খেলাঘর
Writer: Nefertiti
সূচনা [যোনিপ্রাশন পর্ব](১)
- বৌদি, এবার না করালে চলেনা?
গাল ফুলিয়ে আদুরে গলায় জানতে চায় কলি।
- নারে, তোর তো মাসিক হচ্ছে তিন বছর হলো। এবারেই করা লাগবে। ভয় পাস কেন, উপমা আর মৌসুমীরো তো এবারেই হবে।
- তাহলে কি হলো, অনিমারো তো এবারে হবার কথা ছিল। ওর বাবা তো অসুখের কথা বলে এক বছর পিছিয়ে দিল। বৌদি তুমি বাবাকে বলনা আমারো যেন পিছিয়ে দেয়।
- অনিমার তো সবে বারো হল, তাই পুরোত মশাই এক বছর ছাড় দিয়েছেন। তার পরো তো এবারে অম্ল ননী খেতে হবে ওকে পুজোর দিন।
- বারে, আমি কি অত বড় হয়ে গেছি নাকি! আমার এক বছর কি পেছানো যায়না?
- নারে পাগলী, তোর এবারে পনেরো হবে। তোর অন্নপ্রাশনের দিন তারিখ বামুন মশায় ঠিকই টুকে রেখেছেন। তিনিই তো সেদিন বাবাকে বলে দিলেন, এবারের বার যোনিপ্রাশন করাতেই হবে। এমনিতেই তোর পশ্চাৎপীড়ন হবে, গত তিন বছর গাঁইগুই করে পিছিয়েছিস। ননীও খাসনি। এবারে তার প্রায়শ্চিত্ত করা লাগবে। এবারে যদি না করিস তবে আগামীবার বামুনমশাই করবে। শুনেছিস তো বামুনমশাইয় কেমন ষাঁড়ের মত করে?
আসলেই এবারে পালাবার পথ নেই কাকলীদেবীর। তিন বছর ধরে মাসিক হচ্ছে তার, আট ক্লাশে গাঁয়ের পাঠশালায় পড়াশুনাও চলছে। শাস্ত্রমতে মাসিকের প্রথম বৎসরেই সতী বালিকার দাবীদার হতে সঠিক পন্থায় কুমারীত্ব হারানো শ্যামপুর গাঁয়ের শত শত বছরের রেয়াজ। কুমারী পুজো হয় বসন্তে। ফাল্গুনের শেষ সপ্তা জুড়ে চলে কুমারী পুজো। অন্য গ্রাম থেকে বহু বাবা মায়েরা তাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে এই গ্রামে আসে বাচ্চাদের যৌন শুদ্ধতা নিশ্চিত করার রেয়াজ জারি রাখতে। এমন না যে অন্য গাঁয়ে কুমারী পুজা হয়না। আসলে বেশিরভাগ স্থানে মূল আনুষ্টানিকতাটাই পালন করা হয়না। একটা কুমারী বালিকাকে ঘিরে পুজো দেয়া হয় ঠিকই, তবে সেই বালিকার কুমারীত্বটাই পরিশুদ্ধ করা হয়না। যে মেয়ের সতীত্বের কথা ভেবে পুজো দেয়া হল, দেখা যায় শেষে কোন জাতবিরুদ্ধ ছেলের সাথে সহবাস করে তার সতীত্বটাই খুইয়ে ফেলে। প্রাচীন শাস্ত্রমতে তাই ঋতুবতী হওয়ার পর পরই কুমারী পুজার তিথিতে যোগ্য পুরুষ দ্বারা বালিকার সতীচ্ছেদ করা উচিত।
বর্তমানে চলছে কলিকাল। প্রাচীনকাল থেকেই ব্রাক্ষ্মণ পুরোহিতেরা এই কাজ করে আসছিলেন। সত্যযুগে এই ব্যবস্থাই চলছিল বটে। তবে কলিকালের শুরুর দিকেই সবদিকে পচন ধরে। সাধারণ মানুষেরা এই প্রথা খুব একটা মেনে নিতে চায়না ফিরিঙ্গিদের কুমন্ত্রণায় পড়ে। তার উপর সুযোগের অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠে বহু পুরোহিতের দিকে। সাধারণের মাঝে যোনিপ্রাশন প্রথাটা কুমারি পুজো থেকে উঠেই গেছিল একরকম। কোনরকমে ধর্মবেত্তারা রাজা বাদশাদের পরিবারে রেয়াজটা টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন। তাও নিজেদের প্রভাবটা পুরো ধরে রাখতে পারেননি বামুন পুরোতেরা। একসময় রাজকন্যাদের প্রথম মাসিক হবার পর পরই মহলে খবর রটে যেত। ঋতুবতী হবার পর পরই ভরি ভরি স্বর্ণালঙ্কার বানানো হত বালিকা রাজকন্যার জন্যে। অন্দরমহল থেকে সোনার ভারী ভারী শাঁখা, টিকলি, পায়েল, কোমরের বিছা, নাকের নথ সব গড়া হত রাজকন্যার জন্যে, ফোঁড়ানো হতো নাক-কান। যোনিপ্রাশনের তিথিতে দরবারে থাকতেন শুধু রাজামশাই, প্রধাণ পুরোহিত আর সহকারী শিক্ষানবীশ পুরোত। বছর আষ্টেকের মধ্যেই মাসিক হয়ে যায় মেয়েদের। মাসিক হবার পরই বড়জোর তিন বছরের মধ্যে সুপাত্রে কন্যা সম্প্রদান করা হত। আট বছরের মেয়েকে বলা হত গৌরি, নয়ে রোহিনী আর দশে কুমারী। নির্দিষ্ট দিনে সুগন্ধী সাবান আর গোলাপজলে সিক্ত পানিতে রানী নিজ কন্যাকে স্নান করিয়ে দিতেন। রাজকন্যার গায়ে একটি সুতাও থাকার নিয়ম ছিলনা। শুধু মুখের অংশটা রেশমী কাপড়ের নেকাব দিয়ে ঢাকা থাকত। প্রথম সহবাসে, বিশেষত আট বছর বয়সী গৌরি বালিকারা প্রায়ই খুব কাঁদে। তাছাড়া পুরোহিতেদের রমণও বেশ কড়া। রাজা যাতে প্রিয় কণ্যার যন্ত্রণা বিকৃত মুখ দেখে দুষ্টু আত্মার কুমন্ত্রণায় পড়ে ব্যথিত না হন তাই এই ব্যবস্থা। নেকাব দিয়ে নাকের নিচ থেকে মুখের অংশটা ঢাকা থাকে। শুধু গাঢ় কাজলমাখা মায়াবী চোখদুটো দেখা যায়।
গৌরীদানের প্রথাটা ধীরে ধীরে কমে গেলে সময়টা এল নয় কি দশ বছর বয়সে। শক্ত খাবার খাওয়ার উপযোগী হবার পর পরই যেমনি শিশুর মুখে অন্ন তুলে অন্নপ্রাশনের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়, দৃঢ় লিঙ্গ দেহে ধারণের উপযোগী হবার পর পরই বিশুদ্ধ বীর্য যোনিগর্ভে নিক্ষেপ করে যোনিপ্রাশনের মাধ্যমে রাজযোনীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। প্রথম দফা মাসিক শেষ হতেই শুভ তিথিতে যোনিপ্রাশন হত কুমারী বাদশাজাদীদের। উপযোগী হবার পর পরই অন্নপ্রাশনের মত যোনিপ্রাশনও করা হয় পুরোহিত দ্বারা। রাজপরিবারে এই কাজ দেশের সর্বোত্তম পুরোত দিয়ে করা হত। গহনাভরা ছোটখাট দেহ নিয়ে দরবারে প্রবেশ করে প্রণাম করতে হয় পুরোহিতকে। দরবারের মধ্যখানে নরম কার্পেটের উপর নবাবজাদীকে সোজা করে শুইয়ে দেয়া হয়। পুরোতমশাই ধুতি খুলে উত্তপ্ত লিঙ্গখানা কুমারী যোনির কাছে নিয়ে হাঁটু গেড়ে উবু হয়ে বসেন। দুই হাতে রাজকন্যার দু হাত ছড়িয়ে চেপে ধরে রমণ শুরু করা হত। শৃঙ্গার বা কৃত্তিমভাবে পিচ্ছিল করার কোন তরল সেখানে ব্যবহৃত হতনা। এই বয়সে সাধারণত যোনিরস পুরোপুরি তৈরি হয়না, তাই কর্ম শুরু হবার আগে রাণীরা তাদের মেয়েদের যোনির অভ্যন্তরে পিচ্ছিল কোন তরল মাখিয়ে দিতেন। রাজকন্যা ক্রন্দন শুরু করা মাত্রই সহকারী পুরোত কামদেবীর মন্ত্র আওড়ানো শুরু করতেন।
[Hidden content][Hidden content][Hidden content]
[Hidden content]