দেশে ব্যাপকভাবে করোনার টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ২৫ বছর বয়সের বেশি যেকোনো ব্যক্তি এই টিকা নিতে পারবেন। তবে অনেকের মনেই নিজের রোগবালাই নিয়ে আশঙ্কা কাজ করে, টিকা নিলে কোনো সমস্যা হবে না তো! বিশেষ করে লিভার বা যকৃতের নানা রোগ আছে যাঁদের, তাঁদের এ নিয়ে সংশয় বেশি কাজ করতে পারে।
যকৃতের দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত রোগী, ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস অথবা লিভার ক্যানসারের রোগীরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলে জটিলতার ঝুঁকি বেশি। যকৃতের রোগীর জটিলতার ঝুঁকি সাধারণ করোনা রোগীর চেয়ে প্রায় আট গুণ বেশি। তাই করোনা থেকে বাঁচতে এই রোগীদের বিশেষ সতর্কতা দরকার। বিভিন্ন দেশে গবেষণায় যকৃতের রোগীদের করোনার টিকা দেওয়ার পর আলাদা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যেসব টিকা অনুমোদন পেয়েছে, তার সব কটিই যকৃতের রোগীদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকরী বলে প্রমাণিত। অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি যকৃতের সংক্রমণের রোগ, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার এবং লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট রোগীদের কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
যকৃতের রোগীরা যদি টিকার নিবন্ধন করতে চান, তবে নিম্নলিখিত সুপারিশগুলো মেনে চলুন:
- দীর্ঘমেয়াদি যকৃতের রোগ, লিভার সিরোসিস, লিভার ক্যানসার, ফ্যাটি লিভার ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের রোগীদের ঝুঁকি বিবেচনায় অতি দ্রুত টিকা দিতে হবে।
- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব রোগে আক্রান্ত এবং তাঁদের পরিচর্যাকারী ও পরিবারের সদস্যদের টিকা দিতে হবে।
- ক্রনিক হেপাটাইটিস বি এবং ক্রনিক হেপাটাইটিস সি রোগীদের বয়স, অন্যান্য রোগের উপস্থিতি বিবেচনায় টিকা দিতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
টিকা নিলেও সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সব সময় সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরুন, বারবার সাবান–পানি দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন, ভিড় এড়িয়ে চলুন।
[FA]pen[/FA] লেখক: ডা. মো. গোলাম আযম, সহযোগী অধ্যাপক, লিভার ও পরিপাকতন্ত্র বিভাগ, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল