What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ডেনিম জিন্সের উৎপত্তি (1 Viewer)

ছোটভাই

Super Moderator
Staff member
Super Mod
Joined
Mar 4, 2018
Threads
775
Messages
51,102
Credits
371,053
Sunflower
T-Shirt
Sari
Sari
Thermometer
Tomato
38.jpg
আধুনিক সভ্যতার অন্যতম উপাদান হিসেবে আমাদের পোশাক-পরিচ্ছদ সবসময়ই অনন্যতার দাবিদার। কারণ মানুষ আদিম বৈশিষ্ট্য থেকে সভ্য হলো মূলত তখনই, যখন থেকে তারা পোশাক পরিধান করা শুরু করলো। আমাদের মৌলিক চাহিদার মধ্যে দ্বিতীয়টি আমাদের পরিধেয় বস্ত্র। কাজেই পোশাকের অবদানকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

আধুনিক সভ্য সমাজে আবার এই পোশাকই মানুষের রুচিবোধ এবং আভিজাত্যের নির্দেশক হিসেবেও চিহ্নিত হয়ে থাকে। বর্তমান সমাজের মানুষ খুবই ফ্যাশন সচেতন হয়ে উঠেছে। আর এই ফ্যাশন গার্মেন্টেসের যুগে ডেনিম বা জিন্স তৈরি করে নিয়েছে বিশাল এক জায়গা। কিন্তু ডেনিম ফেব্রিকেরও আছে জন্ম ইতিহাস। এখন যেমন জিন্স অভিজাত মানুষের কিংবা তরুণ সমাজের কাছে একটি অন্যরকম পছন্দের জায়গা তৈরি করে নিয়েছে, এর জন্ম কিন্তু সে উদ্দেশ্যেও হয়নি। এই লেখায় আমরা ডেনিম বা জিন্স-এর উৎপত্তির ইতিহাস নিয়েই জানবো।
 
39.jpg

হাল আমলের ফ্যাশনে জিন্সের গুরুত্ব অপরিহার্য

১৯৬৯ সালে 'আমেরিকান ফেব্রিকস' নামক ম্যাগাজিনের একজন রিপোর্টার লিখেছিলেন যে, "পৃথিবীর আদি ফেব্রিক বা কাপড়সমূহের মধ্যে ডেনিম অন্যতম হলেও এর যৌবন চিরন্তন।" কথাটি মোটেও মিথ্যা কিছু নয়। কারণ সেই সতেরো শতক থেকে এখন পর্যন্ত ডেনিমের চাহিদা না কমে বরং বেড়েছে দিন কে দিন।

এখনকার অধিকাংশ মানুষের কাছেই ডেনিমের গুরুত্ব, বিশেষ করে জিন্স প্যান্টের গুরুত্ব অধিক। হাল আমলের ফ্যাশন জিন্স ব্যতিরেকে কল্পনা করাটা একটু কঠিন। বিশেষ করে ছাত্র ও তরুণ সমাজ তাদের প্রতিদিনকার জীবনযাত্রা পাঁচ পকেট ও তামার রিভেট বিশিষ্ট জিন্সের প্যান্ট ছাড়া কল্পনা করতে পারে না। গতানুগতিক জিন্সের গঠনের বাইরেও আধুনিক জিন্স গার্মেন্টসে এসেছে নানান বৈচিত্র্য। এর মধ্যে আছে যেমন স্লিটিং ইফেক্ট, ফেডিং ইফেক্ট কিংবা লেজার এনগ্রেভিং ইত্যাদি।
 
40.jpg

জিন্সে ফেডিং ও স্লিটিং ইফেক্ট

প্রথমেই ডেনিম এবং জিন্সের ভেতরকার পার্থক্যটুকু পরিষ্কার করা দরকার। ডেনিম বলতে মূলত বোঝানো হয় গার্মেন্টস তৈরির মূল ফেব্রিককে, যা থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শার্ট-প্যান্ট বা পরিধানযোগ্য অন্যান্য পোশাক তৈরি করা হয়। সচরাচর আমরা যে বয়ন করা শার্ট-প্যান্ট পরে থাকি, ডেনিমের গঠন এর থেকে খানিকটা আলাদা। এই গঠনকে বলা হয় টুইল বুনন (Twill Weave)। এই ধরনের বুননের ফলে ফেব্রিকে কোনাকুনি লাইনের মতো দেখা যায়। ডেনিম ফেব্রিক তৈরি করা হয় মূলত ১০০% কটন থেকে। এরপর সেটি চলে যায় গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রিতে এবং এই ফেব্রিক থেকে তৈরি করা হয় শার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেট, স্যুট, ব্যাগ ইত্যাদি। একই ধরনের গঠন দেখা যায় গাবার্ডিনের ক্ষেত্রে। যদিও এদের মধ্যে কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।
 
41.jpg

ডেনিম ফেব্রিকে টুইল বুননের ফলে গঠিত কোনাকুনি লাইন

ফেব্রিক বা কাপড় বুননের ক্ষেত্রে সাধারণত দু ধরনের সুতা ব্যবহার করা হয়। কাপড়ের দৈর্ঘ্য বরাবর সুতাকে বলা হয় ওয়ার্প সুতা এবং আড়াআড়ি সুতাকে বলা হয় ওয়েফট সুতা। ওয়েফট সুতা ওয়ার্প সুতার উপর নিচ দিয়ে প্রবেশ করানোর ফলেই কাপড় তৈরি হয়। সাধারণ ফেব্রিকের ক্ষেত্রে একটা বাদে একটা ওয়ার্প সুতার উপর দিয়ে বা নিচ দিয়ে প্রথম ওয়েফট সুতা প্রবেশ করানো হয়। পরবর্তী ওয়েফট সুতা প্রবেশ করানো হয় বিপরীতভাবে। কিন্তু ডেনিমের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ওয়ার্প সুতার উপর দিয়ে বা নিচ দিয়ে একটি ওয়েফট সুতা প্রবেশ করানো হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, ডেনিমের ক্ষেত্রে কেবল ওয়ার্প সুতাই রঙিন সুতা, কিন্তু ওয়েফট সুতা সাদাই থাকে। এই কারণেই ডেনিমের সামনের অংশ রঙিন হলেও পেছনের অংশ সাদা।
 
42.jpg

সার্জ ফেব্রিক এবং সার্জ ডি নিমস ফেব্রিক

অন্যদিকে সচরাচর জিন্স বলতে মূলত ডেনিম থেকে তৈরী ট্রাউজার বা প্যান্টকেই বোঝানো হয়। অর্থাৎ বলতে গেলে ডেনিম যদি হয় আলু, তাহলে জিন্স হবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই! ডেনিম হচ্ছে কাঁচামাল, জিন্স হচ্ছে এর পরিণত অবস্থা। সেই সুবাদে বলা যায়, সকল জিন্সই ডেনিম, কিন্তু সকল ডেনিম জিন্স নয়। কারণ আগেই বলা হয়েছে যে, ডেনিম ফেব্রিক দিয়ে কেবল প্যান্টই তৈরি করা হয় না।

ডেনিমের উৎপত্তি বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে গবেষকরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের মতামত প্রকাশ করেছেন। ডেনিম বা জিন্স আজকের সভ্যতা ও ফ্যাশনে অন্যরকম আবেদন তৈরি করতে পারলেও এর উৎপত্তিকে বলা হয়ে থাকে ১৭শ শতকের দুর্ঘটিত আবিষ্কার। সেসময়ে ইতালিতে বিশেষ একপ্রকার শক্তিশালী ফেব্রিক উৎপাদিত হতো। এই বিশেষ ফেব্রিকের নাম ছিল সার্জ। তো সেই সময়ে দক্ষিণ ফ্রান্সের নিমস (Nimes) অঞ্চলের অধিবাসীরা এই ইতালিয়ান ফেব্রিকের অনুকরণে ফেব্রিক তৈরি করতে গিয়েই তৈরি হয়ে যায় ডেনিম ফেব্রিক। তারা এর নাম দেয় ‘সার্জ ডি নিমস’ (Serge De Nimes), অর্থাৎ নিমস শহরের সার্জ ফেব্রিক। এই নামের ইংরেজি অপভ্রংশই, শুধু ডি আর নিমস মিলে হয়ে যায় ডেনিম।

জিন্স (Jeans) নামের উৎপত্তি অনুসন্ধান করে জানা যায় যে, এই নাম এসেছে ইতালির সমুদ্র বন্দর জেনোয়ার নাবিকদের থেকে। জেনোয়ার এই নাবিকদের বলা হতো জিন (অর্থাৎ, Genes) বা দৈত্য। পরবর্তীতে এই জিন এর বহুবাচক শব্দ হিসেবে নাম হয়ে গেছে জিন্স। আবার অন্যান্য গবেষকদের মতানুসারে জানা যায়, ফ্রান্সের এই ডেনিম ফেব্রিকের গঠন অর্থাৎ টুইল গঠনকে বলা হয় ‘জিন ফুস্টিয়াঁ’ (Jean fustian)। এভাবেই এসেছে জিন্সের নামকরণ।
 
43.jpg

জিন বা দৈত্য নামে খ্যাত জেনোয়ার নাবিকেরা; পরনে জিন্স

যা-ই হোক, আধুনিক জিন্স বা ডেনিমের সূত্রপাত হয়েছে মোটামুটি ১৮৫৩ সাল থেকে। লেভি স্ট্রস নামক একজন বাভারিয়ান অভিবাসী ১৮৫৩ সালে ডেনিমকে আমেরিকায় পরিচিত করান। এইসময়ে তিনি ছিলেন মূলত সান ফ্রান্সিস্কোতে। তখন এখানে ছিলো গোল্ড রাশ (Gold Rush) এর সুসময়। এখানে উল্লেখ্য যে, গোল্ড রাশ এর সূত্রপাত হয়েছিলো ১৮৪৮ সালের প্রথম দিকে এবং প্রায় ১৮৫৫ সাল পর্যন্ত এটি টিকে ছিলো। ক্যালিফোর্নিয়ার কোলোমা অঞ্চলে, বিশেষ করে সাক্রামেন্টো উপত্যকায় সোনার খনি আবিষ্কৃত হওয়ার এই ঘটনাটিই ছিলো গোল্ড রাশ। এই সোনার খনি আবিষ্কারের ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার কারণে আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশ থেকে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ পাড়ি জমিয়েছিলো ক্যালিফোর্নিয়ার এই অঞ্চলে।

লেভি স্ট্রস (বা লোয়েব স্ট্রস) ছিলেন বাভারিয়ার অধিবাসী। ১৯৪৮ সালে তিনি জার্মানি থেকে পাড়ি জমান নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে। সেখানে তার এক ভাইয়ের পাইকারী পণ্যের ব্যবসা ছিলো, বিশেষ করে পোশাকের বল্টু, লিনেন কাপড়, শার্টের লাইনিং কাপড়, বোতাম ইত্যাদি। স্ট্রস কয়েক বছর তার ভাইয়ের সাথে ব্যবসা করেন। পরবর্তীতে গোল্ড রাশের সময়ে তিনি চলে আসেন সান ফ্রান্সিস্কোতে। কিন্তু এখানে তিনি তার ভাইয়ের মতো ওসব পণ্যের পাইকারী ব্যবসা করে সুবিধা করতে পারেননি। তার উপর তার দোকানটি ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ফলে লেভি স্ট্রস পড়েন দুর্বিপাকে। কিন্তু এই দুর্ঘটনাই এক প্রকার আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছিলো যার কারণে আমরা আজ জিন্স প্যান্ট পরতে পারছি।
 
44.jpg

লেভি স্ট্রস এন্ড কোম্পানির জিন্সের বিজ্ঞাপন

লোকমুখে বিস্তৃত আছে যে, দূর্ঘটনার পর কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়া লেভি স্ট্রস আবিষ্কার করেন যে, সেখানকার সোনার খনি শ্রমিকদের জন্য শক্ত ও শক্তিশালী প্যান্টের খুবই প্রয়োজন। নতুবা তাদের পরনের সাধারণ প্যান্টগুলো কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ছিড়ে ফুটিফাটা হয়ে যাচ্ছে। তিনি তার গুদাম থেকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে আনা শক্ত বাদামী বর্ণের কাপড় বের করলেন এবং সেটি দিয়ে তৈরি করে ফেললেন এ প্যান্ট। এই কাজে তার সাথে ছিলো জ্যাকব ডেভিস নামক একজন দর্জি। পরবর্তীতে লেভি ডেনিম কাপড়ে নীল রঙ দিয়ে ডাই করলেন এবং এই নীলরঙা কাপড় থেকে তৈরি হতে লাগলো খনি শ্রমিকদের প্যান্ট। ব্লু জিন্সের উৎপত্তি মূলত এখান থেকেই।

আরো কথিত আছে যে, একদিন কোনো এক খনি শ্রমিকের স্ত্রী এসে ডেভিসকে বলেন যে, প্যান্টগুলো এমনভাবে তৈরি করা যায় কিনা, যাতে করে এটি ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এই বিষয়টি নিয়ে স্ট্রস এবং ডেভিস- দুজনেই খুব চিন্তাভাবনা করলেন। পরবর্তীতে তারা শ্রমিকদের জিন্স প্যান্টের সাথে তামার রিভেট লাগিয়ে দিতে শুরু করলেন। এই রিভেটগুলো প্যান্টের সেইসব স্থানে লাগানো হতো যেখানে প্যান্টের সাথে অন্যান্য জিনিসের, যেমন খনির দেয়াল বা পাথরের সাথে ঘর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে করে প্যান্টের জীবনকাল আরো বৃদ্ধি পেলো।
 
45.jpg

জিন্স পরিহিত দুইজন খনি শ্রমিক

তো কথিত কথার উপর কতটা বিশ্বাস করা যায়, এ ব্যাপারে বিতর্ক না করাই ভালো। কিন্তু পরর্তীতে গবেষণায় জানা যায় যে, লেভি স্ট্রস সান ফ্রান্সিস্কোতে এসে তার ড্রাই গুডসের ব্যবসা শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি এরই মধ্যে নামও করে ফেলেন। সেসময়ে জ্যাকব ডেভিস খনি শ্রমিকদের জন্য ধাতব রিভেটযুক্ত প্যান্ট তৈরি করতেন। ডেভিস আবার ডেনিম কাপড় কিনতেন স্ট্রসের কাছ থেকে। যখন ডেভিস তার এই রিভেটযুক্ত বস্ত্রের পেটেন্ট করতে চাইলেন তখন ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে আরেকজনের নাম চাওয়া হলো। অর্থাৎ, পেটেন্ট পেতে গেলে দুজনের নাম লাগবে। ডেভিস প্রথম চোটেই স্ট্রসকে চিঠি লিখলেন। এরপর থেকে দুজন পার্টনার হিসেবে শ্রমিকদের জন্য ধাতব রিভেটযুক্ত পোশাক তৈরি ও বিক্রয় করতে শুরু করলেন। খুব অল্প সময়ে তারা দারুণ সফলও হলেন। গবেষকরা এই ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন যে লেভি স্ট্রস ডেনিমে নীল রঙ করেননি অবশ্যই।
 
46.jpg

লেভি স্ট্রস এবং জ্যাকব ডেভিস

এখনকার ফ্যাশন ও আভিজাত্যের অন্যতম উপকরণ জিন্স প্যান্টের আবিষ্কার হয়েছিলো মূলত খনি শ্রমিকদের জন্যেই। ব্যাপারটা মজারই বটে। কারণ খনি শ্রমিকদের জন্যে তৈরি হলেও বর্তমান সময়ে আধুনিক মানুষের রুচির একটি বিশেষ বাহন হিসেবে জিন্সের নাম না বললেই নয়। কেবল জিন্স প্যান্টই নয়, জ্যাকেট, স্যুট কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রেও ডেনিমের ব্যবহার এখন ভালোভাবেই হচ্ছে।

তো সেসময়ে খনি শ্রমিকদের জন্য এই প্যান্ট তৈরি করা হলেও আস্তে আস্তে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সেসময়ে পোলো খেলোয়ারেরাও তাদের প্যান্ট নিয়ে খুবই শঙ্কিত ছিলেন। কারণ ঘোড়ার পিঠে বসে খেলার সময়ে তাদের প্যান্টটি ফেঁসে যাওয়ার প্রবণতা ছিলো অধিক। মানুষ নিশ্চই তার ফেটে যাওয়া প্যান্টটি পরে সবার সামনে খেলতে রাজি হবে না! কাজেই এখানেও আস্তে আস্তে জিন্স প্যান্টের ব্যবহার শুরু হলো। কারণ জিন্স প্যান্ট অন্যান্য প্যান্টের তুলনায় ছিলো শক্তিশালী। এমনকি এখনকার পোলো খেলোয়ারেরাও জিন্স প্যান্ট পরে খেলে থাকেন। উল্লেখ্য যে, পোলো খেলা অনেকটা হকি খেলার মতো, তবে এই খেলা ঘোড়ার পিঠে বসে খেলতে হয়। খেলোয়াড়েরা অনুশীলনের সময়ে পরে ব্লু জিন্স, কিন্তু খেলার সময়ে পরে হোয়াইট জিন্স।
 
47.jpg

পোলো খেলার দৃশ্য। খেলোয়ারেরা সাদা জিন্স পরে খেলছেন

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, ক্যালিফোর্নিয়ার সোনার খনি থেকে আধুনিক সমাজের অভিজাত শ্রেণির মধ্যে জিন্সের অনুপ্রবেশ কীভাবে ঘটলো? ডেনিমের পোশাকগুলোকে একসময় মনে করা হতো শ্রমিক শ্রেণির পোশাক হিসেবে, যারা সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে জীবিকা অর্জন করে। কাজেই জিন্স পরা মানুষদের একরকম শ্রমিকই ধরে নেয়া হতো। এর প্রমাণও পাওয়া যায় অনেক। প্রখ্যাত গায়ক বিং ক্রসবি লেভি স্ট্রস এর তৈরী করা জিন্সের (বর্তমানে লেভি’স জিন্স) প্রতি বিশেষভাবে অনুরক্ত ছিলেন এবং তিনি প্রায়ই এই জিন্স পরতেন। একবার তিনি কানাডায় শিকার করতে গেলেন জিন্স পরে। তিনি যখন ভ্যাঙ্কুভার হোটেলে রুম নিতে চাইলেন, তখন তাকে শ্রমিক মনে করে হোটেল ম্যানেজার কোন রুমই দিলেন না। যদিও পরবর্তীতে তার পরিচয় পেয়ে হোটেলের লোকজন আপ্যায়নও করেছিলো, রুমও দিয়েছিলো।

অভিজাত সমাজে জিন্সের অনুপ্রবেশ ঘটার নেপথ্যে কাহিনী ছিলো জেমস ডিনের মুভি ‘Rebel Without a Cause’। ১৯৫৫ সালের এই মুভিতে তিনি পরেছিলেন টি-শার্ট, লেদার জ্যাকেট এবং ব্লু জিন্স। এই নির্দিষ্ট পোশাকই পরবর্তীতে তরুণ সমাজের কাছে ইউনিফর্মের মত হয়ে গিয়েছিলো। অর্থাৎ, মোটামুটি সকলেই জেমস ডিনের এই ফ্যাশনের অনুকরণ করতে চেষ্টা করতো।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top