পঙ্কজ চৌধুরী বললো, তা আমি জানি। তারপরও বলি, তোমার বাবার টাকা তো আর তোমার নয়। উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু হলেও পেতে পারো। তবে, তোমার নিজস্ব কিছু সহায় সম্পদ তো দরকার।
ঠিক তখনই আরো একটা গাড়ী এসে ঢুকলো শিল্পকলা একাডেমীর ভেতরে। লোকটা গাড়ী পার্কিং করে, গাড়ী থেকে বেড়িয়ে ভেতরে ঢুকতেই উদ্যত হচ্ছিলো। অথচ, পঙ্কজ চৌধুরী তাকে ইশারা করে ডাকলো, অজিৎ দাদা, এদিকে, এদিকে আসুন।
মৌসুমী চোখ সরু করেই লোকটার দিকে তাঁকালো। বললো, উনি কে?
পঙ্কজ চৌধুরী হাসতে হাসতেই বললো, উনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যেই তো, তোমাকে আসতে বলেছিলাম। সিনেমার প্রডিউসার। অজিৎ কুমার, মানে অজিৎ দাদা। উনিই তো সিনেমার সেই পরিচালকটাকে জবাবদিহি করিয়েছিলো, কেনো আমার গানটাকে সংগ্রহের বলে চালিয়ে দিয়েছিলো। আমাদের এলাকারই লোক। তবে খুব ছোটকাল থেকেই রাজধানী শহরে থাকে। বিশাল ধনী। রাজধানীতেও দুটো বাড়ী। নিসন্তান, একটা বাড়ী খালি পরে আছে। চাইলে সে বাড়ীটা তোমাকেই দিয়ে দেবে। বিশাল বাড়ী, রাজকন্যার মতো জীবন কাটাবে। খাবে দাবে, ঘুমুবে, আর অভিনয় করবে। সুপার স্টার হয়ে যাবে দুদিনে।
অজিৎ কুমার নামের পঞ্চাশোর্ধ লোকটা মৌসুমী আর পঙ্কজ চৌধুরীর দিকেই এগিয়ে গেলো। কাছাকাছি এসে বললো, তোমরা এখানে দাঁড়িয়ে কেনো?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, স্যরি দাদা, ওর কথাই বলেছিলাম। মৌসুমী, একটু অন্য রকম মেয়ে। বলতে পারেন স্বাধীনচেতা। ওর ইচ্ছার বিরূদ্ধে কিছুই করা যায়না। ভেতরে যেতে বললাম, গেলো না। বললো, এখানে দাঁড়িয়েই সব কথা বলতে। আপনিই বলুন দাদা, কাজের কথা কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলা যায়?
অজিৎ কুমার মৌসুমীর আপাদ মস্তক একবার দেখলো। তারপর চোখ কপালে তুলে বললো, মাই গড, তোমার মুখে যা শুনেছিলাম, তার চাইতেও তো দেখছি প্রেসাস গোল্ড। টাকার অংকটা বলেছিলে?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, জী না দাদা।
অজিৎ কুমার আবারো একবার মৌসুমীর আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করলো। তারপর বললো, না বলে খুব ভালো করেছো। ওকে আমার চাই ই চাই। মূল্য এক কোটি টাকা।
অজিৎ কুমার এর কথা শুনে মৌসুমী খিল খিল করেই হাসলো, তার সাদা গেঁজো দাঁত গুলো বেড় করে। বললো, মাত্র এক কোটি টাকা?
অজিৎ কুমার গম্ভীর ভরাট গলায় বললো, আরো বেশী চাও? দু কোটি? পাঁচ কোটি? ঠিক আছে দশ কোটিই হবে। তবে একটাই শর্ত। পর পর আমার পাঁচটা ছবিতে চুক্তি করতে হবে। ছবিগুলো মুক্তি না পাওয়া পর্য্যন্ত অন্য কোন ছবিতে চুক্তি করা যাবে না। এবার চলো, লাঞ্চ এর সময় হয়ে গেছে।
মৌসুমী বললো, কি করে ভাবলেন, আমি আপনাদের সাথে লাঞ্চ করতে যাবো?
মৌসুমীর কথা শুনে অজিৎ কুমার অবাকই হলো। সে আবারো মৌসুমীর আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করলো। বললো, এই মেয়ে, তোমার এত কি দেমাগ? গায়ের রং তো কালো, চেহারাটাই শুধু মিষ্টি। এমন মেয়েরা তো আমার পায়ের কাছে পরে থাকে সিনেমায় সাধারন একটা রোল পাবার জন্যে। তোমাকে আমি নায়িকা হবার চান্স দিচ্ছি। আর তুমি বলছো আমার সাথে লাঞ্চে যাবে না?
মৌসুমী বললো, কোন মেয়েরা আপনার পায়ে পরে জানিনা, আমি কিন্তু আপনার পায়ে পরিনি।
অজিৎ কুমার হঠাৎই বিগরে গেলো। বললো, এই জন্যেই তো আঙুল বাঁকাতে হয়। আমি তো আঙুল বাঁকাতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু পঙ্কজ দিলো না। তুমি জানো, আমার কত ক্ষমতা? আমি ইচ্ছে করলে, তোমাকে তুলে নিয়ে যেতে পারি এখান থেকে।
মৌসুমী বললো, আমাকে তুলে নিয়ে আপনার লাভ?
অজিৎ কুমার বললো, লাভ মানে? তোমাকে একবার নায়িকা বানাতে পারলে, কত কোটি কোটি টাকা সিনেমা ব্যাবসা করতে পারবো, তা তুমি জানো?
মৌসুমী কিছু একটা বলতে চাইছিলো। তার আগেই পঙ্কজ চৌধুরী বললো, দাদা, মাথা ঠাণ্ডা করুন। বলেছিলাম না, মৌসুমী একটু জেদী প্রকৃতির মেয়ে। আমি ওকে চিনি। আর তাই তো ওকে এত ভালোবাসি। ও যদি * মেয়ে হতো, তাহলে আমার এত বাঁধা ছিলো না। আমি ওকে বিয়ের প্রস্তাবই দিতাম। আপনি এখন আসেন দাদা, আমি মৌসুমীকে বুঝাবো।
অজিৎ কুমার বললো, আসবো মানে? তুমি আমাকে কত দিন ঘুরালে বলো? তুমি মৌসুমীকে বিয়েই করো, আর চুদেও দাও, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি মৌসুমীকে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, গুণ্ডা দিয়ে। তুমি বাঁধা দিয়েছো। কিন্তু আমার টাকার কি হবে? এক কোটি টাকা আগাম দিলাম। তুমি তো এই মেয়ের ক্যাসেট বেড় করে কাড়ি কাড়ি টাকা গুনছো আমার টাকাতেই। আমার ব্যাবসার কি হবে?
পঙ্কজ চৌধুরী হাত জোড় করেই বললো, দাদা, প্লীজ, আপনি এখন যান। টাকা আমি সুদে আসলে পরিশোধ করবো। এই তো মৌসুমীর ক্যাসেট বাজারে বেড় হলো। মাত্র একটি মাস সময় দিন। এক কোটি টাকা নয়, দু কোটি টাকাই ফিরিয়ে দেবো। তারপরো মৌসুমীর ইচ্ছার বিরূদ্ধে কোন কিছুই করতে দেবো না।
অজিৎ কুমারও ফিরে চললো। বললো, আমিও দেখে নেবো।
অজিৎ কুমার ফিরে যেতেই মৌসুমী অট্টহাসিতেই ফেটে পরলো। বললো, বাহ বাহ বাহ! আপনারা তো দেখছি, আমাকে নিয়ে ভালো ব্যাবসাতে নেমে পরেছেন।
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, স্যরি মৌসুমী। আমাকে ভুল বুঝবে না। টাকা আমার প্রয়োজন ছিলো ঠিকই, তবে তোমাকে নিয়ে ব্যাবসায় নামতে চাইনি। বিশ্বাস করো।
মৌসুমী বললো, সবই তো নিজ কানে শুনলাম, আর কিভাবে বিশ্বাস করি?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, যা শুনেছো, কিছুই মিথ্যে শুনোনি। তোমাদের বিদায় বরণ অনুষ্ঠানে আমিও যেমনি গিয়েছিলাম, তেমনি গিয়েছিলো তারকা শিকারী অনেকেই। আমি কিংবা ডি, আর, পি, খোঁজতে গিয়েছিলাম কন্ঠ শিল্পী। অজিৎ দাদা গিয়েছিলো অভিনেত্রী খোঁজতে। এক কথায় সবারই তোমাকেই পছন্দ হয়েছিলো। ডি, আর, পি, সাথে সাথেই তোমার গান রেকর্ডিং এর কথা ভেবেছিলো, আর তেমনি অজিৎ দাদাও স্বপ্ন দেখেছিলো তোমাকে নায়িকা বানানোর। আমার কথা আর কি বলবো? সাধ আছে, সাধ্য নেই, সুর আছে, টাকা নেই। কয়টি টাকার জন্যেই অজিৎ দাদার কাছে গিয়েছিলাম। কারন ছাড়া তো আর কেউ টাকা ধার দিতে চায়না। আমি সব কিছুই ভেঙ্গে বলেছিলাম। তোমার একটা গানের ক্যাসেট বেড় করে, দু কোটি টাকার ব্যাবসা করবো। তাই এক কোটি টাকা ধার চেয়েছিলাম। অজিৎ দাদা টাকা দিয়েছিলো ঠিকই, তবে একটা শর্তও দিয়েছিলো, তোমাকে যে করেই হউক অজিৎ দাদার হাতে তুলে দিতে। সে শুধু এক কোটি টাকা নয়, বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার ব্যাবসা করবে। তার জন্যে আমাকে ওই গাড়ীটাও উপহার করেছে। শুধু তাতেও বাদ রাখেনি। তোমাকে প্রহরায় রাখার জন্যে অনেক গুণ্ডা পাণ্ডার ব্যাবস্থাও করেছে।
পঙ্কজ চৌধুরী খানিক থেমে আবারো বলতে থাকলো, মৌসুমী, আমি তোমাকে বিছানাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমার জায়গায় অন্য কোন পুরুষ হলেও তা করতো। তারপরও বলবো, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমার কোন ক্ষতিই হতে দেবো না। তবে, আমার ক্ষমতা সীমীত। ধার করা টাকা, ফেরৎ তো দিতেই হবে। তোমার গানের ক্যাসেট বিক্রি হবার পেছনেই সব ভরসা। তবে, আমার বিশ্বাস, তোমার ক্যাসেটটা ব্যাবসা সফল হবেই। আমি তোমার বাকী টাকা যেমনি ফিরিয়ে দেবো, অজিৎ দাদার টাকাও ফিরিয়ে দেবো। তারপরও বলবো, সামনে তোমার বড় বিপদ। অজিৎ দাদা সাধারন কোন মানুষ না। তোমাকে যে কোন ভাবেই কিডন্যাপ করতে পারে। তোমার মূল্য শুধু এক কোটি টাকা না। তোমার মূল্য বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার। আমার ক্ষমতা নেই তোমাকে কাছে পাবার। তোমার ইচ্ছের বিরূদ্ধে কিছু ঘটে গেলেও। তাই বলছি, একটু সাবধানে থাকবে। আসি তাহলে।
ঠিক তখনই আরো একটা গাড়ী এসে ঢুকলো শিল্পকলা একাডেমীর ভেতরে। লোকটা গাড়ী পার্কিং করে, গাড়ী থেকে বেড়িয়ে ভেতরে ঢুকতেই উদ্যত হচ্ছিলো। অথচ, পঙ্কজ চৌধুরী তাকে ইশারা করে ডাকলো, অজিৎ দাদা, এদিকে, এদিকে আসুন।
মৌসুমী চোখ সরু করেই লোকটার দিকে তাঁকালো। বললো, উনি কে?
পঙ্কজ চৌধুরী হাসতে হাসতেই বললো, উনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্যেই তো, তোমাকে আসতে বলেছিলাম। সিনেমার প্রডিউসার। অজিৎ কুমার, মানে অজিৎ দাদা। উনিই তো সিনেমার সেই পরিচালকটাকে জবাবদিহি করিয়েছিলো, কেনো আমার গানটাকে সংগ্রহের বলে চালিয়ে দিয়েছিলো। আমাদের এলাকারই লোক। তবে খুব ছোটকাল থেকেই রাজধানী শহরে থাকে। বিশাল ধনী। রাজধানীতেও দুটো বাড়ী। নিসন্তান, একটা বাড়ী খালি পরে আছে। চাইলে সে বাড়ীটা তোমাকেই দিয়ে দেবে। বিশাল বাড়ী, রাজকন্যার মতো জীবন কাটাবে। খাবে দাবে, ঘুমুবে, আর অভিনয় করবে। সুপার স্টার হয়ে যাবে দুদিনে।
অজিৎ কুমার নামের পঞ্চাশোর্ধ লোকটা মৌসুমী আর পঙ্কজ চৌধুরীর দিকেই এগিয়ে গেলো। কাছাকাছি এসে বললো, তোমরা এখানে দাঁড়িয়ে কেনো?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, স্যরি দাদা, ওর কথাই বলেছিলাম। মৌসুমী, একটু অন্য রকম মেয়ে। বলতে পারেন স্বাধীনচেতা। ওর ইচ্ছার বিরূদ্ধে কিছুই করা যায়না। ভেতরে যেতে বললাম, গেলো না। বললো, এখানে দাঁড়িয়েই সব কথা বলতে। আপনিই বলুন দাদা, কাজের কথা কি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলা যায়?
অজিৎ কুমার মৌসুমীর আপাদ মস্তক একবার দেখলো। তারপর চোখ কপালে তুলে বললো, মাই গড, তোমার মুখে যা শুনেছিলাম, তার চাইতেও তো দেখছি প্রেসাস গোল্ড। টাকার অংকটা বলেছিলে?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, জী না দাদা।
অজিৎ কুমার আবারো একবার মৌসুমীর আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করলো। তারপর বললো, না বলে খুব ভালো করেছো। ওকে আমার চাই ই চাই। মূল্য এক কোটি টাকা।
অজিৎ কুমার এর কথা শুনে মৌসুমী খিল খিল করেই হাসলো, তার সাদা গেঁজো দাঁত গুলো বেড় করে। বললো, মাত্র এক কোটি টাকা?
অজিৎ কুমার গম্ভীর ভরাট গলায় বললো, আরো বেশী চাও? দু কোটি? পাঁচ কোটি? ঠিক আছে দশ কোটিই হবে। তবে একটাই শর্ত। পর পর আমার পাঁচটা ছবিতে চুক্তি করতে হবে। ছবিগুলো মুক্তি না পাওয়া পর্য্যন্ত অন্য কোন ছবিতে চুক্তি করা যাবে না। এবার চলো, লাঞ্চ এর সময় হয়ে গেছে।
মৌসুমী বললো, কি করে ভাবলেন, আমি আপনাদের সাথে লাঞ্চ করতে যাবো?
মৌসুমীর কথা শুনে অজিৎ কুমার অবাকই হলো। সে আবারো মৌসুমীর আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করলো। বললো, এই মেয়ে, তোমার এত কি দেমাগ? গায়ের রং তো কালো, চেহারাটাই শুধু মিষ্টি। এমন মেয়েরা তো আমার পায়ের কাছে পরে থাকে সিনেমায় সাধারন একটা রোল পাবার জন্যে। তোমাকে আমি নায়িকা হবার চান্স দিচ্ছি। আর তুমি বলছো আমার সাথে লাঞ্চে যাবে না?
মৌসুমী বললো, কোন মেয়েরা আপনার পায়ে পরে জানিনা, আমি কিন্তু আপনার পায়ে পরিনি।
অজিৎ কুমার হঠাৎই বিগরে গেলো। বললো, এই জন্যেই তো আঙুল বাঁকাতে হয়। আমি তো আঙুল বাঁকাতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু পঙ্কজ দিলো না। তুমি জানো, আমার কত ক্ষমতা? আমি ইচ্ছে করলে, তোমাকে তুলে নিয়ে যেতে পারি এখান থেকে।
মৌসুমী বললো, আমাকে তুলে নিয়ে আপনার লাভ?
অজিৎ কুমার বললো, লাভ মানে? তোমাকে একবার নায়িকা বানাতে পারলে, কত কোটি কোটি টাকা সিনেমা ব্যাবসা করতে পারবো, তা তুমি জানো?
মৌসুমী কিছু একটা বলতে চাইছিলো। তার আগেই পঙ্কজ চৌধুরী বললো, দাদা, মাথা ঠাণ্ডা করুন। বলেছিলাম না, মৌসুমী একটু জেদী প্রকৃতির মেয়ে। আমি ওকে চিনি। আর তাই তো ওকে এত ভালোবাসি। ও যদি * মেয়ে হতো, তাহলে আমার এত বাঁধা ছিলো না। আমি ওকে বিয়ের প্রস্তাবই দিতাম। আপনি এখন আসেন দাদা, আমি মৌসুমীকে বুঝাবো।
অজিৎ কুমার বললো, আসবো মানে? তুমি আমাকে কত দিন ঘুরালে বলো? তুমি মৌসুমীকে বিয়েই করো, আর চুদেও দাও, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। আমি মৌসুমীকে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, গুণ্ডা দিয়ে। তুমি বাঁধা দিয়েছো। কিন্তু আমার টাকার কি হবে? এক কোটি টাকা আগাম দিলাম। তুমি তো এই মেয়ের ক্যাসেট বেড় করে কাড়ি কাড়ি টাকা গুনছো আমার টাকাতেই। আমার ব্যাবসার কি হবে?
পঙ্কজ চৌধুরী হাত জোড় করেই বললো, দাদা, প্লীজ, আপনি এখন যান। টাকা আমি সুদে আসলে পরিশোধ করবো। এই তো মৌসুমীর ক্যাসেট বাজারে বেড় হলো। মাত্র একটি মাস সময় দিন। এক কোটি টাকা নয়, দু কোটি টাকাই ফিরিয়ে দেবো। তারপরো মৌসুমীর ইচ্ছার বিরূদ্ধে কোন কিছুই করতে দেবো না।
অজিৎ কুমারও ফিরে চললো। বললো, আমিও দেখে নেবো।
অজিৎ কুমার ফিরে যেতেই মৌসুমী অট্টহাসিতেই ফেটে পরলো। বললো, বাহ বাহ বাহ! আপনারা তো দেখছি, আমাকে নিয়ে ভালো ব্যাবসাতে নেমে পরেছেন।
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, স্যরি মৌসুমী। আমাকে ভুল বুঝবে না। টাকা আমার প্রয়োজন ছিলো ঠিকই, তবে তোমাকে নিয়ে ব্যাবসায় নামতে চাইনি। বিশ্বাস করো।
মৌসুমী বললো, সবই তো নিজ কানে শুনলাম, আর কিভাবে বিশ্বাস করি?
পঙ্কজ চৌধুরী বললো, যা শুনেছো, কিছুই মিথ্যে শুনোনি। তোমাদের বিদায় বরণ অনুষ্ঠানে আমিও যেমনি গিয়েছিলাম, তেমনি গিয়েছিলো তারকা শিকারী অনেকেই। আমি কিংবা ডি, আর, পি, খোঁজতে গিয়েছিলাম কন্ঠ শিল্পী। অজিৎ দাদা গিয়েছিলো অভিনেত্রী খোঁজতে। এক কথায় সবারই তোমাকেই পছন্দ হয়েছিলো। ডি, আর, পি, সাথে সাথেই তোমার গান রেকর্ডিং এর কথা ভেবেছিলো, আর তেমনি অজিৎ দাদাও স্বপ্ন দেখেছিলো তোমাকে নায়িকা বানানোর। আমার কথা আর কি বলবো? সাধ আছে, সাধ্য নেই, সুর আছে, টাকা নেই। কয়টি টাকার জন্যেই অজিৎ দাদার কাছে গিয়েছিলাম। কারন ছাড়া তো আর কেউ টাকা ধার দিতে চায়না। আমি সব কিছুই ভেঙ্গে বলেছিলাম। তোমার একটা গানের ক্যাসেট বেড় করে, দু কোটি টাকার ব্যাবসা করবো। তাই এক কোটি টাকা ধার চেয়েছিলাম। অজিৎ দাদা টাকা দিয়েছিলো ঠিকই, তবে একটা শর্তও দিয়েছিলো, তোমাকে যে করেই হউক অজিৎ দাদার হাতে তুলে দিতে। সে শুধু এক কোটি টাকা নয়, বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার ব্যাবসা করবে। তার জন্যে আমাকে ওই গাড়ীটাও উপহার করেছে। শুধু তাতেও বাদ রাখেনি। তোমাকে প্রহরায় রাখার জন্যে অনেক গুণ্ডা পাণ্ডার ব্যাবস্থাও করেছে।
পঙ্কজ চৌধুরী খানিক থেমে আবারো বলতে থাকলো, মৌসুমী, আমি তোমাকে বিছানাতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। আমার জায়গায় অন্য কোন পুরুষ হলেও তা করতো। তারপরও বলবো, আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমার কোন ক্ষতিই হতে দেবো না। তবে, আমার ক্ষমতা সীমীত। ধার করা টাকা, ফেরৎ তো দিতেই হবে। তোমার গানের ক্যাসেট বিক্রি হবার পেছনেই সব ভরসা। তবে, আমার বিশ্বাস, তোমার ক্যাসেটটা ব্যাবসা সফল হবেই। আমি তোমার বাকী টাকা যেমনি ফিরিয়ে দেবো, অজিৎ দাদার টাকাও ফিরিয়ে দেবো। তারপরও বলবো, সামনে তোমার বড় বিপদ। অজিৎ দাদা সাধারন কোন মানুষ না। তোমাকে যে কোন ভাবেই কিডন্যাপ করতে পারে। তোমার মূল্য শুধু এক কোটি টাকা না। তোমার মূল্য বিলিয়ন বিলিয়ন টাকার। আমার ক্ষমতা নেই তোমাকে কাছে পাবার। তোমার ইচ্ছের বিরূদ্ধে কিছু ঘটে গেলেও। তাই বলছি, একটু সাবধানে থাকবে। আসি তাহলে।