দেবায়ন বাজারের থলে নিয়ে বাজারে বেরিয়ে পড়লো। বুকের মাঝে এক খুশির হাওয়া, সকালের বদ্ধ ভাব অনেকটা কেটে গেছে, এবারে নিশ্চয় মায়ের সাথে একটু মন খুলে কথা বলা যাবে, মা নিশ্চয় আর ছুটির দিনগুলোতে সূর্য কাকুর বাড়ি গিয়ে ওদের সাথে সঙ্গমে রত হবে না। খুলতে একটু দেরি হলেও প্রথম পদক্ষেপে দেবায়ন খুব খুশি। পরের দু’দিন বেশ ভালো কাটে, বাড়ি ছেড়ে মা কোথাও যায় না দেবায়ন বাড়ি থেকে আর বের হলো না। বার কয়েক পরাশর, শুভ্র, প্রদীপ এদের ফোন এসেছিল, কিন্তু সেইগুলো কাটিয়ে দিয়েছে কোন এক অছিলায়। দুই দিন শুধু মায়ের পেছন পেছন ঘুরেছে। মাকে নিজের বান্ধবী হিসাবে দেখতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু মায়ের সামনে মুখ খুলতে পারেনি। দেবায়ন ঠিক করে নেয় যে সম্পর্ককে সময় দেওয়া উচিত।
রোজ রাতে শোয়ার আগে, অনুপমার ফোন আসে। রবিবার রাতে ওর বাবা, মিস্টার সোমেশ সেন বাড়ি ফিরেছেন। অনুপমার মা রাতে খাওয়ার সময়ে অনুপমার বাবাকে দেবায়নের কথা বলে দেয়। মায়ের মুখে দেবায়নের ব্যাপারে শুনে অনুপমা প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেছিল, কিন্তু মিসেস সেন জানিয়ে দেন যে দেবায়নকে তাঁর পছন্দ। বাবা অবশ্য জানিয়েছেন যে বুধবার দেখা করার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। দেবায়ন সব শুনে এক দীর্ঘ শ্বাস নেয়, জীবনের এক নতুন অধ্যায় অচিরেই শুরু হয়ে যাবে। সোমবার যথারীতি অনুপমার সাথে কলেজে দেখা হয়। অনুপমা জানায় যে বুধবার যেন তাড়াতাড়ি কলেজ থেকে সোজা বাড়ি পৌঁছে যায়। বাকি বন্ধু বান্ধবীদের নিমন্ত্রন করা হয়েছে বাড়িতে। তারা সব নিজেদের মতন পৌঁছে যাবে, কিন্তু দেবায়নের কথা আলাদা। বাবা মা আলাদা করে কথা বলতে চায় দেবায়নের সাথে, একটু উদ্বিগ্ন সেই কারনে। দেবায়ন অনুপমার কপালে চুমু খেয়ে আস্বস্ত করে সব ঠিক হয়ে যাবে। কলেজের পরে বাজু জড়িয়ে ধরে ট্যাক্সি স্টান্ড পর্যন্ত হেঁটে আসে।
দেবায়ন ফিসফিস করে অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “পুচ্চি, জন্মদিনের উপহার কিন্তু তুই নিজে চেয়েছিস, মনে আছে তো?”
অনুপমা লজ্জায় লাল হয়ে মাটির দিকে চোখ নামিয়ে আলতো মাথা নেড়ে জানায় যে মনে আছে। প্রেয়সীর ঠোঁটে লাজুক হাসি দেখে পুলকিত হয়ে ওঠে দেবায়নের মন। বাঁ হাতে জড়িয়ে ধরে কাঁধ, অনুপমার মন ছটফট করে ওঠে, মনে হয় এই রাস্তার মাঝে দেবায়নকে জড়িয়ে ওর বুকে লুকিয়ে যায়। ট্যাক্সিতে ওঠার সময়ে দেবায়নের কলার ধরে টেনে গালে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “আমি আই পিল খেতে শুরু করে দিয়েছি, গিফট কিন্তু ভালো মতন চাই।” দেবায়ন হাঁ করে থাকে, অনুপমার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি। দেবায়ন কোন প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই ট্যাক্সি ছেড়ে দেয়। অনুপমা ট্যাক্সির জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ঠোঁটের চুমু হাওয়ায় ছুঁড়ে দেয়।
কলেজ সেরে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে দেবায়ন। বাড়ি ফেরার কিছু পরেই মা ফিরে আসেন অফিস থেকে। দেবায়নের খুশি খুশি মুখ দেখে মা জিজ্ঞেস করে তার কারন। লাজুক হেসে দেবায়ন উত্তর দেয় যে অনুপমার জন্মদিন বুধবার, বাড়িতে ডেকেছে আর সেইদিনে ওদের সম্পর্কের সব কিছু পাকা হয়ে যাবে। দেবায়ন সেই সময়ে চেপে যায় যে অনুপমার বাড়ির লোকের সাথে কথা বলতে যাচ্ছে। মা ভেবে নেন যে, দেবায়ন আর অনুপমার ভালোবাসার সম্পর্ক পাকা হয়ে যাবে।
বুধবার মধ্যরাত্রে অনুপমাকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। অনুপমা জেগে ছিল আর সেই আশা দেবায়ন পূরণ করে। অনুপমা জানিয়ে দেয় যে কলেজ যাবে না। বাড়িতে কিছু স্পেসাল তৈরি হচ্ছে ওর জন্য। দেবায়ন জিজ্ঞেস করে যে অনুপমা জন্মদিনের স্পেসাল উপহারের জন্য তৈরি কি না। ওদিকে অনুপমা সেই কথা শুনে দুষ্টুমি করে বলে যে অনেক কিছু রাখা আছে সযত্নে, নিজে হাতে যেন খুলে নেয়। রাতে আর ঘুম হলো না দেবায়নের, সারা রাত ধরে শুধু অনুপমার ছবি দেখে কাটিয়ে গেল। মনের মধ্যে জল্পনা কল্পনা করতে লাগে, কি করে প্রেয়সীকে রাগ অনুরাগে ভরিয়ে তোলা যায়।
বুধবার সকালে কলেজে বের হবার আগে মাকে জানিয়ে দেয় যে বাড়ি ফিরতে দেরি হতে পারে, অনুপমার জন্মদিন, বেশি দেরি হলে বাড়ি নাও ফিরতে পারে। দেবায়ন ঠিক মতন জানেনা, অনুপমা যে উপহারের কথা বলেছে সেটা কি করে দেওয়া যায়, নিশ্চয় কিছু মাথায় আছে দুষ্টু মিষ্টি রূপসী ললনার। মা দেবায়নের কথা শুনে হেসে বলে, রাতে বাড়ি না ফিরলে ধরে নেবে অনুপমার সাথে আছে। দেবায়নের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
দুপুরের পর থেকে ফোনের বন্যা, “কখন আসছিস, আমার আর তর সইছে না তোকে দেখার জন্য।” দেবায়নের আর তর সয় না অনুপমার বাড়ি যাবার জন্য। মন আনচান করে সারাটা সময় ধরে, কিন্তু ক্লাসে নোটস না পেলে একটু মুশকিল। পায়েল বারবার জিজ্ঞেস করে কখন যাবে, দেবায়ন জানায় যে সময় হলেই যাবে। বাকিদের নিয়ে পায়েল যেন ওর বাড়ি পৌঁছায়, দেবায়ন হয়তো আগেই অনুপমার বাড়ি পৌঁছে যাবে। পায়েল জিজ্ঞেস করে যে কি প্রেসেন্ট দিচ্ছে দেবায়ন। দেবায়ন মিচকি হেসে পায়েলকে বলে, তার চাই নাকি? পায়েল কিছু বুঝতে না পেরে বলে দেয় হ্যাঁ। ঠোঁট শয়তানির হাসি মাখিয়ে জানিয়ে দেয় যে উপহারটা যদি অনুপমার ভালো লাগে তাহলে যেন নিজে চেয়ে নেয় অনুপমার কাছ থেকে।
দেবায়ন কলেজ থেকে বেরিয়েই অনুপমার জন্য একটা ফুলের তোড়া কেনে, সেই সাথে জমানো টাকা দিয়ে অনুপমার জন্য একটা সুন্দর ক্রিস্টালের লকেট কেনে। ট্যাক্সি ধরে অনুপমার বাড়ি সন্ধ্যের আগেই পৌঁছে যায়। বুক ধুকপুক করতে শুরু করে দেয় দেবায়নের, মিস্টার সেনের সামনে যেতে হবে, কি জিজ্ঞেস করতে পারে? কি উত্তর দেবে শত চিন্তা মাথায় ভর করে আসে। একে গ্রীষ্মকাল, তায় ঘাম, উৎকণ্ঠায় বেশি ঘামিয়ে যায় দেবায়ন। অনুপমাকে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে ফোন করে যে এসে গেছে। অনুপমা ফিসফিস করে জানিয়ে দেয় যে বাড়িতে অনেক লোক, সরাসরি বাড়ির ভেতর চলে আসতে।
দেবায়ন বাড়িতে ঢোকে, অনুপমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বেশ কয়েক জন আত্মীয় স্বজন এসেছেন। বন্ধুরা কেউ তখন আসেনি। দেবায়ন দেখল যে বসার ঘর লোকে ভর্তি, কিন্তু অনুপমার দেখা নেই। মিসেস সেনের দিকে চোখ গেল দেবায়নের। আজ যেন মিসেস সেনকে আরও সুন্দরী দেখাচ্ছে। পরনে হাল্কা নীল রঙের পাতলা শাড়ি আর গাড় নীল রঙের হাত কাটা ব্লাউস। ব্লাউসের বুকের কাছে বেশ গভীর কাটা। দুই বড় বড় নরম স্তনের উপরের ফোলা অংশ দেখা যায় সেই সাথে বুকের খাঁজ পরিস্ফুটিত। ফর্সা ত্বকের সাথে নীল রঙ্গে বেশ মানিয়ে গেছে। মাথার চুল একপাসে করে আঁচড়ানো, ঠোঁটে গাড় বাদামি লিপস্টিক। শাড়ির গিঁট নাভির কিছু নিচে, ফর্সা নরম তুলতুলে পেটের সাথে সুগভীর নাভি ভালো ভাবে দেখা যায়। শাড়ির আঁচল কোমর থেকে পাতলা হয়ে বুকের পরে কোনোরকমে যেন মেলে ধরা। মিসেস সেন যেন তাঁর তীব্র আকর্ষণীয় শরীর দেখাতে ব্যস্ত। দেবায়নকে দেখেই হেসে কাছে এসে দাঁড়ায়। মিসেস সেনের গা থেকে এক মিষ্টি মাতাল সুবাসে দেবায়নের মস্তিষ্ক বিচলিত হয়ে যায়। না চাইতেও চোখের দৃষ্টি পাশে দাঁড়ানো মিসেস সেনের গভীর স্তনের খাঁজে চলে যায়।
দেবায়নের হাত ধরে মিসেস সেন বলে, “তোমার জন্য আমার মেয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে আছে। এসো ভেতরে এসো, হ্যান্ডসাম।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “অনুপমা কোথায়? পায়েল এখনো আসেনি।”
মিসেস সেন, “তুমি বসো, আমি অনুকে ডেকে দিচ্ছি।”
একটু পরে সিঁড়ি বেয়ে অনুপমা নিচে নামে। দেবায়নের চোখ আটকে যায় রূপসী প্রেয়সীর দিকে। পরনে হাতাবিহীন ছোটো গোলাপি রঙের পার্টি ড্রেস। বুক থেকে পাছা পর্যন্ত ঢাকা, কাঁধে ফাইবার স্ট্রাপ লাগানো তাই দেখা যায় না। সামনের দিকে অনেকখানি কুঁচি দেওয়া। পিঠের দিক অনেকখানি উন্মুক্ত। মাথার চুল একপাসে করে আঁচড়ানো, চোখের কোনে কাজল, দুই ঠোঁটে লাল রঙ মাখা। ফর্সা রঙের সাথে সেই গোলাপি পোশাক দারুন মানিয়ে গেছে। দেবায়নকে দেখে, গজ দাঁতের মিষ্টি হাসি দেয়। বাড়িতে লোক ভর্তি তাই মনের ভেতরের চাপা উত্তেজনা প্রবলভাবে চেপে ধির পায়ে দেবায়নের পাশে এসে দাঁড়ায়। দেবায়নের চাহনি ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঝলসে দেয়। অনুপমা নিচের ঠোঁট চেপে ধরে লজ্জায়, ওর সামনে একবার ঘুরে যায় গোল করে, দেখায় নিজের পরনের জামা। ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কেমন লাগছে?
দেবায়ন ওর বাজুর ওপরে আলতো ঠেলে দিয়ে বলে, “তোকে দারুন দেখাচ্ছে, পুচ্চি।” অনুপমার হৃদয় যেন এইবারে ফেটে পড়বে খুশিতে। দেবায়ন ওর হাতে ফুলের তোড়া আর লকেটের ছোটো বাক্স ধরিয়ে দেয়। অনুপমা ওকে একপাসে টেনে নিয়ে যায়, দেবায়ন আলতো ঝুঁকে ওর গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে, “লকেট পছন্দ?”
অনুপমা, “লকেট দিয়ে কি হবে, তুই পাশে আছিস সেটাই অনেক।”
দেবায়ন, “কি ব্যাপার বাড়িতে এতো লোক কেন?”
অনুপমা ম্লান হেসে বসার ঘরের লোকেদের দিকে চোখ ঘুরিয়ে বলে, “বাঃ রে, এতো বড়লোকের মেয়ের জন্মদিন, তাও আবার কুড়িতে পা রাখল। জানাতে হবে না, আত্মীয় স্বজনদের? বাবার বন্ধুরা এসেছে মায়ের বন্ধুরা এসেছে। আমি তো কাল রাতে এক দারুন খবর পেয়েছি।”
দেবায়ন, “কি খবর?”
অনুপমা, “বাবার এক বন্ধু নাকি তার ছেলের জন্য আমাকে পছন্দ করেছে। ছেলে জার্মানিতে এম.বি.এ ফাইনাল ইয়ার, ইটালির এক বড় কোম্পানিতে ইন্টারনশিপ পেয়ে গেছে।”
অনুপমার কথা শুনে দেবায়নের বুক ধুক করে ওঠে, “তো, তুই কিছু বলিস নি?”
অনুপমার চোখের কোন চিকচিক করে ওঠে, “তুই বাবার সাথে কথা বলিস, দেখা যাক কি হয়।”
রোজ রাতে শোয়ার আগে, অনুপমার ফোন আসে। রবিবার রাতে ওর বাবা, মিস্টার সোমেশ সেন বাড়ি ফিরেছেন। অনুপমার মা রাতে খাওয়ার সময়ে অনুপমার বাবাকে দেবায়নের কথা বলে দেয়। মায়ের মুখে দেবায়নের ব্যাপারে শুনে অনুপমা প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেছিল, কিন্তু মিসেস সেন জানিয়ে দেন যে দেবায়নকে তাঁর পছন্দ। বাবা অবশ্য জানিয়েছেন যে বুধবার দেখা করার পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। দেবায়ন সব শুনে এক দীর্ঘ শ্বাস নেয়, জীবনের এক নতুন অধ্যায় অচিরেই শুরু হয়ে যাবে। সোমবার যথারীতি অনুপমার সাথে কলেজে দেখা হয়। অনুপমা জানায় যে বুধবার যেন তাড়াতাড়ি কলেজ থেকে সোজা বাড়ি পৌঁছে যায়। বাকি বন্ধু বান্ধবীদের নিমন্ত্রন করা হয়েছে বাড়িতে। তারা সব নিজেদের মতন পৌঁছে যাবে, কিন্তু দেবায়নের কথা আলাদা। বাবা মা আলাদা করে কথা বলতে চায় দেবায়নের সাথে, একটু উদ্বিগ্ন সেই কারনে। দেবায়ন অনুপমার কপালে চুমু খেয়ে আস্বস্ত করে সব ঠিক হয়ে যাবে। কলেজের পরে বাজু জড়িয়ে ধরে ট্যাক্সি স্টান্ড পর্যন্ত হেঁটে আসে।
দেবায়ন ফিসফিস করে অনুপমাকে জিজ্ঞেস করে, “পুচ্চি, জন্মদিনের উপহার কিন্তু তুই নিজে চেয়েছিস, মনে আছে তো?”
অনুপমা লজ্জায় লাল হয়ে মাটির দিকে চোখ নামিয়ে আলতো মাথা নেড়ে জানায় যে মনে আছে। প্রেয়সীর ঠোঁটে লাজুক হাসি দেখে পুলকিত হয়ে ওঠে দেবায়নের মন। বাঁ হাতে জড়িয়ে ধরে কাঁধ, অনুপমার মন ছটফট করে ওঠে, মনে হয় এই রাস্তার মাঝে দেবায়নকে জড়িয়ে ওর বুকে লুকিয়ে যায়। ট্যাক্সিতে ওঠার সময়ে দেবায়নের কলার ধরে টেনে গালে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “আমি আই পিল খেতে শুরু করে দিয়েছি, গিফট কিন্তু ভালো মতন চাই।” দেবায়ন হাঁ করে থাকে, অনুপমার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি। দেবায়ন কোন প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই ট্যাক্সি ছেড়ে দেয়। অনুপমা ট্যাক্সির জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে ঠোঁটের চুমু হাওয়ায় ছুঁড়ে দেয়।
কলেজ সেরে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে দেবায়ন। বাড়ি ফেরার কিছু পরেই মা ফিরে আসেন অফিস থেকে। দেবায়নের খুশি খুশি মুখ দেখে মা জিজ্ঞেস করে তার কারন। লাজুক হেসে দেবায়ন উত্তর দেয় যে অনুপমার জন্মদিন বুধবার, বাড়িতে ডেকেছে আর সেইদিনে ওদের সম্পর্কের সব কিছু পাকা হয়ে যাবে। দেবায়ন সেই সময়ে চেপে যায় যে অনুপমার বাড়ির লোকের সাথে কথা বলতে যাচ্ছে। মা ভেবে নেন যে, দেবায়ন আর অনুপমার ভালোবাসার সম্পর্ক পাকা হয়ে যাবে।
বুধবার মধ্যরাত্রে অনুপমাকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়। অনুপমা জেগে ছিল আর সেই আশা দেবায়ন পূরণ করে। অনুপমা জানিয়ে দেয় যে কলেজ যাবে না। বাড়িতে কিছু স্পেসাল তৈরি হচ্ছে ওর জন্য। দেবায়ন জিজ্ঞেস করে যে অনুপমা জন্মদিনের স্পেসাল উপহারের জন্য তৈরি কি না। ওদিকে অনুপমা সেই কথা শুনে দুষ্টুমি করে বলে যে অনেক কিছু রাখা আছে সযত্নে, নিজে হাতে যেন খুলে নেয়। রাতে আর ঘুম হলো না দেবায়নের, সারা রাত ধরে শুধু অনুপমার ছবি দেখে কাটিয়ে গেল। মনের মধ্যে জল্পনা কল্পনা করতে লাগে, কি করে প্রেয়সীকে রাগ অনুরাগে ভরিয়ে তোলা যায়।
বুধবার সকালে কলেজে বের হবার আগে মাকে জানিয়ে দেয় যে বাড়ি ফিরতে দেরি হতে পারে, অনুপমার জন্মদিন, বেশি দেরি হলে বাড়ি নাও ফিরতে পারে। দেবায়ন ঠিক মতন জানেনা, অনুপমা যে উপহারের কথা বলেছে সেটা কি করে দেওয়া যায়, নিশ্চয় কিছু মাথায় আছে দুষ্টু মিষ্টি রূপসী ললনার। মা দেবায়নের কথা শুনে হেসে বলে, রাতে বাড়ি না ফিরলে ধরে নেবে অনুপমার সাথে আছে। দেবায়নের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
দুপুরের পর থেকে ফোনের বন্যা, “কখন আসছিস, আমার আর তর সইছে না তোকে দেখার জন্য।” দেবায়নের আর তর সয় না অনুপমার বাড়ি যাবার জন্য। মন আনচান করে সারাটা সময় ধরে, কিন্তু ক্লাসে নোটস না পেলে একটু মুশকিল। পায়েল বারবার জিজ্ঞেস করে কখন যাবে, দেবায়ন জানায় যে সময় হলেই যাবে। বাকিদের নিয়ে পায়েল যেন ওর বাড়ি পৌঁছায়, দেবায়ন হয়তো আগেই অনুপমার বাড়ি পৌঁছে যাবে। পায়েল জিজ্ঞেস করে যে কি প্রেসেন্ট দিচ্ছে দেবায়ন। দেবায়ন মিচকি হেসে পায়েলকে বলে, তার চাই নাকি? পায়েল কিছু বুঝতে না পেরে বলে দেয় হ্যাঁ। ঠোঁট শয়তানির হাসি মাখিয়ে জানিয়ে দেয় যে উপহারটা যদি অনুপমার ভালো লাগে তাহলে যেন নিজে চেয়ে নেয় অনুপমার কাছ থেকে।
দেবায়ন কলেজ থেকে বেরিয়েই অনুপমার জন্য একটা ফুলের তোড়া কেনে, সেই সাথে জমানো টাকা দিয়ে অনুপমার জন্য একটা সুন্দর ক্রিস্টালের লকেট কেনে। ট্যাক্সি ধরে অনুপমার বাড়ি সন্ধ্যের আগেই পৌঁছে যায়। বুক ধুকপুক করতে শুরু করে দেয় দেবায়নের, মিস্টার সেনের সামনে যেতে হবে, কি জিজ্ঞেস করতে পারে? কি উত্তর দেবে শত চিন্তা মাথায় ভর করে আসে। একে গ্রীষ্মকাল, তায় ঘাম, উৎকণ্ঠায় বেশি ঘামিয়ে যায় দেবায়ন। অনুপমাকে বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে ফোন করে যে এসে গেছে। অনুপমা ফিসফিস করে জানিয়ে দেয় যে বাড়িতে অনেক লোক, সরাসরি বাড়ির ভেতর চলে আসতে।
দেবায়ন বাড়িতে ঢোকে, অনুপমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে বেশ কয়েক জন আত্মীয় স্বজন এসেছেন। বন্ধুরা কেউ তখন আসেনি। দেবায়ন দেখল যে বসার ঘর লোকে ভর্তি, কিন্তু অনুপমার দেখা নেই। মিসেস সেনের দিকে চোখ গেল দেবায়নের। আজ যেন মিসেস সেনকে আরও সুন্দরী দেখাচ্ছে। পরনে হাল্কা নীল রঙের পাতলা শাড়ি আর গাড় নীল রঙের হাত কাটা ব্লাউস। ব্লাউসের বুকের কাছে বেশ গভীর কাটা। দুই বড় বড় নরম স্তনের উপরের ফোলা অংশ দেখা যায় সেই সাথে বুকের খাঁজ পরিস্ফুটিত। ফর্সা ত্বকের সাথে নীল রঙ্গে বেশ মানিয়ে গেছে। মাথার চুল একপাসে করে আঁচড়ানো, ঠোঁটে গাড় বাদামি লিপস্টিক। শাড়ির গিঁট নাভির কিছু নিচে, ফর্সা নরম তুলতুলে পেটের সাথে সুগভীর নাভি ভালো ভাবে দেখা যায়। শাড়ির আঁচল কোমর থেকে পাতলা হয়ে বুকের পরে কোনোরকমে যেন মেলে ধরা। মিসেস সেন যেন তাঁর তীব্র আকর্ষণীয় শরীর দেখাতে ব্যস্ত। দেবায়নকে দেখেই হেসে কাছে এসে দাঁড়ায়। মিসেস সেনের গা থেকে এক মিষ্টি মাতাল সুবাসে দেবায়নের মস্তিষ্ক বিচলিত হয়ে যায়। না চাইতেও চোখের দৃষ্টি পাশে দাঁড়ানো মিসেস সেনের গভীর স্তনের খাঁজে চলে যায়।
দেবায়নের হাত ধরে মিসেস সেন বলে, “তোমার জন্য আমার মেয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে আছে। এসো ভেতরে এসো, হ্যান্ডসাম।”
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “অনুপমা কোথায়? পায়েল এখনো আসেনি।”
মিসেস সেন, “তুমি বসো, আমি অনুকে ডেকে দিচ্ছি।”
একটু পরে সিঁড়ি বেয়ে অনুপমা নিচে নামে। দেবায়নের চোখ আটকে যায় রূপসী প্রেয়সীর দিকে। পরনে হাতাবিহীন ছোটো গোলাপি রঙের পার্টি ড্রেস। বুক থেকে পাছা পর্যন্ত ঢাকা, কাঁধে ফাইবার স্ট্রাপ লাগানো তাই দেখা যায় না। সামনের দিকে অনেকখানি কুঁচি দেওয়া। পিঠের দিক অনেকখানি উন্মুক্ত। মাথার চুল একপাসে করে আঁচড়ানো, চোখের কোনে কাজল, দুই ঠোঁটে লাল রঙ মাখা। ফর্সা রঙের সাথে সেই গোলাপি পোশাক দারুন মানিয়ে গেছে। দেবায়নকে দেখে, গজ দাঁতের মিষ্টি হাসি দেয়। বাড়িতে লোক ভর্তি তাই মনের ভেতরের চাপা উত্তেজনা প্রবলভাবে চেপে ধির পায়ে দেবায়নের পাশে এসে দাঁড়ায়। দেবায়নের চাহনি ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঝলসে দেয়। অনুপমা নিচের ঠোঁট চেপে ধরে লজ্জায়, ওর সামনে একবার ঘুরে যায় গোল করে, দেখায় নিজের পরনের জামা। ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কেমন লাগছে?
দেবায়ন ওর বাজুর ওপরে আলতো ঠেলে দিয়ে বলে, “তোকে দারুন দেখাচ্ছে, পুচ্চি।” অনুপমার হৃদয় যেন এইবারে ফেটে পড়বে খুশিতে। দেবায়ন ওর হাতে ফুলের তোড়া আর লকেটের ছোটো বাক্স ধরিয়ে দেয়। অনুপমা ওকে একপাসে টেনে নিয়ে যায়, দেবায়ন আলতো ঝুঁকে ওর গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে, “লকেট পছন্দ?”
অনুপমা, “লকেট দিয়ে কি হবে, তুই পাশে আছিস সেটাই অনেক।”
দেবায়ন, “কি ব্যাপার বাড়িতে এতো লোক কেন?”
অনুপমা ম্লান হেসে বসার ঘরের লোকেদের দিকে চোখ ঘুরিয়ে বলে, “বাঃ রে, এতো বড়লোকের মেয়ের জন্মদিন, তাও আবার কুড়িতে পা রাখল। জানাতে হবে না, আত্মীয় স্বজনদের? বাবার বন্ধুরা এসেছে মায়ের বন্ধুরা এসেছে। আমি তো কাল রাতে এক দারুন খবর পেয়েছি।”
দেবায়ন, “কি খবর?”
অনুপমা, “বাবার এক বন্ধু নাকি তার ছেলের জন্য আমাকে পছন্দ করেছে। ছেলে জার্মানিতে এম.বি.এ ফাইনাল ইয়ার, ইটালির এক বড় কোম্পানিতে ইন্টারনশিপ পেয়ে গেছে।”
অনুপমার কথা শুনে দেবায়নের বুক ধুক করে ওঠে, “তো, তুই কিছু বলিস নি?”
অনুপমার চোখের কোন চিকচিক করে ওঠে, “তুই বাবার সাথে কথা বলিস, দেখা যাক কি হয়।”