What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

জাতীয় নগ্ন দিবস(রিজভী পর্ব)byসিকদার অনি (1 Viewer)

[HIDE]
মাহমুদ সুলতান সাংঘাতিক ধরনেই লজ্জিত হয়ে পরে। ফৌজিয়া বিথী তাকে সহজ করে তুলার জন্যেই খিল খিল হাসিতে বলে, খুব লজ্জা করছে, তাই না? আসলে বিয়ে আর সেক্স এর মাঝে কোন পার্থক্য নেই। যখন আমরা বলি সেক্স, তখন তার অর্থ হয় দুটি নর নারীর দৈহিক মিলন। আর যখন বলি বিয়ে, তখন তার অর্থ হয় সামাজিক ভাবে দুটি নর নারীর দৈহিক মিলনের অনুমতি দেয়া। কি, ভুল বললাম?
মাহমুদ সুলতান খানিকটা সহজ হয়। তারপর বলে, জী না ম্যাডাম। আপনি ঠিকই বলেছেন।
ফৌজিয়া বিথী মুচকি হেসেই বললো, তো, কখনো সেক্স করেছেন?
মাহমুদ সুলতান এর চেহারাটা লজ্জায় খানিক লালচে হয়ে উঠে। ফৌজিয়া বিথীর আপাদ মস্তকও একবার দেখে। তারপর বলে, জী না ম্যাডাম। আমাদের রক্ষণশীল পরিবার।
ফৌজিয়া বিথী বললো, কিছু মনে করবেন না, কখনো সেক্স করতে ইচ্ছেও হয়নি?
মাহমুদ সুলতান বললো, না মানে, জী মানে, একবার একটা ইংলিশ ফিল্ম দেখার পর, খুবই ইচ্ছে হয়েছিলো।
ফৌজিয়া বিথী চোখ কপালে তুলে বললো, ইংলিশ ফিল্ম দেখে?
মাহমুদ সুলতান ইতস্ততঃ করেই বললো, না মানে, ওই ফিল্মে নায়িকা খানিকক্ষণের জন্যে নগ্ন ছিলো। জীবনে প্রথম মেয়েদের নগ্ন দেহ দেখেছিলাম বলে।
মাহমুদ খানিকটা থেমে দোহাই দেয়ার সুরে বললো, প্লীজ, এটা টি, ভি, তে প্রচার করবেন না। আমার ফ্যামিলীর কেউ জানলে কি না কি ভাববে!
ফৌজিয়া বিথী বিড় বিড় করেই বললো, জীবনে প্রথম মেয়েদের নগ্ন দেহ দেখা।
তারপর উঁচু গলাতেই বললো, তারপর কার নগ্ন দেহ দেখলেন?
মাহমুদ সুলতান বললো, ছি, ছি! কি যে বলেন! আমি ওরকম কোন ছেলেই না!
ফৌজিয়া বিথী অবাক গলায় বললো, তার মানে আপনার নিজ মা কিংবা বোনদের নগ্ন দেহও দেখেন নি?
মাহমুদ সুলতান বললো, জী, বলেছি না, আমাদের রক্ষণশীল পরিবার!


ফৌজিয়া বিথীর মনে হঠাৎ কোথায় যেনো খানিকটা খটকা লাগে। তারপরও, মিষ্টি হাসিটা ঠোটে রেখে জিজ্ঞাসা করলো, তার মানে গত বছর আপনি কিংবা আপনাদের পরিবার জাতীয় নগ্ন দিবসটা পালন করেন নি?
মাহমুদ সুলতান খানিকটা অপ্রস্তুত গলায় বললো, না মানে?

ফৌজিয়া বিথী ক্যামেরার দিকেই মুখ করে। সাদা দাঁতের মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিয়েই বলতে থাকে দর্শকদের উদ্দেশ্যে, সুপ্রিয় দর্শক বৃন্দ, পাওয়া গেছে। আমি কথা বলছিলাম মাহমুদ সুলতান নাম এর এক সদ্র চাকুরীপ্রাপ্ত যুবক এর সাথে। দুই ভাই পাঁচ বোন সহ নয় জন সদস্যের একটি পরিবার। অথচ, তার ভাষ্য মতে সে কখনো তার মা কিংবা বোনদের নগ্ন দেহ দেখেনি। তার অর্থ এই হয় যে, গত বছর এই পরিবারটি জাতীয় নগ্ন দিবসটিকে এড়িয়ে গিয়েছিলো। আমি দৃষ্টি আকর্ষন করছি তরুন বুদ্ধীজীবী, বর্তমান সরকার এর তোখোর আই, বি, রিজভী রহমান এর। আপনি কি এই পরিবারটির কথা জানেন?
রিজভী হঠাৎই টি, ভি, পর্দার সামনে থেকে উঠে দাঁড়ায়। কোন কিছু না ভেবেই ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।


খর রোদে দীর্ঘ একটা সাক্ষাৎকার নিয়ে ফৌজিয়া বিথীও যেনো খানিকটা ক্লান্ত হয়ে পরে। তারপরও ঠোট থেকে মিষ্টি হাসিটা সরে না। এসিষ্ট্যান্ট ডিরেক্টরকে লক্ষ্য করে মিষ্টি হাসিতেই বলে, এবার কাট করুন। একটু বিশ্রাম নেবো।

এ, ডি, কাট বলতেই, ক্যামেরার সাটারও থামে। ফৌজিয়া বিথী এগুতে থাকে গাছতলাটার দিকে। এ, ডি, স্নেহ ভরা গলাতেই বলতে থাকে, ওয়েল ডান! আফটার অল ফৌজিয়া বিথী, অল রাউণ্ডার! শুধু সুন্দরীই নও, কথার প্যাচও ভালো জানো। অসংখ্য ধন্যবাদ তোমাকে। যথেষ্ট হয়েছে। আজকের প্রতিবেদনে এতটুকুই চলবে। সেই সাথে রিজভী রহমান এরও টনক নড়বে। আমাদের অনুষ্ঠানেই খুব গর্ব করে বলেছিলো, সব কিছু আমার হাতে ছেড়ে দিন। এবারের জাতীয় নগ্ন দিবসে একটি পরিবারও জাতীয় নগ্ন দিবস এড়িয়ে যেতে পারবে না। রিজভী রহমান যদি তোমার এই শেষ কথাগুলো শুনে, তাহলে সে আর ঘরে বসে থাকার কথা না।
গাছতলায় দাঁড়িয়ে ফৌজিয়া বিথীও গর্বিত হাসি হাসে।


তোখোর বুদ্ধিজীবী আই, বি, রিজভী রহমান তার অত্যাধুনিক মটর বাইকটা নিয়ে পন্খীরাজ এর মতোই ছুটে চলে। রিজভী রহমান এর চোখ শকুন এর মতো। তার চোখকে কোন কিছুই ফাঁকি দিতে পারে না। টি, ভি, তে আশ পাশের দৃশ্য দেখেই অনুমান করে ফেলেছে দৃশ্যটা কোথাকার ছিলো। যে এলাকাটায় দৃশ্যটা নেয়া হয়েছিলো, সেটা সম্ভবতঃ কাছাকাছি বিজয় উদ্যান এর সামনেই। সে তার মটর বাইকটা ছুটালো সেদিকেই। আর ভাবতে থাকলো, অসম্ভব একটা কঠিন যুদ্ধের কথা। রক্ষণশীল পরিবার, এরা মচকায় তারপরও ভাঙে না। নাহ, রক্তপাত এর যুদ্ধ নয়, বুদ্ধির যুদ্ধেই জয় করতে হবে এমন একটি পরিবারকে।

সাই সাই করে ছুটতে থাকে রিজভী রহমান এর বাইক। হ্যালমেটের আঁড়ালে চেহারা দেখা যায় না। তারপরও বুঝা যায় কে ছুটছে। রিজভী রহমান হ্যালমেটের আঁড়ালেই বিড় বিড় করে আপন মনেই বললো, ধন্যবাদ বিথী, আই লাইক ইউ।
তারপর, আরো স্পীড নিয়ে ছুটাতে থাকে বাইকটা। বিজয় উদ্যান এর পাশ দিয়েই ছুটে চলে। হঠাৎই চোখ পরে গাছতলায়, ফৌজিয়া বিথী!


কষিয়ে ব্রেইক চাপে রিজভী রহমান। তারপর, বাইকটা পিছিয়ে আনে বিজয় উদ্যান এর গাছতলাটার দিকেই। হাঁটু গেড়ে বসে থাকা ফৌজিয়া বিথী রিজভীকে দেখে অবাকই হয়। ফৌজিয়া বিথীকে সামনা সামনি দেখে অনেকেরই বোবা বনে যাবার উপক্রম হয়। সেদিন রিজভী রহমানকেও সামনা সামনি দেখে ফৌজিয়া বিথীরও বোকা বনে যাবার উপক্রম হয়।
খানিকটা স্থির চোখেই তাঁকিয়ে থাকে সে রিজভী রহমান এর দিকে। তারপর বলে, আপনি?
রিজভী রহমান মাথার উপর থেকে হ্যালমেটটা সরিয়ে বললো, তোমার সাহায্য খুব দরকার।
তারপর, খানিকটা আমতা আমতা করেই বললো, স্যরি, তুমি বলে ডেকে ফেললাম।
ফৌজিয়া বিথী অবাক হয়েই বললো, আমি সে কথা ভাবছি না। আপনি এই অল্প সময়ে লোকেশন এর খোঁজ পেলেন কি করে?
রিজভী রহমান খানিক গম্ভীর গলাতেই বললো, সেটা জানা কি খুব জরুরী?
ফৌজিয়া বিথী মুচকি হেসেই বললো, না রিজভী ভাই, খুব বেশী জরুরী না। এমনিতেই কৌতুহল। ঠিক আছে বলুন, কি সাহায্য করতে পারি আপনাকে।
রিজভী রহমান বললো, তুমি যে লোকটার সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলে, লোকটা এদিকেই গেছে। আমি তাকে খোঁজে বেড় করবো। তুমিও আমার সাথে যাবে।
ফৌজিয়া বিথী আহলাদী গলাতেই বললো, স্যরি রিজভী ভাই, আমার লাইভ প্রোগ্রাম। খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। অন্ততঃ আরো দুটা সাক্ষাৎকার নিতে হবে। প্রোডাকশনের সবাই অপেক্ষা করছে।
রিজভী রহমান বাইকে স্টার্ট দিয়ে বললো, ওকে ঠিক আছে!
এই বলে আবারো হাতের হ্যালমেটটা মাথায় চাপালো।

এ, ডি, ফারুক আলম কি ভাবলো বুঝা গেলো না। তার বাইকের সামনে পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে বললো, ম্যাডাম সাহায্য না করলেও, আমি করবো।

[/HIDE]
 
[HIDE]
রিজভী রহমান বাইক এর স্টার্ট বন্ধ করে, মাথার উপর থেকে হ্যালমেটটা আবারো খুলে নিয়ে হাসলো। বললো, কিছু মনে করবেন না। ষাড় এর কাজ কিন্তু বলদকে দিয়ে হয় না।
এ, ডি, তৎক্ষণাত উত্তেজিত হয়ে বললো, কি? আমাকে বলদ বললেন?
ওপাশে, মিষ্টি দাঁতগুলো বেড় করে ফৌজিয়া বিথী খিল খিল করেই হাসলো। বললো, এই তো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন! এই জন্যেই মুরুব্বীরা বলে থাকে, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
এ, ডি, ফৌজিয়া বিথীর দিকেও চোখ লাল করে তাঁকায়। বলতে থাকে, তুমি আমাকে জ্ঞান দিচ্ছো? জানো আমি কে? পাঁচ বছর ধরে এই প্রোগ্রাম এর এসিষ্ট্যান্ট ডিরেক্টর এর কাজ করছি। বলতে পারো অর্ধেক ডিরেক্টর। আমি তো ডিরেক্টর সাহেবকে একটা চমক দিতে চেয়েছিলাম!
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল হাসিতেই বললো, কি চমক শুনি?
ফৌজিয়া বিথী ঘাড়টা কাৎ করে বললো, বাড়তি চমক? বুঝলাম না।
এ, ডি, ফারুক আলম বলতে থাকলো, তুমি ওসব বুঝবে না। মত্র তো এই লাইনে এসেছো। প্রডিউসারকে খুশী করার জন্যে, প্রমোশনের খাতিরে, নিজ বুদ্ধিতেও অনুষ্ঠান পরিকল্পনার বাইরেও কিছু শট নিয়ে রাখতে হয়। বলা তো যায় না, যদি লাইগ্যা যায়!
তারপর, রিজভী রহমান এর দিকে তাঁকিয়ে বললো, ঠিক বলিনাই স্যার! আমি কিন্তু রাগ করিনি। কারন, আপনি ষাড় এর সাথে বলদ এর তুলনা করেছেন। দুটাই পশু, একই গোত্রের। আমি স্যার মানুষ, পুরুষ মানুষ। আপনি নিশ্চয়ই বুঝাতে চেয়েছেন মেয়ে মানুষ আর পুরুষ মানুষ এর পার্থক্য। ঠিক না স্যার?
রিজভী রহমান বাইকের হাতলে দু কনুই এর সামনের ভাগ চেপে বললো, ঠিক তা নয়। ফৌজিয়া বিথীর উপস্থিত বুদ্ধি খুবই চমৎকার। মানে কথার মার প্যাচ। কোন একটা আলাপ শুরু করে আলাপটা ভিন্ন প্রবাহে নিয়ে যাওয়া। এটা সবাই পারে না। এমন কি আমিও না। কেবলমাত্র তোখোর আইনজীবীরাই পারে।
এ, ডি, ফারুক আলম এর মুখটা যেনো হঠাৎই চুপসে গেলো।


রিজভী রহমান এর কথা শুনে ফৌজিয়া বিথীর মনটা যেনো গর্বিত হয়ে উঠে। সে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, রিজভী ভাই, একটু বেশী বলে ফেললেন। আসলে, স্কুল জীবন থেকেই বিতর্ক প্রতিযোগীতা করতাম। বেশ কবার টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগীতায়ও অংশ নিয়েছিলাম। টি, ভি, তে আমার বিতর্ক প্রতিযোগীতা দেখেই, প্রডিউসার সাহেব এই অনুষ্ঠানটার রিপোর্টার এর কাজ করতে অনুরোধ করেছিলো। আমি কিন্তু এখনো ছাত্রী, কলেজ ফার্স্ট ইয়ার।
রিজভী রহমান স্নেহ ভরা ঠোটে হাসলো। বললো, তোমার ইতিহাস কি তোমার নিজ মুখে জানাতে হবে? আমি যেমনি জানি, ঠিক তেমনি সারা দেশের মানুষও জানে। ঠিক আছে, অনেক সময় নষ্ট করে ফেললাম। তোমারও যেমনি কাজ, আমারও অনেক কাজ, আসি।
ফৌজিয়া বিথী আহলাদী গলায় বললো, এ, ডি, সাহেব যখন রাজী আছে, তখন আমারও কিন্তু আপত্তি নেই আপনাকে সাহায্য করতে। আমাকে কি করতে হবে?
রিজভী রহমান বললো, টি, ভি, রিপোর্টে শুনলাম, ওই মাহমুদ সুলতান এর পরিবারটা নাকি রক্ষণশীল ধরনের। বলতে দ্বিধা নেই, এদেরকে পোষ মানানো আমার পক্ষে একটু কঠিনই বটে। কারন, এরা অন্ধ বিশ্বাসী।
ফৌজিয়া বিথী বললো, আমি যদি আপনার কোন উপকারে আসতে পারি, তাহলে আমি ধন্য।


রিজভী রহমান বাইক এর স্টার্ট পুরুপুরি বন্ধ করে বাইক থেকে নেমে দাঁড়ায়। বলতে থাকে, তাহলে হেঁটেই যাওয়া যাক। মাহমুদ সুলতান এর বাড়ী খুব বেশী দূরে নয়। ওদিকে চলো।

রোদের প্রখরতা বাড়ছে। ফৌজিয়া বিথীর পরনে তখনও সাদা ওভার কোটটা জড়িয়ে আছে। রীতীমতো ঘামছে সে। ওভার কোটের বোতাম গুলো খুলতে খুলতে বললো, ঠিক আছে চলুন।
এ, ডি, ফারুক আলম ক্যামেরা ম্যানকে লক্ষ্য করে বললো, স্টার্ট!
রিজভী রহমান এর সেদিকে খেয়াল ছিলো না। সে ফৌজিয়া বিথীর দিকে এক নজর তাঁকালো। বোতাম খুলা ওভার কোটটার ভেতরে কালো রং এর টপস, গলে সাদা টাই। আর নিম্নাঙ্গে সাদা স্কার্ট। বললো, এক অর্থে তুমিও কিন্তু রক্ষণশীল।
ক্যামেরার ব্যাপারটা ফৌজিয়া বিথীরও খেয়াল ছিলো না। সে চিরায়ত সহজভাবেই কথা বলছিলো। খিল খিল হাসিতেই বললো, কেনো বলুন তো?
রিজভী বললো, সব সময় কেমন যেনো ভারী ভারী পোশাক পরে থাকো। খারাপ লাগে না, তবে দেখে মনে হয় খুবই রক্ষণশীল পরিবার এর একটি মেয়ে। কিন্তু যখন তোমার রিপোর্ট শুনি, তখন মনে হয় পুরুপুরি উল্টু।
ফৌজিয়া বিথী আহলাদী গলাতেই বলে, আসলে আমি লাইভ অনুষ্ঠান এর রিপোর্টার। প্রতিদিন খুব সকালে এই অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয়। সবাই এই অনুষ্ঠানটি দেখে, তারপর ঘর থেকে বেড় হয়। আর আমি ঘর থেকে বেড় হই সূর্য্য উঠারও আগে। একটু শীত শীত লাগে তো, তাই।
রিজভী বললো, এতদিন পর তোমার রহস্যটা জানলাম। আরেকটা প্রশ্ন করবো?
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল হাসিতেই বললো, মনে হচ্ছে, আপনিই রিপোর্টার, আর আমার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন।
রিজভী বললো, ব্যাপারটা আসলে তা নয়। আসলে সবাই জানতে চায়। কোর্টে জানতে গেলে উকিল, থানায় জানে পুলিশ, আর পরিচিতরা জানতে চাইলে বলি খোঁজ খবর।

[/HIDE]
 
[HIDE]
ফৌজিয়া বিথী হঠাৎই থেমে দাঁড়ায়। রিজভী রহমান এর চোখে চোখে তাঁকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর বলে, সত্যিই, আপানার কাছেই কিন্তু আমার অনেক কিছু শেখা উচিৎ।
রিজভী রহমান বললো, এমন কি বললাম যে, আমার কাছে তোমাকে শিখতে হবে?
ফৌজিয়া বিথী এগুতে এগুতেই বলতে থাকে, এই যে বিভিন্ন পেশার সাথে সাধারন মানুষের একটা মিল, এটা কিন্তু আমি কখনো ভেবে দেখিনি। তাইতো, এক অর্থে আমরা সাবাই কিন্তু প্রতিনিয়ত এক একজনকে শুধু জেরা করছি। কখনো উকিল, কখনো পুলিশ, কখনো টি, ভি, রিপোর্টার, আবার কখনো চির চেনা আপনজন হয়ে।
রিজভী রহমান বললো, এক্জেক্টলী। আর তাই, এখন আমরা যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমার সাথে একটা নিবিড় মিল রয়েছে।
ফৌজিয়া বিথী চোখ কপালে তুলে বললো, মানে?
রিজভী রহমান বললো, জানোই তো, সিকদার অনি সংসদ মিলনায়তনে জাতীয় নগ্ন দিবসটির কথা ঘোষনা করার সাথে সাথে পুরু দেশের মানুষ দু ভাগে বিভক্ত হয়ে পরেছিলো। তাদের একটি হলো যৌন পাগলা সম্প্রদায়, আর অপরটি হলো সৃজনশীল গোষ্ঠী। সৃজনশীল গোষ্ঠীর কর্মীরা শুরু থেকেই সিকদার অনির বিরোধিতা করছিলো। আর মাহমুদ সুলতান এর বাবা আলিফ সুলতান তাদেরই একজন। এবং তারা জানে তুমিও সৃজনশীল গোষ্ঠীর একজন।
ফৌজিয়া বিথী চোখ কপালে তুলে বললো, এর কারন?
রিজভী রহমান বললো, তার বড় কারন হলো তোমার পোশাক। সব সময় এমন পোশাক পরে টি, ভি, পর্দায় আসো, মনে হয় তোমার চাইতে পর্দাশীল বাঙালী ললনা খুব কমই আছে।
ফৌজিয়া বিথী তার চক চক করা সাদা দাঁত গুলো বেড় করে খিল খিল হাসিতে বললো, এখন বুঝতে?
ঠিক তখনই এ, ডি, ফারুক আলম কর্কশ গলাতেই বললো, কাট!
রিজভী রহমান, ফৌজিয়া বিথী উভয়েই অবাক হয়ে ফারুক আলম এর দিকে তাঁকালো। তারপর, ক্যামেরার দিকে।

আলিফ সুলতান সারা জীবন ছোট খাট একটা চাকরী করলেও, উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে বিশাল এক বাড়ী। ফৌজিয়া বিথী সে বাড়ীর বারান্দায় উঠে দাঁড়াতেই ক্যামেরা তাক হলো তার দিকে। ফৌজিয়া বিথী পাশ ফিরে ক্যামেরার দিকে মুখটা ঘুরিয়ে বলতে থাকলো, আমি এসেছি শহর থেকে খানিকটা দূরে, প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর প্রাচীন এক বাড়ী সুলতান ভবনে। হয়তো কেউ কেউ ভেবে থাকবেন, দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া। না, আমি এসেছি কে কি ভাবছে, জানতে! আসুন না দেখি, এই বাড়ীতে কে কি ভাবছে? ঠিক আছে, তার আগে বলে রাখি, এই বাড়ীর মালিক হলো আলিফ সুলতান। বর্তমানে রিটায়ার্ড। তার সাত সাতটি সন্তান। না, ভাববেন না যে, পরিবার পরিকল্পনা নামক কোন প্রসংগ নিয়ে আমি এখানে এসেছি। আমি এসেছি বহুল আলোচিত আগত জাতীয় নগ্ন দিবস এর প্রসংগ নিয়ে। সুপ্রিয় দর্শক বৃন্দ, আপনারা কি ভাবছেন? আচ্ছা, এমনও কখনো ভেবেছেন, আমি কেমন মেয়ে? আমি কিন্তু ভেবে দেখেছি। না, এখন বলবো না। আপনাদের জন্যে একটা চমক রইলো। আর বরাবর এর মতোই কি চমক তা আপনাদের অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে সরাসরি টেলিফোনে জানাতে হবে, অনুষ্ঠানটি শেষ হবার আগেই। আরো জানিয়ে রাখছি, আজকে কিন্তু তিন ঘন্টার বিশেষ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি শেষ হতে আরো দু ঘন্টা বাকী। তাই ভুল উত্তর জানানোর আগে, অনেক ভেবে চিন্তে সঠিক উত্তরটিই জানাবেন। তার মাঝ থেকে লটারীর মাধ্যমে সঠিক উত্তর এর তিনজনকেই বাছাই করা হবে পুরস্কৃত করার জন্যে। পুরস্কার তেমন কিছুই না, আমার পরনের যে কোন একটি পোশাক। কি চাই?

এ, ডি, ফারুক আলম হঠাৎই বললো, কাট!
ফৌজিয়া বিথী অবাক হয়ে বললো, কাট কেনো?
এ, ডি, ফারুক আলম মুখ ভ্যাংচিয়ে বললো, আমাদের অনুষ্ঠান দেখার দর্শকরা কি ফকির নাকি, তুমি তোমার ব্যবহার করা পোশাক পুরস্কার হিসেবে দেবে?
তারপর, মাথা চাপরাতে চাপরাতে বলতে থাকলো, পুরু প্রোগ্রামটাই মাটি করে দিলে। আমি এখন ডিরেক্টরকে কি জবাব দেবো?

এগিয়ে আসে স্বয়ং আলিফ সুলতান। মাথায় যেমনি কাচা পাকা চুল, ঠিক তেমনি গাল ভরা কাচা পাকা দাঁড়ি। খানিকটা লোচ্চার মতোই তাঁকিয়ে থাকে ফৌজিয়া বিথীর দিকে। জিভ দিয়ে যেনো খানিক রসও ঢলে পরে। তারপর বলতে থাকে, কে মা তুমি? কোথায় যেনো দেখেছি? বড়ই সৌন্দর্য্য!
ফৌজিয়া বিথী তার উপর পাটির সব গুলো চক চক করা সাদা দাঁত বেড় করে প্রান খুলা একটা হাসিই উপহার দেয় আলিফ সুলতানকে। তারপর বলে, চাচা, আমি আপনাদের বিথী, ফৌজিয়া বিথী! আপনি কি ভাবছেন?

আলিফ সুলতান ফৌজিয়া বিথীর কাছাকাছি এগিয়ে আসে। তার আপাদ মস্তক একবার নিরীক্ষণ করে বলে, ও বুঝেছি, আমাদের নেতার মেয়ে। আমার ছোট মেয়ে শামীমা সুলতানার বান্ধবী। বড়ই সৌন্দর্য্য!
তারপর সবার দিকে তাঁকিয়ে বললো, কিন্তু এরা কারা?
ফৌজিয়া বিথী বললো, না চাচা, আমি হয়তো আপনার মেয়ে শামীমা সুলতানার সম বয়েসী হতে পারি। কিন্তু আমি এসেছি টি, ভি, প্রোগ্রাম, আসুন দেখি, কে কি ভাবছেন থেকে।
আলিফ সুলতান হঠাৎই খানিক বোকা বনে গিয়ে বললো, ওই কথা আগে বলবানা? অইটা তো আমি সব সময় দেখি। কিন্তু একটু আগেই তো তুমি টেলিভিশনের ভিতরে আছিলা। তুমি ঐ খান থেইক্যা বাইর হইয়া আইলা কেমনে?
ফৌজিয়া বিথী মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিয়েই বললো, আমি কিন্তু এখনো টেলিভিশনের ভিতরেই আছি। বিশ্বাস না হয়, একবার টেলিভিশনটা দেখে আসুন!
আলিফ সুলতান গোলক ধাঁ ধাঁর মাঝে পরেই বলতে থাকে, এইডা কি কয়? তুমি কি যাদু জানো? যাদুকর?
ফৌজিয়া বিথী মিষ্টি হাসিতেই বলতে থাকে, আগে বাড়ীর ভেতরে যাবার সুযোগটি তো দেবন? তারপর না হয় বলছি, আমি কি?
আলিফ সুলতান খুব আগ্রহ করেই বলে, আইসো, আইসো। তুমি হইলা দামী মেহমান!


রিপোর্টার ফৌজিয়া বিথী কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে পরনের ওভার কোটটা খুলে, কনুই এর ভাঁজে রেখে এগুচ্ছিলো। ঠিক তখনই বুকে ভালো করে ওড়না প্যাচিয়ে রাখা ষোল সতেরো বছর বয়সের মিষ্টি চেহারার একটি যুবতী ছুটে এসে বললো, বিথী আপু? সত্যিই আপনি? আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না। এই কয়েক মিনিট আগেই তো টি, ভি, তে আপনাকে দেখছিলাম।
তারপর, তার হাতের ওভার কোটটা ইশারা করে বললো, দিন, ওটা আমাকে দিন।
চটপটে ধরনের মিষ্টি মেয়েটি ওভার কোটটা নিজ হাতে নিয়ে চোখের সামনে মেলে ধরে বললো, যদি কুইজ এর সঠিক উত্তর হয়, তাহলে বুঝি এটাই উপহার করবেন?
ফৌজিয়া বিথী বারান্দার রেলিংটা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, তোমার কি ওটা খুব পছন্দ?
মেয়েটি বললো, পছন্দ অপছন্দ তো পরের কথা, এতদিন এটা কার পরনে ছিলো সেটাই বড় কথা। আমি যে একটু ছুতে পেরেছি, তাতেই কি খুশী লাগছে!
ফৌজিয়া বিথী মুগ্ধ হয়ে বললো, কুইজ কিন্তু শুধু দর্শকদের জন্যেই নয়। আমি যাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকি, তাদের জন্যেও কুইজ অনুষ্ঠান করে থাকি। তবে, তাদের জন্যে পুরস্কার আলাদা। দর্শকদের জন্যেই শুধু আমার পরনের পোশাক। এটা ঠিক, আমি কিন্তু আমার কোন পোশাকটা উপহার করবো, এখনো খুলে বলিনি। আমার পরনে এখনো এই ওভার কোটটা ছাড়া কমসে কম তিন এর অধিক পোশাক আছে। তুমি যদি কয়টি পোশাক আছে, তার সঠিক উত্তর দিতে পারো, তাহলে আমি তোমাকে এটা গিফট করে দেবো।
মেয়েটি খানিকক্ষণ চোখ বন্ধ করে ভাবলো। তারপর বললো, সাতটি।
ফৌজিয়া বিথী খানিকক্ষণ মেয়েটির দিকে বিস্ময় দৃষ্টি নিয়ে তাঁকিয়ে রইলো। তারপর বললো, কি করে হিসাব করলে বলো তো? কম কিংবা বেশীও কিন্তু হতে পারে।
মেয়েটি ঠিক ফৌজিয়া বিথীর মতোই অঙ্গ ভঙ্গী করে, তার কন্ঠটাও নকল করে বলতে থাকলো, কি করে হিসাব করলাম, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, উত্তরটা সঠিক হলো কিনা!
ফৌজিয়া বিথী মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে বললো, বাহ, তুমি তো খুব সুন্দর অনুকরণ করতে পারো। মনে হচ্ছিলো যেনো আমি নিজেই বলছি।

[/HIDE]
 
[HIDE]
মেয়েটি যেনো খানিকটা গর্ব বোধ করলো। খানিকটা গর্বিত গলাতেই বললো, আমি কিন্তু আপনার একজন বড় ফ্যান।
ফৌজিয়া বিথীর মনটাও আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠে। সে আনন্দিত গলাতেই বললো, উত্তর সঠিক হয়েছে। তবে সত্যি কথাটাই বলি, অন্যদিন হলে আমার পরনে আরো একটি কম পোশাক থাকার কথাই ছিলো। তোমাকে আমার খুব ভালো লেগেছে। তোমাকে ওই ওভার কোটটা আমি দিয়েই দিলাম। খুশী তো!
মেয়েটিও ফৌজিয়া বিথীকে জড়িয়ে ধরে বললো, সত্যি আপু? আমি কিন্তু এমনিতেই অনুমান করে বলেছিলাম।
এ, ডি, ফারুক আলম, কোন ফাঁকে ক্যামেরা ম্যানকে ইশারা করেছিলো, কেউ টেরই পাইনি। বাড়ীর ভেতর থেকে হঠাৎই ছোট্ট একটা কোলাহল ভেসে আসতে থাকলো, আরে, শামীমা না? ওই তো ফৌজিয়া বিথীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে আমাদের শামীমাই তো!
তারপর, কে যেনো বারান্দায় উঁকি দিয়ে বলতে থাকলো, শামীমাই তো! ওই যে! দেখো দেখো!

চারিদক থেকে কোলাহল শুনে, শামীমাও হঠাৎ অপ্রস্তুত হয়ে পরে। সে হঠাৎই ফৌজিয়া বিথীকে মুক্ত করে খানিকটা পিছিয়ে যায়। আমতা আমতা করেই বলতে থাকে, আমাকে কি টি, ভি, তে দেখানো হচ্ছে?
ফৌজিয়া বিথী মিষ্টি হেসেই বলে, হতে পারে।
লজ্জায় শামীমা নামের মেয়েটির গাল লাল হয়ে উঠে। সে বারান্দায় উঠে আসার ছোট সিঁড়িটা ধরে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টাই করে। পিছু পিছু ফৌজিয়া বিথীও এগিয়ে যায়। সিঁড়িটার মাঝ পথে দাঁড়িয়ে ডাকে, বন্ধু! মন্দ কি? সারা দেশের মানুষ তোমাকে দেখছে! ইউ আর নাউ ফ্যামাস!

শামীমা বারান্দার ছোট সিঁড়িটা দিয়ে নামতে গিয়েও থেমে দাঁড়ালো। ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো, বন্ধু?
ফৌজিয়া বিথী থুতনীর পার্শ্ব দিকটা চুলকানোর ভঙ্গী করেই বললো, তোমার নামটাই যখন জানা হয়নি, তখন বন্ধু ছাড়া আর কি ডাকতে পারি?
শামীমা খানিকটা লাজুক গলায় বললো, শামীমা সুলতানা।

ফৌজিয়া বিথী সিঁড়িটার মাঝ পথে দাঁড়িয়েই ক্যামেরার দিকে তাঁকিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্য বলতে থাকলো, আমরা কথা বলছি, এই একটু আগেও যে যুবক ছেলেটির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম, সেই লাজুক যুবক মাহমুদ সুলতান এরই একজন বোন এর সাথে। সেও খুব লাজুক! নাম শামীমা সুলতানা। টি, ভি, পর্দায় এতক্ষণ দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, খুবই চঞ্চলা মিষ্টি একটি মেয়ে। আমরা এখন তার কাছেই জিজ্ঞাসা করবো, জাতীয় নগ্ন দিবস নিয়ে সে কি ভাবছে?
ফৌজিয়া বিথী অতঃপর শামীমা সুলতানার দিকে তাঁকিয়েই বললো, আচ্ছা শামীমা, আগত জাতীয় নগ্ন দিবস এর ব্যাপারে আপনি কি ভাবছেন?
শামীমা লাজুক দৃষ্টি নিয়ে, সন্তর্পণেই চারিদিক তাঁকালো। তারপর, খানিকটা লাজুকতা নিয়ে বললো, আমাকে কি এখনও সবাই টি, ভি, তে দেখছে?


ফৌজিয়া বিথী নিজেও জানেনা, এ, ডি, ফারুক আলম এর নির্দেশে ক্যামেরাম্যান কি করে, আর স্টুডিওতে ডিরেক্টর এর নির্দেশে কখন কোনটা প্রচারিত হয়। তারপরও বললো, ঠিক বলতে পারবো না। তবে, তোমার মতো সুন্দরী একটি মেয়ের রাতারাতি নামকরার জন্যে কিন্তু একটি বড় সুযোগ!
শামীমা বললো, ছি, ছি! আমি এত নাম করতে চাই না। আমি খুব সাধারন পরিবার এর মেয়ে। আব্বু আমাকে টি, ভি, তে দেখতে পেলে জ্যান্ত কবর দিয়ে দেবে।
এই বলে শামীমা অন্যত্র পালিয়ে যেতে থাকলো।
ফৌজিয়া বিথী খানিকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে রিজভী রহমান এর দিকেই তাঁকালো। ওদিক থেকে এ, ডি, ফারুক আলম ইশারা করলো, চালিয়ে যাও।
ফৌজিয়া বিথী আবারো শুরু করলো দর্শকদের উদ্দেশ্যে, তার নিপুণ কুশলতা নিয়ে সিঁড়িটার মাঝপথে দাঁড়িয়েই। বলতে থাকলো, আমরা জানতে পারলাম, শামীমা সুলতানা নামের এই উঠতি বয়সের যুবতী মেয়েটি জাতীয় নগ্ন দিবস নিয়ে কি ভাবছে? আসলে সে খুবই ভীত! সে ভাবছে, জাতীয় নগ্ন দিবস নিয়ে কোন কথা বলতে চাইলেই, তার বাবা তাকে জ্যান্ত কবর দিয়ে দেবে। অথবা, এমন একটি রক্ষণশীল পরিবার এর মেয়ে টেলিভিশন পর্দায়, তা জেনে হয়তো তার বাবা খুব ক্ষিপ্ত হয়ে পরবে। আমি কিন্তু তা ভাবছি না। এসব হচ্ছে পারিবারিক কিছু ভীতী। কিছুক্ষণ আগেই আমি তার বাবার সাথে কথা বলেছি। খুবই ভালো মানুষ। আমাকে তাদের বাড়ীর একজন বড় মেহমান হিসেবেই বরণ করে নিয়েছেন।

হঠাৎই ভেতর থেকে এগিয়ে আসে আলিফ সুলতান। সে ফৌজিয়া বিথীকে লক্ষ্য করে বলতে থাকে, অনেক বলেছেন। আপনি এখন আসতে পারেন। ওখানে একটা গরুর গোয়াল আছে। ওই গরুর গোয়ালটার সামনে গিয়ে বলতে থাকেন। ওরা আপনার কথা খুব মনযোগ দিয়ে শুনবে। কিন্তু কিচ্ছু বলবে না। বলবে কি করে? ওরা তো গরু! গরু! বোবা! যান!
[/HIDE]
 
[HIDE]
ফৌজিয়া বিথী হঠাৎই যেনো বোকা বনে গেলো। খানিকটা অন্যত্র তাঁকিয়ে বললো, ঠিক বুঝতে পারলাম না!
আলিফ সুলতান মুখ খিচিয়েই বললো, বুঝবেন কেমনে? আপনার কি আমার মতো চুল দাড়ি কিছু পাকছে? থুক্কু! দাড়ি থাকলেই তো পাকবে? খুব তো পাম্প দিতেছেন! আমি খুউব ভালা মানুষ। আমি কিন্তু অত ভালা মানুষ না! ছোড খাড কাম করলে কি হইবো, আমি কিন্তু জমিদার বংশের মরদ! অখন জমিদারী নাই! তারপরও সবাই মাণ্য গণ্য করে। আমি কিন্তু ঐসব জাতীয় নগ্ন দিবস এর দলে নাই। আপনি এখন আসেন! আমি টেলিভিশন বাক্সডা বন্দ করতাছি!
ফৌজিয়া বিথী দমে যাবার মতো মেয়ে নয়। সে মুচকি হেসেই বললো, কিন্তু চাচা, আপনি কি ভাবছেন, তাই তো জানা হলো না।
আলিফ সুলতান কিছুটা বিরক্তি নিয়েই বলতে থাকে, আবারো প্যাচাল বাড়ায়! তুমি বুঝোনা কেনো, আমরা পশু না। পশুরা ন্যাংটা থাকবে, যখন যেই পশু সামনে পাবে, চুদাচুদিও করবে। আমরা তো ওসব পারবো না! তুমি ওই গরু গুলার কাছে যাও। ওরা পারলেও পারতে পারে।
ফৌজিয়া বিথী বললো, চাচা, ঠিক বলেন নি।


আলিফ সুলতান ক্ষোভে শুধু ফোঁশ ফোঁশ করতে থাকলো। খানিকটা বিকৃত গলায় বললো, কি ঠিক বলিনি, মা জননী?
ফৌজিয়া বিথী খানিকটা গম্ভীর গলায় বললো, পশুরা যে কোন পশু সামনে পেলেই চুদাচুদি করে না। একটা গরু কখনো মানুষ চুদতে আসে না। মানুষরাও কিন্তু পশুর দলে।
আলিফ সুলতান মুখ বিকৃতি করেই বলতে থাকে, ওরে বাবা, তুমি তো জীব বিদ্যা বিসারদ হইছো! আমারে যুক্তি শেখাও। আর কি কি যুক্তি জানো, বলো শুনি। বান্দ কেমনে মানুষ হইলো?
ফৌজিয়া বিথী শান্ত গলাতেই বললো, জানেনই তো চাচা, আমার কাজই হলো, কে কি ভাবছে জানা। আর আজকের প্রধান বিষয়বস্তুই হলো, জাতীয় নগ্ন দিবস নিয়ে কে কি ভাবছে, তা সবার কাছ থেকে জানা। আপনার কাছ থেকে জানা শেষ। আপনি পুরুপুরি এর বিপক্ষে। আমি কি আপনার ফ্যামিলীর অন্যদের কাছেও তাদের ভাবনা জানতে পারি?
আলিফ সুলতান খানিকটা যেনো মুসিবত এর মাঝেই পরে যায়। সে একবার ফৌজিয়া বিথীর আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করে। তারপর বলতে থাকে, আমি কি ভাবতেছি, ঐটা ভালো লাগে নাই? তুমি কি ভোটাভোটি করতে আইছো? তইলে শোনো মা, আমি টেলিভিশন দেখি না। আমার বড় ছেলে চাকুরী পাবার পরই আদরের ছোট বোনদের আব্দারে টেলিভিশন বাক্সটা কিনছিলো। বয়স হইছে, চাকরীও রিটায়ার্ড হইছে। কাজ কম্ম নাই! তয় মাঝে মধ্যে খবরটাই শুধু দেখি। সকালের খবরটা শেষ হইতে না হইতেই তোমারে দেখি ছুটা ছুটি করতে। সংবাদ অনুষ্ঠান এর মতোই লাগে। আমার খুব ভালো লাগে। বড়ই সৌন্দর্য্য লাগে। কিন্তু তোমার এই কি হাল? মানুষকে ন্যাংটা করাইবার জন্যে পথে নামিছো?
ফৌজিয়া বিথীর মেজাজটা খারাপ হতে থাকে। তারপরও বুদ্ধিমতী ফৌজিয়া বিথী নিজেকে সামলে নেয়। মুচকি হেসে বলে, চাচা, কথাটা ঠিক বলেন নি। আমাদের অনুষ্ঠানটা সেই রকম না। আসলে, আমাদের অনুষ্ঠান এর মূল উদ্দেশ্য হলো, কোন ব্যাপারে কে কি ভাবছে তা জানা। আর সবাইকে জানানো। সামনে জাতীয় নগ্ন দিবস, তাই আমিও পথে বেড়িয়েছি, এই দিবসটি নিয়ে কে কি ভাবছে, তা জানতে। দেশের সবাইকে জানাতে।


আলিফ সুলতান খানিকটা শান্ত হলো। বললো, খুব ভালো, জানো! আরো জানো! তয় কইয়া রাখি। আমরা কিন্তু ন্যাংটা হমু না। আমার পরিবার এরও কেউ না।
ফৌজিয়া বিথী দর্শকদের উদ্দেশ্যেই বলতে থাকে, আমরা জানলাম, এই এলাকার সম্মানিত নাগরিক আলিফ সুলতান এর কাছ থেকে, জাতীয় নগ্ন দিবসকে নিয়ে উনি কি ভাবছেন। আলাপ করে যতদূর বুঝতে পারলাম, এখনো পুরনো চিন্তা ভাবনা নিয়ে আছেন উনি। সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, যাই হউক, প্রতি অনুষ্ঠানেই শেষের দিকে আমরা একটি কুইজ অনুষ্ঠান এর আয়োজন করে থাকি। আর সেই কুইজ অনুষ্ঠানে স্বভাবতঃই অংশ নিয়ে থাকে, আমি যাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকি তারা অথবা তাদের পরিবার। আজও আমরা নুতন একটি কুইজ অনুষ্ঠান এর আয়োজন করবো এই আলিফ সুলতান এর পরিবার এর সদস্যদের নিয়ে।
এই বলে ফৌজিয়া বিথী খানিকটা বাড়ীর ভেতরের দিকে এগুতে এগুতেই বলতে থাকলো, সভ্যতা আমরা একটি দিনে পাইনি। এক সময় আমাদের আদি পুরুষরাও পাহাড়ী গুহায় নগ্ন জীবন যাপন করতো। সেই প্রাচীন যুগ পেরিয়ে এসেছি আমরা অনেক আগেই। গাছের পাতা দিয়ে গা ঢাকা শুরু করা থেকে, এই আধুনিক যুগে নানান বস্ত্রে আমরা আমাদের গা ঢেকে রাখি। এই আমার গায়েও এখন কমসে কম সাতটি পোশাক রয়েছে। আমি সে কথা বলতে চাইছি না। বলতে চাইছি, আবারো ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। ছোট হয়ে আসছে মানুষের পোশাক। তা আপনারা একটু শহুরে এলাকায় পা ফেললেই দেখতে পান। কিন্তু আমরা যখন শহর থেকে একটু দূরে যাই, তখন দেখি অন্ততঃ মেয়েদের পরনে পোশাকের পরিমান শুধু বাড়তেই থাকে। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু মেয়েদের চেহারা পর্য্যন্ত কারো জানাও থাকে না। আর আলিফ সুলতান এর পরিবার ঠিক তেমনি একটি পরিবার। আমি জানতে চাইবো, আলিফ সুলতান এর পরিবার এর সদস্যরা আজ কে কি পোশাক পরেছে? আর তা অবশ্যই একটি খেলার মাধ্যমে। আর আপনাদের জন্যেও আছে কুইজ, যা অনুষ্ঠান শেষের পর্য্যায়ে জাননো হবে। খুব মনযোগ দিয়ে দেখবেন কিন্তু!

[/HIDE]
 
[HIDE]
ফৌজিয়া বিথীর পেছনে পেছনে, ক্যামেরা ম্যান সহ, এ, ডি, ফারুক আলম আর অন্যান্য লাইটিং সহযোগীরাও ভেতরে ঢুকতে থাকলো। আলিফ সুলতান সবার পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে, ফৌজিয়া বিথীকে উদ্দেশ্য করে বললো, তুমি জানতে চাইলে, হাজারটা জানবা। কিন্তু ঐসব ছ্যাড়া ছুড়া, কামেরা নিয়া আমার বাড়ীতে ঢুকতেছো কেনো?
ফৌজিয়া বিথী হতাশ হয়ে বললো, তা না হলে টি, ভি, তে সবাই দেখবে কি করে? আসলে, টি, ভি, তে শুধু আমাকে দেখা গেলেও, পেছনে থাকে এই সব স্টাফরা।

অগত্যা, আলিফ সুলতান সবাইকেই তার বাড়ীর ভেতর ঢুকার অনুমতিটা দেয়। ফৌজিয়া বিথী খুব আনন্দ নিয়েই বলতে থাকে, চাচা, এবার আপনার পরিবার এর সাবাইকে ডাকুন।
আলিফ সুলতান খানিকটা আমতা আমতা করে বললো, কি কাণ্ড! এই তো দেখতেছি একেবারে আদম শুমারী! আমার সাত ছেলে মেয়ে, আমি কি তাদের কন্ট্রোল করতে পারি নাকি? কে কোথায় আছে বলবো কি করে? ছোটটারে তো একটু আগে টেলিভিশনেই দেখলাম। বড়টা অফিসে গেছে। নতুন চাকুরী পাইছে। অফিসে যাইবার আগে আমারে সালাম করে। সলিমাটা আবার কোথায় গেলো? এখানেই তো ছিলো! ঠিক আছে, ডাইকতেছি।
এই বলে আলিফ সুলতান নিজেই ডাকতে থাকে, সলিমা, সলিমা? কই গেলা মা? দেখো, কে আসিছে। সবাইকে এই ঘরে আইসতে বলো।

প্রায় পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের একটি মেয়েই ভেতর ঘর থেকে চুপি দেয়। ফৌজিয়া বিথীর দিকে তাঁকিয়ে বলতে থাকে, আল্লা, আপনি অত্ত সুন্দর!
ফৌজিয়া বিথী মিষ্টি করেই হাসে। বলে, আপনিও খুব সুন্দর! কি নাম আপনার?
মেয়েটি বললো, আমার নাম সালমা সুলতানা। তবে, বাবা আমাকে সলিমা বলে ডাকে।
ফৌজিয়া বিথী বললো, খুব সুন্দর নাম। জানতে পারি, আপনি কি ভাবছেন?
সালমা সুলতানা বললো, জানাজানি অনেক হবে। আপনি এই ঘরে আসেন। আম্মাজান ঐ ঘরে যায়না। পায়ে বাত আছে।


ফৌজিয়া বিথী ভেতর ঘরের দিকে এগুতে এগুতে বললো, ঠিক আছে।
ভেতরে ঢুকে দেখতে পায় বিশাল সুসজ্জিত একটা ঘর। ভেতরে আলিফ সুলতান এর বড় ছেলে মাহমুদ সুলতান আর ছোট মেয়ে শামীমা সুলতানা ছাড়া সবাই আছে। ফৌজিয়া বিথী জানালাটার ধাপে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে বললো, শামীমাকে দেখছিনা যে?
আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় মেয়ে ফাহিমা এগিয়ে এসে বললো, ও একটু লজ্জা পেয়েছে। আপনি কুইজ অনুষ্ঠান শুরু করতে পারেন।
ফৌজিয়া বিথী তার নিয়মিত কুইজ অনুষ্ঠান শুরু করলো। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকলো, সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, তাহলে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত কুইজ অনুষ্ঠান। যিনি অতি দ্রুত হাত তুলতে পারবেন, তিনিই শুধু উত্তর দিতে পারবেন। সঠিক উত্তর দিতে পারলে দশ পয়েন্ট। আর ভুল হলে দশ পয়েন্ট কাটা যাবে। যিনি সবগুলো প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবেন, তার জন্যে রয়েছে নিপুন টেলিভিশনের সৌজন্যে বিশেষ পুরস্কার, নগদ এক কোটি টাকা।
এই বলে ফৌজিয়া বিথী এগিয়ে যায় আলিফ সুলতান এর দিকে। বলে, এক কোটি টাকা যদি জিতে যান, ঐ টাকায় কি করবেন আপনি?
আলিফ সুলতান মাথায় হাত দিয়ে বললো, এক কোটি টাকা? যদি পাইয়াই যাই, তইলে শহর এলাকায় একটা জায়গা কিনমু।
ফৌজিয়া বিথী এগিয়ে যায় সালমা সুলতানার দিকে। বলতে থাকে, আপনি কি করবেন?
সালমা সুলতানা বললো, আপাততঃ ব্যাংকে জমা রাখবো।
ফৌজিয়া বিথী এগিয়ে যায় ফাহিমা সুলতানার দিকে। জিজ্ঞাসা করতে থাকে, আপনি করবেন?
ফাহিমা সুলতানা, আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় মেয়ে। বয়স চব্বিশ। সে বলতে থাকে, বিদেশে পড়া লেখা করার খুব শখ। যদি পেয়েই যাই, তাহলে বিদেশে পড়ালেখা করতে যাবো।
ফৌজিয়া বিথী চোখ কপালে তুলেই বলে, বিদেশে পড়ালেখা? এখন কি পড়ছেন?
ফাহিমা সুলতানা বললো, কেমিষ্ট্রিতে অনার্স ফাইনাল ইয়ার। যদি এক কোটি টাকা পাই, তাহলে আমেরিকাতে উচ্চশিক্ষা করতে যাবো।


ফৌজিয়া বিথী এগিয়ে যায় আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় ছেলে মাহবুব সুলতান এর কাছে। জিজ্ঞাসা করে, আপনি কি করবেন?
মাহবুব সুলতান এর বয়স বাইশ। ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। সে বললো, ইউনিভার্সিটিতে বাসে ঝুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। আমি পেলে একটা মটর সাইকেল কিনবো।

ফৌজিয়া বিথী এমন করে, সবাইকেই জিজ্ঞাসা করলো।
ফৌজিয়া বিথী টেবিলটার উপর দু হাতে ভর দিয়ে দর্শকদের উদ্দেশ্যেই বলতে থাকে, আমরা জানলাম, এক কোটি টাকা পেলে কে কি করবে? সবার মাঝে নানান রকম স্বপ্ন! দেখা যাক কে জিতে নিতে পারে এই এক কোটি টাকা! তাহলে শুরু করছি আজকের কুইজ অনুষ্ঠান। আমার প্রথম প্রশ্ন, বলুন দেখি, আজ সকালে আমি কি নাস্তা করেছি? এক, ডিম ভাজা। দুই, পারুটি আর দুধ। তিন, এক গ্লাস জ্যুস।
আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় ছেলে মাহবুবই প্রথমে হাত তুললো। ফৌজিয়া বিথী বললো, ঠিক আছে বলুন।
মাহবুব বললো, এক গ্লাস জ্যুস।
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল করেই হাসতে থাকে। বলে, উত্তর সঠিক হয়েছে। কিন্তু কি করে বুঝলেন?
মাহবুব বললো, ম্যাগাজিনে পড়েছি, আজকালকার সুন্দরী মডেলদের সকালের নাস্তা শুধু ফ্রুটস কিংবা ফলের জ্যুস। আপনিও খুব সুন্দরী। তাই মনে হলো।
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল করেই হাসতে থাকে। তারপর শুরু করে দ্বিতীয় প্রশ্ন, আমি দেখতে খানিকটা স্লীম। আচ্ছা বলুন তো আমার বুকের সঠিক মাপ কোনটি? এক, একত্রিশ ইঞ্চি। দুই, তেত্রিশ ইঞ্চি। তিন, পয়ত্রিশ ইঞ্চি।

প্রশ্নটা শুনে আলিফ সুলতান এর ছোট ছেলে খানিকটা লজ্জিত হয়ে মাথা নীচু করে রাখে। অথচ, স্বয়ং আলিফ সুলতান খানিকটা কানি চোখে ফৌজিয়া বিথীর বুকের দিকেই তাঁকায়।
[/HIDE]
 
[HIDE]
ওপাশের খাটের কোনায় বসা আলিফ সুলতান এর বউ এতক্ষণ চুপচাপই ছিলো। সে হঠাৎই বলে উঠে, এই মাইয়া, তোমার কি কোন লজ্জা শরম নাই।
ফৌজিয়া বিথী বললো, কুইজ তো কুইজই! এক কোটি টাকা বলে কথা! কি যেনো করবেন বলেছিলেন? ও, সিঙ্গাপুরে এক সপ্তাহ ভ্রমণ? গুড! কুইজ এর সঠিক উত্তর দিতে পারলেই কিন্তু পেয়েও যেতে পারেন।

টাকার কথা শুনে, সবাই খানিকটা সিরিয়াস হয়েই ভাবতে থাকে। আলিফ সুলতান এর চতুর্থ মেয়ে ফাতিমা, বয়স আঠারো। দেহের গড়নটা ঠিক ফৌজিয়া বিথীর মতোই। সে নিজ বক্ষ আর ফৌজিয়া বিথীর বক্ষের দিকে তাঁকিয়ে তুলনা মূলক একটা বিচারই করতে থাকলো। তারপরও সঠিক অনুমানটা করতে পারছিলো না।
ফৌজিয়া বিথীর পরনে কালো রং এর টপস। তার উপর কালো রং এর ফুল হাতা জ্যাকেট। সে জ্যাকেটটা বুকের উপর থেকে সরিয়ে, বুকটা খানিক উঁচু করে ধরে, খিল খিল হাসিতে জ্যাকেটটা খুলতে খুলতে বললো, ঠিক আছে, এবার অনুমান করে বলুন।
সরু কোমর ফৌজিয়া বিথীর। টপসটা পেটের সাথে স্যাপ্টে আছে। আর বুকের দিকটায় ঠিল গোলাকার বেলের মতোই স্তন দুটি ফেপে রয়েছে। ফাতিমা সাথে সাথেই হাত তুললো।
ফৌজিয়া বিথী বললো, বলুন তো কত?
ফাতিমা বললো, তেত্রিশ ইঞ্চি।
ফৌজিয়া বিথী ওপাশের সুসজ্জিত বিছনাটার উপর ধপাস করেই বসে। খিল খিল হাসিতেই বললো, উত্তর সঠিক। কিন্তু, কি করে অনুমান করলেন?
ফাতিমা বললো, আমার বুকও ঠিক তেত্রিশ ইঞ্চি।
ফৌজিয়া বিথী দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকলো। সুপ্রিয় দর্শক বৃন্দ, উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা, এবার মেপেই দেখা যাক।
একজন মহিলা স্টাফ মাপার ফিতে নিয়ে এগিয়ে যায় ফৌজিয়া বিথীর দিকে। ফিতেতে ফৌজিয়া বিথীর বুকের মাপ দেখিয়ে বলে, তেত্রিশ ইঞ্চি!

ফৌজিয়া বিথী শুরু করে তার তৃতীয় প্রশ্ন। বলতে থাকে, শুরুতেই বলেছিলাম, আমার পরনে সাতটি পোশাক আছে। জ্যাকেটটা খুলে ফেলেছি বলে, এখন ছটি। বলতে হবে, আমার পরনের প্যান্টির রং কি? এক, সাদা। দুই, কালো। তিন, গোলাপী।
এটা অনুমান করা কি করে সম্ভব? সবাই শুধু একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকলো।

ফৌজিয়া বিথী তার পরনে তখনো কালো রং এর টপস, আর নিম্নাঙ্গে সাদা স্কার্ট। স্কার্ট এর নীচ দিকটা হাঁটুর ঠিক নীচে যে পা দুটি চোখে পরে, সে দুটিতে কালো স্টকিংস এর আবরন। ফৌজিয়া বিথী তার পরনের স্কার্টটার নীচ প্রান্তটা চেপে ধরে খানিকটা প্রদর্শন করারই ভাব করে। অথচ, দেখায় না। এতে করে এক ধরনের সেক্সী ভাবই ফুটে উঠে।

সবাই গভীর ভাবেই ভাবতে থাকে। ভুল উত্তর দিতে গিয়ে যদি দশ নাম্বার কাটা যায়, তাতেও সমস্যা। তাই সহজে কেউ উত্তর দিতে চাইছে না। আলিফ সুলতান এর তৃতীয় কন্যা আসমা সুলতানা বললো, একটু হিন্টস দিতে হবে।
ফৌজিয়া বিথী এক পলকের জন্যেই তার স্কার্টটা খানিক তুলে আবার নামিয়ে নিলো। কালো স্টকিংসটা থাকায় রং এর কিছুই বুঝা গেলো না। কালচে ধরনেরই মনে হলো। তা ছাড়া স্কার্টটার নীচটা অন্ধকার। সেটা কি স্টকিংসটা কালো বলেই কিনা বুঝা গেলো না। ফৌজিয়া বিথী বিছানায় খানিকটা নড়ে চড়ে বসে উরুটা এ পায়ের উপর থেকে অন্য পায়ের উপর উঠানোর ভঙ্গী করে আরো খানিকটা দেখানোর চেষ্টা করলো। তারপরও কারো অনুমান হলো না। ফৌজিয়া বিথী আবারো তার স্কার্টটা খানিক তুলে কয়েক সেকেণ্ড স্থায়ী করে নামিয়ে নিলো।
আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় ছেলে মাহবুব এর লজ্জাটা খানিক সরে এলো। সে স্থির চোখেই স্কার্টটার তলায় চোখ রেখেছিলো। স্টকিংসটার তলায় সাদাটে একটা রং আবছা আবছা ভেসে আসছিলো। সে হঠাৎই হাত তুললো। ফৌজিয়া বিথী বললো, ঠিক আছে বলুন।
মাহবুব বললো, সাদা।

ফৌজিয়া বিথী খানিকটা ভণিতা করারই চেষ্টা করে। তারপর বললো, না, সঠিক হয়নি। যে দশ নম্বর পেয়েছিলেন, তা কাটা গেলো। আপনি আর উত্তর দিতে পারবেন না। তবে, অন্যদের জন্যে এখনো সুযোগ আছে।
এই বলে খিল খিল করে হাসতে থাকলো।
মাহবুব এর মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। বিড় বিড় করে বলতে থাকলো, সাদাই তো মনে হলো!
এদিকে আলিফ সুলতান এর কৌতুহলটা যেনো বেড়েই উঠলো। সে মাথাটা খানিক নীচু করেই চুপি দেবার চেষ্টা করলো। ফৌজিয়া দিল তার স্কার্টটা আরো খানিকটা তুলে দেখানোর চেষ্টা করলো। বিদেশে উচ্চ শিক্ষা করার স্বপ্ন দেখছে ফাহিমা সুলতানা। সে ফৌজিয়া বিথীর স্কার্টটার নীচে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতেই তাঁকিয়েছিলো, কখন আবারো ফৌজিয়া বিথী তার স্কার্টটা তুলে ধরে। তার কাছেও কালো স্টকিংসটার তলায় আবছা সাদাটে রং বলেই মনে হলো।

রসায়নে অনার্স পড়ে ফাহিমা। মাঝে মাঝে ক্যামিক্যালস এর রং নিয়েও পরীক্ষা করে সে। সে ভাবলো রং এর মিশ্রণ এর কথা। সাদা রং এর কাছাকাছি রং কোনটি সেটাই সে ভাবতে থাকলো। হলুদ, গোলাপী দুটুই তো সাদা রং এর কাছাকাছি। কোনটি হতে পারে? কিন্তু ভুল উত্তর তো দেয়া যাবে না। সে অপেক্ষা করতে থাকলো, আবার কখন ফৌজিয়া বিথী তার স্কার্টটা তুলে ধরে।
আলিফ সুলতান এর উত্তর খোঁজার কোন আগ্রহ নেই। সে ভাবছে অন্য কিছু। বাষট্টি বছরের বুড়ু হলেও, দেহে এখনো যৌবনের কমতি নাই। চোখের সামনে সুন্দরী এক যুবতী। ফুলা ফুলা উরু দুটি স্টকিংস এ চেপে আরো সেক্সী করে তুলেছে তাকে। আর যখন স্কার্টটা খানিক তুলে ধরে, তখন তার এত দিন এর প্রায় নিস্তেজ হয়ে থাকা লিঙ্গটা লাফিয়ে লাফিয়েই উঠছিলো। সে ভাবছে, না জানি কত সুন্দর ফৌজিয়া বিথীর নিম্নাঙ্গটা। সে বললো, দেখাইতেছো যখন, আরেকটু ভালো করেই দেখাও না! যে ভাবে দেখাইতেছো, তাতে কইরা তো খালি লালুস লাগে!


[/HIDE]
 
[HIDE]
ফৌজিয়া বিথী এবার আরেকটু বেশী করেই তার স্কার্টটা তুলে ধরে বেশ কয়েক সেকেণ্ড স্থায়ী করে নামিয়ে নিলো। ফাহিমা এবার খুব মনযোগ দিয়েই দেখলো। তারপর, মনে মনে একটা হিসাব করে হাত তুললো।

ফৌজিয়া বিথী ফাহিমা সুলতানার দিকে তাঁকালো। বললো, বিদেশে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন, তাই না? ঠিক আছে, বলুন।
ফাহিমা বললো, গোলাপী, তবে হালকা গোলাপী।
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল করেই হাসলো। বললো, উত্তর সঠিক হয়েছে। কিন্তু কি করে বুঝলেন?
ফাহিমা বললো, রং এর গোলক ধাধা। হলুদ আর গোলাপী রং যদি খানিক হালকা হয়, তখন কালো রং এর আঁড়ালে সাদা মনে হয়। তবে, হলুদ রং এর চাইতে গোলাপী রংটা একটু কালচে মনে হয়।
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল হাসিতে বললো, বাহ, চমৎকার ব্যাখ্যা। আমার নিজেরও জানা ছিলো না। প্রোডাকশন এর নির্দেশেই আজকে এমন কিছু পোশাক বেছে নিয়েছিলাম।
তারপর, তার স্কার্টটা দু হাতে ভালো করে টেনে উপরে তুলে সবাইকে দেখিয়ে বলে, জী, আজকে আমি হালকা গোলাপী রং এর প্যান্টি পরেছি। তার উপর এই কালো স্টকিংস।
মাহবুব এর দেহে পূর্ণ যৌবন। সঠিক উত্তর দিতে না পারায় মনটা খারাপ থাকলেও, ফৌজিয়া বিথীর স্টকিংস আর প্যান্টিতে ঢাকা নিম্নাঙ্গ দেখে, দেহটা যৌন উত্তেজনায় ভরে উঠলো। সে খুব লোভনীয় দৃষ্টি মেলেই তাঁকিয়ে রইলো ফৌজিয়া বিথীর নিম্নাঙ্গের দিকে।

কখন যে আলিফ সুলতান এর ছোট মেয়ে শামীমা সুলতানাও ঘরে এসে ঢুকেছে বুঝা গেলো না। তবে, ফৌজিয়া বিথীর নজর এড়াতে পারলো না। ফৌজিয়া বিথী তার স্কার্টটা পুনরায় নামিয়ে নিয়ে শুরু করলো পরবর্তী কুইজ।

ফৌজিয়া বিথীকে সাংঘাতিক চৌকষ বললেও ভুল হবে না। সে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বললো, এবার শুরু করছি আজকের কুইজে অংশ নেয়নি এমন একজনকে দিয়ে। যে হলো আমার বন্ধু শামীমা সুলতানা। তার আগে জেনে নিই, আপনাদের পরিবারে পোশাকের নীচে কে কি পরে তা কি কেউ জানেন?
আলিফ সুলতান বললো, সোবাহানাল্লা, সোবাহানাল্লা! এইটা তুমি কি বলতেছো? আমাদের দেখে তুমি বুঝতেছো না?
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল হাসিতেই বললো, তারপরও কিন্তু জানা উচিৎ। শুনেন নি? দেখা হয় নাই শুধু চক্ষু মেলিয়া, ঘর থেকে শুধু দুই পা ফেলিয়া! আপনি তো ঘরের কথাও জানেন না, ঠিক না?
আলিফ সুলতান ঠোল গাল চুপসাতে থাকে। তারপর বলে, ঠিক আছে, শুরু করো।
ফৌজিয়া বিথী বিছানায় বসে থেকেই বলতে থাকে, আমার পরবর্তী প্রশ্ন, শামীমা সুলতানা এই বাড়ীর সবচেয়ে ছোট মেয়ে, বয়স ষোল। ওড়না দিয়ে বুকটা খুব ভালো করে ঢেকে রেখেছে তাই না? আর সেই ওড়নার নীচে নীল রং এর একটা কামিজ, তা আমরা সবাই দেখছি। বলতে হবে, শামীমা সুলতানা কামিজটার তলায় আরো একটি পোশাক পরেছে, সেটি কি? এক, ব্রা। দুই, সেমিজ। তিন, আরো একটি কামিজ।
কেউ কিছু ভাবার আগেই, আলিফ সুলতান নিজেই হাত তুললো।
ফৌজিয়া বিথী বললো, ঠিক আছে, বলুন তাহলে।
আলিফ সুলতান বললো, ব্রা, সেমিজ ওইগুলা আমি কিইন্যা দিলেই তো পরবো? শামীমা কামিজের তলায় আরেকটা কামিজই পরেছে।
ফৌজিয়া বিথী বলতে থাকে, উত্তর সঠিক হয়েছে কিনা, তা কিন্তু আমি নিজেও জানিনা।
তারপর, শামীমা সুলতানার দিকে তাঁকিয়ে বললো, তুমি কি বলো? উত্তর কি সঠিক হয়েছে?
শামীমা সুলতানার ঈষৎ ফর্সা গাল দুটি লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো। সে লাজুক চেহারা করেই হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো। ফৌজিয়া বিথী বললো, শুধু মাথা নাড়লেই চলবে না। সত্যি কিনা সবাইকে দেখাতে হবে।


শামীমা যেনো হঠাৎই লজ্জার জালে আটকে পরলো। সে এদিক সেদিক সবার দিকে তাঁকাতে থাকলো। এমন কি ভয়ে ভয়ে নিজ বাবা আলিফ সুলতান এর দিকেও তাঁকালো। আলিফ সুলতান চোখ দুটি খানিক তুলে তোতলাতে তোতলাতে বললো, আমার দিকে তাঁকাইতেছো কেনো? এক কোটি টাকা! আমি শহরে জায়গা কিনলে, ঐ বাড়ীতে তুমি থাকবানা?

ষোরশী শামীমা সুলতানার চেহারা থেকে লজ্জার আবরনটা সরে যায়। সে তার বাড়ন্ত স্তন দুটি ঢেকে ঢুকে রাখার জন্যে, গায়ে যে ওড়নাটা প্যাচিয়ে জড়িয়ে রেখেছিলো, সেটা সরিয়ে নিলো। তারপর, পরনের নীল কামিজটাও সরিয়ে নিতেই চোখে পরলো ভেতরে আরো একটা কামিজ।
ফৌজিয়া বিথী বিছানায় কনুই এর উপর ভর করে আধ কাৎ হয়ে অবাক গলায় বললো, স্ট্রেইঞ্জ! কামিজ এর উপর কামিজ? কিন্তু কেনো?
শামীমা সুলতানা লাজুক গলায় বললো, না মানে, একটা কামিজ পরলে সব বুঝা যায়।
ফৌজিয়া বিথী ইচ্ছে করেই প্রশ্ন করলো, কি বুঝা যায়?
শামীমা সুলতানা তার নিজ বুকটা ইশারা করেই বললো, দেখছেন না, সব ভেসে উঠে।
ফৌজিয়া বিথী মুচকি হেসেই বললো, ও, দুধের বোটা? ওসব ঢাকার জন্যেই তুমি দুটি কামিজ পরো?
শামীমা সুলতানা লাজুক চেহারা নিয়েই মাথা নাড়লো।

ফৌজিয়া বিথী দর্শকদের উদ্দেশ্যেই বলতে থাকলো, সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, আধুনিক দেশ গুলোতে মেয়েরা যখন বারো বছর বয়স থেকেই ব্রা পরতে শেখে, তখন আমাদের দেশের মেয়েরা ষোল বছর বয়সেও ব্রা পরার কথা ভাবতে পারে না। আর সেই ব্রা পরার বয়স থেকেই আমার পরবর্তী প্রশ্ন। আমি ঘর থেকে বেড়োলেই পোশাকের নীচে ব্রা পরি। আমি ব্রা পরা শুরু করেছি কোন বয়স থেকে? এক, বারো বছর বয়সে। দুই, তেরো বছর বয়সে। তিন, চৌদ্দ বছর বয়সে।




[/HIDE]
 
[HIDE]
এমন একটি প্রশ্নে আলিফ সুলতান এর পুরু পরিবারই ভাবনায় পরে গেলো। ফৌজিয়া বিথীকে দেখলেই বুঝা যায়, শিক্ষিত আধুনিক পরিবার এর মেয়ে। তবে কি আধুনিক দেশ গুলোর মতো সেও বারো বছর বয়স থেকে ব্রা পরতে শুরু করেছে? না, না, তাহলে তো আর কুইজ হতো না।
আলিফ সুলতান এর দ্বিতীয় মেয়ে ফাহিমা সুলতানা কি জানি ভেবে হাত তুললো।
ফৌজিয়া কৌতুহলী হয়েই বললো, ঠিক আছে বলুন।
ফাহিমা বললো, চৌদ্দ বছর বয়স থেকে।
ফৌজিয়া বিথী যেনো নিজের কানকেই বিশ্বাস করাতে পারলো না। বললো, কারেক্ট! কিন্তু, কি করে অনুমান করলেন?
ফাহিমা সুলতানা বললো, আমাদের দেশের অধিকাংশ মেয়েরাই লাজুক। বাড়ন্ত বয়সে ব্রা এর খুব প্রয়োজন মনে করলেও কাউকে বলতে পারেনা। তবে, প্রয়োজন এর খাতিরে এদেশের মেয়েরা সবচেয়ে সাহসী হয়ে উঠে, চৌদ্দ বছর বয়সে। আমিও সেই বয়সটা পেরিয়ে এসেছি কিনা, তাই!

ফৌজিয়া বিথীর চোখ দুটি চক চক করে উঠে। আবেগ আপ্লুত হয়ে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পরে। তারপর, সে বলতে থাকে, ঠিকই বলেছেন। বারো তেরো বছর বয়সে আমার দুধগুলো হঠাৎই যখন পেয়ারার মতো উঁচু হয়ে উঠেছিলো, তখন খুব ইচ্ছে হতো একটি ব্রা চেপে এগুলো ঢাকতে। আমি তার ব্যবস্থা করেছিলাম প্রয়োজন এর খাতিরেই। কারন, আমি তখন যেসব পোশাক পরতাম, তাতে করে আমার দুধের বোটা স্পষ্ট সবার চোখে পরতো। আর এখানেই আমার পরবর্তী প্রশ্ন। আমি চৌদ্দ বছর বয়সে জীবনে প্রথম ব্রা পরেছিলাম। আর সেটি কিনে দিয়েছিলো, এক, আমার প্রথম ছেলে বন্ধু। দুই, আমার মা। তিন, আমার বাবা।
এই প্রশ্নটিতেও সবাই ভাবনায় পরে গেলো। আলিফ সুলতানও দশ পয়েন্ট অর্জন করে খানিকটা সিরিয়াস হলো। মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে ভাবতে থাকলো, মাইডারে তো খুব ভালো ভাবছিলাম। এই মাইয়া তো দেখতেছি পুংটার একশেষ। নিশ্চয়ই চৌদ্দ বছর বয়স থেইক্যাই পুংটামী শুরু করিছে।
অথচ, আলিফ সুলতান হাত তুলার আগেই, আলিফ সুলতান এর তৃতীয় কন্যা আসমা হাত তুলে দাঁড়ালো।

উত্তর জানার জন্যে খানিকটা উৎস্যূক হয়েই বললো ফৌজিয়া বিথী, কে বলুন তো?
আসমা কোন রকম ভাবনা চিন্তা না করেই বললো, আপনার বাবা।
ফৌজিয়া বিথী খিল খিল হাসিতেই বললো, উত্তর সঠিক! কিন্তু কি করে বুঝলেন?
আসমা বললো, ব্যাপারটা খুব সহজ। আপনি কখনো প্রেম করেছেন, কিংবা ছেলে বন্ধু ছিলো, এমন স্ক্যাণ্ডেল এখনো শুনতে পাইনি। তা ছাড়া, মেয়েরা যে কোন আব্দার মায়েদের চাইতে বাবাদের কাছেই বেশী করে থাকে।

ফৌজিয়া বিথী আনন্দিত হয়ে বললো, ঠিক বলেছেন। আমি সেদিন মা যখন দুপুরে ঘুমিয়েছিলো, বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। পরনে একটা সেমিজ। বলেছিলাম, আব্বু, আমাকে কি খুব বিশ্রী লাগে না?
বাবা কি বলেছিলো জানেন? বলেছিলো, মোটেও না! তবে, তোমার মায়ের মতো ব্রা পরলে, আরো বেশী সুন্দর লাগবে। ঠিক সেদিনই বাবা শুধু আমাকে নিয়ে শপিং সেন্টারে গিয়েছিলো, শুধুমাত্র আমার প্রথম ব্রা কেনার জন্যে।

ফৌজিয়া বিথী দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকলো, একবার সবার পয়েন্ট গুলো হিসেব করে নিচ্ছি। জনাব আলিফ সুলতান, দশ। জনাবা আলিফ সুলতান এখনো কোন উত্তর দেননি। সালমা সুলতানাও এখনো কোন উত্তর দেননি। মাহবুব সুলতান, শূণ্য। ফাহিমা সুলতানা, বিশ। আসমা সুলতানাও বিশ। ফাতিমা সুলতানা দশ। আর মাহমুদ সুলতান আর শামীমা সুলতানা আজকে অংশ নেননি। ফলাফল দেখে বুঝা যাচ্ছে, ফাহিমা সুলতানা আর আসমা সুলতানাই এখনো এগিয়ে আছে। দেখা যাক, আজকে কে জয় করে নিতে পারে এক কোটি টাকা। ফাহিমা সুলতানা, নাকি আসমা সুলতানা? নাকি পেছন থেকে এগিয়ে এসে অন্য কেউ। এখন কিছুক্ষণের জন্যে বিশ্রাম। বাকী অংশ দেখবেন বিজ্ঞাপণ এর পরপরই। আর এই অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে নিপুন টেলিভিশনের সৌজন্যে।
ক্যামেরা ঘুরতেই ফৌজিয়া বিথী বিছানার উপর দু পা ছড়িয়ে খুব সহজ ভাবেই বিশ্রাম করতে থাকে। এ, ডি, ফারুক আলম এগিয়ে এসে তার দু পায়ের মাঝের দৃশ্যই শুধু অবলোকন করতে থাকে। আর ফিশ ফিশ করে বলতে থাকে, আপনি পারেনও বটে। রাতের ডিনারটা কিন্তু আজকে আমার সাথেই। তারপর এক চুট!



[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top