ঈশিতা কাপড় চোপড় না পরে উলংগ শরীরে চাদরটা টেনে শুয়ে থাকল,বৃষ্টির ছন্দে ছন্দে শীতল আবহাওয়ায় চাদর গায়ে বেশ আরম লাগছিল,দৈহিক আর প্রাকৃতিক প্রাশান্তি দুই মিলে ঈশিতাকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করে ফেলে। সকালে ঘুম ভাঙ্গলে চোখ খোলে দেখে বাইরের আলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে,বিছান ত্যাগ করে উঠে পরে, বিবস্ত্র দেহটার দিকে একবার তাকায়, নিজের ভিতর কেমন যেন উত্তেজনা বোধ জেগে উঠেছে, নিজের চোখে নিজ দেহটা খুব সুন্দর লাগছে, ড্রসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে একবার দেখতে মন চায়, কিন্তু সম্ভব হল না, গোদার ঘরে একটা দ্রেসিং টেবিল পর্যন্ত নেই, মহিলাদের একটা চিরুনি ও নেই। ঠাকবে বা কেন, মহিলাদের দৃষ্টি এড়াতেই সে নিজ হাতে এ দ্বীপটা গড়েছে। নিজে নির্বাসিত হয়েছে। বাত রুমে ঢুকে স্নান পর্ব সেরে ঈশিতা বের হয়ে আসল,ঘরে সব কটি জানালা খুলে দিয়ে কাপড় চোপড় পরে গোদার রুমের দিকে এসে দেখে গোদা বিছানায় নেই, দরজা ঠেলে দেখে বাইরে তালা মারা, ভোলা ঈশিতার নড়ন চড়ন দেখে তাড়াতাড়ি নাস্তা আর মৌসুমী ফলের সমাহার নিয়ে জানালার নিচ দিয়ে ঠেলে দিয়ে বলল আপামনি খেয়ে নাও। ঈশিতা কোন কথা না বলে হাত বাড়িয়ে নিয়ে খেয়ে নিল,আবার সে বন্দিনি রাজ কন্যার মত নিজের বিছানায় অলস ভাবে শুয়ে থাকল। সারাদিন গোদার দেখা নেই রাতে আবার দেখা হয়, দৈহিক মিলন হয়, আবার সকালে তালা ঝুলে, এমনি ভাবে চারদিন চলে গেল। গোদার দৃঢ় সংকল্প, ঈসিতা বুঝতে পারে এমনি ভাবে মাসের পর মাস, বছরের পর বছ থাকতে হবে এখানে। ভোগের সামগ্রী হয়ে। না ঘরকা, না ঘট কা হয়ে।
আজ সকাল হতে গোদা ঘরে আছে, তালা ঝুলেনি দজায়, তবুও ঈশিতা বাইরে আসেনা, বিছানায় শুয়ে থাকে, বড়জোর গোদার বিছান পর্যন্ত আসে, আবার ফিরে যায়, তাও ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে সিমাবদ্ধ। গোদা মাঝে মধ্যে ঘরে ঢুকে ঈশিতাকে দেখে যায়, কথা বলে না গম্ভীর ভাব। সকাল্টা কেটে গেছে এমনি ভাবে, দুপুরে খাওয়া দাওয়া হল, বিকেল আসন্ন, ঈশিতা ভাত ঘুমে তন্দ্রাচ্ছন্ন, হঠাত তার দেহের উপর একটা হাত ঘুরা ফিরা করছে, হ্যাঁ গোদাই, গোদা ঈশিতার পাশে বসে কাদছে, আর সারা গায়ে আদর করছে, বিড়বিড় করে কথা বলে যাচ্ছে, ঈশি আমি অন্তরের দিক মৃত লাশ, বুঝেছি এ লাশকে তোমার পছন্দ নয়, আমাকে ভালবেসে মেনে নিতে পারবে না কোনদিন, আমি বুঝেছি জোর করে কারো কাছ থেকে ভাল্অবাসা ছিনিয়ে নেয়া যায় না। আমিও পারব না। আমার কাছে থাকবে, আমাকে ভালবাসবে, আমার জীবনটাকে ফুলে ফলে সুশোভীত করে তোলবে, তোমার পক্ষ থেকে এমন কথা শুনব বলে চার দিন অপেক্ষা করলাম, কিন্তু কিছুই বললে না, প্রতিদিন দেহ মিলনে যৌবনের ঝড় তুলেছ, হয়ত সেটা আমার কারনে।
আর নয়, আজ রাতের পর কাল সকালে তোমাকে মুক্ত করে দেব, কাল তুমি চলে যেও। কতাহগুলো তোমার চোখের সামনে সরাসরি বলতে পারতাম, কিন্তু তোমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে গেলে আমার হৃতপিন্ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে, আমি জানি তুমি জেগে আছ। তাই তোমার মনের কথাগুলি তোমাকে এভাবে বললাম। আজ রাত আমার যতই কষ্ট হোক তোমার কাছে আসবনা,তোমাকে বিরক্ত করব না,সকালে নাস্তা খেয়ে চলে যেও, আমার অনুমতির অপেক্ষা করনা, অনুমতি নিয়ে আমার কাটা দেহে নুনের জ্বালা দিও না। গোদার চোখের জলে ঈশিতার বাম পাশের পাজর ভিজে গেছে।
রাতে ঈশিতা শুয়ে এ পাশ ও পাশ করছে,রাতের শেষে সকালের সুর্য দেখা গেলে ঈশিতার মুক্তি। সে ফিরে যাবে তার ঘরে, ঘুমাতে চেষ্টা করল, ঘুম আসছে না, মাথা ভর্তি চিন্তা আর চিন্তা। জীবন আর যৌনতার মাঝে তার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। একটা নারীর কাছে এ দুটির কোনটি অধিক মুখ্য সেটাকে পৃথক করতে পারছে না। বিবাহিত জিবনের আটটি বছর যৌণজীবনের অতৃপ্ত মন তাকে গোদার কাছে থেকে যেতে বলে, আবার দুটি সন্তানের জন্য তাকে সায়েদের কাছে যে কোন মুল্যে ফিরে যেতে বলে। আবার বিপরিত চিন্তা মনে বাসা বাধে, সায়েদের কাছে গেল, দুটি সন্তান পাবে, কিন্তু নারী জীবনের চরম তৃপ্তির যৌন সুখ সে জীবনেও পাবে না, আবার গোদার কাছে থেকে গেলে যৌন সুখের পাশা পাশি সন্তান পাওয়ার সম্ভবনা ও কে ফেলে দেয়া যায় না। সায়েদের কাছে অতীতের গড়ে তোলা জীবন আছে, আর গোদার কাছে সব কিছু নতুন ভাবে শুরু করা জীবন ও যৌবন দুটোই আছে। গদার চোখের জ্বল বলছে তাকে সারা জীবন ভালবাসবে পাগলের মত,গোদার ভাল বাসার কাছে মজনু এবং ফরহাদ ও হার মানবে। তাছাড়া পাচ দিন পর সুস্থ দেহে বাড়ী ফিরে গেলে সায়েদ নানা খারাপ চিন্তা করবে, ঈশিতা নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হবে, হয়ত তাকে সন্দেহ বশত রাখতেই চাইবে না, তাড়িয়ে দেবে। তখন দুদিক হারাবে। গোদা তার হাতের কাছে এসে পরা মণিমালা, তাকে পায়ে ঠেলা যাবে না। না না সে গোদাকে ছেড়ে যাবে না, এ কয়দিনে তার আত্বীয় স্বজন সবাই হয়ত মনে করেছে মরেই গেছি, তাদের সবার কাছ আজ নতুন সত্যি সত্যি মরে গেলাম। নতুন করে গোদার সাথে বেধে নিলাম। গোদা যা জানতে চায় ,যা শুনতে চায় গোদাকে আজ রাতে বলেই দেব। কাল সকাল আমার মুক্তি নয়, বরং গোদার সাথে নিজেকে চিরতরে বেধে ফেলা।
বিছানা ছেড়ে উঠে, গোদার ঘরে যায়, গোদা মাথার নিচে দু হাত দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে আছে, ঈশিতাকে দেখে গোদা কিছু বলে না, ঈশিতা গোদাকে একটা ধাক্ক দিয়ে বলে জেগে আছ? গোদা জবাব দেয় হ্যঁ, আমি তোমার সাথে শুব, গোদা রেগে ঊঠে, বলে, না না শুবে না, আমি বলিনি আজ রাত তোমাকে কষ্ট দেব না, ঈশিতা বলে কোনটাকে কষ্ট বলছ, আট বছরের সন্সার জীবনের রাতের রাত অতৃপ্ত ছিলাম, তুমি আমার সেই অতৃপ্ত যৌবনকে কানায় কানায় ভরে দিয়েছ, সেটা আমার জন্য কষ্ট? তোমার হাতের স্পর্শে আমার এ দেহ যৌবন পুর্ণতা লাভ করেছে সেটা আমার জন্য কষ্ট? কষ্ট হলে আমি কষ্ট পেতে চাই। আমাকে আরো বেশী বেশী কষ্ট দাও। প্রতিদিন কষ্ট দাও। সারা জীবন কষ্ট দাও। তোমার দেয়া কষ্ট কে আমি সুখে রুপান্তর করে নেব। ঈশিতা কেদে উঠে গোদার বুকে ঝাপিয়ে পরে, গোদাকে জড়িয়ে ধরে,বল না আমাকে রাখবে, চিরদিনের মত তালা বন্ধ করে আটকে রাখবে, কষ্ট দেবে নির্যাতন করবে। গোদা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেনা, গোদাও ডুকরে কেদে উঠে, ঈশিতাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়, আদর করতে থাকে,