[HIDE]রিয়া কলেজে চলে গেছে। দুপুরের খাওয়া রাহুল বাইরেই খেয় নিতো এই কদিন। আমি বলা স্বত্তেও এড়িয়ে গেছে। একটু লাজুক প্রকৃতির ছেলেটা। কয়েকদিন ধরেই ওকে লক্ষ্য করছি বেশ আনমনা দেখাচ্ছে। কোনকিছু নিয়ে গভির ভাবে ভাবছে। সকাল বেলা চা খাওয়ার সময় স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি ওকে ভালো করে লক্ষ্য করি, চোখের তলা ঘুম না হয়ার ইঙ্গিত দেয় যেন। কি এমন হোলো যে ওর সুর হাড়িয়ে গেলো? এখন বাড়িতেই আছে। আমি সুবলাকে দিয়ে বলে পাঠালাম এখানেই খেয়ে নিতে।
‘আপনি খাবেন না?’ ভাতের থালাটা আর জলের গ্লাস ওর সামনে রাখতে জিজ্ঞেস করলো।
‘আমার তো খেতে খেতে তিনটে বেজে যাবে।’
‘বাবা এত দেরি করে খেলে তো শরীর খারাপ করবে। খেয়ে নিয়ে তো কাজ করতে পারেন।’
‘কাজ কিছুই নেই, তবুও ওটাই নিয়ম হয়ে গেছে।’
‘সত্যি মেয়েরা এত অনিয়ম করে...। বাড়িতেও দেখতাম বৌদি সেই সন্ধ্যেবেলা চান করে উঠতো, খাওয়া তো বেশির ভাগ দিনই জল হয়ে যেত। কত বলতাম তাও শুনতোনা।’
আমি মুচকি হেসে বললাম ‘মেয়েরা অনেক শক্তিশালী, অনিয়মই আমাদের নিয়ম।’
ব্যাঙ্গ করে রাহুল বললো ‘শরীর যেদিন বিদ্রোহ করবে সেদিন বুঝতে পারবেন, কোন কিছু তো আর একদিনে হয়ে যায় না, যখন হবে দেখবেন বিছানা ধরিয়ে দিয়েছে।’
‘সে সময় হলে সবাইকেই বিছানা ধরতে হয়, আর রিয়া তো আছে, তখন নিশ্চয় রিয়ার বরও থাকবে, ওর ছেলেমেয়েও থাকবে, ভালোই তো লাগবে অন্যের সেবা পেতে।’ আমি ইচ্ছে করে রিয়ার প্রসঙ্গ তুললাম ওর মনোভাব লক্ষ্য করার জন্যে। দেখলাম ও ভাবলেশ হীন। তাহলে কি রিয়ার সাথে কিছু হয়েছে, কোই সেরকম কিছু তো রিয়ার চালচলনে বুঝতে পারলাম না।
‘যখন দেখবেন সেবার দরকার তখন কাউকে পাবেন না।’ নিজের মনেই নিজে বলে উঠলো।
আমি চুপ করে গেলাম। চুপ করে ওর সামনে বসে থাকতে খুব অস্বস্তি হচ্ছে। ও নিজেও লজ্জা পাচ্ছে এই ভাবে একা একা খেতে, সেটা আমি বুঝতে পারছি।
ওর লজ্জা কাটানোর জন্যেই টুকটাক কাজের কথা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে থাকলাম। জবাবদিহির মতন না।
মনের মধ্যে যেটা ঘুরঘুর করছিলো সেটা বলার সুযোগ খুজছি ভাবছি ঠিক হবে কিনা? ব্যাক্তিগত হয়ে যাবে কিনা? আমার কৌতুহল প্রকাশ পেয়ে যাবে কিনা? তবুও জিভ আর বাধন মানলোনা, তাও ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। ‘আমাদের অসুবিধে হবে বলে কি বেহালা বাজানো বন্ধ করে দিয়েছো?’
সচকিত হয়ে উত্তর দিলো ‘না না আসলে আমি কিছু ছবি আঁকছি... সেই জন্যে রাতের ওই সময়টাই বেছে নিয়েছি। দুটো সখই আমার খুব প্রিয়।’
‘বাহ্* তুমি ছবিও আঁকো?’
‘হ্যাঁ এটাও কারোর থেকে শিখিনি...।’
‘তাহলে নিশ্চয় তোমার বেহালা বাজানোর মতনই সুন্দর হবে।’
‘আপনিই সুন্দর বললেন, কারন আপনি নিজে সুন্দর...’ বলে একটু থতমত খেলো। আমি ইচ্ছে করে কথাটা খেয়াল করিনি ভাব করলাম, যেন ওকে প্রশ্রয় দিতে চাইছিলাম।
‘মানে আমি বলতে চাইছি, আপনার মন সুন্দর তাই আপনি সবকিছু সুন্দর দেখেন।’
‘মন তুমি দেখলে কি করে?’ প্রশ্নটা করে নিজেরই অদ্ভুত লাগলো, আমি কি খেলুরে মেয়েদের মতন আচরন করছি।
‘মন দেখতে পাওয়া যায় না, ভালো মনের পরিচয় তার পরিবেশেই পাওয়া, ভালো মনের একটা সুবাস থাকে, যেটা তার চেহারায় পরে।’
‘তাই নাকি? কেউ তো আমাকে বলেনি এরকম।’ আমি বোধহয় নিজের সিমানাটা ভুলে গেছিলাম তাই সেটা শুধড়ে নেওয়ার জন্যে আবার বললাম ‘রিয়াও কোনদিন বলেনি।’
‘রিয়া কেন বলবে? ও তো নিজেই বুঝতে পারে। আর এটা তো ঘোষনা করার মতন জিনিস নয়, ও নিশ্চয় আপনার আচার আচরনে আপনার মনের ছোয়া পায়।’
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম এরপর ও কি বলে সেটা শোনার জন্যে। কিন্তু ও হঠাত করে চুপ করে গেলো। আমিও চুপ করে রইলাম। ভাবলাম কি করছি আমি। নিজেকে এইভাবে মেলে ধরার কি দরকার আছে?
খাওয়া শেষ করে ও উঠে দাঁড়ালো। আমি ওকে বেসিন এ গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিতে বললাম। ওর সামনে একটা তোয়ালে নিয়ে গেলাম হাত মোছার জন্যে।
‘একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?’ হঠাত করে আমার চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলো।
আমি থতমত খেয়ে কোনরকমে ঘার নেরে সন্মতি দিলাম।
‘আপনার মনে অনেক কষ্ট তাই না?’
আমি থমকে গেলাম ওর এই প্রশ্ন শুনে। উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
রাহুল উত্তরের অপেক্ষা করলো না নিজের মনেই বলতে থাকলো ‘আমি জানি, আমি ঠিক বুঝি, আপনিও খাঁচায় পোরা পাখির মতন ছটফট করছেন, উড়তে ভুলে গেছেন।’
আমি নির্বাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম ‘সেরকম কিছু নয়তো। এটা তো আমারই তৈরি খাঁচা, আমি কিভাবে উড়ে যাবো। এই নিয়ে ভাবার কি আছে। মনের কষ্ট তো স্বাভাবিক। সবারই তো থাকে, আমার যেমন আছে, রিয়ারও আছে, তোমারও নিশ্চয় আছে। কষ্টটাও তো মানুষের এক সঙ্গি। কষ্ট নিয়েও তো বাঁচতে ভালো লাগে।’
আমাকে অবাক করে দিয়ে ও বললো ‘আপনি স্যারকে খুব মিস করেন তাই না?’
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম, তারপর হেঁসে জিজ্ঞেস করলাম ‘কে? রিয়া বলেছে বুঝি? নাকি আমাকে দেখে বোঝা যায়?’
রাহুল হেঁসে বললো ‘এটা একটা অনুভুতি কেউ বলেও না, বোঝানোও যায় না। আমি কি করে বুঝি সেটাও আমি আপনাকে বলে বোঝাতে পারবোনা। তবু কিছু ইঙ্গিত তো থাকেই।’
‘ইঙ্গিত মানে? আমি ইঙ্গিত দিয়েছি?’
সেই সময় সুবলা এঁঠো থালা তুলতে চলে এলো আর কথা এগোলো না। ওকে যে কিছুক্ষন থাকতে বলবো সেটাও সম্ভব না। কিন্তু মনের মধ্যে একটা কাঁটার খোঁচা রয়েই গেলো।
নিজের মনের মধ্যেই ফুঁসছি, এইটূকে ছেলের কেমন বিজ্ঞ বিজ্ঞ ভাব, হতে পারে গুনি ছেলে। একদিন দেখেই আমার মন পরে ফেললো যেন আমি ওকে গল্প করতে গেছি। কি বলতে চাইছে ও? আমার মন নিয়েই বিশ্লেষণ করছে কেন হঠাত করে। সুযোগ পেলে জিজ্ঞেস করবো।
সারাদিন আমি উসখুস করতে থাকলাম, ওর মুখোমুখি হওয়ার, কিন্তু হলেও সু্যোগ পেলাম না এই কথা তোলার। আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি ও রিয়ার সামনে আমার সাথে ব্যক্তিগত স্তরে কথা বলতে চায়না। ও কি আমাকে অন্য নজরে দেখছে? এতই যদি মন বুঝতে পারে তাহলে ও কি আমার ভিতরের কথাও বুঝতে পারছে? বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠলো। ধরা পরে গেলাম, সেদিন মাথা ঘুরে গিয়ে কি কিছু উল্টোপাল্টা হয়ে গেছিলো? আবার ভাবছি, হয়তো আমাকে ওর বৌদির কথা বলেছে বলেই ও এই ভাবে কথা বলছে। ওর বৌদির সাথেই আমাকে তুলোনা করছে। আমাকে নিয়ে ভাবছে তার কারন ওর বোউদি জানিনা এটা ভেবে কেমন একটা হতাশ লাগছে।
শুয়ে শুয়ে ভাবছি ওপরে যাবো কিনা। মন বলছে এতটাও ঠিক হবেনা। একই ছাদের তলায় যখন আছি তখন সুযোগ ঠিক পাবোই। আগ বাড়িয়ে নিজেকে খেলো করার কোন মানে হয়না। আর যাই হোক এই বয়েসে আমি নিশ্চয় ওর প্রেমে পরতে যাচ্ছি না। যেখানে রিয়া মনের দিক থেকে এগিয়ে চলেছে। তবে এটা ভালো করেই বুঝতে পারছি যে এই মানসিক অবস্থার একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার, এই চিন্তা করতে করতে আমি মানসিক রুগি হয়ে যাবো। নিজের ওপর নিজের বিরক্ত লাগছে যে সামান্য মুখের মিলের জন্যে আমি কি না চিন্তাভাবনা করছি।
কয়েকদিন ধরে নিজের সাথে লড়ে যাচ্ছি। একবার শুভচিন্তা জিতছে, একবার আবেগের জয় হচ্ছে। দোলাচল আমার কাটছে না। এই কদিনে সুযোগও পাইনি রাহুলের সাথে একা কথা বলবো। আমার মন বলছে ও আমাকে নিয়ে চিন্তা করছে। যা চিন্তা করছে সেগুলো আমার সাথেই শেয়ার করতে চায়। তাই রিয়ার সামনে ও একদম স্বাভাবিক ব্যাবহার করে, মুহুর্তের জন্যে একা হয়ে গেলে ও অদ্ভুত ভাবে মাথা নামিয়ে নিয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার ভান করে। আমাকে সুযোগ দিতে চায় না সেই কথা গুলো তোলার। এবং আমিও রিয়ার সামনে ওর সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলি। বেহালা বাজানোর শব্দ এই তিনদিনে পাইনি। এখনো কি ওর আঁকা শেষ হোলো না?
কালকে রবিবার, সামান্য অলসতা দেখানোর সুযোগ থাকলেও, সন্ধ্যের দিকে খুব চাপ পরে। অনেক খুচরো অর্ডার আসে। সপ্তাহে একদিন, কিন্তু ছেরে দেওয়া যায় না। এই পয়সা উপার্জনের জন্যেই তো একদিন এই ব্যাবসা শুরু করি। সেটাকে কিভাবে সরিয়ে দি।
রিয়া আর আমি হোম ডেলিভারি সঙ্ক্রান্ত নানান কথা বলতে বলতেই অনেক রাত হয়ে গেলো। ভবিষ্যতের অনেক পরিকল্পনা নিয়ে এটাকে কিভাবে আরো পেশাদারি করা যায় সেটা নিয়ে ও আর রাহুল অনেক কথা বলে, সেগুলো রিয়া আমাকে বলছিলো।
রিয়া শুতে চলে গেলো নিজের ঘরে। রাত প্রায় বারোটা বাজে। আমি যেন কিছুর অপেক্ষা করছি। রিয়া কখন নিজের ঘরে যাবে আর আমি আমার সদ্যপ্রসুত জগতে গিয়ে ঢুকবো সেই চিন্তা করছিলাম। এখন আমি একাকিত্ব বেশি পছন্দ করছি। চিন্তাভাবনাগুলোকে নিজের খাঁতে বইয়ে দিতে পারি বলে। এই সময়টা এখন আমার খুব প্রিয়, কেউ নেই ভাগ বসানোর। এটা কি স্বার্থপরতা? হোক গে। আমি আমার দায়িত্ব ঠিক পালন করছি। আমার মেয়ের ওপর আমার ভালোবাসা কোন অংশে কম না। তাহলে নিজের জন্যে আমি এইটুকু চাইতে পারিনা কি? আজকে পার্থর বদলে যদি আমি চলে যেতাম, তাহলে পার্থও কি পারতো এই সংযম ধারন করতে? তর্কযোগ্য। পার্থকে এর মধ্যে টেনে আনতে খারাপ লাগছে। তবুও আত্মপক্ষ সমর্থনে এটাও তো একটা যুক্তি।
হাল্কা রাতবাতিতে সন্ধ্যেবেলার শাড়ীটা ছেরে একটা নাইটি টেনে নিলাম পরবো বলে। ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজের উলঙ্গ দেহটা দেখে নিজেরই উত্তেজিত লাগছে। কেউ বলবে না ৪২ হয়েছে। টানটান উজ্জ্বল চামরা, পিঠ পর্যন্ত একরাশ ঘন কালো চুল, পিনোন্নত বুক, তুলতুলে মেদযুক্ত পাছা, পাতলা কোমরের তলায় পেটে হাল্কা শিশুসুলভ চর্বির আস্তরন, সুগঠিত দুটি পা, তার মাঝে কালো চুলে ঢাকা সুখগহ্বর, যেন বলতে চাইছে আমায় দ্যাখ। নিজের অজান্তেই দুপায়ের ফাঁকে হাত চলে গেলো। দুপায়ের মাঝে লেপ্টে থাকা চুলগুলো সরিয়ে আঙ্গুলগুলো যোনিদ্বারের পাপড়ীগুলোকে ফাঁক করে গোলাপি ফাঁটলটাতে আঙ্গুল সঞ্চালন করতেই শরীর সিউরে উঠলো। নাঃ আমি করবো না। এভাবে নিজেকে উত্তেজিত করা মানে নিজে দুর্বল হয়ে পরা। আবার সেই রাহুল আমার শরীর মন গ্রাস করবে। নাঃ নিজের মেয়ের সাথে এতবড় ধোকা আমি করতে পারবোনা।
বিছানায় শুয়ে ছটফট করছি। কিন্তু প্রায় প্রতিজ্ঞা করে নিলাম যে এই ছেলেটাকে মনে মনে হলেও এত গুরুত্ব দিলে চলবেনা। বুঝতে পারছিনা যে রিয়া মানসিক ভাবে কতটা এগিয়েছে, কিন্তু আমার রাহুলকে দেখে মনে হয়না যে ও রিয়ার সাথে জীবন কাটানোর জন্যে প্রস্তুত। দোষটা রিয়ার নয় সেটা আমি ভালো করেই জানি। কারন রিয়ার মতন আধুনিক সুন্দরি মেয়েদের পানিগ্রহনের জন্যে উপযুক্ত ছেলেরা মুখিয়ে আছে। রাস্তাঘাটে অনেকেই আমাকে মেয়ের সন্মন্ধ করে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে, কিন্তু আমি ওর নিজের মতামতের ওপর সব ছেরে দি। ছোটবেলা থেকেই ওকে এই স্বাধিনতা দিয়েছি। এমন কি ও সাত বছরে পরতেই ওকে আলাদা ঘরে শোয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলাম। পার্থর যুক্তি, এতে মেয়ে সাহসি হবে, দিনকাল যা আসছে, নিজে সাবলম্বি নাহলে সমুহ বিপদ। তাই সেই বয়েস থেকেই ও নিজেই নিজের কাজকর্ম করে নেওয়ার অভ্যেস করে নিয়েছিলো। হোমওয়ার্ক থেকে জুতো পালিশ পর্যন্ত সব নিজেই করা অভ্যেস করেছিলো। আজকে সেই সুফল আমি পাচ্ছি। ভিষন বাস্তববাদি এবং কঠিন মানসিকতার ও। গুরুত্বপুর্ন সিদ্ধান্তের জন্য ওর স্মরনাপন্ন হই। বাবার মতনই ওর দক্ষ্য বিচার বুদ্ধি, অনেক দূর পর্যন্ত্য দেখতে পারে, আর দেখিয়েও দিতে পারে।
রিয়া কি রাহুলের মধ্যে কিছু খুঁজে পেয়েছে? প্রথম কয়েক দিনের সেই উচ্ছ্বাস কি কোথাও মলিন হয়েছে?
আমি শুধু শুধু এই চিন্তা করছি। অলস মন থেকে এই কুচিন্তা গুলো উঠে আসছে। এরকম হতে পারে জানলে ঘরে কোন পুরুষমানুষ ভাড়া দিতাম না।
ঘুম আসছে না কিছুতেই। কিছুক্ষন পরে বুঝতে পারলাম লোডশেডীং হোলো, ইনভার্টারে ফ্যান ঘুরলে বেশ জোরে ঘোরে। এখন সেরকমই ঘুরছে।
ওপরের ঘরে তো ইনভার্টারের কানেকশান নেই, তাহলে রাহুলের নিশ্চয় কষ্ট হবে। এই দ্যাখো ঘুরে ফিরে আবার সেই একই চিন্তা!!!
[/HIDE]
‘আপনি খাবেন না?’ ভাতের থালাটা আর জলের গ্লাস ওর সামনে রাখতে জিজ্ঞেস করলো।
‘আমার তো খেতে খেতে তিনটে বেজে যাবে।’
‘বাবা এত দেরি করে খেলে তো শরীর খারাপ করবে। খেয়ে নিয়ে তো কাজ করতে পারেন।’
‘কাজ কিছুই নেই, তবুও ওটাই নিয়ম হয়ে গেছে।’
‘সত্যি মেয়েরা এত অনিয়ম করে...। বাড়িতেও দেখতাম বৌদি সেই সন্ধ্যেবেলা চান করে উঠতো, খাওয়া তো বেশির ভাগ দিনই জল হয়ে যেত। কত বলতাম তাও শুনতোনা।’
আমি মুচকি হেসে বললাম ‘মেয়েরা অনেক শক্তিশালী, অনিয়মই আমাদের নিয়ম।’
ব্যাঙ্গ করে রাহুল বললো ‘শরীর যেদিন বিদ্রোহ করবে সেদিন বুঝতে পারবেন, কোন কিছু তো আর একদিনে হয়ে যায় না, যখন হবে দেখবেন বিছানা ধরিয়ে দিয়েছে।’
‘সে সময় হলে সবাইকেই বিছানা ধরতে হয়, আর রিয়া তো আছে, তখন নিশ্চয় রিয়ার বরও থাকবে, ওর ছেলেমেয়েও থাকবে, ভালোই তো লাগবে অন্যের সেবা পেতে।’ আমি ইচ্ছে করে রিয়ার প্রসঙ্গ তুললাম ওর মনোভাব লক্ষ্য করার জন্যে। দেখলাম ও ভাবলেশ হীন। তাহলে কি রিয়ার সাথে কিছু হয়েছে, কোই সেরকম কিছু তো রিয়ার চালচলনে বুঝতে পারলাম না।
‘যখন দেখবেন সেবার দরকার তখন কাউকে পাবেন না।’ নিজের মনেই নিজে বলে উঠলো।
আমি চুপ করে গেলাম। চুপ করে ওর সামনে বসে থাকতে খুব অস্বস্তি হচ্ছে। ও নিজেও লজ্জা পাচ্ছে এই ভাবে একা একা খেতে, সেটা আমি বুঝতে পারছি।
ওর লজ্জা কাটানোর জন্যেই টুকটাক কাজের কথা স্বাভাবিক ভাবেই বলতে থাকলাম। জবাবদিহির মতন না।
মনের মধ্যে যেটা ঘুরঘুর করছিলো সেটা বলার সুযোগ খুজছি ভাবছি ঠিক হবে কিনা? ব্যাক্তিগত হয়ে যাবে কিনা? আমার কৌতুহল প্রকাশ পেয়ে যাবে কিনা? তবুও জিভ আর বাধন মানলোনা, তাও ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। ‘আমাদের অসুবিধে হবে বলে কি বেহালা বাজানো বন্ধ করে দিয়েছো?’
সচকিত হয়ে উত্তর দিলো ‘না না আসলে আমি কিছু ছবি আঁকছি... সেই জন্যে রাতের ওই সময়টাই বেছে নিয়েছি। দুটো সখই আমার খুব প্রিয়।’
‘বাহ্* তুমি ছবিও আঁকো?’
‘হ্যাঁ এটাও কারোর থেকে শিখিনি...।’
‘তাহলে নিশ্চয় তোমার বেহালা বাজানোর মতনই সুন্দর হবে।’
‘আপনিই সুন্দর বললেন, কারন আপনি নিজে সুন্দর...’ বলে একটু থতমত খেলো। আমি ইচ্ছে করে কথাটা খেয়াল করিনি ভাব করলাম, যেন ওকে প্রশ্রয় দিতে চাইছিলাম।
‘মানে আমি বলতে চাইছি, আপনার মন সুন্দর তাই আপনি সবকিছু সুন্দর দেখেন।’
‘মন তুমি দেখলে কি করে?’ প্রশ্নটা করে নিজেরই অদ্ভুত লাগলো, আমি কি খেলুরে মেয়েদের মতন আচরন করছি।
‘মন দেখতে পাওয়া যায় না, ভালো মনের পরিচয় তার পরিবেশেই পাওয়া, ভালো মনের একটা সুবাস থাকে, যেটা তার চেহারায় পরে।’
‘তাই নাকি? কেউ তো আমাকে বলেনি এরকম।’ আমি বোধহয় নিজের সিমানাটা ভুলে গেছিলাম তাই সেটা শুধড়ে নেওয়ার জন্যে আবার বললাম ‘রিয়াও কোনদিন বলেনি।’
‘রিয়া কেন বলবে? ও তো নিজেই বুঝতে পারে। আর এটা তো ঘোষনা করার মতন জিনিস নয়, ও নিশ্চয় আপনার আচার আচরনে আপনার মনের ছোয়া পায়।’
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম এরপর ও কি বলে সেটা শোনার জন্যে। কিন্তু ও হঠাত করে চুপ করে গেলো। আমিও চুপ করে রইলাম। ভাবলাম কি করছি আমি। নিজেকে এইভাবে মেলে ধরার কি দরকার আছে?
খাওয়া শেষ করে ও উঠে দাঁড়ালো। আমি ওকে বেসিন এ গিয়ে হাত মুখ ধুয়ে নিতে বললাম। ওর সামনে একটা তোয়ালে নিয়ে গেলাম হাত মোছার জন্যে।
‘একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?’ হঠাত করে আমার চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞেস করলো।
আমি থতমত খেয়ে কোনরকমে ঘার নেরে সন্মতি দিলাম।
‘আপনার মনে অনেক কষ্ট তাই না?’
আমি থমকে গেলাম ওর এই প্রশ্ন শুনে। উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
রাহুল উত্তরের অপেক্ষা করলো না নিজের মনেই বলতে থাকলো ‘আমি জানি, আমি ঠিক বুঝি, আপনিও খাঁচায় পোরা পাখির মতন ছটফট করছেন, উড়তে ভুলে গেছেন।’
আমি নির্বাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষন পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম ‘সেরকম কিছু নয়তো। এটা তো আমারই তৈরি খাঁচা, আমি কিভাবে উড়ে যাবো। এই নিয়ে ভাবার কি আছে। মনের কষ্ট তো স্বাভাবিক। সবারই তো থাকে, আমার যেমন আছে, রিয়ারও আছে, তোমারও নিশ্চয় আছে। কষ্টটাও তো মানুষের এক সঙ্গি। কষ্ট নিয়েও তো বাঁচতে ভালো লাগে।’
আমাকে অবাক করে দিয়ে ও বললো ‘আপনি স্যারকে খুব মিস করেন তাই না?’
আমি অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালাম, তারপর হেঁসে জিজ্ঞেস করলাম ‘কে? রিয়া বলেছে বুঝি? নাকি আমাকে দেখে বোঝা যায়?’
রাহুল হেঁসে বললো ‘এটা একটা অনুভুতি কেউ বলেও না, বোঝানোও যায় না। আমি কি করে বুঝি সেটাও আমি আপনাকে বলে বোঝাতে পারবোনা। তবু কিছু ইঙ্গিত তো থাকেই।’
‘ইঙ্গিত মানে? আমি ইঙ্গিত দিয়েছি?’
সেই সময় সুবলা এঁঠো থালা তুলতে চলে এলো আর কথা এগোলো না। ওকে যে কিছুক্ষন থাকতে বলবো সেটাও সম্ভব না। কিন্তু মনের মধ্যে একটা কাঁটার খোঁচা রয়েই গেলো।
নিজের মনের মধ্যেই ফুঁসছি, এইটূকে ছেলের কেমন বিজ্ঞ বিজ্ঞ ভাব, হতে পারে গুনি ছেলে। একদিন দেখেই আমার মন পরে ফেললো যেন আমি ওকে গল্প করতে গেছি। কি বলতে চাইছে ও? আমার মন নিয়েই বিশ্লেষণ করছে কেন হঠাত করে। সুযোগ পেলে জিজ্ঞেস করবো।
সারাদিন আমি উসখুস করতে থাকলাম, ওর মুখোমুখি হওয়ার, কিন্তু হলেও সু্যোগ পেলাম না এই কথা তোলার। আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি ও রিয়ার সামনে আমার সাথে ব্যক্তিগত স্তরে কথা বলতে চায়না। ও কি আমাকে অন্য নজরে দেখছে? এতই যদি মন বুঝতে পারে তাহলে ও কি আমার ভিতরের কথাও বুঝতে পারছে? বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠলো। ধরা পরে গেলাম, সেদিন মাথা ঘুরে গিয়ে কি কিছু উল্টোপাল্টা হয়ে গেছিলো? আবার ভাবছি, হয়তো আমাকে ওর বৌদির কথা বলেছে বলেই ও এই ভাবে কথা বলছে। ওর বৌদির সাথেই আমাকে তুলোনা করছে। আমাকে নিয়ে ভাবছে তার কারন ওর বোউদি জানিনা এটা ভেবে কেমন একটা হতাশ লাগছে।
শুয়ে শুয়ে ভাবছি ওপরে যাবো কিনা। মন বলছে এতটাও ঠিক হবেনা। একই ছাদের তলায় যখন আছি তখন সুযোগ ঠিক পাবোই। আগ বাড়িয়ে নিজেকে খেলো করার কোন মানে হয়না। আর যাই হোক এই বয়েসে আমি নিশ্চয় ওর প্রেমে পরতে যাচ্ছি না। যেখানে রিয়া মনের দিক থেকে এগিয়ে চলেছে। তবে এটা ভালো করেই বুঝতে পারছি যে এই মানসিক অবস্থার একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার, এই চিন্তা করতে করতে আমি মানসিক রুগি হয়ে যাবো। নিজের ওপর নিজের বিরক্ত লাগছে যে সামান্য মুখের মিলের জন্যে আমি কি না চিন্তাভাবনা করছি।
কয়েকদিন ধরে নিজের সাথে লড়ে যাচ্ছি। একবার শুভচিন্তা জিতছে, একবার আবেগের জয় হচ্ছে। দোলাচল আমার কাটছে না। এই কদিনে সুযোগও পাইনি রাহুলের সাথে একা কথা বলবো। আমার মন বলছে ও আমাকে নিয়ে চিন্তা করছে। যা চিন্তা করছে সেগুলো আমার সাথেই শেয়ার করতে চায়। তাই রিয়ার সামনে ও একদম স্বাভাবিক ব্যাবহার করে, মুহুর্তের জন্যে একা হয়ে গেলে ও অদ্ভুত ভাবে মাথা নামিয়ে নিয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার ভান করে। আমাকে সুযোগ দিতে চায় না সেই কথা গুলো তোলার। এবং আমিও রিয়ার সামনে ওর সাথে স্বাভাবিক ভাবেই কথা বলি। বেহালা বাজানোর শব্দ এই তিনদিনে পাইনি। এখনো কি ওর আঁকা শেষ হোলো না?
কালকে রবিবার, সামান্য অলসতা দেখানোর সুযোগ থাকলেও, সন্ধ্যের দিকে খুব চাপ পরে। অনেক খুচরো অর্ডার আসে। সপ্তাহে একদিন, কিন্তু ছেরে দেওয়া যায় না। এই পয়সা উপার্জনের জন্যেই তো একদিন এই ব্যাবসা শুরু করি। সেটাকে কিভাবে সরিয়ে দি।
রিয়া আর আমি হোম ডেলিভারি সঙ্ক্রান্ত নানান কথা বলতে বলতেই অনেক রাত হয়ে গেলো। ভবিষ্যতের অনেক পরিকল্পনা নিয়ে এটাকে কিভাবে আরো পেশাদারি করা যায় সেটা নিয়ে ও আর রাহুল অনেক কথা বলে, সেগুলো রিয়া আমাকে বলছিলো।
রিয়া শুতে চলে গেলো নিজের ঘরে। রাত প্রায় বারোটা বাজে। আমি যেন কিছুর অপেক্ষা করছি। রিয়া কখন নিজের ঘরে যাবে আর আমি আমার সদ্যপ্রসুত জগতে গিয়ে ঢুকবো সেই চিন্তা করছিলাম। এখন আমি একাকিত্ব বেশি পছন্দ করছি। চিন্তাভাবনাগুলোকে নিজের খাঁতে বইয়ে দিতে পারি বলে। এই সময়টা এখন আমার খুব প্রিয়, কেউ নেই ভাগ বসানোর। এটা কি স্বার্থপরতা? হোক গে। আমি আমার দায়িত্ব ঠিক পালন করছি। আমার মেয়ের ওপর আমার ভালোবাসা কোন অংশে কম না। তাহলে নিজের জন্যে আমি এইটুকু চাইতে পারিনা কি? আজকে পার্থর বদলে যদি আমি চলে যেতাম, তাহলে পার্থও কি পারতো এই সংযম ধারন করতে? তর্কযোগ্য। পার্থকে এর মধ্যে টেনে আনতে খারাপ লাগছে। তবুও আত্মপক্ষ সমর্থনে এটাও তো একটা যুক্তি।
হাল্কা রাতবাতিতে সন্ধ্যেবেলার শাড়ীটা ছেরে একটা নাইটি টেনে নিলাম পরবো বলে। ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজের উলঙ্গ দেহটা দেখে নিজেরই উত্তেজিত লাগছে। কেউ বলবে না ৪২ হয়েছে। টানটান উজ্জ্বল চামরা, পিঠ পর্যন্ত একরাশ ঘন কালো চুল, পিনোন্নত বুক, তুলতুলে মেদযুক্ত পাছা, পাতলা কোমরের তলায় পেটে হাল্কা শিশুসুলভ চর্বির আস্তরন, সুগঠিত দুটি পা, তার মাঝে কালো চুলে ঢাকা সুখগহ্বর, যেন বলতে চাইছে আমায় দ্যাখ। নিজের অজান্তেই দুপায়ের ফাঁকে হাত চলে গেলো। দুপায়ের মাঝে লেপ্টে থাকা চুলগুলো সরিয়ে আঙ্গুলগুলো যোনিদ্বারের পাপড়ীগুলোকে ফাঁক করে গোলাপি ফাঁটলটাতে আঙ্গুল সঞ্চালন করতেই শরীর সিউরে উঠলো। নাঃ আমি করবো না। এভাবে নিজেকে উত্তেজিত করা মানে নিজে দুর্বল হয়ে পরা। আবার সেই রাহুল আমার শরীর মন গ্রাস করবে। নাঃ নিজের মেয়ের সাথে এতবড় ধোকা আমি করতে পারবোনা।
বিছানায় শুয়ে ছটফট করছি। কিন্তু প্রায় প্রতিজ্ঞা করে নিলাম যে এই ছেলেটাকে মনে মনে হলেও এত গুরুত্ব দিলে চলবেনা। বুঝতে পারছিনা যে রিয়া মানসিক ভাবে কতটা এগিয়েছে, কিন্তু আমার রাহুলকে দেখে মনে হয়না যে ও রিয়ার সাথে জীবন কাটানোর জন্যে প্রস্তুত। দোষটা রিয়ার নয় সেটা আমি ভালো করেই জানি। কারন রিয়ার মতন আধুনিক সুন্দরি মেয়েদের পানিগ্রহনের জন্যে উপযুক্ত ছেলেরা মুখিয়ে আছে। রাস্তাঘাটে অনেকেই আমাকে মেয়ের সন্মন্ধ করে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে, কিন্তু আমি ওর নিজের মতামতের ওপর সব ছেরে দি। ছোটবেলা থেকেই ওকে এই স্বাধিনতা দিয়েছি। এমন কি ও সাত বছরে পরতেই ওকে আলাদা ঘরে শোয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলাম। পার্থর যুক্তি, এতে মেয়ে সাহসি হবে, দিনকাল যা আসছে, নিজে সাবলম্বি নাহলে সমুহ বিপদ। তাই সেই বয়েস থেকেই ও নিজেই নিজের কাজকর্ম করে নেওয়ার অভ্যেস করে নিয়েছিলো। হোমওয়ার্ক থেকে জুতো পালিশ পর্যন্ত সব নিজেই করা অভ্যেস করেছিলো। আজকে সেই সুফল আমি পাচ্ছি। ভিষন বাস্তববাদি এবং কঠিন মানসিকতার ও। গুরুত্বপুর্ন সিদ্ধান্তের জন্য ওর স্মরনাপন্ন হই। বাবার মতনই ওর দক্ষ্য বিচার বুদ্ধি, অনেক দূর পর্যন্ত্য দেখতে পারে, আর দেখিয়েও দিতে পারে।
রিয়া কি রাহুলের মধ্যে কিছু খুঁজে পেয়েছে? প্রথম কয়েক দিনের সেই উচ্ছ্বাস কি কোথাও মলিন হয়েছে?
আমি শুধু শুধু এই চিন্তা করছি। অলস মন থেকে এই কুচিন্তা গুলো উঠে আসছে। এরকম হতে পারে জানলে ঘরে কোন পুরুষমানুষ ভাড়া দিতাম না।
ঘুম আসছে না কিছুতেই। কিছুক্ষন পরে বুঝতে পারলাম লোডশেডীং হোলো, ইনভার্টারে ফ্যান ঘুরলে বেশ জোরে ঘোরে। এখন সেরকমই ঘুরছে।
ওপরের ঘরে তো ইনভার্টারের কানেকশান নেই, তাহলে রাহুলের নিশ্চয় কষ্ট হবে। এই দ্যাখো ঘুরে ফিরে আবার সেই একই চিন্তা!!!
[/HIDE]