ওর যেন খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল আর হঠাৎ করেই নিয়তি যেন সেই সুযোগ ওর হাতের মধ্যে নিয়ে ফেলে দিল। বুকের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো, “জানিস বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ে খুব হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছিল। তবে এইভাবে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকলে সকালে গ্রামের লোকজন আমাদের লাশ পাবে।”
হিহি করে হেসে দিল দেবায়ন। দুইহাতে আস্টেপিস্টে আন্টিকে জড়িয়ে বলে, “ইসস আন্টি, তুমি থাকতে কেন মরতে যাবো।”
সামনে বিশাল চওড়া গঙ্গা নদীর কালো জল কুলুকুলু অনবরত বয়ে চলেছে মোহনার পানে। দুর দিগন্তে অন্য পাড়ে কালো কালো জঙ্গল পিচাশের মতন মাথা উঁচিয়ে। দুর থেকে কখন কোন শেয়ালের অথবা অন্য কোন বন্য প্রাণীর ডাক শোনা যায়। কালো আকাশে অসংখ্য তারার ঝিকিমিকি, মিটমিট করে নদীর তিরে ঘন আলিঙ্গনে বদ্ধ দুই নর নারীর দিকে চেয়ে চেয়ে দেখছে।
নিবেদিতা দেবায়নের হাত খানা নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে গায়ের চারপাশে জড়িয়ে নিল। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া থেকে নিস্তার পেতে না ওর ক্লান্ত জীবন থেকে অব্যাহতি পেতে, সঠিক ভাবে ওর মন জানে না। আন্টিকে জড়িয়ে ধরে দেবায়ন যেন নিজের মাকে খুঁজে পেল। দেবায়নের প্রচন্ড ইচ্ছে করে আন্টির ভেতরে সেঁধিয়ে যেতে, এই নির্মল প্রশান্ত ক্রোড়ে মায়ের মতো আন্টিকেও ভালবাসতে। কালের চক্র কোনোদিন পেছনে চলে না কিন্তু দেবায়ন মন প্রান দিয়ে চাইছিল এই রাত যেন শেষ না হয়, আন্টির কোলেই মাথা রেখে বাকিটা সময় কাটিয়ে দেওয়ার।
নিবেদিতা দেবায়নকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্নেহভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কি রে ঠাণ্ডা লাগছে?”
দেবায়ন বাচ্চা ছেলেদেরর মতন ঠোঁট বেঁকিয়ে মাথা দুলিয়ে বলে, “হ্যাঁ আন্টি খুব ঠাণ্ডা লাগছে।”
নদীর তিরে এইভাবে দাঁড়িয়ে কনকনে ঠাণ্ডায় ওরা জমে যাবে। নিবেদিতা এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখল। অনেক দূরে বেশ কয়েকটা ঘরের মতন জায়গায় আলো জ্বলছে। দেবায়নকে ওই দুরের বাড়িগুলো দেখিয়ে বলে, “ওই দেখ দূরে মনে হয় কিছু আছে। চল একবার ওইখানে গিয়ে দেখি, হয়ত রাস্তা পাওয়া যাবে কিম্বা হয়ত থাকার জায়গা পাওয়া যাবে।”
আন্টির দৃষ্টি অনুসরন করে দেবায়ন দেখল দূরে একটা রিসোর্টের মতন জায়গা। কনকনে ঠাণ্ডা থেকে নিস্তার পাবে এইবারে ভেবেই মন খুশিতে ভরে উঠল। আন্টিকে হেসে বলল, “মনে হচ্ছে কোন রিসোর্ট।”
নিবেদিতাও স্বস্তির শ্বাস নিল, এই ঠাণ্ডায় এইভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা আর যাচ্ছে না, “যদি রিসোর্ট হয় তাহলে খুব ভালো কথা। ওইখানে তাহলে অন্তত রাতে থাকা যাবে।”
দেবায়নের মনও নেচে উঠল, “হুম, চল।”
গাড়ি নিয়ে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে দুর রিসোর্টে গিয়ে পৌছাল ওরা। বেশি বড় নয়, নদীর তীরে ছিমছাম ছোট একটা রিসোর্ট। গেটে তালা দেওয়া, কে এই রাত বারোটায় এই গন্ড গ্রামের রিসোর্টে আসবে ভেবে হয়ত লোকেরা তালা লাগিয়ে এতক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে। দেবায়ন বেশ কয়েকবার হর্ন বাজালো। নিবেদিতা বারন করার আগেই কেউ খুলছে না দেখে অগত্যা শেষ পর্যন্ত দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে গেল। দেবায়নের কান্ড দেখে নিবেদিতা আর হাসি থামাতে পারে না। গাড়ি থেকে বেরিয়ে চুপচাপ দেবায়নের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে মনে মনে হাসে। দেবায়ন দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল। দরজার আওয়াজ পেয়ে একজন লোক বেরিয়ে এলো। সেই লোকটাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে জানিয়ে দিল যে রুম খালি পড়ে আছে। দেবায়নকে সঙ্গে নিয়ে মেইন গেট খুলে দিল লোকটা।
মেইন গেট খুলতেই আন্টির কাছে দৌড়ে গেল দেবায়ন, “রুম পাওয়া গেছে।”
নিবেদিতা মুচকি হেসে পেছনের লোকটাকে জিজ্ঞেস করে, “রুম ভালো তো, নাকি সব নোংরা?”
লোকটা ইনিয়ে বিনিয়ে হাত কচলে বলল, “না না ম্যাডাম খুব ভালো রুম একদম পরিষ্কার।”
বলেই গাড়ির পেছনের দিকে চলে গেল, ভেবেছিল হয়ত এদের সাথে কোন জিনিস পত্রের ব্যাগ থাকবে। দেবায়ন ওকে জানিয়ে দিল ওদের সাথে কোন ব্যাগ নেই।
লোকটা একটু চমকে যেতেই নিবেদিতা বলে, “আমরা আসলে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। তা বড় রাস্তা এখান থেকে কতদুরে।”
হিহি করে হেসে দিল দেবায়ন। দুইহাতে আস্টেপিস্টে আন্টিকে জড়িয়ে বলে, “ইসস আন্টি, তুমি থাকতে কেন মরতে যাবো।”
সামনে বিশাল চওড়া গঙ্গা নদীর কালো জল কুলুকুলু অনবরত বয়ে চলেছে মোহনার পানে। দুর দিগন্তে অন্য পাড়ে কালো কালো জঙ্গল পিচাশের মতন মাথা উঁচিয়ে। দুর থেকে কখন কোন শেয়ালের অথবা অন্য কোন বন্য প্রাণীর ডাক শোনা যায়। কালো আকাশে অসংখ্য তারার ঝিকিমিকি, মিটমিট করে নদীর তিরে ঘন আলিঙ্গনে বদ্ধ দুই নর নারীর দিকে চেয়ে চেয়ে দেখছে।
নিবেদিতা দেবায়নের হাত খানা নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে গায়ের চারপাশে জড়িয়ে নিল। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া থেকে নিস্তার পেতে না ওর ক্লান্ত জীবন থেকে অব্যাহতি পেতে, সঠিক ভাবে ওর মন জানে না। আন্টিকে জড়িয়ে ধরে দেবায়ন যেন নিজের মাকে খুঁজে পেল। দেবায়নের প্রচন্ড ইচ্ছে করে আন্টির ভেতরে সেঁধিয়ে যেতে, এই নির্মল প্রশান্ত ক্রোড়ে মায়ের মতো আন্টিকেও ভালবাসতে। কালের চক্র কোনোদিন পেছনে চলে না কিন্তু দেবায়ন মন প্রান দিয়ে চাইছিল এই রাত যেন শেষ না হয়, আন্টির কোলেই মাথা রেখে বাকিটা সময় কাটিয়ে দেওয়ার।
নিবেদিতা দেবায়নকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্নেহভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “কি রে ঠাণ্ডা লাগছে?”
দেবায়ন বাচ্চা ছেলেদেরর মতন ঠোঁট বেঁকিয়ে মাথা দুলিয়ে বলে, “হ্যাঁ আন্টি খুব ঠাণ্ডা লাগছে।”
নদীর তিরে এইভাবে দাঁড়িয়ে কনকনে ঠাণ্ডায় ওরা জমে যাবে। নিবেদিতা এদিক ওদিকে তাকিয়ে দেখল। অনেক দূরে বেশ কয়েকটা ঘরের মতন জায়গায় আলো জ্বলছে। দেবায়নকে ওই দুরের বাড়িগুলো দেখিয়ে বলে, “ওই দেখ দূরে মনে হয় কিছু আছে। চল একবার ওইখানে গিয়ে দেখি, হয়ত রাস্তা পাওয়া যাবে কিম্বা হয়ত থাকার জায়গা পাওয়া যাবে।”
আন্টির দৃষ্টি অনুসরন করে দেবায়ন দেখল দূরে একটা রিসোর্টের মতন জায়গা। কনকনে ঠাণ্ডা থেকে নিস্তার পাবে এইবারে ভেবেই মন খুশিতে ভরে উঠল। আন্টিকে হেসে বলল, “মনে হচ্ছে কোন রিসোর্ট।”
নিবেদিতাও স্বস্তির শ্বাস নিল, এই ঠাণ্ডায় এইভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা আর যাচ্ছে না, “যদি রিসোর্ট হয় তাহলে খুব ভালো কথা। ওইখানে তাহলে অন্তত রাতে থাকা যাবে।”
দেবায়নের মনও নেচে উঠল, “হুম, চল।”
গাড়ি নিয়ে এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে দুর রিসোর্টে গিয়ে পৌছাল ওরা। বেশি বড় নয়, নদীর তীরে ছিমছাম ছোট একটা রিসোর্ট। গেটে তালা দেওয়া, কে এই রাত বারোটায় এই গন্ড গ্রামের রিসোর্টে আসবে ভেবে হয়ত লোকেরা তালা লাগিয়ে এতক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে। দেবায়ন বেশ কয়েকবার হর্ন বাজালো। নিবেদিতা বারন করার আগেই কেউ খুলছে না দেখে অগত্যা শেষ পর্যন্ত দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে গেল। দেবায়নের কান্ড দেখে নিবেদিতা আর হাসি থামাতে পারে না। গাড়ি থেকে বেরিয়ে চুপচাপ দেবায়নের কান্ড কারখানা দেখতে দেখতে মনে মনে হাসে। দেবায়ন দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল। দরজার আওয়াজ পেয়ে একজন লোক বেরিয়ে এলো। সেই লোকটাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে জানিয়ে দিল যে রুম খালি পড়ে আছে। দেবায়নকে সঙ্গে নিয়ে মেইন গেট খুলে দিল লোকটা।
মেইন গেট খুলতেই আন্টির কাছে দৌড়ে গেল দেবায়ন, “রুম পাওয়া গেছে।”
নিবেদিতা মুচকি হেসে পেছনের লোকটাকে জিজ্ঞেস করে, “রুম ভালো তো, নাকি সব নোংরা?”
লোকটা ইনিয়ে বিনিয়ে হাত কচলে বলল, “না না ম্যাডাম খুব ভালো রুম একদম পরিষ্কার।”
বলেই গাড়ির পেছনের দিকে চলে গেল, ভেবেছিল হয়ত এদের সাথে কোন জিনিস পত্রের ব্যাগ থাকবে। দেবায়ন ওকে জানিয়ে দিল ওদের সাথে কোন ব্যাগ নেই।
লোকটা একটু চমকে যেতেই নিবেদিতা বলে, “আমরা আসলে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। তা বড় রাস্তা এখান থেকে কতদুরে।”