What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীর স্ত্রীয়ের পরকীয়া (3 Viewers)

পর্ব - ০৬


রবি কিন্তু মনীষার ঘরে ঢুকেছিলো ওর সাথে রাত্রিযাপন করতে নয়। বালিশ টা নিতে। আগের রাতের মতো সে আজকেও ঠিক করেছিল ডাইনিং রুমের সোফায় শোবে। তাই সে নিজের বালিশ নিতে ঘরে ঢুকেছিলো। রবিকে চুপচাপ বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে দেখে মনীষা পিছন থেকে ডেকে রবিকে আটকালো, "দাঁড়াও রবি , কোথায় যাচ্ছ ?"
- "আমি কাল যা করেছি , অন্যায় করেছি। তাই কালকের মতো আজকেও আমি ডাইনিং এই শোবো। "
- "দেখো তুমি কোথায় শোবে সেটা তোমার মর্জি , কিন্তু যাওয়ার আগে আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাও। তাছাড়া অরুণ হয়তো এখনো জেগে আছে। আমি চাইনা ওর সামনে কোনোরকমের কোনো কমপ্লিকেটেড সিচুয়েশন অ্যারাইভ হোক। তাই এখানে এসে বসো। "
মনীষার কথা মতো রবি বালিশ নিয়ে এসে বিছানায় বসলো। "বলো কি বলবে ?", রবি জিজ্ঞেস করলো মনীষাকে।
"কাল তুমি অরুণের কথায় ওসব করেছিলে না ?", সোজাসুজি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো মনীষা রবির দিকে। রবি তো হতবাক ! মনীষা কি করে জানলো ! সে তাই জিজ্ঞেস করে ফেললো , "তুমি কি করে জানলে ?"
অর্থাৎ রবি না চাইতেও একপ্রকার স্বীকার করে নিলো মনীষার সামনে , যে সে অরুণের কথায় এসব করেছিল কাল।
"সেটা বড়ো প্রশ্ন নয় রবি। আসল কথাটি হলো , আমি যা বলছি সেটা সত্যি কিনা ? কাল তুমি অরুণের কথায় আমাকে স্পর্শ করেছিলে কিনা ? সত্যি করে বলো ....", মনীষা বেশ দৃপ্ত কণ্ঠে রবির কাছ থেকে কৈফিয়ত চাইলো।
- "হুমমঃ। ..... কিন্তু তুমি প্লিস অরুণকে ভুল বুঝোনা। ওর দিকটাও ভেবে দেখো। "
- "আমি তো ওর দিকটাই ভেবে দেখতে চাইছি রবি। আমি জানতে চাইছি অরুণ তোমাকে কেন এরকম কাজ করতে বললো ? ও তো এরকম ছিলোনা ! ভীষণ ভালোবাসতো আমায় , এখনো বাসে , তাহলে ও তোমাকে দিয়ে এসব কেন করাতে চাইলো ?"
- "আসলে অরুণ তোমাকে আমার সাথে সুখে দেখতে চাইছিলো। ও আমাদের দেখে বুঝতে পেরেছিলো যে আমরা স্বামী স্ত্রী হিসেবে থাকলেও আমাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রীর মতো কোনো সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। সেটা নিয়েই ও কনসার্ন ছিল। অরুণ জানে ও আর বেশিদিন বাঁচবে না। তাই ও আমাদের পরিণতির সাক্ষী থাকতে চেয়েছিলো। ও দাঁড়িয়ে থেকে দেখতে চেয়েছিলো তুমি আমার সাথে একটা নতুন জীবনে প্রবেশ করছো। আমাকে তুমি তোমার স্বামী হিসেবে সম্পূর্ণভাবে মেনে নিয়েছো। "
- "আমাদের এই চার দেয়ালের ঘরের মধ্যে কি হবে বা হতে পারে সেটা অরুণ বাইরে থেকে জানবে কি করে ? ও কিভাবে সাক্ষী থাকতে চায় ?"
- "শারীরিকভাবে হয়তো সে দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের মিলন দেখতে পাবে না , আর দেখা উচিতও নয়, সেটা অরুণ জানে। তাই ও আজ সকালে আমাকে নিজের ঘরে নিয়ে গেছিলো এটা জানার জন্য যে কাল রাতে আমার আর তোমার মধ্যে কিছু হয়েছে কিনা ? অরুণ আমাকে বিশ্বাস করে , তাই আমি যা বলবো সেটাই ও সত্য প্রবচন বলে মেনে নেবে। এইভাবেই ওর সাক্ষী থাকা হবে আমাদের মিলনের। সশরীরে সামনে থেকে না দেখলেও , একই বাড়িতে উপস্থিত থেকে সেটা অনুভব তো করতে পারবে , বিশেষ করে আমার মুখ থেকে শুনে। সেরকমই অরুণ ভেবে রেখেছিলো। "
- "তো তুমি কি বললে ?"
- "যা সত্যি সেটাই বলেছি, যে তুমি আমাকে নিজের ধারের কাছেও ঘেঁষতে দাওনি। তারপর অরুণকে আমি ভালোমতো শুনিয়েও দিয়েছি , সে যাতে এরকম উল্টোপাল্টা ধারণা নিজের মনের মধ্যে পোষণ করে না রাখে। মনীষা শুধু অরুণের ছিল , আর অরুণেরই থাকবে। "
- "তারপর এসব শুনে ও কি বললো ?"
- "সেরকম কিছু না। "
- "ও কি তোমাকে আবার একটা এরকম অ্যাটেম্প্ট নিতে পরামর্শ দিলো ?"
- "নাহঃ। ওকে যেভাবে আমি শাষিয়ে দিয়েছি , আর ও চাইলেও এসব কথা বলার সাহস পাবে না। চিন্তা নেই তোমার। "
- "হয়তো চাপে পড়ে নিজের কথা সে ফিরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু মনে মনে হয়তো সে এটাই চায় , এখনো। "
- "ঠিক বলতে পারবো না সেটা। আমি ওর যতই ভালো বন্ধু হই না কেন , তুমি ওর স্ত্রী , তুমি ওর সাথে বেশ কয়েকটা বছর ধরে সংসার করছো , ইউ নো হিম বেটার দ্যান মি।"
- "হুমম। .... আচ্ছা , কালকে কি শুধু বন্ধুর কথা রাখতেই তুমি এসব করেছিলে ? তোমার নিজেরও তো ইচ্ছা করেছিল নিশ্চই ? "
- "মিথ্যা বলবো না। সত্যি বলতে , হ্যাঁ আমারও ইচ্ছা করেছিল তোমাকে ছুঁতে। অরুণের কথায় সাহসটা একটু বেড়ে গেছিলো আর কি। আসলে আমিও তো একজন পুরুষ মানুষ। আমারও তো কিছু শারীরিক চাহিদা থাকতে পারে এই বয়সে। সেই টানেই হয়তো এতো বড়ো সাহস দেখিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি , এরকম ভুল আর দ্বিতীয়বার হবেনা। আমি তোমাকে ততদিন ছোঁবনা যতদিন না তুমি আমাকে অনুমতি দেবে। যদি তুমি সারাজীবন আমার থেকে দূরে সরে থাকো , তাও আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমি যে আমার প্রিয় বন্ধুকে কথা দিয়েছি , তার অবর্তমানে তার পরিবার কে আমি আগলে রাখবো। "
মনীষা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিস্তব্ধতা বজায় ছিল। মনীষার মুখ বন্ধ দেখে রবি বুঝলো যে আজকের মতো মনীষার সকল কৌতূহল , জিজ্ঞাসা ও কথা ফুরিয়েছে। তাই সে আবার নিজের বালিশ নিয়ে ঘর থেকে বেড়োতে যাচ্ছিলো। অমনিই মনীষা আবার রবিকে পিছন থেকে ডাকলো , "দাঁড়াও রবি। তোমাকে আজকে কষ্ট করে বাইরে গিয়ে সোফায় শুতে হবে না। তুমি এখানেই ঘুমো , মাঝখানে ডিসটেন্স রেখে , যেমনটা এতোদিন করতে।"
মনীষার কথা শুনে রবির মনে হাজার মাইল বেগে এক দমকা হাওয়া বয়ে গেলো। সে প্রচন্ড খুশি হলো এটা ভেবে যে সে আবার মনীষার হারানো বিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। এটা সকলে পারেনা। সবাই বলে বিশ্বাস হলো কাঁচের মতো , একবার ভাঙলে সেটা জোড়া দেওয়া যায়না। আজ ব্যতিক্রম হয়ে দেখালো আমাদের রবি। কারণ সে তো সত্যিই অপরাধী ছিলোনা। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে অপরাধী কেউই ছিলোনা , অরুণও নয়।
to be continued........
 
পর্ব - ০৭
[HIDE]অরুণ আজকেও পরীকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের বালিশে হেলান দিয়ে বই পড়ছিলো। আজকেও সে ঘুমের ওষুধ খাইনি। কারণ এখন অরুণ আর বিশেষ স্ট্রেস নেয় না। তাই সে রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়াটাও ত্যাগ করেছে। বই পড়তে পড়তে সে মনীষার কথা ভাবছিলো। চোখ ছিল বইয়ের পাতায় কিন্তু মন ছিল মনীষার দিকে।

অরুণ ভাবছিলো কি করে মনীষাকে এই মিথ্যে বিয়ে থেকে বের করে আনবে। মনীষা কবে এই মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে। অরুণ এবার চাইছিলো জীবনের শেষ কয়েকটা দিন সে মনীষাকে নিয়ে ভালোভাবে স্বামী স্ত্রীর মতো আবার কাটাবে। কিন্তু সেটা যে এতো সহজ ছিলোনা। মনীষা তার বিয়ে করা একমাত্র বউ হতে পারে, কিন্তু সে তার হাতের পুতুল নয়, যে যখন চাইলো ডিভোর্স দিয়ে অন্য কারোর সাথে বিয়ে করতে বাধ্য করলো , আবার যখন চাইলো সেই বিয়ে ভাঙিয়ে পুনরায় তাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনলো। এইভাবে সবকিছু হয়না। অরুণ ক্যান্সার আক্রান্ত একজন রোগী হতে পারে কিন্তু তাই বলে তার সব আবদার কে শেষ ইচ্ছে বলে মেনে নেওয়া যায়না।

ওদিকে মনীষা ও রবি যথা নিয়মে একে অপরের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লো। গতরাতে রবির সোফায় ঠিকমতো ঘুম হয়নি , তার উপর সারাটা দিন তার কেটেছে দ্বন্দ্বে , নিজের মনের সাথে। অরুণের কথা মেনে তার মনীষার কাছে যাওয়া উচিত ছিল কিনা। সে তো মনীষার চোখে সেই জন্য ছোটও হয়েগেছিলো। সারাটা দিন তাই তার চিন্তায় চিন্তায় কেটে ছিল , কিভাবে সে মনীষাকে রাতে ফেস করবে এটা ভেবে।

এইসবের জন্যে রবির শরীর ও মনের উপর দিয়ে অনেক ধকল গ্যাছে। তাই সে বিছানায় শুতেই ঘুমের দেশে পাড়ি দিলো। কিন্তু অরুণের মতো মনীষারও আজকে ঘুম আসছিলো না। পার্থক্য ছিল শুধু এটাই যে অরুণ ভাবছিলো মনীষার কথা আর মনীষা ভাবছিলো রবির কথা। কি কথা ?

রবি কিছুক্ষণ আগে যে কথা গুলো প্রতিশ্রুতির আকারে মনীষা কে বললো, সেই কথা। রবি কখনো মনীষা ও পরীকে ছেড়ে যাবে না। সবসময়ে তাদের পাশে থাকবে , তা মনীষা রবিকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করুক বা না করুক। এইসব কথা শুনলে কোন মেয়েরই না মন গলে , যদি সে দেখে কেউ নিঃস্বার্থ ভাবে তার পাশে রয়েছে , তাও আবার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ে। বদলে কি মনীষার সত্যি কিছু দেওয়ার নেই ? মনীষা সেটা নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করলো মনে মনে।

ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সে অনুভব করলো রবির হাতটা তার পেটের উপর এসে পড়েছে। আসলে রবি আজ অকাতরে ঘুমোচ্ছিলো। তাই সে তাদের মাঝখানের সেই ডিসটেন্সটা মেইনটেইন করতে পারেনি। বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে ছড়িয়ে শুতে গিয়ে সে অজান্তেই মনীষার খুব কাছাকাছি চলে এসছিল।

রবি ঘুমের মধ্যে মনীষাকে পাশবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরেছিলো। মনীষার শরীর অবশ্য বালিশের থেকেও কোমল এবং আরামদায়ক , তাই রবি সেই মানুষরূপী কোলবালিশ-টি কে আরো শক্ত করে জাপটে ধরেছিলো। মনীষা এখন রবির হস্তবন্ধনে আবদ্ধ ছিল। কিন্তু আজকে মনীষা রবিকে আর ভুল বোঝেনি। সে বুঝেছে যে রবি ঘুমের ঘোরে তাকে কোলবালিশ ভেবে জড়িয়ে ধরেছে।

দয়ালু মনীষা রবিকে জাগিয়ে দিয়ে ওর ঘুম নষ্ট করতে চাইছিলো না। তাই সে রবির বন্ধন থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করলো না। উল্টে নিজের কমফোর্টের জন্য মনীষা নিজের হাতটা রবির পিঠে আলতো করে রেখে দিলো। দেখে মনে হচ্ছিলো স্বামী স্ত্রী একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি মনীষারও ঘুম পেয়ে গেলো। সেও ঘুমিয়ে পড়লো রবির হস্তযুগলের ঘেরাটোপে। রবির শরীরের তাপের সান্নিধ্যেই হয়তো মনীষার ঘুম তাড়াতাড়ি চলে এলো। মনীষা যে বহুদিন অরুণের আদরের স্পর্শ পায়নি। আর অরুণ ছাড়া ওর জীবনে অন্য কোনো পুরুষ ছিলোনা যে ওর শরীরে ভালোবাসাময় উত্তাপের সঞ্চার ঘটাবে, ওকে আরাম দেওয়ার জন্য।

পাশের ঘরে অরুণেরও চোখ লেগে এসছিল। সে বইটা পাশের টেবিলে রেখে দিয়ে মাথাটা বালিশে দিলো। ভাবলো কালকে সে মনীষার সাথে কথা বলবে। তাকে আবার ফিরিয়ে আনবে নিজের কাছে। কিন্তু এখন যে অরুণের অজান্তেই তার মনীষা পাশের ঘরে রবিকে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল। সে কি আর ফিরে আসবে ?

পরের দিন সকাল হলো। রবি ও মনীষার একসাথে ঘুম ভাঙলো। ঘুম ভেঙে তারা একে অপরকে নিজেদের অতিব নিকটবস্থায় পেলো। কিছুক্ষণ তারা ওইভাবেই রইলো , হয়তো ঘোর কাটেনি ততক্ষণে। তারপর তারা একে অপরের আঁটোসাঁটো বন্ধন থেকে নিজেদের মুক্ত করলো। রাতে ঘুমের মধ্যে তারা একে অপরকে এমনভাবে জাপটে ধরেছিলো যেন একে অপরকে ছাড়া বাঁচা দায় হয়ে পড়েছে। রবির জীবনেও কেউ নেই , আর মনীষাও জানে খুব শীঘ্রই সে নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটা-কে হারাতে চলেছে। সে এখন মানসিকভাবে প্রস্তুত এই ভবিতব্য কে মেনে নিতে।

আজকে অরুণ বরং কিছুটা আগে উঠে পড়েছিল , বা বলা ভালো যে আজ রবি ও মনীষার উঠতে দেরী হয়েছিল। অনেকদিন পর ওদের আজ ভালো ঘুম হয়েছিল একে অপরের সংস্পর্শে এসে। অরুণ ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখে মনীষার ঘরের দরজা এখনো বন্ধ। সে খানিকটা অবাকই হয়। মনীষার তো উঠতে কখনো এতো দেরী হয়না। রবিও বা কি করছে এতোক্ষণ ধরে ? ওরও কি এখনো ঘুম ভাঙেনি ? ব্যাপারটা ভারী অদ্ভুত তো ! অরুণ মনে মনে ভাবলো। সে তখন কি করবে ভেবে না পেয়ে ডাইনিং রুমের সোফায় বসে সকাল সকাল টিভি চালিয়ে দেখতে লাগলো।

কিছুক্ষণ পর মনীষা নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো। দেখলো অরুণ উঠে গ্যাছে , এবং টিভি দেখছে।

- "ওহঃ , তুমি উঠে গ্যাছো। সরি আজকে একটু দেরী হয়েগেলো উঠতে। দাঁড়াও তোমার খাবার করে আনছি।"

- "নাঃ নাঃ মনীষা, ঠিক আছে। তোমাকে অতো তাড়াহুড়ো করতে হবে না। তুমি নিশ্চিন্তে আগে ফ্রেশ হয়ে নাও , তারপর ধীরে সুস্থে খাবার বানিও। আচ্ছা রবি কোথায় ? ও এখনো ওঠেনি ?"

- "উঠেছে , ঘরেই আছে। "

অরুণের কথা না শুনে মনীষা আগে রান্নাঘরে ঢুকলো খাবার তৈরী করতে। তার এখন ফ্রেশ হওয়ার সময় নেই। অরুণ যাই বলুক না কেন , সে জানে সে আজকে দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছে। তাই তাকে আগে রান্নাঘরে ব্রেকফাস্ট বানানোর কাজটা সেড়ে ফেলতে হবে। তাই নিজের দিকে নজর দেওয়ার টাইম নেই।

মনীষা কেন তার কথা না শুনে ওয়াশরুমে না গিয়ে সোজা রান্নাঘরে চলে গেলো সেটা নিয়ে অরুণ একদমই বিচলিত ছিলোনা। এরকম ছোটখাটো অবাধ্যতা সংসারের প্রয়োজনে আকছার মনীষা করে থাকে। সংসারটা তার , সে অরুণের চেয়ে ভালো বোঝে পরিস্থিতি অনুযায়ী সংসারে কোন কাজটা আগে প্রাধান্য দিয়ে করতে হবে আর কোনটা পরে।

অরুণের মনে তখন হাজার প্রশ্ন ভীড় করছিলো রবি ও মনীষাকে নিয়ে। নাহঃ , সে সন্দেহ করছিলোনা ওদের। সে তার স্ত্রী ও বন্ধুর উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখে। তবুও মনের ঈশান কোণে কিছু প্রশ্নের উদয় হচ্ছিলো। দুজনেরই আজকে ঘুম থেকে উঠতে দেরী হলো ? যদি তা না হয় , রবি যদি আগেই উঠে থাকে তাহলে ওই বা এতোক্ষণ বেড়োচ্ছিলোনা কেন ঘর থেকে ?

ভাবতে ভাবতে অরুণ দেখলো রবিও ঘর থেকে বেড়িয়ে এসছে। অরুণকে দেখা মাত্রই রবি ওকে "গুড মর্নিং" বললো। অরুণও প্রত্যুত্তরে একই শুভেচ্ছা জানালো। তারপর রবি অরুণের সামনে দিয়েই রান্নাঘরে প্রবেশ করলো যেখানে মনীষা বাড়ির সকলের জন্য খাবার তৈরী করছিলো। সে মনীষাকে রান্নাঘরে হেল্প করতে লাগলো। মাঝে মাঝে দুজনের মধ্যে স্বাভাবিক দু-চারটে কথা হচ্ছিলো।

কিন্তু এই স্বাভাবিক জিনিসটা অরুণের দেখতে ভালো লাগছিলো না। অরুণের হালকা হালকা জেলাস ফীল হতে শুরু করছিলো রবি কে নিয়ে। আসলে সুস্থ থাকতেও সে কখনোই মনীষাকে সংসারের কাজে হেল্প করেনি , যা আজকাল-কার দিনে যেকোনো কোঅপারেটিভ হাসব্যান্ড করে থাকে। মনীষা যে ছোট ছোট সাহায্য গুলো অরুণের কাছ থেকে কোনোদিন পায়নি , যেটা নিয়ে মনীষা কখনো অভিযোগ করেনি কিন্তু এক্সপেক্ট করতো , সে সব আজ রবি ওকে প্রোভাইড করছিলো। যেটা রবির প্রতি অরুণের মনে জেলাসি এবং মনীষার মনে সম্মান বাড়িয়ে দিচ্ছিলো
অরুণের এসব দেখে নিজেকে খুব হেল্পলেস মনে হচ্ছিলো। এরকম নিরামিষ সহযোগিতা দেখে সে কিছু বলতেও পারছিলোনা , আবার এসব দেখে হজমও করতে পাচ্ছিলো না। রবির মনে মনীষা কে নিয়ে তখন কোনো পাপ বা দুরভিসন্ধি ছিলোনা , তাই অরুণের সামনেই সে খুব সহজভাবে মনীষার সাথে মেশার চেষ্টা করছিলো। মনীষাও তালে তাল দিয়ে রবির সাথে ভালোমতো আচরণ করছিলো। তাই মাঝে মাঝে হাসি খুনসুটি হচ্ছিলো ওদের মধ্যে , যেটা অরুণের চোখে অসহ্য হয়ে উঠছিলো।

কিন্তু এই তো কয়েকদিন আগে সে নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে দুজনের চার হাত এক করেছিল। সে তো এটাই দেখতে চেয়েছিলো যে মনীষা রবির সাথে স্বাভাবিক হয়ে মেলা মেশা করুক , কারণ তার মৃত্যুর পর মনীষাকে তো রবির সাথেই থাকতে হবে। তাহলে আজ কেন তার এতো কষ্ট হচ্ছে ? এর উত্তর হলো , এক্সপেকটেশন। যখন রবির মুখ থেকে অরুণ শুনলো মনীষা রবিকে দৃপ্ত ও আপোষহীন ভাবে বহিস্কার করেছে শুধু মাত্র তার প্রথম স্বামী অরুণের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার জন্য , তখন যেন অরুণ নতুন করে আবার মনীষার প্রেমে পড়ে গেলো। সে মনীষাকে নিয়ে নতুন করে আশা বাঁধতে শুরু করলো।

যে অরুণ জীবনের সব মায়া ত্যাগ করে উঠেছিল , সেই অরুণই তখন "আনন্দ সিনেমার রাজেশ খান্নার" মতো নিজের জীবনের শেষ কয়েকটা মুহূর্ত প্রাণবন্তভাবে বাঁচতে চাইলো তার মনীষার সাথে। বলতে চাইলো "জিন্দেগি বড়ি হোনি চাহিয়ে বাবুমশাই , লাম্বি নেহি " যার বঙ্গার্থ জীবন আকাশের মতো সীমাহীন বড়ো হওয়া উচিত, সমুদ্রের মতো দীর্ঘ ও গভীর নাহলেও চলবে।

সে নিজের উপর গর্ববোধ করতে শুরু করলো , মনীষার মতো সুন্দরী মেয়ের মনের একাধিপত্য স্থাপনের। রবি তার চেয়ে দেখতে তুলনামূলকভাবে সুন্দর হতে পারে , ধনী হতে পারে , হয়তো সবদিক দিয়ে অরুণের চেয়ে হাজার গুন সেরা ও সফল মানুষ হতে পারে , কিন্তু অরুণের ভালোবাসার সামনে সবকিছু ফেল।

অরুণের এই গর্বই যে কখন অহংকারের রূপ নিয়েছিল সেটা সে ধরতে পারেনি। সে ধরেই নিয়েছিল যে, যাই হয়ে যাক , সে যাই করুক না কেন মনীষা তার ব্যাতিত অন্য কোনো পুরুষকে মন দেওয়া তো দূরের কথা , চোখ তুলে পর্যন্ত তাকাবে না। কিন্তু এখন অনেক দেরী হয়ে যাইনি তো ? ঘরের বাইরে থেকে অরুণ ও রবির মধ্যেকার সব কথা মনীষার শুনে নেওয়া , রবি ও মনীষার মধ্যে সব ভুল বোঝাবুঝি শেষ হয়ে যাওয়া , মনীষার মনে রবির জন্য সম্মান হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া, এক নতুন সম্পর্ক বা সমীকরণের জন্ম দিলো না তো ??

উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাবো পরের পর্বে। ......[/HIDE]
 
পর্ব - ০৮

অরুণের আর ভালো লাগছিলো না ডাইনিং রম থেকে বসে বসে ওদের একসাথে সংসারের কাজ করতে দেখে। তার নিজেকে বড্ড বেশি একজন তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে মনে হচ্ছিলো। তাই সে তখন উঠে নিজের ঘরে চলে গেলো। ঘরে গিয়ে সে পরীকে ঘুম থেকে তুলতে লাগলো। রোজ এই কাজটা মনীষা করে থাকে আজ না হয়ে সে করলো। এমনিতেও এখন মনীষার কাজে রবি অনেক নাক গলাচ্ছে তাহলে সেই বা কেন পিছিয়ে থাকবে। রবিকে মনে মনে অরুণ শেষমেশ নিজের প্রতিযোগী মানতে শুরু করে দেবে সেটা কল্পনাতীত ছিল।

[HIDE] যেমন ভাবনা , তেমন কাজ। অরুণ পরীকে ঘুম থেকে তুললো। ততক্ষণে মনীষা খাবার রেডি করে নিয়ে এসছে অরুণের ঘরে। সে অরুণকে খাবার দিলো। তারপর চুপচাপ পরীকে নিয়ে চলে গেলো ওর মুখ হাত ধোয়াতে। মনীষা ঠিকমতো কথাও বললো না ! এতো তাড়া ওর ? আমি কি ওর জীবনে এখন বোঝা হয়েগেছি ? অরুণের এটা ভেবে খুব খারাপ লাগলো।

দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর রবি পরীকে নিয়ে নিজের ঘরে খেলা করছিলো। মনীষা ও রবি শুধু রাতের বেলা একসাথে থাকে। বাকি সময়টা তাদের মধ্যে একটা অঘোষিত লাইন অফ কন্ট্রোল রেখা বজায় থাকে , যার নাম অরুণ রায়। মনীষা ওয়াশিং মেশিন থেকে কাচা জামা কাপড় গুলো তুলে নিয়ে এনে ব্যালকনিতে মেল ছিলো। অরুণ সকাল থেকে সুযোগ খুঁজছিলো মনীষাকে একা পাওয়ার। সেই সুযোগটা তখন সে পেয়ে যায়। অরুণ ব্যালকনিতে গিয়ে পেছন থেকে মনীষার হাতটা চেপে ধরলো। মনীষা চমকে উঠলো , পিছন ফিরে দেখলো অরুণ দাঁড়িয়ে। অরুণ ওকে টেনে নিয়ে গিয়ে নিজের ঘরে নিয়ে এলো।

- "অরুণ , কি করছো কি ? ছাড়ো আমার হাতটা ! আমাকে এভাবে টানতে টানতে কেন নিয়ে এলে? ব্যালকনিতে এতো ভেজা জামা কাপড় পড়ে আছে , সেগুলো মেলতে হবে তো ! "

- "ওসব পরে করবে , আগে তুমি আমার কথা শোনো।"

অরুণ কে খুব ডেসপারেট দেখাচ্ছিল।

- "কি কথা ? "

"আমি তোমাকে চাই ......", এই বলে অরুণ মনীষাকে জড়িয়ে ধরলো। মনীষা হতচকিত হয়ে গেলো। সে সঙ্গে সঙ্গে অরুণের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বললো , "তুমি কি পাগল হয়ে গেলে ?? এসব কি করছো তুমি ??"

- "কেন মনীষা ? তুমি এরকম করছো কেন ? আমি তোমার স্বামী , সত্যিকারের স্বামী !"

- "তাই ?? তাহলে তোমার মতে আমার নকল স্বামী কে ? রবি ?"

অরুণ অতো না ভেবে বলে ফেললো , "হ্যাঁ , রবিই। ও একটা সাজানো স্বামী , আমিই তোমার জীবনের আসল পুরুষ। "

অরুণের কথা শুনে তিতিবিরক্ত হয়ে মনীষা বললো , "তুমি কি ভাবো আমাকে ? তোমার খেলনার পুতুল ? যখন চাইবে দূরে ঠেলে দেবে , যখন চাইবে কাছে টেনে নেবে ?"

- "নাহঃ মনীষা আমি সেরকম ভাবিনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি বলেই তোমার আবার বিয়ে দিয়েছিলাম, তোমার সুখের কথা ভেবে। আজ যখন বুঝতে পারছি তুমি সুখে নেই , রবিকে তুমি মেনে নিতে পারছো না , তখন তাই তোমাকে আবার নিজের কাছে ফিরিয়ে আনতে চাইছি।
- "একটা সত্যি কথা বলবে অরুণ ?"

- "একটা নয় হাজারটা বলবো , তুমি জিজ্ঞেস করে তো দেখো। ......"

- "তুমি আর কত পরীক্ষা নেবে আমার ? যখন তুমি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে বাধ্য করালে রবিকে বিয়ে করতে তখনো তুমি একবারও আমার কথা শোনোনি। নিজের সিদ্ধান্ত আমার উপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। আজকেও তুমি আমার মতামত জানার বিন্দুমাত্র প্রচেষ্টা করছো না ! দেখে আমি অবাক হচ্ছি !!"

- "আমি তো এখন জানি তোমার কি মত। তুমি রবির সাথে থাকতে চাওনা। আমি সেদিন ভুল ছিলাম মনীষা, কিন্তু আজ তো আমি ঠিক।"

- "সেদিনের মতো আজকেও তুমি ভুল অরুণ। ...."

- "মানে ??"

- "মানে সেদিন আমি তোমাকে ছেড়ে রবিকে বিয়ে করতে চাইনি , কিন্তু তুমি আমার কোনো কথা শোনোনি। আর আজ যখন আমি আমার এই পোড়া কপালটা কে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছি তুমি আবার আমাকে এক অগ্নিপরীক্ষার সামনে ঠেলে দিচ্ছো। "

- "সেই অগ্নিপরীক্ষাটা যাতে তোমাকে আর না দিতে হয় , তাই জন্যই তো তোমাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি আবার। "

- "তুমি ভুল বুঝছো অরুণ , অগ্নিপরীক্ষাটা আমায় রবিকে দিতে হচ্ছেনা , তোমাকে দিতে হচ্ছে এখন। তুমিই নিচ্ছো অগ্নিপরীক্ষা আমার।"

- "তোমার কথার মানে তো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না মনীষা ! তুমি এক্সাক্টলি কি মিন করতে চাইছো মনীষা ?? প্লিস খুলে বলো আমায়। "

- "দেখো অরুণ , তুমি আর আমি দুজনেই এই কঠিন সত্যটা এখন জানি যে তুমি আর কয়েকদিনের অতিথি মাত্র। তারপর ?? তোমার যাওয়ার পর আমার কি হবে ? সর্বোপরি আমাদের মেয়েটার কি হবে ? আজ যদি আমি রবিকে ছেড়ে আবার তোমার কাছে চলে আসি , তাহলে রবির উপর দিয়ে কি যাবে ? ও কি ভাববে ? তুমি চলে যাওয়ার পর তখন তো রবি অভিমান করে আমার ও পরীর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতেই পারে। রবি আমার থেকে কিছু এক্সপেক্ট করেনা , কিন্তু আমি বুঝি ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। ভালো না বাসলে শুধুমাত্র তোমার সাথে ওর বন্ধুত্বের টানে ও নিজের জীবনের এতো বড়ো স্যাক্রিফাইস করতো না অরুণ, সেটা মেয়ে হয়ে আমি বুঝতে পারি। "

- "কিসের স্যাক্রিফাইস ? কি স্যাক্রিফাইস করেছে ও তোমার জন্য ?"

- "ওর চাহিদা। হ্যাঁ অরুণ , আমি ঠিক বলছি। ওর সাথে বিয়ের পর থেকে আমি এখনো অবধি ওকে শুধু রিফিউস করে এসছি। ও তাও সবকিছু মেনে নিয়েছে। তোমার কথায় পরশু রাতে যখন ও আমাকে স্পর্শ করতে এসছিল , তখন আমি ওকে যা নয় তাই বলে অপমান করেছি , সেটাও ও মুখ বুজে সহ্য করে নিয়েছে। "

"মনীষা , তুমি তাহলে জানো যে আমিই ...... " , অরুণের কথা আটকে গেলো। সে যে বুঝতে পেরেছিলো সে মনীষার কাছে ধরা পড়ে গ্যাছে। মনীষাও তখন দৃপ্ত কণ্ঠে বললো , "হ্যাঁ আমি জানি অরুণ , যে এই ঘৃণ্য কাজের জন্য রবিকে প্রশ্রয় তুমিই দিয়েছিলে। সেদিন তোমার খাবার তোমার এই ঘরে নিয়ে আসতে গিয়ে বাইরে থেকে আমি তোমার আর রবির মধ্যেকার কথা শুনে ফেলেছিলাম। তারপর বুঝলাম আমি তো মিছি মিছি রবিকে ভুল বুঝছিলাম , আসল কলকাঠি টা তো তুমিই নেড়েছিলে, তাই নয় কি মিস্টার অরুণ রায় ?? "
- "আমার মাথার ঠিক ছিলোনা তখন , তাই আমি রবিকে এধরণের আলটপকা উপদেশ দিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস করো , যা বলেছিলাম বা ভেবেছিলাম তা শুধু তোমার সুখের কথা ভেবে , তোমার ভালো চেয়ে। .."

- "তাহলে এখনো সেটাই চাও , আমাকে সুখে থাকতে দাও , ভালো থাকতে দাও ............... রবির সাথে। "

মনীষা তার নিজের কথার মাঝখানে একটা লম্বা বিরতি নিয়ে অবশেষে রবির নামটা বললো। এটা শুনে যেন অরুণের পায়ের নিচ দিয়ে জমি সড়ে গেলো এবং মাথার উপরে বাজ পড়লো। অরুণ এর উত্তরে কি বলবে বুঝে পাচ্ছিলো না। অরুণের এই করুণ অবস্থা দেখে মনীষা অরুণকে বোঝানোর চেষ্টা করলো তার কথার অন্তর্নিহিত অর্থ।

- "দেখো অরুণ , আমি অনেক ভেবেছি। ভাবার পর এই সিদ্ধান্তে এসছি। তুমিই ঠিক ছিলে। সত্যিই তো , তোমার অবর্তমানে আমাদের কি হবে ? আমার মতো অবলা নারীকে তো সমাজ চিলে শকুনের মতো ছিঁড়ে খাবে। আমার , বিশেষ করে আমার মেয়ের তো একটা শেল্টার দরকার। সে তার পিতার অবর্তমানে পিতৃ পরিচয় নিয়ে হয়তো বাঁচতে পারবে , কিন্তু পিতৃসম ভরসা কোথা থেকে পাবে ? যখন তার মা নিজেও আশ্রয়হীন একজন মহিলা , যার নিজস্ব কোনো চাকরি-বাকরি নেই , বাড়ির লোকেদের সাথে সুসম্পর্ক নেই। আমি আমার মেয়ে কে নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবো ? "

"কিন্তু রবি তো বলেছে , সেই আশ্রয়টা সে প্রদান করবে !" , ভগ্ন হৃদয়ে ভঙ্গুর গলায় কোনোমতে আওয়াজ বার করে অরুণ বলে উঠলো।

- "আমি জানি , কিন্তু কি বলতো , প্রতিটা মানুষের একটা ধৈর্যের সীমা থাকে , সেটা পেরিয়ে গেলে সে মানুষটা একটা বাঁধ ভাঙা নদীর মতো হয়ে যায়। নিজের সাথে সাথে সবাইকে ডুবিয়ে নিয়ে চলে যায়। আমি রবিকে বলেছি ঠিকই যে আমি অনুমতি না দিলে রবি যেন আমাকে স্পর্শ না করে , ও কথাও দিয়েছে করবে না স্পর্শ। কিন্তু আমিই বা কতোদিন ওকে অনুমতি না দিয়ে থাকতে পারবো বলো তো। আমার কাছ থেকে বারংবার প্রত্যাখ্যান পেতে পেতে ও যদি হাঁফিয়ে ওঠে ? ওর যদি এই সম্পর্কটা তে দমবন্ধ হয়ে আসে , চায় মুক্ত হতে , তখন ? আমি তো ওকে এই ধরণের অন্যায় শর্ত দিয়ে বেঁধে রাখতে পারিনা। তুমিই বলো না ওর কি দোষ ? ও কেন বৈবাহিক সম্পর্কের সবধরণের সুখ থেকে বঞ্চিত হবে ? ছেলে হিসেবে ও যথেষ্ট যোগ্য যেকোনো মেয়ের ভালোবাসা পাওয়ার। তাহলে তাকে কেন আমি বঞ্চিত করে রাখবো , তুমি বলতে পারো অরুণ ? একবার বিষয়টা ম্যাচিউরড্লী ভাবে ভেবে দেখো। "

মনীষার কথা শুনে অরুণ বিছানায় বসে পড়লো , তারপর ওকে জিজ্ঞেস করলো , "তাহলে তুমি কি চাও মনীষা ?"

মনীষা তখন অরুণের মাথায় হাত বুলিয়ে বললো , "লক্ষীটি সোনা , আমায় প্লিস তুমি ভুল বুঝোনা। এবার আমি তোমাকে বলছি একটু বাস্তব দিকটা ভেবে দেখো। আমি যদি ওকে ছেড়ে এখন তোমার কাছে আসি , ও অপমানিত বোধ করবে না ? মুখে হয়তো কিছু বলবে না কিন্তু ওর মনে তো একটা দাগ কেটে যাবে সারাজীবনের জন্য ? আমি না মানলেও সে যে আমাকে নিজের স্ত্রী মানতে শুরু করে দিয়েছে। আর তুমি চলে যাওয়ার পর আমাকে তো আমার মেয়েকে নিয়ে ওর সাথেই থাকতে হবে , অন্য যে কোনো উপায় নেই আর। তাছাড়া ও তো কোনো ফেলনা নয়। আমাদের দিক থেকে যখন গোটা সমাজ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তখন ওই আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এবার আমাদেরও উচিত ওকে ওর প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দেওয়ার। "

- "প্রাপ্য ! কি প্রাপ্য ?"

- "তুমি যে তোমার এই সবচেয়ে প্রিয় উপহারটা (মনীষা) ওকে দিয়েছো সেটা কে আর ফিরিয়ে নিয়ো না। এই উপহারটা (মনীষা) যে এখন ওরই প্রাপ্য। না পেলে যে ওর খুব কষ্ট হবে। "
- "আর আমার কষ্টটা ? সেটার কি হবে ?"

- "তোমার কষ্টটা লাঘবের জন্য আমাকে কি প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে , সেটা বলো। "

"আমার সাথে থাকতে হবে ", মনীষার হাতটা চেপে ধরে অরুণ বললো।

- "বাচ্চা ছেলের মতো জেদ করেনা অরুণ। তুমি তোমার পুতুলটা-কে (মনীষাকে) তোমার বন্ধুকে দিয়ে দিয়েছো। কাউকে দেওয়া জিনিস কি কখনো ফিরিয়ে নিতে আছে ?"

অরুণ বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো , তারপর সে যা বললো তার প্রভাব মনীষার উপর হিরোশিমা নাগাসাকির পরমাণুর বিস্ফোরণের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর ছিলো।

অরুণ বললো , "বেশ , ঠিক আছে মনীষা। আমি তোমার কথা মেনে নিলাম। আমি আর এই পুতুলটা-কে রবির কাছ থেকে ফিরিয়ে নেবো না। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে তাহলে ?"

- "কি শর্ত ? বলো ....."

- "আমি দেখতে চাই রবি এই পুতুলটার কতোটা যত্ন নিতে পারে। কতোটা ভালোবাসতে পারে , সেটা নিজের চোখে সাক্ষী থাকতে চাই। "

- "মানে ?"

- "মানে তোমাকে যদি রবির কাছে সমর্পিত হতেই হয় , সেটা তাহলে আজ থেকেই হতে হবে। আমি মারা যাওয়ার আগে তোমাকে রবির সন্তানের মা হতে দেখে যেতে চাই। তাহলে কেউ তোমার চরিত্রের দিকে কোনো দাগ লাগাতে পারবে না। সবাই ভাববে সন্তানটা আমার , মারা যাওয়ার আগে আমি আরো একবার বাবা হয়েছি। তোমার আর রবির বিয়েটা তো আমি অনেক গোপনে দিয়েছি। তাই বাইরের জগতে সবাই জানে তুমি এখনো আমারই পুতুল , মানে স্ত্রী। ইভেন আমাদের মেয়েটাও তাই জানে। আর মেয়েটা এটাও জানবে যে তার ভাই বা বোন যেই আসুক না কেন সেটা তার নিজের , সৎ ভাই বোন নয়। নাহলে বড়ো হয়ে অনেক কমপ্লিকেশন্স আসতে পারে পরী আর ওর ভাই বা বোনের মধ্যে। এদিকে রবিও সারাজীবন তোমার প্রতি দায়বদ্ধ থাকবে কারণ তুমি হবে ওর সন্তানের মা। তাই সে চাইলেও নিজের দায়িত্বটা-কে কোনোদিন অস্বীকার করতে পারবে না। "

অরুণের হয়েছিল এখন বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি। অরুণের কথা শুনে মনীষা পুরোপুরিভাবে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। অরুণের অকাট্য যুক্তির সামনে সে কিছু বলতেও পারছিলো না। কারণ টেকনিক্যালি অরুণ তখন যা যা বলছিলো তা সবই যুক্তিসম্মত। কিন্তু মনীষা যে এখুনি এইসবের জন্য তৈরী ছিলোনা। তবুও ফের একবার সে অরুণের কাছে হার মেনে অরুণের চাপে পড়ে বলতে বাধ্য হলো যে সে অরুণের এই প্রস্তাবটা ভেবে দেখবে। কিন্তু মনীষার কাছে হাতে এখন অনেক কম সময় ছিলো। সিদ্ধান্ত তাকে আজ রাতের মধ্যেই নিতে হবে।
. [/HIDE]

to be continued.......
 
আমি আসলে এক্সপেক্ট করি নাই যে গল্প এগোবে, অন্য সাইটে তিন পর্বেই শেষ করে দিয়েছিল, যা আমার কাছে অসম্পূর্ণ মনে হয়েছিল। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।।। ❤️❤️
 
লেখিকার সময় না থাকায় তার অনুমতিতে,,,,,পর্ব গুলো পোস্ট করছি,,,,, এবং,,,, সব পর্ব গুলোই,,, আপনাদের উপহার দিতে পারব আশা করি।

পর্ব - ০৯

অরুণের শর্ত শুনে মনীষা থ হয়েগেছিলো। সে অরুণের ঘর থেকে বেরিয়ে ফের ব্যালকনিতে এসে ভেজা কাপড় গুলো মেলতে শুরু করেছিল। কিন্তু তার মন একেবারে অন্যমনস্ক ছিল। রবি পরীকে পড়তে বসিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়েছিল। সে আন্দাজ করতে পেরেছিলো যে কিছু একটা হয়েছে মনীষা ও অরুণের মধ্যে। সে তখন মনীষাকে খুঁজতে লাগলো। দেখলো ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে মনীষা। পিছন থেকে এসে রবি জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে।

[HIDE]
রবির আওয়াজ শুনে মনীষা পিছন ফিরে তাকালো। সে তখন এতোটাই দূর্বল হয়ে পড়েছিল যে রবিকে দেখা মাত্রই তাকে জড়িয়ে ধরলো। তার চোখ দিয়ে বিনা মেঘে অঝোরে বৃষ্টি নামছিলো। সেই বৃষ্টিতে তার দেহ মন সব ভিজে যাচ্ছিলো। নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছিলো , বড়ো একা হয়ে পড়ছিলো। তাই সে একটি ছায়া খুঁজছিলো , যা সে পেলো রবিকে আলিঙ্গন করে , ওকে জড়িয়ে ধরে।

"কি হয়েছে মনীষা , তুমি কাঁদছো কেন ?" , রবিও মনীষাকে জড়িয়ে ধরে ওর মাথায় আদর করে হাত বোলাতে বোলাতে জিজ্ঞেস করলো।

"আমি আর বাঁচতে চাইনা রবি , আমি এই দ্বন্দ্ব নিয়ে আর পারছিনা থাকতে। হাঁফিয়ে উঠেছি জীবনের পরীক্ষা দিতে দিতে ", কাঁদতে কাঁদতে মনীষা বললো।
রবি ওকে বোঝানোর মতো করে নরম গলায় বললো , "এরকম বললে চলে মনীষা ? আমি যে মনীষাকে চিনি সে তো এতো সহজে হেরে যায়না। সি ইস এ ফাইটার। তুমি কতো ঝড় ঝাপটা সামলেছো। বাড়ির অমতে গিয়ে পালিয়ে অরুণকে বিয়ে করেছো , ওর সাথে গুছিয়ে সংসার করেছো। পরীকে জন্ম দিয়ে মা হয়েছো। অরুণের এই কঠিন সময়ে আদর্শ স্ত্রী হয়ে ওর পাশে দাঁড়িয়েছো , এখনো রয়েছো। তাছাড়া তোমার সব লড়াইয়ে আমি তো আছি তোমার পাশে , তুমি ভয় পাচ্ছ কেন ?"

- "সত্যি ! সত্যিই তুমি পাশে আছো আমার ? যেকোনো পরিস্থিতিতেই তুমি আমার পাশে থাকবে ?"

- "তোমাকে আগেও এই কথা দিয়েছি , এখনো দিচ্ছি। দরকার পড়লে আমার কাছ থেকে লিখিয়ে নাও তুমি , আমার এই কথার কোনোদিনও কোনো পরিস্থিতিতেই নড়চড় হবে না। "

- "কিন্তু অরুণ যে আবার আমাকে আরেকটা অগ্নিপরীক্ষার দিকে ঠেলে দিচ্ছে , এখন আমি কি করি ?"

- "ও আবার কি কোনো নতুন শর্ত দিয়েছে তোমাকে ?"

- "হ্যাঁ। ....."

- "আমি ঠিক আন্দাজ করেছিলাম যখন অরুণের ঘর থেকে তোমাদের আওয়াজ ভেসে আসছিলো আমার কানে , তখুনি বুঝেছি কিছু একটা গড়বড় হয়েছে। তাই তো পরীকে পড়তে বসিয়ে তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে ব্যালকনিতে এলাম। বলো , ওই পাগলটা নতুন কি বায়না ধরেছে ?"
মনীষা চুপ করে রইলো। কিছু বলতে পারছিলো না লজ্জায়। ফের রবি জিজ্ঞেস করলো মনীষা কে। এভাবে দু-তিনবার জোর করায় মনীষা অবশেষে নিজের মুখ খুললো।
"অরুণ চায়। .......", মনীষা হেসিটেট করছিলো বলতে। তাই রবি ফের জিজ্ঞেস করলো , "হ্যাঁ , কি চায় বলো। ....."

- "ও চায় আমি তোমার সন্তানের মা হই ", এক নিঃশ্বাসে কথাটা বলেই মনীষা তৎক্ষণাৎ হাত দিয়ে লজ্জায় নিজের মুখ ঢেকে নিলো।
রবির কাছে কিন্তু এই কথাটা খুব একটা আনএক্সপেক্টেড ছিলোনা। কারণ যে অরুণ তাকে মনীষার দিকে ঠেলে দ্যায় যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হতে , তার কাছ থেকে এরকম আবদার আশা করাটাই যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। কিন্তু রবি তখন মনীষাকে এর জবাবে কি বলবে সেটা ভেবে পাচ্ছিলো না। সে তো মনীষার প্রতি আকৃষ্টই , কিন্তু মনীষা ? সে তো এখনো অন্ধকারেই রয়েছে, জানেই না সে নিজে কি চায় ? ক্রমাগত নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে চলেছে মেয়েটা।
অনেক ভেবে চিনতে রবি বললো , "হুমমঃ ,, বুঝলাম। .."
"কি বুঝলে ?", মনীষা জিজ্ঞেস করলো।

- "এই যে, অরুণ ডেসপারেট হয়ে উঠেছে আমাকে আর তোমাকে এক করতে। তাই আমাদের এক হওয়ার প্রমাণ সে দেখে যেতে চায় , তোমাকে আমার দ্বারা গর্ভবতী করে। কারণ যতই আমি বলিনা কেন তোমার আর পরীর সব দায়িত্ব আমি সারাজীবন নেবো , ওর মনে একটা সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। ও ভাবছে যে তোমার কাছ থেকে স্বামী হিসেবে আমি কোনো সাড়া না পেয়ে যদি আমি তোমাদের ছেড়ে চলে যাই। তাই ও চাইছে আমাকে তোমার সন্তানের বাবা করে সারাজীবনের মতো তোমার আর আমার একটা যোগসূত্র বেঁধে দিতে। "
"আচ্ছা , অরুণের এই আশংকার মধ্যে কি খানিকটা হলেও সত্যতার ছোঁয়া লুকিয়ে রয়েছে ? আমি যদি কোনোদিন তোমার কাছে নিজেকে সমর্পণ না করি তাহলে তুমি কি ...... ????", বলেই মনীষা থেমে গেলো।

- "তুমি কি আমায় এই চিনলে মনীষা ? আই এম ম্যান অফ মাই ওয়ার্ডস। অরুণ যখন আমাদের বিয়ে দিলো তখুনি আমি অরুণকে কথা দিয়েছিলাম যে তার স্ত্রী ও কন্যা কে আমি সবসময়ে নিজের জান দিয়ে আগলে রাখবো। তখন কিন্তু আমি তোমার কাছ থেকে স্বামী হিসেবে কোনো আশা রেখে এই কথা দিইনি। হ্যাঁ , পুরুষ হিসেবে আমার কখনো কখনো তোমায় দেখে সাময়িক উত্তেজনা হতে পারে , কারণ তুমি অত্যন্ত লাস্যময়ী সুন্দরী একটি মেয়ে। কিন্তু তাও দেখো , আমি ঠিক সামলে নেবো নিজেকে। কখনোই নিজের সীমা লঙ্ঘন করবো না। "
"এসব কি তুমি শুধুই বন্ধুত্বের খাতিরে করছো ? নাকি ......?" , আবার মাঝপথে মনীষা থেমে গেলো। আসলে খুব হেসিটেট ফীল করছিলো এসব ইন ডেপ্থ প্রশ্ন রবিকে করতে। কিন্তু মনীষার এই অসম্পূর্ণ প্রশ্ন গুলো ক্র্যাক করতে রবির বেশি সময় লাগছিলো না। কারণ সে খুব বুদ্ধিমান ছেলে।
কিন্তু রবি এর কোনো উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে বললো , "তোমার কি মনে হয় মনীষা ?"
"জানিনা ", মনীষা গলার স্বর নিচু করে বললো।
তখন রবি বললো , "আমিও ঠিক জানিনা। তবে হ্যাঁ সত্যি বলতে তোমার প্রতি আমার এক্সপেকটেশন অল্প হলেও জন্মেছে। আমি তোমার কাছে কিছু লুকোতে চাইনা মনীষা , সবসময়ে চেষ্টা করবো তোমার কাছে জলের মতো ট্রান্সপারেন্ট থাকার। তাই বলছি , আমি তোমাকে কোনো জোর করছি না , আমি শুধু এইটুকু বলছি যে, হ্যাঁ সত্যিই আমার মনে এখন তোমাকে নিয়ে কিছুটা হলেও এক্সপেকটেশনের উদয় ঘটেছে । "

- "কি ধরণের এক্সপেকটেশন ?"
রবি মাথা নিচু করে চুপ করেছিল। মনীষা আবার জিজ্ঞেস করলো , "কি হলো রবি , বলো, কি ধরণের এক্সপেকটেশন জন্মেছে তোমার মনে আমার প্রতি ?"

- "যে ধরণের এক্সপেকটেশন একজন স্বামীর জন্মায় তার স্ত্রীয়ের প্রতি ! বেশ কিছুদিন একসাথে এক ঘরে থাকতে থাকতে সেটা হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কি ? .... প্লিস রাগ করোনা মনীষা, আমি তোমাকে কোনো কিছু করার জন্য না এখন জোর করছি না ভবিষ্যতে করবো , তোমার অনুমতি ছাড়া তোমাকে স্পর্শ পর্যন্ত করবো না আমি। আজকে যখন এই নিয়ে কথা উঠলো , অরুণ আবার এধরণের ইচ্ছা প্রকাশ করলো , তখন আমার মনে হলো আমার পজিশন টা তোমাকে স্পষ্ট করে দেওয়াটাই শ্রেয়। বাকি এখন যা কিছু সব তোমার উপর নির্ভর করছে। তুমি যা বলবে সেটাই শেষ কথা, তোমার সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেবো। "
মনীষা গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়েগেলো। তার আগে সে রবিকে সেখান থেকে যেতে বললো , কারণ সে একটু একা থাকতে চাইছিলো, একান্তে ভাবতে চাইছিলো সবকিছু নিয়ে। মনীষার কথা মতো রবি নিজের ঘরে ফিরে গেলো যেখানে পরী পড়াশুনো করছিলো। এখন মনীষা একা ব্যালকনিতে ভিজে জামাকাপড় গুলো হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গি ভাবে লিপ্ত হয়ে পড়া দুই পুরুষের বলা কথা গুলো সে মস্তিষ্কে রিওয়াইন্ড করে করে বিশ্লেষণ করছিলো মনে মনে।
এই ভিজে কাপড়গুলো হয়তো আজকে আর শুকোবে না। মেঘ ঘনিয়ে এসছে , আকাশ কালো , ঢাক ঢাক গুড় গুড় আওয়াজ হচ্ছে , বজ্রপাতের আগে যেরকম হয়। আমি কি পরিবেশের আবহাওয়ার কথা বলছি নাকি মনীষার মনের আবহাওয়ার কথা ??

[/HIDE]


to be continued........
 
পর্ব ১০

সেদিন রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মনীষা অরুণের ঘরে গেলো ওর সাথে শেষবারের মতো বোঝাপড়া করতে। অরুণকে অন্তিম বারের মতো বোঝাতে ও জিজ্ঞেস করতে যে অরুণ ওকে যা করার আদেশ দিয়েছে , সেটা ভেবেচিন্তে বলেছে তো ? এরপর কিন্তু আর ফেরার কোনো রাস্তা থাকবে না !
[HIDE]
- "অরুণ , তুমি দুপুরে যে শর্তটা আমায় দিয়েছো , সেটা নিয়ে একবারও ভেবে দেখেছো যে এর পরিণাম কতোটা মারাত্মক হতে পারে ! তুমি সহ্য করতে পারবে সেটা ? দুপুরে তুমি প্রথমে আমাকে নিজের কাছে ফেরাতে চাইলে। আমি কেন ফিরতে পারবো না সেটা সম্পূর্ণভাবে তোমাকে বুঝিয়ে বললাম। কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে আমি রবির হয়ে যাবো ? তাও আবার তুমি জীবিত থাকতে ! সেটা কখনো সম্ভব ?? আমি তোমাকে ভালোবাসি অরুণ , আর আমি সবসময়ে তোমারই থাকবো। কিন্তু এখনকার এই পিকিউলিয়ার পরিস্থিতিতে আমার পক্ষে আগের মতো করে তোমার কাছে পূর্ণরূপে ফিরে আসা সম্ভব নয় , সেটা তুমি জানো। তাও তুমি আমাকে ভুল বুঝে এরকম অভিমান করে আমাকে এই অদ্ভুত শর্ত দিয়ে বসলে , কেন ??"

- "আমি তোমার উপর কোনো অভিমান করিনি মনীষা। আমি যা বলেছি খুব ভেবে চিন্তেই বলেছি। তুমি যদি আমার না হতে পারো , তাহলে রবির হয়ে যাও। এভাবে দোটানার মধ্যে নিজেকে রেখো না আর। পূর্ণভাবে আমার কাছে ফিরে আসতে পারবে না, তাহলে পূর্ণভাবে রবির কাছে তো চলে যেতেই পারো। এভাবে পেন্ডুলামের মতো ঝুলে থেকো না আমাদের দুজনের মধ্যে , তাতে তোমারই মানসিক অশান্তি বাড়বে বৈ কমবে না। "

পরী তখনও ঘুমোইনি। সরল মনে সে হঠাৎ তার মা কে জিজ্ঞেস করে বসলো , "মা , আজকে কি তুমি আমাদের সাথে শোবে ?"

মনীষা তখন করুণ ভাবে জবাব দিলো , "নাহঃ , সোনা , আজ আর তা হওয়ার নয়। হয়তো আর কোনোদিনই তা হবে না। তোমার বাবা-ই ফেরার সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে।"

- "কোথায় বন্ধ করেছে ? তুমি কি stupid , ওই তো ঘরের দরজা খোলাই রয়েছে , সেখান দিয়েই তো তুমি ঘরের মধ্যে ঢুকে এলে। "

মনীষা গলা চাপা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছিল। সে তার মেয়ের এই সরল কথা গুলোর কি জবাব দেবে তা বুঝেই পাচ্ছিলো না। সে পরীর কাছে এসে পরীকে আদর করে বললো , "হ্যাঁ সোনা , তুমি ঠিকই বলেছো। তোমার মা খুব stupid একটা মেয়ে। নাহলে তোমার মা এরকম সিচুয়েশনে কখনো পড়ে নাকি। আসলে তোমার মা তো সবসময়ে অন্যের ইচ্ছেটা কেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে এসেছে , গুড গার্ল হয়ে সব কথা মেনে নিয়েছে , তাই তোমার মা এতো কষ্ট পাচ্ছে। "

এই বলে মনীষা কেঁদে ফেললো। ছোট্ট পরী নিজের মায়ের চোখের জল মুছতে মুছতে বললো , "মা , তুমি তো বলেছো সবসময়ে গুড গার্ল হয়ে থাকতে , সবার কথা মেনে চলতে , তাহলে তুমি গুড গার্ল হয়েও এতো কাঁদছো কেন ? গুড গার্ল হওয়াটা কি খারাপ ?"

মনীষা নিজেকে সামলে নিয়ে বললো , "নাহঃ সোনা , গুড গার্ল হওয়াটা একদমই খারাপ নয়। আসলে তোমার মায়ের সমস্যাটা অন্য জায়গায় ,
তুমি তো এখন খুব ছোট তাই এসব তুমি বুঝবে না। কে জানে পরবর্তীতে হয়তো আমার এসব বাধ্য হয়ে করা অনৈতিক কাজ গুলোর জন্য তুমি আমাকে দোষারোপ করবে , ঘৃণা করবে নিজের মা কে , কিন্তু একদিন ঠিক আসবে যেদিন তুমি সব বুঝতে পারবে। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করবো , তোমার জীবনটা যেন আমার মতো চক্রব্যূহে ঘেরা না হয়।"

কথাগুলো সে পরীকে বলছিলো ঠিকই, কিন্তু শোনাচ্ছিলো অরুণকে। অরুণ মাথা নিচু করে চুপ করে রইলো। বেচারী শিশুটি বুঝলোই না ওর মা ঠিক কি বলতে চাইলো ওকে। শুধু এইটুকু বুঝলো যে আজকেও তার মা রবি আংকেলের সাথে থাকবে , রবি আংকেল কে "ঘুম পাড়ানোর জন্য "। কারণ তার মা তাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে তার ঘরের ও মনের দরজা তার মায়ের জন্য খোলা থাকলেও তার "Stupid মা" আজকে তার সাথে ঘুমোতে পারবে না। কারণ তার বাবা এক অদৃশ্য "নো এন্ট্রি" বোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে তার মায়ের সামনে।

বেশ কিছুক্ষণ ঘরের মধ্যে একটা অদ্ভুত নিঃস্তব্ধতা ছেয়ে রইলো। মনীষা আশা করছিলো অন্তত একবার অরুণ তাকে আটকানোর চেষ্টা করবে। নিজের ভুলটা বুঝে নিয়ে মনীষাকে এই পাপ কাজ করা থেকে বিরত রাখবে। তাই মনীষা চাতক পাখির মতো অরুণের দিকে চেয়ে রইলো , একটা শেষ আশা নিয়ে।

মনীষা তখন বারংবার অরুণকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো যে সে কি সত্যি চায় তার মনীষা অন্য এক পুরুষের সাথে স্ত্রী-সুলভ আচরণ করুক ?? কিন্তু অরুণের কাছ থেকে আর কোনো মৌখিক প্রতিক্রিয়া না পেয়ে মনীষা ধরে নিতে বাধ্য হলো যে , "মৌনম সম্মতি লক্ষণম"। অরুণ চায় মনীষা রবির হয়ে যাক , সারাজীবনের মতো।

সে খুব ক্ষুব্ধ হলো অরুণের প্রতি। যাকে সে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো সেই অরুণ আজ মৌনভাবে মেনে নিচ্ছিলো তার অন্য কারোর হয়ে যাওয়াটা কে। তাই সে রাগের মাথায় তক্ষুনি অরুণের সামনে রবিকে ডাকলো। মনীষার ডাক শুনে রবি তৎক্ষণাৎ হাজির। মনীষা তখন ইচ্ছে করে অরুণের সামনে রবিকে বললো , "রবি, চলো। আজকের রাতটা তোমার জীবনের সেরা রাত হতে চলেছে। কথা দিচ্ছি , তোমাকে আমি আজ ঘুমোতে দেবো না। "

দাঁতে দাঁত চেপে এই কথা গুলো সে বললো রবিকে। রাগে তার বুদ্ধি লোপ পেয়েছিলো। তার তখন খেয়াল ছিলোনা যে তার ছোট্ট মেয়েও সেখানে উপস্থিত রয়েছে। পরীর সামনেই পরীর মা রবি আংকেল এর হাত শক্ত করে চেপে ধরে ঘর থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো। পেছন থেকে পরী ডাকলো , "মা। ...., তুমি যাচ্ছো?? "

মেয়ের আওয়াজ শুনে একবারের জন্য মনীষার পা থমকে গেলো। সে একবার পেছন ফিরে নিজের মেয়ের দিকে চেয়ে তাকালো , আর বললো , "হ্যাঁ সোনা , রবি আংকেল এর সাথে আজ আমার কিছু জরুরী কাজ রয়েছে। সেই কাজটা তোমার বাবা-ই আমাকে দিয়েছে। তাই আজকে সারারাত রবি আংকেল এর সাথে একটা জরুরী কাজ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকবো। তুমি লক্ষী মেয়ের মতো শুয়ে পড়ো , কেমন। কাল সকালে আবার দেখা হবে। আমি আসি....। "

এই বলে মনীষা আর পেছন ফিরে তাকালো না। তার চোখ দিয়ে দু'ফোটা জল বেড়িয়ে এলো তবুও সে নিজের পা কে থামালো না। রবিকে নিয়ে সটান ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। একবারের জন্যও আর অরুণের দিকে তাকিয়ে নিজেকে দূর্বল করলো না সে। মনীষা এভাবেই অরুণের ঘর তথা জীবন ছেড়ে রবির সাথে নতুন ঘর ও জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছিলো , তাই আর পেছন ফিরে তাকিয়ে মায়া বাড়িয়ে কোনো লাভ ছিলো না।

রবিকে নিয়ে সে নিজের ঘরে পৌঁছে সঙ্গে সঙ্গে দরজা ভেতর দিয়ে বন্ধ করে দিলো। রবি তাকে কিছু বলার চেষ্টা করছিলো। হয়তো সে মনীষাকে বোঝাতে চাইছিলো যে মনীষা যেন কোনোরকমের হটকারী সিদ্ধান্ত না নেয়, যার জন্য তাকে পরের দিন সকালে পছতাতে হয় , অনুশোচনায় মরে যেতে ইচ্ছে করে।

কিন্তু মনীষা এখন আর কোনো কথা বলা বা শোনার মতো অবস্থায় ছিলো না। অনেক বলেছে , অনেক সবাইকে বুঝিয়েছে সে, নিজের মনের অবস্থার কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয় , কেউ বোঝেনি তাকে। সবাই শুধু নিজের পয়েন্ট অফ ভিউটাই সামনে রেখে এগিয়েছে। তাই আজকে আর সে কারোর কোনো কথার কোনো কৈফিয়ত দেবে না। এখন শুধু সে যা ইচ্ছে তাই করবে , কারোর কথা না শুনে , বেপরোয়া হয়ে। মনীষা এখন না কারোর স্ত্রী , না কারোর মা। সে এখন দায়মুক্ত , নিজেই নিজের মর্জির মালিক। তাই এখন শুধু হবে অ্যাকশন , ধুন্ধুমার অ্যাকশন।

[/HIDE]


তৈরি থাকুন। ...........
 
পর্ব = ১১
দরজা বন্ধ করেই মনীষা অতো সাত পাঁচ না ভেবে রবিকে জড়িয়ে ধরলো। ধরে নিজে থেকেই রবিকে এলোপাথাড়ি চুমু খেতে শুরু করলো। রবি তো অবাক , মনীষার এই নতুন পরিবর্তিত রূপ দেখে ! মনীষা আজ শাড়ির বদলে নাইটি পড়েছিল। হয়তো মানসিকভাবে সে প্রস্তুত ছিল , আজ হয় এসপার নয় ওসপার। হয় সে অরুণের চিরসাথী হয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দেবে , নাহলে সারাজীবনের জন্য অরুণকে ভুলে রবিকে আপন করে নেবে। তার কপালে দ্বিতীয় পরিণামটাই লেখা হলো।
[HIDE]
রবির পরনে ছিল একটা সাদা টি-শার্ট , আর নীল রঙের ট্র্যাকস্যুট। মনীষা রবিকে নিজের বজ্রআঁটুনি দিয়ে জাপটে ধরেছিলো। রবির পিঠে নিজের হাত রেখে রবির টিশার্টটা-কে খামচে ধরেছিলো। ঠিক যেমন কোনো বাঘিনী তার শিকারকে জড়িয়ে ধরে। হ্যাঁ , আজকে অরুণের ময়ূরপক্ষীর ন্যায়ে কোমল মনীষা অরুণেরই বন্ধুর সামনে উত্তেজনার পারদ তুলে তেজস্বীনি বাঘিনী হয়ে উঠেছিল। ঘরোয়া আদর্শ বউয়ের খোলস ছেড়ে মনীষা এখন যৌনতা উপভোগকারী ডার্কসাইটের হর্নি নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিল।

রবি বারবার মনীষাকে বোঝানোর চেষ্টা করছিলো। আরেকবার ভেবে দেখার পরামর্শ দিচ্ছিলো , হিট অফ দা মোমেন্টে সে যেন কোনো ভুল পদক্ষেপ না নেয়। কিন্তু মনীষা কোনো কথা শোনার মতো পরিস্থিতিতে ছিলো না। তার মধ্যে এখন আগুন জ্বলছিল। যে স্বামীকে সে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতো সেই স্বামী তাকে একপ্রকার প্রত্যাখ্যান করেছে , তাকে তার বন্ধুর হাতে সোঁপে দিয়েছে। এই অপমানের জ্বালা যে এতো সহজে মেটবার নয় , সেটা রবি বুঝতে পারছিলো না। নারী যখন বেপরোয়া হয়ে পড়ে , তখন যুগে যুগে প্রলয়ের সৃষ্টি হয় , ইতিহাস তার সাক্ষী আছে।

মনীষা বেপরোয়া ভাবে রবির কলার ধরে এদিক ওদিক ওকে চুমু খাচ্ছিলো। মনীষার এই খামখেয়ালীপনাতে রবিও আস্তে আস্তে উত্তেজিত হয়ে পড়ছিলো। পুরুষমানুষ বলে কথা , আর কতক্ষণই বা নিজেকে সংবরণ করে রাখতে পারতো , যখন উল্টো দিক দিয়ে ডানা কাটা পরীর মতো একটি মেয়ে তাকে চরমতরভাবে সিডিউস করে যাচ্ছে। তাই রবিও ডুব দিলো যৌনতার সমুদ্রে। আর সে বোঝানোর চেষ্টা করলো না মনীষাকে , ঠিক বা ভুলের বিচার করার সে কে ? পাপ পুণ্যের অংক নাহয় সে পরে কষবে , এখনকার মতো এটাই তার কাছে পরম সুযোগ , হাতছাড়া করা উচিত হবে না। তাই রবিও মনীষাকে এবার জড়িয়ে ধরলো। পরস্পরের প্রতি চুম্বন বিনিময় করতে লাগলো।

৫ ফুট ৫ ইঞ্চির উচ্চতা , ৩৬C ৩৪ ৩৮ এর প্রাণঘাতিকা ভূগোল , এবং নেশা ধরানো চোখ , এই সকল কিছুর সমষ্টিগত রূপের নাম হলো , মনীষা। অরুণের বিয়ে করা এই সুশীলা নারীকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়তো গোটা সমাজই । মনীষাকে এক ঝলক দেখার জন্য, ওর ছোঁয়া পাওয়ার জন্য না জানি কতো অবিবাহীত পুরুষপ্রাণ মনে মনে আশায় দিন গোণে। কিন্তু সেই সৌভাগ্য আজ পর্যন্ত শুধু অরুণের দখলে ছিল। আজ রবির ভাগ্যেও সেই শিকে ছিঁড়েছিলো। রবির মন সুরা পানে নিমজ্জিত ছিল। বোতলের সুরা নয় , যেই সুরা মনীষা নিজের ঠোঁটের ভেতরে রবির মুখ ঢুকিয়ে লালামিশ্রিত চুম্বনের ন্যায় রবিকে পান করাচ্ছিল সেই সুরার কথা বলা হচ্ছে।

হঠাৎ বাড়িতে লোডশেডিং হয়ে গেলো। যাহঃ ! সব অন্ধকার ! কিন্তু তাতে কি। রবি ও মনীষার সেই দিকে কোনো খেয়ালই ছিলোনা। তাদের কাছে এখন দিন রাত , রোদ জল ঝড় বৃষ্টি , যা কিছুই হয়ে যাক , কিছুতেই কিছু যায় আসবেনা, লোডশেডিং হয়ে আলো চলে যাওয়া তো খুব তুচ্ছ ব্যাপার। তারা যেন এখন এই পৃথিবীতেই ছিলোনা। যৌন উত্তেজনার পারদকে জ্বালানি বানিয়ে কল্পনার রকেটে চরে তারা দুজনে শত আলোকবর্ষ পার করে ফেলেছিলো। তাদের নীতিবাদী আত্মা তাদের শরীরের আগুনে পুড়ে ছাই হয়েগেছিলো। এখন তারা শুধুই কামদেবের আশীর্বাদধন্য যৌনপিপাসী দুটি নর-নারী, যারা একে অপরের শরীর উপভোগ করতে অতিশয় আকুল।

[Image: 4C-Gif.gif]
[Image: 6-Gif.gif]


লোডশেডিং এর অন্ধকার নিয়তির দ্বারা ওদের দুজনকে আরো কাছাকাছি আনার একটা গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। এই অন্ধকারে তারা নিজেদের লজ্জা দূর করে আরো কাছে আসার সুযোগ পেয়েছিলো। প্রথমবার রবি মনীষার এই শরীরটা কে এতো কাছ থেকে অনুভব করতে পাচ্ছিলো। যেন মনে হচ্ছিলো মনীষার শরীরটা রবির মধ্যে মিশে গ্যাছে। তাদের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসও বাতাসে একে অপরের সাথে মিশে যাচ্ছিলো।

ওদিকে অরুণ এতোক্ষণ ভারী মন নিয়ে নিজের মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছিলো। সে জানে আজ রাতে ওই ঘরে মনীষা ও রাহুলের মধ্যে কি হতে চলেছে। কিন্তু হঠাৎ করে আসা লোডশেডিং পরীর প্রায় এসে যাওয়া ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছিলো। সে তখন জেদ করতে লাগলো মায়ের কাছে যাওয়ার।

কিন্তু অরুণ কি করে ওকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবে ? ওর মা-ই তো ওকে বলেছে আজকে সারারাত সে রবি আংকেলের সাথে এক "বিশেষ কাজে " ব্যস্ত থাকবে। সেটাই অরুণ বারবার ছোট্ট পরীকে বোঝাচ্ছিলো , কিন্তু পরী বুঝতেই চাইছিলো না , শিশু মন হলে যা হয় , একবার বেঁকে বসলে বোঝানো পিতৃপুরুষেরও সাদ্ধি হয়ে ওঠেনা।

না পেরে অরুণ না চাইতেও মনীষার ঘরের দিকে রওনা দিলো , মনীষাকে "ডিস্টার্ব" করার জন্য। ঘরের ভেতরে অন্ধকারে রবি ও মনীষা গভীর চুম্বনে মত্ত ছিল। তারা একে অপরের পোশাক ধরে টান মেরে খুলতেই যাচ্ছিলো কি তখুনি দরজায় কড়া পড়লো , "ঠক ঠক। ....."

দুজনে চমকে উঠলো , যেন সেই পুড়ে যাওয়া দুটি নীতিবাদী আত্মা পুনর্জীবিত হলো। মুহূর্তের মধ্যে আকর্ষণ বিন্দু বিকর্ষণ বিন্দুতে পরিণত হয়ে একে অপরকে একে অপরের থেকে আলাদা করে দিলো। দুজনেরই অবস্থা একদম কাহিল ছিল , মনে হচ্ছিলো কোনো বৃহৎ যুদ্ধে বিধস্ত দুই দেহ জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে বুকের ভেতর দম ভরছে । ঘাম ঝরছিল শরীর থেকে , চুল এলো মেলো , গায়ের জামা অর্ধেক ওঠানো , যেটা আগেই বললাম তারা একে অপরের পোশাক খুলতেই যাচ্ছিলো কি দরজায় নক করার শব্দ তাদের কানে এসে পৌঁছলো।

মনীষা যেমন তেমন করে নিজেকে সামলে দরজা খুললো , দেখে অরুণ দাঁড়িয়ে। .......

-- "তুমি ? এখন ? এখানে ?"

একটি শব্দের তিনটি প্রশ্ন করলো মনীষা অরুণকে। অরুণ মনীষার এলোমেলো অগোছালো রূপ দেখে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে কেন মনীষার এরকম অপ্রস্তুত অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। বুঝলেও মন যে তখন অরুণের মানতে চাইছিলো না , যে মনীষা কেবলমাত্র তার ছিল , সেই মনীষাকে তার নিজের ঘরে এক অন্য পুরুষের সাথে এরকম অগোছালো অবস্থায় দেখতে কোনো স্বামীরই বা ভালো লাগে। ওহঃ , আমি তো ভুলেই গেছিলাম , অরুণ তো এখন মনীষার স্বামী নয় , প্রাক্তন স্বামী , হয়তো মনীষাও সেটাই মেনে নিয়েছিল।

"কি হলো , কিছু বলো ? কি হয়েছে ?" , মনীষার ফের প্রশ্নবাণে অরুণের গভীর ভাবনা কেটে চেতনা ফিরলো। অরুণ বললো , "আসলে পরীর ঘুম আসছিলো না , লোডশেডিং হয়েগেছে তো , তাই এই অন্ধকারে খানিকটা ভয় পেয়ে সে তোমাকে চাইছে। "

মনীষা কয়েক সেকেন্ড ভেবে রবির দিকে পিছন ফিরে তাকালো। রবি ইশারা করে ওকে অরুণের সাথে পরীর কাছে যেতে বললো। তারপর মনীষা মুখ ঘুরিয়ে অরুণের দিকে তাকিয়ে অরুণকে বললো , "ঠিক আছে , তুমি যাও। আমি আসছি। "

অরুণ চুপচাপ সেখান থেকে ফিরে এলো। মায়ের আসার আশ্বাস মেয়ে কে দিলো। মনে মনে ভাবলো যে এই কিছু মুহূর্তের মধ্যে মনীষা কতোটা বদলে গ্যাছে। ওর কথার ভঙ্গিমাটাও কিরকম একটু অশ্রদ্ধাশীল হয়েছে তার প্রতি। সে আরো ভাবলো যে মনীষার এখন নিজের মেয়েকে দেখতে আসতেও রবির নিয়মমাফিক অনুমতি লাগছে ? এই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে মনীষা এতোটা অধিকার রবিকে দিয়ে বসেছে ![/JUSTIFY]
[/HIDE]

to be continued.................
 
পর্ব ১২

মনীষা কয়েক সেকেন্ড ভেবে রবির দিকে পিছন ফিরে তাকালো। রবি ইশারা করে ওকে অরুণের সাথে পরীর কাছে যেতে বললো। তারপর মনীষা মুখ ঘুরিয়ে অরুণের দিকে তাকিয়ে অরুণকে বললো , "ঠিক আছে , তুমি যাও। আমি আসছি। "
[HIDE]
অরুণ চুপচাপ সেখান থেকে ফিরে এলো। মায়ের আসার আশ্বাস মেয়ে কে দিলো। মনে মনে ভাবলো যে এই কিছু মুহূর্তের মধ্যে মনীষা কতোটা বদলে গ্যাছে। ওর কথার ভঙ্গিমাটাও কিরকম একটু অশ্রদ্ধাশীল হয়েছে তার প্রতি। সে আরো ভাবলো যে মনীষার এখন নিজের মেয়েকে দেখতে আসতেও রবির নিয়মমাফিক অনুমতি লাগছে ? এই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে মনীষা এতোটা অধিকার রবিকে দিয়ে বসেছে !

মনীষা ঘরে এলো পরীকে দেখতে। পরী ওর মা কে দেখা মাত্রই ছুটে মায়ের কোলে গিয়ে উঠলো। মনীষা আদর করে নিজের মেয়েকে বললো , "কি হয়েছে সোনা, শুনলাম তুমি ঘুমোওনি ! অন্ধকারে ভয় লাগছে ? তুমি না আমার ব্রেভ গার্ল। তোমাকে আজকে বললাম না আমার কিছু কাজ আছে রবি আংকেলের সাথে , আমাকে ডিস্টার্ব করো না , তাও তুমি কথা শুনলে না ! ভেরি ব্যাড ম্যানার্স ", মনীষা কিছুটা চোখ পাকিয়ে রাগের ভঙ্গিমা করে বললো।

এই কথা গুলো শুনে অরুণের বুক ফেটে যাচ্ছিলো। সে তো জানে কোন জরুরি কাজের কথা মনীষা বলছে নিজের মেয়ে কে। তাই অরুণ না বলে থাকতে পারলো না , "তোমার সেই জরুরি কাজটা কি তোমার মেয়ের চেয়েও বেশি ইম্পরট্যান্ট ?"

মনীষা কোনো উত্তর না দিয়ে পরীকে মাথায় হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়াতে লাগলো। ভাব এমন যেন ওই ঘরে সে এবং তার মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। অরুণকে সিম্পলি ইগনোর করলো। কিন্তু অরুণ আবার নিজের প্রশ্নটাকে রিপিট করে মনীষার সামনে রাখলো। তখন মনীষা বললো , "এই জরুরি কাজটা করতে তুমিই বলেছিলে , সেটা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে ?"

মনীষার পাল্টা প্রশ্নে অরুণ চুপ করে গেলো। সত্যিই তো অরুণের কাছে এর কোনো উত্তর ছিলোনা। আজ ওদের সম্পর্কে যে এরকম ডিজাস্টার নেমে এসছে তা তো শুধু অরুণের জন্যই , সেটা তো অরুণ অস্বীকার করতে পারেনা। মনীষাও খুব ভালোভাবে জানতো অরুণের কাছে এর কোনো জবাব নেই , তাই মনীষা প্রথমেই অরুণের প্রশ্নটাকে অ্যাভয়েড করতে চাইছিলো , কিন্তু অরুণ করতে দেয়নি , সে আবার তাকে একই প্রশ্ন করে ওকে বিব্রত করেছে এবং অপ্রিয় সত্য কথাটা বলতে বাধ্য করেছে।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে অরুণ আবার বললো , "তা নাহয় মানলাম , আমি তোমাকে এসব করতে বলেছি, বেশ। কিন্তু আমি তার জন্য আমাদের মেয়েকে গুরুত্বহীন করে দিতে তোমাকে বলিনি। "

"কেন ? কোন দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজটা আমি করলাম ? তুমি যখন ডাকলে তখুনি তো চলে এলাম। "

"হ্যাঁ , কিন্তু সেটা রবির পারমিশন নিয়ে। নিজের মেয়ের কাছে আসবে তার জন্যও তোমার ওর অনুমতির দরকার। "

"এটাকে ফর্মালিটি বলে অরুণ , পাতি সৌজন্যতা। এতোক্ষণ ওই ঘরে আমি ওর সাথে ছিলাম , আর তুমি ভালো করেই জানো আমরা কি করছিলাম (এই কথাটা মনীষা একটু আটকে আটকে হেজিটেট করে বললো ), তাই হঠাৎ করে তুমি এসে ডাকলে রবি তো একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়বেই। তাই ওকে জানিয়ে আমি এঘরে এলাম , তাতে ভুলটা কি করেছি ? "

-- "বাহঃ , মনীষা এখন আমার সামনে রবিকে ডিফেন্ড করছে ?", ভেবে মনে মনে কষ্ট পেলো অরুণ কিন্তু মুখে কিছু বললো না।

এরপর অরুণ চুপ করে রইলো। অরুণকে চুপ থাকতে দেখে মনীষাও পরীকে ঘুম পাড়াতে মনোযোগ দিলো। পরীকে ঘুম পাড়িয়ে ওকে ভালোমতো বিছানায় শুইয়ে দিয়ে মনীষা অরুণের বিছানা ছেড়ে উঠলো। ফের সে রবির কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। যাবার আগে অরুণকে শুধু বললো , "আমি আসছি। "

অরুণ কোনো জবাব দিলো না। মনীষাও ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেলো , সাথে অরুণের জীবন থেকেও।

নিজের ঘরে পৌঁছে দেখলো রবি বিছানায় বসে রয়েছে। হয়তো ওর জন্যই অপেক্ষারত ছিল। রবিকে এভাবে বসে থাকতে দেখে হালকা হাসি মুখে নিয়ে মনীষা বললো , "সরি , আসলে পরীটা অন্ধকারে একদম ঘুমোতে পারেনা। তাই ..... "

"ওহঃ , কাম অন মনীষা , নো নিড টু গিভ এনি এক্সপ্লেনেশন , বিশেষ করে বিষয়টা যখন পরীকে নিয়ে। তুমি ভুলে যাচ্ছ লিগ্যালি কিন্তু আমিই এখন ওর বাবা , তাই আমিই তোমাকে জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম পরী ঘুমিয়েছে কিনা , নাহলে ওকে এই ঘরে নিয়ে আসতে পারো ঘুম পাড়ানোর জন্য। আর তুমি উল্টে আমাকেই সরি বলছো তাও আবার পরীকে ঘুম পারাতে যাওয়ার জন্য !"

রবির এই দায়িত্বশালী কথা শুনে মনীষার মনে রবিকে নিয়ে আরো সম্মান বেড়ে গেলো , আর হয়তো মনীষার অজান্তে ওর মনের কোনো এক গভীর কোণে রবির প্রতি খানিকটা ভালোবাসারও উদয় হলো। ঠিক সেই সময়ে জীবনে নতুন আলো আসার মতো বাড়িতেও ফের কারেন্ট চলে এলো। অন্ধকার ঘরে দপ করে এল.ই.ডি বাল্বটা জ্বলে উঠলো। এবার মনীষা ও রবি পরস্পরকে স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছিলো , কিন্তু এখন ওদের মধ্যে আর কোনো জটিলতা ছিলোনা , কখন যেন হাওয়ায় তা কোপ্পুর এর মতো উবে গেছিলো। মুখে কিছু না বললেও তাদের চোখ একে অপরের সাথে কথা বলছিলো। তারা আবার তাদের নীতিবাদী আত্মাটা কে পোড়াতে লাগলো , পুড়িয়ে ছাই করে দিতে চাইলো , এবার সেটা অনিচ্ছাকৃতভাবে নয়।

মনীষা পেছনে ঘুরে দরজাটা বন্ধ করলো , করে ছিটকানি দিয়ে দিলো। নিজে সুইচ বোর্ডের কাছে গিয়ে ঘরের আলো নিভিয়ে দিলো। লোডশেডিং টা থাকলেই ভালো হতো , আদারওয়াইস কৃত্রিমভাবে সুইচ অফ করে লোডশেডিং করে দিতে মনীষা দ্বিতীয়বার ভাবলো না।

ঘর অন্ধকার , রবি বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। এরপর মনীষা যা করলো তা গোটা বিশ্বব্রহ্মান্ডকে চমকে দেওয়ার মতো ছিল। রবি হতচকিত হয়েগেলো মনীষার এই বোল্ড মুভ দেখে।

[Image: UPDATE-12-4.jpg]

মনীষা নিজে থেকে নিজের নাইটিটা রবির সামনে খুলে ফেললো ! রবির সামনে এখন মনীষা নামক এক অপরূপ নারী শুধু তার ব্রা ও প্যান্টিতে পরিহীত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রবি এ দৃশ্য প্রথমবার দেখছিলো। তার স্বপ্নপরী মনীষাকে এতো স্বল্প পোশাকে সে আগে কোনোদিনও দেখেনি। মনীষাকে দেখেই রবির তখন দাঁড়িয়ে গেছিলো , পিনাস (পুং-যৌনাঙ্গ)। রবি কি করবে , কোথা থেকে শুরু করবে , সব ওর মাথায় তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু রবিকে সেভাবে কোনো উদ্যোগ নিতেই হলোনা। কারণ মনীষা এক পা এক পা করে রবির দিকে এগিয়ে আসছিলো , আর রবির ততোই হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছিলো।

মনীষাকে নিজের নিকট এগিয়ে আসতে দেখে রবিও ট্র্যাকস্যুট এর ফিতের গিঁট খুলে হালকা হলো , যাতে প্যান্টের ভেতরকার বড়ো অ্যানাকোন্ডাটা একটু স্পেস পায়। মনীষা এগিয়ে এসে রবির দুটি কাঁধে হাত রেখে তাকে স্পর্শ করলো , রবির শিরায় শিরায় যেন কারেন্ট দৌড়ে গেলো। রবির কাঁধে হাত রেখে মনীষা রবিকে বিছানার ধারে বসালো। তারপর সে নিজে রবির কোলে উঠে বসলো। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটলো , রবির ধৈর্যের তপস্যা সফল হলো।

[Image: UPDATE-12-Gif-MONISHA-in-ROBI-s-Lap.gif]

মনীষা আলতো করে রবির গালকে নিজের দিকে টেনে রবিকে চুমু খেতে লাগলো। রবি নিজের হাত দুটো মনীষার কোমড়ের কাছে নিয়ে গিয়ে মনীষাকে জড়িয়ে ধরলো। মনীষা শুধু ব্রা ও প্যান্টিতে ছিল বলে ওর বেশিরভাগ শরীরের অংশ অনাবৃত ছিল। তাই এই জড়িয়ে ধরা রবির কাছে অনেক বেশি রোমাঞ্চকর ছিল। সে মনীষার অর্ধনগ্ন কোমল তুলতুলে শরীরটাতে নিজের হাত বোলাতে পারছিলো। কখনো চেপে চিমটি কেটে ফেলছিলো। সঙ্গে সঙ্গে মনীষা "আউউচ্ছ্হঃ" করে নিজের স্পর্শকাতর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলো।

এইভাবে রবি মনীষার মাখনের মতো শরীরটাকে চটকাচ্ছিল। আর ততোই মনীষা "উউহহহ্হঃ আঃহ্হ্হঃ " করে নিজের যৌন যন্ত্রণা প্রকাশ করছিলো। রবি মনীষার শরীরটাকে আটার মতো নিজের হাতে ধরে চেপে ও চটকে যাচ্ছিলো। এর তীব্রতা ধীরে ধীরে যতো বাড়তে লাগলো ততোই মনীষার শিৎকার তীব্রতর হচ্ছিলো। তাই রবি মনীষার এই শিৎকারের আওয়াজ আটকাতে মনীষার মুখে নিজের মুখ ঢুকিয়ে মনীষার মুখ বন্ধ করে দিলো। তারপর চরম চোষণ শুরু হলো। ভ্যাক্যুম ক্লিনার এর মতো রবি নিজের মুখ দিয়ে মনীষার মুখের ভেতরের সব লালা শুষে নিচ্ছিলো। দুজনের জিহ্বার লালারস মিলে একাকার হয়ে যাচ্ছিলো।

রবি বিছানার ধারে বসেছিল , মনীষা ওর কোলে। একে অপরকে করতে থাকা চরম চুমাচাটির মোশনে (motion) দুজনেই দুলছিলো। মনে হচ্ছিলো কোনো এক সফরে বেড়িয়েছে তারা , যে সফরে পরস্পর পরস্পরের ভরপুর সাথ দিয়ে দুজনেই ষোলোআনা মজা তুলছিলো। এই নির্জন রাতের ফাঁকা ঘরের ফায়দা রবি সুদে আসলে তুলছিলো। মনীষার গোটা শরীরে রবি নিজের কবজা জমাচ্ছিলো।

রবির দশা খেলনার দোকানের সেই বাচ্চাটার মতো হয়েগেছিলো যে দোকানে ঢুকলেই বুঝতে পারেনা কোন হাত দিয়ে কি ধরবে। কোন খেলনাটাকে পারবে , কোন খেলনাটাকে আঁকড়ে ধরবে , বুঝে উঠতে পারে না। রবিও ঠিক সেইভাবে মনীষার শরীরের কোন অংশটাকে আঁচড়াবে , কোন জায়গাটা দাঁত দিয়ে ছিড়ে খাবে , কোন জায়গাটা মাখনের মতো চটকাবে , ভেবে পাচ্ছিলোনা। সে তাই মনীষার শরীরটাকে সাপের মতো জড়িয়ে ধরে নিজের খামখেয়ালিপনা করতে লাগলো। না জানে কতদিনের সুপ্ত বাসনা রবির আজকে এসে পূরণ হচ্ছিলো।

সময় যেন থমকে গেছিলো। আর তারই মধ্যে রবি পাগলের মতো মনীষার গায়ে এখানে ওখানে নিজের হাত বুলিয়ে এক অমৃতসুখের প্রাপ্তি ঘটাচ্ছিলো। এইভাবেই হাত ঘোরাতে ঘোরাতে রবি এসে পৌঁছলো মনীষার ব্রা স্ট্র্যাপের হুকের কাছে। সে এবার আসল গুপ্তধনের চাবিকাঠি খুঁজে পেয়েছিলো। এই ব্রা-ই তো মনীষার শরীরের সবচেয়ে বড়ো দুটি গুপ্তধনকে ঢেকে রেখেছিলো। এই ব্রা এর হুকটা পেছন থেকে খুললেই বেড়িয়ে আসবে পাহাড়ের টিলার মতো ডিম্বাকৃতির দুটো বড়ো খাজনার ভান্ডার , যেটা টিপলে বোঁটা দিয়ে দুধের সাগর বইতে শুরু করবে।

রবি আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে ব্রা এর হুকটি হাত দিয়ে চেপে খুলে দিলো। মনীষার বুকটা যেন হঠাৎ করে হাফ ইঞ্চি বেড়ে গেলো , ব্রা এর বজ্রআঁটুনি বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়ার পর। রবি আরো বেশি উতলা হয়ে উঠছিলো। তাই সে বেশি দেরী না করে নিজের হাত দুটি কে সামনে এনে ব্রা এর কাপ দুটোর উপর রাখলো। তারপর সেই ব্রা-কাপ দুটির নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গের মতো রাস্তা দিয়ে নিজের হাত দুটোকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো। ঢোকানো ইস্তক রবি মনীষার মাই দুটিকে চেপে ধরলো। মনীষার তখন শুধু মুখ থেকে নয় বরং ওর মনের ভেতরের গভীর থেকে "আঃহ্হ্হ্হঃ" শব্দটা বেরিয়ে এলো।

রবি আর অপেক্ষা করতে চাইছিলো না একদমই। সে অস্থির হয়ে পড়েছিল। তাই সঙ্গে সঙ্গে নিজের এক হাত দিয়ে মনীষার ব্রা টা ওর শরীর থেকে খুলে নিয়ে ওকে টপলেস করে দিলো। মনীষার ব্রা উড়ে গিয়ে পড়লো দূর মেঝেতে। রবি মনীষার চুলগুলো কে গুছিয়ে একসাথে করে পিছনের দিকে করে দিলো , যাতে সামনের পাহাড়সম মনীষার বক্ষযুগলকে পুরোপুরি নিজের দখলে আনতে পারে।

রবির মধ্যে এখন এক হিংস্র পশুর জাগরণ ঘটেছিলো। সে নেকড়ের মতো নিজের শিকার কে খাবলে খেতে চাইছিলো। রবি একটা বড়ো হাঁ করে গপ করে মনীষার বাম স্তনটি কে নিজের মুখে পুরে নিলো। দিয়ে দেদার চুষতে লাগলো। মনীষা এতে ভীষণ পরিমাণে বিচলিত হয়ে পড়েছিল। তা বোঝা গেলো যখন সে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে গলা ফাটিয়ে শিৎকার করতে লাগলো , "আঃআঃআঃহ্হ্হঃ ..... হ্হ্হঃআআআঃ .... আঃহ্হ্হম্ম্মম্মাআআহঃ ...... ওওওওহহহহহহ্হঃ ...... "

মনীষার গলার আওয়াজের তীব্রতা এতো প্রবল ছিল যে গোটা বাড়ি গমগম করে উঠলো। রবিও সেক্সউয়াল প্লেসারের নেশায় এতোটা বুঁদ হয়েছিল যে তারও মাথা থেকে বেরিয়ে গেছিলো অরুণ ও পরীর কথা। রবি তখন মনের আনন্দে সুখ কুড়োচ্ছিলো , যতোটা লুটেপুটে নেওয়া যায় এই মুহূর্তটা থেকে। তাই তো সে ক্ষুধার্তের মতো মনীষার দুদু দুটোকে খাবলে খাবলে চুষছিলো। পারলে যেন দুদু গুলিকে গিলেই ফেলে।

রবির এই বেলেল্লাপনার জেরে মনীষাও নিজেকে সামলাতে পারছিলোনা। মোদ্দা কথা দুজনেই একেবারে ভুলে গেছিলো বাড়িতে অরুণ ও পরীর নীরব উপস্থিতিটা কে। কিন্তু তারা তো উপস্থিত ছিল , খুব সক্রিয়ভাবে উপস্থিত ছিল। অরুণ তো জেগেই ছিল , ওর ঘুম এমনিতেও আসছিলো না। কিন্তু মনীষার এই মায়াবী যৌন চিৎকার শুনে ওর মেয়ে পরীরও ঘুম ভেঙে গেলো !

পরী চমকে উঠে ওর বাবা কে বললো , "বাবা বাবা , মা ওরকম চিৎকার করছে কেন ? কি হয়েছে মায়ের ?"

স্বভাবতই সরলমনা পরী একটু ভয় পেয়ে গেছিলো , এরকম চিৎকার যে তার কাছে খুব অজানা। কিন্তু অরুণ পরীর এই প্রশ্নের কি জবাব দেবে ? পরীকে কি ভাবে শান্ত করবে ? এখন তো পরীকে ঘুম পাড়ানোর জন্য অরুণ আবার তার মায়ের কাছেও যেতে পারবে না। তার মা এখন অন্য কারোর সাথে বিছানায় ....... , ভাবতেও অরুণের কষ্ট হচ্ছিলো। বাবার চোখে জল দেখে ছোট্ট পরী আরো দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়েগেলো। তাহলে কি মায়ের সত্যি কিছু হয়েছে , নাহলে বাবা কাঁদছে কেন ?

পাশের ঘর থেকে অনবরত মনীষার "আঃহ্হ্হহ্হঃ ..... ওওওওওহহহহহহহ্হঃ ...... উউউউহহহহহহ্হঃ ...... হহহহহহহ্হঃ ...... আউউউচ্চ্ছ্হঃহহহঃ ......." এধরণের আওয়াজ ভেসে আসছিলো।

অরুণের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছিলো , কারণ পরী তখন থেকে ওর বাবাকে জিজ্ঞেস করে যাচ্ছিলো , কেন ওর মা এরকম ভাবে চিৎকার করছে পাশের ঘর থেকে ? রবি আংকেলও বা কোথায় ?

একসময়ে পরী জিজ্ঞেসই করে ফেললো যে রবি আংকেল কি তবে তার মা কে মারছে ? এই শুনে অরুণ আর চুপ থাকতে পারলো না। সে চায়না পরীর চোখে রবি নিচে নেমে যাক , কারণ তার মৃত্যুর পর রবিকেই বাবা হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে পরীকে। তাই অবশেষে অরুণ ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামলো পরীকে বোঝাতে।

"পরী , মা এখন রবি আংকেল এর সাথে একটা খেলা খেলছে। এই খেলা তে যে যতো বেশি জোরে চিৎকার করবে সেই জিতবে। "

"বাহঃ , এ তো বেশ মজার খেলা। বাবা আমরাও খেলবো তাহলে এই খেলা। "

"নাহঃ , একদম না ", হঠাৎ করে ধমক দিয়ে অরুণ শাসিয়ে বললো। পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে ফের পরীকে বুঝিয়ে বললো , "না মানে , এই খেলাটা শুধু বড়োরা খেলে। "

অরুণ আরো একধাপ এগিয়ে বললো , "এই খেলাটা তোমার মা আর আমি খেলেই তোমাকে স্বপ্নপুরী থেকে এই পৃথিবীতে নিয়ে এসছিলাম। জানো, তোমার মা আর আমি এই খেলাটা খেলার পরই তুমি জন্মেছো। "

"তাই !!", অবাক হয়ে পরী বললো।

"হ্যাঁ তো। তাহলে কি দাঁড়ালো , আমি আর তোমার মা যখন এই খেলাটা খেলেছিলাম তখন তুমি হয়েছিলে। এবার তোমার মা আর রবি আংকেল এই খেলাটা খেলছে , তাহলে তোমার মতোই আরেকটা ছোট্ট ফুটফুটে বেবি হবে তোমার মায়ের , যার সাথে তুমি খুব খেলাধুলো করবে। "

"সত্যি বাবা !!", পরী এক্সসাইটেড হয়ে জিজ্ঞেস করলো।

"হ্যাঁ , সত্যি ", অরুণের গলাটা ধরে এলো। তার চোখের জল চোখের সীমানায় দাঁড়িয়েছিল কিন্তু পরীর সামনে সেই জলটাকে অনেক কষ্টে অরুণ আটকে রেখেছিলো চোখেই।

"আচ্ছা বাবা , তুমি কেন খেললে না এই খেলাটা। তুমি বললে আগেরবার তো তুমিই মায়ের সাথে এই খেলাটা খেলে আমাকে এনেছিলে স্বপ্নপুরী থেকে , তাহলে এবারও তো তুমিই খেলতে পারতে , রবি আংকেল কেন ?"

"কারণ আমি যে অসুস্থ সোনা। "

"তাহলে নতুন বেবি-টার বাবা কে হবে ? তুমি না রবি আংকেল ?"

সরল মনে কখন যে পরী মোক্ষম প্রশ্নটা ছুড়ে দিয়েছিলো অরুণের দিকে তা এই শিশুটা নিজেও জানতো না। এবার অরুণ আরো সচেতন হয়ে পরীকে বোঝাতে গিয়ে বললো , "দেখো পরী , এবার আমি তোমাকে যা বলছি তা মন দিয়ে শুনবে। আমি আর কিছুদিন পরেই স্বপ্নপুরীতে চলে যাবো , যেখান থেকে আমি আর মা তোমাকে নিয়ে এসছিলাম। আমি চলে যাবার পর তোমার আর ওই নতুন বেবি দুজনেরই নতুন বাবা হবে রবি আংকেল। তারপর থেকে কিন্তু তুমি তোমার রবি আংকেল কে বাবা বলে ডাকবে , কেমন ! শুধু বাবা। "

"নাহঃ , আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বাবা বলে ডাকতে পারবো না। আর তুমি কেন যাবে ওই স্বপ্নপুরীতে। গেলে আমাকেও নিয়ে চলো। "

"না সোনা , এরকম বলতে নেই। সেখানে আমি একাই যাবো। আর তুমি চিন্তা করছো কেন , তুমি যখুনি চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে প্রে করবে আমি তখুনি তোমাকে দেখা দিয়ে যাবো। আমি সবসময়ে তোমার পাশে থাকবো। কিন্তু তুমি প্রমিস করো তুমি রবি আংকেল আর নতুন বেবি কে আপন করে নেবে , তাদের খুব ভালোবাসবে , যেমনটা তুমি আমাকে আর মা কে বাসো। "[/HIDE]
[HIDE][/hide]​
[HIDE]
[HIDE][/HIDE]
"হুমঃ , ঠিক আছে। প্রমিস। .." , বেশ উদাস মনে পরী বললো। সে অরুণের সবকথা ঠিকমতো বুঝলোই না কিন্তু তবুও কেন যে তার মনটা স্যাড্ স্যাড্ (Sad) হয়েগেলো সে বুঝতে পারছিলো না। রক্তের টান হয়তো এটাকেই বলে , ওর বাবা যে মারা যাবে সেটা ঠিকমতো না বুঝেও তার মন কিরকম ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল।

পরী হঠাৎ আবদার করলো যে সে তার মায়ের আর রবি আংকেল এর এই খেলাটা দেখবে , চুপি চুপি। কিন্তু পরীর বাবা চোখ কটমট করে বুঝিয়ে দিলো এটা ব্যাড ম্যানার্স। অরুণের চোখরাঙানির চাপে পড়ে পরী শুয়ে পড়লো। আর বেশি বায়না না করে সে ঘুমিয়েও পড়লো কিছুক্ষণের মধ্যে।

ছোট্ট পরীর কৌতূহলকে নাহয় সে দমিয়ে দিলো , কিন্তু নিজের মনের ওঠা ঝড়কে সে কি করে থামাবে ? তারও তো পরীর মতো মন করছিলো মনীষা ও রবির "খেলাটা" নিজের চোখে দেখতে, চুপি চুপি। সে তাই বিছানা থেকে নামলো , পরী তখন ঘুমিয়ে গেছিলো। ঘরের দরজাটা-কে হালকা ভিজিয়ে দিয়ে সে বেরোলো।

এখন যে ঘরে মনীষা ও রবি নগ্নতার রঙ্গলীলা করছিলো , সেই ঘরে নিজেদের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছে একসাথে মনীষা ও অরুণ। মনীষার স্বামী থাকাকালীন অরুণের ঘর ছিল সেটা, যেটা এখন রবির। তাই অরুণ জানে ডাইনিং হলের দিকে মুখ করে সেই ঘরের একেবারে সিলিংয়ের দিকে একটা ছোট ওপেন ভেন্টিলেশন বক্সের
মতো খোপ করা আছে , যাতে দরজা জানলা বন্ধ থাকলেও ঘরের মধ্যে সাফোকেশন না হয়।​

অরুণ পা টিপে টিপে ডাইনিং রুমের বড়ো টুলটা-কে নিয়ে এনে মনীষার ঘরের বাইরে সেই খোলা ভেন্টিলেশন বক্সের নিচে দাঁড় করিয়ে রাখলো। টুলটা তে মইয়ের মতো সিঁড়ি দেওয়া ছিল। সেই সিঁড়ি বেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অরুণ উঠে বসলো টুলের উপর। মাথাটাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বক্সের ভেতরে চোখ রাখলো। চোখ রেখে যা দৃশ্য দেখলো তাতে সঙ্গে সঙ্গে অরুণের হৃদয়টা যেন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে মাটিতে ছড়িয়ে গেলো , যার আওয়াজ হয়তো কেউ পেলো না কিন্তু অনুভব করলো, শুধু অরুণ , প্রবল ভাবে।


[/HIDE]

to be continued..............
 

Users who are viewing this thread

Back
Top