What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

নিষিদ্ধ ভালবাসা (1 Viewer)

কান্না হাসির খেলা। (#3)



[HIDE]বকে দিল আমাকে “অনেকক্ষণ ধরে দেখে যাচ্ছি, শুধু সিগারেট খেয়ে চলেছ।”

আমি আঙ্গুল থেকে সিগারেট টা মাটিতে ফেলে বললাম “ঠিক আছে বাবা, এই নাও আর খাচ্ছিনা।”

“তুমি আজ রাতে এখানে থাকলে কেন?”

“আমি কোনদিন কোন কাছের আত্মীয়র বিয়ে দেখিনি তাই পুরোটা এঞ্জয় করতে রয়ে গেলাম।”

আবার বকে দিল আমাকে “তাহলে তুমি আমার জন্য থাকনি?”

আমি অবাক “কোন লেডিস রাতে স্টে করেনি, তো আমি কি করে জানবো যে তুমি স্টে করবে কি করবে না।”

আমার হাতের ওপরে মৃদু চাপর মেরে বলে “তুমি একটা আস্ত গাধা। আমাকে একবারের জন্য জিজ্ঞেস করলে না কেন? একবারের জন্য ভেবে দেখলে না আমি অতটা রাস্তা একা একা কি করে ফিরব?”

“তোমাকে বোঝা বড় দায়, পরী। আমি সত্যি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিনা তোমাকে। বাসে সবাই তোমার চেনা জানা, তুমি একা কেন হবে?”

অভিমানীনি পরী বলে ওঠে “তোমরা ছেলেরা কখন বুঝবে না আমাদের।” রেগে আমার সামনে থেকে উঠে যায়।

আমি ওর হাত দুটি হাতের মধ্যে নিয়ে কাতর স্বরে বলি “প্লিস যেওনা। বস একটু।”

“কেন বসতে যাবো আমি? তুমি তো এখানে আমার জন্য বসে নয়। একা একা বসে থাকো।”

“প্লিস মাফ করে দাও। সরি। রিয়ালি সরি।”

আমি টেনে ওকে আমার বাঁ পাশে বসিয়ে দিলাম, আমার বাঁ কাঁধে মাথা রেখে আমার হাতে নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে আমার আঙ্গুল গুলো নিয়ে নাড়াচারা করে।

ফিসফিস করে বললাম আমি “পরী, আমি সত্যি জানিনা, আমাদের সম্পর্কে আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে। আমি জানিনা এর কি পরিণতি।”

কাঁপা গলায় বলে “আমি জানতে চাই না এর পরিণতি, অভি। আমি বর্তমানে বাঁচতে চাই, জীবন টাকে সম্পূর্ণ ভাবে উপভোগ করতে চাই। আমি ভবিষ্যৎ দেখিনি, দেখতে চাইনা।”

আমি বাঁ হাত দিয়ে পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে কোমল কটিদেশে আঙ্গুল বুলাতে থাকি, আস্তে আস্তে হাত চলে যায় কোমল পেটের পাশে। পরী আমার গা ঘেঁসে বসে আমার শরীরের উষ্ণতা টুকু নিজের শরীরে অনুভব করার জন্য। ডান হাতে ওর ডান হাত নিয়ে ঠোঁটের কাছে নিয়ে আসি আমি। হাতের উলটো দিকে আলতো করে একটা চুমু খাই আমি। আমার দিকে অর্ধ নিমিলত নয়নে তাকিয়ে, দু’চোখ দিয়ে যেন ভালোবাসার অশ্রু ঝরে পড়ছে। গায়ের গন্ধে আমার বুকের ভেতর টা আনচান করে ওঠে, আমি ওর তর্জনীটা ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে আলত করে চুষি।

মিষ্টি স্বরে কঁকিয়ে ওঠে “উমমম...... প্লিস এরকম করো না, আমার ভেতরটা কেমন যেন চিনচিন করছে, অভি।”

আঙ্গুলে বের করে নিতে চেষ্টা চালায় পরী, কিন্তু সাথে সাথে আমার ঘাড়ে গর্দানে নাক আর ঠোঁট ঘসতে শুরু করে দেয়। আমার সারা শরীরে কেমন যেন একটা আগুন ধরে যায়। আমি ওর আঙ্গুল নিয়ে ক্রমাগত চুষে যাই, থামিনা। আমার প্রগার বাহু বন্ধনে সাপের মতন আড়ামড়া খেয়ে চলে “প্লিস... দুষ্টুমি করে না সোনা।”

আমি আমার চোয়ালে পরীর নরম ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করি, আলতো করে জিব দিয়ে আমার চোয়াল চেটে দেয়, মাঝে মাঝে ছোটো ছোটো চুমু খেতে থাকে। দু’জনের মাঝে ভালবাসার বহ্নিশিখা জ্বলে ওঠে।

আমি ওর হাত ছেড়ে ওর মুখপানে তাকিয়ে থাকি, ও আমার পাঞ্জাবির কলার হাতের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে থাকে। ডাগর কালো নয়নে আবেগের শিখা জ্বলে ওঠে, সেই নয়নের আগুন যেন আমার অন্তরাত্মা পর্যন্ত জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়। আমি ডান হাতের তালু ওর বাম গালের ওপরে রেখে কপালে আলতো করে একটা চুমু খাই।

কেঁপে ওঠে পরী, আমার ঠোঁটের পরশে। ধিরে ধিরে আমার ঠোঁট নিচে নামে, ধনুকের মতন বাঁকা ভুরুর ওপরে আলতো করে চুমু খাই, চোখ বন্ধ করে নেয় পরী। আমি চোখের পাতার ওপরে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়াই। নাক দিয়ে ঘন ঘন উষ্ণ নিঃশ্বাস নির্গত হয়। নাকের ডগায় আলত করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেই আমি। দু’জোড়া ঠোঁটের মিলনের আসন্ন সময় নিকটবর্তী, উৎকণ্ঠায় কেঁপে ওঠে পরী আমার নিবিড়ঘন বাহু বন্ধনে।

অবশেষে ঠোঁট জোড়া মেলে, প্রথমে মৃদু স্পর্শ। ঠোঁটের ওপরে আমার স্পর্শ অনুভব করে আমার কলার নিজের মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে থাকে। আমার ওপরের ঠোঁট কামড়ে ধরে পরী, আমার বুকের ওপরে ওর কোমল বুক পিষে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে, ঠোঁট জোড়া নিয়ে খেলা শুরু হয়ে যায় দু’জনার। আমি আমার ঠোঁটের ওপরে মখমলের মতন জিবের ছোঁয়া অনুভব করি, আমার সারা শরীরে খেলে বেড়ায় এক শিহরণ।

সময় যেন থমকে দাঁড়িয়ে আমাদের চারপাশে, পৃথিবীর আজ যেন শেষ দিন, কালকের সূর্য যেন উদয় হবেনা। আমি ওর কোমর জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নেই। আমার মুখটি নিজের হাতের মাঝে অঞ্জলির ন্যায় তুলে ধরে। আমরা এই প্রথম চুম্বন টাকে শেষ করে দিতে চাই না, প্রানপনে চাইছিলাম যেন সময় শেষ না হয়। কনকনে ঠাণ্ডা রাতে, প্রেমের অগ্নি স্ফুলিঙ্গ থেকে থেকে ঠিকরে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। আমি ডান হাত নিয়ে যাই ওর মাথার পেছনে, আবেশের বশে, চুলের ক্লিপ খুলতে চেষ্টা করি।[/HIDE]
 
কান্না হাসির খেলা। (#4)



[HIDE]কি যে ভুল করেছিলাম, আমার ঠোঁট ছেড়ে হেসে বলে “প্লিস আমার খোঁপা খুলো না। আমি চাই না আমাদের দেখে কেউ কিছু ধরে বসে।”

দীর্ঘ চুম্বন আর সোহাগের আদরে আমাদের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে গিয়েছিল। আমার মনে হচ্ছিল যেন, উত্তাল সমুদ্র তিরে দুই কপোত কপোতী অনাবিল আনন্দে তরী ভাসানোর প্রস্তুতি করছে। আমার মন খুশীতে ভরে গেল, পরীর চোখে ভালোবাসার পরশ দেখে। আবার যেন খুঁজে পেলাম আমার হারিয়ে যাওয়া রমণীকে। ওর দু’চোখে জেগে ওঠে সেই হারিয়ে যাওয়া রোমাঞ্চ, পুরানো সেই দুষ্টু মিষ্টি পরী আমার সামনে বসে।

আমি ইচ্ছে করে ঠোঁট চাটি, আমার ঠোঁটে ওর লিপস্টিকের রঙের সাথে ওর পরশ লেগে, জিব দিয়ে সেই মিষ্টি ছোঁয়া টাকে অনুভব করে নিতে চেষ্টা করি।

“উমমমমম... তোমার ঠোঁট দুটো যা মিষ্টি না, কি যে বলি তোমায়।”

“হ্যাঁ অনেক হয়েছে, যাঃ দুষ্টু ছেলে তুমি, সেটা আর বলতে।”

মন আমার খুশীতে ভরে যায় সেই পুরানো পরী কে দেখে।

চেয়ার ছেড়ে উঠে পরে ও, আমার হাত ধরে টান দেয় “দেখো প্রায় চারটে বাজে। রেস্ট নেওয়া দরকার। তুমি কি কখন টায়ার্ড হও না?”

আমি মজা করে বলি “তুমি কাছে থাকলে টায়ার্ডনেস থোরি আমার কাছে আসে।”

“হ্যাঁ অনেক আদিখ্যেতা হয়েছে। আচ্ছা, শোন, মাসিমা বরযাত্রীর রেস্ট নেওয়ার জন্য একটা রুমের ব্যাবস্থা করেছিলেন। যাবে নাকি সেখানে শুতে? ছোড়দার বন্ধুরা তো ছোড়দার সাথে বাসর জাগছে, কেউ নেই ঐ রুমে।”

“হুম, কিন্তু তোমার বড়দা তো ঐ রুমে থাকতে পারেন?”

“যাঃ বাবা, আমি একদম ভুলে গেছিলাম। তো কি করবে, এই ঠাণ্ডার মধ্যে বসে থাকবো নাকি আমরা?”

আমি ওর হাত ধরে টান মেরে কোলের ওপরে বসিয়ে দেই “তুমি তো কাছে আছো, তাহলে কি ঠাণ্ডা কি ক্লান্তি। সবাই কে তাড়িয়ে দেব আমি।”

আদুরে গলায় বলে ওঠে পরী “কিন্তু আমাদের এইরকম অবস্থায় যে কেউ দেখে ফেলতে পারে। ব্যাপারটা তাহলে খুব সাঙ্ঘাতিক হয়ে যাবে যদি ধরা পরে যাই।”

“তাহলে তুমি কি বল করতে?” আমি ওর ক্ষীণ কটিদেশ দু’হাতে জড়িয়ে আর নিবিড় করে নেই ওকে আমার বুকের কাছে।

“আমাকে কোল থেকে তো উঠতে দেবে নাকি? না সারা রাত আমরা এই রকম ভাবে গল্প করে যাবো?” দু’হাতে আমার গলা জড়িয়ে ধরে, প্রগাড় হয়ে যায় বাহুবন্ধনি “আমি চাই না আজকের রাত টা শেষ হোক, চাই না সকালের সূর্য ওঠা।”

দু’হাতে ক্ষীণ কটিদেশ প্রগাড় বাহুবেষ্টনীতে আবদ্ধ করে ধরি, রমণীর কোমল নিতম্বের চাপে পিষ্ট হয়ে যায় আমার দুই জঙ্ঘা।

দুহাতে গলা জড়িয়ে, মাথার চুলে বিলি কাটতে থাকে। আমার কানে ফিস ফিস করে অনুরোধ করে “প্লিস একটা গান গাও?”

আমি প্রায় চেঁচিয়ে উঠি “ড্যাম সিট্* পরী, রাস্তার কুত্তা গুলো আমাকে গান থামাতে বলবে তাহলে।”

“উম, তুমি না বাসে গান গেয়েছিলে? এবারে আমার জন্য গান গাও।”

“চলো অনেক হয়েছে, ছেলেখেলা। সূর্য উঠবে হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে।”

“হ্যাঁ গো, আমাদের এবারে ভেতরে যাওয়া উচিৎ।”[/HIDE]

=======
 
পিনুরাম দাদার লেখা এক একটা গল্প এক একটা রত্ন।
ধন্যবাদ মামা👏🏻
 
কনে বিদায়। (#1)



[HIDE]শীতকালের কুয়াশা মাখা সকাল, নব ঊষাকে অভ্যর্থনা জানাল পৃথিবী, এক নতুন দিনের যাত্রার সুচনা। এক নতুন দিনের আগমন, নতুন ভালোবাসার, নব প্রত্যাশার। বুকের মধ্যে ভরে নেই বিশুদ্ধ শীতল বাতাস, সারা শরীরে জেগে ওঠে এক নতুন দিগন্তের আশার আলো। বঙ্গালার গ্রাম, বাতাসে শিশির আর নতুন ঘাসের ঘ্রান ভেসে আসছে নাকে। সেই আঘ্রাণ আমার মনের গভীরে এক অনাবিল আনন্দের ছাপ ফেলে চলে যায়। বাড়ির লোকজন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। পরী আমায় ছেড়ে আবার কোথায় যেন হারিয়ে গেল। সুমন্ত মামা আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন যে আমি সারা রাত কোথায় ছিলাম। তার উত্তরে আমি জানিয়ে দিলাম যে আমি বিয়ের প্যান্ডালে সারা রাত বসে ছিলাম। আমার কথা শুনে হেসে বললেন যে মুখ হাত ধুতে, কয়েক ঘন্টার মধ্যে কনে বিদায়ের পালা। নতুন বউ নিয়ে আমরা বসিরহাট ফিরে যাবো। আমি হাত মুখ ধুয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি চুপ করে, আমার পরীর দেখা নাই। ইতিমধ্যে কনের বাড়ির একজন আমায় প্রাতরাশ দিয়ে যায়। আমি একটা চেয়ার টেনে খেতে বসে যাই। ঠিক সেই সময়ে মাথার পেছনে কেউ চাঁটি মারে।

আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখি পরী আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। চোখ মুখ ধুয়ে একদম তরতাজা দেখাচ্ছে ওকে, চেহারায় ক্লান্তির নাম গন্ধ নেই। যেন শিশিরের বারীধারে সদ্যস্নাত এক পদ্মফুল আমার সন্মুখে দণ্ডায়মান। ঠোঁটে লেগে আছে সুর ঝঙ্কারের ন্যায় এক মিষ্টি হাসি, চোখে সেই দুষ্টুমির ছাপ।

“আমাকে না দিয়েই খেতে বসে গেলে?” একটু যেন বকে দিল আমাকে।

“আমি কি করে জানবো তুমি কোথায়? তোমার তো দেখা নেই।”

“কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারতে তুমি। সেটা না করে দিব্যি একা একা খেয়ে নিলে।”

“ঠিক আছে বকাবকি না করে আমার সাথে খেতে বসে যাও।”

খাওয়ার পাট চুকিয়ে দিয়ে, পরী আবার বাড়ির মধ্যে ঢুকে পরে। কনে বিদায়ের ক্ষণ নিকটে আসছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের সব থেকে হৃদয় বিদারক ক্ষণ। বাড়ির সবার চোখে জল। আমি ঘড়ি দেখলাম, দশটা বাজে, কান্নাকাটি কনে বিদায়, হতে আর ঘন্টা দু’য়েক লেগে যাবে। কিছুক্ষণ পরেই নববিবাহিতা বধু তার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে, নতুন জীবনে পা রাখবে। তার নতুন সংসার অপেক্ষা করছে। সাথে সাথে কান্নার রোল জাগে বাড়ির লোকেদের মধ্যে। আমি এক কোনায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকি।

এমন সময়, আমার বাঁ হাতে কেউ চাপ দেয়। ঘুরে তাকিয়ে দেখি, পরী আমার বাঁ হাত চেপে ধরে আমার পেছনে দাঁড়িয়ে। সুন্দর কালো চোখ দুটি টলমল করছে, আমার হাত দু’হাতে চেপে ধরে দাঁড়িয়ে নিজের অশ্রু সংবরণ করতে প্রানপন প্রয়াস করে চলেছে। আমার কাঁধের পেছনে ঘন ঘন নাক ঘসে চলে, আমি ওর ফুঁপিয়ে কাঁদার আওয়াজ শুনতে পাই।

আমি ওকে স্বান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করি “কাঁদছ কেন? তোমার নতুন বউদি তো তোমার বাড়িতেই যাচ্ছে।”

চোখ মুছে আমার কানে কানে বলে “মেয়েদের দুঃখ তুমি বুঝবে না অভি।” আমি ওকে বাঁ হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরি স্বান্তনা দেওয়ার জন্য। ওর গায়ে আমার শাল জড়ানো, সেটা কাছছাড়া করেনি পরী।[/HIDE]
 
কনে বিদায়। (#2)



[HIDE]দু খানা গাড়ি আমাদের বসিরহাট পৌঁছে দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে। পরী আমার কানে কানে বলল “আমি সুব্রতদা আর বউদির সাথে গাড়িতে ফিরব, তুমি অন্য গাড়িতে ফিরবে। আমরা একসাথে ফিরলে লোকে কিছু মনে করতে পারে।”

বুদ্ধিমতী রমণী, ভেবে দেখলাম যে ঠিক বলেছে ও। এই দিনের আলোয় যদি কেউ আমাদের একত্রে দেখে ফেলে তাহলে জটিল সমস্যার উদয় হবে। আমাদের দু’জনার সম্পর্ক যে বিতর্কিত।

ঠিক কাঁটায় কাঁটায় বারো’টার সময়ে গাড়ি ছাড়ল। বাড়ি পৌঁছতে ঘন্টা তিন চার লাগবে। আমি গাড়ির সামনের সিটে বসে, পেছনের সিটে সুব্রত মামার দুই বন্ধু বসে। দু’জনে বেশ গল্প করছিল, আমি ওদের কথায় বিশেষ কান দিচ্ছিলাম না, চুপ করে বসে জানালার বাইরে দু’পাশের গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। এমন সময়ে কারুর এক’জনার মুখে শুচিস্মিতার নাম শুনে কান খাড়া হয়ে যায়।

এক’জন বলল “শুচিস্মিতা কাল রাতে কেমন যেন অন্য রকম ছিল?”

অপর জন “হ্যাঁ ঠিক বলেছিস, আমিও সেটা দেখেছিলাম, কেমন যেন আনমনা ছিল রাতের বেলা। ওর মতন দুরন্ত চুলবুলি মেয়ে, যে কিনা এক সেকেন্ডের জন্য চুপ করে থাকতে পারেনা, সে কিনা চুপচাপ?”

“হ্যাঁ আমিও সেটাই ভাবছিলাম যে কি হল মেয়েটার।”

“আমি কি করে জানবো?”

ইতিমধ্যে একজন আমাকে জিজ্ঞেস করে “তুমি উলুপিদির ছেলে?”

আমি মাথা নাড়িয়ে জবাব দেই “হ্যাঁ”, আমার বুকের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে, এই বুঝি ধরা পরে গেছি আমি, কেউ হয়তো আমাদের একসাথে দেখে ফেলেছে।

“তোমার মা আমাদের স্কুলের টিচার ছিলেন। খুব কড়া ম্যাডাম তোমার মা।”

আমি হেসে ফেলি “ভায়া, বাড়ি তেও মা সমান কড়া।” আমার কথা শুনে ওর দু’জনে হেসে ফেলে।

“তার মানে সুব্রত তোমার সম্পর্কের মামা হন?”

“হ্যাঁ। মা সুব্রত মামাদের চেয়ে অনেক বড়, অনেক বয়সের ডিফারেন্স।” আমি তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম, যাক বাবা কিছু দেখেনি ওরা না হলে কেলেংকারি কান্ড হয়ে যেত।

“তো শুচিস্মিতা তোমার দুর সম্পর্কের মাসি হন?”

মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিলাম “হ্যাঁ”

ওদের মধ্যে এক’জন আমাকে সিগারেট অফার করে “তুমি নিশ্চয় কলেজে পড়, সিগারেট চলে তো? আরে লজ্জা পেয়ো না, আমরা তোমার দাদার মতন যদিও সুব্রতর বন্ধু তবুও আমাদের দাদা বলে ডেক কেননা আমাদের মধ্যে বয়সের সেরকম ডিফারেন্স নেই।”

আমি মাথা নেড়ে জানিয়ে দেই যে আমি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।

“আরে কি বলছ? আমি কাল রাতে রাস্তায় তোমাকে সিগারেট খেতে দেখেছি?”

আমি ভাবলাম, মেরেছে রে, আমাদের কি একসাথে দেখে ফেলেছে? আমি বললাম “আরে না না, আমি কাল রাতেই সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।”

হেসে ফেলে দু’জনেই “কেন, বিয়ে বাড়িতে কাউকে মনে ধরেছে নাকি? কেউ তো নিশ্চয় বলেছে সিগারেট ছাড়তে।”

এক’জন আমাকে জিজ্ঞেস করল আমি মদ্যপান করি কিনা, আমি জানিয়ে দিলাম যে সেটা মাই এখন ছাড়িনি। আমরা সবাই হেসে উঠলাম, আমি আর জানালাম যে ভদকা আর রাম আমার চলে। ওরা জানাল যে রাতের বেলায় একজনের বাড়িতে মদ্যপানের আয়োজন করা হয়েছে, আমাকে নিমন্ত্রন জানাল, আর জানাল যে সুব্রত আসবে। আমি মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিলাম যে আমি যাবো ওদের পার্টিতে।

আমাদের কথাবার্তা এগিয়ে চলে ঠিক গাড়ির মতন। কথায় কথায় জানতে পারলাম যে এক’জনের নাম সমীর অন্য জনের নাম মৃগাঙ্ক, দু’জনের বয়স আটাশ বছর। দু’জনেই সরকারি চাকুরিরত, দু’জনেই অবিবাহিত। কনের নাম মৈথিলী, কথায় কথায় জানতে পারলাম যে সুব্রত আর মৈথিলীর প্রেম বিবাহ, তবে দেখেশুনে দেওয়া হয়েছে। মৈথিলীর বয়স প্রায় শুচিস্মিতার মতন। দু’জনের দেখা হয়েছিল কোন এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে, সেই থেকে প্রেম। তারপরে বড়দা, মানে সুমন্ত মামা, মেয়ের বাড়ির সাথে কথা বলে বিয়ের ঠিকঠাক করেন।

আমি মনে মনে বললাম যে এই বিয়েতে আমি আমার স্বপ্নের রমণীকে খুঁজে পেয়েছি, আমার হৃদয়সঙ্গিনী, পরী।
[/HIDE]
 
অসাধারন গল্প! অনেক অনেকদিন পর আবার পড়ছি, ধন্যবাদ ভাই
 

Users who are viewing this thread

Back
Top