ফুলের আঘাত সয়না
Writer: দিদার হালিম
ভূমিকা
আমার জীবনটাই বুঝি এমন। সারাটা জীবনই শুধু ভাঙচুরের খেলাতেই এগিয়ে চললো। মাঝে মাঝে কেনো যেনো, বড় বড় কাটার আঘাতগুলোও খুব সহজে হজম করে ফেলি। অথচ নরোম কোন ফুলের আঘাতও কখনো কখনো খুব সহজে মেনে নিতে পারিনা।
এই বাসনার সাথেও ভাঙ্গচুরের খেলাটা হয়ে গেলো। এটা আমি কি করলাম? এত ভালোবেসে, বাসনার সব বন্ধুদের আপন করে নিলাম! আনন্দে আনন্দে প্রায় একটা মাস কাটিয়ে দিলাম! অথচ, কয়েক মুহুর্ত সময় নিয়ে, আমার সব লেখাগুলো নিজেই ধ্বংস করে দিলাম! মাঝে মাঝে আমি নিজেকেই বুঝিনা। এমন কেনো করি আমি? আমার মনে পরে শৈশবের কথা, কৈশোরের কথা, আর প্রথম তারুণ্যে নুতন করে দেখা সেই কেয়া আপাকে!
আমার বয়স কত হবে? তেরো? এমন একটা বয়সে অন্য ছেলেরা যৌনতার ব্যপারগুলো কতটা বুঝে, কিংবা কতটা অনুভব করে আমার জানা নেই। তবে আমি তার কিছুই বুঝতামনা, এমন কি অনুভবও করতাম না।
সেবার ক্লাশ এইটে পড়ি। গরমের ছুটিতে দশ বারোজন বন্ধু মিলেই, আমাদের এলাকা থেকে খানিকটা দুরে নদীর ধারেই বনভোজনে গিয়েছিলাম। বনভোজনে যখন আমরা অধিকাংশ বন্ধুরাই খড়কুটা, লাকড়ি সংগ্রহ আর রান্না বান্না নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছিলাম, তখন আমাদের তিনজন বন্ধু খানিকটা আড়ালে গিয়ে, কি যেনো একটা ম্যাগাজিন পড়ছিলো। প্রথমে পাত্তা দিইনি। কারন, এ ধরনের ম্যগাজিন আমাদের বাসায়ও থাকে, যেটা তৎকালে সাপ্তাহিক রোববার বলতো। আমি কখনো পড়তামনা, তবে কেয়া আপার অনুরোধেই প্রতি সপ্তাহেই হকার সেটা দিয়ে যেতো।
সেদিন অনেক ক্লান্তির পর, বিশ্রামের জন্যেই সেই বন্ধুদের পাশে গিয়ে বসেছিলাম। আমি শখ করেই বললাম, কি পড়ছিস, দেখি তো?
আমার বন্ধুরা ম্যাগাজিনটা লুকিয়ে, আমাকে হেয় করেই বলেছিলো, তুই এসব বুঝবিনা, ছোট ছেলে! যা এখান থেকে!
সত্যিই সত্যিই, আমি তাদের পাশ থেকে না সরা পয্যন্ত, ম্যাগাজিনটা তারা লুকিয়েই রাখলো। আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। কি এমন ম্যাগাজিন হতে পারে যে, আমাকে দেখে লুকিয়ে রাখতে হয়, আমাকে পড়তে দেয়া যায়না!
এটা ঠিক, আমাদের ক্লাশে, আমি সবচেয়ে কনিষ্ঠ ছাত্রই ছিলাম। তারপরও, মানুষের চোখ দেখে অনেক কিছু বুঝার মতোই একটা বয়স ছিলো। আমার মনে হয়েছিলো, নিশ্চয় তারা নিষিদ্ধ কোন একটা ম্যাগাজিন পড়ছে। তবে, কেমন নিষিদ্ধ, সেটাই শুধু অনুমান করতে পারছিলাম না। তেমনি কিছু নিষিদ্ধ ব্যপারে আগ্রহটাও তৎক্ষনাত নষ্ট হয়ে গেলো। সেদিন বনভোজন থেকে খুব মন খারাপ করেই বাড়ী ফিরে এসেছিলাম।
বনভোজন থেকে বাড়ী ফিরে এসেছিলাম, বিকাল তিনটার দিকে। গরমের দিন ছিলো বলে, অসহ্য গরমই পরেছিলো বোধ হয় সেদিন। বাড়ী ফিরে এসে দেখি বিদ্যুৎও নেই। আর বিদ্যুতের অভাবে, সিলীং ফ্যানটা চলছিলোনা বলে, কেয়া আপার দেহটাও বুঝি তখন খুব ছটফট করছিলো!
আসলে, কেয়া আপার সাথে আমাদের আত্মীয়তার কোন সম্পর্ক নেই। খুব ছোটকাল থেকেই আমাদের বাড়ীতে আছে সে। মাঝে মাঝে নিজ বাড়ীতে গেলেও, দিনে দিনেই ফিরে আসে। অনেকে হয়তো এমন কিছু মেয়েকে বাড়ীর কাজের মেয়েও বলে থাকে। আমি বলিনা। কারন, শৈশবে আমার মায়ের মৃত্যুর পরও, যখন আমার বাবা একটা বিদেশী জাহাজের কাজে পুরোটা বছরই সমুদ্রের বুকে কাটিয়ে দেয়, তখন আমার চাইতে মাত্র দু তিন বছরের বড় এই মেয়েটি, নিজের ব্যক্তিগত সুখ পয্যন্ত বিসর্জন দিয়ে আমার দেখাশুনা করে এসেছে প্রতিটা রাত, প্রতিটা দিন। এই তো সেদিনও তার বাবা মা এসেছিলো, বিয়ের কথাবার্তা বলার জন্যে। অথচ, কেয়া আপা বলেছিলো, অনির এস, এস, সি পরীক্ষাটা শেষ হউক। আর তো মাত্র কটা বছর! তারপরই বিয়ে।
এমন একটি মেয়েকে বাড়ীর কাজের মেয়ে বলার ধৃষ্ঠতা আমার কখনোই নেই।
কেয়া আপা কখনো স্কুলে যায়নি। তবে, আমার বইগুলো সব সময়ই সে নিয়ে নিয়ে পড়তো। মাঝে মাঝে তার মেধা দেখে, আমিও খুব অবাক হতাম। কেনোনা, কোন কোন পড়া সে আমাকেও বুঝিয়ে দিতো। কেয়া আপা দেখতে আহামরি ধরনের কোন সুন্দরী মেয়ে ছিলোনা। তবে চেহারাটা ছিলো খুবই মিষ্টি। গোলগাল চেহারা, গায়ের রং ফর্সাও নয়, আবার কালোও নয়। অনেকে বলে থাকে উজ্জল শ্যাম বর্ন। আবার অনেকে খুব আদুরে ভাষায় বলে থাকে গায়ের রং মিষ্টি। কেয়া আপার গায়ের রংটা ঠিক তেমনি এক ধরনের। এটা ঠিক, কেয়া আপার গায়ের ত্বক খুবই মসৃণ। সবসময় পরিপাটি পোষাকই পরতো। তার চেয়ে বড় কথা, কেয়া আপার দাঁতগুলো ছিলো অসম্ভব চমৎকার। তাকে দেখলে কখনোই কেউ কাজের মেয়ে বলবেনা। জীবিত থাকা কালীন আমার মাও বোধ হয় তাকে কাজের মেয়ে ভাবতো না। নিজের মেয়ের মতোই স্নেহ করতো। আমিও ঠিক নিজ আপন বড় বোনের চোখেই দেখতাম। এমন একটি মমতাময়ী বোনের সুন্দর দাঁতের হাসি দেখে, কখনোই মা হারানোর ব্যথাটা মনে পরতোনা। যার কারনে এখন পয্যন্ত কোন মেয়েকে দেখলে, প্রথমেই আমি তার দাঁতগুলো পয্যবেক্ষন করে থাকি। এবং কেয়া আপার দাঁতের সাথে তুলনামুলক একটা বিচারও করে থাকি।
সেদিন বনভোজন থেকে ফিরে এসে দেখি, কেয়া আপা বসার ঘরের মেঝেতে শুয়ে, একটা তালপাতার পাখা হাতে নিয়ে নিজের গায়ে বাতাস করছে আনমনে, চোখ বন্ধ করে। কেয়া আপা সাধারনত, স্যালোয়ার কামিস পরতো। অথচ দেখলাম, সেদিন তার দেহের উর্ধ্বাংগটা পুরুপুরি নগ্ন। কামিসটা খানিকটা দুরেই মেঝেতে পরে আছে। তবে, নিম্নাঙ্গে স্যালোয়ারটা ঠিকই আছে। কেয়া আপার বয়স বোধ হয় তখন ষোল। পূর্ন বক্ষ তার।
আমি শুধু এক নজরই কেয়া আপার বক্ষটা দেখেছিলাম। আর তাতে করেই আমার দেহে নুতন কিছু পরিবর্তন অনুভব করলাম। অনুভব করলাম, আমার প্যান্টের তলায় যেটি দিয়ে সব সময় মুত্র ত্যাগ ছাড়া অন্য কিছুই করতাম না, সেই শিশ্নটি হঠাৎই চরচরিয়ে উঠে, ঈষৎ কঠিন আকার ধারন করলো। তাৎক্ষনিকভাবে তার কারন, কিছুই বুঝতে পারলাম না। তবে মনে হলো, কেয়া আপার বক্ষের মতো কোন সুন্দর জিনিষ দেখলে বুঝি এমনটিই হয়ে থাকে! এমনটি ভেবে আমি আর দেখার চেষ্টা করলাম না।
কেয়া আপার চোখ দুটো যখন বন্ধই, আমাকে দেখেনি ভেবে, আমি পা টিপে টিপেই নিজের ঘরের দিকে চলে যাচ্ছিলাম। অথচ, টের পেয়ে গিয়ে কেয়া আপা খানিকটা লজ্জা নিয়েই উঠে বসলো। তালপাতার পাখাটা দিয়েই তার ষোল বছরের সুঠাম সুন্দর পুষ্প দুটোকে ঢাকার চেষ্টা করলো। তবে, ঠিক পরক্ষনেই চেহারা থেকে লজ্জাটা সরিয়ে নিয়ে, তার সাদা ঝকঝকে সুন্দর দাতগুলো বেড় করে মিষ্টি হেসে, সহজ গলায় বললো, কি বনভোজন এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলো?
আসলে, আমি কেনো যেনো তখন কেয়া আপার সামনে অতটা সহজ হতে পারলাম না। কেয়া আপার নগ্ন বক্ষে চমৎকার দুটো পুষ্প দেখে আসলেই আমার মাথার ভেতরটা ভিন্ন রকমে, খারাপ হয়ে গিয়েছিলো। দেহটাও খানিকটা আগুনে পুড়ছে বলেই মনে হলো। আমি মাথা নীচু রেখেই এক কথায় বললাম, হুম।
এই বলে নিজের ঘরেই ছুটে এলাম।
আসলে মেয়েদের বক্ষের ব্যাপারে আমার কোন ধারনাই ছিলোনা। সেই দুপুরে এক পলক কেয়া আপার বক্ষটা যা দেখেছি, তা আমার মাথার ভেতর যেনো স্থায়ী হয়ে উঠলো। মনে হলো, পৃথিবীর সমস্ত সুন্দরই বুঝি এই কেয়া আপার বুকে! কি নিটোল! কি আকৃতি! কি ধরন! কেয়া আপার বক্ষের সেই ফুল দুটো! এমন সুন্দর ফুল পৃথিবীতে আর থাকতে পারে নাকি? আমি আমার মাথার ভেতরে পৃথিবীর সমস্ত ফুলগুলো এনে হাজির করতে থাকলাম। গোলাপ, টগর, জবা, গন্ধরাজ, শাপলা, পদ্ম, আরো কত কি? অথচ, আমি যেনো কেয়া আপার বুকের উপর ফুটে থাকা, পাশাপাশি এক জোড়া ফুলের সাথে কোন ফুলেরই তুলনা করতে পারলাম না। কারন, এক পলকে যা দেখেছি, তাতে স্পষ্ট মনে আছে! কেয়া আপার গায়ের রং এর চাইতেও অধিকতর ফর্সা গোলাকার দুটো ফুল, উপরের দিকটা ঈষৎ চৌকু! যে ফুল দুটোর ঠিক ডগাতেই গাঢ় খয়েরী, ঈষৎ প্রশস্ত বৃন্ত দুটো চোখ মেলেই ছাদের দিকে তাঁকিয়ে ছিলো। আর বৃন্ত দুটোর ঠিক চুড়াতেই ঈষৎ ফোলা ফোলা রেনু দুটো, পৃথিবীর কোন ফুলের রেনুর সাথেই তুলনা করা দুষ্কর। আমার ইচ্ছে হতে থাকলো আরও একবার দেখতে, কেয়া আপার সেই নগ্ন বক্ষ, সেই নাম না জানা চমৎকার এক জোড়া ফুল! না না, একবার নয়, বার বার দেখতে, বার বার দেখতে! প্রতিদিন, প্রতিটা ক্ষণ দেখতে! প্রাণ ভরে ভরে দেখতে! নিজের অজান্তেই আমার ছোট লিঙ্গটা কঠিন হয়েই থাকলো দীর্ঘ একটা সময়।
ক্রমে ক্রমে আমার মাথার ভেতরে কুৎসিত কিছু ভাবনা এসে জমা হতে থাকলো। পড়ার টেবিলে ঝিম মেরে বসে রইলাম খানিকটা ক্ষন। মনে হতে থাকলো, বনভোজনে বন্ধুরা বোধ হয় তেমনি কিছু পার্থিব সুন্দরের কথা লেখা ম্যাগাজিনই পড়ছিলো। যা পড়লে দেহে শুধু শিহরণই তুলে! শিশ্নকে পরিবর্তন করে দেয়। নিজের অবচেতন মনেই, আমিও তেমনি একটা লিখা নিজেই লিখতে শুরু করতে থাকলাম। যেখানে কেয়া আপার বক্ষের সুন্দরকেই শুধু বর্ননা করতে থাকলাম ইনিয়ে বিনিয়ে। সেটাই বুঝি ছিলো আমার জীবনে প্রথম যৌনতামূলক গলপো। যারা অন্য ভাষায় বলে থাকে চটি গলপো। এক পৃষ্ঠার সেই গলপোটা লিখে, আমি লুকিয়ে রেখেছিলাম পুরনো খাতাপত্রেরই একটা মাঝামাঝি জায়গায়। আর সেটাই ছিলো বুঝি আমার বড় একটা ভুল।
আমি সেদিন বাড়ীতে ছিলাম না। পুরনো কাগজপত্র বিক্রি করার জন্যে, প্রয়োজনীয় অপ্রজনীয় খাতাগুলো বাছাই করতে গিয়েই সেই গলপোটা কেয়া আপার হাতে পরে গিয়েছিলো। আর গলপোটা লিখেছিলাম কেয়া আপাকে নিয়ে, কেয়া আপার বক্ষকে নিয়ে, যেখানে সরাসরি কেয়া আপার নামও ব্যবহার করেছিলাম!
সেদিন সন্ধ্যার পর বাড়ী ফিরতেই দেখলাম, কেয়া আপা খুব গম্ভীর চেহারা করে আছে। আমি কোন কিছু না বুঝে, নিজের পড়ার ঘরেই আপন মনে এসে চেয়ারে বসেছিলাম। পেছনে পেছনে কেয়া আপাও আমার ঘরে এলো। আমার চোখের সামনে মেলে ধরলো, সেই এক পাতার কাগজটা, যেখানে কেয়া আপাকে নিয়ে অনেকদিন আগে একটা গলপো লিখেছিলাম। আমার মাথাটা তাৎক্ষনিকভাবে শুন্য হয়ে গেলো। আমি মাথা নীচু করে বসে রইলাম। আর কেয়া আপা থর থর করে কাঁপতে কাঁপতে আমার দু গালেই পর পর দুটো থাপ্পর বসিয়ে দিলো।
তারপর, অনুমান করলাম, আমার পেছনেই খাটের উপর ধপাস করে বসলো কেয়া আপা। আমি এও অনুমান করলাম, কেয়া আপা হুঁ হুঁ করে কাঁদছে। আমি বুঝতে পারলাম, এমন একটা জঘন্য কাজ করে, আমার মা তুল্য, বড় বোন তুল্য, কেয়া আপাকে সাংঘাতিক কষ্টই দিয়েছি। কেনোনা, সেদিন কেয়া আপা তো শখ করে তার বক্ষকে নগ্ন রাখেনি! বাড়ীতে কেউ ছিলোনা বলে, গরমের জ্বালা সহ্য করতে না পেরেই হয়তো কামিসটা খোলে রেখেছিলো পরন থেকে। আর, আমি তা নিয়ে একটা চটি গলপো লিখে ফেললাম? তার জন্যে আমার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। আমি চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে, কেয়া আপার পায়ে পরে গেলাম।
কেয়া আপা আমার দু বাহু টেনে ধরে তার বুকের মাঝেই চেপে ধরলো। তারপর, ওড়নায় তার চোখের জল মুছে, আমার ঠোটে আলতো একটা চুমু দিয়ে বললো, গলপোটা সুন্দর হয়েছে! গলপো লেখার জন্যে রাগ করিনি, কিংবা তোমাকে থাপ্পরও মারিনি। রাগ করেছি এই জন্যে যে, সরাসরি আমার নাম লিখলে কেনো? অন্য নামও তো দিতে পারতে। কাগজটা যদি কাগজওয়ালার হাত ধরে অন্য কারো হাতে পরতো?