ব্যবসা শুরুর আগে সবাই প্রথমেই ভাবেন কোথা থেকে টাকা আসবে, কীভাবে শুরু করা হবে, কীভাবে কাজ চলবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে। কিন্তু এসব বিষয় ছাড়াও ব্যবসায় ভালো করার জন্য টুকটাক অনেক বিষয় থাকে, যেগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে টের পাওয়া যায় না। পরে ঠেকে গিয়ে যখন ভুল বোঝা যায়, তখন সময় বয়ে যায় অনেকটা।
ভুল করে জিবে কামড় দেওয়ার আগেই বরং উদ্যোক্তা পরামর্শবিষয়ক ওয়েবসাইট এন্ট্রাপ্রেনিউরের পরামর্শ থেকে জেনে নেওয়া যাক, কোন বিষয়ে নজর দিলে ব্যবসা শুরুর পর বিপদ হয় না।
১. সবকিছু একহাতে করা যাবে না
ব্যবসার শুরুতে সবাই কম কর্মী রাখার চেষ্টা করেন, এতে খরচ কম হয়। কিন্তু সবকিছুর ব্যবস্থাপনাও একটা কাজ বটে, এ রকম অবস্থায় যদি জনসংযোগ, মান নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজও একহাতে করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে বিপদ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই শুরু থেকেই কিছু কাজ নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে বাকি কাজের জন্য অন্যের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
২. নিয়মিত পরামর্শদাতার পরামর্শ নেওয়া
ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রতিটি সিদ্ধান্তেরই প্রভাব ব্যবসায় পড়ে। তাই যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই সেগুলোর মূল্যায়ন করা জরুরি। তা না হলে আর্থিক বা সামাজিক এমন ক্ষতি হতে পারে, যা পুরো ব্যবসাকেই ব্যর্থ করে দিতে পারে। তাই বুদ্ধিমানের মতো আগে থেকেই একজন দক্ষ পরামর্শদাতা নিয়োগ দেওয়া ভালো, যিনি প্রতিনিয়ত ভুলত্রুটি দেখিয়ে দেবেন।
৩. একমনা মানুষের দক্ষতাও একমুখী
ব্যবসার বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে শুরু করা ব্যবসার চেয়ে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে শুরু করা ব্যবসা বেশি সফল হয়। কারণ, কম বয়সে মানসিকতার মিল যেমন বেশি থাকে, তেমনি একেকজনের দক্ষতাও বিভিন্ন বিষয়ে থাকার সম্ভাবনা থাকে। ওদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের বেশির ভাগেরই দক্ষতা প্রায় কাছাকাছিই থাকে। ফলে ব্যবসার কিছু অংশ খুব সমৃদ্ধ থাকলেও অন্য অংশে ভারসাম্য হারানোর শঙ্কা থাকে।
৪. হঠাৎ বেড়ে যাওয়া চাহিদার জন্য প্রস্তুত থাকা
এন্ট্রাপ্রেনিউর ডটকমের পরামর্শকদের মতে, যেকোনো ব্যবসা যেকোনো সময় হঠাৎ করে তিন গুণ বড় হয়ে যেতে পারে। ব্যবসায় এটা একটা সুযোগও বটে। তাই শুরুতে কম কর্মী ও কম সম্পদ রাখলেও সব সময় সামনে–পেছনে এমন সংযোগ রাখতে হবে যেন অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসাকে তিন গুণ করে ফেলা যায়। এই সুযোগ হারালে পরে ‘ইশ্’ বলেও কোনো লাভ হবে না।
এ বিষয়ে সাম্প্রতিক একটা উদাহরণ দেওয়া যাক, গত বছর করোনার লকডাউনে রাতারাতি অনলাইনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেচাকেনা তিন গুণ হয়ে যায়। এক চালডাল ডটকমের কাছেই প্রতিদিন ক্রয়াদেশ আসত ১০ হাজারের মতো। অথচ তাদের দৈনিক পণ্য সরবরাহের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ছিল তিন হাজার। তাই হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া চাহিদার সমাধান করতে চালডাল ডটকমেরই প্রায় এক মাস লেগে গেছে।