ঝাল খাবারে মরিচ আর মিষ্টি খাবারে চিনি। রান্নার এই স্বাদই সাধারণ ও আমাদের কাছে পরিচিত। কিন্তু মাঝে মাঝে এর বিপরীতও হয়। চুলা থেকে নামানোর আগে ঝাল খাবারে সামান্য চিনি ছিটিয়ে দেন অনেকেই। এতে করে নাকি খাবারের স্বাদে আসে বৈচিত্র্য।
ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, জাপান ও ইতালিতে অনেক কারি বা অন্য ঝালজাতীয় খাবারে রান্না শেষে সামান্য চিনি ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এসব দেশের কিছু কিছু খাবারে টকজাতীয় উপকরণ যেমন টমেটো, টক দই, তেঁতুল, লেবু ব্যবহার হয়। খাবারের টক ভাব কমাতে তাই এই চিনির ব্যবহার করা হয়। আবার খুব ঝাল ও মসলায় পরিপূর্ণ খাবারেও স্বাদে ভারসাম্য আনতে এক চিমটি চিনি দেওয়া হয়। তবে রান্নায় চিনির ব্যবহার খাবারের তেল শোষণ হওয়ার পর করা ভালো। এদিকে মরিচ বেশি ব্যবহার করা হলে সে ক্ষেত্রে চিনির পরিমাণও একটু বাড়িয়ে দিতে পারেন।
কোন খাবারে চিনি দেওয়ার দরকার হয়
তবে ঝাল হলেই যে সব ধরনের খাবারে চিনি দিতে হবে, তা কিন্তু নয়। আমাদের দেশীয় খাবার যেমন মাংসের রেজালা, রোস্ট, গরুর মাংসের বিভিন্ন পদ বা আচারি মাংসে সামান্য চিনি দিলে স্বাদ বাড়ে। এ ছাড়া চায়নিজ ও থাই খাবারে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করেন অনেকেই। এতে মুখে সোডার একটা অনুভূতি হয়। এ ধরনের খাবারে একটু চিনি ছিটিয়ে দিলে লবণ ও চিনির মিশেলে সোডার ভাব দূর হবে বলে জানালেন রন্ধনশিল্পী সিতারা ফেরদৌস।
এ ছাড়া আরও কী কী কারণে খাবারে চিনির ব্যবহার করা হয়, চলুন তা জেনে নিই।
১. কিছু খাবার স্বাদে একটু তিতা বা কটু হয়। এমন খাবারে সামান্য চিনি স্বাদে তারতম্য আনে।
২. খাবারে টক মিষ্টি স্বাদ আনতে সামান্য চিনির দরকার পড়ে।
৩. অনেক সময় খাবারে মচমচে ভাব আনতে চিনি ব্যবহার হয়।
৪. খাবারের স্বাদ, ঘ্রাণ ও ঘনত্ব বাড়াতে সামান্য চিনির প্রয়োজন পড়ে।
৫. যেসব খাবারে রসুনের ব্যবহার বেশি, এমন খাবারে মাঝে মাঝে সামান্য চিনির দরকার হয়।
৬. খাবারে বাদামি রং আনতে রান্না শেষে সাদা খাবারে অনেক সময় চিনি ছিটিয়ে দেওয়া হয়।
৭. খাবারে ক্যারামেল ভাব ও স্বাদ আনতে চিনি ব্যবহারের প্রয়োজন হয়।
৮. খাবারে মরিচের পরিমাণ বেশি হলে স্বাদে ভারসাম্য আনতে চিনি দেওয়া লাগে।