What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (2 Viewers)

তৃষার উপদেশ এক ভিন্ন অর্থে কিন্তু ঋতুপর্ণার বুক যেন থই পেয়ে গেল। অধরা আকাঙ্খাটা অধরা রেখেই ভালোবাসার নির্যাসে যেটুকু ছেলের ছোঁয়াতে পাওয়া যায় ততটুকুতেই নিজের দেহ মন শিক্ত করে নেবে। কিন্তু সেই সাথে ভেবে নিল যে একটা দেয়াল একটা গন্ডি রেখেই ছেলের সাথে মেলামেশা করবে। ছেলের বান্ধবী হতে আপত্তি নেই কিন্তু মাঝে মাঝে আদি যেভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে অথবা যে ভাবে ওকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে গালে ঘাড়ে চুমু খায় তাতে ওর শুন্য হৃদয় গলে যায়, দেহের প্রতিটা স্নায়ু আকুলি বিকুলি করে ওঠে ওই পেশি বহুল শরীর মাঝে গলে পড়তে। এই তীব্র আকাঙ্খা ওকে দমন করেই ছেলের সাথে মেলামেশা করতে হবে, কিন্তু কতক্ষন এই হৃদয়কে আটকে রাখবে সেটাই চিন্তার বিষয়। এইসব কথা তো বাইরের কাউকে বলা যায় না তাহলে সবাই ছি ছি করবে। নষ্টা, ব্যাভিচারিনি বলবে, কোন নারী কি নিজের ছেলের সাথে প্রেমের অলি গলিতে বিচরন করে। তবে বান্ধবী হতেই পারে। দেখা যাক, ডক্টরের এই উপদেশে হৃদয় মাঝে সমবয়সী কোন পুরুষের প্রতি আবার করে কোন অনুভুতি জাগে কি না। হৃদয় দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে, আবার তৃতীয় কাউকে এই মা ছেলের সংসারের মধ্যে টেনে আনতে নারাজ ঋতুপর্ণা, কিন্তু হৃদয়ের এই তীব্র আকাঙ্খা শরীরের এই ভীষণ খিদে এই সব কি করে মেটানো যায়। এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায় ঋতুপর্ণার কাছে।

তৃষাকে জিজ্ঞেস করে ঋতুপর্ণা, “কিন্তু ম্যাডাম, আমি যে শরীর মন থেকে কিছুতেই তৃতীয় কোন ব্যাক্তিকে আর মেনে নিতে পারব না। এমনিতেই আমার ছেলে এই প্রদীপকে ভালো চোখে দেখতে পারতো না তারপরে আবার অন্য কাউকে আমাদের জীবনের মাঝে টেনে আনা...” জোরে জোরে মাথা নাড়ায় ঋতুপর্ণা, “এটা সম্ভব হবে না ম্যাডাম।”

তৃষা ভাবনায় পড়ে যায়। ঋতুপর্ণার দিকে এক গেলাস জল বাড়িয়ে দিয়ে বলে, “মিসেস সান্যাল একটু জল খেয়ে শান্ত হন।”

বুকের মধ্যে ভীষণ জ্বালা ধরা শুরু করে দিয়েছে ঋতুপর্ণার। আবার সেই এক পুরুষের ছোঁয়া, এই পুরুষ জাতি শুধু মাত্র শরীর বোঝে নারীর মন একদম বোঝে না। সুভাষকে মন প্রান দিয়ে ভালবেসেছিল, কিন্তু তাঁর প্রতিদানে সুভাষ কি দিল, প্রতারনা। ভালোবাসা ওর থাকুক, শরীরের চাহিদা মেটাতে যদি সুভাষ ওকে জানিয়ে অন্য কারুর সাথে এক বিছানায় রাত কাটাত তাহলে হয়ত ঋতুপর্ণা ক্ষমা করে দিতে পারত। কিন্তু না, ওর বুক ভেঙে দিয়ে এক কচি মডেলের সাথে সেক্স করেছিল ওর বিছানায়। কেন হোটেল ছিল না, কেন সুভাষ ওর বিছানা ওর হৃদয়কেই ভেঙে চুরমার করে দিল। বড় আঘাত পেয়েছিল ঋতুপর্ণা সেইদিন। এই আঘাত কাটিয়ে অনেক সংযত হয়েই দিন যাপন করেছিল। আবার সেই গতে বাঁধা জীবনে ফিরে আসতে চেয়েছিল, চেয়েছিল এক পুরুষের সানিধ্য, কিন্তু তাতেও বাধ সাদে ওর নিয়তি। আদিকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে হয়তো প্রদীপকে হয়ত বিয়ে করতো, কিন্তু কি হল ফল।

তৃষা ঋতুপর্ণার চেহারা দিকে তাকিয়ে অনায়াসে বুঝতে পারে যে এই নারী ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়েছে। তৃষা খানিক ভেবে চিন্তে ঋতুপর্ণাকে বলে, “আচ্ছা, এখুনি আপনাকে কারুর সাথে মেলামেশা করতে পরামর্শ দিচ্ছি না। শুধু এইটুকু পরামর্শ দিচ্ছি যে আপনি আপনার ছেলের সাথেই মেলা মেশা করুন। কারন আপনার এখন যে রকম মানসিক অবস্থা তাতে বাইরের কোন পুরুষ দেখলে আপনার মনে বিতৃষ্ণা জাগবেই। আর সেটা কাটাতেই এই পরামর্শ। দেখুন আপনি নিশ্চয় নিজের ছেলের প্রতি অনিহা দেখাতে পারবেন না।”

একদম নয়, ওর ছেলে আদি ওর জীবনের সব। বুকের পাঁজর কেটে হোস্টেলে পড়তে পাঠিয়েছিল। অতীতের সব কথা এক এক করে চোখের সামনে ভেসে ওঠে। ছোট বেলায় কিছুতেই সুভাষকে ওর কাছে আসতে দিত না। হোস্টেল থেকে বাড়িতে এলে সব সময়ে মায়ের পায়ের ধারে ঘুর ঘুর করত। বড় হয়েও যখন ফিরে এলো তখন সেই ছোট বেলার মতন ওর কাছে কাছেই ঘুর ঘুর করত। সুভাষের অনুপস্থিতি নিজের বুক ভরা ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছিল। সেই ছেলের প্রতি কি ভাবে অনিহা জন্মাবে এক মায়ের। এটা কি কখন সম্ভব নাকি?

ঋতুপর্ণা অবাক হয়ে বলে, “এটা কি বলছেন, নিজের ছেলের প্রতি কখন কোন মায়ের অনিহা জন্মায় নাকি!”

তৃষা হেসে উত্তর দেয়, “আমিও তো সেটাই আপনাকে বলছি। ছেলেকে একটু বন্ধুর চোখে দেখুন একটু পুত্র সন্তান স্নেহে দেখুন। ধিরে ধিরে আপনার মনের গভীরে যে বিষ জমে আছে সব কিছু এক সময়ে কেটে যাবে।”

ঋতুপর্ণা ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “আর আমার দেহে যে এই হটাত হটাত করে ভীষণ যৌন তৃষ্ণা জেগে ওঠে সেই মানসিকতার কি হবে?”

তৃষা হাসে, “সেই গুলো দেখবেন আপনা থেকেই কমে যাবে।” তৃষা উত্তরটা স্বাভাবিক ভাবেই দেয়, কারন কোন মায়ের সাথে নিজের পুত্র সন্তানের মধ্যে গভীর অপার প্রেম জাগতে পারে না। মায়ের সাথে ছেলের সম্পর্ক সব সময়ে স্নেহ মায়া মমতা শাসন বাঁধন এই সবের মধ্যেই সীমিত থাকে।

গভীর এক শ্বাস ফেলে ঋতুপর্ণা। খানিক খন জানালার বাইরে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “বেশ তাহলে আপনার পরামর্শ অনুযায়ী চলতে চেষ্টা করব।”

তৃষা হেসে উত্তর দেয়, “করে দেখুন, ধিরে ধিরে সব দ্বিধা দ্বন্দ কেটে যাবে। খুব তাড়াতাড়ি আপনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন।”

ঋতুপর্ণা একটু হেসে উঠে পড়ে, “তাহলে এইবারে আসি।”

তৃষা এগিয়ে গিয়ে গালে গাল ঠেকিয়ে অভিবাদন জানিয়ে বলে, “কোন অসুবিধে হলে আমাকে ফোন করবেন। আর হ্যাঁ, আপনি এখনো ভীষণ সুন্দরী।” বলেই একটু চোখ টিপে হেসে বলে, “সামনে পুজো, পুজোর শপিং করুন, বাইরে যান, নিজেকে সাজান, দেখবেন দেহ আর মন দুটোই চনমনে থাকবে। আর আপনি তো স্কুলে নাচ শেখান তাই না?” ঋতুপর্ণা মাথা দোলায়, হ্যাঁ। “তাহলে তো কথাই নেই, তাই আপনার বডি এত ফিট।”
 
পর্ব নয় (#7)

কোলকাতার বুকে ততক্ষণে সন্ধ্যে নেমে গেছে। সাতটার মধ্যে বেশ অন্ধকার হয়ে যায়। রাস্তা ঘাটে আলো জ্বলে উঠেছে, সামনে পুজো তাই রাস্তা ঘাটে খুব ভিড়। চেম্বারের বাইরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ রাস্তার দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আদি। পেছন থেকে ছেলেকে আপাদমস্তক দেখে নিল। সত্যি দেখার মতন শরীরের গঠন, তামাটে গায়ের রঙ, পাথরে খোদা মাইকেল এঞ্জেলোর মূর্তির মতন দেহ কাঠামো, চওড়া বুক, পাছা জোড়া বেশ শক্ত। দুই কঠিন বাহু দিয়ে যখন ঋতুপর্ণাকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে তখন ওর দেহ গলে যায়। আগামী কাল থেকে এক নতুন জীবনে পা দিতে চায় ছেলের হাত ধরে। পুত্র স্নেহের সাথে বান্ধবী সুলভ ব্যাবহার মিশিয়ে বুকের শূন্যতা ভরিয়ে তুলতে চায়। অবশ্য এমনটা ওর মনে আগেও উদয় হয়েছিল, সেই প্রস্তাব অবশ্য ছেলের দিক থেকেই এসেছিল।
মুখ টিপে হেসে ছেলের পেছনে দাঁড়িয়ে বান্ধবী সুলভে পিঠের ওপরে ছোট একটা কিল মেরে বলে, “কি রে এত মন দিয়ে কি দেখছিস? কোন সুন্দরীকে চোখে ধরল নাকি?”
আচমকা পিঠের ওপরে কিল খেয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আদি। কখন যে মা ওর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা টের পায়নি। ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে মায়ের চেহারায় বেশ এক স্বস্তির আভাস। এই আভাস দেখে আদির খুব ভালো লাগে। কালো ভুরুর মাঝে লাল টিপ, গোলাপি ঠোঁট জোড়া আধা খোলা, আয়ত কাজল কালো চোখে মা ওর দিকে একভাবে তাকিয়ে। এই চাহনি যেন অন্য কিছুর আভাস জানাচ্ছে আদির কাছে। কিসের আহ্বান জানাতে চায় ওর মা ওর কাছে?
মায়ের কাঁধে আলতো ধাক্কা মেরে জিজ্ঞেস করে, “আরে নানা, এই সব মেয়েদের দেখে কি আর কাজে দেয়। তোমার খবর বল, তৃষা ম্যাডাম কি বলল, কি পরামর্শ দিল।”
ঋতুপর্ণা ছেলের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে উত্তর দেয়, “অনেক কিছু নিয়েই আলোচনা হল সব কথা কি তোকে বলতে হবে নাকি? তুই ডাক্তার নাকি?” আদি হেসে ফেলে সেই সাথে ঋতুপর্ণাও হেসে ফেলে। ছেলের কঠিন বাজুতে মিঠে একটা চিমটি কেটে বলে, “চল এইবারে।”
বাজুতে মিঠে চিমটি খেয়ে মায়ের কাঁধে একটা ধাক্কা দেয় আদি, “প্লিস একটু বলো না আমাকে বের করে এতক্ষন কি আলোচনা করলে?”
আদির বাজুতে ছোট একটা কিল বসিয়ে দেয় ঋতুপর্ণা। ওই সব আলোচনা কি আর ছেলের সাথে করা যায় নাকি। এক মা কি কখন নিজের যৌনতা নিয়ে ছেলের সাথে আলোচনা করে। গাল লাল হয়ে যায় ছেলের বাজুর সাথে বাজু লাগার ফলে। শরীর বেয়ে, উন্মুক্ত হাত বেয়ে তড়িৎ বয়ে যায়, হাতের রোমকূপ খাড়া হয়ে যায় আপনা থেকেই, “ধ্যাত, ওইগুলো সম্পূর্ণ নিজস্ব আলোচনা যাকে বলে একদম পার্সোনাল।”
মায়ের গালের লালিমা দেখে প্রচন্ড উত্যক্ত করতে ইচ্ছে করল মাকে, “তৃষা ম্যাডাম তো বুড়ি হয়ে গেছেন, তা তোমার মতন একজন সুন্দরীকে এতক্ষন নিজের চেম্বারে ধরে রেখে...”
ইসস ছেলে বলে কি, লজ্জা আর কামনায় বুকের গভীর থেকে শিরশিরানি বেরিয়ে এলো। আদির দিকে বড় বড় চোখ করে মাতৃ সুলভ ব্যাক্তিত্ব দেখিয়ে বললে, “বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আদি।” গলায় একটু কঠিনতা আনতে চেষ্টা করেছিল ঋতুপর্ণা কিন্তু ছেলের হাসি হাসি মুখ দেখে নিজের হাসি আর থামাতে পারেনি।
আদি বুঝতে পারল যে মা ভীষণ লজ্জায় পড়ে গেছে, কি কারনে পড়েছে সেটা আর জানা যাবে না। মাথা দুলিয়ে মাকে বলে, “আচ্ছা তাহলে চল। বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যাবে।”
ছেলের বাম হাত খানি নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বলে, “হ্যাঁ চল।”
মায়ের নরম ডান হাতের আঙ্গুল ওর বাম হাতের আঙ্গুলের সাথে ওতপ্রোতভাবে পেঁচিয়ে গেল। শক্ত করে চেপে ধরল মায়ের ডান হাত নিজের কঠিন হাতের থাবার মধ্যে। মায়ের শরীর থেকে মিষ্টি মাদকতাময় এক সুবাস আদির নাকে এসে লাগে। কাঁধের কাছেই মায়ের মাথা, বড় ইচ্ছে করে ওই ঘন কালো চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে মায়ের গায়ের সব গন্ধ টেনে বুক ভরিয়ে নেয়। হাতে হাত রেখে আদি আর ঋতুপর্ণা হসপিটাল থেকে বেরিয়ে এলো।
ছেলের হাতে হাত রেখে এইভাবে ঘুরতে বেশ ভালো লাগে ঋতুপর্ণার। বুকের মধ্যে জমে থাকা হতাশাকে দূরে থেকে দেয়। রাস্তায় প্রচন্ড ভিড়, আদির হাতের মুঠো ছেড়ে বাজু দুই হাতে আঁকড়ে ধরে। আদির তুলনায় ঋতুপর্ণা বেশ খাটো আর কমনীয়, তাই মাকে আগলে নিয়ে ভিড় কাটিয়ে যেতে আদির বিশেষ অসুবিধে হয় না।
মায়ের উষ্ণ শ্বাস বারেবারে ওর পিঠের কাছে এসে ঢেউ খেলে যায়। মা যেমন ভাবে ওর বাজু আঁকড়ে ধরে রেখেছে মনে হচ্ছে আগল হাল্কা করলেই আদি পালিয়ে যাবে। ভিড়ের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কির ফলে বারেবারে মায়ের নরম আঁটো স্তন জোড়া আদির বাজুর পেছনে পিষে যেতে থাকে। যে মাত্র মায়ের কোমল স্তনের পরশ বাজুর ওপরে অনুভব করে সেই মাত্র আদির হাতের স্নায়ু চনমন করে ওঠে। আদি মায়ের দিকে না তাকিয়েই বলে, “বাপরে রাস্তায় যা ভিড় পা রাখার তিল মাত্র জায়গা নেই। তুমি হাত ধরে আমার পেছন পেছন থাকবে বুঝলে।”
ছেলের এই গভীর পুরুষালি কণ্ঠের উত্তরে ঋতুপর্ণা শুধু মাথা দোলায়। বেশ ভালো লাগে ছেলেকে এইভাবে ওকে আগলে নিয়ে এগিয়ে যেতে। এখুনি কি বাড়ি ফেরা দরকার? একটু ঘুরে বেড়ালে কেমন হয়। যদিও হাতে বিশেষ টাকা পয়সা নেই, স্কুলে জয়েন করার পরেই মাইনে পাবে, তাই শপিং করার ইচ্ছে থাকলেও সেটা দূরে সরিয়ে দেয় ঋতুপর্ণা। পুজোর বাজার করতে সারা কোলকাতা ভেঙে পড়েছে এই এলাকায়। ঋতুপর্ণা দোকানে সাজানো শাড়ি কাপড় দেখতে দেখতে এগোতে থাকে।
ঋতুপর্ণা কিছু পরে আদিকে বলে, “বাড়িতে কি কোন কাজ আছে?”
আদি দাঁড়িয়ে পরে মাকে জিজ্ঞেস করে, “কেন? কাল তুমি স্কুল জয়েন করছ না?”
ঋতুপর্ণা মাথা দুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, “ভাবছি আরো কিছুদিন বাড়িতে রেস্ট নেব তারপরে স্কুল জয়েন করব। তুই কি কাল কলেজে যাবি না বাড়িতে থাকবি?”
আদি ভেবে পায় না কি করবে। কলেজের নাম করে অন্তত একবার তিস্তার সাথে দেখা করা যেত কিন্তু মা যদি বাড়িতে থাকে আর আদিকেও যদি বাড়িতে থাকতে বলে তাহলে বড় অসুবিধায় পড়তে হবে। এদিকে এই কয়দিনে ওর পুরুষাঙ্গের সঙ্গিন অবস্থা হয়ে রয়েছে। গত কাল থেকে মায়ের মাদকতা ময়ী রূপ দেখে বুকের মাঝে প্রবল যৌন তৃষ্ণা জেগে উঠেছে। কলেজে যে বান্ধবী ছিল সেটা অনেক কাল আগেই কেটে গেছে। ওর অণ্ডকোষ খালি করার একমাত্র স্থান তিস্তার শিক্ত পিচ্ছিল যোনি। এইসব ভাবতে ভাবতেই শুয়ে থাকা পুরুষাঙ্গ ভীষণ ভাবে দপদপ করে ওঠে।
মাথা চুলকে মায়ের দিকে না তাকিয়ে উত্তর দেয়, “না মানে অনেকদিন কলেজে যাওয়া হয়নি। কাল কলেজে যাবো তবে চিন্তা কোরোনা তাড়াতাড়ি চলে আসব।”
আদির চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে ঠোঁটে দুষ্টু মিষ্টি হাসি টেনে জিজ্ঞেস করে, “আমার দিকে দেখে একবার বল যে আগামী কাল কলেজে যাবি?”
আদি বুঝতে পারে যে ওর মা ওর মনের ভাব ধরে ফেলেছে, তাই মাথা চুলকে মায়ের দিকে কোনরকমে তাকিয়ে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, আগামী কাল কলেজেই যাবো। এই সত্যি বলছি, এই তোমাকে ছুঁয়ে বলছি।” বলেই মায়ের দিকে একটু নিচু হয়ে মাথায় ঠোঁট ঠেকিয়ে চুপিচুপি একটা চুমু খেয়ে নিল।
রাস্তা জুড়ে লোকের ভিড় এর মধ্যে হটাত করেই ছেলে এইভাবে ওর মাথায় চুমু খেয়ে নেবে এটা আশাতীত। মাথার ওপরে ভিজে ঠোঁটের পরশে ঋতুপর্ণা চমকে যায়। ভুরু কুঁচকে আদির দিকে কট মট করে তাকিয়ে বলে, “এটা কি হল?” চুমুর পরশে লজ্জায় লাল হয়ে গেল ঋতুপর্ণার কানের লতি আর গাল।
 
আদি মুচকি হেসে বলে, “বাঃ রে মাকে একটু আদর করে দিলাম এই আর কি। আরে এইখানে কেউ আমাদের চেনে না বুঝলে। তোমাকে দেখে কেউ বলতে পারবে না যে তুমি আমার মা।”
বেশ তো এটা, ভেবেছিল আগামী কাল থেকে ছেলের সাথে মিতালী পাতাবে কিন্তু মিতালীর শুরুটা শুরুই হয়ে গেল এমনি এমনি। এই ভাবে দিনক্ষণ দেখে তিথি নক্ষত্র দেখে কি আর এই ধরনের সম্পর্ক শুরু করা যায় নাকি। যদিও এই এক্সিডেন্টের আগে থেকেই আদি সাথে বান্ধবী সুলভ আচরনের সুত্রপাত ঘটে গিয়েছিল। উফফ ভাবা যায় না, সেই ফটোশুটের দিনটা। ধ্যাত ঋতুপর্ণা, আবার কি সব ভাবতে বসেছে। মন কি আর বাঁধা বাঁধন মেনে চলে, মন যে উড়ো পাখী, বসন্তের বাতাস, পাহাড়ি নদী, যেকোনো সময়ে যেকোনো দিকে আপন মনে ধেয়ে যাবে এটাই তো মনের আসল পরিচয়। বাধা দিয়ে আর লাভ কি ঋতুপর্ণা, ছেড়ে দাও নিজের মন, পেখম মেলে নেচেই উঠুক আরো একবার। এইবারে না হয় ছেলের হাত ধরেই নেচে উঠুক।
“আরে আদিত্য নাকি?” হটাত পেছন থেকে একটা মেয়েলি গলার স্বর শুনে আদি আর ঋতুপর্ণা দুইজনেই চমকে ওঠে। পেছনে ফিরে কণ্ঠস্বরের অধিকারিণীর দিকে তাকায় দুইজনে। আদির কলেজের বন্ধু সঞ্জিবের সাথে ওদের কলেজের অনিন্দিতা। সঞ্জিব আর অনিন্দিতা দুইজনেই আদির বেশ ভালো বন্ধু। হস্পিটালে ওর মাকে দেখতে এসেছিল বেশ কয়েক বার।
ঋতুপর্ণা ছেলের হাত ছেড়ে একটু তফাতে দাঁড়িয়ে পড়ে। অনিন্দিতা ঋতুপর্ণার পাশে দাঁড়িয়ে একটু হেসে বলে, “আপনাকে দেখে বড় ভালো লাগছে কাকিমা। সত্যি বলছি আমরা সবাই খুব ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম আপনার এই অবস্থা দেখে।”
ঋতুপর্ণা একটু হেসে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ এখন ভালো আছি। তোমরা কি শপিং করতে বেরিয়েছ?”
হেসে ওঠে সঞ্জীব, “হ্যাঁ কাকিমা।” বলেই অনিন্দিতার দিকে দেখিয়ে বলে, “এই দেখুন না, একটা শাড়ি কিনবে তাতে আমাকে প্রায় বারো চোদ্দ খানা দোকান ঘুরিয়েছে।”
অনিন্দিতা আদুরে ঋতুপর্ণার পেছনে লুকিয়ে সঞ্জীবের দিকে দেখিয়ে বলে, “বাঃ রে কাকিমা কি করব বল। শাড়ি কিছুতেই পছন্দ হচ্ছে না। তাই বলে কি একটু আমার সাথে দোকান দোকান ঘুরতে পারবে না?”
ঋতুপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, “তা ঠিক, মেয়েদের শপিং করতে একটু বেশি সময় লাগে।”
আদি সঞ্জীবের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “আর কলেজের কি খবর রে?”
সঞ্জীব ওকে জিজ্ঞেস করে, “তুই কলেজ কবে থেকে যাওয়া শুরু করছিস?”
আদি মায়ের দিকে একবার তাকায়। ঋতুপর্ণা ওর হয়ে উত্তর দেয়, “আমি এখন অনেকটা ঠিক হয়ে গেছি। আদি হয়ত আগামী কাল থেকেই কলেজে যাওয়া শুরু করে দেবে। তোমাদের সেভেন্থ সেমেস্টার কবে হচ্ছে?”
সঞ্জীব আর আদি দুইজনে একসাথে বলে ওঠে, “পরীক্ষা তো সেই নভেম্বরে গিয়ে হবে। এখন দুই মাসের মতন সময় আছে।”
ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে আদির দিকে তাকিয়ে বলে, “এই কয়দিনে বই খাতা তো শিকেয় তুলে রেখেছিস, এইবারে বাড়ি গিয়ে পড়াশুনা শুরু করতে হবে।”
আদি মাথা চুলকে মাকে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ হ্যাঁ, সব হবে। তুমি আমার পরীক্ষা নিয়ে এত টেন্সান নিও না তো।”
কণ্ঠে একটু মাতৃ সুলভ কঠোরতা এনে আদিকে বলল, “গত সেমেস্টারে ভালো গ্রেড আসেনি এই সেমেস্টারে যেন ভালো গ্রেড হয়। কাল থেকে কলেজে যাওয়া শুরু করিস অন্য কোথাও নয়। যদি শুনি যে কলেজ পালিয়ে অন্য কোথাও গেছিস তাহলে ঠ্যাঙ ভেঙে দেব।”
মায়ের বকুনি খেয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে আদি। মনে মনে জ্বলে ওঠে, হ্যাঁ একবার বাড়ি চল। এইভাবে সবার সামনে আমার মান সন্মান ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলে। সঞ্জীব আর অনিন্দিতা হেসে ফেলে আদির কাঁচুমাচু মুখ দেখে।
অনিন্দিতা হেসে বলে, “উফফ কাকিমা তুমি না, এইভাবে এত বুড়ো ধাড়ি ছেলেকে রাস্তার মাঝে বকে দিলে? ওর প্রেস্টিজের একদম বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দিলে।”
সঞ্জীব হেসে আদির পিঠে এক চাপড় মেরে বলে, “আরে কাকিমা চিন্তা কোরোনা।”
ঋতুপর্ণা, সঞ্জীব আর অনিন্দিতার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওদের বলে, “একদিন তোমরা বাড়িতে এসো না। আদির কখন কোন বন্ধু বান্ধবীকে আজ পর্যন্ত বাড়িতে আনেনি।”
সঞ্জীব নেচে ওঠে, “নিশ্চয় যাবো কাকিমা। এই ছেলেটা কোনোদিন ইনভাইট করেনি তাই না হলে কবে গিয়ে পাত পেড়ে দিতাম।”
ঋতুপর্ণা হেসে বলে, “আচ্ছা তাহলে তনিমাকেও একবার নিয়ে এসো।”
আদি চমকে ওঠে মায়ের কথা শুনে। কিছু বলার আগেই অনিন্দিতা আর সঞ্জীব ওর দিকে তাকায়। ঋতুপর্ণা সবার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে?”
আদির চোয়াল কঠোর হয়ে যায়। হটাত করে আবার তনিমা। তনিমা যদি মায়ের সামনে আসে তাহলে জেনে যাবে আসলে সেইদিন “ঋতু” বলে কাকে ডেকেছিল। এই ঘটনা অবশ্য কলেজের কেউ জানে না, তবে বর্তমানে তনিমা ওদের কলেজের এক সিনিয়ার, বিভাসের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অনিন্দিতা অবস্থার সামাল দিয়ে ঋতুপর্ণাকে বলে, “কাকিমা তনিমা হয়তো আসতে চাইবে না। তবে চিন্তা কোরোনা আমরা সবাই আসবো।”
ঋতুপর্ণা আড় চোখে আদির কটমট করা চেহারার দিকে তাকিয়ে মনে মনে হাসে। আদিও মনে মনে রেগে যায় মায়ের এইধরনের ব্যাবহারে। কি দরকার ছিল সবার সামনে ওর ব্যান্ড বাজানোর। দাঁড়াও না, একবার ট্যাক্সিতে উঠি তারপরে তোমাকে দেখে নিচ্ছি।
ট্যাক্সিতে উঠেই আদি রেগে মেগে মাকে বলল, “তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি। হটাত করে তনিমার কথা কেন উঠাতে গেলে?”
ছেলের রাগ দেখে ঋতুপর্ণার বড্ড হাসি পেয়ে গেল, “ইসসস, তনিমার ব্যাপারে জানতে ইচ্ছে করল তাই জিজ্ঞেস করলাম। এতে এত রেগে যাওয়ার কি আছে বুঝতে পারলাম না।”
আদি উত্তরে বলে, “তোমাকে আগেই বলেছি যে তনিমার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। মনের মিল নেই আর এখন ও একজন সিনিয়ারের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
ঋতুপর্ণা ছেলের হাত চেপে বলে, “আচ্ছা বাবা এবারে রাগ কমা। এত রাগ শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়।” একটু থেমে বলে, “তাই বলে শেষ পর্যন্ত তিস্তার সাথে...”
আদি ভুরু কুঁচকে হেসে ফেলে, “তিস্তার সাথে আবার কি হল। বলেছি তো ওর সাথে ভালো বন্ধুত্ব, এই ব্যাস।”
ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে হেসে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা শুধু মাত্র একটু গভীর বন্ধুত্ব। আর ওর পার্টিতে এত...”
আদি লজ্জা পেয়ে যায়, “ওকে বাবা ওকে, তুমি যা ইচ্ছে তাই ভেবে বসে থাকো আমি আর কি বলব।”
ঋতুপর্ণা একটু গম্ভির হয়ে উত্তর দেয়, “আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই যে তিস্তা অলরেডি কৌশিককে ভালোবাসে।”
আদি উত্তর দেয়, “হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, এক কথা বারবার বলতে হবে না। আর এটা জেনে রাখো তোমার ছেলের বুক অনেক শক্ত অত সহজে ভাঙবে না।”
ম্লান হেসে ঋতুপর্ণা উত্তর দেয়, “এই ধরনের সম্পর্কে কখন কি ভাবে কোথায় আঘাত লাগবে সেটা আগে থেকে কেউই বলতে পারে না আদি। ভবিষ্যতে যদি এই গভীর বন্ধুত্ব থেকে প্রেম জাগে তখন কি করবি। তাই আমি বলছিলাম কি যে আগে থেকে একটু সাবধান হয়ে মেলামেশা করতে।”
আদি দাঁত কিড়মিড় করে উত্তর দেয়, “আচ্ছা বাবা আচ্ছা, এইবারে এই সব ছেড়ে একটু অন্য কথা বলবে।”
ঋতুপর্ণা আদর করে আদির চুলে বিলি কেটে হেসে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা ছেড়ে দিলাম এই সব আলোচনা।” একটু চুপ করে ভেবে বলে, “গাড়িটা কবে পাবো?”
আদি উত্তর দেয়, “আগামী কাল একবার পুলিস স্টেসান যেতে হবে। বনেট একদম চেপ্টে গেছে, ইঞ্জিনে কত ক্ষতি হয়েছে সেটা দেখা হয়নি। ওটাকে নিয়ে গ্যারেজে দিতে হবে। ইন্সিওরেন্স করা আছে সুতরাং আশা করি বেশি খরচ হবে না।” আদি একটু পরে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা বলো না, ডাক্তার কি বলল?”
ঋতুপর্ণা বাইরের দিকে বেশ খানিকক্ষণ তাকিয়ে ভাবে, কি করে আদিকে বলবে যে ডাক্তার ওকে কি পরামর্শ দিয়েছে। ছেলের সাথে গভীর বন্ধুত্ব, কি ভাবে কোন মুখে নিজে থেকে বলবে। ইচ্ছে যে একদম নেই সেটা নয়, ভীষণ ইচ্ছে হয় আবার ছোট হয়ে যেতে, আবার কারুর প্রেমে পড়তে, আবার কারুর সাথে হাতে হাত রেখে খোলা রাস্তা ধরে হেঁটে যেতে। অন্ডালে থাকতে মাঝে মাঝে মাইথন ঘুরতে যেত। কোলকাতা এসে অনেকবার সুভাষের সাথে গঙ্গার পাড়ে বসে চিনে বাদাম খেয়েছে। তবে সে অনেকদিন আগেকার কথা। ঋতুপর্ণা আবার কচি হতে চায়, আবার নিজের জীবন আরো একবার শুরু করতে চায়। হয়ত ছেলের হাত ধরে এই মনস্কামনা সম্পূর্ণ ভাবে পুরন করা যাবে না কিন্তু বন্ধুত্ব পাতিয়ে কিছুটা পুরন করা যাবে।
আদি মায়ের কাঁধে আলতো চাপ দিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হল, হটাত করে কোথায় হারিয়ে গেলে আবার। এমন কি জিজ্ঞস করলাম যে এত ভাবতে হচ্ছে।”
ঋতুপর্ণা ছেলের কাছে সরে এসে, হাতের নখ খুঁটতে খুঁটতে নিচু গলায় উত্তর দেয়, “মানে তোকে কি করে বলি।”
আদি হাহা করে হেসে বলে, “মুখ থেকে বলবে আবার কোথা থেকে বলবে। এমন কি পরামর্শ দিয়েছে যে আমাকে বলতে এত ভাবতে হচ্ছে।”
ঋতুপর্ণা লাজুক হেসে উত্তর দেয়, “না না সেইরকম কিছু না, যে পরামর্শটা দিয়েছে” দ্বিধাবোধ কাটিয়ে উঠে বলেই ফেলে, “তোর সাথে বান্ধবীর মতন আচরন করতে। তাতে তুই আমার এই ফাঁকা বুকে...” এরপরে আর কিছু বলতে পারল না ঋতুপর্ণা। ওর প্রচন্ড লজ্জা পেয়ে গেল, সঙ্গে সঙ্গে দুই হাতে লাজুক লজ্জাবতীর মতন মুখ ঢেকে ফেলে।
আদির বুক হর্ষে নেচে ওঠে। মায়ের কাঁধে হাত রেখে নিজের দিকে টেনে ধরে বলে, “আমি তো আগেই বলেছিলাম, তুমি আমার মায়ের মতন এক সুন্দরী বান্ধবী। দেখলে তো, কাঙ্গালের কথা বাসি হলে খাটে।” মাকে ট্যাক্সির মধ্যে জড়িয়ে ধরে মাথার মধ্যে ঠোঁট চেপে ধরে বলে, “এইবারে নিশ্চয় তোমাকে এক বান্ধবীর মতন করে পাবো।”
ওই উষ্ণ বুকের পরশে লুকিয়ে যেতে ইচ্ছে করল ঋতুপর্ণার, ট্যাক্সি না হলে আদিকে জড়িয়ে ধরত দুইহাতে। বাড়ি আর বেশি দুর নয় তাই ছেলের আলিঙ্গন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে মুচকি দুষ্টু মিষ্টি হেসে উত্তর দেয়, “তবে একটা শর্ত আছে আমার। আমি যখন চাইব তখন আমি মা আর যখন চাইব তখন আমি বান্ধবী।”
আদি মায়ের মুখের কাছে মাথা নামিয়ে ফিসফিস করে চোখ টিপে বলে, “এই রকম সুন্দরী বান্ধবীর জন্য যেকোনো শর্ত মানতে রাজি। তবে শর্তটা শুধু তোমার পক্ষের হয়ে গেল যে।”
মা আর ছেলে দুইজনেই পরস্পরের গায়ে এলিয়ে পড়ে খিলখিল করে হেসে উঠল। ট্যাক্সি ততক্ষণে সোসাইটির গেটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। পুরানো সম্পর্ক আবার নতুন করে জেগে উঠেছে মা আর ছেলের মাঝে।

********** পর্ব নয় সমাপ্ত **********
 
পর্ব দশ (#1)

ভোর বেলা থেকেই বাড়ির কাজে লেগে পড়ে ঋতুপর্ণা। এতদিনের অবহেলায়, নিতা, ওদের কাজের মেয়েটা ঠিকভাবে কাজ করেনি। বাড়িটা দেখে জঞ্জালময় বলে মনে হয়, সিলিংয়ের কোনায় কোনায় ঝুল, ফ্যানগুলোতে নোংরা জমে গেছে। গতকাল রাতে খেয়ে দেয়ে মা আর ছেলে দুইজনে নিজের রুমে যেভাবে ঘুম লাগিয়েছিল, যদি আগুন লেগে যেত তাহলেও কেউ হয়ত উঠত না। বিগত দুইদিনে ওদের ওপর দিয়ে এক বিশাল ঝড় বয়ে গেছে, তবে সব ঝড়ের শেষে যেমন মিষ্টি রোদের দেখা মেলে ঠিক তেমনি ভোরের সূর্য ঋতুপর্ণার মনের আঙিনায় স্বস্তি নিয়ে দেখা দিয়েছে। এত দিন ছেলের কাছে মাতৃময়ী মূর্তি হিসাবে ছিল এইবারে ওদের সম্পর্কের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু, ঋতুপর্ণা আর আদি অবশ্য অনেকদিন আগে থেকেই মিতালী পাতিয়েছিল তবে এইবারে একটু ঘনিষ্ঠ হয়েই মেলামেশা করবে। অন্তত অন্য কোন পুরুষের দিকে ঋতুপর্ণা আর দেখবে না। সকাল সকাল স্নান সেরে ছেলেকে উঠিয়ে দিল। মায়ের কথা ভেবে ভেবে ঠিক ভাবে এতদিন কলেজ করতে পারেনি। এইবারে নিশ্চয় নিশ্চিন্ত মনে পড়াশুনায় মন বসাবে। ছেলে যাওয়ার পরে স্নান সেরে নিল ঋতুপর্ণা। নিতা অবশ্য আগেই চলে এসেছিল, ওকে দিয়ে সারা বাড়ি ধোয়া মোছা করা শুরু করে দিল। নিতা চলে যাওয়ার পরে ফাঁকা বাড়িতে কিছুতেই মন টেকে না।
এক এক করে স্কুলের শিক্ষিকাদের ফোন করে আলাপ করতে শুরু করে দেয়। ওর শরীর ভালো হয়ে গেছে শুনে অনেকেই খুশি বিশেষ করে তিস্তা। তিস্তা জানিয়ে দেয় যে বিকেলে একবার ওর বাড়ি ঘুরে যাবে। মনে মনে হেসে ফেলে ঋতুপর্ণা, এই মেয়েটাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইলেও রাখা যায় না। তিস্তা প্রায় প্রত্যেকদিন ওকে দেখতে হস্পিটালে যেত, বাড়িতে আসার পরেও রোজদিন ফোন করে খবরাখবর নিয়েছে আদির কাছ থেকে। তবে ওর মনে একটাই ভয়, যদি আদি তিস্তার প্রেমে পড়ে যায় তাহলে কি হবে, তিস্তা কি কৌশিককে ছেড়ে ওর বাড়ির বউমা হবে। মন মানতে রাজি নয়, স্কুলের সবাই কি বলবে, ওর কলিগ আবার ওর বউমা। যদি আদি তিস্তার থেকে বয়সে বড় হত তাহলে হয়ত এই সম্পর্ক মেনে নিত ঋতুপর্ণা কিন্তু আদি যে চার পাঁচ বছরের ছোট, এখনো ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেনি। কলেজে কি কোন ভালো মেয়ে নেই যার সাথে আদি প্রেম করতে পারে। এখন আর মা নয় ঋতুপর্ণা, এখন নিজের ছেলের বান্ধবী, হয়তো কোন মেয়ের খোঁজ করে দেবে অথবা তনিমার সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার আসল কারন জানতে পারবে।
ছেলেটাও বড় শয়তান হয়ে গেছে, অবশ্য আগে থেকেই ছিল। রাতে স্লিপের নিচে কোন অন্তর্বাস না পরেই ঘুমানোর স্বভাব। বাড়ির বাইরে শাড়ি শালোয়ার কামিজ ছাড়া কিছু পরে না কিন্তু বাড়িতে ওর পোশাক আশাক বেশ উদার। ঢিলে প্যান্ট টিশার্ট হাত কাটা ম্যাক্সি লম্বা স্কার্ট এই সব পরে। সকালে স্লিপ ছেড়ে একটা ঢিলে গেঞ্জি আর র‍্যাপার পরেছিল ঋতুপর্ণা। আদি ঘুম থেকে উঠেই রান্নাঘরে ঢুকে মাকে দুই হাতে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরেছিল। আদির হাতে বাঁধন ওর নরম পেটের ওপরে যত শক্ত হয় তত গলে যায় ঋতুপর্ণা। শেষ পর্যন্ত একটু আদর করে বকে দিয়ে ছেলেকে নিরস্ত করেছিল না হলে দুষ্টু ছেলেটার হাত ওর পেট নরম নাভি চটকে একাকার করে দিত। ছেলের আলিঙ্গনের তীব্রতা ভীষণ ভাবে ঘন, সকালে হয়ত বাথরুম যাওয়ার আগেই ওর খোঁজে রান্না ঘরে চলে এসেছিল তাই নরম সুগোল পাছার খাঁজে আদির কঠিন পুরুষাঙ্গের ছোঁয়া সঠিক অনুভব করেছিল। কিন্তু কিছু বলেনি ঋতুপর্ণা।
বাড়িতে যারা নাচ শিখতে আসে তাদের বাড়িতে এক এক করে ফোন করে জানিয়ে দিল যে ওর শরীর ঠিক হয়ে গেছে। ওরা যেন বিকেল থেকে আবার নাচ শিখতে আসে। সোসাইটির বিশেষ কেউই ওদের খবর নিতে আসেনি তাই ওর মনে একটু ক্ষোভ জমে আছে। সোসাইটির মাঝের মাঠে ম্যারাপ বাঁধা হয়ে গেছে, আকাশে বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ ছড়িয়ে। এইবারের পুজোটা বেশ ভালোই কাটবে বলে মনে হচ্ছে।
দুপুরে একা একা খাওয়ার সময়ে খুব একা লাগে। অন্য দিনে ঋতুপর্ণা স্কুলে থাকে আর ছেলে থাকে কলেজে, শনি রবি ছেলে বাড়িতেই থাকে তাই অনেকদিন একা খেতে বসার অভ্যেস নেই। খেতে খেতে একবার এই বিশাল বাড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখে। চার কামরার বিশাল ফ্লাট, ডিভোর্সের পরে সুভাষ ওকে দিয়েছিল। কিন্তু ওর চিকিৎসার জন্য টাকা দিয়েছে জানতে পারার পর থেকেই সুভাষের প্রতি বিতৃষ্ণা বেশি করে বেড়ে গেল। যদিও বুঝতে পারল যে সেই সময়ে আদির কিছুই করার ছিল না কারন ওদের একাউন্টে তেমন কিছু টাকা ছিল না। একদিকে গাড়ির ইএমআই, বাড়ির আনুষঙ্গিক খরচ খরচা, নাচের টিচার বলে বিশেষ কিছুই মাইনে পায়না, সব মিলিয়ে এক রকম চলে যায়। ছেলেটা যদি এর পরে একটা ভালো চাকরি পায় তাহলে বেশ ভালো হয়। যদি ছেলের কোলকাতার বাইরে চাকরি হয় তাহলে এই বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে ছেলের সাথে চলে যাবে।
খাওয়া দাওয়ার পরে ঋতুপর্ণা ছেলের রুমে ঢোকে, আলমারি খুলে আদির নোংরা জামা কাপড় গুলো বের করে কাচার জন্য। ইসস, আলমারিটা একদম কাকের বাসা হয়ে রয়েছে, কবে থেকে যে জামা কাপড় কাচা হচ্ছে না তার নেই ঠিক। এতদিন নিজের শরীর ভালো ছিলনা, মানসিক অবস্থাও ভালো ছিল না, বাড়ির দিকে দেখতে পারেনি তাই ছেলের জামা কাপড় কাচা হয়নি। আদির গেঞ্জি, জামা প্যান্ট গুলো এক এক করে বের করে ওয়াশিং মেশিনে ঢুকিয়ে দেয়। ছেলের একটা জামা হাতে নিয়ে নাকে শুঁকে দেখে, উম্মম ছেলের গায়ের গন্ধ একটু বোঁটকা অথচ বেশ লাগে এই পুরুষালি আঘ্রাণ। নীল স্ট্রাইপ দেওয়া জামাটা ঋতুপর্ণার বড় পছন্দের তাই ওটাকে আর কাচতে দিল না। নিজের টিশার্ট খুলে ছেলের জামাটা গায়ে জড়িয়ে নিল। মনে হল যেন আদি ওকে সকালের মতন আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে আছে। প্রথম প্রেমের পুলক জেগে উঠল ওর মনের মধ্যে। জামাটা ওর গায়ে বেশ ঢিলে হলেও ওর ত্বকের সাথে জামার কাপড়ের ঘর্ষণে ওর মনে হল যেন আদির ত্বক ওর ত্বকের সাথে মিশে। ভাগ্যিস ছুটির দিন নয় না হলে আদি হয়ত রান্না ঘরেই ওকে কাবু করে দিত। ছিঃ এ কী ভাবছে, শুধু মাত্র মিতালী পাতিয়েছে তাই বলে কি আর এগোন যায়। কিন্তু চঞ্চল মন সেই বাধা মানে না, বারেবারে নিজের ছেলের আলিঙ্গনে হারিয়ে যেতে ছুটে যায়। না না, এই পাগলামি করা একদম ঠিক নয়, ছেলে আসার আগেই জামা খুলে ফেলবে না হলে ছেলে ওকে আরো বেশি বিরক্ত করবে।
পড়ার টেবিল ঘাঁটতে ঘাঁটতে হটাত করেই ওর চোখ যায় একটা ফাইলের দিকে। ফাইলটা খুলে দেখে ওর মধ্যে হস্পিটালের কাগজ পত্র। কত কি খরচ হয়েছে সেই ব্যাপারে আদিকে জিজ্ঞেস করলে সঠিক উত্তর পাওয়া যাবে না, তাই ফাইলটা খুলে দেখে। হস্পিটালের বিল দেখে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায়, এক ধাক্কায় আড়াই লাখ টাকা! বাপ রে বাপ, হসপিটাল না টাকা কামানোর যন্ত্র। চিকিৎসার নামে আজকাল এটাই বড় ব্যাবসা, টাকা দিলেও অনেক সময়ে সঠিক চিকিৎসা হয় না। সত্যি এত টাকা ওর একাউন্টে ছিল না। মা আর ছেলের জয়েন্ট একাউন্ট, নিজের একাউন্ট চেক করলে নিশ্চয় জানা যাবে সুভাষ কত টাকা দিয়েছে। আদি ল্যাপটপ নিয়ে চলে গেছে না হলে একবার ইন্টারনেটে দেখে নিতে পারত। শেষ পর্যন্ত মোবাইল খুলে একাউন্ট চেক করে ঋতুপর্ণা। টাকার অঙ্ক দেখে একটু ঘাবড়ে যায়, পাঁচ লাখ টাকা। কিন্তু ওর চিকিৎসাতেই প্রায় তিন লাখ টাকার মতন খরচ হয়ে গেছে। আদি বাড়ি ফিরলে জিজ্ঞেস করবে যে বাকি টাকা নিয়ে কি করতে চায়, যদিও সুভাষের টাকা নিয়ে আদিকে কোনোদিন কোন প্রশ্ন করেনি ঋতুপর্ণা। জানতে ইচ্ছে করে, সুভাষ কি আর আদিকে ফোন করেছিল?
হাতের কাজ শেষ করতে করতে বেলা হয়ে গিয়েছিল। বেলা পড়তেই মন ব্যাকুল হয়ে উঠল, কখন আদি বাড়ি ফিরবে। চুপচাপ টিভি চালিয়ে বসার ঘরে বসে থাকে কিন্তু কান খাড়া হয়ে থাকে ফোনের দিকে। ধ্যাত, যত বেলা বাড়ে তত বিরক্তি ভাব বাড়ে। ছেলেটা কি একটা ফোন করতে পারে না নাকি? একবার নিজেই ইচ্ছে করে ফোন হাতে নিয়েছিল কিন্তু যদি আদি ক্লাসে থাকে তাহলে তো ফোন উঠাবে না। না ফোন করবে না, একটু অভিমান হল ছেলের ওপরে। মাকে না হয় নাই করল ফোন, সেটা কোন ছেলেই করে না কিন্তু বান্ধবী বলে কি একটা ফোন করতে নেই নাকি। চোখ টিভিতে কিন্তু হাতের মধ্যে মোবাইলটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে। একটু পরেই নাচ শেখার জন্য মেয়ে গুলো চলে আসবে, ব্যাস্ত হয়ে যাবে। আদি বাড়ি ফিরে কি খাবে, একটু চিঁড়ের পোলাও বানিয়ে রাখলে ভালো।
এমন সময়ে কলিং বেল বেজে ওঠে সেই সাথে ঋতুপর্ণার চিত্ত চাঞ্চল্য বেড়ে ওঠে, নিশ্চয় ছেলে এসেছে। ছোট পায়ে দৌড়ে দরজা খুলে সামনে তিস্তাকে দেখে একটু বিমর্ষ হয়ে যায়। আশা করেছিল ছেলে আসবে।
তিস্তাকে দেখে একটু হেসে জিজ্ঞেস করে, “কি রে তুই স্কুলে যাসনি?”
তিস্তা বাড়ির ভেতরে ঢুকে ঋতুপর্ণাকে জড়িয়ে ধরে এক গাল হেসে বলে, “গেছিলাম কিন্তু তোমার সাথে দেখা করব বলে দৌড়ে পালিয়ে এসেছি।”
তিস্তা আর ঋতুপর্ণা সোফায় বসে গল্প শুরু করে দেয়, “তুই সত্যি একটা পাগল মেয়ে জানিস।” বলেই তিস্তার টোপা গাল টেনে আদর করে দেয়।
তিস্তা জিজ্ঞেস করে, “এমন কি পাগলামি করলাম গো?”
ঋতুপর্ণা হেসে বলে, “বাঃ রে করিস নি। এই যে আমার প্রতি এত দরদ সেটা কিসের জন্য একবার শুনি?”
তিস্তাও কম যায় না, কপট হেসে উত্তর দেয়, “বাঃ রে তুমি যে লক্ষিটি সেই জন্য মন কেমন করে।”
ঋতুপর্ণা চোখ বড় বড় করে বলে, “আচ্ছা” বলেই এক সুর টেনে জিজ্ঞেস করে, “শুধু আমি না অন্য কেউ।”
তিস্তা হেসে ফেলে ঋতুপর্ণার কথার ধরন দেখে, “আরে বাবা ঋতুদি, শুধু তোমার জন্যেই আমার আসা।”
ঋতুপর্ণা হেসে জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা একটা সত্যি কথা বল, যেদিন আমার এক্সিডেন্ট হয়েছিল সেদিন আদি তোর সাথে ছিল।”
এই প্রশ্ন শুনে তিস্তার গলা শুকিয়ে যায়, কান গাল লাল হয়ে ওঠে। মুচকি হেসে অন্যদিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ ছিল, মানে আমি আদি আর আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু বান্ধবী মিলে একটু গল্প করছিলাম।”
ঋতুপর্ণা ওর গালের লালিমা দেখে বুঝতে পারে যে ওদের এই মেলামেশা শুধু মাত্র গল্পে সীমিত নয়। আদির আর তিস্তার মাঝে ফল্গু ধারার মতন ভিন্ন এক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আদিকে প্রশ্ন করলেও এই একই লালিমা দেখতে পায় ছেলের চেহারায়। ঋতুপর্ণা কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “তুই না শুধু শুধু আমার ছেলেটার মাথা খাচ্ছিস।”
তিস্তা ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “কি মাথা খেয়েছি গো। তোমার ছেলে বড় হয়েছে, আর এই আঁচলের তলায় লুকিয়ে রেখো না বুঝলে। এইবারে একটু বাইরে ছেড়ে দাও, নিজের মতন খেটে খুটে খাক।”
ঋতুপর্ণা হেসে উত্তর দেয়, “বাঁধা গরু ছাড়া পেলে কি হয় জানিস।” তিস্তা মুচকি মুচকি হাসে। ঋতুপর্ণা হেসে বলে, “পাগলের মতন এদিক ওদিক লাফিয়ে বেড়ায়, বুঝলি রে।”
তিস্তা হেসে ঋতুপর্ণার গায়ের ওপরে ঢলে পড়ে বলে, “তুমিও না, কত দিন আর ছেলেকে এইভাবে রাখবে। আচ্ছা বল না, আদি কখন বাড়ি ফিরবে।”
ঋতুপর্ণা জিজ্ঞাসু চোখে ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কেন রে, তুই আমার সাথে দেখা করতে এসেছিস না আদির সাথে? সত্যি করে বলতো?”
তিস্তা উত্তর দেয়, “না না, তোমার সাথেই দেখা করতে এসেছি। ভাবছিলাম সবাই মিলে শপিং করতে যাবো তাই জিজ্ঞেস করছিলাম।”
ঋতুপর্ণা হেসে তিস্তার গাল টিপে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ অনেক হয়েছে, আর বানিয়ে বানিয়ে বলতে হবে না, সব বুঝি। তা কৌশিক এখন কি কলকাতায় নেই?”
তিস্তা মাথা নাড়িয়ে চুকচুক করে বলে, “না গো মর্কটটা অফিসের কাজে বাইরে গেছে আসবে পঞ্চমীর দিন। তাই ভাবছিলাম চল না একটু শপিং করে আসি।”
ঋতুপর্ণা ম্লান হেসে উত্তর দেয়, “না রে সোনা মনা, এখুনি মেয়েরা সব নাচ শিখতে চলে আসবে, তারপরে আদি চলে আসবে। আজকে আর হবে না। কাল আমি স্কুলে যাচ্ছি তারপরে যদি সময় হয় তাহলে আগামী কাল শপিংয়ে যাবো।”
তিস্তা নেচে ওঠে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, কালকেই তাহলে যাওয়া যাবে। আদি থাকবে তো?”
ঋতুপর্ণা কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “এত বেশি আদি আদি করিস না, কৌশিকের কানে গেলে আর তোকে আস্ত রাখবে না। যাই হোক স্কুলের কথা বল। নিলীমাদি কেমন আছে, মৌমিতার কি খবর?”
তিস্তা চোখ বড় বড় করে বলে, “বাপ রে তোমার দেখি সবার কথা মনে আছে, আমি তো ভেবেছিলাম তুমি সব্বাইকে ভুলে গেছ। যেভাবে প্রথম দিন রিয়াক্ট করেছিলে না।” বলেই হেসে ফেলে।
ঋতুপর্ণা একটু লজ্জিত হয়ে বলে, “ধ্যাত তুই না, আমার সব্বার কথা মনে আছে, অন্যেরাই আমাকে মনে করে না।”
তিস্তা আক্ষেপের সুরে বলে, “আরে ছাড় না।” ঋতুপর্ণাকে জড়িয়ে ধরে হেসে বলে, “তুমি না সত্যি বলছি, যত দিন যাচ্ছে তত তুমি কচি হয়ে যাচ্ছ। এই হসপিটাল থেকে ফিরে এসে তো আরো কচি হয়ে গেছ। পারো কি করে বলতো?”
তিস্তার কথা শুনে ঋতুপর্ণা একটু লজ্জা পেয়ে যায়। হসপিটাল থেকে ফিরে এসে একটু রোগা হয়ে গেছে সেই সাথে একটু ফ্যাকাসে, তাতে ওর রঙ আরো বেশি ফুটে উঠেছে। গতকাল তৃষাও এক কথা ওকে বলেছিল, আদিও এক কথা বলে। ভুরু কুঁচকে হেসে তিস্তার গাল টিপে বলে, “আর লজ্জা দিস না, আমি কচি হচ্ছি আর তুই বুড়ি হচ্ছিস নাকি?”
তিস্তা একটু দুষ্টুমি করে ঋতুপর্ণাকে জড়িয়ে ধরে গালে একটা চুমু খেয়ে বলে, “তোমার মতন আমার একটা বড় দিদি থাকলে বড় ভালো হত।”
ঋতুপর্ণাও তিস্তাকে মজা করে বলে, “তাতে বাধা কোথায় আমার বেশ ভালো হত, আদিও একটা দুষ্টু মিষ্টি মাসি পেয়ে যেত, তাই না।”
তিস্তা একটু মুখ গোমড়া করে উত্তর দেয়, “এই যাও তো, আমি কেন ওর মাসি হতে যাবো।”
ঠিক সেই সময়ে নাচ শেখার জন্য মেয়েরা এক এক করে আসতে শুরু করে দেয়। তিস্তাও উঠে পড়ে ফেরার জন্য, “ঋতুদি, আমি আসি তাহলে।”
যদিও ইচ্ছে ছিল না তাও ঋতুপর্ণা ভদ্রতার খাতিরে ওকে বলে, “থেকে যা, কাল একসাথে স্কুলে যাবো।”
তিস্তা চোখ বড় বড় করে হেসে বলে, “সত্যি বলছ। না না, আজকে থাকতে পারবো না গো। আমি না গেলে আমার রুম মেট, মৌমিতা ওর বয় ফ্রেন্ড নিয়ে এসে আমার বিছানায় চোদাচুদি শুরু করে দেবে।” বলেই হেসে ফেলে।
স্কুলে টিচার কমন রুমে এই সব নিয়ে বেশ গল্প গুজব হয়। অনেকেই নিজেদের যৌনতার গল্প সহকর্মীনিদের সাথে করে। গল্প গুলো শুনতে বেশ লাগে, তবে ঋতুপর্ণা ওর মধ্যে কোনোদিন বিশেষ যোগদান করেনি। শব্দটা কানে যেতেই ঋতুপর্ণা ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকায়।
তিস্তাও হেসে ফেলে বলে, “বাপ রে বাপ, স্কুলে না হয় একদম ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে থাকো তাই বলে কি বাড়িতেও তোমার সাথে একটু খুলে কথা বলতে পারবো না?”
ঋতুপর্ণা ওর গাল টিপে বলে, “আচ্ছা বাবা, আমি কি কিছু বলেছি তোকে? যাই হোক সাবধানে বাড়ি ফিরিস।”
তিস্তা চলে যাওয়ার পরে ঋতুপর্ণা ব্যাস্ত হয়ে পড়ে নাচ শেখাতে।
 
পর্ব দশ (#2)

ধ্যাত শালা মোবাইলটা এমন সময়েই খারাপ হতে হত। বাড়ির ফেরার সময়ে সারাটা রাস্তা আদি ওর ভাঙা মোবাইল হাতে নিয়ে ভাবতে থাকে। ভেবেছিল লাঞ্চের সময়ে মায়ের সাথে একটু গল্প করবে কিন্তু বাথরুম যাওয়ার সময়ে একজনের সাথে ধাক্কা খেয়ে মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে গিয়ে ভেঙে গেল। সেই জুনিয়ার ছেলেটার মুন্ডপাত করল আদি। লাঞ্চের পরে প্রাক্টিকাল ক্লাস ছিল, আর প্রাক্টিকাল করতে করতে দেরি হয়ে গেল। তনিমা আর আজকাল ওর দিকে তাকায় না, আদিও ওর নজর তনিমার ওপর থেকে সরিয়ে নিয়েছে। ওর হৃদয় জুড়ে শুধু ওর সুন্দরী লাস্যময়ী মা। এমনকি প্রাক্টিকাল করতে করতেও দার্জিলিঙের সেই রাতের দৃশ্য চোখের সামনে দেখতে পায়। বুকের রক্ত সঙ্গে সঙ্গে চঞ্চল হয়ে ওঠে। প্রাক্টিকাল না থাকলে আর মোবাইলটা ঠিক থাকলে তিস্তাকে একটা ফোন করত, ওর সাথে দেখা করার বড্ড ইচ্ছে ছিল। কবে যে আবার ডাক আসবে সেই ভাবে আদি। বাড়িতে যে বান্ধবী আছে তার সাথে ঠাট্টা ইয়ারকি মন খুলে গল্প করা ইত্যাদি চলে কিন্তু তার বেশি কিছুই করা চলে না কারন তারপরে যে একটা বিশাল অলঙ্ঘনীয় গন্ডি, সেখানেই মা আর ছেলের সম্পর্ক চলে আসে।
ঘড়ি দেখল আদি, ছটা বাজে, এতক্ষনে নিশ্চয় মা নাচের টিউশানি করছে। প্রতীকের সাথে আরো একটু এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায়, আড্ডা মারে।
সিগারেট টানতে টানতে প্রতীক ওকে জিজ্ঞেস করে, “কি রে বাল, তনিমা চলে যাওয়ার পরে কি আর কাউকে কিছু করবি না নাকি?”
আদি উত্তর দেয়, “বাল হাতি পোষা আর গার্ল ফ্রেন্ড পোষা এক ব্যাপার। আমি শালা এমন এক গার্ল ফ্রেন্ড চাইছি যে আমাকে পুষবে।”
হাহা করে হেসে ফেলে প্রতীক, “তাহলে তোকে বিড়লা আম্বানির মেয়েকে দেখতে হয়। তবে শালা কলেজে অনেকেই গুদ খুলে পড়ে রয়েছে, একটু নজর দে ঠিক উঠাতে পারবি।”
আদি প্রশ্ন করে, “কি আলবাল বকছিস গান্ডুচোদা, আজকাল তোর আর জুলিয়ার বেশ চোদাচুদি চলছে মনে হচ্ছে। মালের গাঁড় মাই দিনে দিনে ফুলছে দেখছি। রোজ দলাই মালাই করছিস নাকি রে?”
প্রতীক মুচকি হেসে গলা নামিয়ে বলে, “আহা রে জুলিয়ার কথা আর বলিস না। মেয়েটাকে উঠাতে বড় পাঁপড় বেলতে হয়েছিল কিন্তু এখন মাল একদম সাইজে। উফফফ মাই ছোট ছোট হলে কি হবে, নিপল দুটো বেশ বড় রে।”
আদি হেসে ফেলে, “তা যখন তোর হাতে পড়েছে এইবারে মাই বাড়তে বিশেষ সময় নেবে না। তা কন্ডোম ছাড়া ঢুকাস না ছাতা নিয়ে চুদিস?”
প্রতীক বলে, “আরে বাল কে রিস্ক খাবে বল। কন্ডোম দিয়েই চুদি, তবে মাঝে মাঝে সেফ টাইমে কন্ডোম ছাড়াই চুদি তবে কিছুতেই মাল ভেতরে মাল ফেলতে দেয় না। ডগি করে চুদে গাঁড়ের ওপরে মাল ফেলি আর কি।” একটু থেমে বলে, “তুই তনিমাকে কয়বার লাগিয়েছিস?”
আদি মুচকি হেসে বলে, “উফফ মালটাকে বেশ সাইজে করেছিলাম, লাগিয়েও ছিলাম বেশ কয়েক বার। দিব্যি জম্পেশ গোলগাল মাল ছিল বে, একদম ঠাসা, ডাঁসা পেয়ারা।”
প্রতীক হেসে ফেলে, “এই রকম ডাঁসা পেয়ারা তোর চোদন খাওয়ার পরেও কেটে গেল কি ভাবে রে? গুদ কি ফাটিয়ে দিয়েছিলিস নাকি রে?”
আদি গল্প বানিয়ে বলে, “না বে, একটু গাঁড়ে ঢুকাতে চেয়েছিলাম বলে কি না যত্তসব বাজে কাজ। ইসস, তারপরে আর কি, ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কিছু বলল, তোর সাথে মিল নেই, তোর মেন্টালিটি আলাদা।”
প্রতীক উত্তর দেয়, “আরে বাল ছিপি খোলার জন্য একজনের দরকার ছিল, তোকে দিয়ে ছিপি খুলিয়ে নিয়েছে; এখন গুদ তো একদম দুর্গাপুর হাইওয়ে করে ফেলেছে।” গলা নামিয়ে বলে, “বাল কাল জানিস অনিন্দিতা প্যান্টি পরে আসেনি। উফফ কি ফোলা নরম পাউরুটির মতন গুদ মাইরি, পুরো কামানো একফোঁটা বাল নেই। সঞ্জীব মনে হয় নিজের বাড়া কেটে ওইখানে ঢুকিয়ে রেখে দেয়।”
ভুরু কুঁচকে আদি প্রশ্ন করে, “তুই বাঞ্চোত ছেলে ওর গুদ দেখলি কি করে বে?”
প্রতীক গত দিনের গল্প শুরু করে দিল, “গত কাল অডিটোরিয়ামে একটা নাটকের রিহার্সাল চলছিল। ভাবলাম যে নতুন মালের দেখাটেখা পাবো তাই আমি আর বিভাস নাটকের রিহার্সাল দেখতে গেলাম। অন্য স্ট্রিমের বেশ কয়েকটা জম্পেশ মাল ছিল ওইখানে বে, তুই থাকলে তুই শালা বাঁড়া নাচাতিস। যাই হোক, অনিন্দিতা কালো একটা স্কার্ট পরে এসেছিল, সেটা শালি হাঁটুর ওপরে তুলে স্টেজের একদিকে বসে ছিল, ব্যাস আর কি। দুই মোটা মোটা থাই ওই ভাবে ফাঁক করে বসে থাকলে কেই না দেখতে পাবে ওর রসালো গুদ। সেই সব দেখে বিভাস আবার ওর পাশে গিয়ে বলে, এই সারা পৃথিবী তোর ফুটো দেখে ফেলেছে। তখন ওর খেয়াল হয়, এমা বলে সঙ্গে সঙ্গে স্কার্ট নামিয়ে বসে।” হিহি করে দুইজনেই হেসে ওঠে।
আদি ঘড়ি দেখল, সাতটা বাজে, এই বারে বাড়ির পথ ধরতে হবে না হলে মা রেগে যাবে। এমনিতেই হয়ত রেগে, সারাদিনে ফোন করতে পারেনি। প্রতীকের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ভুবনের দোকানে মোবাইল দিয়ে বাড়ির ফিরে যায়। অনেকদিন থেকেই একটা ভালো মোবাইল কেনার ইচ্ছে ছিল। এই ধাক্কায় যদি মাকে বলে কয়ে একটা মোবাইলের যোগাড় করে যায়। এতক্ষনে নিশ্চয় মায়ের নাচের ক্লাস শেষ হয়ে গেছে। কলিং বেল বাজিয়ে দরজার সামনে দাঁড়াতেই একটু ভয়ে বুকের ধুকপুকানি বেড়ে গেল। মা পিঠের ছাল উঠিয়েই ছাড়বে, কিন্তু ওর অজুহাত মিথ্যে নয় তারপরে এখন তো আর আগের মতন নয়, একেবারে বান্ধবী হয়ে গেছে।
দরজা খুলেই মুখ গম্ভির করে ছেলেকে জিজ্ঞেস করে ঋতুপর্ণা, “এত দেরি কেন হল? সারাদিনে একবারের জন্যেও কি ফোন করা যেত না?”
মাথা চুলকায় আদি, “না মানে মোবাইলটা খারাপ হয়ে গেছে।” মোবাইল কিভাবে খারাপ হয়েছে সেটা বিস্তারিত বলার পরে মা শান্ত হয়।
নাচের ক্লাস শেষে মা মনে হয় স্নান করেছে নয়ত গা ধুয়েছে। একটা পাতলা প্লাজোর ওপরে একটা ঢিলে গেঞ্জি পরে। মাকে আগেও বাড়িতে প্লাজো অথবা চাপা লেগিন্সের অথবা ট্রাক প্যান্ট পরতে দেখেছে, তবে সেই সময়ে মাকে দেখে আদির মনে এই ভাবে আদর করার শখ জাগেনি। যেদিন থেকে মায়ের প্রতি ওর আদরের মাত্রা বেড়েছে সেইদিন থেকে মাকে এই আধুনিক খোলা মেলা পোশাকে দেখলেই ওর রক্তের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আদির মনে হয় সবসময়ে মাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দেয়, তবে মাঝে মাঝে আদরের উষ্ণতা চরমে উঠে যায় তখন রাশ টানতে হয়। প্লাজোটা ঋতুপর্ণার পাছার ওপরে এঁটে বসা যার ফলে ভেতরের প্যান্টির লাইনিং পেছন থেকে পরিস্কার ফুটে ওঠে। হাল্কা রঙের প্লাজো ভেদ করে ভেতরের গাড় রঙের প্যান্টিটা পরিস্কার বোঝা যায়, সেই দেখে আদির তলপেটের রক্ত দুড়দাড় করে দৌড়ে নিচে নেমে যায়।
ঋতুপর্ণা দরজা বন্ধ করে ছেলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “চা খাবি তো নাকি? আমি তোর জন্য চিঁড়ের পোলাও বানিয়েছি। তাড়াতাড়ি হাত মুখ ধুয়ে আয় তারপরে খেয়ে দেয়ে পড়তে বসে যা।”
ধ্যাত, বাড়ি ফিরে ভেবেছিল বান্ধবীকে পাবে তা না, যেমন ভাবে কঠিনতা দেখাচ্ছে মা তাতে বন্ধুপ্রীতির লেশ মাত্র গন্ধ নেই, বরং এক কঠোর মাতৃ রূপ ফুটে উঠেছে মায়ের চেহারায়। আদি চুপচাপ নিজের ঘরে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে দেখে মা ওর জন্য চা আর খাবার নিয়ে বসার ঘরে টি টেবিলে বসে।
ওকে দেখেই ঋতুপর্ণা প্রশ্ন করল, “কলেজে কি হল?”
আদি মায়ের পাশে বসে এক এক করে কলেজের ঘটনা বলে, ক্লাস, প্রাক্টিকাল ইত্যাদি, তার মাঝে বন্ধুদের সাথে আড্ডার আলাপ তবে সংযত মাত্রায়। মায়ের চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই কখন মাতৃ রূপ প্রকাশ পাবে আর কখন বান্ধবী হবে। শর্ত অনুযায়ী মাতৃ রূপ আর বান্ধবী রূপের প্রকাশ মায়ের অধীনে।
গল্প করতে করতে এক সময়ে আদি হেসে মাকে বলে, “আচ্ছা আমি কি করে বুঝবো যে তুমি কখন আমার সাথে বান্ধবীর মতন আচরন করবে?”
এতক্ষন ঋতুপর্ণাও চুপ করে ছেলের কথাবার্তা শুনে যাচ্ছিল, হটাত এই প্রশ্নে ও হেসে দিল, “কেন বুঝতে পারবি না? নিজেই নিজের মতন করে বুঝে নিস, দেখি তুই কতটা আমাকে বুঝতে পারিস।”
অগত্যা আদি মাথা চুলকে বলে, “আমি অন্তর্যামী নাকি। মেয়েদের মন মুনি ঋষিরা বুঝতে পারল না আমি তো মানুষ মাত্র।” বলেই হেসে ফেলে।
ঋতুপর্ণাও হেসে ফেলে ছেলের কথা শুনে, “ঠিক আছে আগে তুই কলেজের পড়াশুনা সেরে ফেল তারপরে রাতে খাওয়ার টেবিলে গল্প করা যাবে।” চা জলখাবার শেষ করে ঋতুপর্ণা উঠে চলে গেল।
মা উঠতেই আদির চোখ আটকে গেল মায়ের মদালসা চলনে। দুই ভারি সুগোল পাছার ওপরে পাতলা প্লাজো এঁটে বসে গেছে, হাঁটার তালে দুই ভারি সুগোল পাছা এদিকে ওদিকে দুলছে, পাতলা প্লাজোর নিচ থেকে মায়ের পাছার ওপরে চেপে বসা গাড় রঙের প্যান্টির দাগ দেখা যাচ্ছে। এইসব দেখে আদি সোফা ছেড়ে উঠে পড়ল, দুই পা মায়ের পেছন পেছন এগিয়ে গেল।
পেছনে পায়ের শব্দ পেয়ে ঋতুপর্ণা ছেলের দিকে ঘুরে তাকিয়েই বুঝতে পারল যে ছেলে ওর দিকে এক তৃষ্ণার্ত চাহনি নিয়ে তাকিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে শরীরের সব রোমকূপ একসাথে জাগ্রত হয়ে উঠল। বিশেষ করে যখন বুঝতে পারল যে ছেলের চোখের দৃষ্টি ওর সুগোল পাছার ওপরে নিবদ্ধ তখন ওর পাছা জোড়া কেঁপে উঠল। মন ব্যাকুল হয়ে উঠল এক অজানা আশঙ্কায় এই বুঝি ওর ছেলে ওকে জড়িয়ে ধরে আর চটকে আদর করে দেয়। যে ভাবে ওর দিকে তাকিয়ে ওকে খাবলে দেখছে তাতে ঋতুপর্ণা নিজের অজান্তেই কেঁপে ওঠে। অদৃশ্য চুম্বকীয় টানে ঋতুপর্ণার দৃষ্টি চলে যায় ছেলের জানুসন্ধির দিকে। প্যান্টের সামনের দিক বেশ ফুলে উঠেছে, উফফ এই দেখেই ঋতুপর্ণার রক্তে হিল্লোল দেখা দেয়। একটু তাড়াতাড়ি হেঁটে রান্না ঘরের মধ্যে ঢুকে যায়।
রান্না ঘরে ঢোকার আগে ঠোঁট কেটে দুষ্টুমি ভরা এক হাসি দিয়ে ছেলেকে বলে, “যা শয়তান নিজের ঘরে যা।”
আদি নিচের ঠোঁট চেপে হেসে মায়ের দিকে আধ বোজা চাহনি নিয়ে তাকিয়ে হেসে বলে, “এইবারে মনে হচ্ছে কিছু একটা হচ্ছে।”
ঋতুপর্ণার গলা শুকিয়ে আসে এক যাতনায়। মন চাইছে ছেলের কাছে এই কিছু হচ্ছের অর্থ জানতে কিন্তু একটু দ্বিধা বোধ জাগার ফলে মাতৃ সুলভ কড়া কণ্ঠে বলে, “নিজের ঘরে যা, আর রাতের খাওয়ার আগে একদম উঠবি না।”
আদিও বাধ্য ছেলের মতন মাথা দুলিয়ে বলে, “আমি উঠবো না কথা দিলাম কিন্তু।” মায়ের দিকে একটা উড়ো চুমু ছুঁড়ে দিয়ে বলে, “মাঝে মাঝে একটু দেখা দিয়ে যেও না হলে উঠতে হবে। তোমার দেখা না পেলেই কেমন কেমন মনে হয়।”
ঋতুপর্ণার শরীর বেয়ে শিক্ত বাসনার ধারা বয়ে যায়। ছেলের কথার ধরনে নিজেকে উজাড় করে দিতে ইচ্ছে করে। গলার স্বর ধিরে ধিরে অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হয়। কিন্তু এই মনোভাব ডেকে আনলে বড় মুশকিল, তাই কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “অনেক প্রেম দেখানো হয়েছে এইবারে যা, না হলে খুন্তি দিয়ে পিঠের ছাল ছাড়িয়ে দেব কিন্তু বলে দিলাম।”
আদিও কম যায় না, মাকে উত্যক্ত করা জন্য রান্নাঘরে ঢুকে বলে, “পিঠের ছাল ছাড়িয়ে দিলে আমার লাভ, তাহলে সেই ব্যাথায় মালিশ করার জন্য অন্তত তুমি আমার কাছে আসবে।”
পারছে না ঋতুপর্ণা আর নিজের উড়ো চিত্তটাকে সামলাতে। ভাবতে পারেনি যে আদি রান্নাঘরে ঢুকে পড়বে। ভেবেছিল হয়ত ওর মাতৃ সুলভ কণ্ঠ স্বর শুনে পড়তে চলে যাবে। কিন্তু আদিও যেমন দুষ্টুমিতে নেমেছে ঠিক সেই দুষ্টুমি ঋতুপর্ণার হৃদয়েও ভর করেছে। আদি কয়েক পা মায়ের দিকে এগিয়ে এসে পেছনে দাঁড়িয়ে পড়ে। ঋতুপর্ণা প্রমাদ গোনে, নিজের দেহের শিরশিরানি আয়ত্তে আনার জন্য স্ল্যাবে হাত রেখে চোয়াল চেপে দাঁড়িয়ে যায়। এই বুঝি ছেলে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরবে। কিন্তু আদি সেই পথে একদম যায় না। মাকে স্ল্যাব ধরে দাঁড়াতে দেখেই আদি বুঝতে নেয় যে মায়ের ভেতরে কিছু একটা হচ্ছে। এত কাছ থেকে এইভাবে কোন নারীকে লজ্জা পেতে অথবা কাঁপতে কোনোদিন দেখেনি। তনিমা অথবা তিস্তার সাথে এই লাজুক মুহূর্ত কোনোদিন পায়নি। কি ভাবছে ওর মা?
আদি মায়ের কাঁধে হাত রাখতেই, ঋতুপর্ণার হাতের রোমকূপ দাঁড়িয়ে যায়। আদি নিচু গলায় বলে, “প্লিস মাঝে মাঝে একটু দেখা দিয়ে যেও।”
ছেলেটা বড্ড দুষ্টু, শুধু মাত্র কাঁধ ছুঁয়ে কানের কাছে এসে নিচু গলায় কথা বলে চলে গেল। তপ্ত কানের লতিতে ছেলের উষ্ণ শ্বাসের পরশে ঋতুপর্ণার সারা শরীর শিক্ত হয়ে গেল। ঢিলে গেঞ্জির নিচে বাঁধন হারা দুই কোমল স্তনের বোঁটা শক্ত হয়ে গেল। ভাগ্যিস আদি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে না হলে মায়ের ফুটে ওঠা স্তনের বোঁটা জোড়া ছেলে দেখতে পেত।
কোনরকমে নিজেকে সামলে ঋতুপর্ণা উত্তর দিল, “আচ্ছা তুই পড়তে বস, আমি যাবো খনে।”
ছেলে চলে যেতেই বুক চেপে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে ঋতুপর্ণা। ছেলের দিকে এই অদম্য টান কিসের জন্য অনুভব করছে। শুধু কি এক তৃষ্ণা এই বুকে না অন্য কিছুও আছে এর সাথে। রান্না চাপিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে একটা ওষুধ খেয়ে চুপচাপ নিজের বিছানায় অনেকক্ষণ বসে থাকে ঋতুপর্ণা। ওর শরীর ওর দেহ ওর মন একটু ভালোবাসা চায় কিন্তু সেই অসীম তৃষ্ণা কে মেটাবে। ছেলের কাছ থেকে নিশ্চয় এই তৃষ্ণার শিতল বারি চাওয়া যায় না।
 
পর্ব দশ (#3)

পড়তে বসে প্রথমে কিছুতেই আর বইয়ে চোখ রাখতে পারে না আদি। বারেবারে আদির চোখের সামনে মায়ের উলঙ্গ দেহ, মায়ের সুগোল পাছার দুলুনি ইত্যাদি ভেসে ওঠে। বেশিক্ষণ এইভাবে বসে থাকতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বাথরুমে ঢুকে পড়ে আদি। দুটো সিগারেট স্টিম ইঞ্জিনের মতন টেনে বুকের কোণে লুকিয়ে থাকা এই নিষিদ্ধ অভিলাষকে সরিয়ে দেয়। ওর শরীরের প্রতিটি রোমকূপ উন্মুখ হয়ে ওঠে কারুর সাথে মিলনের জন্য। কিন্তু কে সেই নারী, মা ছাড়া অন্য কাউকে কিছুতেই মনের মধ্যে স্থান দিতে পারছে না। হাতের কাছে একমাত্র তিস্তা, ওকেই না হয় বিছানায় ফেলে চোখ বুজে মাকে ভেবে নেবে। ভেবে নেবে তিস্তা নয় ওর নিচে ওর মা শুয়ে যাকে আদি পাগলের মতন করে ভালোবেসে সঙ্গম করবে। আদি জানে এই বান্ধবী সুলভ আচরন করেই হয়ত একদিন মায়ের মন পাওয়া যাবে আর সেটা আদি বুঝতে পেরে যায় মায়ের ওইভাবে স্ল্যাব ধরে দাঁড়ানো দেখে। আদি বুঝতে পারে যে মাও এক ভীষণ দ্বন্দে ভুগছে, এই দ্বন্দ কবে কাটবে কবে ওদের মাঝের মেঘ কেটে সব কিছু পরিস্কার হয়ে দাঁড়াবে সেই অপেক্ষায় প্রহর গোনে। পড়াতে আর মন বসাতে পারল না আদি, সামনে বই খাতা খুলে শুধু মায়ের সাথে ভালোবাসার চিন্তায় নিমজ্জিত হয়ে গেল।

ঋতুপর্ণা বেশ কিছুক্ষণ পরে রান্না বান্না সেরে, ভীষণ উত্তেজনা নিয়েই আদির ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ালো। ছেলে যে বড় হয়েছে, ওর নিজের কিছু চাহিদা আছে, প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই এই চাহিদা ক্ষুধা তৃষ্ণার মতন বিদ্যমান। সেই চাহিদা সেই ক্ষুধা মেটাতে অক্ষম ওর বিবেক কিন্তু মন যে কিছুতেই বাঁধ মানে না। আদি চুপচাপ বই খুলে মাথা গুঁজে কিছু একটা করছে। কি করছে সেটা পেছন থেকে দেখে ঠিক ভাবে বুঝতে পারল না ঋতুপর্ণা। তবে ছেলের উলঙ্গ ঊর্ধ্বাঙ্গ দেখে ওই বলিষ্ঠ বাহুর মাঝে নিজেকে তীব্র বাঁধনে বাঁধতে ইচ্ছে করল। দিনে দিনে বড্ড দুষ্টু হয়ে যাচ্ছে ছেলে, কেন নিজের থেকে একজন বয়সে বড় মেয়ের সাথে জড়িয়ে পড়ল সেটা জানতে ইচ্ছে করে। কিন্তু একেবারে এক ধাক্কায় কি আর এত খোলামেলা হতে পারা যায় নাকি ছেলের সাথে। ওকেও মেপে মেপে চলতে হবে যেমন আদিও বিকেলে ওকে হটাত করে জড়িয়ে ধরেনি, নিশ্চয় ছেলের মনের ভেতরে সেই একই দ্বন্দ চলছে। ঋতুপর্ণা আস্তে আস্তে ছেলের চেয়ারের পেছনে এগিয়ে গেল। খোলা বইয়ের দিকে তাকাতেই ওর বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে উঠল।

আদি বুঝতে পারেনি ওর মা ওর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। বই খুলে বইয়ের মধ্যে মায়ের একটা ফটোর দিকে এক ভাবে তাকিয়ে কি সব ভাবছিল। ছবিটা অনেকদিন আগের তোলা, যখন মায়ের বয়স কম ছিল। ছবিটা সম্ভবত বাবা তুলেছিল, ছবিতে মা হাঁটু পর্যন্ত সাদা রঙের ছোট শাড়ি পরে দুই হাত কোমরে ভাঁজ করে একটু বেঁকে দাঁড়িয়ে। গলায় ফুলের মালা, মাথার চুড়ে ফুলের মালা বাঁধা, কব্জিতে বাজুতেও ফুলের মালা বাঁধা, ঠিক যেন শকুন্তলা। মায়ের ভারি পীনোন্নত স্তন জোড়া খুব ছোট আঁটো একটা লাল কাঁধ বিহীন কাঁচুলিতে ঢাকা। মায়ের কমনীয় দেহের বেশির ভাগ উন্মুক্ত, দুই পেলব বাহু, হাঁটুর থেকে পায়ের গুলি পায়ের পাতা, শাড়ির কুঁচি নাভির অনেক নিচে। চাপা শাড়িটা মায়ের কোমরের নিচে ওতপ্রোত ভাবে লেপ্টে রয়েছে। মায়ের সুগোল মোটা জঙ্ঘা দুটো শাড়িতে ঢাকা থাকলেও ওর আকার অবয়ব পরিস্কার ভাবেই দেখা যাচ্ছে। এই ছবি একদিন মায়ের আলমারিতে খুঁজে পেয়েছিল, সেই থেকে এই ছবিটা ওর মনে ধরে গিয়েছিল তাই লুকিয়ে রেখেছিল। মাঝে মাঝেই এই ছবির দিকে একমনে তাকিয়ে হারিয়ে যায় মায়ের অসম্ভব সুন্দরী লাস্যময়ী ঠোঁটের হাসিতে। কত রাত একা একা নিজের মনকে শান্ত করে বলেছে, যদি আমি তোমার ছেলে না হয়ে অন্য কেউ হতাম তাহলে তোমাকে নিয়ে আমি পালিয়ে যেতাম।

ঋতুপর্ণা নিজের ছবি ছেলের বইয়ের মধ্যে লুকানো দেখে ঠোঁট কেটে হেসে ফেলল। খুব সন্তর্পণে ছেলের কাঁধের কাছে ঝুঁকে লুকোচুরির ধাপ্পা দেওয়ার মতন মাথার পেছনে চাঁটি মেরে বলে, “কি রে কি পড়ছিস?” মনোভাবটা এমন যেন কি করছে সেটা একদম টের পায়নি।

মায়ের নরম হাতের চাঁটি খেয়ে আদি থতমত খেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বই বন্ধ করে দেয়। এই যা মা কি দেখে ফেলল নাকি। ওর চুরিটা ধরা পড়ে গেলে মা হয়তো কথা বলাই বন্ধ করে দেবে। কিন্তু ঘাড় ঘুরিয়ে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের হাসি দেখে বুঝতে পারল যে মা ওর মনোভাব টের পায়নি। হাঁপ ছেড়ে বাঁচল আদি, যাক এই যাত্রায় খুব বাঁচান বেঁচে গেছে, এইবার থেকে রাতে মা ঘুমিয়ে যাওয়ার পরেই এই ছবি খুলে বসবে না হলে...

আদির কান গাল গরম হয়ে গেছে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে। ক্ষণিকের মধ্যেই সেই মনোভাব কাটিয়ে হেসে মাকে জিজ্ঞেস করে, “রান্না হয়ে গেছে?”

ছেলের চুলে বিলি কেটে আদর করে বলে, “হ্যাঁ হয়ে গেছে, খিদে পেয়েছে নাকি তোর?”

আদি চেয়ার ঘুরিয়ে মায়ের কোমর পেঁচিয়ে ধরে আদর করে বলে, “হ্যাঁ খিধে তো পেয়েছে।” বলেই পাতলা গেঞ্জিতে ঢাকা মায়ের নরম পেটের ওপরে গাল ঠোঁট ঘষে দিল।

ছেলের এই আচরনে ঋতুপর্ণার শরীর কাঠ হয়ে গেল। এমনিতেই ওর বুক ভরে উপচে পড়ছিল ভীষণ শিক্ত ভালোবাসা। ছেলে ওর ছবি দেখছিল অর্থাৎ ওর বুকে ঋতুপর্ণা ছাড়া আর কেউ বাস করে না। আদি চেয়ার ঘুরিয়ে মায়ের দিকে ফিরে, দুই পা ফাঁক করে বসল। মায়ের কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে ধরে মায়ের নরম স্বল্প মেদ যুক্ত পেটের ওপরে মাথা গাল চেপে ধরল। পাতলা গেঞ্জি মায়ের শরীরের উত্তাপ ঢেকে রাখতে অক্ষম হয়ে পড়েছে, গেঞ্জির কাপড় উপচে মায়ের শরীরের উত্তাপ ওর গালে ওর মুখে এসে লাগে। থুতনি দিয়ে মায়ের পেটের মধ্যচ্ছদার ওপরে চেপে ধরে মায়ের মুখের দিকে তাকায়। চোখের সামনে উঁচিয়ে মায়ের ভারি দুই স্তনের দেখা পায়। স্তন জোড়ায় স্বল্প কাঁপুনি দেখা দিয়েছে। ছেলের এই তীব্র আলিঙ্গনে ঋতুপর্ণা কাবু হয়ে পড়ে। ধিরে ধিরে ছেলের পায়ের মাঝে দাঁড়িয়ে দুই পেলব বাহু দিয়ে ছেলের গলা জড়িয়ে ধরে। ছেলের উষ্ণ শ্বাস ওর পোশাক ভেদ করে নরম স্তনের ওপরে এসে লাগে। ধিরে ধিরে স্তনের বোঁটা জোড়া আপনা থেকেই শক্ত হয়ে যায়। কঠিন স্তনের বোঁটা জোড়া পাতলা টি শার্টের কাপড় ভেদ করে সামনের দিকে উঁচিয়ে যায়। এইবারে এই উত্তেজনা ঋতুপর্ণা আর লুকিয়ে রাখতে পারে না। ধরা পড়ে গেছে ওর বুকের রক্তের তীব্র হিল্লোল।

আদি মায়ের মাদকতাময় পান পাতার আকারের মুখের দিকে তাকিয়ে কাতর কণ্ঠে ডেকে ওঠে, “মা... গো...”

আদির এই বসে যাওয়া মন কেমন করা গলা শুনে ঋতুপর্ণার ঊরু জোড়া কেঁপে ওঠে। নিজের নরম পেটের সাথে ছেলের মাথা চেপে ছেলের ঢুলুঢুলু চোখের দিকে তাকিয়ে মিহি কণ্ঠে বলে ওঠে, “কি রে দুষ্টু।”

আদি ওর থুতনি দিয়ে মায়ের পাঁজর চেপে ওপরের দিকে চাপ দেয়, “সকাল থেকে একদম বান্ধবীর মতন কাছে আসোনি এইবারে কি আমার সেই পুরানো বান্ধবীকে কাছে পাওয়া যাবে?”

ঋতুপর্ণার চোয়াল শক্ত হয়ে যায় ছেলের এই ক্রিয়া কলাপে। দুই চোখের পাতা প্রবল আবেশে ঢুলুঢুলু হয়ে যায়, চোখের পাতা হটাত করে প্রচন্ড ভারি মনে হয়। দেহের প্রতিটি স্নায়ু অবশ হয়ে আসে। ধিরে ধিরে ছেলের মুখের দিকে ঝুঁকে পড়ে ঋতুপর্ণা। ছেলের মাথার চুলের মধ্যে নখ ডুবিয়ে আঁকড়ে ধরে চেপে ধরে নিজের সাথে।

আবেগ মাখানো মিহি কণ্ঠে ছেলেকে বলে, “পেতে পারিস যদি আমাকে একটু ছাড়িস।” মুখে ছাড়তে বললেও কিন্তু ছেলের চুলের গোছা খামচে আঁকড়ে ধরে থাকে। ছেলের চুলের মধ্যে নখের আঁচড় কেটে আরো উত্যক্ত করে তোলে ছেলেকে। মা আর ছেলের আদরের ভাষা ঘন হয়ে ওঠে একটু একটু করে। শিক্ত কামনার রস সারা শরীরের পরতে পরতে ছড়িয়ে যায় একটু একটু করে। দুইজনেই পাগল প্রায় হয়ে যায়।

আদির দুই হাত মায়ের পিঠের ওপরে অবাধে ঘুরে বেড়ায়। বাম হাত মায়ের পেলব বাঁকা শিরদাঁড়া বেয়ে ওপরে উঠে মাকের ঊর্ধ্বাঙ্গ চেপে ধরে নিজের মাথার সাথে, সেই সাথে ডান হাতে মায়ের পিঠের শেষ সিমানায় চেপে মায়ের তলপেট নিজের দিকে ঠেলে এগিয়ে নিয়ে আসে। মায়ের শরীরের উষ্ণতা অতি সহজে আদির নগ্ন উর্ধাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। নিষ্ঠুর বাম হাতের কঠিন আঙ্গুল দিয়ে মায়ের শিরদাঁড়া বরাবর আলতো চাপে আদর করে দেয়। সেই সাথে মায়ের পাঁজরের মাঝে থুতনি চেপে ধরে, একটু একটু করে মায়ের পেটের ওপরে গাল ঘষে মাঝে মাঝে আদর করে ঠোঁট চেপে ধরে। মায়ের শ্বাস ঘন হয়ে আসতেই চোখের সামনে উঁচিয়ে থাকা দুই ভারি পীনোন্নত স্তন জোড়া ফুলে ফেঁপে উঠতে শুরু করে দেয়। মায়ের অর্ধ নিমীলিত চোখের দিকে কাতর চাহনি নিয়ে তাকিয়ে দেখে আদি। গোলাপি রসালো ঠোঁট জোড়া অল্প খুলে গেছে, ঠোঁটের আঁধারে মুক্তোর সারি বসানো দাঁতের দেখা পায়।

ভীষণ ভাবে গলতে শুরু করে দেয় ঋতুপর্ণার কামনা তপ্ত দেহ। ছেলের এই তীব্র কামনার আলিঙ্গনে ঋতুপর্ণা দেহের সবকটা স্নায়ুতে আগুন ধরে যায়। অর্ধ নিমীলিত চাহনি নিয়ে ছেলের তপ্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে একটু ঝুঁকে কোন রকমে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে, “প্লিস সোনা এইভাবে মাকে কিন্তু আদর করা চলে না।”

আদি একটু দুষ্টুমি করে মায়ের পিঠের শেষ প্রান্তে চাপ দিয়ে বলে, “মাকে করছি কে বলেছে কিন্তু আমার একমাত্র সুন্দরী বান্ধবী কে হয়তো করতেই পারি। তাই নয় কি?”
 
ঋতুপর্ণা এর উত্তরে কি বলবে ভেবে পায় না। কোমল পেলব আঙ্গুল দিয়ে আদির কর্কশ গালে আদর করে বুলিয়ে বলে, “আমার কিন্তু বড্ড খিদে পেয়েছে আদি।”

আদিও মাকে একটু চেপে ধরে বলে, “খিদে তো আমারও পেয়েছে মা।” ওর বুকের মাঝে কেউ ডাক ছেড়ে ওঠে, এই খিদে শুধু মাত্র পেটের নয়, এই খিদে মনের দেহের। আদি হটাত করে মায়ের নরম পেটের ওপরে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে নেয়।

আহহহহ করে ওঠে ঋতুপর্ণা। একি করে দিল ওর ছেলে। এইভাবে চুমু খেল, সেই সাথে দাঁত দিতে আলতো কামড় বসিয়ে দিল শয়তানটা। ঝিরঝির করে বর্ষা শুরু হয়ে যায় পুরুষ্টু ঊরুর মাঝে লুক্কায়িত নারী অঙ্গে। চোখ চেপে বন্ধ করে ফেলে ঋতুপর্ণা, আপনা থেকেই ঝুঁকে পড়ে ছেলের মাথার দিকে। দুই হাতে ছেলের মাথা আঁকড়ে নিজের পেটের সাথে মিলিয়ে নেয়। অবশ হয়ে যায় ওর দুই পুরুষ্টু মোটা মাংসল ঊরু, ভিজে যায় প্যান্টিতে ঢাকা সুন্দরীর সুন্দর করে সাজানো বাগান। কামনা বিগলিত কণ্ঠে মিহি উফফ করে আদিকে ক্ষান্ত করতে চেষ্টা করে ঋতুপর্ণা। এরপরে কি ছেলের সাথে এক বিছানায় যাবে নাকি? না না, এইভাবে ছেলের সাথে কেন? পুরুষের প্রতি অনিহা কিন্তু বুকের মাঝের অদম্য তৃষ্ণা কি ভাবে রুখে রাখা যায়।

খনিক কঠোরতা এনে বিগলিত হৃদয়ের অদম্য ইচ্ছেটাকে দমিয়ে ছেলেকে বলে, “চল প্লিস খেয়ে দেয়ে নে। কাল সকালে উঠতে হবে।”

আদির লিঙ্গ প্যান্টের ভেতরে অনেক আগে থেকেই ফুঁসে উঠেছিল। মায়ের হাঁটু ওর বিশাল কঠিন লিঙ্গের ওপরে চেপে যেতেই আদি নিজের কোমর সামনের দিকে করে আরো বেশি করে মায়ের দেহের সাথে নিজের উদ্ধত লিঙ্গ চেপে ধরে। মায়ের নরম ঊরুর সাথে আদির গরম কঠিন শাল গাছের গুঁড়ির মতন দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষাঙ্গ চেপে যায়। উফফ কি নরম মায়ের শরীর, এই ভাবেই চটকে একটু আদর করে দিলেই কিছুক্ষণের মধ্যেই ওর বীর্য পতন অবশ্যম্ভাবি হয়ে পড়বে। মায়ের তলপেটের ওপরে, নাভির ওপরে নাক ঘষতেই এক মাতাল করা গন্ধ নাকে ভেসে আসে। আদি চোখের সামনে মায়ের পুরুষ্টু ঊরুজোড়া ভীষণ ভাবে কাঁপতে শুরু করে দেয়। গন্ধের উৎস আদি ভালো ভাবেই জানে। ইসসস, এই রকম ভাবে... না আর ভাবতে পারে না আদি। ভালবাসতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কামনা দেখা, একটু একটু করে এগোতে গিয়ে একি করে ফেলল আদি।

ঋতুপর্ণা কাম ঘন কণ্ঠে বলে ওঠে, “আর আদর নয় রে দুষ্টু, এইবারে প্লিস আমাকে ছেড়ে দে। আজকের মতন এইটুকু বন্ধুত্ব ঠিক আছে রে বাবা।” নিজেকে সামলে আদির মাথা নিজের পেট থেকে দূরে সরিয়ে ওর হাতের বেড় ছেড়ে বেরিয়ে আসে।

এতক্ষন আদি বলে ডাকছিল মা, সেই পর্যন্ত ঠিক ছিল কিন্তু মাতৃ সুলভ কণ্ঠে “বাবা সোনা” বলে ডাকতেই আদি মাথা নিচু করে মায়ের কোমর থেকে হাতের বেড় আলগা করে দেয়। পায়ের ওপরে পা তুলে বিশাল উদ্ধত লিঙ্গের দপদপানি লুকিয়ে ফেলে।

কিন্তু ততক্ষণে আদির ভিমকায় লিঙ্গের পরশ ঋতুপর্ণার মোটা মসৃণ ঊরু বেয়ে বুকে লেগে গেছে। আদির হাতের বেড় আলগা হতেই ঋতুপর্ণা একটু তফাতে দাঁড়িয়ে ছেলের দিকে মিঠে হাসি ছুঁড়ে বলে, “যা শয়তান এইবার থেকে একদম তোর কাছেই আসব না।” বলেই ত্রস্ত পায়ে দৌড়ে ছেলের ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

আদি মায়ের এই ছোট পায়ে দৌড়ান দেখে মোহিত হয়ে যায়। মায়ের মদালসা শরীরে যে উত্তাল ছন্দ দেখা দিল সেটা ওর হৃদয়ের ধুকপুকানি ভীষণ ভাবে বাড়িয়ে দিয়ে চলে গেল।

রাতে খেতে বসে মা আর ছেলে কেউই কারুর মুখের দিকে ঠিক ভাবে তাকাতে পারে না। মায়ের চোখের দিকে দেখতেই মায়ের গালে রক্তিম আভা দেখতে পায় সেই সাথে আদিও লজ্জায় পড়ে যায়। এই ভাবে মায়র দেহের সাথে নিজের উদ্ধত কঠিন উত্তপ্ত লিঙ্গ চেপে ধরা মোটেই উচিত হয়নি কিন্তু মন যে কিছুতেই আর মানে না। মাকে কি ভাবে ভালোবাসার পাত্রী হিসাবে পাওয়া যায় সেই দুষ্টু চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুরতে শুরু করে দেয়। মায়ের চোখের মাঝে আদিও অতৃপ্ত কামনার শিক্ততা দেখেছে কিন্তু সেটা কি আদির জন্য না মায়ের অতৃপ্ত আত্মা ওর ছোঁয়ার মাঝে অন্য কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে সেটাই আদি জানে না।
 
পর্ব দশ (#4)

সেইদিনের পরে মা আর ছেলের মাঝে বেশ কিছুদিনের জন্য কথাবার্তা অতি সীমিত মাত্রায় হয়ে যায়। ঋতুপর্ণা ইচ্ছে করেও ছেলের সাথে বান্ধবীর মতন মিশতে পারে না। ছেলের ছোঁয়াতে হৃদয়ের গভীর কোনে যে দোলা লাগিয়ে দিয়েছে সেটাকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না, কিন্তু এক মা আর ছেলের মাঝে প্রেমিক প্রেমিকার মতন সম্পর্কের প্রশ্রয় কিছুতেই মন মেনে নিতে পারছে না। অন্যদিকে আদিও ঠিক করে উঠতে পারে না কি ভাবে মায়ের সাথে একটু খোলাখুলি ভাবে মেলামেশা করা যায়। মাকে নিজের করতে হলে আগে বেশ খোলা মেলা হিসাবে মিশতে হবে, মায়ের মনের উদ্দেশ্য জানতে হবে।

তিস্তা যাওয়ার পরের দিন অবশ্য ঋতুপর্ণা আর তিস্তা, স্কুল থেকে বেরিয়ে পুজোর শপিং করতে গিয়েছিল, তবে তখন আদির সাথে ঋতুপর্ণার এক শিতল মন টানাটানি চলছিল তাই ঋতুপর্ণা আর আদিকে ডাকেনি। এইদিকে পড়ার চাপের জন্য তিস্তার কাছে বেশ কয়েকদিন যাওয়া হয়নি আদির।

অনেকদিন সুভাষের কোন ফোন আসেনি দেখে একদিন আদি নিজে থেকে বাবাকে ফোন করে। ফোন করেই আদি জিজ্ঞেস করে, “কি ব্যাপার অনেকদিন ফোন করো না। আয়েশার সাথে সব ঠিক ঠাক চলছে না আবার কোন নতুন মেয়ের পাল্লায় পড়েছ?”

সুভাষ হেসে ফেলে আদির কথাবার্তা শুনে, “নারে মানে বেশ বিজি ছিলাম তাই আর ফোন করে উঠতে পারিনি। তা ঋতু এখন কেমন আছে?”

আদি সব কথা খুলে বলে বাবার কাছে, তারপরে প্রশ্ন করে “আচ্ছা, তুমি কি এখনো মাকে ভালোবাসো? সত্যি করে বলবে?”

সুভাষ হেসে ফেলে, “জানিনা ঠিক তবে মনে হয় না। আসলে কি জানিস...” কিছুক্ষণ থেমে যায় সুভাষ।

আদি প্রশ্ন করে, “কি হল ঠিকঠাক করে বল। তোমার কি ইচ্ছে। তুমি কি আবার মায়ের কাছে ফিরতে চাও নাকি?”

আদি মনে প্রানে চায় না ওর আর ওর মায়ের মাঝে তৃতীয় কোন পুরুষ আসুক, অন্তত ওর বাবা কখনোই নয়। মায়ের ভালোবাসা, মায়ের হৃদয় কারুর সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার পাত্র নয় আদি। মাকে সম্পূর্ণ রূপেই নিজের করে নিতে চায় তাই সুভাষকে পরিস্কার করে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি চাও? মায়ের এক্সিডেন্টের খবর শুনে দৌড়ে এলে কিন্তু তারপরে একবারের জন্য ফোন করলে না। কি ব্যাপার?”

সুভাষ গম্ভির হয়ে উত্তর দেয়, “আসলে কি জানিস, ভালোবাসা একসময়ে আমাদের মাঝে ছিল। তবে শুধু ভালোবাসা হলেই মানুষের হয় না। আমাদের মাঝে কিছু ডিফারেন্সেস ছিল যেটা সময়ের সাথে সাথে বিশাল হয়ে দাঁড়ায়।” আদির জানতে ইচ্ছে করে এই বৈষম্যগুলো কি কি। সুভাষ জানায়, “তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস এখন তোর সাথে আমার সম্পর্ক আর বাবা আর ছেলের মতন নয়। সুতরাং তোকে সব কথা খুলে বলা যেতেই পারে। আসলে কি জানিস, বিয়ের পরে পরে সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। তারপরে একদিন তুই এলি, তারপরে যত দিন গেল তত আমাদের খরচ বেড়ে গেল। ঋতুপর্ণা দেখতে ভীষণ সুন্দরী। আমি ভেবেছিলাম ঋতুপর্ণাকে দিয়ে মডেলিং করাব তাতে আমাদের ঘর বেশ ভালো করেই চলে যাবে। বেশ কয়েকটা ফটোশুট করলাম, কিন্তু তোর মা অন্য কোন স্টুডিওতে গিয়ে ফটোশুট করতে গিয়ে বেঁকে বসল। আমি কোন ছোট পোশাক পরে অন্য কারুর সামনে আসতে পারবো না। কারন জিজ্ঞেস করলে বলল, ছেলে বড় হচ্ছে, এই সময়ে মাকে যদি ছোট পোশাকে দেখে তাহলে কি ভাববে। আর ওই সব ছোট পোশাকে আমি অভ্যস্ত নই। এ ছাড়াও তোর মায়ের মানসিকতা বাড়ির মধ্যে উদার হলেও আই মিন বাড়িতে আমি যে রকম চাইতাম সেই রকম কাপড় পরতো কিন্তু বাইরে শুধু মাত্র শাড়ি অথবা শালোয়ার কামিজ। বুঝতেই পারছিস, আমি ততদিনে একজন নাম করা ফটোগ্রাফার হয়ে গেছিলাম। মাঝে মাঝেই এইখানে সেখানে পার্টি হত, যেতাম মদ খেতাম। সেইগুলোতে তোর মায়ের বারন শুরু হল। শুরুতে কয়েকবার বাড়িতে পার্টি করেছিলাম, পার্টি মানে বন্ধু বান্ধবী মিলে একজায়গায় বসে মদ গেলা, একটু কোমর জড়িয়ে নাচানাচি করা। সেই গুলো তোর মায়ের ভালো লাগত না। কিন্তু ফ্যাশানের দুনিয়ায় এটাই চলন, তুমি মদ খেয়ে মেয়েদের সাথে নাচো। কখনো কোনো প্রডিউসারকে মেয়ে দাও রাতের জন্য, কখনো ফটোশুট করতে করতে কোন এক মডেলের সাথে একটু আন্তরিকতা বেড়ে যায়। সেইগুলো তোর মা বুঝত না। ওকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে এইসব এই ফ্যাশান দুনিয়ার একটা অঙ্গ। তীব্র আলোর পেছনের অন্ধকারে অনেক কিছুই অন্ধকার। দিনে দিনে তোর মা কেমন যেন কুঁকড়ে গেল। দুইজনে একসাথে এক বিছানায় শুয়েও মনে হত এক অজানা অচেনা কারুর সাথে শুয়ে আছি। তারপরে আমিও আমার দেহের চাহিদা মেটাতে এদিকে ওদিকে এই মডেলের সাথে ওই মডেলের সাথে সেক্স করতে শুরু করে দিলাম। এইভাবেই ধিরে ধিরে তোর মায়ের সাথে আমার যে বন্ধনটা ছিল সেটা ভাঙতে শুরু করে দিল। তারপরে একদিন তোর মা আমাকে আর তিতলি নামে এক কচি মডেলকে একসাথে আমাদের বাড়িতে দেখে ফেলল। সেটাই শেষ।”

এত কথা শুনতে শুনতে আদির চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, এতে মায়ের দোষ কম আর বাবার দোষ বেশি। সুভাষ বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকার পরে বলল, “তোর মায়ের মেন্টালিটি এখনো ওই অন্ডালে পড়ে আছে বুঝলি। ওর সাথে ঘর করা চলে না, ওর সাথে বনবাস করা চলে। শুরুতে বলেছিলাম যে বাড়িতে পারটি টারটি হলে একটু ছোট খাট পোশাক পর। বাইরের লোকের সামনে নাই পরলে কিন্তু বাড়িতে পরতে অসুবিধে কোথায়, তাতে আমার একটু সুবিধে হতে পারত। বুঝতেই পারছিস, হয়ত কয়েকটা এসাইনমেন্ট চলে আসত কিন্তু একদম না। ঋতুপর্ণা ধোয়া তুলসি পাতা, শালোয়ার কামিজ পরবে...”

এতসব শোনার পরে আদির ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। রেগে যায় সুভাষের কথা শুনে, “তুমি কেমন হাজবেন্ড যে নিজের বউকে অন্যের সামনে নেকেড হতে বলছ? মাকে ধোঁকা দিয়েছ আর তারপরে বলছ যে মায়ের সাথে বনবাস করা চলে? এইবারে বুঝেছি কেন মা তোমাকে দুই চোখে দেখতে পারে না। তা সেদিন এক্সিডেন্টের সময়ে টাকা দিয়ে হেল্প করতে এলে কেন? কি ভেবে এসেছিলে, হয়ত এই হেল্প পেয়ে মা তোমার কাছে আবার ফিরে যাবে? জানো মা যখন জানতে পারে যে তুমি টাকা দিয়েছ, সেই থেকে মা ভীষণ ভাবে রেগে।”

সুভাষ অনেকক্ষণ চুপ করে থাকে, “রাগুক, আমি আসলে এসেছিলাম...”

আদি বাঁকা হেসে উত্তর দেয়, “জানি কেন এসেছিলে। তখন আয়েশার সাথে তোমার ঝগড়াঝাঁটি চলছিল তাই ভেবেছিলে যে টাকা দিয়ে যদি মায়ের মন পাওয়া যায়। কি আমি সত্যি না মিথ্যে বলছি?”

সুভাষ চাপা গলায় উত্তর দেয়, “হুম।”

আদি গম্ভির কণ্ঠে সুভাষকে বলে, “দ্বিতীয় বার ফোন করার চেষ্টা কোরো না আর, বুঝলে। তোমাকে যতটা ভালো ভেবেছিলাম ততটা কিন্তু তুমি নও।”

সুভাষ উত্তর দেয়, “জানি। আর...”

আদি বলে, “তোমার পাঁচ লাখ টাকা আমি ফেরত দিয়ে দেব।”

সুভাষ গম্ভির কণ্ঠে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, মুরোদ থাকলে দিয়ে দিস। সত্যি বলতে কি জানিস, এই পৃথিবীতে কারুর ভালো করতে নেই। আমি ভাবলাম... না থাক। আমিও দেখে নেব, ওই গাড়ির ইএম আই দিয়ে, নাচের ক্লাস করিয়ে ঋতুপর্ণা কতদিন কাটায়। আর সত্যি কথা বলতে আমারও আর তোদের টাকা দেওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।”

আদি বাঁকা হেসে জিজ্ঞেস করে, “কেন কেন, আয়েশা মনে হচ্ছে আবার তোমার কাছে ফিরে এসেছে। নয়তো তুমি আবার নতুন কোন কচি মডেলের পাল্লায় পড়েছ যে তোমার টাকা দুই হাতে উড়াচ্ছে।”

সুভাষ এইবারে রেগে যায়, “আমি কি করছি না করছি সেটা তোকে দেখতে হবে না। তুই থাক তোর মাকে নিয়ে।”
 
আদিও রেগে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, এরপরে আর আমার মা ছেলের সংসারে আসতে যেও না।”

সুভাষ চেঁচিয়ে উত্তর দেয়, “আসবো না। দেখি তোরা কেমন থাকিস?”

আদি বলে, “হ্যাঁ দেখিয়ে দেব। আর একটা সেমেস্টার তারপরে ক্যাম্পাসিং হয়ে যাবে আর তোমার টাকার দরকার পড়বে না বুঝলে। নাও এখন ফোন রাখো।” বলে ফোন রেখে দেয়।

বাবার প্রতি এতদিন যে সুহৃদ ভাবটা মনের মধ্যে ছিল সেটা এক নিমেষে উবে যায়। সেই সাথেও নিজেকে বড় খেলো মনে হয়, মায়ের সাথে বন্ধু হতে গিয়ে মায়ের শরীরটাকেই শুধু ভেবেছে। মা হয়ত ওর কাছে বান্ধবীর মতন এগিয়েছিল কিন্তু আদিই বারেবারে মাকে জড়িয়ে কামোত্তেজিত হয়ে গেছে। নিজেকে নিজেই বারেবারে ধিক্কার দিল। মাথা নিচু করে অনেকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকল ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে। বেশ কয়েকদিন ধরেই মায়ের সাথে এক শীতল মানসিক দ্বন্দ চলছে এইবারে সেটা কাটিয়ে উঠতেই হবে, না হলে এক ছাদের তলায় ঠিক ভাবে থাকা যাচ্ছে না। পরের দিন থেকে পুজোর ছুটি শুরু কিন্তু এখন পর্যন্ত কি ভাবে এই পুজোর ছুটি কাটাবে সেটাই অনিশ্চিত।

ঠিক এই কথাটাই ঋতুপর্ণা চুপচাপ লাইব্রেরিতে বসে ভাবছিল আর মোবাইলটা নিয়ে এদিকে ওদিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছিল। মোবাইল স্ক্রিনে অনেকদিন আগের ঘুরতে যাওয়ার একটা ছবি লাগানো। তখন আদি বেশ ছোট ছিল। অবশ্য ওর মোবাইলের গ্যালারিতে আদির বেশ কয়েকটা ছবি আছে কিন্তু ওদের একসাথের নেই। ঋতুপর্ণা মুচকি হেসে গ্যালারি খুলে এক এক করে আদির ছবি গুলো দেখে আর হাসে। সত্যি মানুষের মন বোঝা বড় কষ্টকর, কখন কোন দিকে ধেয়ে যাবে কার পানে তাকিয়ে থাকবে কার সাথে হটাত করে সান্নিধ্য ঘটে যাবে বলা দায়। সুভাষের সাথে, প্রদীপের সাথে ওর অভিজ্ঞতা বড় তিক্ত, সেই সাথে সোসাইটির লোক জন অথবা এতদিন যত পুরুষ ওর কাছে এসেছে সবার চোখে শুধু মাত্র যৌন ক্ষুধাই দেখতে পেয়েছে। আদির মধ্যেও একপ্রকার ভীষণ আকাঙ্খার দেখা দিয়েছে সেটাও ঋতুপর্ণা বোঝে কিন্তু সেই সাথে এটাও জানে যে আদি ওর ছেলে আর উঠতি বয়সে নারীর সান্নিধ্যে এই রকম একটু আধটু হয়েই থাকে। ঋতুপর্ণা কতবার চেষ্টা করেছে ছেলে যাতে অন্য মেয়ের সাথে মেলামেশা করে কিন্তু ছেলে ইদানিং কোন মেয়ের দিকেই ঠিক ভাবে দেখে না, যদিও দেখে তাও আবার নিজের থেকে বড় এই যেমন তিস্তার সাথে ইদানিং বেশ ভাব হয়েছে। এর আসল কারন ওকে জানতে হবে বিশেষ করে সেইদিন ওর ঘরে ঢুকে যখন দেখল যে আদি পড়ার বইয়ের মধ্যে ওর যুবতী বয়সের একটা ফটোর দিকে দেখছিল সেই দেখে ঋতুপর্ণার মন বড় চঞ্চল হয়ে উঠেছিল।

ওয়ার্ক শপ থেকে গাড়ি বেশ কয়েকদিন আগেই নিয়ে আসা হয়েছে কিন্তু আদি কিছুতেই ওকে গাড়ি একা চালাতে দেয় না তাই বাড়ি ফেরার সময়ে ওকে ট্যাক্সি নিতে হয়। স্কুলে বিকেলের দিকে যদি নাচের পিরিয়ড না থাকে তাহলে ঋতুপর্ণা কমন রুমে বসে অন্যদের সাথে গল্প করে কাটায়। এই এক্সিডেন্টের পরে অনেকেই ওর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে তাই বেশ খুশি। সেই সাথে অন্য মহিলাদের সাথে গল্প করলে অনেককিছু জানা যায়, কারুর পরকীয়া প্রেমের গল্প, একজনের নতুন বিয়ে হয়েছে তার বরের গল্প, কোন টিচার নতুন প্রেম করছে তার গল্প ইত্যাদি। ঋতুপর্ণা চুপচাপ সবার কথা শোনে, নিজের সেই রকম কিছুই বলার থাকে না। এটা সবাই জানে তাই বিশেষ কেউ ওকে জোর করে না ওদের এই আড্ডায় অংশ নেওয়ার জন্য। মাঝে মাঝে শীলার গল্প শুনে একটু উত্তেজিত হয়ে ওঠে, কখন সুস্মিতার গল্প শুনে বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে যায়।

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে, নাচের ক্লাস করিয়ে চুপচাপ বসার ঘরে বসেছিল ঋতুপর্ণা। সারাদিনে নিজেও আদিকে ফোন করেনি আর আদিও মাকে ফোন করেনি। মনটা বড় চঞ্চল হয়ে ওঠে, কেন এত শীতলতা। মিশতে গিয়েও কেন এত জড়তা, কি ভাবে এই জড়তা কাটিয়ে সুন্দর ভাবে মেশা যায় সেই চিন্তায় ডুবে যায়। আদি বাড়িতে ফিরলে ওর স্কুলের গল্প করবে, অন্য টিচারদের সাথে কি কি কথা হল সেই গল্প করবে, তিস্তাকে নিয়ে একটু ছেলেকে খেপাবে। তিস্তার নাম করলেই ছেলে লজ্জায় একটু লাল হয়ে যায়, সেই লাজুক ভাব উপভোগ করবে। মন বড় উৎফুল্ল আর চঞ্চল হয়ে ওঠে ঋতুপর্ণার। ছেলের দেরি দেখে বারে বারে ঘড়ির দিকে তাকায় আর মোবাইলের দিকে। এত দেরি হওয়ার কথা নয়, দেরি হলে আগে অবশ্য ফোন করে জানিয়ে দিত কিন্তু বিগত কয়েকদিনে ঠিক সময়েই ঘরে ফিরেছে তাই ফোন করার দরকার হয়নি। দুপুরে মাঝে মধ্যে ফোনে কথাবার্তা হয়েছিল কিন্তু সেটা মায়ের প্রশ্ন আর ছেলের উত্তর পর্যন্ত সীমিত ছিল, এর বেশি ঋতুপর্ণাও কিছু বলেনি আদিও সেই গন্ডি উলঙ্ঘন করেনি।

দুপুরে সুভাষের সাথে কথা বলার পরে আদির মন বিষিয়ে ওঠে। সেই বিষাক্ত মনোভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য কলেজের পরে সঞ্জীবের সাথে মিলে কয়েক পেগ মদ গেলে। মনে মনে বাবাকে প্রচুর গালমন্দ করে আদি বেশ রাতের দিকে বাড়িতে ফেরে। আদি আগেও বেশ কয়েকবার বন্ধুদের সাথে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরেছে, তবে সেই সময়ে আনন্দ ফুর্তিতে গিলেছে এবং প্রত্যেক বার মাকে জানিয়েই করেছে। মা মৃদু বকুনি দেওয়া ছাড়া বিশেষ কিছুই বলেনি। শুধু বলত, “এখন উঠতি বয়স এই সব মদ খাওয়া গাঁজা টানা একটু আধটু হয়েই থাকে তবে এই সব যেন পরবর্তী কালে বদ অভ্যেসে না দাঁড়ায়।” আদিও সুবোধ বালকের মতন মাথা দুলিয়ে মাকে শান্ত করে জানিয়ে দিত শুধু মাত্র এইবার ব্যাস এরপরে আর নয়। কিন্তু সেদিন আদির মানসিক অবস্থা সেইরকম ছিল না, মাকে ফোনে আর জানানো হয়নি।
 
পর্ব দশ (#5)

কলিং বেল শুনেই ঋতুপর্ণার চিত্ত বড়ই আনচান করে ওঠে। ছেলে এসেছে, এতক্ষন ধরে অপেক্ষার অবসান হবে। একটু অভিমান করে মৃদু বকুনি দেবে, একটু খুনসুটি করবে ছেলের সাথে; এই ভেবে দৌড়ে দরজা খুলে দিল। দরজা খুলতেই সামনে ছেলের লাল ঢুলুঢুলু চোখ আর শরীর থেকে বোঁটকা মদের গন্ধ পেয়েই অগ্নিশর্মা হয়ে গেল। আগেও যতবার আদি মদ খেয়ে এসেছে তার আগে ওকে বলে দিত। ঋতুপর্ণা বাধা দেয়নি তাতে কিন্তু এই না জানিয়ে মদ খেয়ে দেরি করে বাড়ি ফিরেছে দেখেই ঋতুপর্ণার মাথায় রক্ত চড়ে গেল। ঋতুপর্ণা খোলা মনেই মিশতে চেয়েছিল আদির সাথে, কিন্তু তাই বলে ওকে না জানিয়ে করবে এটা ঠিক সহ্য করতে পারল না। নিজেকে প্রতারিত বলে মনে হল। এতখন একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখেছিল ঋতুপর্ণা, ভেবেছিল আদির সাথে মন প্রান ঢেলেই মিশবে, সেটা কাঁচের ঝাড়বাতির মতন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল ওর জল ভরা চোখের সামনে।

প্রচন্ড আঘাত পেয়ে ছেলের গালে সপাটে একটা চড় কষিয়ে বলে, “তুই আবার মদ খেয়েছিস?”

আদি ভেবেছিল হয়ত মা রাগারাগি করবে কিন্তু একেবারে দরজা খুলেই যে মা ওর গালে একটা চড় কষিয়ে দেবে সেটা ভাবতে পারেনি। মায়ের নরম আঙ্গুল হলে কি হবে, চড়টা বেশ জোরেই ছিল সেই সাথে আদির বুকে গিয়ে সেই চড় ধাক্কা খায়। মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে মায়ের দুচোখ জলে ভর্তি।
ছলছল চোখে আদির দিকে তাকিয়ে ভীষণ বেদনায় ফুঁসে ওঠে ঋতুপর্ণা, “এখন বড় হয়ে গেছিস তাই না। এখন নিজের মতন চলবি, কিন্তু এইসবে কি আমি কোনোদিন বাধা দিয়েছি যে আমাকে...” আদি মায়ের দিকে হাত বাড়াতেই ঋতুপর্ণা ফুঁসে ওঠে, “একদম আমাকে ছুঁবি না। তোর বাবাও একটা মাতাল ছিল আর তুইও সেই এক। এরপরে আর কি কি করবি? চোখ দুটো বন্ধ হলে বাঁচি।” কথাগুলো বলতে বলতে ঋতুপর্ণার বুক ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ভেবেছিল যে ছেলেকে বুকে ধরেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেবে, অন্তত এই কয়দিনে ওদের মাঝে যে ঠাণ্ডা দেয়াল গড়ে উঠেছে সেটা ভেঙে দেবে। কিন্তু ওর ছেলে শেষ ওকে না জানিয়ে মদ খেয়ে ঘরে ঢুকবে সেটা ওর কাছে অপ্রত্যাশিত। “যা দুর হয়ে যা, যেখানে পারিস চলে যা না হলে আমিই চলে যাচ্ছি। এখনতো তোর সাথে তোর বাবার বেশ মেলামেশা হয়েছে, যা না মুম্বাই চলে যা।” বলেই ত্রস্ত পায়ে নিজের ঘরে ঢুকে বিছানায় লুটিয়ে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে।

আদি হতভম্বের মতন দাঁড়িয়ে থাকে, কি করে বলে যে বাবার সাথে মনোমালিন্য হয়েছে বলেই সেই ক্ষোভে এই মদ খেয়েছে। আদির গালের জ্বালা এক নিমেষে উধাও হয়ে বুকের চিনচিন ব্যাথাটা চিড়বিড় করে ওঠে। মায়ের দৌড়ে চলে যাওয়ার দিকে চোয়াল চেপে, জল ভরা শুন্য চাহনি নিয়ে তাকিয়ে থাকে। বুকের পাঁজর পাপবোধে এক এক করে ভেঙে যায়। মা নিজের রুমে ঢুকে যাওয়ার পরে আদি ধিরে ধিরে মায়ের রুমের দরজায় এসে দাঁড়ায়। নরম বিছানার ওপরে মায়ের নধর দেহ কান্নার রোলে ফুলে ফুলে উঠছে, যেন সারা দেহে ভুমিকম্প দেখা দিয়েছে। সেই ভীষণ ভুমিকম্প আদির বুকের আঙিনায় এসে আছাড় খায়। এইভাবে মাকে কাঁদতে দেখে আদি নিজেকে কিছুতেই সামলাতে সক্ষম হয় না, কিন্তু মায়ের এই অবস্থায় কাছে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যাবে, মা আরো বেশি রেগে যাবে হয়ত ক্ষোভের বশে কিছু উলটো পাল্টা না করে বসে।

সেই ভয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ মায়ের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে নিচু গলায় বলে, “সরি মা, আর হবে না।”

ছেলের “সরি” আওয়াজ কানের মধ্যে হাহাকার রবে প্রতিধ্বনি হয়। বিছানার চাদর বুকের কাছে চেপে ধরে মুখ গুঁজে গুমরে ওঠে ঋতুপর্ণা। মানুষের রাগের সময়ে পুরানো ভুলের কথা, পুরানো ঘটনা বেশি করে মনে পড়ে। কোনরকমে ঘাড় উঁচু করে একবার দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে। আদি তখন মাথা নিচু করে দরজার কাছে দাঁড়িয়ে। আদিকে দেখেই ওর বুক ভেঙে চৌচির হয়ে যায়। আদি কিছুক্ষণ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে নিজের রুমে চলে যায়। সেই চলে যাওয়া দেখে ঋতুপর্ণা ডুকরে কেঁদে ওঠে। বুকের গভীর থেকে চেঁচিয়ে ওঠে, যা যা না তোর ওই মাতাল লম্পট বাবার কাছেই যা। কিন্তু এই শব্দ গুলো মুখে আনেনি ঋতুপর্ণা।

বিগত দিনের সকল কাহিনী সকল ভুল গুলো এক এক করে ঋতুপর্ণার ঝাপসা চাহনির সামনে ঘুরে বেড়ায়। কি দেখে সুভাষকে ভালবেসেছিল জানে না। হয়ত বাবার কড়া শাসনের থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে চেয়েছিল ঋতুপর্ণা, চেয়েছিল এই ছোট শহর থেকে বেরিয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতন নীল আকাশের নিচে ডানা মেলে উড়ে যাবে। প্রথমে প্রেম বেশ গভীর ছিল সুভাষ আর ঋতুপর্ণার কিন্তু ধিরে ধিরে যত দিন গেল, সুভাষ বেশি কাজ পেল তত সুভাষের চাহিদা বেড়ে গেল। মাঝেই মাঝেই মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে ওকে নিয়ে পড়ে যেত। ছোট পোশাক পরিয়ে ছবি তুলত। তবে সুভাষ মদ খেয়ে কোনোদিন ওর গায়ে হাত তোলেনি অথবা ওকে জোর করেনি। সুভাষের সাথে ঘর থেকে বেরিয়ে না আসলে ওর জীবন অন্য খাতে বইত। সুভাষের সাথে বিচ্ছেদ হওয়ার পরে পুরুষের প্রতি ঘৃণা জন্মায়নি সেটা নয়। পুরুষ দেখলেই তাদের চাহনি দেখলেই ঋতুপর্ণা বুঝতে পারত কে ওকে সন্মান দেয় আর কে ওকে নিয়ে বিছানায় যেতে চায়। পারত পক্ষে ঋতুপর্ণা নিজেকে বাঁচিয়ে আদিকে নিয়েই থাকত। কিন্তু মনের চাহিদা, দেহের চাহিদার কাছে একদিন এই তৃষ্ণার্ত হৃদয় হার মেনে যায়। দেখা হয় প্রদীপের সাথে, দ্বিতীয় বার মানুষ চিনতে ভুল করে ঋতুপর্ণা। ভেবেছিল অদুর ভবিষ্যতে আদিকে রাজি করিয়ে নিয়ে প্রদীপের সাথে বিয়ে করবে। বুড়ো বয়সে সবার এক সঙ্গীর দরকার পড়ে, সেই সঙ্গী খুঁজতেই প্রদীপের সাথে মেলামেশা করেছিল ঋতুপর্ণা। কিন্তু সেখানেও বাধ সাধে ওর নিয়তি। ওর জীবনটা যেন মস্ত বড় ভুলে, প্রতারনায় ঢাকা। চারপাশের সব পুরুষ মেকি, সে নিজের ছেলেই হোক আর স্বামী হোক।

প্রশ্ন করে নিজের কাছে… কে আমি, কোথায় ছিলাম, কোথায় যাব এই আমি।
মেঘের ফাঁকে একটু চাঁদের ওই রেখা, সে ভুল।
চলে গেলে ডাকবে না তো কেউ পিছু, স্মৃতি আমার থাকবে না তো আর কিছু।
যদি ভাবি এই আমি আর নই একা, সে ভুল।


আদি নিজের রুমে ঢুকে চুপচাপ নিজের জামা কাপড় বদলে নিজের বিছানায় সটান শুয়ে পড়ে। কিছুই আর ভালো লাগছে না। পুজোর আগেই এইসব হতে হত? কোথায় পুজোতে একটু আনন্দ ফুরতি করবে তা না, বাবার সাথে ঝগড়া করে মদ খেয়ে মাকে দুঃখ দিল। মাকে কেন দুঃখ দিতে গেল, এতে মায়ের কি দোষ। মুম্বাই যেতে মা হয়তো বাধা দিত না। আদি সোজা মুম্বাই গিয়ে ঝগড়া করে মারামারি করে নিজের ক্ষোভ মিটিয়ে আসতে পারত। এই ভুল ওকে যেন তেন প্রকারেন ঠিক করতেই হবে না হলে দম বন্ধ হয়ে আসছে ওর, মনে হচ্ছে কেউ ওর বুকের ওপরে চেপে বসে ওর গলা টিপে ধরেছে।

কতক্ষন এইভাবে চোখ বুজে বিছানায় পড়ে ছিল আদির খেয়াল নেই। ওর এই ঘোর ভাঙে মায়ের ডাকে, “আয় খেয়ে নিবি।” মায়ের গলা যেন শত ক্রোশ দুর থেকে ভেসে আসে।

খাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না। মায়ের কথা অমান্য করবে সেই শক্তিও ছিল না কিন্তু মায়ের সামনে দাঁড়ানোর শক্তি টুকুও ওর শরীরের বেঁচে নেই। কুণ্ঠা বোধে নিজেকে ধিক্কার দিয়ে বিছানায় উঠে বসে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে। ঋতুপর্ণা ওর দিকে গম্ভির ভাবে রোষকষিত চোখে তাকিয়ে।

দ্বিতীয় বার মায়ের গম্ভির গলা শোনা যায়, “উঠে এসে খেয়ে আমাকে উদ্ধার করে যা। সেই তো দুপুরে খেয়েছিস নাকি তাও খাসনি। এইভাবে না খেয়ে থাকলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে।” ঋতুপর্ণা আদিকে ডাক দিয়ে খাবার ঘরে চলে যায় খাবার বাড়ার জন্য। এই মন নিয়ে টানাটানিতে কখন যে রাত একটা বেজে গেছে সেটা কারুর খেয়াল নেই।

মায়ের এই গম্ভির কণ্ঠ যেন স্নেহ জড়ানো, বুকের বাঁধ ভেঙে গেল আদির। চোখ জোড়া জ্বালা দিয়ে আদ্র হয়ে উঠল আবার। আদি মাথা নিচু করে বিছানা থেকে উঠে খাবার টেবিলে এসে চুপচাপ বসে পড়ে। মায়ের দিকে তাকানোর মতন শক্তি ওর নেই। ঋতুপর্ণা ওর সামনে ভাতের থালা নামিয়ে সামনের চেয়ারে চুপচাপ বসে পড়ে। ওর খিধে ছেলের অবস্থা দেখে অনেক আগেই চলে গেছে। খাবার ইচ্ছে আদিরও নেই কিন্তু মাকে আর বেশি ঘাঁটানোর সাহস আর নেই তাই ভাত খুঁটে কয়েক গ্রাস মুখে তুলে নেয়। আদির খাবার ইচ্ছে আর নেই, এই কুড়ি একুশ বছরে ভাবে চুপচাপ কোনোদিন খায়নি। ছোট বেলায় মা ওকে খাইয়ে দিত না হলে খেতে বসে দুইজনে সারাদিনের গল্প করত।

ঋতুপর্ণা চুপচাপ টেবিল ছেড়ে উঠে নিজের রুমে ঢুকে পড়ে। জীবনটা সম্পূর্ণ বৃথা, কি হবে এই চার দেয়ালের মধ্যে থেকে। এই বাড়ি ঘর ছেড়ে, ছেলেকে ছেড়ে কোথাও চলে যাবে। কাশী বৃন্দাবন হরিদ্বার হৃষীকেশ এমন সব জায়গায় কত মঠ আশ্রম আছে, না হলে কোন মিশনারি জয়েন করে নেবে, সেটাই ভালো। প্রচন্ড ক্ষোভে একটা ব্যাগ নামিয়ে নিজের কাপড় জামা ভরতে শুরু করে দেয়। সারা শরীর ওর জ্বলছে, ভীষণ তাপে ওর ত্বক ওর বুক পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। ছেলেটাও শেষ পর্যন্ত ওর বাবার মতন হয়ে গেল? একে নিয়েই বাকি জীবনের স্বপ্ন দেখেছিল সেইদিন।

আদি ভাতের থালা বেসিনে রেখে চুপচাপ নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। যাওয়ার পথে মায়ের রুমে একবার উঁকি মারতেই চোখ পড়ে ব্যাগের ওপরে। মা আলমারি খুলে জামা কাপড় বের করে ব্যাগে ভরছে। মা ওর কাছ থেকে দূরে চলে যাবে, এই কথা ভাবতেই আদির মাথায় বাজ পড়ে। না এটা কখনই হতে দিতে পারে না আদি, ওর জীবনের সব কিছু ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে তাহলে। আদি ধিরে ধিরে মায়ের রুমে ঢোকে। ঋতুপর্ণা আড় চোখে একবার আদির দিকে তাকিয়ে নিজের কাজে মন দেয়। বুকটা হটাত করে শুন্য হয়ে যায়, যেন ওর কর্ণ কুহর ছেলের বক্তব্য শোনার জন্য আকুল হয়ে ওঠে।

হাতের মধ্যে ভাঁজ করা বেশ কয়েকটা শাড়ি নিয়ে আদির দিকে রোষ কষিত চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কিছু বলার বাকি আছে না এইভাবে চুপচাপ থাকবি?”
 

Users who are viewing this thread

Back
Top