবারে গাড়ি বের হওয়ার জায়গার দিকে তাকায়। কখন আদি গাড়ি নিয়ে বের হবে আর এদের হাত থেকে নিস্তার পাবে। ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে উত্তর দিল, “তোমরা কোলকাতা চষে বেড়াও, আমি আমার ছেলে নিয়েই থাকি।”

আদি গাড়ি বের করে মাকে ডাক দিল। আদির গলা পেয়ে ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গাড়ির দরজা খুলে মৃদু ধমক দিল ছেলেকে, “গাড়ি বের করতে এত সময় লাগে নাকি? আমি...” মিনিট পাঁচেকের বিরহে কাতর হয়ে উঠেছিল ঋতুপর্ণার প্রান, হাঁপিয়ে উঠেছিল ছেলেকে না দেখতে পেয়ে। গাড়িতে উঠেই ক্লাচ দিয়ে ছেলেকে পেটাতে শুরু করে দিল, “আমি নিচে গেলে কি ক্ষতি হত?”

মায়ের হাতের মিষ্টি মধুর মার খেয়ে আদি আর হাসি থামাতে না পেরে বলল, “ইসস তুমি না। চল চল আর পেটালে কিন্তু আমিও...” বলেই ঋতুপর্ণার কবজি মুচড়ে ধরে বুকের ওপরে চেপে মায়ের কোমল পীনোন্নত স্তনের গভীর বক্ষ বিভাজিকার ওপরে নিবদ্ধ করে নিচু গলায় বলল, “মুচড়ে দেব...” ছেলের আগুনে চাহনি ওর ঊরু জোড়ায় আগুন ধরিয়ে দিল, কি মুচড়ে দেবে। স্তনের বোঁটা নুড়ি পাথরের মতন কঠিন হয়ে গেল। আদি চোয়াল চেপে মায়ের মুখের দিকে এগিয়ে বলল, “হাত।”

ঋতুপর্ণার গলা বয়ে হিসসস করে উঠল এক অজানা শব্দ। হাত মুচড়ে আদির হাত থেকে ছাড়িয়ে ওর বুকে পিঠে এলো পাথাড়ি ছোট ছোট চড় মেরে বলে, “ধ্যাত শয়তান গাড়ি চালা।”

আদিও গাড়ি চালাতে শুরু করে দিল। ছোট মারুতি গাড়ি, কেবিন ছোট হওয়ার ফলে ওদের মাঝের ব্যাবধান অনেক কম। গাড়ির কাঁচ উঠানো তাই আদির সারা শরীর ভরে ভর করে এলো মায়ের মিষ্টি উষ্ণতা। চলন্ত গাড়ির দুলুনির মাঝে মাঝেই ঋতুপর্ণার ভারি কোমল স্তন জোড়া দুলে দুলে ওঠে। ছেলের বহমান শ্বাস আর উশখুসানি ভীষণ ভাবে উপভোগ করে ঋতুপর্ণা। মাঝে মাঝে নিচের ঠোঁট দাঁতের মাঝে নিয়ে দুষ্টু মিষ্টি হাসি দিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখের মণি এক করে নেয়। চোখের উষ্ণ ভাষা, তুই না বড্ড শয়তান। ওই ভাবে কেন দেখছিস রে আমার দিকে? বুঝতে পারিস না ওই চোখের আগুনে পুড়ে মরে যাচ্ছি।

ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে এক নামকরা পুজো প্যান্ডালের সামনে এসে দাঁড়াল আদি। মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কি নামবে এইখানে?”

ঋতুপর্ণা একবার ভিড় ভর্তি প্যান্ডেলের দিকে তাকিয়ে দেখে মুচকি হেসে উত্তর দিল, “ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছি নামবো না কেন? কিন্তু গাড়ি কোথায় রাখবি?”

আদি মাথা চুলকে এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখে, কোথাও তিল ধারনের জায়গা নেই। এদিকে সন্ধ্যে সাতটা বাজে, এই সময়ে গাড়ি রাখা আর ঠাকুর দেখা দুটোই দুঃসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু মাতৃ আদেশ, ঠাকুর দেখাতেই হবে না হলে প্রানের প্রিয়তমা হয়ত মুখ ব্যাজার করে সারা রাস্তা ওর মুন্ডপাত করবে।

আদি ভেবে চিন্তে উত্তর দেয়, “আচ্ছা তুমি নেমে লাইনে দাঁড়াও আমি দেখি কোথাও একটা গাড়ি পার্ক করে আসছি।”

ছেলেকে ছেড়ে দেবে, বড্ড ব্যাথা পেল ঋতুপর্ণা। ব্যাথিত কণ্ঠে আদিকে বলল, “তুই গাড়ি পার্ক কর ততক্ষন আমি গাড়িতে বসেই থাকি, তারপরে না হয় একসাথেই লাইনে দাঁড়াবো।”

মায়ের ব্যাথিত নয়ন দেখে আদির ভীষণ হাসি পেয়ে যায়। নরম গাল টিপে মাকে আদর করে বলে, “আচ্ছা চলো দেখা যাক কোথায় একটু পারকিংয়ের জায়গা পাওয়া যায়।”

গাড়ি চালিয়ে এদিকে ওদিকে পারকিংয়ের জায়গা খোঁজে, শেষ পর্যন্ত একটা অন্ধকার গলির মধ্যে গাড়ি ঢুকিয়ে দিল আদি। ঋতুপর্ণা হাঁ হাঁ করে উঠল, এখান থেকে গাড়ি কি করে বার করবে। আদি মাকে আস্বস্ত করে বলে, ব্যাক করে ঠিক ভাবে গাড়ি বের করে নেবে। গাড়ি পার্ক করে মা আর ছেলে বেরিয়ে এলো। গলির মুখে বেশ কয়েকটা ছেলের জটলা। সেই দেখে আদির বিশেষ সুবিধের মনে হল না। আর তার ওপরে ঋতুপর্ণা যে ধরনের লাস্যময়ী ঢঙ্গের শাড়ি পরেছে তাতে যেকোন পুরুষের চিত্ত বিচলিত হতে বাধ্য। আদি গাড়ি লক করে মায়ের পাশে দাঁড়াতেই, ঋতুপর্ণা প্রানপন শক্তি দিয়ে আদির বাজু আঁকড়ে ধরে ওই ছেলে গুলোর দিকে ইশারা করে দেখাল। আদি মাথা দুলিয়ে আস্বস্ত করে মাকে, কিছু হবে না, আমি আছি। ছেলের পিঠের পেছনে এক প্রকার লুকিয়ে চুপচাপ হাঁটতে শুরু করে দিল ঋতুপর্ণা। ছেলে আছে সুতরাং ভয় কিসের, কিন্তু জটলা সংখ্যায় বেশি আর গলিটাও বেশ অন্ধকার। আদি মাকে আগলে নিয়ে কোন রকমে ওই বকাটে ছেলেদের পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে এলো। কয়েক পা চলার পরে ওদের কানে সিসের আওয়াজ আর বেশ কিছু ইতর মন্তব্য ভেসে এলো। আদি মায়ের কাঁধ শক্ত করে ধরে নিজের বুকের কাছে আড়াল করে পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখল ওই ছেলে গুলোর দিকে। সুটের হাতা গুটিয়ে কঠিন, হাত মুঠো করে হাতের পেশি ফুলিয়ে দিল। ওর রক্ত চক্ষু দেখে বেশ কয়েকজনের আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেল।

ছেলের হাত শক্ত করে চেপে ধরে আদিকে শান্ত করে বলল ঋতুপর্ণা, “ছেড়ে দে, ওদের নিয়ে মাথা গরম করিস না। চল ঠাকুর দেখে আসি।”

মায়ের পিঠের শেষ প্রান্তে হাত রেখে নিজের দেহের কাছে ঘন করে জড়িয়ে ধরে হাঁটতে হাঁটতে বলল, “যত্ত সব উটকো পাব্লিক, শালা এদের জ্বালায় ঠাকুর দেখতে যাওয়া যায় না।”

ভীষণ ভিড় ঠেলে মন্ডপে ঠাকুর দেখতে দেখতে প্রায় এক ঘন্টা লেগে গেল ওদের। পুজোর প্যান্ডেলে অহেতুক কোন অঘটন ঘটল না। ভিড় ঠেলে বেরিয়ে এসে ঋতুপর্ণা সত্যি ঘামিয়ে যায়। ভেতরে লোকজনের এত ভিড় আর এত গরম যে ওর ঘাম দিয়ে দিল। বাহুমুল ভিজে ব্লাউজের সাথে চেপটে গেল আঠার প্রলেপের মতন। ঠেলাঠেলিতে বহুবার আদির পিঠের সাথে, বাজুর সাথে ওর স্তন, ওর সারা অঙ্গ পিষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেদিকে অবশ্য কারুর খেয়াল ছিল না, তখন শুধু মাত্র আদিকে সম্বল করে কোনরকমে ঠাকুর দেখে বেরিয়ে আসতে পারলে বাঁচে।

বেরিয়ে এসেই ঋতুপর্ণা আদির ওপরে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “এত ভিড়ে নামতেই হতো? কোন ফাঁকা প্যান্ডালে ঠাকুর দেখলে হতো না।”

মায়ের বকুনি খেয়ে আদি থমকে যায় উলটে মাকে ধমকে বলে, “ঠাকুর দেখতে যাওয়ার বায়না কে করেছিল? আমি না তুমি?” গাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে ছোট ছেলের মতন মায়ের কাছে আবদার করে, “মা আইস্ক্রিম খাবো। প্লিস।”

ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে সাবধান করে বলে, “ঠাণ্ডা লেগে যাবে বাবা।”

আদি বাচ্চা ছেলের মতন পা দাপিয়ে আবদার করা থামায় না, “না মা আইস্ক্রিম খাবো।”

কচি ছেলের মতন বায়না করতে দেখে বড্ড হাসি পেল ঋতুপর্ণার, ইসস এই একটু আগেই কি ভাবে ওর দিকে জুলুজুলু দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল আর এখন দেখ, মনে হল যেন ক্লাস সিক্সে পাঠরতা এক বাচ্চা ছেলে। মিষ্টি হেসে আদিকে বলল, “যা দুটো আইস্ক্রিম নিয়ে আয়, আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।”
 
সামনেই একটা আইস্ক্রিমের ঠেলা দাঁড়িয়ে ছিল, আদি দৌড় দিল সেদিকে। পেছনে সেই ছেলেদের জটলা তখন পর্যন্ত ওইখানে বসে, সেদিকে খেয়াল করতে পারেনি ঋতুপর্ণা। আদি আইস্ক্রিম কিনে একটা মাকে ধরিয়ে দিল। চকোলেট কোন খেতে ঋতুপর্ণার খুব পছন্দ তাই আদি চকোলেট কোন কিনে এনেছে মায়ের জন্য। আইস্ক্রিম টপের ওপরে গোলাপি জিব দিয়ে চাটতে চাটতে এপাশে ওপাশে চেয়ে দেখে। মা আর ছেলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাতে হাত জড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছে।

আশেপাশের কিছু লোকজনের চাহনি ওদের দিকে নিবদ্ধ, বিশেষ করে ঋতুপর্ণার অসামান্য রূপ যেন সবাই গিলে খাচ্ছে। ওর বুকের খাঁজের বেশির ভাগ ছোট আঁটো ব্লাউজ ঠেলে বেরিয়ে এসেছে, সকলের চোখ ওই অনাবৃত বক্ষ বিদলনে নিবদ্ধ হয়ে যায়। কারুর চোখের ইতর দৃষ্টি ঋতুপর্ণার নিম্ন নাভী আর থলথলে তলপেটের ওপরে চরে বেড়ায়। আদির কানে আশপাশের নিচু গলার কয়েকটা ইতর মন্তব্য ভেসে আসে, “উফফ কি মাল মাইরি।” “সত্যি ছেলেটা ভাগ্য করে মাগি তুলেছে। ইসস মাই নয়তো যেন ডাব ঝুলছে।” “এই জম্পেশ মাল তৈরি করা মনে হয় ভগবান ছেড়ে দিয়েছে। কি ফিগার মাইরি, মাথা ঘুরে যায়।” “যা বলেছিস মাইরি, শাড়ি নয়তো যেন জরি দিয়ে জড়ানো, একদম কাতিল লাগছে।” “বলেছিস মাইরি, এইরকম কাউকে পেলে সত্যি প্রতিমা করে ঘরে সাজিয়ে রাখতাম।” “ধুস বোকাচোদা ঘরে সাজিয়ে রেখে কি হবে, ভোগের মাল মাইরি। উফফফ কি কাতলা মাছের পেট রে...”

কথা গুলো দুইজনেরই কানে পৌঁছায়। আদির কান গরম হয়ে যায়, লজ্জায় ঘৃণায় ঋতুপর্ণার চোখ জোড়া জ্বালা জ্বালা করে ওঠে, আদির বুকের কাছে সেঁধিয়ে আহত কণ্ঠে বলে, “আর ভালো লাগছে না রে চল বাড়ি ফিরে যাই।”

আদি চোয়াল শক্ত করে পেছনের দিকে দেখে মাকে বলল, “তুমি গাড়িতে গিয়ে বস আমি ওদের দেখে আসছি।”

“না” মুখ চাপা দিয়ে আঁতকে উঠল ঋতুপর্ণা, “ওদের সাথে মারামারি করতে যাসনে। যদি তোর কিছু হয়ে যায়...” বলেই কেঁদে ফেলল।

মায়ের চোখে জল দেখে ভীষণ রেগে গেল আদি। চোয়াল চেপে মায়ের কাঁধে হাত দিয়ে বলল, “এই তোমার জন্যেই ওরা আস্কারা পেয়ে যায়। রাস্তার কুকুরের দিকে একবার যদি ঘুরে দাঁড়ানো যায় তাহলে কুকুর গুলো ঘেউ ঘেউ করা বন্ধ করে দেয়।”

আদি হাত ধরে টেনে ঋতুপর্ণা মিনতি করে, “ঘেও কুকুর কামড়াতে পারে আদি, আমার একটাই মানিক রে। তোর কিছু হলে কি করব আমি। ওদের সাথে লাগতে হবে না চল চলে যাই আর ভালো লাগছে না।”

আদি দাঁত কিড়মিড় করে দুই পা ওই ছেলে গুলোর দিকে এগিয়ে যেতেই ওরা জটলা ভেঙে দাঁড়িয়ে পড়ে। পাশ দিয়ে তখন একটা পুলিসের ভ্যান যাচ্ছিল, তার সাইরেন শুনে ছেলেগুলো আস্তে আস্তে সেখান থেকে সরে দাঁড়ায়। আদিও ঋতুপর্ণাকে আগলে গলির মধ্যে ঢুকে গাড়ি বের করে নিয়ে আসে। ঋতুপর্ণা চুপ, আদিও চুপ। ভিড় ভর্তি রাস্তা দিয়ে কিছুক্ষণ এলোমেলো চালাল গাড়ি, কোন নির্দিষ্ট গন্তব্য জানা নেই।

মায়ের থমথমে চেহারা আদির বুকে বড় বেজে ওঠে। মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে ইয়ার্কি মেরে বলে, “আচ্ছা বলো না ওই মেয়েগুলো তোমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে কি বলছিল?”

অনেকক্ষণ পরে ছেলের গলা শুনে স্বস্তির শ্বাস নেয় ঋতুপর্ণা। লাল ঠোঁটের ডগায় হাসি ফুটিয়ে বাঁকা চোখে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, “মেয়েলী কথাবার্তা তোকে কেন জানাতে যাবো রে?”

হাসি মুখ দেখে আদি সব রাগ ভুলে যায়, “আচ্ছা বলো কোথায় যাবে।”

ঋতুপর্ণা সামনের দিকে তাকিয়ে, কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাসা ভাসা চোখে নিচু অস্ফুট কণ্ঠে বলে, “হারিয়ে যেতে চাই।”

গাড়ির আওয়াজে আদি ঠিক ভাবে মায়ের কথা শুনতে পেল না তাই আবার জিজ্ঞেস করে, “কোথায় যাবে বল? বাড়ি ফিরতে চাও না অন্য কোথাও যেতে চাও।”

বাড়ি ফিরতে একদম ইচ্ছে করছিল না ঋতুপর্ণার। অনেকদিন পরে এইভাবে পরিপূর্ণ রূপে, তনু মন প্রান ঢেলে নিজের কাঙ্খিত পুরুষের জন্য ঢেলে সাজিয়ে কেউ কি আর বাড়িতে ফিরতে চায়। এইভাবে দুইজনে একা একা গাড়ির নিভৃত অন্তরালে, মনে হচ্ছে প্রেমিকের সাথে অভিসারে বেরিয়েছে তীব্র সুন্দরী স্বর্গের অপ্সরা। নিষিদ্ধ প্রনয়ে জড়ানো হৃদয়ের ধমনীর মধ্যে ফুটন্ত রক্ত উথাল পাথাল হয়ে ইতস্তত বিচরন করছে।

আঁচল বুকের কাছ চেপে উত্তাল তরঙ্গায়িত স্তন জোড়া ঢেকে আদিকে বলে, “চল না একটা লং ড্রাইভে” বাকিটা ঠোঁটে এসে গলায় বসে গেল ঋতুপর্ণার... “শুধু আমি আর তুই। কি রে সোনা আমাকে নিয়ে যাবি যেখানে আমাদের কেউই চিনবে না। এই রাতের আঁধার আমাদের নিজের কালো চাদরে লুকিয়ে ফেলবে...”

আদি মায়ের মুক ভাষা অন্ধকার গাড়ির মধ্যে ঠিক বুঝতে পারল না, জিজ্ঞেস করল, “কোথায় যেতে চাও।”

ধ্যাত ছেলেটা কি কিছুই বোঝে না নাকি? মৃদু ধমক দিয়ে উঠল ঋতুপর্ণা, “জাহান্নামে নিয়ে যা।”

আদি মুচকি হেসে মায়ের এই অভিমান ভরা লাল গালের লালিমা বড় উপভোগ করছিল। মাঝে মাঝে মায়ের দিকে তাকিয়ে মায়ের ভাসা ভাসা চোখের চাহনি দেখে হারিয়ে যাচ্ছিল। আদি মুচকি হেসে বলে, “এত সাধ করে প্রানের বান্ধবীকে নিয়ে বের হলাম আর সে কিনা বলে জাহান্নুমে যাবে।”

ঋতুপর্ণা আদির কাছে সরে কাঁধ ঘেঁষে বসে কানেকানে ফিসফিস করে বলল, “কোন গ্রামে যাই চল। সেখানের পুজো বেশ পবিত্র, লোকজনের ভিড় নেই।”

ঋতুপর্ণা ওর কাঁধ ছুঁয়ে পাশে বসতেই আদির বাজু ওর মায়ের স্তন বিভাজিকার মাঝে চেপে গেল। নরম তুলতুলে পীনোন্নত উত্তপ্ত স্তন জোড়া মাখনের মতন গলে গেল আদির বাজুর ওপরে। আদির ঊরু জোড়া কেঁপে উঠল মায়ের উষ্ণ ত্বকের পরশে। কানের কাছে মায়ের চুলের দোলা নাকের মধ্যে ভেসে এলো মায়ের গায়ের মিষ্টি মাতাল করা গন্ধ। মন্ডপে ঠাকুর দেখে ঋতুপর্ণা ঘামিয়ে গিয়েছিল, দেহের থেকে সেই ঘাম আর সেন্টের মাতাল করা গন্ধে আদি বুকের রক্ত উন্মত্ত হাতির মতন এলোপাথাড়ি ছুটে বেড়াতে লাগলো।

আদি কাঁপা গলায়, চিত্তের চাঞ্চল্য লুকিয়ে উত্তর দিল, “আচ্ছা তাই চলো।”

আদির কথা শুনে ঋতুপর্ণার বুক নেচে উঠল। বড্ড গান গাইতে ইচ্ছে করে ঋতুপর্ণার, “কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে, মেলে দিলাম গানের সুরে এই ডানা মনে মনে।” উৎফুল্ল চিত্তে ছোট খুকির মতন চেঁচিয়ে উঠল, “উম্মম আমার সোনা ছেলে” বলেই আদির চুল আঁকড়ে গালে একটা ভিজে চুমু খেয়ে দিল।

ভিজে ঠোঁটের পরশে ধিকিধিকি করে জ্বলতে থাকা আগুন দাউদাউ করে উঠল আদির বুকে, ছোট একটা উফফ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “রাতে খাবে কোথায়?”

ঋতুপর্ণা তখন খুশিতে পাগল প্রায়, অনাবিল হাসির ছটা ছড়িয়ে উত্তর দিল, “যেখানে তুই খাওয়াবি।”

মায়ের উচ্ছ্বাস দেখে আদির মন প্রান গলে গেল, সত্যি নারীর এক অঙ্গে কত রূপ আর পাশে বসে এই রমণীর কথা আলাদা, কখনো স্নেহময়ী মাতৃময়ী রূপে অবতারন করে, কখনো কঠোর দেবী দুর্গা আবার কখনো প্রণয়িনী উর্বশী। আদি স্মিত হেসে জানিয়ে দিল, “রাস্তায় কোন রেস্টুরেন্ট পেলে খাবার প্যাক করে নেব।”

ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল, “আচ্ছা এখন চল।”
 
পর্ব বারো (#8)

আদি কথা না বাড়িয়ে এক্সেলেটারে পা চেপে দিল। গাড়ি হুহু করে হাওয়া কেটে শহর ছাড়িয়ে হাইওয়ে ধরে অনির্দিষ্টের পানে ধেয়ে চলল। ঘন কালো আঁধার কেটে ঝড়ের গতিতে গাড়ি ধেয়ে চলে সেই সাথে ঋতুপর্ণা আর আদির বুকের অসীম চাহিদা বেড়ে চলে। এই আঁধার রাত যেন শেষ না হয়। আদির ঊরু জোড়া টানটান হয়ে যায়, পায়ের মাঝের পুরুষাঙ্গ অনেক আগেই ফনা তুলে ভীষণ ভাবে ফুঁসছে, জাঙ্গিয়া প্যান্ট ফাটিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে। পাশে বসা সুন্দরীর ক্রোড়ে হারিয়ে যেতে বড্ড ইচ্ছে করছে। মা গো তোমার ছেলে একবারের জন্য তোমার কোলে ফিরতে চায়। ওর নাকে ভেসে আসে মায়ের গায়ের তীব্র মাদকতাময় ঘ্রান। রক্তের উথাল পাথাল তরঙ্গে নিজেকে আর শান্ত করতে পারে না আদির দেহ। সামনে একটা ছোট বসতির দেখা পেতেই ঋতুপর্ণা আদিকে গ্রামের মধ্যে গাড়ি নিয়ে যেতে অনুরোধ করে। মায়ের কথা ফেলতে পারে না আদি, বড় রাস্তা ছাড়িয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁচা রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়ল।

রাত তখন দশটা বাজে, গ্রামের পুজো মন্ডপে তখন লোকজনের ভিড়। ওদের গাড়ি থেকে নামতে দেখে অনেকের চোখ ওদের দিকে চলে যায়। নাম না জানা এক গ্রামের মধ্যে শহর থেকে কেউ পুজো দেখতে আসবে সেটা হয়ত গ্রামের লোকজন ভাবতে পারেনি। নবমীর ঠাণ্ডা রাত্রে আদির হাত ধরে ঋতুপর্ণা গাড়ি থেকে বেরিয়ে মন্ডপে ঢুকে পড়ে। আশে পাশের কিছু বাচ্চা ছেলে মেয়েদের চোখে অপরিসীম জিজ্ঞাস্য। ঋতুপর্ণা একটা বাচ্চাকে কাছে ডেকে জিজ্ঞেস গ্রামের নাম জিজ্ঞেস করাতে লজ্জা পেয়ে সেই বাচ্চাটা পালিয়ে যায়। ওদের দেখে আদি আর ঋতুপর্ণা দুইজনেই হেসে ফেলে।

গ্রামের ছোট প্যান্ডালের মূর্তি, একচালা ঢাকের সাজে শোলা দিয়ে সজ্জিত মহামায়া দেবী দুর্গার মূর্তি। অনেকক্ষণ ধরে ঋতুপর্ণা সেই দেবী দুর্গার মূর্তির মুখ মন্ডলের দিকে তাকিয়ে রইল। চোখের কোল ধিরে ধিরে ঝাপসা হয়ে উঠল। পাশে দাঁড়িয়ে ছেলেটার দিকে তাকাতে দ্বিধাবোধ করে। ও কে? আদির মাতৃময়ী স্নেহভরা জননী না এই সুঠাম পুরুষের নিশা যামিনীর সঙ্গিনী অপরূপা প্রণয়িনী। উত্তর জানা নেই ঋতুপর্ণার। দেবী প্রতিমার সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না ঋতুপর্ণা, বুক ছাপিয়ে নিষিদ্ধ প্রেমের বিষাক্ত দংশন ওকে ছিঁড়ে ফেলে।

আদি চুপচাপ মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে। এই নারী ওকে জন্ম দেয়নি, আসল জননী যে ওকে জন্ম দিয়েছিল সে জন্ম দিয়েই ওকে ছেড়ে চলে গেছে। এই অকাঠ সত্য ওর মা জানে না। ওর পাশে দাঁড়িয়ে স্নেহভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে যে রমণী সে ওর মা, বুকের দুধ খাইয়ে, নিজের আঁচলের তলায় সর্বদা ওর রক্ষণাবেক্ষণ করে গেছে সারা জীবন ধরে। এই নারী নিজের আগে ওর কথা চিন্তা করেছে। এমনকি হস্পিটালের বেডে শুয়ে চোখ খুলেই ওর নাম ধরেই চেঁচিয়ে উঠেছিল। যদি এই নারী কোনোদিন জানতে পারে যে আদি ওর ছেলে নয় তাহলে কি মায়ের বুক ভরা ভালোবাসা হারিয়ে যাবে। তাই বলে সেই মাকে নিজের প্রণয়িনীর মতন সাজিয়ে, নিজের প্রেমিকার মতন করে ক্রোড়ে নিয়ে ভালোবাসার রঙে রঞ্জিত করে তুলবে।

ধিরে ধিরে দেবী প্রতিমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে আদিকে নিচু গলায় ঋতুপর্ণা বলে, “চল এইবারে বাড়ি ফিরি। অনেক রাত হল।” ছেলের কথা ভাবতে ভাবতে আর নিজেদের এই নিষিদ্ধ প্রেমঘন সম্পর্কের কথা ভাবতে ভাবতে বুকের রক্ত বিষিয়ে উঠল। থমথমে মুখ করে আদির দিকে না তাকিয়ে গাড়ির দিকে পা বাড়িয়ে দিল।

আদি মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল এইবারে বাড়ির দিকে যাত্রা করা উচিত। কথা না বাড়িয়ে দুইজনে গাড়িতে উঠে গেল। আদিও ঘড়ি দেখল, রাত এগারোটা বাজে। মায়ের হটাত করে থমথমে চেহারা দেখে আদি কি বলবে কিছুই ভেবে পেল না। একটু আগেই কত হাসি খুশি ছিল, কত গল্প করতে করতে ওর হাত জড়িয়ে, নাক মুখ বেঁকিয়ে সারা রাস্তা এলো। হটাত করে এই প্রতিমা দেখে এমন কি হয়ে গেল যে মা কথা বলতে ভুলে গেল। আদি মাথা নিচু করে ড্রাইভারের সিটে বসে পড়ে। রাস্তা ঠিকঠাক থাকলে বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে আরো আড়াই ঘন্টা লেগে যাবে।

অন্যমনস্ক হয়ে গাড়ি চালাতে চালাতে গ্রাম থেকে বেরিয়ে অন্ধকার রাস্তা ধরে কিছুদুর এগিয়ে গেল। বেশ কিছুদুর এগিয়ে যাওয়ার পরে আদি বুঝতে পারল যে রাস্তা ধরে ওরা গ্রামে ঢুকেছে এই রাস্তা সেই রাস্তা নয়। এর মাঝে কত ছোট ছোট রাস্তা কত বাঁক পেরিয়ে এসেছে সঠিক জানা নেই। দুইপাশে ধুধু করছে খেত, তার মাঝে কাঁচা গ্রামের রাস্তা। রাস্তা এক নদীর তিরে এসে শেষ হয়ে গেছে। সামনে বয়ে চলেছে গঙ্গা নদী।

আদি গাড়ি দাঁড় করিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখল। ঋতুপর্ণা জানালায় হাত রেখে তার ওপরে মাথা রেখে অনেক আগেই চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ক্লান্তিটা শরীরের নয়, ক্লেদটা মনের গহীন কোনায় উপচে উঠে এসেছিল।

অন্ধকারে গাড়ি দাঁড় করাতেই ঋতুপর্ণার ঘুম ভেঙে গেল। আদির দিকে ঘুম জড়ানো চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কিরে হাইওয়ে এসে গেছি নাকি?”

আদি মুখ ব্যাজার করে উত্তর দিল, “না মা রাস্তা গুলিয়ে ফেলেছি।”

হটাত এক দমকা ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঋতুপর্ণার দেহ কেঁপে উঠল। মাকে ঠাণ্ডায় কাঁপতে দেখে আদি নিজের ব্লেজার খুলে মায়ের দেহে জড়িয়ে দিল। বাইশ বছরে সেই প্রথম বার ছেলের হাতের ছোঁয়ায় বিষাক্ত দংশনের ছোবল অনুভব করল ঋতুপর্ণা। আদির ব্লেজার গায়ে যেন কাঁটার পরিধানের মতন লাগলো ঋতুপর্ণার। তাও সেই অনুভুতি লুকিয়ে চোখ কচলে ম্লান হাসি দিয়ে আদিকে বলল, “আর কি হবে, গাড়ি ব্যাক কর। গ্রামে ফিরে কাউকে জিজ্ঞেস করে নেব।”

আদি ঘড়ি দেখল, এগারোটা প্রায় বাজে। আঁকা বাঁকা পথে গাড়ি পেছনে কোনোমতে ঘুরিয়ে আবার গ্রামের দিকে যাত্রা শুরু করে দিল। কিছু দুর যাওয়ার পরে পথ হারিয়ে মায়ের দিকে অসহায় অবস্থায় তাকিয়ে বলল, “মা মনে পড়ছে না কোন বাঁকে টার্ন নিয়েছিলাম।”

বুকের ধুকপুকানি বেড়ে উঠল ঋতুপর্ণার, শেষ পর্যন্ত এই নিরালা নির্জনে রাত কাটাতে হবে নাকি? কোথায় আছে কিছুই জানা নেই। ম্লান হেসে আদির মাথার চুলে বিলি কেটে বলল, “পথ কেউই হারায় না রে পাগল। হয়ত এটাই আমাদের কপালে লেখা ছিল।”

ওর মা ঠিক কি কথা বলতে চাইছে ঠিক বোধগম্য হল না আদির। ঋতুপর্ণা ভালো ভাবেই জানে এর অর্থ কি। হয়ত এই পথ হারিয়েই এক নতুন পথের সন্ধান খুঁজে পাবে। হয়ত এটাই ওদের অদৃষ্টে লেখা, হয়ত এই নিরালা নির্জনে অন্ধকার রাতের আকাশের জ্বলন্ত তারা ওদের এই নিষিদ্ধ সম্পর্কের সাথী হবে। ম্লান হেসে ছলছল নিস্পলক চোখে ছেলের দিকে একভাবে তাকিয়ে রইল ঋতুপর্ণা। আদি মায়ের চোখের কোলের অশ্রুকণার ঝিলিক দেখে ভুরু কুঁচকে ইশারায় প্রশ্ন করে, কি হয়েছে। ম্লান হেসে মাথা দুলিয়ে ঋতুপর্ণা জানায়, কিছু না এমনি।

গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এলো ঋতুপর্ণা। নদীর থেকে ভেসে আসা ঠান্ডা জোলো বাতাস ওর চিত্ত সিঞ্চন করে দেয়। হুহু করে বয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাসে কেঁপে ওঠে রমণীর নধর অঙ্গ। মায়ের মুখের অচেনা ম্লান হাসির অর্থ হাতড়ে খুঁজতে চেষ্টা করে আদি। কিন্তু মায়ের ওই ঝাপসা দৃষ্টি, নরম ঠোঁটের স্মিত হাসি আর থমথমে চেহারার অব্যক্ত বানী ওর ছোট মস্তিকে বোধগম্য হয় না।

আদি নেমে পড়ে গাড়ি থেকে। ধিরে ধিরে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে নরম গলায় জিজ্ঞেস করে, “তোমার কি হয়েছে, মা?”

ঠাণ্ডা নদীর বাতাস ঋতুপর্ণার শরীর কাঁপিয়ে দেয়। ছেলের দেওয়া ব্লেজার কোনরকমে গায়ের সাথে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে নিল ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য। ছেলে পাশে দাঁড়াতেই যেন গরম বিষাক্ত ছ্যাঁকা খেল। চোয়াল চেপে অতি কষ্টে বিচলিত চিত্ত লুকিয়ে মিষ্টি হেসে আদিকে বলল, “তাহলে এই গাড়িতেই রাত কাটাতে হবে মনে হচ্ছে।”

আদি মাথা চুলকে এদিক ওদিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বলল, “জানি না মা, সরি ভুল করে ফেলেছি।”

নদীর কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস আদিকেও ভীষণ ভাবে কাঁপিয়ে তোলে। মায়ের আদর পাওয়ার আকাঙ্খায় মায়ের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পড়ে আদি। এতক্ষণ ঋতুপর্ণার বুকের ভেতরটা বিশাল এক শুন্যতায় ভরে উঠেছিল। গাড়িতে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। ছেলেকে পাশে দাঁড়াতে দেখে সেই শূন্যতা ছাপিয়ে এক মাতৃত্বের আবেশ ভরে উঠল ওর বুকে। দুই হাত বাড়িয়ে ছেলেকে কাছে ডেকে নিল ঋতুপর্ণা। স্নেহময়ী মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা গুঁজে দিল আদি। মায়ের কাঁধে মাথা গুঁজে আদি খুঁজে বেড়ায় শীতের রাতের উত্তাপ। কত রাত জেগে ওর মা ওকে বুকে করে ঘুমিয়েছে, সেই কনকনে ঠাণ্ডার রাতের কথা ভেবে আদির বুকের মাঝে প্রশান্তির দেখা দেয়।

ছেলের চুলের মধ্যে বিলি কেটে মিষ্টি করে সান্তনা দিয়ে ঋতুপর্ণা উত্তর দিল, “ছাড় সোনা, হয়ত এটাই একটা এডভেঞ্চার।” ওর যেন খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল আর হটাত করেই নিয়তি যেন সেই সুযোগ ওর হাতের মধ্যে নিয়ে ফেলে দিল। “জানিস বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ে খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল।” বুকের উচ্ছ্বাস এইবারে চেপে রাখল না ঋতুপর্ণা। আদির হাতখানি বুকের কাছে জড়িয়ে বলল, “সুভাষের সাথে শেষের দিকে মনে হতো যেন আমি এক বন্দিনী। এই বন্দি জীবন থেকে অনেকবার ভেবেছি পালিয়ে যাবো, কিন্তু তোর মুখ চেয়ে কিছুতেই পালাতে পারলাম না। কি করব বল, নাড়ির টান যে ভীষণ টান রে বাবা।”
 
আদি মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “মা গো প্লিস, ওই পুরানো দিনের দুঃখের কথা কি এখন না বললেই নয়? এই তো মা আর ছেলে মিলে ভালোই আছি।”

মিষ্টি হেসে উত্তর দিল ঋতুপর্ণা, “তা আছি তবে এইভাবে নদীর তিরে দাঁড়িয়ে থাকলে সকালে গ্রামের লোকজন আমাদের লাশ পাবে।”

হিহি করে হেসে দিল আদি। দুইহাতে আস্টেপিস্টে মাকে জড়িয়ে বলে, “ইসস মা, তুমি থাকতে কেন মরতে যাবো।”

সামনে বিশাল চওড়া গঙ্গা নদীর কালো জল কুলুকুলু অনবরত বয়ে চলেছে মোহনার পানে। দুর দিগন্তে অন্য পাড়ে কালো কালো জঙ্গল পিশাচের মতন মাথা উঁচিয়ে। দুর থেকে কখন কোন শেয়ালের অথবা অন্য কোন বন্য প্রাণীর ডাক শোনা যায়। কালো আকাশে অসংখ্য তারার ঝিকিমিকি, মিটমিট করে নদীর তিরে ঘন আলিঙ্গনে বদ্ধ দুই নর নারীর দিকে চেয়ে চেয়ে দেখছে।

ঋতুপর্ণা আদির হাত খানা নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে গায়ের চারপাশে জড়িয়ে নিল। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া থেকে নিস্তার পেতে না ওর ক্লান্ত জীবন থেকে অব্যাহতি পেতে, সঠিক ভাবে ওর মন জানে না। মাকে জড়িয়ে ধরে ফাঁকা নদীর তিরে আদি যেন পুরানো ছোট বেলা খুঁজে পেল। আদির প্রচন্ড ইচ্ছে করে মায়ের ভেতরে সেঁধিয়ে যেতে, এই নির্মল প্রশান্ত ক্রোড়ে আবার নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। কালের চক্র কোনোদিন পেছনে চলে না কিন্তু আদি মন প্রান দিয়ে চাইছিল এই রাত যেন শেষ না হয়, মায়ের কোলেই মাথা রেখে বাকিটা সময় কাটিয়ে দেওয়ার।

ঋতুপর্ণা আদিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্নেহভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কি রে বাবা ঠাণ্ডা লাগছে?”

আদির বাচ্চা ছেলের মতন ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে মাথা দুলিয়ে বলে, “হ্যাঁ মা খুব ঠাণ্ডা লাগছে।”

নদীর তিরে এইভাবে দাঁড়িয়ে কনকনে ঠাণ্ডায় ওরা জমে যাবে। ঋতুপর্ণা এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখল। অনেক দূরে বেশ কয়েকটা ঘরের মতন জায়গায় আলো জ্বলছে। আদিকে ওই দুরের বাড়ি গুলো দেখিয়ে বলে, “ওই দেখ দূরে মনে হয় কিছু আছে। চল একবার ওইখানে গিয়ে দেখি, হয়ত রাস্তা পাওয়া যাবে কিম্বা হয়ত থাকার জায়গা পাওয়া যাবে।”

মায়ের দৃষ্টি অনুসরন করে আদি দেখল দূরে একটা রিসোর্টের মতন জায়গা। কনকনে ঠাণ্ডা থেকে নিস্তার পাবে এইবারে ভেবেই মন খুশিতে ভরে উঠল। মাকে হেসে বলল, “মনে হচ্ছে কোন রিসোর্ট।”

ঋতুপর্ণাও স্বস্তির শ্বাস নিল, এই ঠাণ্ডায় এইভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা আর যাচ্ছে না, “যদি রিসোর্ট হয় তাহলে খুব ভালো কথা। ওইখানে তাহলে অন্তত রাতে থাকা যাবে।”

আদিও নেচে উঠল, “হুম, চল।”

গাড়ি নিয়ে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে দুর রিসোর্টে গিয়ে পৌঁছাল ওরা। বেশি বড় নয়, নদীর তিরে ছিমছাম ছোট একটা রিসোর্ট। গেটে তালা দেওয়া, কে এই রাত বারোটায় এই গন্ড গ্রামের রিসোর্টে আসবে ভেবে হয়ত লোকেরা তালা লাগিয়ে এতক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে। আদি বেশ কয়েকবার হর্ন বাজালোও। ঋতুপর্ণা বারন করার আগেই কেউ খুলছে না দেখে অগত্যা শেষ পর্যন্ত দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে গেল। ছেলের কান্ড দেখে ঋতুপর্ণা আর হাসি থামাতে পারে না। গাড়ি থেকে বেরিয়ে চুপচাপ ছোট ছেলের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে মনে মনে হাসে। এই ছেলে কয়েকদিন আগে পর্যন্ত মা ছাড়া এক পা চলত না, হটাত করে ওর এক্সিডেন্ট ছেলেকে কত বড় করে তুলেছে। আদি দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল। দরজার আওয়াজ পেয়ে একজন লোক বেরিয়ে এলো। সেই লোকটাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে জানিয়ে দিল যে রুম খালি পড়ে আছে। আদিকে সঙ্গে নিয়ে মেন গেট খুলে দিল লোকটা।

মেন গেট খুলতেই মায়ের কাছে দৌড়ে গেল আদি, “রুম পাওয়া গেছে।”

ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে পেছনের লোকটাকে জিজ্ঞেস করে, “রুম ভালো তো, নাকি সব নোংরা?”

লোকটা ইনিয়ে বিনিয়ে হাত কচলে বলল, “না না ম্যাডাম খুব ভালো রুম একদম পরিষ্কার।” বলেই গাড়ির পেছনের দিকে চলে গেল, ভেবেছিল হয়ত এদের সাথে কোন জিনিস পত্রের ব্যাগ থাকবে।

আদি ওকে জানিয়ে দিল ওদের সাথে কোন ব্যাগ নেই। লোকটা একটু চমকে যেতেই ঋতুপর্ণা বলে, “আমরা আসলে গ্রামের ঠাকুর দেখতে এসে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। তা বড় রাস্তা এখান থেকে কতদুরে।”

উত্তরে লোকটা অন্যদিকের একটা রাস্তা দেখিয়ে হাইওয়ে ধরার দিক বলে দেয়।

লোকটা রুম দেখিয়ে দিয়ে চলে যেতে উদ্যত হতেই ঋতুপর্ণা জিজ্ঞেস করে কিছু খাবারের বন্দোবস্ত করা যাবে কি না। প্রতিউত্তরে একটু হেসে হাত কচলে লোকটা জানায়, শুধু মাত্র নুডুলস, অমলেট, চিকেন সুপ আর কোল্ড ড্রিঙ্কস ছাড়া এত রাতে আর কিছুই পাওয়া যাবে না। ঋতুপর্ণা একবার আদির দিকে তাকিয়ে লোকটাকে সব কিছুই আনতে অনুরোধ করে। অনেকক্ষণ ধরেই পেটে কিছুই পড়েনি আর নদীর কনকনে বাতাসে হাড় পর্যন্ত কাঁপিয়ে তুলেছে। এই রাতে অন্তত চিকেন সুপ আর ডিম খেলে একটু শরীর গরম হয়ে যাবে। লোকটা মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দেয় আধা ঘন্টার মধ্যে খাবার তৈরি করে নিয়ে আসবে।
 
হোটেলের রুমটা বেশি বড় নয় তবে বেশি ছোট নয়, ছিমছাম ছোট রিসোর্ট। ঢোকার সময়ে দেখেছে, আশে পাশে আরো দুটো রিসোর্ট আছে। গঙ্গার তিরে আজকাল লোকেরা সঙ্গিনীদের নিয়ে সময় কাটাতে আসে, তবে বেশির ভাগ সকালে এসে বিকেলে ফিরে যায়। রাত কাটাতে খুব কম সংখ্যক লোক আসে এই নির্জন নিরালায়। ধবধবে সাদা নরম বিছানা দেখে ঋতুপর্ণার ঘুমের আবেশ জেগে ওঠে। রাতের পোশাক কিছুই নেই, কি করা যাবে, হটাত করেই পথ ভুলে এই নির্জন রিসোর্টে এসে পড়েছে। আদি রুমে ঢুকে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে নিল, এই সব ছোট খাটো রিসোর্টে মাঝে মাঝে লুকানো ক্যামেরা থাকে, সেটা একটা বড় ভয়। আদি আগেও কয়েকবার তনিমাকে নিয়ে এমন রিসোর্টে গেছে তবে রুমে ঢুকেই আগে সব জায়গা মোবাইল ঘুরিয়ে নিরীক্ষণ করে নেয়।

ঋতুপর্ণা কিছু বুঝতে না পেরে ওকে জিজ্ঞেস করে, “কি দেখছিস রে?”

অনেকক্ষণ এদিকে ওদিকে মোবাইল নিয়ে নিরীক্ষণ করে আদি মাকে উত্তর দেয়, “না মানে একটু চেক করছিলাম।” কি করে বলে মাকে যে তনিমাকে নিয়ে একবার একটা রিসোর্টে গিয়ে এই ধরনের ঝামেলায় পড়েছিল। তখুনি সেই রিসোর্ট ছেড়ে অন্য একটা রিসোর্টে চলে গিয়েছিল।

ঋতুপর্ণা কিছু না বুঝেই আচ্ছা বলে মাথা দুলিয়ে বড় জানালার দিকে এগিয়ে গেল। আদি পেছন থেকে মায়ের দেহ বল্লরীর দিকে নিস্পলক চোখে তাকিয়ে দেখল। শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে ওর অসামান্য রূপসী মায়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষিত দেহ পল্লব। মনে হল একটু জড়িয়ে ধরে, ওই দেহের ভাঁজে নিজেকে লুকিয়ে ফেলে। খোঁপার মধ্যে নাক ডূবিয়ে মায়ের গায়ের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।

পা টিপে টিপে মায়ের পেছনে দাঁড়িয়ে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করে, “তোমার কি হয়েছে গো? অমন থমথমে কেন?”

লাল নরম ঠোঁটে মিষ্টি মোহিনী হাসি টেনে ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, “কিছুই হয়নি।”

আসলে ওর হৃদয় দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। আদি কি ইচ্ছে করেই ওর সাথে রাত কাটাতে পথ ভুল করেছে না সত্যি সত্যি নিয়তি ওদের পথ ভুলিয়ে এই নির্জনে একান্তে ওদেরকে এনে ফেলেছে। ছেলের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। ছেলের চোখের ভাষায় ঋতুপর্ণা দেখে যে ছেলে সত্যি সত্যি নিয়তির কাছে হার মেনে এইখানে এসে পড়েছে। নিয়তির পরিহাসের কাছে নিজেকে বিসর্জন দেওয়া ছাড়া আর কোন গতি নেই ওর।

আদির বুকে হাত দিয়ে একটু ঠেলে বলে, “তুই শুয়ে পড় আমি একটু হাত মুখ ধুয়ে আসছি।”

বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখল ঋতুপর্ণা, একটাই বড় কম্বল। মনে মনে হেসে ফেলল, এই একটা বড় কম্বলের মধ্যে এক প্রাপ্ত বয়স্ক নর নারী একসাথে নিভৃত রাত কাটাবে। ভাবতেই ওর শরীর বেয়ে ভীষণ ভাবে শিহরন খেলে যায়। আদির দিকে তাকিয়ে দেখে ঋতুপর্ণা। আদি মাথা চুলকে বিছানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দেয়। ঋতুপর্ণা দাঁতের মাঝে কড়ে আঙ্গুল কেটে আদির গালে আলতো চাপড় মেরে দূরে সরিয়ে দেয়। মায়ের ঠোঁটের মিষ্টি হাসি আর চোখের ঝিলিক আদিকে উন্মত্ত প্রায় করে তোলে।

ঋতুপর্ণা আনত লাজুক নয়নে আদিকে বলে, “সর, সর, তুই বাথরুমে না গেলে অন্তত আমাকে যেতে দে।”

আদি বুক চাপড়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “না না আমি আগে যাচ্ছি, বড্ড পেচ্ছাপ পেয়েছে।” বলেই এক দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ে।
 
পর্ব বারো (#9)

জামা কাপড় পরে ঘুমানোর একদম অভ্যেস নেই আদির। এদিকে ছোট ফ্রেঞ্চি জাঙ্গিয়ার ভেতরে ওর পুরুষাঙ্গ মায়ের লাজবতি রূপের ছোঁয়ায় পাগল হয়ে ফনা তুলে দাঁড়িয়ে গেছে। বাড়ির বন্ধ দরজার পেছনে মাকে আদর করা আর এই নির্জন একাকী হোটেলের রুমে মায়ের সাথে এক বিছানায় শোয়া ভিন্ন ব্যাপার। জামা কাপড় খুলে হাতে মুখে সাবান দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে কোমরে তোয়ালে জড়িয়ে নিল। ছোট রিসোর্টে তোয়ালেটাও ছোট, মনে মনে হেসে ফেলে আদি। গেঞ্জি খুলে নিজের ঊরুসন্ধির দিকে তাকিয়ে দেখল, ফনা তুলে জাঙ্গিয়া ছোট করে একটা উঁচু পাহাড় হয়ে গেছে ওর ঊরুসন্ধি। ভাগ্যিস তোয়ালে দিয়ে ঢাকা না হলে মায়ের সামনে এই অবস্থায় বড় লজ্জায় পড়ে যেত আদি। প্যান্টের পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে নিয়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখল। মায়ের ঠোঁটে মুচকি চাপা হাসির ঝিলিক, চোখের কোলে এক অদৃশ্য চুম্বকীয় আকর্ষণ, সারা চেহারা জুড়ে ভীষণ মাদকতার তীব্র ঝলকানি। আদির লিঙ্গ ফুঁসতে ফুঁসতে বেড়ে ওঠে। চোয়াল চেপে মায়ের দিকে এগিয়ে যেতেই, ঋতুপর্ণা একটু সরে দাঁড়িয়ে ওর হাত থেকে জামা কাপড় নিয়ে নেয়। জামা কাপড় আদির হাত থেকে নেওয়ার সময়ে নরম আঙ্গুলের সাথে কঠিন তপ্ত আঙ্গুলের স্পর্শে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ ঝলকে ওঠে।

ঋতুপর্ণা ঠোঁট চেপে মোহিনী হাসি দিয়ে আদির প্রশস্ত লোমশ ছাতির দিকে তাকিয়ে বলে, “সব খুলে দিয়েছিস ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো? অন্তত গেঞ্জিটা পরে থাকতে পারতিস, ভালো হতো।”

মায়ের আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুল পেঁচিয়ে আদি উত্তর দেয়, “না মানে জানালা বন্ধ করে দিলে হয়ত গরম লাগবে তাই আর গেঞ্জিটা পরলাম না।”

মায়ের পেলব কোমল চাপার কলি আঙ্গুলের সাথে কবজি মুচড়ে ধরতে বড্ড ইচ্ছে করছিল আদির। মাকে টেনে বুকের মধ্যে আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল। আদির হাত থেকে কোনরকমে নিজের আঙ্গুল মুক্ত করে ঠোঁট টিপে হেসে বলে, “ছাড় এইবারে আমি একটু ফ্রেস হয়ে আসি।”

কি যে করবে ঋতুপর্ণা ভেবে পায় না। ওর কামাশিক্ত চোখ বারেবারে আদির বুকের ওপরে, পেটের পেশির ভাঁজের ওপরে, তোয়ালের নিচে লুক্কায়িত ঊরুসন্ধির শৃঙ্গের ওপরে ঘুরে বেড়ায়। অশান্ত চিত্ত না চাইতেও ওকে তাড়িয়ে বেড়ায় আর না চাইতেও বুকের রক্তে প্রচন্ড হিল্লোল দেখা দেয়। নিয়তি না অদৃষ্ট জানা নেই তবে এই পুরুষের কাছে হারিয়ে যেতে ওর মানা নেই। অন্তত এই পুরুষকে ছোট বেলা থেকে চেনে ঋতুপর্ণা, মন প্রান দিয়ে জানে এই পুরুষ ওকে প্রানের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। আদির হাতের কঠিন কবল থেকে নিজের হাত মুক্ত করে সারা অঙ্গে মধুর মত্ত ছন্দ তুলে বাথরুমে ঢুকে পড়ে।

আদি একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটে ঝুলিয়ে টিভি চালু করে দিল। চ্যানেল খুঁজতে খুঁজতে এফ টিভির চ্যানেলে এসে থেমে গেল। পর্দা জুড়ে স্বল্প বসনা সব মেয়েরা অন্তর্বাস পরে ক্যাট ওয়াক করছে। সবার পায়ের মাঝের ফোলা যোনির আকার অবয়ব পরিস্কার ফুটে উঠেছে, ঘুরে দাঁড়ালে নগ্ন নিতম্বের দুলুনি দেখে আদির লিঙ্গের অস্থিরতা নিরন্তর বেড়ে ওঠে। আদি থেমে গেল, লাস্যময়ী সব মডেল ভিক্টোরিয়া সিক্রেটের ব্রা আর প্যান্টি দেখিয়ে বেড়াচ্ছে এক গাদা লোকের সামনে। উফফ, কি অসামান্য লাস্যময়ী এই বিদেশি মডেল গুলো। বহু পর্ণ ছবিতে আদি দেখেছে যে এই বিদেশিদের যোনির কেশ একদম কামানো থাকে। আদির একদম কামানো যোনি পছন্দ নয়। একটুখানি সুন্দর ভাবে সাজিয়ে কেন রাখতে পারে না ওদের যোনি কেশ। যোনির চেরার দুইপাশে কামানো থাক কিন্তু যোনি চেরার ওপরে একটু সুসজ্জিত কেশগুচ্ছ ভীষণ আকর্ষক মনে হয় আদির। তিস্তার যোনি একদম কামানো ছিল, যোনি কেশ নিয়ে খেলা করতে পারেনি। তনিমা একদম উলটো, যোনি কেশ কামাতো না, অতো যোনি কেশ গুচ্ছের মধ্যে ওর গহবর যেন হাতড়ে হাতড়ে খুঁজে বেড়াতে হতো আদির। ভাবতে ভাবতেই ওর পুরুষাঙ্গ বয়ে ভীষণ কামোত্তেজনা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। আদি সিগারেট টানতে টানতে জাঙ্গিয়ার ওপর দিয়েই পুরুষাঙ্গ ঠিক করে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিল। জাঙ্গিয়ার কোমরের কাছ থেকে লিঙ্গের মাথা উঁকি মারছে, ছোট জাঙ্গিয়া আরো ছোট হয়ে গেছে, কিছুতেই আর বাগ মানাতে পারছে প্রকান্ড পুরুষাঙ্গের অশান্ত আন্দোলন। রুমের লাইট নিভিয়ে ছোট নীল আলো জ্বালিয়ে ঘরের পরিবেশ উদ্দিপ্ত করে তোলে। সাদা রঙের বিছানা নীল আলোয় ভরে ওঠে। টিভি স্ক্রিনে দেখে আদি তোয়ালের নিচে হাত দিয়ে পুরুষাঙ্গ একটু নাড়িয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে, কিন্তু নিজের গরম হাতের মধ্যে ওর পুরুষাঙ্গ আরো বেশি ছটফট করে ওঠে। চ্যানেল বদলালোনা আদি, সিগারেট ধরিয়ে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে পড়ল। আনচান মন, কখন মা বাথরুম থেকে বের হবে, সুন্দরী মদালসা মায়ের একটু দর্শন পাবে। একটু আদর করবে একটু জড়িয়ে ধরে নিজেকে হারিয়ে দেবে মায়ের কোলে, মায়ের শরীরের উষ্ণ উত্তাপ নিজের গায়ে মাখিয়ে ভেলা ভাসিয়ে দেবে।

দরজায় খুট করে আওয়াজ হল। দরজা খুলে দেখল একটা বড় ট্রে হাতে হোটেলের লোকটা দাঁড়িয়ে। লোকটা জুলুজুলু চোখে আদিকে আপাদমস্তক দেখে চোখ টিপে হেসে দিল। আদি ওর হাসি দেখে মুখ গম্ভির করে হাত থেকে খাবারের ট্রে নিয়ে নিল।

লোকটা আদিকে জিজ্ঞেস করল, “আয়োজন সব ঠিক আছে তো স্যার? কিছু লাগবে নাকি, রাম ভদকা।” চোখ টিপে ইতর ইশারা করে ফিসফিস করে বলল, “সব ব্যাবস্থা করে রাখা আছে। বুঝছেন তো স্যার এইখানে আপনাদের মতন কাপল হামেশাই আসে।”

লোকটার কথাবার্তার ধরন দেখে আদির কান মাথা গরম হয়ে গেল। চোয়াল চেপে কঠিন কণ্ঠে আদি লোকটাকে জানিয়ে দিল, “তুমি নিজের চরকায় তেল দাও। কাল সকালে বিল মিটিয়ে দেব।”

দরজা বন্ধ করেই আদির উত্তেজনা শতগুন বেড়ে গেল। উফফ, তাহলে মাকে দেখে কেউ ধরতে পারেনি মায়ের বয়স। লোকজন নিশ্চয় ওকে আর মাকে দেখে একজোড়া প্রেমে বিভোর দম্পতি হিসাবেই ধরে নিয়েছে। মায়ের লেলিহান তপ্ত বহ্নি রমণীর সাজে কেউই ওদের মা আর ছেলে বলে ধরতে পারেনি। ভাবতে ভাবতে ওর হৃদয়ের দুলুনি ভীষণ হয়ে ওঠে। খাবারের টেবিল নেই তবে একটা পুরানো খবরের কাগজ খুঁজে পেল আদি। বিছানা থেকে কম্বল সরিয়ে কাগজ পেতে খাবারের ট্রে রেখে দিল।

“খাবার দিয়ে গেছে রে?” পেছন থেকে মায়ের কণ্ঠ স্বর শুনে হকচকিয়ে গেল। আদি পেছন ঘুরে তাকিয়ে দেখল মা বাথরুমের দরজা একটু খুলে উঁকি মেরে ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করছে।

আদি মাথা দুলিয়ে উত্তর দিল, “হ্যাঁ দিয়ে গেছে, তুমি বেরিয়ে আসতে পারো।”

দরজা আস্তে আস্তে খুলে ভীষণ লজ্জা জড়ানো দেহে ঋতুপর্ণা বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো। মায়ের রূপ দেখে আদি উন্মাদনার শেষ সীমান্তে পৌঁছে গেল। খোঁপা খুলে ঘাড়ের কাছে একটা এলো খোঁপা করে চুল বেঁধে নিয়েছে। সারা মুখ মন্ডলে অতি ক্ষুদ্র জলের বিন্দু। কপালে টিপ নেই তবে চোখের কোনার কাজল আর ঠোঁটের রঙ মিলিয়ে যায়নি। মায়ের দেহের দিকে তাকাতেই বুক ছ্যাঁত করে উঠল আদির। তোয়ালেটা ভীষণ ছোট আর সেই ছোট তোয়ালে দিয়ে কোনরকমে মা নিজের লাস্যময়ী নধর দেহ পল্লব ঢেকে রেখেছে। তোয়ালেটা ঋতুপর্ণার উদ্ধত পীনোন্নত স্তনের মাঝের থেকে কোনোমতে ঊরুসন্ধি পর্যন্ত অতি কষ্টে নেমে এসেছে। ঊরুসন্ধির নিচের থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত সম্পূর্ণ অনাবৃত। সুগঠিত জঙ্ঘাদ্বয় যেন কিছুতেই আর শেষ হতে চায় না। ঘরের হাল্কা নীলাভ আলো মায়ের মসৃণ জঙ্ঘার ত্বকে পিছল খেয়ে প্রতিফলিত হয়ে যায়। বক্র পায়ের গুলি, ছোট গোড়ালি দুটোতে রুপোর নুপুরে সজ্জিত। এই প্রথম মায়ের অনাবৃত পায়ের দর্শন পেল আদি। পুরুষ্টু জঙ্ঘা বয়ে শহস্র কোটি অতি সরু জলের ধারা নেমে এসেছে। ঋতুপর্ণার রোমহীন মসৃণ জঙ্ঘার কাম উদ্ভাসিত রস যেন চুঁইয়ে চুঁইয়ে গড়িয়ে চলেছে। সময় যেন স্তব্দ চোখে ঋতুপর্ণার রূপ সাগরে নিমজ্জিত। কালের গতি থামিয়ে নিস্পলক চোখে আদি মায়ের রূপ সুধা আকণ্ঠ পান করতে উদ্যত হয়।

একটু নড়লেই পুরুষ্টু নধর মোলায়ম ঊরুসন্ধি তোয়ালের আড়ালে লুকোচুরির খেলার মতন উঁকি মেরে দেখা দেয়। শাড়ির রঙের সাথে মিলিয়ে ঋতুপর্ণা এক জোড়া নীল রঙের অন্তর্বাস পরে ছিল। একটু নড়াচড়া করলেই ঋতুপর্ণার পুরুষ্টু জঙ্ঘার মাঝের ঢল বেয়ে নেমে আসা ফোলা পলি মাটির মতন কোমল যোনি অবয়ব পরিস্ফুটিত হয়ে বেরিয়ে পড়ে। নুপুরের নিক্কন কানে ভেসে আসে আদির। মায়ের রূপের আগুনে মন্ত্রমুগ্ধের মতন নিস্পলক নয়নে চেয়ে থাকে। কাঁধের কাছে অতি ক্ষীণ ব্রার দড়ি, যেটা নেই বললেই চলে। উপরি বক্ষ, বক্ষ বিভাজিকা সম্পূর্ণ রূপে উপচে বেরিয়ে এসেছে সামনের দিকে। ছোট তোয়ালে বিশেষ কিছুই আড়াল করতে অক্ষম। বুকের কাছে ভাঁজ করা শাড়ি, সায়া ধরে এক পা এক পা করে অতি সন্তর্পণে রুমে ঢুকে পড়ে ঋতুপর্ণা। ওর চোখের তারায় ভীষণ লজ্জা, এইভাবে নিজেকে উন্মুক্ত করে ছেলের সামনে দাঁড়াতে ওর দেহ প্রচন্ড ভাবে শিহরিত হয়ে উঠছিল।

আদি চোয়াল চেপে বেশ কয়েকটা বড় টান মেরে সিগারেট ফেলে দিল। নুপুরের নিক্কন, মায়ের গায়ের প্রমত্ত ঘ্রাণে আর মদালসা ছন্দের চলনে ওর মাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করে দেয়। আবছা নীলচে আলোয় ছেলের চোখের আগুনে চাহনি ঠিক ধরে ফেলে ঋতুপর্ণা।

ঋতুপর্ণা ভুরু নাচিয়ে সিগারেটের দিকে ইশারা করে ছেলেকে মিহি গলায় জিজ্ঞেস করে, “কি রে গরম হয়ে গেলি?”

বাক্যের তাৎপর্য যাই হোক আদি তখন কামনার আগুনে জ্বলছে। মায়ের প্রশ্নের উত্তরে খেই হারিয়ে হিস হিস কণ্ঠে উত্তর দেয়, “প্রচন্ড ভাবে গো, ডারলিং।”

“ডারলিং” ডাক কানে আসতেই কঁকিয়ে উঠল ঋতুপর্ণার হৃদয়ের সকল ধমনী। নিজের দেহের কথা ভেবে ছেলের দিকে অসহায় ভাবে মুচকি হাসি দিয়ে বলে, “তোয়ালেটা ভীষণ ছোট রে।”

আদি হাত মুঠো করে বহু কষ্টে বুকের উত্তেজিত রক্ত শান্ত করে মায়ের দিকে একপা এগিয়ে বলে, “হ্যাঁ ভীষণ ছোট কি করা যাবে একটা রাত তো কোনরকমে কাটিয়ে দিলেই হবে।”

শাড়ি সায়া, গলার হার খুলে আলমারির মধ্যে রাখার সময়ে সামনের দিকে একটু ঝুঁকতে হয় ঋতুপর্ণার। ছোট তোয়ালে ভারি কোমল নিতম্বের ওপর থেকে কোমর পর্যন্ত উঠে যায়। আদির দিকে উঁচিয়ে যায় ফর্সা সুডৌল নিটোল নিতম্ব। মাকে দেখে মনে হল যেন সদ্যস্নাত এক সাগর রাজ্যের অপ্সরা ওর সামনে নিজের ভীষণ যৌবনের আগুন নিয়ে দাঁড়িয়ে। মায়ের অনাবৃত কোমল নিটোল নিতম্বের দর্শন পেতেই আদির পুরুষাঙ্গ ভীষণ ভাবে দাপাদাপি শুরু করে দেয় জাঙ্গিয়ার ভেতরে। দুই সুডৌল নিতম্বের খাঁজের মাঝে প্যান্টির পেছনের দিক হারিয়ে গেছে যার ফলে ফর্সা সুগোল নিতম্ব জোড়া সম্পূর্ণ রূপে আদির চোখের সামনে মেলে ধরা হয়ে যায়। ফর্সা নিটোল নিতম্ব জুড়ে অতি ক্ষুদ্র জলকণা। ঘরের নীলাভ আলোয় সেই জলকণা গুলো নীল ছটা বিচ্ছুরিত করে আদিকে মোহিত করে দেয়।
 
আদির চোখের দৃষ্টি অনুসরন করতেই ঋতুপর্ণার নিতম্বের ত্বক জ্বলতে শুরু করে দেয়। সারা শরীরের রোমকূপ একসাথে উন্মিলিত হয়ে ওঠে। পুরুষ্টু ঊরুজোড়া ভীষণ ভাবে শিহরিত হয়ে ওঠে। ঊরুসন্ধির মাঝের উপত্যকা ভিজে যায়। হাল্কা নীল রঙের প্যান্টি যোনির রসে ভিজে গাড় রঙে রাঙিয়ে ফোলা নরম যোনির আকার অবয়ব ফুটিয়ে তোলে। পায়ের মাঝের শিরশিরানি ভীষণ ভাবে বেড়ে উঠে, ওর তলপেটের নরম মাংসে ঝড় তুলে দেয়। কোমর বিছা ওর তলপেট কামড়ে বসে গেছে। ঊরু জোড়া টানটান হয়ে নিজেদের উত্তেজনার চরম সীমানার জানান দিয়ে চলেছে অনবরত। ঋতুপর্ণার বরাবরের অভ্যেস রাতে শোয়ার আগে একবার গায়ে জল ঢালা, না হলে সারা দিনের ক্লেদ কিছুতেই যায় না। আর এই জল ঢালাই ওর কাল হয়ে দাঁড়াল, ইসস ওর সারা অঙ্গ এখন ভিজে, আর সেই শিক্ত আগুন ওর বুকের মধ্যেও ধিকিধিকি করে জ্বলতে শুরু করে দিয়েছে।

আদি মায়ের পেছনে এসে দাঁড়াতেই সঙ্গে সঙ্গে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ঋতুপর্ণা। রুমের নীলাভ আলো ওকে এক ঘোরের মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। আদির দিকে ঘুরে দাঁড়াতেই ওর দেহ বেয়ে উষ্ণ তড়িৎ ছটা বয়ে চলে যায়। ভীষণ ভাবে নড়ে ওঠে ঋতুপর্ণা সেই সাথে আদি। আদি হাত বাড়িয়ে দেয় মায়ের দিকে। ঋতুপর্ণা মোহাবিষ্টের মতন আদির হাতে হাত রেখে ওদের মাঝে একটা ব্যাবধান রেখে দাঁড়িয়ে থাকে। আলতো হাতের ছোঁয়া যেন ওদের কাছে বিদুতের সমান মনে হয়।

আদির গলার স্বর গভীর অন্ধকার কূপের মধ্যে নেমে যায়, “খাবে, ক্ষিধে পেয়েছে?”

মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েছে ছেলের উন্মুক্ত লোমশ পেশি বহুল চওড়া ছাতি দেখে, সেই সাথে নিজের উন্মুক্ত দেহের উত্তাপ ওকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অজানা কোন দ্বিপে। মিহি কণ্ঠে উত্তর দেয় ঋতুপর্ণা, “হ্যাঁ রে ভীষণ ক্ষিধে পেয়েছে, আর থাকতে পারছি না।”

হাতে হাত রেখেই মা আর ছেলে বিছানায় উঠে পড়ে। ঋতুপর্ণার চোখ চলে যায় টিভির দিকে। টিভি স্ক্রিন জুড়ে অতি সামান্য পোশাকে মেয়েরা সবার সামনে পাছা দুলিয়ে কোমর দুলিয়ে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে।

টিভি স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বড় বড় চোখ করে আদিকে জিজ্ঞেস করল ঋতুপর্ণা, “কি রে রাতে বসে বসে তুই এইসব ন্যাংটো মেয়েদের দেখিস নাকি?”

আদি ভীষণ লজ্জায় পড়ে গেল, আলতো মাথা দুলিয়ে উত্তর দিল, “যা বাবা, ছেলেরা কি একটু বড় হতে পারবে না নাকি? কি খারাপ এই ছবিতে? দেখো না কত লোকের সামনে অনায়াসে এরা ব্রা প্যান্টি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”

কান গাল লাল হয়ে উত্তপ্ত হয়ে গেল ঋতুপর্ণার। নিচের ঠোঁট দাঁতে কামড়ে বিছানায় উঠে কোমর পর্যন্ত কম্বলে ঢেকে নিল। অন্তত এইবারে ওর পুরুষ্টু জঙ্ঘা দুটো আর অনাবৃত থাকবে না। আদির ভীষণ লোলুপ বহ্নি ঝরানো দৃষ্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে। ছেলেকে মৃদু ধমক দিয়ে চোখ পাকিয়ে বলল ঋতুপর্ণা, “ইসসস তাই বলে কি এখন চেঞ্জ করতে নেই? মা সামনে বসে তাও ছেলের একটুকু লজ্জা বোধ বলতে নেই।” বলেই আদর করে আদির গালে একটা চড় কষিয়ে দেয়।

আদি লাজুক হেসে চ্যানেল বদলে একটা ইংরাজি সিনেমার চ্যানেল চালিয়ে দেয়, “এইবারে ঠিক আছে তো?”

ঋতুপর্ণা চ্যানেল দেখে মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল এইবারে ঠিক আছে। কি সিনেমা চলছিল সেদিকে খেয়াল নেই ওদের। ট্রের দিকে তাকিয়ে দেখে ঋতুপর্ণা ছেলেকে বলে, “গরম থাকতে থাকতে খেয়ে ফেলি।”

ঠোঁট কুঁচকে হিস হিস গলায় মায়ের চোখে চোখ রেখে আদি উত্তর দেয়, “হ্যাঁ গরম থাকতে থাকতে কাজ সেরে ফেলা ভালো, ঠাণ্ডা হয়ে গেলে ভালো লাগবে না।”

ঋতুপর্ণা ঠোঁট চেপে মোহিনী হাসি ঝরিয়ে চোখের কোণে আগুনের ফুলকি ছুটিয়ে বলে, “তোর কাছে একটু টেনে নে সুবিধে হবে।” আদি মায়ের দিকে হাত বাড়াতেই হাতের ওপরে ছোট চাঁটি মেরে খিলখিল করে হেসে বলে, “আমাকে নয় রে শয়তান, ট্রেটা টেনে নে।”

খিলখিল হাসির ফলে ভারি স্তন জোড়া ভীষণ ভাবে আন্দোলিত হয়ে ওঠে। ছোট আঁটো ব্রার মধ্যে মুক্তির আশায় ছটফটিয়ে ওঠে কোমল পীনোন্নত কুঁচযুগল। আদির দৃষ্টি মায়ের থরথর কম্পিত স্তন বিভাজিকার ওপরে। চোখের দৃষ্টি মায়ের অনাবৃত ক্ষুদ্র জলকণার চমকানি হতে অতি কষ্টে দৃষ্টি সরিয়ে চেহারার দিকে তাকায় আদি। মুচকি শয়তানি হাসি দিয়ে উত্তর দেয়, “বেশি টানাটানি করে সময় নষ্ট করে লাভ নেই ভাবলাম, তাই...”

ঋতুপর্ণার বুকজুড়ে রক্তের আন্দোলন ভীষণ ভাবে বেড়ে ওঠে ছেলের এই ভাষা শুনে। ঠোঁট চেপে মোহিনী হাসি দিয়ে বলে, “গরম থাকবে চিন্তা নেই।” একটা সুপের বাটি আদির হাতে ধরিয়ে দিয়ে ঋতুপর্ণা বলে, “ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার আগেই তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।”

মায়ের হাত থেকে সুপের বাটি নিয়ে উলটে মায়ের ঠোঁটের কাছে নিয়ে যায় আদি, “মনে হচ্ছে বড্ড নোনতা হবে একটু মিষ্টি করে দাও না, মা।”

শরীর জুড়ে ভীষণ রোমাঞ্চের শিহরন খেলে যায় ঋতুপর্ণার। ছেলের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ, তার পরে আদির হাতে হাত রেখে সুপের বাটিতে একটু চুমুক দিয়ে চোখের তারায় ঝিলিক দিয়ে ফিসফিস করে বলল, “সুপ কিন্তু মিষ্টি খেতে নেই শয়তান, একটু গরম একটু নোনতা ভালো লাগে।”

মায়ের ফিস ফিস ভাষা শুনে আদির বুকের রক্ত টগবগ করে ফুটে ওঠে, আঙ্গুলের সাথে আঙ্গুলের বেড় পেঁচিয়ে উত্তর দেয়, “তোমার হাতের ছোঁয়ায় মধু আছে তাই একটু চাইলাম। এইখানে কেমন সুপ বানিয়েছে সেটা ঠিক জানিনা না...”

উষ্ণ ফুটন্ত রক্তের ধারা প্রবল ভাবে সারা অঙ্গে মাতাল সাপের মতন একেবেকে ছড়িয়ে পড়েছে দুইজনার মধ্যে। আদি গরম সুপের তোয়াক্কা না করে সময় নষ্ট না করে চোঁ চোঁ করে সুপ গিলে নিল। হা হা করে উঠল ঋতুপর্ণা, “আরে ছেলে একটু দাঁড়াবি তো, ঠোঁট পুড়ে যাবে না।”

আদি সুপ শেষ করে ঠোঁট মুছে মুচকি হেসে উত্তর দেয়, “এই তো বললে গরম গরম খাওয়া ভালো আর এই মানা করছো? তোমাকে নিয়ে না আর পারা যায় না।” একটু থেমে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে ফ্যাস ফ্যাস করে ডাক দেয়, “ডারলিং।”

বারেবারে ছেলের ঠোঁটে “ডারলিং” শুনে ঋতুপর্ণার শরীর অবশ হয়ে যেতে শুরু করে দেয়। গরম সুপ কিছুটা খেয়ে নেয়। তারপরে ডিমের অমলেট কেটে আদির মুখের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, “নে এইবারে অমলেট খেয়ে নে।”

মায়ের আঙ্গুল সমেত মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দিল আদি। ডিম সমেত আঙ্গুলের গোড়া পর্যন্ত আদির মুখগহবরে হারিয়ে গেল। ভিজে জিবের পরশে ঋতুপর্ণার হাত অবশ হয়ে গেল। দাঁত দিয়ে মায়ের আঙ্গুল কামড়ে ধরল আদি। হাত নাড়িয়ে ছেলের মুখের ভেতর থেকে দুর্বল প্রচেষ্টা করল হাত ছাড়াতে। শক্তি আর ছিল না ওর হাতে সেই সাথে ইচ্ছেটাও ছিল না ছেলের মুখ থেকে হাত বের করতে। অমলেটের সাথে সাথে কচি লতার মতন পেলব আঙ্গুল দুটো একটু চিবিয়ে মায়ের শরীরে ভীষণ উত্তেজনার সৃষ্টি করে তুলল আদি। তোয়ালের নিচে ছোট জাঙ্গিয়ার মধ্যে প্রচন্ড ভাবে ছটফটিয়ে উঠল আদির পুরুষাঙ্গ। কিছুতেই আয়ত্তে আনা সম্ভব হচ্ছে না ওই শয়তান সাপটাকে। বারেবারে ছোবল মেরে জাঙ্গিয়া ফাটিয়ে বেরিয়ে আসতে উদ্যত।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top