What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

জরায়ুমুখ ক্যানসার (1 Viewer)

jhElPZV.jpg


জরায়ু হলো নাসপাতির আকারের একটি অঙ্গ, যা নারীর প্রজনন অঙ্গ। আমাদের দেশে জরায়ুমুখ ক্যানসারের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও এই ক্যানসার আমাদের দেশে নারী মৃত্যুর অন্যতম কারণ।

গ্লোবকান-২০১৮–এর তথ্য অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতিবছর ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং ৪৯৭১ জন নারী এই ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করেন। আমাদের দেশে আক্রান্ত ক্যানসারের তালিকায় এটি পঞ্চম এবং ক্যানসারে মৃত্যুর তালিকায় সপ্তম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৫ লাখ ৭০ হাজার নারী এই জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হয় এবং ৩ লাখ ১১ হাজার নারী এই ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করেন।

জরায়ুমুখ ক্যানসারের লক্ষণ

W6LLOKp.jpg


• ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অনেক সময় স্থায়ীভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও রক্তস্রাব দেখা দেওয়া।
• সহবাসের সময় জরায়ুতে ব্যথা অনুভূত হওয়া এবং অনেক ক্ষেত্রে রক্তক্ষরণও হওয়া।
• যোনিপথে বাদামি বা রক্তস্রাব দেখা দেওয়া।
• দুর্গন্ধযুক্ত সাদা স্রাব হওয়া।
• হঠাৎ করেই ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি হওয়া।
• খাবারে অনীহা, বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া।
• নিচের দিকে পেট ফুলে যাওয়া।
• জরায়ুর চারপাশে চাপা লাগা এবং ঘন ঘন মূত্রত্যাগ করা।

জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি

aLGNVx8.jpg


হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি) জরায়ুমুখ ক্যানসারের অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাক। ১০০টিরও বেশি প্রজাতির এইচপিভি ভাইরাস আছে; এর মধ্যে এইচপিভি ১৬ এইচপিভি ১৮ মূলত ৭০ শতাংশ জয়ায়ুমুখ ক্যানসারের জন্য দায়ী। কিছু কারণ রয়েছে, যা এই ক্যানসারে আক্রান্তের ঝুঁকিকে ত্বরান্বিত করে। যেমন:

• বাল্যববিাহ।
• কম বয়সে গর্ভধারণ এবং অধিক সন্তান প্রসব করা।
• অনিরাপদ যৌনমিলন এবং একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে সহবাস করা।
• র্দীঘদিন গর্ভনিরোধক ওষুধ সেবন।
• অপরিচ্ছন্ন থাকা, ধূমপান, মদ্যপান।
• ৩৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি।

জরায়ুমুখ ক্যানসারের চিকিৎসা

AHbarPH.jpg


জরায়ুমুখ ক্যানসারের চিকিৎসা বেশ কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। যেমন: ক্যানসারের স্টেজ, ক্যানসার শরীরের অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়েছে কি না, রোগীর বয়স, স্বাস্থ্যের অবস্থা ইত্যাদি। জরায়ুমুখ ক্যানসারের প্রচলিত চিকিৎসাপদ্ধতি হলো: সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টারগেটেড থেরাপি।

সার্জারি: ক্যানসার খুব বেশি ছড়িয়ে না পড়লে বা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে সার্জারি করা যায়। এটি জরায়ুমুখ ক্যানসার চিকিৎসার একটি অংশ হতে পারে। সার্জারিতে সাধারণত জরায়ুমুখের যে অংশে টিউমার আছে, সেই অংশসহ আশপাশের কিছু টিস্যু অপসারণ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ জরায়ুমুখ অপসারণ করা হয়। সার্জারির পরে সাধারণত রেডিয়েশন বা কেমোথেরাপি দেওয়া হয়।

কেমোথেরাপি: এ ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার করে ক্যানসারের কোষগুলোকে ধ্বংস করা হয়। কেমোথেরাপি সার্জারির আগে বা পরে দেওয়া হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি একই সঙ্গে দেওয়া হয়ে থাকে। যেসব রোগীর সার্জারি করানো সম্ভব হয় না, তাঁদের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপিকে প্রধান চিকিৎসাপদ্ধতি হিসাবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

রেডিওথেরাপি: এ পদ্ধতিতে অতি শক্তিশালী এক্স-রের মাধ্যমে ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রেডিওথেরাপি সার্জারির আগে দেওয়া হয়ে থাকে, যাতে টিউমারকে খুব সহজেই অপসারণ করা যায়। সার্জারির পরে অবশিষ্ট ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করার জন্য রেডিওথেরাপি দেওয়া হয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির সঙ্গে রেডিওথেরাপিও দেওয়া হয়ে থাকে।

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধের উপায়

1GP8xEm.jpg


হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) কারণে বেশির ভাগ জরায়ুমুখ ক্যানসার হয়ে থাকে। প্রতিষেধক ব্যবহার করে জরায়ুমুখ ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। সাধারণত ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী নারীদের এই প্রতিষেধক নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে এই বয়সের পরেও প্রতিষেধক দেওয়া যাবে যাবে।

• সাধারণত ২০ বছর বা বিয়ের পর প্রতি তিন বছর অন্তর প্যাপস্মেয়ার বা ভায়া টেস্ট করানো জরুরি।
• যৌনমিলনের জন্য একজন সঙ্গী নির্বাচন করা এবং নিরাপদ যৌনমিলন।
• বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণ না করা।
• অধিক সন্তান প্রসব না করা।
• পরিচ্ছন্ন থাকা, ধূমপান, মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।
• জন্মনিরোধক ওষুধ না খেয়ে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রকাশ পেতে ১২ থেকে ১৫ বছরও সময় লেগে যেতে পারে; তাই এই রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে প্রতিষেধক ব্যবহার করা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা। জরায়ুমুখ ক্যানসার নির্ণিত হলে আতঙ্কিত না হয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করা। কারণ, আমাদের দেশেই এখন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে রয়েছে বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা।

লেখক: কো-অর্ডিনেটর ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট, মেডিকেল অনকোলজি বিভাগ, এভারকেয়ার হসপিটাল, ঢাকা।
 
সৃষ্টিকর্তা সকল কে এসব থেকে সুরক্ষিত রাখুন
 
ভ্যাক্সিন নিয়ে রাখলে বাচা সম্ভব
 

Users who are viewing this thread

Back
Top