What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

এনেস্থিসিয়া সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য (1 Viewer)

dukhopakhi

Global Moderator
Staff member
Global Mod
Joined
Mar 3, 2018
Threads
102
Messages
11,884
Credits
110,597
Calculator
Mosque
Calculator
LittleRed Car
LittleRed Car
LittleRed Car
অপারেশনের পূর্বে একটি রোগীর যে বিষয়টি জানা অত্যাবশ্যকীয় এবং বাঞ্ছনীয়

****** Know Your Anaesthesiologist ******


এনেস্থেশিয়লজি চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অপারেশন থিয়েটার থেকে শুরু করে আই সি ইউ এর ক্রিটিক্যাল রোগী সবই এরা সামলে থাকেন। এটা কত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা সেটা মানুষ আজ করোনাকালীন সময়ে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। দেশ এবং সারা বিশ্বে এনেস্থেশিয়লজিস্ট এর কত সংকট তা আজ সবার সামনে প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে।

কিন্তু আমাদের সমাজে এনেসথেসিয়া এবং অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সম্পর্কে সাধারণ জনগণের জ্ঞানের এবং ধারণার অভাব রয়েছে। সাধারণ জনগণ এনেসথেসিয়া ও এনেস্থেশিয়লজিস্ট সম্পর্কে মোটেও সচেতন নয়। আমাদের এনেসথেসিয়া সম্পর্কে যেসব জ্ঞানের অভাব রয়েছে তা হলো নিম্নরুপঃ

১. এনেস্থেশিয়লজিস্ট কে এবং অপারেশনে তার ভূমিকা কি..... সেটার জ্ঞানের অভাব।

২. তারা জানেন না যে অপারেশনের আগে তাদেরকে একজন দক্ষ এনেস্থেশিয়লজিস্ট দাঁড়া একটি চেকআপ করাতে হয় এনেসথেসিয়ার ফিটনেস এর জন্য। সাধারণত সরকারি হাসপাতালগুলোতে এটা করা হয়ে থাকে কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সাধারণত খুব একটা চোখে পড়ে না।

৩.তারা জানেনও না যে অপারেশন থিয়েটারে তাকে যে এনেসথেসিয়া প্রয়োগ করে অচেতন করবেন সে আদৌ ডাক্তার কিনা অথবা দক্ষ এনেস্থেশিয়লজিস্ট কিনা।

৪. উনি অপারেশনের জন্য ফিট কিনা তাও জানেন না।

৫. তারা জানেন না যে অপারেশনের পূর্বে একটা রোগীকে কি কি পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়, অপারেশনের জন্য ফিট হতে হলে কি কি করতে হয়।

৬. অপারেশনটি তার জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কিনা।

৭. অপারেশনটি তার জন্য ইমার্জেন্সি কিনা অথবা কয়দিন পরে করলে চলে কিনা।

৮. অপারেশনের পূর্বে কি কি ওষুধ বন্ধ করতে হবে এবং কি কি ওষুধ অবশ্যই খেতে হবে তার জ্ঞানের অভাব।

৯. অপারেশনের পূর্বে কত ঘন্টা আগে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করতে হবে এবং অপারেশন এর পরবর্তী কতক্ষণ পরে মুখে খাওয়া যাবে তার জ্ঞানের অভাব।

১০. সর্বোপরি একটা অপারেশন চলাকালীন সময়ে রোগীর কি কি জটিলতা হতে পারে তার সম্বন্ধে পূর্ব জ্ঞানের ও প্রস্তুতির অভাব।

১১. হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সকল প্রকার সরঞ্জামাদির ব্যবস্থাপনা আছে কিনা সে সমন্ধে জ্ঞানের অভাব। এবং কোন রকম জটিলতা হলে তার পরবর্তী ব্যবস্থাপনার সুযোগ-সুবিধা আছে কিনা সেই সম্বন্ধে জ্ঞানের অভাব।

এনেসথেসিয়া মনে কি?

এনেস্থিসিয়ার বাংলা হল অবেদন। মানে হল বেদনাহীন। বাংলাদেশের সচরাচর লোকজন মনে করে থাকেন যে এনেসথেসিয়া মনে হলো মানুষকে অজ্ঞান করা। আসলে শব্দ টা কিছুটা আংশিক সত্য কিন্তু পুরোপুরি নয়। এনেসথেসিয়াটা হলো অজ্ঞানের চেয়ে আরও অনেক গভীর লেভেলে মানুষেকে চেতনাহীন এবং বেদনাহীন করা, যেখানে মানুষের কোন বোধশক্তি থাকেনা, ব্যথা-বেদনা থাকে না। যার ফলে ব্যথাহীন ভাবে একটা অপারেশন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়।

যদিও বর্তমানে এনেস্থিসিয়ার অনেক পদ্ধতিগত পরিবর্তন এসেছে। এখন সব অপারেশনে মানুষকে চেতনাহীন করা হয় না। নির্দিষ্ট কোন অঙ্গ পতঙ্গকে অবশ করে দিয়ে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়ে থাকে, যাকে আমরা রিজিওনাল এনেসথেসিয়া বলে থাকি। বর্তমানে এই পদ্ধতিটা খুবই জনপ্রিয়। এতে রোগী জ্ঞান হারায় না। রোগী জাগ্রত থাকে এবং রোগী জাগ্রত থাকা অবস্থায় তার নির্দিষ্ট অংগের ব্যথাহীন ভাবে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়।

এনেস্থেশিয়লজিস্ট কে?
এনেস্থেশিয়লজিস্ট হলেন একজন চিকিৎসক যিনি অপারেশন থিয়েটারে আপনার অপারেশনটি সুষ্ঠভাবে এবং সম্পূর্ণ ব্যথামুক্ত ভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিয়োজিত থাকেন। এছাড়াও তিনি আইসিইউতে ক্রিটিক্যাল রোগীদেরকে ম্যানেজ করে থাকেন। তাছাড়া যেকোনো ধরনের ব্যথা নিরাময়ে এনেস্থেশিয়লজিস্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।

এনেস্থেশিয়লজিস্ট এর গুরুত্ব:

** অপারেশন করার জন্য যেমন আমরা সবসময় একজন ভালো সার্জন কে খুঁজি, ঠিক তেমনি তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো একজন ভালো এনেসথেসিওলজিস্ট।

** সার্জন শুধু একটা অঙ্গ পতঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া করে কিন্তু আপনার পুরো জীবনটাই থাকে একজন আনেস্থেশিয়লজিস্ট এর হাতে।

** জীবন আপনার এবং অপারেশন চলাকালীন সময়ে তার নিরাপত্তা প্রদান করার দায়িত্ব থাকে একজন এনেস্থেশিয়লজিস্ট এর হাতে।

** অপারেশন এর এর পূর্বে আপনার অপারেশনের জন্য ফিটনেস থেকে শুরু করে অপারেশন চলাকালীন সময় এবং অপারেশন পরবর্তী জটিলতা নিরসনের সকল দায়িত্ব থাকে তার কাঁধে।

** আপনি অপারেশনের জন্য ফিট কিনা এবং অপারেশন শেষে আপনার জ্ঞান ফিরবে কি ফিরবে না সেটা সবকিছু দেখা-শোনা এবংএ নিয়ন্ত্রণ করেন একজন এনেস্থেশিয়লজিস্ট।

** এছাড়া আইসিটইউতে ক্রিটিক্যাল রোগীদের লাইফ সাপোর্ট থেকে শুরু করে সকল প্রকার চিকিৎসা এবং দেখাশোনা আনেস্থেশিয়লজিস্ট করে থাকেন।

** সার্জন যেমন দক্ষ এবং ডিগ্রিধারী হওয়া প্রয়োজন ঠিক তেমনি এনেস্থেসিওলজি দক্ষ এবং ডিগ্রিধারী হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

কেন অপারেশন এর পূর্বে এনেসথেসিয়া চেকআপ করাবেন?

১. আপনার অপারেশন করার জন্য যে এনেস্থিসিয়ার ওষুধ প্রয়োগ করা হবে তার জন্য আপনি ফিট কিনা তা যাচাই করার জন্য।

২. উক্ত অপারেশনে আপনার জীবনের ঝুঁকি কতটুকু তা আগেই জেনে নেয়া। অপারেশন করার চেয়ে যদি আপনার এনেস্থিসিয়ার ঔষধে জীবনের ঝুঁকির মাত্রা যদি বেশি থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে অপারেশন পরিহার করাই ভালো অথবা বিকল্প পদ্ধতিতে অপারেশন করা।

৩. অপারেশনে এনেসথেসিয়া ওষুধে ঝুঁকির মাত্রা অনেক বেশি থাকে। এনেসথেসিয়া তে যে ড্রাগ গুলা ব্যাবহার করা হয় তাতে রুগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ) হবার ঝুঁকি অনেক বেশি যদিনা সেইটা যথাযথভাবে এবং যথোপযুক্তভাবে আপনার শরীরে প্রয়োগ করা হয়। এনেস্থিসিয়ার জন্য আপনার শরীরে কোন ওষুধ টা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কোনটা আপনার জন্য নিরাপদ সেটা অপারেশনের পূর্বে নির্ধারণ করা।

৪. অনেক রোগীর সম্পূর্ণ অচেতন করে অপারেশন করা রুগীর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে বিকল্প কি পদ্ধতি ব্যবহার করে অপারেশন করা যেতে পারে, তা পূর্বে নির্ণয় করা।

৫. অপারেশন করার পুর্বে আপনার অপারেশনের প্রস্তুতি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা।

৬. অপারেশনের পূর্বে কি কি ওষুধ অবশ্যই খেতে হবে এবং অপারেশনের পূর্বে কি কি ওষুধ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে তা নির্ণয় এবং নির্ধারণ করা। এসকল নির্দেশনা একজন এনেস্থেসিওলজিস্ট আপনাকে প্রদান করবেন।

৭. অপারেশনের পূর্বে শরীরের ইনফেকশন, রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস নিয়ে কখনোই অপারেশন করা যাবে না। ইহা অপারেশন চলাকালীন এবং অপারেশন পরবর্তী রোগীর নানান রকম জটিলতা তৈরি করে থাকে যার জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অপারেশনের পূর্বে এগুলোকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ এবং নর্মাল লেভেল এ নিয়ে আসতে হবে।

৮. ভরা পেটে কখনোই অপারেশন থিয়েটারে যাওয়া যাবে না, তা যত ছোট অথবা বড় অপারেশন হোক না কেন। ভরা পেটে অপারেশন করলে অপারেশন চলাকালীন সময়ে বমি হয়ে সেসব খাদ্যদ্রব্য ফুসফুসে চলে গিয়ে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি অপারেশন এর ক্ষেত্রে এটা ভরাপেট কনসিডার করা যেতে পারে কিন্তু তারপরেও আনেস্থেশিয়লজিস্ট অপারেশনের পূর্বে প্রয়োজনীয় জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তারপরে অপারেশন শুরু করে থাকেন। তাই অপারেশনের পূর্বে আপনি কত ঘণ্টা না খেয়ে থাকবেন তা আপনার বয়স অনুযায়ী একজন এনেস্থেশিয়লজিস্ট আপনাকে নির্ধারণ করে দিবেন।

৯. অপারেশন-পরবর্তী আপনার কি কি জটিলতা হতে পারে এবং সেই অনুযায়ী কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা লাগতে পারে তা আগাম জেনে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ যেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে রাখতে পারে তার জন্য আপনি অবশ্যই এনেসথেসিয়া চেকআপ করাবেন।

১০. কিছু কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে অপারেশন-পরবর্তী আইসিইউ সাপোর্ট লাগতে পারে। সেই ক্ষেত্রে যেসব হসপিটালে আইসিইউ সাপোর্ট আছে সেখানে অপারেশন করানই ভালো।

সচেতনতা:

** আপনার এনেস্থেশিয়লজিস্ট কে চিনুন এবং জানুন।

** তিনি দক্ষ এবং এনেসথেসিয়া তে যথাযথ ডিগ্রিধারী কিনা তা যাচাই করে নিন। একজন ডিগ্রিধারী আনেস্থেশিয়লজিস্ট মানেই হল নিরাপদ এনেসথেসিয়া এবং একজন দক্ষ আনেস্থেশিয়লজিস্ট মানে নিরাপদ সার্জারি।

** ইমারজেন্সি অপারেশন ব্যাতীত অপারেশনের জন্য কখনোই তাড়াহুড়া করবেন না।

** রুটিন অপারেশন সময় নিয়ে ভালো করে চেকআপ করে তারপরে অপারেশনটি করুন।

** অপারেশনের পূর্বে আপনি অপারেশনের এবং এনেস্থেসিয়ার জন্য ফিট কিনা তা পরীক্ষা করে এবং একজন এনেস্থেসিওলজিস্ট দ্বারা যথা যথ চেকআপ করে তারপরে অপারেশনের প্রস্তুতি নেই। ফিটনেস চেক আপ ছাড়া কখনই অপারেশনের যাওয়া উচিত না। এটা আপনার জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

** অপারেশন এর পূর্বে একজন পূর্ণ বয়স্ক রোগীকে অবশ্যই ৮ ঘণ্টা খালি পেটে থাকতে হবে। ভরা পেটে কখনোই অপারেশন করতে যাবেন না, যত ছোট অপারেশনই হোক না কেন। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অবশ্য ২-৪ ঘণ্টা খালি পেটে থাকতে হয়, যা বয়স বেধে একজন এনেস্থেশিয়লজিস্ট আপনাকে নির্ধারণ করে দিবেন।

** কিছু কিছু ওষুধ অপারেশনের পূর্বে বন্ধ রাখতে হয় এবং কিছু কিছু ওষুধ অপারেশনের সময় অবশ্যই খেয়ে আসতে হয়। এইগুলোর গাইডলাইন আপনাকে একজন আনেস্থেশিয়লজিস্ট অপারেশনের পূর্বে দিয়ে দেবেন।

** অপারেশন অবশ্যই ভালো মানের কোন হসপিটালে করাবেন। যেখানে-সেখানে অপারেশন করাতে গিয়ে অথবা সস্তা মানের প্যাকেজের খপ্পরে পড়ে নিজের জীবনকে বিপন্ন করবেন না।

** তাই অপারেশনের পূর্বে অবশ্যই একজন দক্ষ আনেস্থেশিয়লজিস্ট দ্বারা চেকআপ করে তারপরে আপনার অপারেশনটি করুন। জীবন আপনার এবং তার নিরাপত্তার দায়িত্বও আপনার। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলবেন না।

তাই সর্বশেষ বলব:

*****"অচেতন হওয়ার আগে সচেতন হোন"*****

Dr Khalid Nur Md Mahbub
MBBS, DA, FCPS ( Anaesthesiology)
 
অনেক ভালো পোস্ট।নতুন অনেক কিছু জানতে পারলাম অ্যানেসথেসিয়া সম্মন্ধে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top