নীলা। একটি সাধারণ ঘরের মেয়ে। সাধারণ ঘরের গৃহবধূ। কিন্তু তার স্বপ্ন, তার কল্পনা কিন্তু কখনই সাধারণ নয়। সেই অসাধারণ স্বপ্নের পিছনে ধাওয়া করতে করতে কখন যে তার জীবনটাই এক দামী কিন্তু অলাক কল্পনায় পরিণত হল, তা সে নিজেই বুঝতে পারেনি। একটি সাধারণ গৃহবধূ নীলা থেকে শহরের একটি নামী এসকর্ট সার্ভিসের ফিমেল এসকর্ট মেহক হয়ে ওঠার কাহিনী এটি। - অনিন্দিতা
ড্রেসিং টেবিলে সামনে দাঁড়িয়ে ব্রায়ের স্ট্র্যাপটা ঠিক করে নিল নীলা, এবার ওকে ফিরতে হবে | সেই কোন ছোটবেলায় ওর বাবা বলতেন নীলা সবার হাতে সাজে না | সঠিক লোকের হাতে পড়লে ফকিরকে রাজা আর ভুল লোকের হাতে পড়লে রাজাকে ফকির করে দিতে পারে, নীলার নাকি এমনই অলৌকিক ক্ষমতা | কে জানে আমার এই ছোট্ট নীলাটা আমাদের রাজা করবে কিনা ? বলে আদর করে ফ্রক পড়া বাচ্চা নীলার গাল টিপে দিতেন | ছোট্ট নীলা তখন কিছু না বুঝেই মাথা নেড়ে দৌড়ত আর বলত নীলার বাবা রাজা হবে আর নীলা রাজকুমারী হবে | মধ্যবিত্ত বাবা আজীবন মধ্যবিত্তই থাকল, তার আর কোনদিনই রাজা হওয়া হল না | নীলা কিন্তু মনেপ্রাণে রাজকুমারী হতে চাইত | নীলা জন্মেছিল অসামান্য রূপের ডালি নিয়ে আর ছোট থেকেই ওর সঙ্গী ছিল উচ্চাশা | ছোট্ট মেয়েটা আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিত ঘন্টার পর ঘন্টা ! কিশোরী নীলার শরীরে যৌবনের জোয়ার আসা শুরু হল, সেসময় ও ভাবত এই অনিন্দ্য সুন্দর রূপের জোরেই জগতকে ও হাতের মুঠোয় নিয়ে খেলবে | কিন্তু শুধু রূপের জোরেই যদি জগত চলত তাহলে নীলা নিশ্চিত রাণী হতো, মানে আজকের দিনে তো আর কেউ রাজা রাণী হয় না... ওই কোন কোটিপতি টতিপতির বউ টউ হতো আর কি ! সিনেমা দেখতে বড় ভালোবাসত নীলা, পর্দায় কেমন গরীবের মেয়ের স্বামীরা কোটিপতি হয়... বিয়ের পর তারা সারাদিন দামী গাড়ি করে পার্লারে যায় নয় শপিং করে বেড়ায় | বিদেশে ঘুরতেও যায় | কিন্তু কো-এড কলেজে পাস কোর্সে ভর্তি হয়ে নীলা দেখল বাস্তব আর সিনেমার মধ্যে তফাতটা বেশ অনেকখানি, নায়কোচিত সিক্স প্যাক অ্যাবসওয়ালা ছেলেরা ওরকম যখন তখন প্রেমে ট্রেমে পড়ে না বরং সম্পর্কে যাওয়ার আগে মেয়ের কেরিয়ার আর মেয়ের বাবার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সটায় চোখ বুলিয়ে নেয় | তাই কলেজ জীবনে নীলা বেশ কয়েকটা সম্পর্কে জড়ালেও পড়াশোনায় অ্যাভারেজ রেজাল্ট আর নীলার মধ্যবিত্ত বাপের স্ট্যাটাস দেখে বিয়ে অবধি কোনো সম্পর্কই গড়ালো না | এদিকে মেয়ের বয়স বাড়ছে, পাস কোর্সে পড়াশোনা করেছে সুতরাং চাকরি বাকরি করারও তেমন কোন সম্ভাবনা নেই... সবচেয়ে বড় কথা মেয়ের সেসব ইচ্ছেও নেই দেখে বছর পঁয়ত্রিশের সামান্য কেরানি দেবাশিসের সঙ্গে নীলার বিয়েটা দিয়েই দিলেন সুকোমলবাবু | ছেলের বাড়ির তেমন একটা দাবিদাওয়া ছিল না, তার উপর দেবাশিসের মামাতো বোন রূপা ছিল নীলার বুজুম ফ্রেন্ড | রূপার সঙ্গে নীলাকে ফুচকা খেতে দেখে, বলা ভালো ফুচকার ঝালে উঃ আঃ করতে দেখে দেবাশিসের ওকে পছন্দ হয় আর ওর বাবার মারফত প্রস্তাবটা সুকোমলবাবুর বাড়িতে পাঠায় |
[HIDE]
বাড়ির একমাত্র ছেলে, কোনো দাবীদাওয়া নেই দেখে সুকোমলবাবু খুব সহজেই দেবাশিসের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান | ছেলের বাড়ি থেকে যেদিন নীলাকে দেখতে এসেছিল সেদিন সুকোমলবাবু বেশ মজার ছলেই দেবাশিসকে বলেছিলেন, বাবা, তোমায় তেমন কোনো দামী জিনিস দিতে না পারলেও আমি কিন্তু তোমায় একটা ভীষণ দামী জেম দিচ্ছি ! ছেলেপক্ষ ওনার দিকে কৌতুহলের দৃষ্টিতে তাকালে উনি চোখ নামিয়ে বলেছিলেন এই যে আমার মেয়েকে দিচ্ছি নীলা, নীলা খুব দামী জেম বাবা, সাবধানে রেখো | জানো তো নীলা সকলের সহ্য হয় না | সুকোমল বাবুর কথার ধরণে সবাই হেসে উঠলেও মুখ নীচু করে থাকা বাবার চোখের জল নীলার নজর এড়ায় নি | তাই ওর একান্ত অপছন্দ সত্ত্বেও বাবার মুখ চেয়ে কেরানি দেবাশিসের সঙ্গে নীলার বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল |
বিয়ের পর মফস্বল থেকে মহানগরীতে চলে আসতে হয় নীলাকে | মহানগরীর মাদকতায় নীলা ভেসে যাচ্ছিল | দেবাশিস কেরানির চাকরি করলেও ওর অফিসটা কোলকাতায় ছিল, নীলার কাছে অতি সাধারণ দেখতে দেবাশিসকে বিয়ে করার এটাও একটা বড় কারণ ছিল | ছোট থেকেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী নীলার মফস্বল শহরে দমবন্ধ হয়ে আসত, ও মুক্তি খুঁজছিল মধ্যবিত্ত হিসেবী জীবন থেকে.... ও নিজের মতো করে ডানা মেলতে চাইছিল আকাশে, আর দেবাশিস ছিল ওর উড়ানের প্রথম ধাপ | একটা ছোট্ট দু-কামরার ফ্ল্যাটে সংসার পাতল দুজনে | সরকারী চাকুরে দেবাশিসের আয় কম হলেও দুজনের সংসারে সচ্ছলতার অভাব ছিল না | শাশুড়ি শ্বশুরের ঝামেলা না থাকায় নীলা মনের আনন্দে যেখানে ইচ্ছে যখন ইচ্ছে বেরিয়ে পড়ত | সুন্দরী বউয়ের কোন দোষই দেবাশিসের চোখে পড়ত না... নীলার ঘরের কাজ করতে ভালো লাগত না বলে কলকাতার ফ্ল্যাটে এসেই দেবাশিস ওর জন্য রান্নার লোক, কাজের লোক রেখে দিয়েছিল | ও সারাদিন রূপচর্চা, ফ্যাশন ম্যাগাজিন, সিনেমা-টিভি-মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকত | তবে দেবাশিসের সীমিত আয়ের জন্য নীলা যখন তখন শপিংয়ে যেতে পারত না আর সেই নিয়ে প্রায় দিনই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হতো |
নীলা রাগ করে পাশের ঘরের ডিভানে শুয়ে পড়ত, মাঝরাত অবধি মানভঞ্জন করে দেবাশিস স্ত্রীকে নিজেদের বেডরুমে নিয়ে যেতে সক্ষম হতো | স্বভাবে শান্ত দেবাশিস নিজের সাধ্যমত নীলার সব আবদার মেটাতে চেষ্টা করত | কিন্তু নিজের স্যালারির সবটা দিয়েও ও নীলার নিত্যনতুন শাড়ি-গয়না-গ্যাজেটসের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হতো না | নীলার উদ্ভিন্ন যৌবনে মগ্ন দেবাশিস চেষ্টা আরও চেষ্টা করত, অফিসের পর ওভারটাইম করত | বিয়ের ছ'মাস বাদে হানিমুনে সিমলা-কুলু-মানালি ঘুরে আসার পর ওদের সংসারে বেশ কিছুদিন শান্তি ছিল | ফেসবুকে ওদের যুগ্ম ছবিতে পাওয়া কমেন্টগুলো নীলা খুব উৎসাহ সহকারে দেবাশিসকে দেখাত ! কিন্তু সে আর কতদিন ? কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হল টাগ অব ওয়ার | নীলা আবার ঘুরতে যেতে চায় কিন্তু সংসার খরচা চালিয়ে দেবাশিসের হাতে তেমন টাকা কই ? এদিকে নীলার ঘরে তেমন কোন কাজ না থাকায় ও নাকি বোর হয়ে যায় অথচ কাজ করার ওর তেমন একটা ইচ্ছে আছে বলেও মনে হয় না | নীলা প্রতিদিন বিকেলে নিজেদেরএকফালি বারান্দায় বসে লোক দেখে আর আকাশকুসুম কল্পনা করে | ওর চোখে পড়ে প্রায় দিনই বিকেলবেলা চারটে নাগাদ দোতলার ফ্ল্যাটের রূপা বৌদি প্যান্ট গেঞ্জি পরে কোথায় যেন বেরিয়ে যায়, ঘন্টা দুই-তিন পরে ফেরে | নীলার ভীষণই কৌতুহল হয় কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করলে যদি বৌদি রাগ করে তাই ইচ্ছে থাকলেও বৌদির সঙ্গে এ ব্যপারে কথা বলে উঠতে পারে না |
[/HIDE]
ড্রেসিং টেবিলে সামনে দাঁড়িয়ে ব্রায়ের স্ট্র্যাপটা ঠিক করে নিল নীলা, এবার ওকে ফিরতে হবে | সেই কোন ছোটবেলায় ওর বাবা বলতেন নীলা সবার হাতে সাজে না | সঠিক লোকের হাতে পড়লে ফকিরকে রাজা আর ভুল লোকের হাতে পড়লে রাজাকে ফকির করে দিতে পারে, নীলার নাকি এমনই অলৌকিক ক্ষমতা | কে জানে আমার এই ছোট্ট নীলাটা আমাদের রাজা করবে কিনা ? বলে আদর করে ফ্রক পড়া বাচ্চা নীলার গাল টিপে দিতেন | ছোট্ট নীলা তখন কিছু না বুঝেই মাথা নেড়ে দৌড়ত আর বলত নীলার বাবা রাজা হবে আর নীলা রাজকুমারী হবে | মধ্যবিত্ত বাবা আজীবন মধ্যবিত্তই থাকল, তার আর কোনদিনই রাজা হওয়া হল না | নীলা কিন্তু মনেপ্রাণে রাজকুমারী হতে চাইত | নীলা জন্মেছিল অসামান্য রূপের ডালি নিয়ে আর ছোট থেকেই ওর সঙ্গী ছিল উচ্চাশা | ছোট্ট মেয়েটা আয়নায় নিজের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিত ঘন্টার পর ঘন্টা ! কিশোরী নীলার শরীরে যৌবনের জোয়ার আসা শুরু হল, সেসময় ও ভাবত এই অনিন্দ্য সুন্দর রূপের জোরেই জগতকে ও হাতের মুঠোয় নিয়ে খেলবে | কিন্তু শুধু রূপের জোরেই যদি জগত চলত তাহলে নীলা নিশ্চিত রাণী হতো, মানে আজকের দিনে তো আর কেউ রাজা রাণী হয় না... ওই কোন কোটিপতি টতিপতির বউ টউ হতো আর কি ! সিনেমা দেখতে বড় ভালোবাসত নীলা, পর্দায় কেমন গরীবের মেয়ের স্বামীরা কোটিপতি হয়... বিয়ের পর তারা সারাদিন দামী গাড়ি করে পার্লারে যায় নয় শপিং করে বেড়ায় | বিদেশে ঘুরতেও যায় | কিন্তু কো-এড কলেজে পাস কোর্সে ভর্তি হয়ে নীলা দেখল বাস্তব আর সিনেমার মধ্যে তফাতটা বেশ অনেকখানি, নায়কোচিত সিক্স প্যাক অ্যাবসওয়ালা ছেলেরা ওরকম যখন তখন প্রেমে ট্রেমে পড়ে না বরং সম্পর্কে যাওয়ার আগে মেয়ের কেরিয়ার আর মেয়ের বাবার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সটায় চোখ বুলিয়ে নেয় | তাই কলেজ জীবনে নীলা বেশ কয়েকটা সম্পর্কে জড়ালেও পড়াশোনায় অ্যাভারেজ রেজাল্ট আর নীলার মধ্যবিত্ত বাপের স্ট্যাটাস দেখে বিয়ে অবধি কোনো সম্পর্কই গড়ালো না | এদিকে মেয়ের বয়স বাড়ছে, পাস কোর্সে পড়াশোনা করেছে সুতরাং চাকরি বাকরি করারও তেমন কোন সম্ভাবনা নেই... সবচেয়ে বড় কথা মেয়ের সেসব ইচ্ছেও নেই দেখে বছর পঁয়ত্রিশের সামান্য কেরানি দেবাশিসের সঙ্গে নীলার বিয়েটা দিয়েই দিলেন সুকোমলবাবু | ছেলের বাড়ির তেমন একটা দাবিদাওয়া ছিল না, তার উপর দেবাশিসের মামাতো বোন রূপা ছিল নীলার বুজুম ফ্রেন্ড | রূপার সঙ্গে নীলাকে ফুচকা খেতে দেখে, বলা ভালো ফুচকার ঝালে উঃ আঃ করতে দেখে দেবাশিসের ওকে পছন্দ হয় আর ওর বাবার মারফত প্রস্তাবটা সুকোমলবাবুর বাড়িতে পাঠায় |
[HIDE]
বাড়ির একমাত্র ছেলে, কোনো দাবীদাওয়া নেই দেখে সুকোমলবাবু খুব সহজেই দেবাশিসের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান | ছেলের বাড়ি থেকে যেদিন নীলাকে দেখতে এসেছিল সেদিন সুকোমলবাবু বেশ মজার ছলেই দেবাশিসকে বলেছিলেন, বাবা, তোমায় তেমন কোনো দামী জিনিস দিতে না পারলেও আমি কিন্তু তোমায় একটা ভীষণ দামী জেম দিচ্ছি ! ছেলেপক্ষ ওনার দিকে কৌতুহলের দৃষ্টিতে তাকালে উনি চোখ নামিয়ে বলেছিলেন এই যে আমার মেয়েকে দিচ্ছি নীলা, নীলা খুব দামী জেম বাবা, সাবধানে রেখো | জানো তো নীলা সকলের সহ্য হয় না | সুকোমল বাবুর কথার ধরণে সবাই হেসে উঠলেও মুখ নীচু করে থাকা বাবার চোখের জল নীলার নজর এড়ায় নি | তাই ওর একান্ত অপছন্দ সত্ত্বেও বাবার মুখ চেয়ে কেরানি দেবাশিসের সঙ্গে নীলার বিয়েটা হয়ে গিয়েছিল |
বিয়ের পর মফস্বল থেকে মহানগরীতে চলে আসতে হয় নীলাকে | মহানগরীর মাদকতায় নীলা ভেসে যাচ্ছিল | দেবাশিস কেরানির চাকরি করলেও ওর অফিসটা কোলকাতায় ছিল, নীলার কাছে অতি সাধারণ দেখতে দেবাশিসকে বিয়ে করার এটাও একটা বড় কারণ ছিল | ছোট থেকেই উচ্চাকাঙ্ক্ষী নীলার মফস্বল শহরে দমবন্ধ হয়ে আসত, ও মুক্তি খুঁজছিল মধ্যবিত্ত হিসেবী জীবন থেকে.... ও নিজের মতো করে ডানা মেলতে চাইছিল আকাশে, আর দেবাশিস ছিল ওর উড়ানের প্রথম ধাপ | একটা ছোট্ট দু-কামরার ফ্ল্যাটে সংসার পাতল দুজনে | সরকারী চাকুরে দেবাশিসের আয় কম হলেও দুজনের সংসারে সচ্ছলতার অভাব ছিল না | শাশুড়ি শ্বশুরের ঝামেলা না থাকায় নীলা মনের আনন্দে যেখানে ইচ্ছে যখন ইচ্ছে বেরিয়ে পড়ত | সুন্দরী বউয়ের কোন দোষই দেবাশিসের চোখে পড়ত না... নীলার ঘরের কাজ করতে ভালো লাগত না বলে কলকাতার ফ্ল্যাটে এসেই দেবাশিস ওর জন্য রান্নার লোক, কাজের লোক রেখে দিয়েছিল | ও সারাদিন রূপচর্চা, ফ্যাশন ম্যাগাজিন, সিনেমা-টিভি-মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত থাকত | তবে দেবাশিসের সীমিত আয়ের জন্য নীলা যখন তখন শপিংয়ে যেতে পারত না আর সেই নিয়ে প্রায় দিনই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হতো |
নীলা রাগ করে পাশের ঘরের ডিভানে শুয়ে পড়ত, মাঝরাত অবধি মানভঞ্জন করে দেবাশিস স্ত্রীকে নিজেদের বেডরুমে নিয়ে যেতে সক্ষম হতো | স্বভাবে শান্ত দেবাশিস নিজের সাধ্যমত নীলার সব আবদার মেটাতে চেষ্টা করত | কিন্তু নিজের স্যালারির সবটা দিয়েও ও নীলার নিত্যনতুন শাড়ি-গয়না-গ্যাজেটসের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হতো না | নীলার উদ্ভিন্ন যৌবনে মগ্ন দেবাশিস চেষ্টা আরও চেষ্টা করত, অফিসের পর ওভারটাইম করত | বিয়ের ছ'মাস বাদে হানিমুনে সিমলা-কুলু-মানালি ঘুরে আসার পর ওদের সংসারে বেশ কিছুদিন শান্তি ছিল | ফেসবুকে ওদের যুগ্ম ছবিতে পাওয়া কমেন্টগুলো নীলা খুব উৎসাহ সহকারে দেবাশিসকে দেখাত ! কিন্তু সে আর কতদিন ? কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হল টাগ অব ওয়ার | নীলা আবার ঘুরতে যেতে চায় কিন্তু সংসার খরচা চালিয়ে দেবাশিসের হাতে তেমন টাকা কই ? এদিকে নীলার ঘরে তেমন কোন কাজ না থাকায় ও নাকি বোর হয়ে যায় অথচ কাজ করার ওর তেমন একটা ইচ্ছে আছে বলেও মনে হয় না | নীলা প্রতিদিন বিকেলে নিজেদেরএকফালি বারান্দায় বসে লোক দেখে আর আকাশকুসুম কল্পনা করে | ওর চোখে পড়ে প্রায় দিনই বিকেলবেলা চারটে নাগাদ দোতলার ফ্ল্যাটের রূপা বৌদি প্যান্ট গেঞ্জি পরে কোথায় যেন বেরিয়ে যায়, ঘন্টা দুই-তিন পরে ফেরে | নীলার ভীষণই কৌতুহল হয় কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করলে যদি বৌদি রাগ করে তাই ইচ্ছে থাকলেও বৌদির সঙ্গে এ ব্যপারে কথা বলে উঠতে পারে না |
[/HIDE]