করোনাকালে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা সময়ে চলেছে লকডাউন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ধীরে ধীরে লকডাউন কোথাও শিথিল হয়েছে, আবার কোথাও উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন বাসায় থেকে অনেকেই হাঁপিয়ে উঠেছেন। অস্থিরতা আর একঘেয়েমি কাটাতে অনেকেই বের হচ্ছেন ঘুরতে। কেউবা অবকাশযাপনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। তবে মাথায় রাখা উচিত, এখনো করোনার প্রাদুর্ভাব একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তাই বাড়তি সতর্কতা আর সচেতনতাই পারে এই অতিমারিতে আপনকে সুস্থ রাখতে। করোনাকালীন কিংবা করোনা–পরবর্তী সময়ে ভ্রমণে রয়েছে কিছু আবশ্যকরণীয় বিষয়।
ব্যবহার করুন স্যানিটাইজার
ভ্রমণে স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখুন। করোনা মহামারিতে নিরাপদ থাকতে নিয়মিত স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। পরিবার বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ভ্রমণ করলে তাঁদেরও স্যানিটাইজার ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।
লেনদেন করুন কার্ড ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপসে
বিভিন্ন দেশে করোনা মহামারির ঝুঁকি এড়ানোর জন্য নগদ লেনদেনে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। যতটা সম্ভব ক্রেডিট কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপসের মাধ্যমে লেনদন করুন।
নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব মেনে ভ্রমণ করুন। সংখ্যায় যতটা সম্ভব কম লোক সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ করুন। সম্ভব হলে একাই ভ্রমণ করুন। নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলুন।
নিজে মাস্ক পরুন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাস্ক পরতেই হবে। বিশেষ করে ভ্রমণের সময় মাস্ক পরা আবশ্যক। গাড়িতে থাকা অবস্থায় কিংবা হাঁটার সময়ও মাস্ক পরলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম।
টয়লেট পেপার বা টিস্যু পেপার কাছে রাখুন
কোথাও ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন হঠাৎ করেই প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। যেকোনো সময় তাই গ্যাস স্টেশন, পার্ক বা রেস্তোরাঁয় যেতে হতে পারে। এসব স্থানে টয়লেট পেপার না থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কিংবা থাকলেও করোনার সময়ে কতটুকু নিরাপদ, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তাই ভ্রমণের সময় টয়লেট পেপার রাখুন।
পরিবহনে ভ্রমণের পূর্বে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন
বাসাবাড়ি কিংবা অফিসে সঠিক স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলছেন; কিন্তু কোথাও বেড়াতে গিয়ে যে বাহনে চড়ছেন, তার স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তো? যদি না হয়ে থাকেন, তাহলে কিন্তু দুশ্চিন্তা রয়েই যাবে। বাস বা ভাড়া করা পরিবহনে ভ্রমণের সময় যে স্থানে বসছেন, সেই স্থানটি সুরক্ষিত কি না, সে সম্পর্কে পরিবহন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিন। আসন নেওয়ার সময় আপনার চারপাশের শক্ত পৃষ্ঠতলের ওপর দ্রুত জীবাণুনাশক স্প্রে করুন।
প্রযুক্তির ব্যবহার করুন
করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করুন। স্মার্টফোনের নোটপ্যাডে প্রয়োজনীয় বিষয় লিখে রাখুন। কারণ, কাগজ ও কলম ব্যবহার করলে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
স্পর্শের আগে বিশেষ সতর্কতা
বাসে, ট্রেনে কিংবা বিমানে ওঠার আগে এটিএম, চেক-ইন মেশিন, এসকেলেটর এবং অন্য যেকোনো ডিভাইস ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা উচিত। অন্যরা যেগুলো স্পর্শ করেছে; সেগুলো ব্যবহার করার সময় গ্লাভস পরে নিন।
অসুস্থ হলে ভ্রমণ বাতিল
জ্বর-কাশি থাকলে ভ্রমণ বাতিল করাই ভালো। ভ্রমণরত অবস্থায় এই দুই উপসর্গের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
তালিকা তৈরি করুন
ভ্রমণের সময় কিছু জিনিস অবশ্যই আপনার সঙ্গে বহন করা উচিত। সে তালিকায় একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টয়লেট পেপার, টিস্যু ও মাস্ক রাখতে হবে। এ জিনিসগুলো আপনাকে ভাইরাস রোধ করতে সাহায্য করবে।
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে লকডাউন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাসহ নানা বিধিনিষেধের কারণে মানুষ খুব কমই বাইরে বের হতে পারছে। তবে কয়েক মাস ধরে বিশ্বজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরুর পর বিধিনিষেধ শিথিল এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাগুলো অনেকাংশে তুলে নেওয়া হচ্ছে। ফলে করোনা-পরবর্তী সময়ে ভ্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে অনলাইন বুকিং প্ল্যাটফর্ম এয়ারবিএনবি। যেকোনো স্থানে ভ্রমণে থাকুন স্বাস্থ্যসচেতন।