What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Kaptan Jacksparoow

Community Team
Elite Leader
Joined
Apr 6, 2019
Threads
326
Messages
6,142
Credits
46,387
T-Shirt
Profile Music
Recipe sushi
Rocket
Euro Banknote
Butterfly
ঝাপটা
-রাখাল হাকিম



সা নি ধা পা...
চোখ এত সুন্দর হয় নাকি? মুনা, আমাদের ক্লাশে। সদ্য ভর্তি হয়ে প্রথম ক্লাশে প্রথম দেখা। ক্লাশে ঢুকতে গিয়ে মিষ্টি গলায় বললো, মে আই কাম ইন স্যার?
মুনার চোখ দেখে আমিই না শুধু, স্বয়ং ক্লাশ টিচার এরও চোখ থেমে গেলো, ভাষা বন্ধ হয়ে গেলো। পুরু ক্লাশে পিন পতন নিস্তব্ধতা নেমে এলো। অবশেষে ক্লাশ টীচার বললো, অফকোর্স কাম ইন। তোমার সীট? ঠিক আছে, আপাততঃ ওই সীটটায় বসো।

ওই সীটটা হলো আমার পাশে। খালি সীট। ইচ্ছে করেই বেছে নিয়েছি। পেছনের দিকে। মুনা আমার কাছাকাছি এসে বললো, একটু বেড়িয়ে দাঁড়াও, আমি ওপাশে যাবো কিভাবে?
আমি মুনার চেহারার দিকে তাঁকাতে পারলাম না। এত রূপ কি কোন মেয়ের থাকতে পারে নাকি? চোখ ঝলসে যায়। আমি মাথা নীচু করে অন্যমনস্ক হয়ে অন্য জগতেই হারিয়ে গেলাম। মেয়েটি ঈষৎ খিস্তি মেরেই বললো, কথা কি শুনা যাচ্ছে? স্যার বলেছে ওই সীটে বসতে। আমি কি তোমাকে ডিঙিয়ে ঢুকবো?
মুনা আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা। শ্রেষ্ঠ চোখ, শ্রেষ্ঠ রূপবতী কন্যা। যার কারনে, উর্মি এখনো আমার সাথে কথা বলে না। এই বৃদ্ধ বয়সেও। ফেইসবুকে হাজারও নক করে উর্মিকে পাওয়া যায়না। এমন কি মুনাকেও পাই না।

১৯৮১ সালের কথা। আমি তখন ক্লাশ এইটে উঠেছি মাত্র। নবাগতা এই ছাত্রীটি আমার মাথাটাই খারাপ করে দিয়েছিলো। ঈষৎ স্বাস্থ্যবতী। বক্ষটা অসম্ভব উঁচু। মুনার দেহ আর উর্মির দেহ আকাশ পাতাল পার্থক্য। মুনা যদি একটা হাতী হয়ে থাকে, তাহলে উর্মি বুঝি সাধারন একটা টিকটিকী। তাহলে আমি কি? সে গলপোই বলবো।
আমি বেঞ্চি থেকে সরে দাঁড়িয়ে ইশারা করলাম। যার অর্থ, ঢুকো। মেয়েটি তার সুন্দর বড় বড় চোখে আমার দিকে এক নজর তাঁকালো। বুকটা যেনো ক্ষত বিক্ষতই হলো তেমনি এক নজরে।





শিশির এর সাথে বন্ধুত্বটা সবে শুরু হয়েছে মাত্র। হিন্দু পরিবার এর ছেলে, খুবই ভদ্র। ক্লাশে হিন্দু ছেলে খুবই কম। যে কয়জন আছে, তারা সবাই আলাদা আলাদাই থাকে। এমন কি নিজেদের মাঝেও বন্ধুত্ব গড়ে না।

শিশির একটু অন্য রকম। বাবা কন্ট্রাক্টরী করে। সবার সাথে মিশতে চায়, আবার পারেও না। বোধ হয় আমার চেষ্টাতেই শিশির এর সাথে বন্ধুত্বটা হয়েছিলো।
পড়ালেখায় খুব বেশী ভালো না। তারপরও, অংকে একশতে একশ পায়। মাঝে মাঝে আমাকে অংক বুঝিয়ে দেয়। আর আমি বুঝিয়ে দিই ইংরেজী গ্রামার।
শিশির যেমনি মাঝে মাঝে আমাদের বাড়ীতে আসে, আমিও তেমনি মাঝে মাঝে শিশিরদের বাড়ীতে যাই। দুজনে খুব ভালোই সময় কাটে। পড়ালেখার ব্যাস্ততা।

ছুটির দিন। মনটা হঠাৎই উদাস হয়ে উঠলো। তার বড় কারন, সেই মেয়েটি। ডাগর ডাগর চোখ, খানিক স্বাস্থ্যবতী, বুকটা অসম্ভব উঁচু। ক্লাশে নবাগতা ছাত্রী। টিচার তাকে আমার পাশেই বসতে বলেছিলো। নাম মুনা।

আমি বাড়ী থেকে বেড়িয়ে গেলাম অন্যমনস্ক ভাবেই। কোন কিছু না ভেবেই পা দুটি এগিয়ে চললো, শিশিরদের বাড়ীর দিকে। সমুদ্র পার থেকে বেশ দূরে। উঠানে পা দিতেই দেখলাম, বাগানে একটি মেয়ে। খুবই ভদ্র আর মিষ্টি চেহারা। বয়সে আমার চাইতে বড়ই হবে বলে মনে হয়। হাঁটু গেঁড়ে বসে বসে বাগানের ঘাস পরিস্কার করছে। গায়ের রং খুব বেশী ফর্সা নয়, তবে ফর্সার দিকে। এক অর্থে খুবই মিষ্টি রং। বরং এমন চেহারায় খুব বেশী ফর্সা হলে মোটেও ভালো লাগতো না। আমাকে দেখা মাত্রই, ঘাস কাটা বন্ধ করে, ঘাড়টা কাৎ করে, মিষ্টি হাসিতে বললো, কাকে চাই?
আমি বললাম, শিশির আছে?
মেয়েটি বললো, না নেই। প্রাইভেট পড়তে গেছে।
আমি বললাম, ও, তাহলে আসি।




মেয়েটি আমার দিকে ঘুরে বসলো। পরনে হাত কাটা লালচে ছিটের একটা টাইট পোশাক। গলের দিকটা প্রশস্থ। বেশ স্বাস্থ্যবতীই বলা চলে। অবাক হয়ে দেখলাম, বিশাল স্তন দুই এর ভাঁজ। চৌকু ঠোট, চক চক করা সাদা দাঁতের হাসিতে বললো, আসবে কেনো? শিশির এর আসার সময় হয়ে গেছে। কি নাম তোমার?

হিন্দু মেয়েরা কি একটু বেশী সুন্দরী হয় নাকি? হিন্দু মেয়েদের দাঁতও কি খুব বেশী সুন্দর থাকে নাকি? আমি মেয়েটিকে এড়িয়ে যেতে পারলাম না। মিষ্টি চেহারাটার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। তারপর বললাম, খোকা।
মেয়েটি মিষ্টি হাসিতেই বললো, ও খোকা? খুব কমন নাম। আমি শিশির এর বড় বোন, রেখা। তুমি বুঝি শিশির এর সাথে পড়ো?
আমি বললাম, জী।

আমি মেয়েটির সাথে কেনো যেনো সহজ হতে পারছিলাম না। খুব মিষ্টি চেহারার মেয়েদের সামনে আমি সহজ হতে পারি না। অথচ, মেয়েটিকে খুব আলাপীই মনে হলো। বলতে থাকলো নিজে থেকেই। এইচ, এস, সি, পাশ করে ঘরে বসে আছি। সময় কাটে না। অবশ্য ডিগ্রী কলেজে নাম লিখিয়ে রেখেছি। বেসরকারী কলেজ। ঠিক মতো ক্লাশ হয়না। গার্ডেনিং করা খুব পছন্দ।
আমি চারিদিক চোখ ঘুরিয়ে তাঁকালাম। বললাম, সুন্দর বাগান। সবই কি আপনি বানিয়েছেন?
রেখা গর্বিত হাসি হেসে বললো, তবে কি তোমার ধারনা আমাদের কোন মালী আছে?
আমি বললাম, না মানে, সত্যিই আপনি খুব চমৎকার!

রেখা মুখটা হা করে কিছুক্ষণ আমার দিকে তাঁকিয়ে থাকলো। তারপর বললো, আমি চমৎকার? নাকি আমার মালীর কাজ?
আমি বললাম, এই বাগানটাও চমৎকার, আপনিও চমৎকার!
রেখা আনন্দিত হয়েই হাতের নিড়ানীটা মাটিতে রেখে দু হাতে ভর দিয়ে খানিকটা সামনে ঝুকে বসলো। যার কারনে, তার হাত কাটা কামিজটার গল গলিয়ে স্তন দুটি আরো প্রকাশিত হয়ে পরছিলো চোখের সামনে।




আমি অনুমান করলাম, সাধারন কোন বক্ষ নয় রেখার। ডাব কিংবা নারকেল এর চাইতেও অধিক বড় হবে এই স্তন দুটি। আমার লিঙ্গটা নিজের অজান্তেই চড় চড় করতে থাকলো। অথচ, রেখা আনন্দ উদ্বেলিত কন্ঠে বলতে থাকলো, খুব ইচ্ছে ছিলো কৃষি বিজ্ঞান কিংবা উদ্ভিদ বিদ্যায় পড়ার। অথচ, এইচ, এস, সি, পাশ করতে হলো ঠেলে ঠুলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবারই সুযোগ পেলাম না। আমি মন খারাপ করি না। আমার মতো করে, এমন কৃষিই বলো, আর উদ্ভিদ চর্চাই বলো, পৃথিবীর কেউ পারবে না। জানো, এই বাগান গড়তে কত টাকা খরচ হয়েছে?
আমি মামুলী করেই জিজ্ঞাসা করলাম, কত টাকা?
রেখা বললো, ওই যে দেখছো, সেচ যন্ত্রটা, ওটার জন্যেই তো পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হলো।
আমি মাথায় হাত রেখে বললাম, পাঁচ লক্ষ টাকা? শূন্য কয়টা?
রেখা খিল খিল করেই হাসলো। বললো, শূন্য খুব বেশী না। মাত্র পাঁচটা। কিন্তু আমার জন্যে বাবা একের পেছনে পাঁচটা কেনো, দশটা শূন্যের টাকাও খরচ করতে পারে।
আমি নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম, আমি কিন্তু একশটা শূন্যও খরচ করতে পারি।

আমার কথা শুনে রেখা উঠে দাঁড়ালো। বললো, দুষ্ট ছেলে। একের পেছনে একশটা শূন্য বসালে কত টাকা হবে তুমি অনুমান করতে পারো? আমি ঠেলে ঠুলে পাশ করলেও, অংকে কিন্তু খুবই পাকা।
আমি কোন কিছু না ভেবেই বললাম, অসীম! যা গণনা করা যায়না।
রেখার চেহারাটা হঠাৎই শুকনো হয়ে গেলো। বললো, কি বলতে চাইছো?
আমি হাসলাম। বললাম, না দিদি, কোথায় যেনো শুনেছিলাম, যা কোন দামেই কেনা যায়না, তাকে নাকি অমূল্য সম্পদ বলে। যা কেনা যাবে না, তা অমূল্য সম্পদ হবে কেনো? হবে অসীম মূল্যের সম্পদ। আপনি ঠিক তাই।



রেখা আমার দিকে খানিকক্ষণ গম্ভীর চোখেই তাঁকিয়ে থাকলো। তারপর বললো, তুমি আমাকে কখনোই কিনতে পারবে না। চলো, আমার সেচ যন্ত্রটা তোমাকে দেখাই। ওটা বানাতেই দু বছর সময় লেগেছে।
আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, দু বছর?
রেখা সেচ যন্ত্রটার দিকে এগুতে এগুতে বললো, শুধু কি দু বছর? কত শত শত শ্রমিকের পরিশ্রমও লেগেছে জানো? দিনের পর দিন শ্রমিকরা কলুর বলদের মতোই পাইপ ঘুরিয়েছে, অথচ পানি উঠেনা। পাশে সমুদ্র অথচ পানি উঠে না। কারন, আমাদের বাড়ীটা নাকি একটু উঁচু এলাকায়। মানে সমুদ্র সমতল থেকে অনেক উপরে।

শিশির এর বড় বোন রেখা, একটু কেমন যেনো। নিজ অহংকার করার ব্যাপারগুলো, পারলে রাতারাতিই সবাইকে প্রকাশ করার মনোভাব।
বাগানের ঠিক কোনাতেই, নীল রং এর মিনার এর মতোই একটা কাঠামো। সিঁড়ি রয়েছে। রেখা সেই সিঁড়িটা বেয়েই উপরে উঠতে উঠতে বললো, সবাই ভাবে, এটা সাধারন সুইমিং পুল। আসলে সুইমিং পুল করার জন্যেই এটা বানানো হয়নি। আসল উদ্দেশ্য পানি জমানো। আমার এই বাগানের জন্যে। তবে, মাঝে মাঝে সাতারও কাটি আমি।
এই বলে, লাফাতে লাফাতে মিনারটার উপরের দিকেই উঠতে থাকলো রেখা।

আমি দেখলাম, রেখার স্তন দুটি স্প্রীং এর মতোই লাফাচ্ছে। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে অনেক মেয়েদেরই দুধ নজরে পরেছে। বড় ছোট হরেক রকমের। এমন বিশাল দুধ জীবনে প্রথম। আমার লিঙ্গটা রীতী মতো খাড়া হয়ে উঠলো সে দৃশ্য দেখে।
আমি নীচেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। রেখা মিনারটার সর্বোচ্চ ধাপে উঠে, আমাকে ইশারা করে ডাকলো, কই এসো। এখানে দাঁড়ালে অনেক দূর দূরান্ত দেখা যায়। সাগর, সাগর এর বুকে পানি, নৌকু, জাহাজ, আরো কত কিছু!
আমি সিঁড়িটা বেয়ে উপরে উঠতে থাকলাম।
 
Last edited:
[HIDE]


এত উপর থেকে এই পৃথিবীটাকে জীবনে কখনোই দেখিনি। প্রতিদিন চোখের সামনে থেকে যেমন লাগে, তার চেয়েও অনেক অনেক বেশী সুন্দর লাগতে থাকলো এই নীল সাগরটাকে। আমি যেনো এক নুতন জগতেই হারিয়ে যেতে থাকলাম। হঠাৎই শিশিরের বড় বোন রেখা দিদিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ট শিল্প মনের একটি মেয়ে বলেই মনে হলো। আমি আনন্দ ভরা গলায় চিৎকার করেই বলতে থাকলাম, দিদি, কি সুন্দর এই পৃথিবীটা! কি সুন্দর!
রেখা দিদিও আমার পাশে দাঁড়িয়ে দূরের দৃশ্য দেখতে দেখতে বললো, যখন খুব মন খারাপ থাকে, তখন আমি এখানে উঠি। তখন কেনো যেনো মনটা ভালো হয়ে যায়। নীল আকাশ, দূর দিগন্তে হারিয়ে যেতে মন চায়। ভুলে যাই সমস্ত কষ্ট। সময়ের উপর চরে বেড়াতে থাকি। সময় চলে যায়। অথচ, আমি এখানে থেমে থাকি সময়ের পর সময়। কোন রকম দ্বিধা দ্বন্দ আমাকে স্পর্শ করতে পারে না।

রেখা দিদির কথা গুলো কানে আসছিলো ঠিকই, কিন্তু দূর এর দৃশ্য দেখে আমি এতটাই ভাষাহত হয়ে পরেছিলাম যে, কিছু বলার ভাষা খোঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি শুধু চিৎকার করে বললাম, ফ্যান্টাস্টিক! ভেরী বিউটিফুল!
রেখা দিদি বললো, কে? আমি না ওই দূর দিগন্ত?
আমি রেখা দিদির মুখের দিকেই তাঁকালাম।




সুন্দর এর কখনো তুলনা দেয়া যায় নাকি? রেখা দিদিও ফ্যান্টাসটিক! ভেরী বিউটিফুল! তবে, তার তুলনা বুঝি সে নিজেই। তাই তো কবিরা বলে থাকে, চাঁদের সাথে আমি দেবো না, তোমার তুলনা। তুমি চাঁদ হতে যদি, দূরে রয়ে যেতে। রেখা দিদি আমার পাশেই রয়েছে। দূরে থাকা আকাশের কোন চাঁদ নয়। আমি বললাম, আপনিও ফ্যান্টাসটিক! ভেরী বিউটিফুল!
রেখা দিদি বললো, তুমি খুব চালাক ছেলে, আমাকে খুশী করে আমার মন জয় করতে চাইছো। আমার আপত্তি নেই। চলো, এখানটাতেই বসি। দূরের দৃশ্য দেখে দেখে গলপো করা যাবে।
এই বলে রেখা দিদি ধাপটার উপরই বসলো।

আমিও রেখা দিদির পাশেই বসেছিলাম, খানিকটা দূরত্ব রেখে। রেখা দিদি খিল খিল হাসিতেই বললো, এত দূরে বসলে কেনো? দূরের দৃশ্য দেখতে হয় কাছাকাছি বসে। তাহলে আরো ফ্যান্টাসটিক! আরো বিউটিফুল লাগবে। জানো, পৃথিবীর কোন সুন্দরই একা একা উপভোগ করা যায়না। এই যে দেখো, মানুষ দূর দূরান্ত থেকে সাগর, নদী, পাহাড়, এসব দেখতে যায়। একা একা গিয়ে দেখতে কিন্তু ভালো লাগার কথা না। কারন, সুন্দর হলো প্রকাশ করার জন্যে। কোন সুন্দর দেখে যদি সাথে সাথে তা কাউকে প্রকাশ করা না গেলো, তখন তা মনে দাগ কাটে না।
এই বলে রেখা দিদি খানিকটা আমার গা ঘেষে এসেই বসলো।

রেখা দিদির নরোম বাহুটা আমার বাহুতে ছুই ছুই করছিলো। আমি দূরের পানেই তাঁকালাম। রেখা দিদি মিথ্যে বলেনি। দূরের দৃশ্যগুলো দেখতে আরো বেশী অদ্ভূত সুন্দর লাগছিলো। মনটা আরো বেশী উদার হয়ে উঠলো। সদ্য পরিচয় হওয়া রেখা দিদিকে অনেক কাছের মানুষই মনে হলো, অনেক দিনের চেনা। ভালোবাসারই এক সাথী।




আমার চোখে দূরের পাল তুলা নৌকাটাই পরলো। সত্যিই, ওরকম পাল তুলা নৌকা তো প্রায় প্রতিদিনই দেখি। এমন সুন্দর তো কখনো লাগে না। আমি পাল তুলা নৌকাটা দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়েই বললাম, দিদি, কি সুন্দর পাল!
রেখা দিদি আমার বাহুতে ঠেস দিয়েই খিল খিল হাসিতে বললো, ওটা এত সুন্দর লাগলো তোমার কাছে? পাল তুলা নৌকা কখনো দেখো নি?
আমি লজ্জিত হয়ে বললাম, দেখেছি। তবে, এমন করে কখনোই দেখিনি। এমন সুন্দরও কখনো লাগেনি।
রেখা দিদি বললো, বলেছিলাম না, পাশে যদি কেউ থাকে, তখন সাধারন কোন কিছুও অদ্ভুত সুন্দর লাগে। ওই যে দেখো, ওই গাছটার ডালে দুটু পাখি বসে আছে। এমন দৃশ্য কিন্তু প্রতিদিনই থাকে। চোখেও পরে। অথচ, কেউ আগ্রহ করে দেখে না। বলেও না সুন্দর। আমি কিন্তু ওই পাখি দুটিকে দেখছি। এক জোড়া পাখি, কি অদ্ভুত সুন্দর! যদি শুধু একটা পাখি থাকতো, তাহলে কিন্তু এত সুন্দর লাগতো না। নিসংগ একটা পাখিই মনে হতো।

আমিও পাখি দুটির দিকে তাঁকালাম। রেখা দিদির গায়ের সাথে ঠেস দিয়ে বসে জোড়া পাখি দেখে সত্যিই অপূর্ব লাগছিলো। রেখা দিদি বললো, সকালে জোড়া পাখি দেখলে কি হয় জানো?
আমি বললাম, কি হয়?
রেখা দিদি খিল খিল হাসিতে বললো, নিজেরও জোড়া মিলে। জানো, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বেড়োতেই ওই জোড়া পাখিগুলো দেখেছিলাম।

রেখা দিদি কি বুঝাতে চাইছে বুঝলাম না। আমি ইচ্ছে করেই বললাম, আপনার জোড়া কি তাহলে মিলেছে?
রেখা দিদি খিল খিল হাসিতেই আমার গায়ে গড়িয়ে পরলো। হাসলে এত সুন্দর লাগে রেখা দিদিকে? কি চক চক করা চিরল চিরল মসৃণ দাঁত। আমি পলক ফেলতে পারছিলাম না সেই হাসি দেখে।




রেখা দিদি হাসি থামিয়ে রাখতে পারছিলো না। হাসতে হাসতে একবার আমার গায়ের উপর পরে, আবার অপর পাশে ধাপটার উপর গড়িয়ে পরে। আমি বললাম, এত হাসির কি হলো?
রেখা দিদি হাসি থামিয়ে বললো, জোড়া মানে প্রেম ভালোবাসার কথা বলছি না। বলছি কথা বলার সংগীর কথা। আমার লেখাপড়া ধরতে গেলে এক প্রকার বন্ধ। আমাদের বাড়ীটাও একটু রিমোটে না? তাই কথা বলার সংগী ধরতে গেলে নেই ই। তুমি এলে, তোমার সাথে কথা বলছি, সময় কাটছে, এটা জোড়া হলো না?
আমি বললাম, ও, তা ঠিক।

রেখা দিদি খানিকক্ষণ চুপ চাপ থেকে আবারো বললো, তুমি মাইণ্ড করো না। আমি সবার সাথেই এমন করে কথা বলি। সব সময় একা একা থাকি তো? মানুষ দেখলে শুধু কথাই বলতে ইচ্ছে করে।
আমি বললাম, মনে করার কি আছে? আপনার সাথে দেখা না হলে তো জানতামই না, আপনি এমন রসিক।
রেখা দিদি রাগ করার ভান করে বললো, কি বললে? আমি রসিক? গোপাল ভাড়?

ওরে বাবা, রসিক কি কোন খারাপ কথা নাকি? যারা রসিকতা করে কথা বলতে পারে, তাদেরই তো মানুষ রসিক বলে। কেউ কাউকে রসিক বললে তো খুশীই হয়। বরং নীরস বললেই রাগ করে। আমি আমতা আমতা করতে থাকলাম শুধু। রেখা দিদি আবারো খিল খিল হাসিতে ফেটে পরলো। আমি বললাম, আবার হাসির কি হলো?
রেখা দিদি হাসি থামিয়ে বললো, এই যে, আমার কথা শুনে তুমি যে একেবারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলে? আমার কিন্তু এমন ছেলেদের খুব পছন্দ।
আমি বললাম, কেনো?
রেখা দিদি অপ্রস্তুত হয়েই বললো, কেনো? হুম, কেনো? ছেলেরা বোকা বনে গেলে ভালো লাগে, তাই!




রেখা দিদির মাথায় ছিট টিট নাই তো? থাকুক। খুবই চমৎকার একটা মেয়ে। এমন মেয়ে আমারও পছন্দ। শিশির এর সাথে বন্ধুত্বটা হয়ে খারাপ হয়নি। নইলে এমন চমৎকার একটি মেয়ে পৃথিবীতে আছে জানাই হতো না।

দূর থেকেই দেখলাম, গেইট দিয়ে শিশির ঢুকছে। আমি বললাম, ওই তো শিশির। আমি তাহলে যাই।
রেখা দিদি সহজভাবেই বললো, যাবে, ঠিক আছে যাও।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। এক পা বাড়িয়েও থেমে গেলাম। কেনো যেনো রেখা দিদির কাছ থেকে বিদায় নিতে মন চাইলো না। আরো কিছুটা সময় তার পাশে বসে কাটাতে পারলেই বোধ হয় ভালো হতো। শিশিরটাও যদি আরেকটু দেরী করে আসতো?
আমি পেছন ফিরে তাঁকালাম। রেখা দিদি ধাপটার উপর ঝুকে বসে খিল খিল করে হাসতে থাকলো। আমার চোখে পরলো জামার গলে বৃহৎ দু স্তন এর ভাঁজে। রেখা দিদি খিল খিল হাসিতেই বললো, কি যেতে মন চাইছে না তো?
আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, না, মানে আসি।

আমি নেমে এলাম নীচে। শিশির এর দিকেই এগিয়ে গেলাম। তবে মনের ভেতর রেখা দিদিই যেনো চুপি দিতে থাকলো বার বার। শিশিরকে ডাকলাম ঠিকই, তবে আবারো পেছন ফিরে রেখা দিদির দিকেই তাঁকালাম। রেখা দিদি মিষ্টি হাসিতেই হাত নেড়ে বিদায় জানালো।

দুপুরের আগ পর্য্যন্ত শিশির এর সাথেই সময় কাটালাম। শিশির অনেক কথাই বলে যাচ্ছিলো। কোনটাই আমার কানে ঠিক মতো ঢুকছিলো বলে মনে হলো না। আমি এদিক সেদিক তাঁকিয়ে শুধু জোড়া পাখিই খোঁজতে থাকলাম। জোড়া পাখি দেখলে কি সত্যিই নিজের জোড়া মিলে নাকি?
কত পখিকেই উড়ে যেতে দেখলাম। একটা পাখিও দেখলাম। তিনটা পাখিও দেখলাম। হুইট টিটি করে এক ঝাক পাখিও আকাশে উড়ে যেতে দেখলাম। কিন্তু জোড়া পাখি চোখে পরলোনা।



[/HIDE]
 
[HIDE]


দুপুরের দিকে বাড়ী ফিরে এসে অবাক হয়ে দেখলাম, দরজার সামনে উঁচু ধাপটায় বসে আছে খুকী। আমি কি স্বপ্ন দেখছি, নাকি বাস্তব কিছুই বুঝতে পারলাম না। কাছাকাছি গিয়ে অবাক গলায় বললাম, খুকী তুমি? হঠাৎ কি ব্যাপার?
খুকী হাসলো, বললো, এত গুলো দিন হয়ে গেলো, তুমি তো একবারও খোঁজ নিলে না, আমি কি বেঁচে আছি, নাকি মরে গেছি, নাকি মরে বেঁচে আছি।

খুকী দিন দিন আরো সুন্দরী হচ্ছে। বুকটাও আগের চাইতে অনেক ফুলে ফেপে উঠেছে। এত বড় ধীঙ্গী বয়সে এখনো হাফ প্যান্ট পরে। ফুলা ফুলা উরুগুলোও নজরে পরে। আমি খুকীকে আপাদ মস্তক একবার দেখে বললাম, তুমি যেমন করে কাউকে না বলে পালিয়ে গেলে, খোঁজ খবর নেই কি করে?
খুকী বললো, আমি পালাতে চাইনি। তোমার ভালোবাসার উর্মি আমাকে বাধ্য করেছিলো। কিন্তু এখন কি হলো? এসেই তো শুনলাম, উর্মিও নাকি তোমার মনে দাগা দিয়ে পালিয়েছে?

আমি এদিক সেদিকই তাঁকালাম। বললাম, বাদ দাও ওসব কথা। ছোট আপুর সাথে দেখা হয়েছে?
খুকী বললো, দেখা হবে না কেনো? ছোট আপুই তো আমাকে খবর দিয়ে পাঠিয়েছে। জানালো সামনে বড় পরীক্ষা। এদিকে গানের ফাংশনও আছে। রান্না বান্নার নাকি সময় পায়না। তবে, বলে রাখি, তোমার জন্যে কিন্তু আসিনি।
আমি বললাম, এসেছো, ভালো করেছো, আমার মাথা খেয়েছো। তবে, আমিও বলে রাখি, তোমার সাথে যে আমার একটা সম্পর্ক ছিলো, সেটা যেনো ছোট আপু ঘুনাক্ষরেও জানতে না পারে।
খুকী বললো, আমি অত বোকা না। গরীব এর ইজ্জত আছে। এত সহজে প্রেম এর কথা বলে বেড়ায় না।




আমি বাড়ীতে ঢুকে সরাসরি দুতলায় মৌসুমীর ঘরে গিয়েই ঢুকলাম। দেখলাম, মৌসুমী ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসে সাজ গোজ করছে। আমি পেছনে দাঁড়িয়েই বললাম, ছোট আপু, তুমি কি খুকীকে খবর দিয়ে পাঠিয়েছিলে?

ইদানীং মৌসুমী সাজ গোজের প্রতি একটু বেশী ঝুকে পরেছে। মৌসুমীর গানের গলা ভালো। ছোটকাল থেকেই পিয়ানো বাজাতো, সেই সাথে গানও করতো। স্কুলের ফাংশনে সেবার গান করতেই এক রেকর্ডিং সংস্থার নজরে পরেছিলো তাকে। তারপর থেকে অফার করেছিলো গানের ক্যাসেট বেড় করতে। বেশ কয়েকবার গিয়েছেও সেই সংস্থায়। তারপর থেকেই হঠাৎ করে রূপ চর্চার প্রতিও ঝুকে পরেছে। মৌসুমী আয়নাতে নিজ চেহারায় মনোযোগী হয়েই, গালে ব্রাশটা দিয়ে রোজ মাখতে মাখতে বললো, হ্যা, পাঠিয়েছিলাম। সামনে আমার এস, এস, সি, ফাইনাল। এদিকে রেকর্ডিং সংস্থাটাও বার বার চাপ দিচ্ছে একটা ক্যাসেট যেনো যে কোন ভাবেই বেড় করি। দশ দশটা গান। প্রেক্টিস, রিহ্যার্সাল, রেকর্ডিং। রান্না বান্না করে কি ওসব আমার পক্ষে সম্ভব? ক্যাসেটটা বেড় হয়ে যাক, তারপর খুকীকে খুকীর পথ দেখতে বলবো।

মৌসুমীর কথা শুনে আমি ঈষৎ ক্ষুন্ন হলাম। নিজের অজান্তেই বলে ফেললাম, এমন স্বার্থপর এর মতো কথা বলছো কেনো। খুকী ছোটকাল থেকেই আমাদের বাড়ীতে ছিলো। একটু না হয় ভুলই করেছিলো। তাই বলে, স্বার্থ ফুরিয়ে যাবার পর বিদায় করে দেবে?




মৌসুমী ঠোটে লিপিষ্টিক এর আবরনটা দিয়ে আমার দিকেই ঘুরে বসলো। মিষ্টি গেঁজো দাঁত গুলো বেড় করে খিল খিল হাসিতেই বললো, ধরা পরে গেলে তো?
আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, মানে?
মৌসুমী বললো, মানে সহজ। খুকীর প্রতি তোমার সব সময়ই এক ধরনের দুর্বলতা কাজ করে। সেটা ভালো, মানবিকতা। তবে, তারপরও তোমার মনে রাখা উচিৎ খুকীর সাথে আমাদের একটা সামাজিক ব্যাবধান আছে। ওই ব্যাবধান ডিঙিয়ে যেনো খুকীর প্রতি কোন প্রকার দুর্বলতার সৃষ্টি না হয়।

খুকীর প্রতি যে আমি খুবই দুর্বল, কথাটা তো আর মিথ্যে নয়। খুকী আমাদের বাড়ীর কাজের মেয়ে। সামাজিক একটা ব্যাবধান তো আছেই। এসব ব্যাবধান নিয়ে যুগে যুগে কত সহস্র প্রেমের গলপো রচনা হয়েছে, তা আমি নিজেও তো গুনে বলতে পারবো না। আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, না, তুমি যা ভাবছো, তেমন কিছুই হবার সম্ভাবনা নেই। খুকী অসাধারন একটা মেয়ে। গরীব এর মেয়ে তো? তাই ইজ্জত নিয়ে খুবই ভাবে।

আমার কথা শুনে মৌসুমী খিল খিল করেই হাসলো। বললো, ওখানেই তো সমস্যা। যারা খুব বেশী ঘুমটা দেয়, আঁড়ালে তারা কিন্তু ন্যাংটুই থাকে। খুকী খুবই বুদ্ধিমতী মেয়ে, আমিও তা মানি। ও হলো একটা ন্যাংটি ইদুর। সামনে খুবই ভালো। আঁড়ালে কাপর কাটে।
আমি বুঝলাম না মৌসুমী এমন খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কথা বলছে কেনো? শুধুই কি সন্দেহ? আমি কথা বাড়াতে চাইলাম না। বললাম, ক্ষুধা লেগেছে। খাবে না?



মৌসুমী উঠে দাঁড়ালো। বললো, না, স্টুডিওতে যেতে হবে। সেখানে খাবার এর আয়োজন করবে বলেও জানিয়েছে। খুকী বোধ হয় এতক্ষণে তোমার খাবার এর আয়োজন করে ফেলেছে। তুমি খেয়ে নিও।

আমার কেনো যেনো মনে হলো, এই কয়দিনে মৌসুমী অনেক বদলে গেছে। এতদিন তার চেহারায় হতাশার যে একটা ছায়া দেখা যেতো, সেটা আর নেই। বরং তাকে দেখে অনেক বেশী আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। সেবার স্কুল এ তার নিজ বিদায়ী অনুষ্ঠানে তার নিজ গাওয়া গানটাই বুঝি তাকে আত্ম বিশ্বাসী করে তুলেছিলো, এক বার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি। হাসি হাসি, পরবো ফাসী, দেখবে জগৎ বাসী।
তারপর থেকেই চারিদিক থেকে অফার আসতে থাকলো বড় শিল্পী হবার, কন্ঠ শিল্পী। আমার ক্ষুধাটা মিলিয়ে গেলো হঠাৎই। আমি মৌসুমীর দিকেই এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে রইলাম। কি অপূর্ব দাঁত মৌসুমীর। মাঝের দুটি দাঁত, আর সেই দুটি দাঁতের পাশেই ঈষৎ নীচে ঈষৎ ছোট দুটি দাঁত। সেগুলোর পাশেই ঈষৎ বড় চৌকু দুটি দাঁত। মৌসুমী হাসলে, এর চাইতে বেশী দাঁত আর চোখে পরে না। মাত্র ছটি দাঁত, অসম্ভব পাগল করে আমাকে। আমি আহলাদ করেই বললাম, ছোট আপু, তোমাকে অপূর্ব লাগছে। একটা চুমু দেবে না?
মৌসুমী মিষ্টি হেসেই বললো, না, এখন না। দেখছো না ঠোটে লিপিষ্টিক দিয়েছি। এখন তোমাকে চুমু দিলে, লিপিষ্টিক নষ্ট হয়ে যাবে। স্টুডিও থেকে ফিরে এলে সবই হবে। এখন আমাকে যেতে দাও।
মৌসুমী আত্মবিশ্বাসী একটা ভাব নিয়েই হন হন করে ঘর থেকে বেড়িয় গেলো। আমি তার পেছনটার দিকেই তাঁকিয়ে রইলাম।




খুকী ফিরে এসে আমার মনে নুতন করেই উর্মির কথা স্মরন করিয়ে দিলো। মৌসুমী চলে গেছে স্টুডিওতে, গানের রেকর্ডিং এ। দুপুরে খবার দাবার এর পর, পড়ার টেবিলেই বসেছিলাম। আমার ছোট বোন ইলা কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করে হঠাৎই ঘুমিয়ে পরেছে। আমি পড়ার টেবিলের পাশে বসে, জানালা দিয়ে দূরের পানেই তাঁকিয়ে রইলাম। হঠাৎই ঘুঘু পাখির ডাকটা আমার মন উদাস করে দিলো।

মাঝে মাঝে আমারও মনে হয়, আমারও কোন মানসিক রোগ আছে। ঘুঘু পাখির ডাক শুনলে আমি ছটফট করতে থাকি। মনে হয় উর্মিই বোধ হয় করুন সুরে ডাকছে। আমি পাগলের মতো ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলাম। এক ছুটে সেই তিন রাস্তার মোড়ে। ডান দিকে ঘাড়টা ঘুরিয়ে উর্মিদের বাড়ীটার দিকেই চোখ রাখতে চাইলাম।

চোখে পরলো উর্মির মাকে। আধুনিকা পোশাক। হলদে স্কীন টাইট টপস, আর ছিটের লং স্কার্ট। কেনো যেনো কখনোই মহিলার দিকে ভালো করে চোখ তুলে তাঁকাইনি। সেদিনও চোখে পরতেই চোখ ফিরিয়ে নিতে চাইলাম। অথচ, মহিলা আমাকে ইশারা করলো। আমি সুবোধ ছেলের মতোই এগিয়ে গেলাম। উর্মির সাথে অদ্ভুত চেহারার মিল। সরু ঠোট, ঝক ঝকে সাদা দুধে দাঁত। বললো, কি নাম যেনো তোমার?
আমি বললাম, খোকা।
উর্মির মা বললো, ও খোকা? বাসায় আসো না কেনো? উর্মি নেই বলে? উর্মি অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে। আগামী মাসেই বোধ হয় আসতে পারবে। আবারো স্কুলে একটা ক্লাশের গ্যাপ হয়ে যাবে। তাই মন খারাপ করেই চিঠি লিখেছে। তুমি কিন্তু ওকে শান্তনা দেবে।




উর্মির মায়ের কথা শুনে আমার মনটা খুব বিচলিত হয়ে উঠলো। খুকীও ফিরে এলো, উর্মিরও বুঝি ফিরে আসার সময় হলো। আবারোও তো দুজনে সাপে নেউলের মতোই লেগে থাকবে।

আমি বাড়ী ফিরে না গিয়ে উপজেলা মাঠের গার্ডেনের দিকেই এগুতে থাকলাম। খুবই সুন্দর উপজেলা গার্ডেনটা। সবুজ গাছের যেমনি ছড়াছড়ি, পুরু গার্ডেনটাতে সবুজ সুন্দর ঘাস চোখ জুড়িয়ে দেয়। চারি পাশে পাকা পীচ ঢালা সড়ক। আমি সেই সড়কেই একাকী ধীর পায়ে এগুচ্ছিলাম অন্য মনস্ক ভাবেই। হঠাৎই একটা সাইকেল আমার গা ঘেষে সাই সাই করে চলে গেলো। পেছন ফিরে তাঁকালাম। ক্রশের শার্ট গায়ে, মাথায় বেতের টুপি, পিঠে সাউডার ব্যাগ। সীটের উপর না বসে, প্যাডেলের উপর ভর করেই দ্রুত সাইকেল চালিয়ে দূরে মিলিয়ে যেতে থাকলো।
আমার মেজাজটাই খারাপ হলো। সাইকেল চালাবে বাপু, একটু সাবধানে চালাতে পারো না? যত্তসব। আমি আপন মনেই গাল দিলাম। তারপর আবারো নিজ পথে এগুতে থাকলাম।

বিশ গজও এগুতে পারলাম না। সাইকেলটা পুরু গার্ডেন প্রদক্ষিণ করে আবারো আমার গা ঘেষে সাই সাই করে ছুটে গেলো। তবে, এক নজর যা চোখে পরলো, তাতে করে মনে হলো কোন ছেলে নয়। পরনে লাল রং এর টপস। তার উপরই ক্রসের একটা শার্ট। শার্টটার সব বোতামই খুলা। উঁচু উঁচু বুক টপসটার উপর দিয়ে লাফাচ্ছিলো। খুবই রূপসী একটা মেয়ে। কোথায় যেনো দেখেছি তাকে। অথচ, ঠিক মনে করতে পারছিলাম না।
আমার ধারনা, মেয়েটি আবারো পুরু গার্ডেন প্রদক্ষিন করে এই পথেই আসবে। তখন ভালো করেই দূর থেকে তার চেহারাটা দেখার চেষ্টা করবো। আমি চোখ সামনে রেখেই হাঁটতে থাকলাম।




আরো বিশ গজ এগুতেই, সাইকেলটা আবারো ছুটে আসতে থাকলো। আমি দূর থেকেই মেয়েটির চেহারা পর্য্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। যে চেহারাটা চোখে পরলো, তাতে করে আমি হতভম্ব। আর কেউ নয়, গতকালই আমাদের ক্লাশে প্রথম এসেছিলো। যার চোখ দেখে আমি ভাষাহীন হয়ে পরেছিলাম। মুনা।
মুনা আবারো আমার গা ঘেষেই সাইকেলটা ছুটিয়ে নিতে চাইছিলো। আমি নিজেকে সরিয়ে নিলাম। মুনা রিনি ঝিনি সুরে খিল খিল হাসি হেসে সাইকেল চালিয়ে নিজ পথেই ছুটে যেতে থাকলো।

মুনা কি ইচ্ছে করেই আমার সাথে মজা করতে চাইছে নাকি? কিন্তু কেনো? মুনার সাথে ভালো করে পরিচয়ও তো হয়নি এখনো। গতকাল ক্লাশে আমার পাশেই টীচার বসতে বলেছিলো বলে নাকি?
আমার মনটা হঠাৎই উদাস হয়ে গেলো। নিঃসন্দেহে মুনা চমৎকার একটি মেয়ে। খানিক মোটিয়ে গেছে। মোটিয়ে যাওয়াতেই তাকে আরো বেশী সুন্দর লাগে, সেক্সী লাগে। গাল দুটি যেমনি ফুলা ফুলা লাগে, ঠোটগুলোও মনে হয় রসালো। আর স্তন দুটিও অসম্ভব বড় বড় মনে হয়।

মুনা যেনো হঠাৎ করেই আমার মাথার ভেতর থেকে উর্মির ভাবনাটা সরিয়ে দিলো। আমি ঠিক করলাম, মুনা যদি আবারো এই পথে ছুটে আসে, তাহলে তার পথ আগলে দাঁড়াবো।

আমি ধীর পায়েই হাঁটতে থাকলাম। মুনার আবারো পুরু গার্ডেনটা প্রদক্ষিণ করে ফিরে আসার প্রহরই গুনতে থাকলাম। থেকে থেকে গার্ডেনের গাছ গাছালীর ফাঁকে মুনার অবস্থানটাও পর্য্যবেক্ষণ করতে থাকলাম।
ধীর পায়ে দশ গজ এগুতেই মুনাকে দেখলাম ছুটে আসতে সাইকেল চালিয়ে। আমি তার পথ আগলেই দাঁড়ালাম। মুনা কৌশলে সাইকেলটা বাঁকিয়ে নিয়ে যেতেই তার মাথা থেকে বেতের টুপিটা পরে যেতে থাকলো।




মুনা কোন কিছু পরোয়া না করে, সাইকেলের সীটে বসে খিল খিল হাসির রিনি ঝিনি কিছু সুর উপহার দিয়ে দ্রুত ছুটতে থাকলো সাইকেলটা নিয়ে। আমি মুনার ছুটে পরা বেতের টুপিটা হাতে নিয়ে তার পশ্চাদ ভাগের দিকেই তাঁকিয়ে রইলাম। ডাকলাম, মুনা, তোমার টুপি।
মুনা কিছু শুনতে পেলো বলে মনে হলো না। মুহুর্তেই বিলীন হয়ে গেলো গার্ডেনের ওপাশে গাছ গাছালীর আঁড়ালে।

আমি বেতের টুপিটা হাতে নিয়েই মুনার পুনরায় ফিরে আসার অপেক্ষা করতে থাকলাম। ধীর পায়ে দশ গজ এগুলাম, মুনা ফিরে আসছে না। বিশ গজও এগুলাম, তারপরও মুনাকে ফিরে আসতে দেখলাম না। গাছ গাছালীর আঁড়ালেও তাকে খোঁজতে থাকলাম, নাহ মুনার নিশানা চোখে পরছে না। হঠাৎ কোথায় উধাও হয়ে গেলো? আমার মনটা চঞ্চল হয়ে উঠলো। পেছন ফিরেও তাঁকালাম, উল্টু ঘুরে পেছন থেকে ছুটে আসছে না তো?

নাহ, মুনা পেছনেও নেই। আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। নিজের উপর নিজেরই রাগ হলো। শুধু শুধু মুনার পথ আগলে দাঁড়াতে গেলাম কেনো? শীতের পাখিদের একবার বিরক্ত করলে তো পুনরায় তাদের আসার কথা না। আমি রাস্তার পাশে সবুজ ঘাসের উপরই বসে পরলাম। ভাবতে থাকলাম মুনার কথাই। অসম্ভব চমৎকার চেহারার একটা মেয়ে। উর্মির সাথে যদি পরিচয় না হতো, তাহলে বোধ হয় মুনার প্রেমেই প্রথমে পরতে হতো আমাকে। কিন্তু উর্মিও তো ফিরে আসছে। উর্মি যদি পুরনো প্রেমের দাবী নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, তখন কি করবো? আর খুকী? সেও কি আমাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবে?




আমি আনমনে যখন ভাবছিলাম, ঠিক তখনই মুনা হঠাৎই সাইকেল চালিয়ে সাই সাই করে ছুটে এসে, সাইকেল চালিয়ে যেতে যেতেই ডাকলো, খোকা? আমাকে ছুতে পারবে? ছুতে পারলে তোমাকে একটা মজার গিফট দেবো।

আমি হঠাৎই সম্ভিত পেলাম। উঠে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই মুনা অনেক দূর চলে গেলো। মাউন্টেইন বাইক, স্পীডও খারাপ না। এত দূর চলে গেলে ছুবো কিভাবে? আর ছুতে পারলে কি এমন মজার গিফট দেবে? কেনোই বা দেবে? মুনা আমার সাথে মজা করছে না তো? কিন্তু আমার সাথে মজা করে ওর কি লাভ?

মুনা আবারো পুরু গার্ডেনটা প্রদক্ষিণ করে ফিরে আসতে থাকলো। আমি আর তার পথ আগলে দাঁড়ালাম না। রাস্তার পাশ থেকেই দূর থেকে মুনার বেতের টুপিটা দেখিয়ে ইশারা করে বললাম, মুনা, তোমার টুপি। তখন মাথা থেকে পরে গিয়েছিলো।
মুনা সাইকেলের স্পীড খানিক কমিয়ে ছুটতে ছুটতেই বললো, জানি, ওটা তোমাকে দিয়ে দিলাম। তুমি যদি আমাকে ছুতে পারো, আরো একটা মজার গিফট দেবো।
আমি বোকার মতোই মুনার পেছনে পেছনে দৌড়াতে থাকলাম। দৌড়াতে দোড়াতেই বললাম, এত স্পীডে সাইকেল চালালে ছুবো কি করে?
মুনা পেছন ফিরে তাঁকিয়ে বললো, সিনেমার হিরোদের দেখো না? কেমন করে দৌড়ে বাস ট্রাক গাড়ী সব কিছুই ছুয়ে ফেলে। এটা তো সামান্য সাইকেল।
মুনার কথায় আমার প্রচণ্ড জেদ উঠলো। দৌড়ে খুব একটা ভালো আমি না। তারপরও মুনার সাইকেলের স্পীড এর সাথে জয়ী হবার বাসনা জেগে উঠলো আমার। আমি মুনার পেছনে চিতা বাঘের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছুটতে থকলাম।



[/HIDE]
 
[HIDE]



আশি গজেরও বেশী দৌড়ালাম। জেদ করলে মানুষ অনেক কিছুই পারে। আমিও পারলাম। মুনার মাউন্টেইন বাইকটা পেছন থেকে টেনে ধরলাম আমি। মুনা আহ করে কঁকিয়ে সাইকেলে ব্রেইক চাপলো। আমি মুনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। বললাম, এত সব এর মানে কি?
মুনা কিছু বললো না। চক চক করা মিষ্টি দাঁতের খিল খিল করা হাসিই শুধু একটা উপহার দিলো। এর চাইতে মজার গিফট বোধ হয় মুনার কাছে আমার আশা করার কথা না। কি আছে এই হাসিতে? গেঁজো দাঁতের হাসি। অপূর্ব! আমার মেঝো বোন মৌসুমীর গেঁজো দাঁতের মতো অতটা গভীর না হলেও, অপূর্ব লাগে। কারন, মুনার গায়ের রং মিষ্টি। একটু স্বাস্থ্যবতী, তাই ঠোটগুলো অধিকতর রসালো। আর তাই গেঁজো দাঁতগুলো আরো বেশী অপূর্ব লাগে। আমি বললাম, ছুলাম তো, আমার উপহার?
মুনা বললো, অবশ্যই পাবে। তবে, আমার সাথে কিছুক্ষণ খেলতে হবে।
আমি বললাম, খেলতে হবে? কি খেলা?
মুনা বললো, আজকে ফুটবল।
আমি বললাম, বলো কি? তুমি ফুটবল খেলতে পারো?
মুনা বললো, শুধু ফুটবলই না। বাস্কেট বল বলো, টেনিস বল বলো, সবই পারি। বাবা রেফারী, তাই। অবশ্য আমাকে সবাই রেফারীর মেয়ে বলে ডাকে। এখানে এসে যেনো তুমি অন্তত না ডাকো, তাই একটু মজা করলাম।
আমি বললাম, রেফারীর মেয়ে ডাকলে ক্ষতি কি? তুমি নিজেই তো বললে, তোমার বাবা রেফারী।
মুনা বললো, জানিনা, খেলোয়াড় এর মেয়ে বললে যতটা না খুশী হতাম, রেফারীর মেয়ে বললে, গা জ্বালা করে। তুমি কখনো ডাকবে না। কথা দাও?
আমি বললাম, ঠিক আছে।




মুনা তার সাইকেলটার উপর থেকে নেমে রাস্তার পাশে রাখলো। কাঁধের উপর থেকে সাউডার ব্যাগটা নামিয়ে ব্যাগের ভেতর থেকে বিশাল একটা বল বেড় করে নিলো। বললো, মাই বল। আর্জেন্টিনা থেকে অর্ডার করে বানানো। শুধু আমার জন্যে। আমার ফুটবল ভালো লাগে না। বাস্কেট বলই আমার খুব পছন্দ। তুমি চাইলে এটাও তোমাকে দিয়ে দেবো। ফুটবল খেলতে পারো তো?

মুনা এক সংগে এত গুলো কথা বললো যে, কোনটার কি উত্তর দেবো বুঝতে পারলাম না। আমি মুনার দিকে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাঁকিয়ে রইলাম। মুনা বলটা মাঠে ছুড়ে চমৎকার করে দু পায়ে ঠেলে ঠেলে খেলতে থাকলো। মুনার দুধগুলো চমৎকারই বটে। লাল টপসটার ভেতর থেকেও চমৎকার দোলছিলো। মুনা আমার চোখের দৃষ্টি টের পেয়ে, শার্টটার ঠিক মাঝের বোতামটা লাগিয়ে, খিল খিল হাসিতেই বললো, এদিকে তোমাকে তাঁকাতে বলিনি। বলেছি ফুটবল খেলতে পারো কি না।
আমি বললাম, স্যরি, কখনো খেলিনি।
মুনা বলটা আমার দিকে কিক করে বললো, ঠিক আছে, আমি শিখিয়ে দেবো। অবশ্য বাবার মতো করে শেখাতে পারবো না। এসো।

মুনা সত্যিই আমার জীবনে বিধাতার পাঠানো খুবই চমৎকার একটি উপহার। বিধাতা কি করে জানে, গেঁজো দাঁতের মেয়ে আমার এত পছন্দ? আর তেমনি গেঁজো দাঁতের একটি মেয়ে রেফারীর মেয়েই হউক, আর কোন রাজকন্যা কিংবা মেথর কন্যাই হউক, আমি তাকে যে কোন মূল্যে হলেও নিজের করে নেবো। আমি এগিয়ে গেলাম বলটার ধারেই। আমি বলটাতে লাথি দিলাম। কিভাবে, কোনদিকে গেলো, কিছুই বুঝতে পারলাম না।




মুনা খিল খিল করেই হাসতে থাকলো। কি মিষ্টি হাসি মুনার! কার হাসি বেশী সুন্দর? উর্মির? মুনার? নাকি আমার মেঝো বোন মৌসুমীর? মুনা বললো, কোথায় বল ছুড়লে?
আমি বললাম, ছুড়েছিলাম তো তোমার দিকেই। পেছনে গেলো কি করে?
মুনা বললো, প্রথম প্রথম এমনই হয়। আমি তোমাকে সব শিখিয়ে দেবো। তবে একটাই শর্ত। আমাকে কখনো রেফারীর মেয়ে ডাকতে পারবে না। কেউ যদি তোমার সামনে ডাকেও, তাহলে ঠিক ঠিক প্রতিবাদ করতে হবে।

মুনা কি যেনো মজার গিফট করবে বলেছিলো। সেসব আমি ভুলে গেলাম বেমালুম। আমি ফুটবল খেলা শেখাতেই মনযোগী হলাম। একটা মেয়ে, অথচ এত সুন্দর ফুটবল খেলার কৌশল জানে। সারা মাঠ দৌড়ে দৌড়েই আমাকে ফুটবল খেলানো শেখালো।

দৌড়ে দৌড়ে ঘেমে গেছে মুনা। ফর্সা চেহারাটাও লাল হয়ে গেছে। সে তার পরনের শার্টটা খুলতে খুলতে বললো, আমার বুকের দিকে তাঁকাবে না কিন্তু। খুব ঘেমে গেছি। একটু গা টা শুকুতে দাও।

মুনা যদি নিষেধ করে, তাহলে মুনার বুক কেনো, মুনাকে আরো কাছে পাবার জন্যে তার মিষ্টি মুখটার দিকেও না তাঁকিয়ে থাকতে পারবো আমি। মনের গভীরে মুনার যে ছবি এঁকে ফেলেছি আমি তার দিকেই সারা জীবন তাঁকিয়ে তাঁকিয়ে জীবনে সুখের মহল গড়ে তুলতে পারবো আমি। আমি মুনার বুকের দিকে তাঁকালাম না।
মুনা খিল খিল করেই হাসলো। বললো, তুমি একটা বুদ্ধু।
আমি বললাম, বুদ্ধু কি?
মুনা বললো, বুদ্ধু মানে বোকা। কালকেও টিচার যদি তোমার পাশে বসতে বলে, আমি বসবো না।




মুনাকে আমি বুঝতে পারলাম না। সে কি আমাকে খুব পছন্দ করে, নাকি খুব রেগে আছে। পছন্দই যদি করে, তাহলে তারই বা কারন কি? আর রেগেই যদি থাকে, তারই বা কারন কি? আমিও ছাড়ার পাত্র না। বললাম, আমি কি আমার পাশে তোমাকে বসতে বলেছি নাকি? তুমি আমার পাশে বসলেই কি, আর না বসলেই কি?
মুনা হঠাৎই বললো, ও, তাই নাকি? চলো।
আমি বললাম, কোথায়?
মুনা বললো, আহা আসতে বলছি এসো।
এই বলে মুনা আমার হাতটা টেনে ধরেই এগুতে থাকলো। আমাকে নিয়ে ওদিকটার ফুটবল কিক দেবার দেয়ালটার আঁড়ালেই এগিয়ে এলো। তারপর তার বুকের উপর থেকে শার্টটা পুরুপুরি সরিয়ে দেয়ালে গা ঘেষে বুক ফুলিয়ে দাঁড়ালো। তারপর, ডাগর ডাগর চোখে আমার দিকে মায়াবী দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে রইলো।
আমি দেখলাম, লাল টপসটার ভেতর থেকে অসম্ভব উঁচু দুটি স্তন ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। আমার লিঙ্গটা চর চর করে উঠে খাড়া হয়ে উঠলো। তারপরও কেমন যেনো ভয় ভয়ও করতে থাকলো। আমি বললাম, এখানে কেনো ডেকে আনলে।
মুনা গম্ভীর হয়েই বললো, তুমি বুদ্ধু বলে। হুম এখন দেখো।
আমি বললাম, কি দেখবো?
মুনা সহজ ভাবেই বললো, আমার বুক। ক্লাশে তো আঁড় চোখে কতবার তাঁকিয়েছিলে। এখন সরাসরি দেখো।
আমি বললাম, স্যরি।
মুনা বললো, এই জন্যেই বলি, তুমি একটা বুদ্ধু। কেউ ইচ্ছে করে দিলে নিতে চাও না। অথচ, একই জিনিষ চুরি করতে খুব পছন্দ করো।
মুনা একটু থেমে বললো, বলেছিলাম, আমাকে ছুতে পারলে মজার একটা গিফট দেবো। সেটা দিচ্ছি। চোখ বন্ধ করো।
আমি বললাম, চোখ বন্ধ করবো কেনো?
মুনা বললো, করতে বলছি করো।
আমি চোখ বন্ধ করলাম। অদ্ভুত নরোম এক জোড়া ঠোটের স্পর্শ পেলাম আমার ঠোটে।




পরদিনই স্কুলে একটা অঘটন ঘটে গেলো। মুনা ক্লাশে ঢুকতে না ঢুকতেই, কিছু কিছু ছেলে নিজেকে আঁড়াল করেই ডাকতে থাকলো, রেফারীর মেয়ে!
আমি ওই কোনার পেছনের বেঞ্চেই বসি। মুনা তা জানে। মুনা আমার দিকেই তাঁকালো। মুনা আমার দিকে তাঁকালে কি হবে? আমার কি এত সাহস আছে নাকি যে, প্রতিবাদ করে সবার মুখ সামলাবো? আমি চোখ নামিয়ে রাখলাম।

মুনা সত্যিই অসাধারন একটা মেয়ে। সে কাউকে পাত্তা দিলো না। হাই বেঞ্চের উপর দু পা তুলে বসলো। তারপর অট্ট হাসিতে ফেটে পরলো। অট্টহাসিতেই বলতে থাকলো, হ্যা হ্যা, ডাকো! আমার শুনতে খুব ভালো লাগছে। আমি তোমাদের স্কুলে নুতন। কিন্তু তোমাদের কাছে আমি নুতন না। তা জেনে খুব ভালো লাগছে। কিন্তু, তোমাদের বন্ধুদের মাঝে যে পুরনো একটা বুদ্ধু আছে তা জানো?

মুহুর্তেই ক্লাশে পিন পতন স্তব্ধতা বিরাজ করলো। মুনা আমার দিকেই এগিয়ে এলো। ধমকেই বললো, সরো।
আমি বেঞ্চ থেকে বেড়িয়ে সরে দাঁড়ালাম। মুনা ফিশ ফিশ করেই বললো, প্রমিজ করেছিলাম নিজের সাথে, টিচার বললেও তোমার পাশে বসবো না। তারপরও বসছি। তোমাকে কিছু শিক্ষা দেবার জন্যে।

এত মিষ্টি চেহারার একটি মেয়ে মুনা। এমন কঠিন ভাষায় কথা বলে কেনো? আমার কি দোষ? আমি একা ক্লাশ শুদ্ধ ছেলেদের সাথে প্রতিবাদ করে পারতাম নাকি? আমি কিছুই বললাম না। মুনা বেঞ্চের ভেতর ঢুকতেই, আমি মাথা নীচু করেই বসলাম। মুনা বিড় বিড় করেই বললো, বুদ্ধু কোথাকার।



মুনা আমাকে এক প্রকার বোকা বানিয়ে ফেলেছিলো সেদিন। মুনার উপর রাগই হয়েছিলো খুব। ক্লাশেও মন বসলো না।
স্কুল ছুটির পরও কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করলো না। শিশির অনেক ডাকলো, পাত্তা দিলাম না। অনেকটা মন খারাপ করেই বাড়ী ফিরছিলাম। বাড়ীর কাছাকাছি ঠিক তিন রাস্তার মোড়ে আসতেই, ওপাশে চোখে পরলো উর্মির মাকে। কে বলবে তিন তিনটি ছেলে মেয়ের মা এই মহিলা।
উর্মি প্রায়ই বলতো, ওর মায়ের বয়স খুব বেশী হয়নি। ওর বাবা যখন কলেজে পড়ে, আর ওর মা যখন ক্লাশ এইটে পড়ে, তখন পালিয়ে বিয়ে করেছিলো। কারন, উর্মি তখন তার মায়ের পেটে ছিলো। বলেছিলো, অসম্ভব সুন্দরী, পরিচয় করিয়ে দেবে। অথচ, কখনোই পরিচয় করিয়ে দেয়নি।

উর্মি তার মামার বাড়ী চলে যাবার পরই বেশ কয়েকবার দেখেছিলাম তার মাকে। সত্যিই অসম্ভব সুন্দরী এক মহিলা। সুন্দরীর চাইতেও, চেহারায় এক ধরনের আভিজাত্য আছে। যার কারনে বয়স বুঝা যায়না। হঠাৎ দেখলে চব্বিশ পঁচিশ বছর বয়সের যুবতী বলেই মনে হয়।
সেদিনও আমাকে ইশারা করলো। আমি কাছে যেতেই বললো, স্কুল থেকে ফিরছো বুঝি? উর্মি থাকলে ও ও হয়তো এমন সময়েই ফিরে আসতো। মনটা মানে না। মা বাবাকে ছেড়ে ছেলে মেয়েরা দূরে থাকলে কত কষ্ট লাগে বলো তো? তা ছাড়া উর্মি আমার প্রথম তৃষ্ণার প্রথম মেয়ে।

আমি বুঝিনা, ইদানীং উর্মির মা আমার প্রতি এত আগ্রহী হয়ে উঠেছে কেনো? আমার কারনেই যে উর্মিকে এতদিন তার মামার বাড়ীতে থাকতে হচ্ছে কথাটা ফাঁস হয়ে গেলো নাকি? সত্যি তো আর বেশীদিন গোপন থাকে না। উর্মির মায়ের কথা শুনে আমার পেটটা মুচর দিয়ে উঠলো। আমি কোন কথা বলতে পারলাম না। উর্মির মা খানিকটা ঝুকে দাঁড়িয়ে, নিজে থেকেই বললো, ঠিক আছে এসো।
ঠিক তখনই লং সেমিজটার গলে যা দেখলাম, তা ভুলার মতো নয়। বিশাল দুটি স্তনের ভাঁজ। অদ্ভুত চমৎকার!




খুকীকে ইদানীং খুব ফরমে আছে বলেই মনে হয়। আমাকে দেখলেই অহংকারে যেনো মাটিতে পা পরে না তার। না মাটিতেই হাঁটছিলো। তবে, আমাকে দেখা মাত্রই এমন ভাব করলো, যেনো আমাকে দেখেই নি।

খুকী কি ভাবছে, তা আমি বুঝি। সে ভাবছে, উর্মি আমাকে ফাঁকি দিয়ে মামার বাড়ী পালিয়েছে। কিন্তু, উর্মি যে কতটা কষ্টে তার মামার বাড়ীতে আছে, তা হয়তো তাদের পরিবার আর আমি ছাড়া অন্য কেউ জানে না। উর্মিকে অপারেশন করাতে হয়েছে। শারীরীক দুর্বলতায় ভুগতে হয়েছে তাকে। আর সেই উর্মিই পুরুপুরি সুস্থ হয়ে কদিন পরেই ফিরে আসছে। যার জন্যে, স্বয়ং উর্মির মাও আনন্দে দিন গুনছে। খুকী তো আর তা জানে না। আমি নিজেই খুকীকে ডাকলাম, খুকী, কি করছো?
খুকী একটা ভাব নিয়েই বললো, বাতাস খাচ্ছি।
আমি বললাম, ও, ঠিক আছে খাও। স্কুল থেকে ফিরলাম, নাস্তা টাস্তা কিছু আছে?
খুকী বললো, হুম আছে। অনেক নাস্তা তোমার জন্যে রেডী করে রেখেছি। খেয়েও শেষ করতে পারবে না।

আমি খুব খুশী হয়েই বাড়ীর ভেতর ঢুকছিলাম। অথচ, খুকী রহস্যময়ী গলাতেই ডাকলো, খোকা ভাই, যাও কই? নাস্তা তো এখানে।




খুকীর কথা কিছুই বুঝলাম না। আমি খুকীর দিকেই এগিয়ে গেলাম। বললাম, কই?
খুকী আমাকে নিয়ে দেয়ালটার আঁড়ালেই এগিয়ে গেলো। বললো, এত তাড়া কিসের? টায়ার্ড হয়ে এসেছো। একটু ধীরে সুস্থে বিশ্রাম করো। নাস্তা তুমি ঠিকই পেয়ে যাবে।
আমি বসতে চাইলাম, বললাম, ঠিক আছে, বিশ্রাম করছি। তুমি নাস্তা রেডী কর গে।
খুকী বললো, আহা, বললাম তো, নাস্তা এখানেই আছে। বসে বিশ্রাম করতে হবে না। তুমি দাঁড়াও।

আমি উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, তুমি কি আমার সাথে রসিকতা করছো? কই, কোথাও তো কোন নাস্তা দেখছি না।
খুকী মাথাটা নীচু করেই বললো, হ্যা রসিকতা করছি। আমি কি তোমার সাথে রসিকতা করতে পারি না? সেই অধিকারও কি আমার নেই। তুমি কি সব ভুলে গেছো?
আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, না মানে, খুব টায়ার্ড, মনটাও খারাপ।
খুকী বললো, চাতকী না থাকলে চাতক এর মন তো খারাপ থাকবেই। ঠিক আছে, আমি তোমার মন ভালো করে দিচ্ছি। তুমি চোখ বন্ধ করো।

খুকীর সাথে আমি কখনোই কথায় পারি না। অশিক্ষিত এই মেয়েটা শুধু সুন্দরীই না, কথারও পণ্ডিত। আমি তার কথা মতোই চোখ বন্ধ করলাম। মুহুর্তেই অনুমান করলাম, খুকীর নরোম ঠোট আমার ঠোটে। আমার ঠোটগুলো তার ঠোটের ভেতর নিয়ে চুষছে।

আহা, কত দিন পর খুকীর এই মধুর চুমু। আমার দেহে প্রচণ্ড এক শিহরণই জেগে উঠলো। আমি ক্লান্তির কথা ভুলে গেলাম। ভুলে গেলাম বিকালের নাস্তার কথা। খুকী মিথ্যে বলেনি। তার ঠোটে যে অপরূপ নাস্তা রয়েছে, তা খেয়েও শেষ করা যাবে না। আমিও খুকীর ঠোটগুলো চুষতে থাকলাম, তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
খুকী তার ঠোট সরিয়ে নিয়ে বললো, কি খোকা ভাই, নাস্তা খাবে না?
আমি বললাম, খাচ্ছি তো! তুমি যদি এমন নাস্তা প্রতিদিন খেতে দাও, তাহলে অন্য কোন নাস্তা আমার লাগবে না।
খুকী খিল খিল করেই হাসলো। আমি আবারো খুকীকে জড়িয়ে ধরে, তার গোলাপী ঠোটে চুমু দিতে থাকলাম।




আমার মেঝো বোন মৌসুমীকেও সেদিন খুব খুশী খুশী লাগছিলো। উর্ধাঙ্গে মৌসুমী যাই কিছু পরুক না কেনো, ঘরে সাধারনত নিম্নাঙ্গে প্যান্টিই পরে মৌসুমী। দীর্ঘ সরু পা দুটি অদ্ভুত সুন্দর লাগে। কয়টা দিন বাবা ইতালীতে থাকায়, আর আমার বড় বোন পাপড়িও বাড়ী থেকে বিদায় নেবার পর, উর্ধাঙ্গেও কিছু পরতো না। তবে, বাবা ইতালী থেকে ফিরে আসার পর, সে স্বভাবটা অন্ততঃ বদলেছে। মৌসুমীর পরনে সাদা আর নীল স্ট্রাইপের ঢোলা ফুল হাতা একটা টি শার্ট। এমন পোশাকেই তাকে ভালো মানায়।
আমি বসার ঘরে বসেই পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছিলাম। মৌসুমীও বসার ঘরে ঢুকে আনন্দিত গলায় বললো, জানো খোকা, আজ শেষ রেকর্ডিংটা হলো। আর কদিন পরই বাজারে আমার ক্যাসেট বেড় হবে। হিট হউক আর না হউক, আমি খুশী। অন্ততঃ কেউ না কেউ আমাকে চিনবে, জানবে। আচ্ছা, কেউ কি কন্ঠ শিল্পীদের প্রেমে পরে? আমার মনে হয় পরে না। কিন্তু, কন্ঠ শিল্পী যতই বিশ্রী হউক না কেনো, যতই কালো হউক না কেনো, সবাই কিন্তু তাদের গানের প্রেমে পরে।
মৌসুমীর কথা শুনে আমি শুধু ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললাম।



[/HIDE]
 
[HIDE]


শিশির এর বড় বোন রেখা। আমি হঠাৎই রেখা দিদির প্রেমে পরে গিয়েছিলাম। আমি জানি, ছুটির দিনে এমন একটা সময়ে শিশির বাড়ীতে থাকে না। প্রাইভেট পরতে যায়। আমি সেই সময়টা বেছেই শিশিরদের বাড়ীতে গেলাম।

রেখা দিদি, খুবই চমৎকার একটি মেয়ে। কোন মতে এইচ, এস, সি, পাশ করেছে। তবে, গার্ডেনিং তার খুব পছন্দ। সেদিনও শিশিরদের বাড়ীতে গিয়ে দেখলাম, রেখা দিদি পানির নলটা দিয়ে ফুল গাছগুলোতে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে। আমাকে দেখেই খিল খিল হাসিতেই বললো, ও খোকা? শিশির তো নেই।
আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, ও আচ্ছা, তাহলে আসি।
রেখা দিদি খিল খিল করেই হাসতে থাকলো। বললো, চলে যাবে, ঠিক আছে যাও।
রেখা দিদি এমন করে কথা বলে কেনো? রেখা দিদির কাছেই তো এসেছিলাম। আমি ফিরতে পারলাম না। স্থির দাঁড়িয়ে রইলাম।



রেখা দিদি পানির নলটা ফুল গাছের দিকে না ধরে, নিজ গায়ের দিকেই তাক করলো। নিজ দেহটাই ভিজিয়ে বলতে থাকলো, যা গরম পরছে না? একটু ভিজে ঠাণ্ডআ হয়ে নিই। তারপর তোমার সাথে কথা বলবো।

রেখা দিদি কি আমাকে অভিভূত করতে চাইছে নাকি? মেয়েদের ভেজা দেহ মানেই তো হলো, সেক্সী কোন ব্যাপার। নলের পানি গুলো রেখা দিদির বুকটা যেমনি ভিজিয়ে দিলো, ঠিক তেমনি ঠোটের একাংশও। আর সেই ঠোটগুলোই অপূর্ব লাগছিলো। আমি মুগ্ধ নয়নেই রেখা দিদিকে দেখছিলাম। রেখা দিদি নিজেকে ভিজিয়ে নিয়ে বললো, কই, গেলে না তো।
আমি আমতা আমতা করেই বললাম, না মানে?
রেখা দিদি বললো, আজ কিন্তু ঘুম থেকে উঠে জোড়া পাখি দেখিনি। তাই, তোমার সাথে খুব বেশী মিলবে না।
আমি বললাম, ও, আপনি বুঝি ঘুম থেকে উঠে জোড়া পাখি না দেখলে, কারো সাথে মিশেন না।
রেখা দিদি বললো, মিশবো না কেনো? তুমি নিজেই তো বললে, আসি।
আমি বললাম, না মানে, শিশির নেই, তাই আর কি।
রেখা দিদি বললো, এই সময়ে যে শিশির বাড়ীতে থাকে না, তা নিশ্চয়ই তোমার জানার কথা। সত্যিই কি তুমি শিশির এর কাছে এসেছো?
আমি মিথ্যে বলতে পারলাম না। না বোধক মাথা নাড়লাম। রেখা দিদি বললো, তাহলে চলে যেতে চাইলে কেনো?
আমি মাথা নীচু করেই থাকলাম। রেখা দিদি খিল খিল করেই হাসলো। বললো, এই জন্যেই তোমাকে এত ভালো লাগে।
আমি রেখা দিদির দিকে চোখ তুলে তাঁকালাম। বললাম, কেনো?
রেখা দিদি বললো, ছেলেদের বোকা বনে যাওয়া ভাবটাই আমার খুব ভালো লাগে। তুমি ঠিক তেমনি। খুব সহজেই বোকা বনে যাও। আমার ধারনা, তুমি অনেক মেয়েদেরই ভালোবাসা পাবে।




রেখা দিদির কথা আমি বুঝলাম না। তবে এটা ঠিক, আমার জন্যে অনেক মেয়েদেরই একটা সফট কর্ণার থাকে। সেটা কি তাহলে আমি বোকা বলে? মুনাও তো আমাকে বুদ্ধু ডাকে। যার মানে নাকি বোকা। তাহলে কি মুনাও আমাকে ভালোবাসে? আমার মনটা হঠাৎই মুনার জন্যেই ছট ফট করে উঠলো।

রেখা দিদি পানির নলটা বন্ধ করে বললো, চলো, ওই সাগর এর দিকে যাই। দূর থেকেই সাগরটা দেখি। কখনো কাছ থেকে দেখা হয়নি।
আমি মুনার কথাই ভাবছিলাম। হঠাৎ রেখা দিদির এমন এক প্রস্তাবে অবাকই হলাম। আমি বললাম, আচ্ছা ঠিক আছে।

রেখা দিদির পাশাপাশিই হেঁটে চলছিলাম। রেখা দিদির স্তন দুটি সত্যিই বিশাল। আমার ধারনা ছিলো আমার মেঝো বোন মৌসুমীর দুধ গুলোই বুঝি অনেক বড়। কিন্তু রেখা দিদির দুধ গুলো আমার মেঝো বোন মৌসুমীর চাইতে অনেক অনেক বড়। তবে, মৌসুমীর দুধগুলো খুবই সুঠাম, খাড়া। রেখা দিদির দুধ গুলো খানিক ঝুলে গেছেই বলে মনে হলো। যা তার পোশাকের আঁড়ালে হাঁটার ছন্দে ছন্দে পাশ থেকে দেখলে অধিক অনুমান করা যায়। আমি পাশ থেকে আঁড় চোখে রেখা দিদির দুধের ছন্দ দোলানো নৃত্যই দেখছিলাম থেকে থেকে। রেখা দিদি হাঁটতে হাঁটতেই বললো, এ দেশে হিন্দু মেয়েদের খুবই সমস্যা।
আমি বললাম, কেনো বলুন তো?
রেখা দিদি বললো, হিন্দু পরিবার কম বলে।

আমি বুঝলামনা, হিন্দু পরিবার কম বলে হিন্দু মেয়েদের এত সমস্যা হবার কারন কি? বোকার মতোই বললাম, বুঝলাম না।
রেখা দিদি বললো, না বুঝার কি কারন আছে? ধর্মীয় ভেদাভেদ আছে না? আমরা চাইলেও তো সবার সাথে মিশতে পারি না। তবে, আমরা ওসব দর্মীয় গোঁড়ামী মানি না। সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। এটা যার কথা সেও কিন্তু হিন্দু ছিলো।




রেখা দিদির কথা শুনে মনে হলো, তার মনে কেমন যেনো একটা চাপা দুঃখ জমা আছে। আমি থেমে দাঁড়িয়ে বললাম, দিদি, তার জন্যে আপনার মনে কি খুব কষ্ট? ধর্মীয় গোঁড়ামী কিন্তু আমিও পছন্দ করি না। জানেন, শিশিরও আমার সাথে মিশতে চাইতো না। আমিই যেচে পরে শিশির এর সাথে বন্ধুত্ব করেছি। খুবই শান্ত, দেখলে খুবই মায়া লাগতো।
রেখা দিদি আমার সামনা সামানিই দাঁড়ালো। উঁচু বুকটা আরো উঁচু করে, চক চক করা সমতল দাঁতের হাসি দিয়ে বললো, মায়া ছাড়া আমাদের আর কি আছে বলো? চারিদিকে তোমরা মুসলিমরা কি আনন্দ করো, বন্ধুদের নিয়ে জটলা করো, ফূর্তি করো। আর আমরা ঘর কুনো হয়ে থাকি।
আমি বললাম, আপনার ধারনা ভুল। শিশিরকে দেখেও আমার তেমনি মনে হতো। যখন আমি ওর সাথে মিশতে থাকলাম, তখন ও কি সাদরে আমাকে বরণ করে নিলো। ক্লাশে কিন্তু এখন শিশির এর বন্ধুই বেশী। সবাই মুসলিম। বরং আমার বন্ধুই কম।
রেখা দিদি হাঁটতে হাঁটতেই বললো, জানি। শিশির আমাকে সব বলেছে। তুমি নাকি খুবই ভালো। ওকে নাকি তুমি ইংরেজী শিখাও?
আমি বললাম, না মানে, বাবা ব্যাবসার কাজে বেশীর ভাগ সময় দেশের বাইরেই থাকে। ইংরেজীতে বাবার খুব দখল। আমাদেরকেও শখ করে ইংরেজী শেখায়। ঘরে ইচ্ছে করেই ইংরেজীতে কথা বলে আমাদের সাথে। কিন্তু শিশির অংকে খুব ভালো। আমাকেও কঠিন কঠিন অংকগুলো মাঝে মাঝে বুঝিয়ে দেয়।
রেখা দিদি বললো, কচু ভালো। অংকের জন্যে তিনটা প্রাইভেট পড়ে বলে। দুটু প্রাইভেট টিচার এর কাছে, আর তিনটি হলো আমার কাছে। আমি পড়া লেখায় খারাপ, তা মানি। কিন্তু অংক? আমার সাথে কেউ পারবে না। পারলে আমার কাছে অংক শিখবে।
আমি বললাম, সে আপনার দয়া।
রেখা দিদি খিল খিল করেই হাসলো। বললো, দয়ার কথা বলছো কেনো? সারাদিন তো বাড়ীতে অলস সময় কাটাই।



হাঁটতে হাঁটতে সাগর এর খুব কাচাকাছিই চলে এসেছিলাম। রেখা দিদি বিস্ময় ভরা চোখ নিয়ে বললো, বাহ, সাগর এর ঢেউ এত সুন্দর! কাছ থেকে না দেখলে তো জানাই হতো না।
আমি বললাম, বলেন কি? সাগরের এত কাছাকাছি থাকেন, অথচ সাগর এর ঢেউ কখনো দেখেন নি?
সাগরের ঢেউ দেখে অতি বিস্ময়ে রেখা দিদি কেমন যেনো থ হয়ে ছিলো। বিড় বিড় করেই বললো, বলিনি তোমাকে? আমরা হিন্দু। একটু অন্য রকম। চাইলেও অনেক কিছু পারি না।
আমি বললাম, চাওয়া পাওয়া হলো নিজ ইচ্ছার উপর।

রেখা দিদি হঠাৎই আনন্দে চিৎকার করে উঠলো, হ্যা খোকা, আমি আর পিছুটান মানিনা। এই পৃথিবীর যত সব সুন্দর, তা একা একা উপভোগ করা যায়না। পাশে কেউ থাকলে সাধারন সাগরের ঢেউও অদ্ভুত সুন্দর লাগে! অদ্ভুত!

রেখা দিদি কাছাকাছি থেকে সাগর এর ঢেউ দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলো। ছুটতে ছুটতে সাগরের পানিতেই নামলো। চিৎকার করেই ডাকতে থাকলো, খোকা তুমিও এসো। দেখো, কি শীতল পানি!

আমি সাগর পারের ছেলে। সাগর এর পানিতেই আমার যুদ্ধ, জয়। সাগরের পানি কতটা শীতল, আর কতটা উষ্ণ, আমার না জানার কথা না। তবে, রেখা দিদির আনন্দ দেখে আমার মনটাও আনন্দে লাফাতে থাকলো।




রেখা দিদি সাগর এর অগভীর পানিতে কাৎ হয়ে শুয়েই পরলো। আমিও হাঁটু পানিতে সাগরের বুকেই কোমর ভিজিয়ে বসলাম রেখা দিদির সামনা সামনি। রেখা দিদি মুচকি হাসিতেই বললো, জীবন এত যে সুন্দর, বুঝিনি কখনো আগে।

রেখা দিদিও কি আমার প্রেমে পরে গেলো নাকি? রেখা দিদির চমৎকার ঠোটগুলোতে চুমু দিতেই ইচ্ছে করছিলো। আমি আমার ঠোটগুলো বাড়িয়ে নিয়েও ফিরিয়ে আনলাম। না, শিশির এর বড় বোন। এতটুকু এগুনো বোধ হয় ঠিক হবে না।
রেখা দিদি আমার চোখে চোখেই তাঁকিয়ে রইলো। বললো, মন যা চাইছে, করে ফেলো। নইলে গ্যাষ্ট্রিক কিংবা আলসার হতে পারে। গ্যাষ্ট্রিক হলে ভালো, তবে আলসার হলে সর্বমাশ।

আমার মন তো বেশী কিচু চাইছে না। শুধু রেখা দিদির চৌকু ঠোটে একটা চুমু। আমিও সাগরের পানিতে কাৎ হলাম। রেখা দিদির দেহটার দু পাশে হাত ভর করে তার ঠোটের দিকেই আমার মুখটা বাড়ালাম। রেখা দিদি কঁকিয়ে উঠে বললো, এই করো কি? করো কি?
আমি তৎক্ষনাত রেখা দিদির কাছ থেকে সরে গিয়ে বললাম, আপনিই তো বললেন মন যা চাইছে করতে? নইলে গ্যাষ্ট্রিক আলসার কি কি হবে বললেন?
রেখা দিদি খিল খিল করেই হাসতে থাকলো। আমি বললাম, আবার হাসছেন কেনো?
রেখা দিদি বললো, হাসছি তোমার বোকা বোকা ভাব দেখে। এর জন্যেই তোমাকে এত ভালো লাগে। তোমার মন তাহলে বলছে, আমাকে চুমু দিতে?
আমি উপর নীচ মাথা দোলালাম।
রেখা দিদি চোখ দুটি বন্ধ করে বললো, ঠিক আছে, দাও।

আমি আবারো রেখা দিদির দেহটার দু পাশে হাত রেখে, তার ঠোটে আমার ঠোট ছুয়ালাম। আমার বুকটাও তার নরোম বক্ষের সাথে স্পর্শ পেলো। ভেজা, অথচ উষ্ণ একটা বক্ষ। আমি রেখা দিদির চৌকু ঠোটে চুমুতে হারিয়ে গেলাম।




রেখা দিদিকে তাদের বাড়ীর কাছাকাছি পর্য্যন্ত এগিয়ে দিয়ে রোমান্টিক একটা মন নিয়েই ফিরছিলাম। কিছুদূর এগিয়ে বড় রাস্তায় নামতেই আমার গা ঘেষে সাই সাই করে কি যেনো চলে গেলো। আমি ভীত হয়ে রাস্তার পাশেই পরে গেলাম। সামনে তাঁকিয়ে দেখলাম, সাদা রং এর স্লীভলেস টপস আর নীল জিনস এর প্যান্ট আর মাথায় সাদা হ্যাট পরা কে যেনো স্কী পায়ে চেপে সাই সাই করে দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে।

আমি রাস্তার পাশ থেকে উঠে দাঁড়ালাম। মনে মনেই গাল দিলাম, শালা বানর, স্কী চড়তে পারসনা ঠিক মতো, আবার স্কী পায়ে দিয়ে বড় রাস্তায় ঘুরে বেড়াস। আমি আবারও এগুতে থাকলাম বাড়ীর পথে। থেকে থেকে কনুইটা চেপে ধরতে থাকলাম, ছিলে গেলো নাকি? ঠিক তখনই আমার সামনে স্কী ব্রেইক করে নিজের ব্যালেন্সটা কোমর বাঁকিয়ে আর দু হাত ছড়িয়ে যে দাঁড়ালো, সে আর অন্য কোন বানর নয়। স্বয়ং মুনা। চক চক করা গেঁজো দাঁত গুলো বেড় করে খিল খিল করে হাসতে থাকলো। হাসতে হাসতেই বললো, পরে গিয়েছিলে না? ব্যাথা পেয়েছো?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। মুনা যে তা ইচ্ছে করেই করেছে তা বুঝতে বাকী রইলো না। আমি কনুইটা একবার মালিশ করে বললাম, না, তেমন লাগে নি। আরেকটু সাবধানে গেলেই তো পারতে।
মুনা বললো, হ্যা পারতাম, তাহলে তো তোমাকে শাস্তি দেয়াটা হতো না। আমার প্রতিশোধ নেয়া শেষ। চলো এবার।
আমি বললাম, কোথায়?
মুনা খুব সহজ ভাবেই বললো, কেনো? বাসায়। খেলোয়াড়রা আঘাত পেলে যা যা চিকিৎসার দরকার, সবই ব্যবস্থা আছে।



[/HIDE]
 
[HIDE]


মুনাকে আমি বুঝলাম না। দরদী শত্রু নাকি? আঘাত করে আবার সেবা? আমি বললাম, থাক লাগবে না।
মুনা বললো, তোমার না লাগলেও আমার লাগবে। চলো।

একি ডানপিটে মেয়েরে বাবা? আমি এগুতে থাকলাম মুনার সাথে। হাঁটতেই হাঁটতেই বললাম, কিসের প্রতিশোধ নিলে বুঝলাম না।
মুনা বললো, তুমি আসলেই একটা বুদ্ধু। এটাও বুঝলে না? ঐদিন ক্লাশে সবাই আমাকে রেফারীর মেয়ে বলে টিটকারী করলো, অথচ তুমি কিছুই বললে না?
আমি বললাম, না মানে, আমার আত সাহস নেই। যদি কিছু বলতাম, তাহলে তো আমাকেই টিটকারী করতো।
মুনা বললো, ও, তাহলে তোমার সামনে কেউ অপরাধ করলে, তুমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবে, তাই না?

আমি কথা বাড়ালাম না। মুনা তাদের দুতলা বাড়ীতে, দুতলায় তার নিজ ঘরেই নিয়ে গেলো। বললো, মাই রুম।
তারপর, ফার্স্ট এইড বক্সটা বেড় করে এনে বললো, মাই ফার্স্ট এইড বক্স।
অতঃপর, আমার কনুইয়ে একটা আংকেট বেঁধে দিয়ে বললো, কয়েক মিনিটের মাঝেই উপশম পাবে।

পৃথিবীতে মুনার মতো কয়টি মেয়ে আছে জানিনা। আমি মনে মনে স্থির করলাম, মুনাকে যদি পুনরায় কেউ বিরক্ত করে, আমি তার প্রতিবাদ করবোই।



মুনা আমাকে বাড়ীর বারান্দা পর্য্যন্ত এগিয়ে এসে, হাত নেড়ে বিদায় দিলো। বললো, আবার যেনো ঝাপটা দিতে না হয়।
আমিও বললাম, আমিও সাবধানে থাকবো।

নুতন করে রোমাঞ্চতা নিয়েই বাড়ী ফিরছিলাম। বাড়ীর কাছাকাছি তিন রাস্তার মোড়টায় আসতেই উর্মির মা আবারো ইশারা করলো।
ইদানীং উর্মির মায়ের ব্যাপারটাও আমি বুঝতে পারি না। আদরের বড় মেয়ে কাছাকাছি নেই বলেই নাকি? আমি এক প্রকার মিশ্র প্রতিক্রিয়া নিয়েই তার কাছাকাছি গেলাম।

খুবই সেক্সী ধরনের মহিলা। এই বয়সেও মহিলার চেহারা হাসি পাগল করে আমাকে। চোখে চোখে তাঁকাতে পারি না। উর্মির ঠোট গুলো যেমনি আমাকে পাগল করতো, ঠিক তার মায়ের ঠোটগুলোও আমাকে অনুরূপ পাগল করে।
মহিলা আমাকে তাদের বাড়ীর বারান্দা পর্য্যন্ত নিয়ে গেলো। তারপর, রহস্যময়ী গলায় বললো, মেয়েটি কে?
আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, কোন মেয়ে?
উর্মির মা বললো, এত কথা প্যাচাও কেনো? যা বলছি উত্তর দাও।

আমি ইতস্ততঃ করলাম। রাস্তায় মুনার সাথে কথা বলেছি, তাদের বাড়ীতে গেছি, তা কি উর্মির মা দেখে ফেলেছে নাকি? আমি বললাম, মুনা, আমাদের ক্লাশে পড়ে।
উর্মির মা চোখ কপালে তুলে বললো, বলো কি? এত বড় একটা মেয়ে, তোমাদের ক্লাশে পড়ে?

মুনার বাড়ন্ত দেহ, একটু স্বাস্থ্যবতীও বটে। হঠাৎ দেখলে বয়সের তুলনায় একটু বড়ই মনে হয়। আমি বললাম, না মানে, মুনার বয়স আমাদের সমানই। ফার্মের মুরগীর মতো ফুলে গেছে একটু।



আমার কথা শুনে উর্মির মা অট্টহাসিতেই ফেটে পরলো। কি এমন হাসির কথা বললাম, নিজেই বুঝতে পারলাম না। আমি হা করেই তার দিকে তাঁকিয়ে রইলাম। উর্মির মা হাসি থামিয়ে বললো, ভালোই বলেছো। কিন্তু, যাই বলো না কেনো, আমার বিশ্বাস হয়না, মেয়েটি তোমাদের সাথে পড়ে। যাই হউক, মেয়েটির সাথে তোমার সম্পর্ক কি?
আমি বললাম, সম্পর্ক তেমন কিছু না। ক্লাশের সবাই ওকে ক্ষেপায়, টিটাকারী করে। আমি প্রতিবাদ করিনা বলে আমাকেও ক্ষেপায়।
উর্মির মা বললো, ও, ক্ষেপানোর জন্যে বুঝি সাগর পারে নির্জনেও নিয়ে যায় তোমাকে?

আমার বুকটা হঠাৎই দোলে উঠলো। উর্মির মা তো মুনার কথা বলছে না। বলছে রেখা দিদির কথা। তাই তো, আমার বয়সী একটি মেয়ে ফার্মের মুরগীর মতো ফুলে গেলেও তো রেখা দিদির মতো লাগার কথা না। উর্মির মায়ের কথা শুনে আমি আমতা আমতা করতে থাকলাম। বললাম, না মানে, রেখা দিদি কখনো কাছ থেকে সাগর দেখে নি। তাই দেখতে চেয়েছিলো।
উর্মির মা চোখ কপালে তুলে বললো, মুনা থেকে রেখা দিদি হয়ে গেলো?

আমি হঠাৎই ভাষা হারিয়ে ফেললাম। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম শুধু। উর্মির মা বললো, শোন ছেলে, এতদিন আমি তোমাকে কিছুই বলিনি। বলিনি নিজ স্বার্থে। উর্মি ফিরে আসছে আর কদিন পরই। তাই না বলেও পারছি না।
উর্মির মা কি বলতে চাইছে, কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারলাম। আমার বুকটা ধক ধক করতে থাকলো। মাথা নীচু করে রইলাম আমি। অথচ, উর্মির মা হাসতে থাকলো। বললো, চলো, ওই দিকটায় চলো।
উর্মির মায়ের ভাব সাব আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।



উর্মির মা হাঁটতে হাঁটতেই বললো, খুব সহজে আমি মানুষকে দোষ দিইনা। তোমাদের মতো এমন একটা বয়স আমারও ছিলো। তেমনি বয়সে আমিও ভুল করেছিলাম। মা য়দি ভুল করে, মেয়ে তো ভুল করবেই। শুধু শুধু অন্যকে দোষ দিই কি করে?

আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। উর্মির মা আবারও বলতে থাকলো। আমাদের সময়ে চিকিৎসা, হাসপাতাল এসব খুব কমই ছিলো। তাই রাতারাতি বিয়ে করে ফেলেছিলাম। খুব অল্প বয়সে বিয়ে করার মাঝে কোন আনন্দ নেই। জীবনের অনেক আনন্দ ফূর্তি থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়। তাই উর্মি নিজে মা হতে চাইলেও, উর্মির এই উঠতি বয়সের আনন্দের দিনগুলো থেকে বঞ্চিত হতে দিইনি। এমন কি তোমার সাথে যেনো পুনরায় দেখা না হয়, সেই ব্যাবস্থাই করেছিলাম। মামার বাড়ীর কাছাকাছি স্কুলেই ভর্তি করেছিলাম। অথচ, আবারো ফেল করলো। ছেলে মেয়েরা মা বাবার কাছে না থাকলে কি পড়ালেখা হয়? তাই আবারো নিয়ে আসছি।
আমি বললাম, আমাকে ক্ষমা করে দেবেন খালা। আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছিলো।
উর্মির মা বললো, ক্ষমা আমি করেই দিয়েছিলাম। কারন বলেছিই তো, এমন একটা বয়সে আমিও ভুল করেছিলাম। কিন্তু তোমাকে যকন দেখলাম, একটা ধীঙ্গী মেয়েকে নিয়ে সাগর পারের দিকে যাচ্ছো, তখন উর্মির মা হিসেবে চুপচাপ থাকি কি করে?
আমি বললাম, রেখা দিদি, আমাদের ক্লাশের শিশির এর বড় বোন। পড়ালেখা এক প্রকার শেষ। বাড়ীতে একা একা থাকে। আমাকে খুবই স্নেহ করে।
উর্মির মা বললো, তাহলেই ভালো। একটা কথা বলি, উর্মি কিন্তু তোমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আর যাই করো, আমার মেয়েকে তুমি কষ্ট দিতে পারবে না। সময় হলেই তোমাদের বিয়ে দেবো।




উর্মির মা আমাকে এক কঠিন মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাইছে। তা তো করবেই, সর্বোপরি একজন মা। আমার মাথাটা ঝিম ঝিম করতে থাকলো। বাড়ীতে ফিরে এলাম, দুপুরের অনেক পর।

খুকী উঠানেই দাঁড়িয়েছিলো। বললো, খোকা ভাই, সারাদিন কই কই থাকো?
না, না, খুকীর সাথে বাড়তি কথা বলা যাবে না। উর্মির মা জানতে পারলে, আবারো কথা শুনিয়ে দেবে। কি অসাধারন মহিলা। একটুও রাগ করে না। হাসি মুখে কঠিন কঠিন কথা বলে। মনে তো হয় আমাকে চোখে চোখেই রাখে, মেয়ের জামাই বানানোর জন্যে। আমি বললাম, কোথায় থাকি তোমাকে বলতে হবে নাকি? ছেলে মানুষ, সারাদিন ঘরে বসে থাকবো নাকি?
খুকী গম্ভীর হয়েই বললো, না মানে, ছোট আপু খোঁজেছিলো। অডিশন না কি বললো, নিয়ে যাবার জন্যেই তোমাকে খোঁজেছিলো।
আমি বললাম, তাই নাকি?
খুকী ঠেস দিয়েই বললো, তো কি ভেবেছো, আমি তোমাকে খোঁজেছি?
আমি বললাম, ছোট আপু কি খুব রাগ করেছিলো?
খুকী বললো, না, রাগ করেনি। একটু দূর এর জায়গা। একা একা যেতে সাহস করছিলো না। বললো, ফিরার পথে হলেও তাকে নিয়ে আসতে। ঠিকানা দিয়ে গেছে।
আমি বললাম, কই দাও।
খুকী বললো, দেবো। আগে খাওয়া দাওয়া করে নাও। খাবার রেডীই আছে। অডিশন শেষ হবে বিকাল তিনটায়। বললো, ঘন্টা খানেকের পথ। দুটুয় রওনা হলেই চলবে।




স্টুডিও সুরাঙ্গন, আমি তার সামনে দাঁড়িয়েই মৌসুমীর জন্যে অপেক্ষা করছিলাম। ঠিক তিনটাতেই মৌসুমী বেড় হলো। আমাকে দেখে আবাক হয়ে বললো, খোকা তুমি?
আমি বললাম, তুমিই তো বলেছো, তোমাকে নিয়ে যেতে।
মৌসুমী ততোধিক অবাক হয়ে বললো, কই, কখন, কাকে বলেছি?
আমি বললাম, খুকীই তো বললো। এই তো আমাকে ঠিকানা দিলো। বললো, এখানে আসার সময়ও নাকি আমাকে খোঁজেছিলে।
মৌসুমী আমার হাতের কাগজটা চেয়ে বললো, কই দেখি?

মৌসুমী কাগজটা হাতে নিয়ে বললো, এটা তো আমার হাতের লেখা নয়। দেখেতো মনে হচ্ছে খুকীর হাতের লেখা। নিশ্চয়ই খুকী তোমাকে বোকা বানাতে চেয়েছে। ঠিক আছে, এসেছো ভালো করেছো। এত ব্যস্ততার মাঝে তোমাকে নিয়ে অনেকদিন বেড়ানো হয়না। চলো, ওই পার্কটাতে গিয়ে একটু বসি।

ব্যস্ত থাকলে বুঝি মানুষ এমনই হয়। মৌসুমীও অনেক বদলে গেছে।



আমি মৌসুমীর পাশে হাঁটতে হাঁটতেই বললাম, ছোট আপু, তুমি অনেক বদলে গেছো। গানের ক্যাসেট কি আরো একটা বেড় করবে নাকি?
মৌসুমী পার্কে খুশীতে নাচতে নাচতেই বললো, আমি তো চাইনি। বাজারের প্রতিযোগীতা। কি করে সুরাঙ্গনও জেনেছে, আমার গানের ক্যাসেট বেড় হবে। তারাও একটা এপয়ন্টমেন্ট, অডিশন চাইলো। খুবই ভালো লোক ডাইরেক্টর। খুবই ইয়াংগ। জানো, আমাকে ম্যাডাম বলে ডাকে। টেলিফোনে যখন এপয়ন্টমেন্ট চাইলো, তখন কত সাবধান করলো। বললো, ম্যাডাম, একা আসবেন না। আপনি এখন নামী দামী শিল্পী। পথে বিপদ হতে পারে। আপনার জন্যে পার্সোনাল সেক্রেটারী নিয়োগ করেছি। সেই আপনাকে গাড়ীতে করে নিয়ে আসবে। এগারোটায় নিয়ে আসবে, তিনটায় পৌঁছে দেবে। দুপুরের লাঞ্চ ফ্রী। সাইনিং মাণি পঞ্চাশ হাজার টাকা। ব্যাংক একাউন্ট বলুন, টাকা এক্ষুণি পে করে দিচ্ছি। আরো কত কি? আমার এত সমাদর ভালো লাগে না। আমি একটা মেয়ে হলাম নাকি? আমার আবার কিসের বিপদ? আমি না করে দিলাম। বললাম, হেঁটেই যাবো।
আমি বললাম, ছোট আপু, তোমাকে সব সময় যতটা বুদ্ধিমতী ভাবতাম, তুমি আসলে ততটা নও।
আমার কথা শুনে মৌসুমী ধপাস করেই পাশের বেঞ্চিটাতে বসলো। বললো, কেনো, আমি আবার বোকামীর কি করলাম?
আমি বললাম, খুকী আমাকে বোকা বানাতে চায়নি। বোধ হয় টেলিফোনের সব আলাপ শুনেছিলো।




মৌসুমী খিল খিল করেই হাসলো, তার গেঁজো দাঁত বেড় করে। তারপর বললো, একটা পাজী মেয়ে, আঁড়ি পেতে সবার কথা শুনে।
আমি বললাম, খুকীকে তুমি যতই অপছন্দ করো না কেনো, খুকী তোমার ভালো চায় বলেই বুদ্ধি করে আমাকে পাঠিয়েছে।
মৌসুমী অবাক হয়েই বললো, বুদ্ধি? এটাতে বুদ্ধির কি হলো?
আমি বললাম, একটু ওদিকে তাঁকাও। লোকগুলোকে তোমার কেমন মনে হচ্ছে?
মৌসুমী উঁকি দিয়ে তাঁকিয়ে বললো, কোন লোকগুলো? কেমন মনে হবে আবার?
আমি বললাম, লোকগুলোকে আমি সুরাঙ্গনের আশেপাশেই ঘুরাফেরা করতে দেখেছি। ওরা এখন আমাদেরকে আনুসরণ করছে। আমাদের মানে তোমাকে। তুমি নিজেকে যতই সামান্য বাবো না কেনো, বাজারে তোমার ক্যাসেট বেড় হতে যাচ্ছে। আর কিছু না হলেও তুমি একজন শিল্পী। তোমার কাছে অনেক টাকা থাকতে পারে, তা সবার ধারনা। আর ওই সুরাঙ্গন একটা ভুয়া প্রতিষ্ঠানও হতে পারে। তোমাকে যে ব্ল্যাকমেইল করছে না তারও নিশ্চয়তা কি?
মৌসুমী বললো, ধ্যাৎ, ওসব কিছু না। চলো, বাড়ী ফিরে যাই।



মৌসুমী উঠে দাঁড়ালো। আমিও বাড়ীর পথে রওনা হলাম। মৌসুমী চোখ টিপে ইশারা করে বললো, এদিকে না। ওদিকটায় ঘুরে চলো।
মৌসুমীর ইশারার কারন আমি বুঝলাম। কারন, লোকগুলো আমাদের অনুসরন করার জন্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। কিছুদূর এগিয়ে মৌসুমী বললো, খোকা তোমাকে ধন্যবাদ। খুকীকেও। আসলে তোমাকে মিথ্যে বলেছি। সুরাঙ্গন এর ডাইরেক্টরকে আমারও বিশ্বাস হয়নি। ঠিক কথায় বলে না, অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। বিশ্বাস হয়নি বলেই গাড়ী পাঠাতে নিষেধ করেছিলাম। কারন, আমারও সন্দেহ হয়েছিলো, গাড়ীতে করে যদি আমাকে এমন কোথাও নিয়ে যেতো, যেখান থেকে বাঁচার কোন পথ যদি না থাকে? তাই পায়ে হেঁটে যাবো বলেছিলাম। তারপরও আমাকে বোকা বলবে?
আমি বললাম, স্যরি। তবে, খুকী যদি বুদ্ধি করে আমাকে না পাঠাতো, তাহলে কিন্তু তোমার মস্ত একটা বিপদের সম্ভাবনা ছিলো।
মৌসুমী ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেললো। বললো, না খোকা, খুকীকে আমার খুবই পছন্দ। পছন্দ না হলে কি ওকে আমি নিজেই ফিরিয়ে আনতাম?

আমি পেছন ফিরে একবার তাঁকালাম। দেখলাম, গুণ্ডা মার্কা লোকগুলো আন্যত্রই ফিরে যেতে থাকলো। আমি বললাম, তোমাকে একটা আনুরোধ করবো ছোট আপু।
মৌসুমী বললো, কি?
আমি বললাম, নিজেকে আর কালো ভেবে নেগলেক্ট করবে না। তোমার এখন অনেক দাম।
মৌসুমীর হঠাৎই কি হলো বুঝলাম না। থেমে দাঁড়িয়ে, আমার গাল দুটি চেপে ধরে প্রচণ্ড একটা চুমু উপহার দিলো। তারপর বললো, বাড়ী ফিরে আরো পাবে। চলো।
মৌসুমী আমার হাতটা ধরেই হাঁটতে থাকলো।




বাড়ীতে ফিরে মৌসুমী শাওয়ারটা সেরে নেবার প্রস্তুতিই করছিলো। গায়ের পোশাক সব খুলে তোয়ালেটা দিয়ে বুকটা ঢেকে বাথরুমে যাবারই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। আমি বললাম, ছোট আপু, বাড়ী ফিরে আরো কি পাবো বলেছিলে।
মৌসুমী মেঝেতে হাঁটু ভাঁজ করে খিল খিল হাসিতেই বললো, এত কিছু মনে রাখো কি করে?
মৌসুমীর চক চক করা গেঁজো দাঁত আমাকে পাগল করে তুলছিলো। আমি বললাম, মনে রাখবো না কেনো? আমি তো আর তোমার মতো অত ব্যাস্ত নই।
মৌসুমী বললো, না খোকা, আর ব্যস্ততা নেই। সুরাঙ্গনের সাইনিং মাণি ফিরিয়ে দেবো বলেই ভাবছি। সামনে পরীক্ষা, শেষে পরীক্ষাও খারাপ হতে পারে। ভালো করে এস, এস, সি, পরীক্ষাটা দিতে পারলেই বাঁচি।
আমি মৌসুমীর পাশে গিয়েই বসলাম। তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, সেই ভালো। খুব বেশী নাম করলে, মানুষ দূরের হয়ে যায়। তুমিও আমার কাছ থেকে আনেক দূরে সরে যাচ্ছিলে।
মৌসুমী বললো, না খোকা, আসলে আমি যা করতে চাই খুব সিরীয়াসলী করতে চাই। একটা লোক এত করে অনুরোধ করছিলো গানের ক্যাসেট বেড় করতে, আমি না করতে পারতাম কি করে? ক্যাসেট যখন বেড়ই হবে, গান শুনে কারো গালি গালাজ শুনারও তো ইচ্ছে নেই।
আমি মৌসুমীর মিষ্টি ঠোটে চুমু দিয়ে বললাম, তোমার গান বাজে হতেই পারে না। আর গালি গালাজ? এমন সাহস কারো আছে নাকি?
আমি তোয়ালের ফাঁকে হাত গলিয়ে মৌসুমীর ভরাট স্তন দুটিতেও আদর বুলিয়ে দিতে থাকলাম। তারপর, তাকে নিয়ে মেঝেতেই গড়িয়ে পরলাম। মৌসুমী বিড় বিড় করেই বললো, আমি নমকরা শিল্পী হতে চাইনা। তোমার অকৃপণ এই ভালোবাসাই যথেষ্ট।
আমি আমার পরনের প্যান্টটা খুলতে থাকলাম। মৌসুমীর ঠোটে চুমু দিতে দিতেই আমার লিঙ্গটা তার কামানো যোনীতে চাপতে থাকলাম। মৌসুমী নিজেই আমার লিঙ্গটা হাতে ধরে, তার যোনীতে ঢুকাতে সাহায্য করলো। আমি পাগলের মতো ঠাপতে থাকলাম মৌসুমীর যোনীতে।



[/HIDE]
 
[HIDE]

সেদিনও শিশিরদের বাড়ীতে যাবো বলেই ভেবেছিলাম। উদ্দেশ্য একটাই, রেখা দিদির সাথে দেখা করা। উর্মির মা যতই বারণ করুক না কেনো, মন তো আর শাসন মানে না।

সাগর পারের মেঠো পথেই এগুচ্ছিলাম। খুকী একা একা সাগর পারেই পায়চারী করছিলো। দূর থেকেই ডাকলো, খোকা ভাই, কই যাও।
খুকীর এক পুরনো স্বভাব। আমাকে কোথাও বেড়োতে দেখলেই পিছু ডাকবে। আমি দাঁড়ালাম। বললাম, এখন তো আর উর্মি নেই। এত ভয় কিসের? আমার বন্ধু, শিশির। ওদের বাড়ি যাচ্ছি।
খুকী বললো, শিশির হউক আর তুষারই হউক, বোন টোন নেই তো?
খুকী এত ঠেস দিয়ে কথা বলে কেনো? আমি রাগ করেই বললাম, থাকলে তোমার ক্ষতি কি?
খুকী বললো, আমার আবার ক্ষতি কি? যা ক্ষতি করার করেই তো ফেলেছো। তোমার স্বভাব তো জানি। যেখানে নরোম মাংসের গন্ধ পাও, সেখানেই ছুটে যাও।
আমি শান্ত গলাতেই বললাম, খুকী, তুমি আমাকে একটু বেশীই সন্দেহ করো। এমন সন্দেহ কোন বউও কোন স্বামীকে করে না।
খুকী স্পষ্ট গলায় বললো, আমি তো তোমার বউই। আমি তো বলেই রেখেছি, তুমি যখন উপযুক্ত হবে, আমি সবকিছু কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নেবো।

আবারো পুরনো কাসুন্দি। পঁচা শামুখ। আমি বললাম, খুকী মাফ চাই, ওসব বলে আমার মাথাটা আর খারাপ করো না।
খুকী বললো, ও, আমি তোমার মাথা খারাপ করছি, তাই না? আর তুমি যে সেই কবে থেকে আমার মাথাটা খারাপ করে রেখেছো, তার কি হবে? আমি তো আর তোমার মতো না? দশটা ছেলের সাথে প্রেম করবো।
আমি রাগ করেই বললাম, মানে?
খুকী বললো, মানে, মুনা নামের একটা মেয়ে সাইকেল চালিয়ে এসেছিলো। আমি সোজা বলে দিয়েছি বাড়ীতে নেই।




খুকীর উপর আমার মেজাজটাই খারাপ হলো। মেয়েটাকে এত ভালোবাসি, অথচ মুনাকে মিথ্যে বললো। আমি কোন কথা না বলেই ছুটতে থাকলাম নিজের পথে।

তিন রাস্তার মোড়ে আসতেই হঠাৎ মিষ্টি একটা কন্ঠ কানে এলো, খোকা?
আমি ফিরে তাঁকালাম। দূর থেকেই দেখলাম উর্মি তাদের বাড়ীর দরজায় দাঁড়িয়ে। চৌকাঠটা ধরে অভিমানী চেহারা করে রেখেছে। পরনে জংলী ছিটের হাত কাটা লং সেমিজ। বাহু দুটি উদাম। বাহু দুটি দেখেই মনে হলো, খানিকটা স্বাস্থ্যও বেড়েছে।
আমি এগিয়ে গেলাম। কাছাকাছি গিয়ে বললাম, কতদিন পর?
উর্মি বললো, কি করবো, মা বাবা আসতে দিতে চাইছিলো না।

অনেকদিন পর উর্মিকে খুব কাছাকাছি থেকে দেখলাম। কি চেহারা কি হয়ে গেছে। চেহারায় কেমন যেনো বয়সের একটা ছাপ পরেছে। আমি বললাম, একি চেহারা হয়েছে তোমার?
উর্মি বললো, খুব খারাপ হয়েছে? কি করবো, দুশ্চিন্তায় দুশ্চিন্তায়।
আমি বললাম, স্যরি, আমার জন্যে তোমার এত কিছু হয়ে গেলো।
উর্মি বললো, তোমার একার দোষ হবে কেনো? আমারও ইচ্ছা ছিলো বলেই এমন হয়েছে। কিন্তু, এমন কিছু ঘটে যাবে, ভাবতেও পারিনি। জীবন এর উপর দিয়ে বড় ধরনের একটা ঝড় বইয়ে গেলো। বাদ দাও আমার কথা, তোমার কথা বলো। কেমন ছিলে এতদিন?
আমি বললাম, ভালো।
উর্মি বললো, মৌসুমী আপা?
আমি বললাম, ও তো এখন বড় শিল্পী।




উর্মি দরজার সামনে ধাপটার উপরই বসলো। মিষ্টি করেই হাসলো, তার চক চক করা সাদা দাঁতগুলো বেড় করে। বললো, বলো কি? শিল্পী মানে?

আমি উর্মির দিকে এক পলক পলকহীন ভাবেই তাঁকিয়ে রইলাম, সেই সরু ঠোট, সেই চক চক করা দুধে দাঁত, সেই অপূর্ব হাসি। শুধু তাই নয়, হাত কাটা জামাটার গলে তার ডান স্তনটাও পুরুপুরি চোখে পরছিলো। আগের চাইতে অনেক বড় বড় লাগছে। আমি বললাম, মানে, আগামী সপ্তাহেই বাজারে ছোট আপুর গানের ক্যাসেট বেড়োবে।
উর্মি আনন্দে উদ্বেলিত হয়েই বললো, বলো কি? কতদিন পর একটা আনন্দের সংবাদ শুনলাম। খুব দেখতে ইচ্ছে করছে মৌসুমী আপাকে। নিশ্চয়ই আগের মতো ম্যূড অফ থাকে না।
আমি বললাম, হুম, আগের চাইতে অনেক সুন্দরীও হয়েছে। রূপ চর্চা করে শুধু।
উর্মি বললো, তাতো করবেই। এই শোন না, আমার কিন্তু এখুনিই খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। এখন বাড়ীতে আছে?
আমি বললাম, না, ছুটির দিনেই খুব ব্যাস্ত থাকে। রিহ্যার্সাল, অডিশন, রেকর্ডিং, এটা সেটা।
উর্মি আনন্দপূর্ণ গলায় বললো, উফ আমার যে কি আনন্দ লাগছে। ইচ্ছে করছে মৌসুমী আপুর কাছে আমিও গান শিখি।

আমি লক্ষ্য করলাম, এই একটু আগেও উর্মির চেহারাটা যতটা খারাপ লেগেছিলো, সেটা মুহুর্তেই উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। দুশ্চিন্তা কি সত্যিই মানুষের চেহারা খারাপ করে নাকি? আর সুখের মুহুর্ত গুলো মানুষের চেহারাকে উজ্জ্বল করে তুলে নাকি? আমি আরো লক্ষ্য করলাম, উর্মির চেহারাটা ছয় মাস আগেও যেমনি মনে হয়েছিলো, এখনো ঠিক তেমনি সুন্দর শিশু সুলভই মনে হতে থাকলো। শুধু আগের চাইতে খানিক মোটিয়ে গেছে। বুকটাও বেশ উঁচু হয়ে উঠেছে।



আমার হঠাৎই মনে হলো, রেখা দিদির কথা। তার সাথে দেখা করবো বলেই ঘর থেকে বেড় হয়েছিলাম। এই সময়টাতে রেখা দিদিও আমার জন্যে অপেক্ষা করে। আমি হঠাৎই বললাম, উর্মি, এখন আসি তাহলে।
উর্মি উঠে দাঁড়িয়ে বললো, বলো কি? কতদিন পর তোমার সাথে দেখা। ইচ্ছে করছে হাজার বছরের গলপো এক্ষুনি করতে।
আমি বললাম, আমার একটা জরুরী কাজ আছে। আবার আসবো।
এই বলে আমি বিদায় নিতে চাইলাম। অথচ, উর্মিও আমার পাশে পাশে এগুতে থাকলো। বললো, কি এমন জরুরী কাজ? আমি কি সংগে যেতে পারি?

একি সমস্যায় পরলাম। আমি যাবো শিশির এর বড় বোন রেখা দিদির সাথে দেখা করতে। উর্মিকে সংগে করে কেমন করে যাই? উর্মি আমার সাথে এগুতে এগুতে তিন রাস্তার মোড় পর্য্যন্তই চলে এলো। আমি বললাম, কাজটা শেষ করেই তোমার কাছে চলে আসবো।
উর্মি সরলতা পূর্ণ হাসিই হাসলো তার মিষ্টি দাঁত গুলো বেড় করে। বললো, সত্যিই আসবে তো?

দীর্ঘদিন পর, উর্মির মিষ্টি দাঁতগুলো আমাকে পাগল করে তুলছিলো। হাত কাটা জামাটার উপর ভেসে থাকা উঁচু স্তন দুটিও মনটাকে উদাস করে দিচ্ছিলো। আমি এদিক সেদিক তাঁকালাম। তারপর, হঠাৎই উর্মিকে জড়িয়ে ধরে, তার মিষ্টি ঠোটে একটা চুমু দিয়ে বললাম, বললাম তো আসবো।
চুমুটা পেয়ে উর্মিও খুব আনন্দিত হলো। বললো, আমি কিন্তু অপেক্ষা করবো। কতক্ষণ লাগবে বলো?
আমি বললাম, এই ধরো ঘন্টা দুয়েক।
উর্মি মাথায় হাত দিয়ে বললো, ঘন্টা দুয়েক?
আমি বললাম, চেষ্টা করবো আরো তাড়াতাড়ি ফিরতে।
অবশেষে উর্মি হাসি মুখেই বিদায় দিলো, বললো, তাড়াতাড়ি আসবে কিন্তু। আমি অপেক্ষা করবো।



উদ্দেশ্য ছিলো শিশিরদের বাড়ীতেই যাবো। উপজেলা পার্ক গ্রাউণ্ডের পাশ দিয়ে হেঁটে যেতেই, আমার কানের পাশ দিয়ে কি যেনো সাই সাই করে ছুটে গেলো, নিজেও টের পেলাম না। ভয়ে আমার কলজে শুকিয়ে উঠলো। মনে হলো আমার কানটাই বুঝি উড়ে চলে গেছে। আমি ভয়ে ভয়ে কানে হাত দিলাম। না, কান ঠিকই আছে। কিন্তু কানের পাশ দিয়ে কি এমন ছুটে গেলো? এরোপ্লেনের মতোই দ্রুত মনে হয়েছিলো। আমি চারিদিকেই চোখ বুলিয়ে তাঁকালাম। কিছুই চোখে পরলো না। হঠাৎই গ্রাউণ্ডের ভেতর থেকে খিল খিল রিনি ঝিনি সুরের হাসির শব্দ শুনতে পেলাম। দেখলাম, মুনা। পরনে লাল রং এর শর্ট টপস। পেটটা উদাম। আর নিম্নাঙ্গে হাঁটুর খানিক নীচ পর্য্যন্ত লম্বা আধুনিক জিনস এর প্যান্ট। কি সব হিজি বিজি লেখাও রয়েছে। আর হাতে লাল রং এর স্কেইট বোর্ড। যা ছুড়ে মারলে বুমেরাং এর মতো নিজের হাতেই ফিরে আসে, যদি কৌশল জানে।

মুনাকে এমন একটি পোশাকে অসম্ভব সেক্সী লাগছিলো। শুধু তাই নয়, আমার জন্মের পর বোধ হয়, মুনার মতো এমন সেক্সী মেয়ে প্রথম দেখেছি বলেই মনে হলো। গায়ের রং দুধে আলতা। মাত্র ক্লাশ এইটে পড়ে, অথচ দুধের কি বহর! আমি চোখ বন্ধ করে বলতে পারি, মুনার দুধ গুলো রেখা দিদির মতো ডাবের আকৃতি না পেলেও, আমার মেঝো বোন মৌসুমীর চাইতেও অনেক বড়, প্রশস্থ। আর, স্পোর্টস গার্ল বলে, পেটা শরীর, পেটে এক চিলতে মেদও নেই।




আমি মুনার দিকেই এগিয়ে গেলাম। বললাম, আচ্ছা, তুমি সব সময় আমাকে এমন ভয় দেখাও কেনো?
মুনা বললো, আমার ভালো লাগে তাই। কারন, তুমি একটা বুদ্ধু।
আমি বললাম, আমি বুদ্ধু হই আর যাই হই, তাই বলে এমন করে ভয় দেখাবে? যদি এটা আমার কানে লাগতো?
মুনা খিল খিল হাসিতেই বললো, লাগেনি তো? যদি লাগতো, তাহলে আমি খেলা ধূলা সব ছেড়ে দিতাম।

মুনা খানিক থেমে খুব আত্মবিশ্বাস নিয়েই বললো, আমি তোমার পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে গিয়েছি। তোমার গায়ে তো লাগিনি। তুমি ভয় পেয়েছো। তোমার পাশ দিয়ে স্কী চালিয়ে গিয়েছি, তোমার গায়ে তো লাগিনি, অথচ, তুমি ভয়ে পরেই গেলে। তোমার কানের পাশ দিয়ে স্কেইট বোর্ডও ছুড়েছি, তোমার কানে তো লাগে নি, অথচ ভয়ে কেমন কান ছুয়ে ছুয়ে দেখলে কানটা ঠিক আছে কিনা। আমার নিশানা কি এতই খারাপ?

আমি জানি, মুনার বাবা উপজেলা ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের রেফারী। ভালো খেলোয়াড় না হলে কেউ রেফারীর মর্যাদা পায় না। তেমনি এক রেফারীর মেয়ে মুনা শুধু ফুটবলই নয়, সাইকেল চালনা, স্কী চালনা, স্কেইট বোর্ড সহ যাবতীয় খেলাতেই চৌকুশ। তার নিশানা ভুল হবার কথা নয়। আমি বললাম, বুঝলাম, তোমার নিশানা ভালো। তাই বলে কি সবাইকে ভয় দেখাতে হবে?
মুনা বললো, সবাইকে কোথায় ভয় দেখালাম। তোমাকেই তো শুধু। ঠিক আছে, আর দেখাবো না। প্রমিজ। তবে, একটা শর্তে।
আমি মুনার বুকের দিকেই তাঁকালাম। স্কীন টাইট লাল টপসটার গল দিয়ে আংশিক স্তনের ভাঁজও চোখে পরছিলো। আমি বললাম, তোমার বুকের দিকে আঁড় চোখে তাঁকাতে নিষেধ করবে তো?
মুনা রাগ করেই বললো, বুদ্ধু কোথাকার।
আমি বললাম, থাক বাদ দাও, শুনলাম বাড়ীতে গিয়েছিলে।
মুনা বললো, হুম গিয়েছিলাম। অপরাধ করেছি?




মুনা মেয়েটা এমন কেনো? কেমন যেনো জেদী প্রকৃতির। একটু ওলট পালট হলেই জেদ করে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হলে এমনই হয় নাকি? আমি বললাম, না, অপরাধ করোনি। কি শর্তের কথা বলেছিলে যেনো?

মুনা তার মাই বাস্কেট বলটা হাতে নিয়ে কোর্টের তারের জালে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, বাস্কেট খেলতে পারো।
খুব ভালো বাস্কেট বল খেলতে না পারলেও, একটু হলেও পারি। কারন, উর্মিও বাস্কেট বল খেলায় খুব পারদর্শী। সেই আমাকে মাত্র এক ঘন্টায় বাস্কেট বল খেলতে শিখিয়ে ছিলো। আমি বললাম, খুব ভালো না।
মুনা বললো, ভালো না পারলেই ভালো। মাত্র এক ঘন্টা। পালা ধরে বাস্কেটে বল ছুড়বো। তুমি যদি জিততে পারো, তাহলে আমি আর তোমাকে ভয় দেখাবো না। আর যদি হেরে যাও, আমি যা বলবো, তাই শুনতে হবে। যা করবো, তাই সহ্য করতে হবে। বলো রাজী? আর রাজী যদি না হও, তাহলে ধরে নেবো নো স্টার্টেই স্কোর। তোমার পরাজয়। আমি আমার খুশী মতোই করবো।
আমি বললাম, কিন্তু কেনো? আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?
মুনা বললো, তুমি আমার ক্ষতি করেছো, তা কি বলেছি? জীবনও একটা খেলার মতো।
মুনার সুডৌল স্তন দুটি আমাকে পাগল করে দিচ্ছিলো। তার হাতের বাস্কেট বলটার সমান না হলেও, স্তন দুটিকে ছোট খাট দুটি বাস্কেট বল এর মতোই লাগছিলো। ওই লোভনীয় বাস্কেট বল দুটি যদি একবার ছুতে পারতাম, তাহলে বোধ হয় জীবনটা ধন্যই হয়ে যেতো। আমি বললাম, তাহলে, আমারও একটা শর্ত আছে।
মুনা বললো, ওকে, আগে শুনি।
আমি বললাম, আমি যদি জিততে পারি, তোমার ওগুলো একবার ছুতে দিতে হবে।
মুনা বললো, ওকে, ডান।



প্রথমে মুনাই বলটা নিয়ে মাঠে নামলো। বলটা থাপরে থাপরে বাস্কেট স্ট্যাণ্ডের কাছাকাছিই এগুতে থাকলো। সেই সাথে তার চমৎকার সুডৌল স্তন যুগলও নাচতে থাকলো একটা ছন্দ নিয়ে। কি অপরূপ সেই দৃশ্য। আমি মুনার স্তন দোলনই দেখতে থাকলাম শুধু। মুনা মুহুর্তেই বলটা ছুড়ে, ঠিক ঝুড়ির ভেতরই ফেললো।

এবার আমার পালা। আমি একটু সীরীয়াসই হলাম। যে করেই হউক প্রথম বাস্কেটটা করতেই হবে। নইলে পিছিয়ে যাবো। আমি উর্মির শেখানো কৌশলগুলোই স্মরণ করতে থাকলাম। বল থ্রো করার আগে এক সেকেণ্ড থামা, আর বাস্কেটটা খুব তীক্ষ্ম নজরে দেখা, সেই সময়ের মাঝেই দু চোখের মাঝা মাঝি বরাবর বলটা ছুড়ে ফেলা। আমি তাই করলাম। ভালো কাজ করলো। বলটা বাস্কেটেই পরলো। মনে মনে উর্মিকেই একটা ধন্যবাদ জানালাম।

এবার মুনার পালা। মুনা বলটা নিয়ে প্রায় আধ কোর্ট চাপরাতে চাপরাতে ডি এর বাইরে থেকেই নিক্ষেপ করলো লাফিয়ে। আর তখন তার সুডৌল স্তন দুটি এমন করে নৃত্য করলো যে, তা দেখে আমার চোখ দুটি সার্থক হয়ে গেলো। তবে, দুঃখের বিষয় বলটা ঝুড়ির রিং এ আঘাত করে তার দিকেই ফিরে গেলো।
জয়ের একটা গন্ধই মনে হলো। মুনা মন খারাপ করেই বলটা আমার দিকে ছুড়ে মারলো। আমি খুব আগ্রহ করেই বলটা নিলাম। অতঃপর স্মরণ করলাম উর্মির আরো একটা কৌশল। বল নিয়ে ঝুড়ির খুব কাছাকাছি থেকে কিভাবে মাত্র দশ ডিগ্রী কোনে বল ছুড়া। আমি তাই করলাম। আমি ঠিক ঠিকই বলটা ঝুড়িতে ফেলতে পারলাম।




প্রায় চল্লিশ মিনিট হয়ে গেছে। মুনার বাস্কেট হয়েছে চব্বিশ, আর আমার তখন সতেরো। মুনা বাস্কেট বলটা কাঁধে নিয়ে তার চমৎকার সাদা গেঁজো দাঁত গুলো বেড় করে গর্বিত হাসিই হাসতে থাকলো। বললো, কি জাহাপনা? আমার গোলাম হতে তো আর বেশী দেরী নাই।

মুনার দাঁতগুলো বরাবরই আমাকে পাগল করে। কিন্তু তখন তার সেই দাঁতের হাসি দেখে বিরক্তিই লাগলো। কারন জয় পরাজয় এর ব্যাপার। আর মাত্র বিশ মিনিট। মুনার চাইতে অন্ততঃ আটটি বাস্কেট বেশী করতে হবে। নইলে মুনা আমাকে সারা জীবনই ঝাপটাতে থাকবে ঝড়ের মতোই। কি অসহ্য! একবার যদি কেউ তেমনি ঝাপটা পেতো, তাহলেই বুঝতো, কি ভয়বহ। গায়ের পাশ দিয়ে সাই সাই করে সাইকেল চালিয়ে যাওয়া, স্কী চালিয়ে যাওয়া। কানের পাশ দিয়ে স্কেইট বোর্ড সাই সাই করে ছুটে যাওয়া অতর্কিতে। কলজেটা তখন শুকিয়ে যায়।

উর্মি আমার উর্মি। আমি উর্মির কাছেই শক্তি প্রার্থনা করলাম মনে মনে। মনে মনে বললাম, উর্মি, আমি রেখা দিদির কাছে যাবো না। তারপরো এই সেক্সী ডানপিটে মেয়েটার হাত থেকে বাঁচাও। তুমি তো আমাকে বাস্কেটের অনেক কৌশল শিখিয়েছিলে? সেগুলোর আর কি আছে?
আমার একে একে সবই মনে পরতে থাকলো।

আর মাত্র এক মিনিট। মুনার আঠাশ, আমার সাতাশ, আর শেষ স্কোর আমার। যদি মিস হয়, তাহলে মুনার গোলাম। বাকীটা জীবন আমাকে শুধু যন্ত্রনা দিয়ে যাবে। আমি মনে মনে উর্মির উদ্দেশ্যেই বললাম, উর্মি, আমি তোমার কাছেই ফিরে আসছি। তোমার ভালোবাসার কত শক্তি আছে আমি দেখতে চাই। তারপর, বলটা ছুড়ে ফেললাম। অতঃপর, অবিশ্বাস্য ভাবেই আমি নাচতে থাকলাম।




পাগলামীর এমন একটি খেলায় ফলাফল ছিলো ড্র। আমি মুনার কাছে গিয়ে বললাম, ড্র হলে কার কি করা উচিৎ?
মুনা তার কমলা রং এর ট্র্যাক স্যূট এর জ্যাকেটটা গায়ে জড়িয়ে নিলো। তারপর ডাগর ডাগর চোখে তাঁকিয়ে বললো, ড্র হওয়া মানে তো সহজ। দুজন দুজনকে ভালোবাসবো। পারবে না আমাকে ভালোবাসতে?
আমি থতমত খেয়ে বললাম, কি বলছো মুনা? তুমি এমন চমৎকার, সুন্দরী একটা মেয়ে। তোমাকে আমি ভালোবাসবো? না মানে, তুমি আমাকে?
মুনা বললো, কেনো? সুন্দরীদের বুঝি কাউকে ভালোবাসতে নেই?
আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, না মানে, কথা ছিলো যদি আমার জয় হয়, তাহলে, তোমার দুধ, ছুয়া, ড্র হলে ওসবের?
মুনা সিরিয়াস হয়েই বললো, আমার জীবনে পরাজয়ও নেই, ড্রও নেই। ড্রও এক রকম পরাজয় এর মতোই। তার জন্যেই তো জ্যাকেটটা গায়ে জড়িয়ে নিলাম। ছুতে চাইলে তাড়াতাড়ি ছুও। নইলে আমি চেইন টানবো।
আমি বললাম, না থাক। তুমি একটা ইনোসেন্ট মেয়ে। আমি তোমার কোন ক্ষতি করতে চাই না।
মুনা তার ট্র্যাক স্যূট জ্যাকেটটার চেইন টেনে বুকটা ঢেকে, চিৎকার করেই বললো, বুদ্ধু কোথাকার!
তারপর, তার মাই বাস্কেট বল, মাই স্কেইট বোর্ড, সাউডার ব্যাগটাতে ঢুকিয়ে, ব্যাগটা কাঁধে চেপে মাউন্টেইন বাইকটার দিকেই এগিয়ে গেলো। সাইকেলের স্যাডেলে বসে পেছন ফিরে তাঁকিয়ে, জিভ বেড় করে ভ্যাংচি কাটলো একবার। তারপর সাই সাই করে সাইকেলটা চালিয়ে ছুটতে থাকলো।
আমিও এক প্রকার হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। উপজেলা পার্ক গ্রাউণ্ড থেকে বেড়িয়ে বড় রাস্তাতেই পা বাড়ালাম। নিশ্চিন্ত মনেই হাঁটছিলাম। হঠাৎই ঝাপটার মতো সাই সাই করে আমার গা ঘেষে কি যেনো ছুটে গেলো। ভয়ে আমার কলজে শুকিয়ে উঠলো। সামনে তাঁকিয়ে দেখলাম, মুনা সাইকেল থামিয়ে পেছন ফিরে আবারো জিভ বেড় করে ভ্যাংচি কাটছে।



[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top