ঘোড়ার আড়াই চাল ৮
তবে ফোন করার অনুমতি মৃদুল তখনও পায়না,
এইবার বাধ্য হয়েই মৃদুল কে তার কোনও উকিল ছাড়ায় পুলিসি জেরার সামনে পরতে হয় ,
প্রথমেই তাঁদের কে জিগ্যেস করা হয় তাঁদের এখানে আসার কারন,
জবাবে মৃদুল যখন বীরপুরের জমিদার বাড়ীর রহস্যময় ঘটনার কথা বলে তো প্রথমে ঘরে উপস্থিত সবাই চুপ করে যায়,
তারপর হটাৎই অফিসারটি হোহো করে হাসতে আরম্ভ করে দেয় আর তার সঙ্গে তাল মেলায় ঘরের বাকি সবাই হাসতে হাসতে সবাই লুটোপুটী খেতে থাকে,
শুধু মৃদুল আর শঙ্কর চুপচাপ এই রঙ্গ দেখতে থাকে ।
হাসির দমক একটু থামলে পরে এইবার অফিসার নিজেকে একটু সামলে নিয়ে ভালো মুখ করে জিজ্ঞেস করে
” তাহলে যে বাড়ীটাতে আপনারা ছিলেন সেটা জমিদার বাড়ী আর সেটা ভূতুড়ে জমিদার বাড়ী তাই তো?”
বলেই আবার হেসে ফেলে আর তার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে উপস্থিত বাকি সবাইও সেই হাসিতে যোগ দেয়।
হাসতে হাসতেই অফিসারটি বলেন
”যদি ওটা ভূতুড়ে জমিদার বাড়ী হয়, তাহলে আমাদের ফরেস্ট অফিস কোনটা?”
ফরেস্ট অফিস শুনে মৃদুল চমকে যায় কারন সে তো এতটা ভুল করবে না,
তাই এবার মৃদুল আত্মপক্ষ সমর্থনে বলে
” কিন্তু সার তাহলে কি অন্ধকারে আমাদের চিনতে ভুল হল?
কারন আমাদের কাছে যা খবর তাতে এই গ্রামটি ভূতুড়ে আর পুরো গ্রামটিই ফাঁকা পরে থেকে, আর কাল আমরা যখন এইখানে এসেছিলাম তখনও কোন লোক দেখতে পায়নি ”
মৃদুলের মুখের কথা শেষ হতে না হতেই এবার অফিসারটি বলে
” আপনি নিজেকে যতটা নিরীহ দেখাতে চাইছেন বা আমাদেরকে যতটা বোকা ভাবছেন আমরা কিন্তু ততটা বোকা নয় রিপোর্টার বাবু”
বলে আবার সংযোজন করে
” এই গ্রামটির বেসির ভাগ মানুষই আদতে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোক আর তাঁদের একটা প্রচলিত নিয়ম হল মাঘী পূর্ণিমার সময় তারা দুদিন রাত বাস জঙ্গলেই করে কারন তারা মনে করে যে সেই দুদিন তাঁদের ফাঁকা ঘরে ভগবান আসেন”
এই তথ্য জেনে মৃদুল যেন এইবার আর অবাক হতেও ভুলে গেছিলো ,
অফিসারের পরের কথাতে এইবার যেন মৃদুলের পায়ের তলা থেকে মাটিও সরে গেল ।
নতুন আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়ার রিঙ ছাড়তে ছাড়তে এইবার অফিসারটি বলেন
” তবে আপনি ভাববেন না আপনাদের আমরা এমনি এমনি ধরেছি, আপনাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েই তবে আমরা ওই রাতে ফরেস্ট অফিসের দোতলা থেকে আপনাদের ধরেছি”
মৃদুলের অবাক হয়ে যাওয়া মুখটা দেখে অফিসারটির এইবার যেন মায়া হয় আর ব্যাপারটা আরও খোলসা করেই বলেন।
তিনি বলেন
” আপনারা যে কজন মিলে এখানে এসেছিলেন তাদের মধ্যই একজন আপনার বিরুদ্ধে রাজু বাবু কে খুন আর আপনার সঙ্গীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে”
মৃদুলের অবাক হওয়া তখনও যেন বাকি ছিল।
তবে পুলিশ অফিসারটির পরের কাজটা যেন মৃদুল কে বোবা করে দিল।
অফিসারটি ততক্ষণে উঠে নিজের কেস ডায়রিটা নিয়ে এসে গভীর ভাবে পরতে থাকে,
আর মৃদুল কে তার কেসটা পরার জন্য তার হাতেই ডায়রিটা তুলে দেয়।
মৃদুল দমবন্ধ করা উত্তেজনায় পুরো কেসটা ঝড়ের গতিতে পরতে থাকে আর তার দৃষ্টি এসে থমকে যায় একদম শেষে যেখানে অভিযোগকারীর নাম আর সই থাকে,
মৃদুল মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয় যখন সে দেখে তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আর কেউ করেনি করেছে সোনালি সামন্ত।
মৃদুলের হাত থেকে ডায়রিটা এবার পরে যায়,
আর গত দেড় দিনের ধকল আর এই মানসিক আঘাত মৃদুল আর সহ্য করতে না পেরে সেও অজ্ঞান হয়ে থানার ঠাণ্ডা মেঝেতে পরে যায়।
মৃদুলের যখন জ্ঞ্যান ফেরে তখন সে একটা সাদা আকাশ দেখতে পায় তার মাথার ওপর,
তার মনে হয় ওই আকাশে কত শান্তি যেন লুকিয়ে অপেক্ষা করে আছে তার জন্য,
সেই দিকে তাকিয়ে মৃদুলের ইচ্ছা হয় উড়ে যেতে সেই আকাশে যেখানে কোন ক্লেদ নেই ,
নেই কোনও বিশ্বাসঘাতকতা, নেই কোনও হানাহানি।
এইবার মৃদুল দেখে সেই আকাশে রাজুর হাসি মাখা মুখ যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে,
রাজুর ওই মুখ যেন মৃদুল কে আরও আকর্ষিত করে ওই সাদা আকাশের দিকে আর মৃদুল প্রচণ্ড ভাবে চেষ্টা করতে থাকে ওই সাদা আকাশে রাজুর কাছে যাবার জন্য,
কিন্তু মৃদুল দেখে যে হাতপা যেন বাঁধা আছে তাই মৃদুলের প্রচণ্ড চেষ্টা স্বত্তেও সে কিছুতেই রাজুর কাছে যেতে পারেনা,
আর তার এই অমানুষিক পরিশ্রমে মৃদুল ঘামে জবজবে ভিজে যায়।
তখনই মৃদুল দেখে যে রাজুর মুখটা আস্তে আস্তে যেন মিলিয়ে যাচ্ছিলো ,
কিন্তু রাজু সেই হাসিমাখা মুখেই মৃদুলের দিকে তাকিয়ে ছিল একদৃষ্টিতে।
মৃদুল একবার আগেই রাজুকে হারিয়েছিল তাই এবারও যখন রাজু তার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো তখন বন্দি আর অসহায় মৃদুল একটা আর্তনাদ করে কেঁদে ধড়মড় করে উঠে বসে,
এইবার কে যেন মৃদুলের পেছন থেকে বলে উঠে
”ডাক্তার বাবু জ্ঞ্যান ফিরেছে”
দুর্বল চোখে মৃদুল তাকিয়ে দেখে যে তার পেছনে শঙ্কর চোখে মুখে চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
এইবার মৃদুলের আস্তে আস্তে সবই মনে পরে আর সে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে
” আজ কত তারিখ?”
তবে ফোন করার অনুমতি মৃদুল তখনও পায়না,
এইবার বাধ্য হয়েই মৃদুল কে তার কোনও উকিল ছাড়ায় পুলিসি জেরার সামনে পরতে হয় ,
প্রথমেই তাঁদের কে জিগ্যেস করা হয় তাঁদের এখানে আসার কারন,
জবাবে মৃদুল যখন বীরপুরের জমিদার বাড়ীর রহস্যময় ঘটনার কথা বলে তো প্রথমে ঘরে উপস্থিত সবাই চুপ করে যায়,
তারপর হটাৎই অফিসারটি হোহো করে হাসতে আরম্ভ করে দেয় আর তার সঙ্গে তাল মেলায় ঘরের বাকি সবাই হাসতে হাসতে সবাই লুটোপুটী খেতে থাকে,
শুধু মৃদুল আর শঙ্কর চুপচাপ এই রঙ্গ দেখতে থাকে ।
হাসির দমক একটু থামলে পরে এইবার অফিসার নিজেকে একটু সামলে নিয়ে ভালো মুখ করে জিজ্ঞেস করে
” তাহলে যে বাড়ীটাতে আপনারা ছিলেন সেটা জমিদার বাড়ী আর সেটা ভূতুড়ে জমিদার বাড়ী তাই তো?”
বলেই আবার হেসে ফেলে আর তার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে উপস্থিত বাকি সবাইও সেই হাসিতে যোগ দেয়।
হাসতে হাসতেই অফিসারটি বলেন
”যদি ওটা ভূতুড়ে জমিদার বাড়ী হয়, তাহলে আমাদের ফরেস্ট অফিস কোনটা?”
ফরেস্ট অফিস শুনে মৃদুল চমকে যায় কারন সে তো এতটা ভুল করবে না,
তাই এবার মৃদুল আত্মপক্ষ সমর্থনে বলে
” কিন্তু সার তাহলে কি অন্ধকারে আমাদের চিনতে ভুল হল?
কারন আমাদের কাছে যা খবর তাতে এই গ্রামটি ভূতুড়ে আর পুরো গ্রামটিই ফাঁকা পরে থেকে, আর কাল আমরা যখন এইখানে এসেছিলাম তখনও কোন লোক দেখতে পায়নি ”
মৃদুলের মুখের কথা শেষ হতে না হতেই এবার অফিসারটি বলে
” আপনি নিজেকে যতটা নিরীহ দেখাতে চাইছেন বা আমাদেরকে যতটা বোকা ভাবছেন আমরা কিন্তু ততটা বোকা নয় রিপোর্টার বাবু”
বলে আবার সংযোজন করে
” এই গ্রামটির বেসির ভাগ মানুষই আদতে ঝাড়খণ্ডের আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোক আর তাঁদের একটা প্রচলিত নিয়ম হল মাঘী পূর্ণিমার সময় তারা দুদিন রাত বাস জঙ্গলেই করে কারন তারা মনে করে যে সেই দুদিন তাঁদের ফাঁকা ঘরে ভগবান আসেন”
এই তথ্য জেনে মৃদুল যেন এইবার আর অবাক হতেও ভুলে গেছিলো ,
অফিসারের পরের কথাতে এইবার যেন মৃদুলের পায়ের তলা থেকে মাটিও সরে গেল ।
নতুন আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়ার রিঙ ছাড়তে ছাড়তে এইবার অফিসারটি বলেন
” তবে আপনি ভাববেন না আপনাদের আমরা এমনি এমনি ধরেছি, আপনাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়েই তবে আমরা ওই রাতে ফরেস্ট অফিসের দোতলা থেকে আপনাদের ধরেছি”
মৃদুলের অবাক হয়ে যাওয়া মুখটা দেখে অফিসারটির এইবার যেন মায়া হয় আর ব্যাপারটা আরও খোলসা করেই বলেন।
তিনি বলেন
” আপনারা যে কজন মিলে এখানে এসেছিলেন তাদের মধ্যই একজন আপনার বিরুদ্ধে রাজু বাবু কে খুন আর আপনার সঙ্গীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে”
মৃদুলের অবাক হওয়া তখনও যেন বাকি ছিল।
তবে পুলিশ অফিসারটির পরের কাজটা যেন মৃদুল কে বোবা করে দিল।
অফিসারটি ততক্ষণে উঠে নিজের কেস ডায়রিটা নিয়ে এসে গভীর ভাবে পরতে থাকে,
আর মৃদুল কে তার কেসটা পরার জন্য তার হাতেই ডায়রিটা তুলে দেয়।
মৃদুল দমবন্ধ করা উত্তেজনায় পুরো কেসটা ঝড়ের গতিতে পরতে থাকে আর তার দৃষ্টি এসে থমকে যায় একদম শেষে যেখানে অভিযোগকারীর নাম আর সই থাকে,
মৃদুল মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয় যখন সে দেখে তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আর কেউ করেনি করেছে সোনালি সামন্ত।
মৃদুলের হাত থেকে ডায়রিটা এবার পরে যায়,
আর গত দেড় দিনের ধকল আর এই মানসিক আঘাত মৃদুল আর সহ্য করতে না পেরে সেও অজ্ঞান হয়ে থানার ঠাণ্ডা মেঝেতে পরে যায়।
মৃদুলের যখন জ্ঞ্যান ফেরে তখন সে একটা সাদা আকাশ দেখতে পায় তার মাথার ওপর,
তার মনে হয় ওই আকাশে কত শান্তি যেন লুকিয়ে অপেক্ষা করে আছে তার জন্য,
সেই দিকে তাকিয়ে মৃদুলের ইচ্ছা হয় উড়ে যেতে সেই আকাশে যেখানে কোন ক্লেদ নেই ,
নেই কোনও বিশ্বাসঘাতকতা, নেই কোনও হানাহানি।
এইবার মৃদুল দেখে সেই আকাশে রাজুর হাসি মাখা মুখ যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে,
রাজুর ওই মুখ যেন মৃদুল কে আরও আকর্ষিত করে ওই সাদা আকাশের দিকে আর মৃদুল প্রচণ্ড ভাবে চেষ্টা করতে থাকে ওই সাদা আকাশে রাজুর কাছে যাবার জন্য,
কিন্তু মৃদুল দেখে যে হাতপা যেন বাঁধা আছে তাই মৃদুলের প্রচণ্ড চেষ্টা স্বত্তেও সে কিছুতেই রাজুর কাছে যেতে পারেনা,
আর তার এই অমানুষিক পরিশ্রমে মৃদুল ঘামে জবজবে ভিজে যায়।
তখনই মৃদুল দেখে যে রাজুর মুখটা আস্তে আস্তে যেন মিলিয়ে যাচ্ছিলো ,
কিন্তু রাজু সেই হাসিমাখা মুখেই মৃদুলের দিকে তাকিয়ে ছিল একদৃষ্টিতে।
মৃদুল একবার আগেই রাজুকে হারিয়েছিল তাই এবারও যখন রাজু তার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো তখন বন্দি আর অসহায় মৃদুল একটা আর্তনাদ করে কেঁদে ধড়মড় করে উঠে বসে,
এইবার কে যেন মৃদুলের পেছন থেকে বলে উঠে
”ডাক্তার বাবু জ্ঞ্যান ফিরেছে”
দুর্বল চোখে মৃদুল তাকিয়ে দেখে যে তার পেছনে শঙ্কর চোখে মুখে চরম উৎকণ্ঠা নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
এইবার মৃদুলের আস্তে আস্তে সবই মনে পরে আর সে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বলে
” আজ কত তারিখ?”