পানির পাশাপাশি আমরা নানা রকমের পানীয় পান করে থাকি। তৃষ্ণা মেটাতে বা শরীর তাজা রাখতে বিভিন্ন পানীয় পান করা হয়। আসুন, জেনে নিই এগুলো কতটা উপকারী।
ডাবের পানি: ডাবের পানিতে অন্যান্য পানীয়র তুলনায় কম সুগার ও কম ক্যালরি থাকে বলে ক্লান্তি দূর করে, কিন্তু ওজন বাড়ায় না। এতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ থাকে, তাই ডায়রিয়া, বমি বা প্রচণ্ড গরমে ঘামের পর পানি ও লবণশূন্যতা পূরণে সহায়ক। যাদের ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের ঘাটতি আছে, তাদের জন্য ডাবের পানি খুব উপকারী। ডায়াবেটিসের রোগীরাও প্রতিদিন একটি করে কচি ডাবের পানি পান করতে পারবেন। কিন্তু কিডনি রোগীদের জন্য এটা ভালো নয়; কারণ, এটি পটাশিয়াম বাড়িয়ে দিতে পারে।
কোমল পানীয়: বাজারে প্রচলিত কোমল পানীয়ে প্রচুর চিনি থাকায় এটি উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, তাই ওজন বাড়ায়। ঝাঁজ আনতে মেশানো হয় ফসফরিক অ্যাসিড, যা দাঁতের এনামেল ও হাড়ের জন্য ক্ষতিকর। এক বোতল বা এক ক্যান কোমল পানীয়তে ক্যালরির পরিমাণ প্রায় ১৬০, যা প্রায় ১০ চামচ চিনির সমান। তাই ওজনাধিক্য, ডায়াবেটিস বা হার্টের রোগীর জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকি অতিরিক্ত কোমল পানীয় পানে শিশুদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নারীদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে।
ফলের জুস: জুসের চেয়ে বেশি উপকারী হলো আস্ত ও কাঁচা ফল। তবে ঘরে তৈরি ফলের রস খেতে বাধা নেই। এতে প্রিজারভেটিভ বা বাড়তি চিনি থাকে না। কিন্তু কেনা জুসে নানা ধরনের প্রিজারভেটিভ, কৃত্রিম রং ও চিনি মেশানো থাকে। ঘরে তৈরি ফলের রসে প্রচুর ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও পুষ্টি উপাদান থাকে। তবে আঁশ বা ফাইবার জুসে তা পাওয়া যায় না। ডায়রিয়া বা পানিশূন্যতার রোগীর জন্য ডাবের পানি, পাকা কলা, আপেল বা নাশপাতির জুস ভালো। রক্তস্বল্পতার রোগীর জন্য বেদানা, কমলা ও লাল আঙুরের রস উপকারী। হার্টের রোগীর জন্য আবার টক ফলের রস ভালো। বেশি মিষ্টি ফল বা রস খেলে ডায়াবেটিসের রোগীর শর্করা ও ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যেতে পারে। কিডনি রোগীরা নানা ধরনের ফলের রস খেতে পারবেন না, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিয়ে পান করবেন।
[FA]pen[/FA] লেখক: হাসিনা আক্তার, পুষ্টিবিদ ও উপপরিচালক, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল