পেট ভরে ভাত খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দিয়ে একদম বিকালে উঠলো কালু মোল্লা। বাদলের মেয়েকে দেখে খুব খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলেন উনি। সুলেখার খুব অস্বস্তি হচ্ছিলো, এমন অপরিচিত একজন লোক ওকে এভাবে ছোট খুকি মনে করে জরিয়ে ধরাতে। ওর বাড়ন্ত শরীরের কোন মেয়েকে জরিয়ে ধরা যে ঠিক না, উনাকে কে বুঝাবে কিন্তু মা এর ভয়ে কিছু বললো না সে। নিজের পড়ার টেবিলে বসে পড়তে লাগলো, কালু মোল্লা যেই রুমে আছে, সেই রুমে। কালু মোল্লা বার বার সুলেখার দিকে তাকাচ্ছিলেন, সেই দৃষ্টিতে স্নেহের চেয়ে বাড়ন্ত কচি মেয়েদের দিকে মানুষ যেমন লোভী চোখে তাকায়, এটা তেমনই দৃষ্টি। বাদলের মেয়েটা যে এমন বড় আর ডাঙ্গর হয়ে উঠেছে, সেটা উনি ভাবেন নি, বুক দুটি যেন ঠেলে উঠে বড় বড় দুটি পেয়ারা সাইজের হয়ে কাপড়ের উপর দিয়ে ভীষণ খাড়া আর উচু হয়ে আছে, সেটা দেখে কালু মোল্লার বাড়ায় এই প্রথম মোচড় দিয়ে উঠলো। বাদলের বউটা ও খুব সুন্দর আর শরীরে রসে ভরা গতর, কিন্তু ওর মেয়েটা যেন একদম পরীর মতন। বাড়ন্ত ডাঙ্গর, বুকের বল দুটা ফুলে ফেপে বড় পেয়ারা আকার ধারন করে কাপড়ের উপর দিয়ে যেন সুচের মত চোখা হয়ে আছে। ফর্সা তকতকে গায়ের রঙ, মাথা ভর্তি কালো ঘন চুল, আর চোখ দুটি এমন মায়া কাড়া। কালু মোল্লা একটু পড়ালেখার খোঁজ নিলেন সুলেখার। এর পড়ে একটু বাইরে ঘুরে আসি বলে বেরিয়ে গেলেন, ঘর থেকে। নন্দিনী উনাকে বেশিদুর যেতে বারন করলেন, কারন হয়ত পথ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
কালু মোল্লা বেশিদুর গেলো না, ওদের বাসার কাছের মোড়ের দোকানে বসে চা খেতে খেতে চারপাশটা জরিপ করে নিচ্ছিলেন, আর মাঝে মাঝে দোকানদারের সাথে টুকটাক কথায় শহরের হাবভাব বুঝার চেষ্টা করছিলেন। মনের মধ্যে খুশির বন্যা, এতগুলি টাকা যদি ছেলে আর মেয়ের কান বাঁচিয়ে নিজে ভোগ করতে পারেন, তাহলে এই শহরে উনার বাকি জীবনটা বেশ হিল্লের সাথেই কেটে যাবে। তবে সুলেখাকে দেখার পর থেকে বেশ কিছুদিনের চাপা পড়া মেয়ে মানুষ ভোগের ইচ্ছা যেভাবে লুঙ্গির নিচের যন্ত্রটার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে, তাতে সামনের জীবনে আরাম আয়েসের ভিতরে মেয়ে মানুষ ভোগ করার কথাটাকে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন কালু মোল্লা।
রাতে খাবার পর কালু মোল্লা নিজের বিছানায় বসে আয়েস করছিলেন, এমন সময় বাদল আর নন্দিনী ঠিক করলো যে এখনই উপযুক্ত সময় চাচার সাথে কথা বলে ওদের টাকার কথাটা উঠানো। দুজনেই গিয়ে কালু মোল্লার এক পাশে বসলো।
"চাচাজি, আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো..."-বাদল আস্তে করে বললো।
"বল বাদল বল..."-কালু মোল্লা আগ্রহ নিয়ে শুনতে চাইলেন।
বাদল ওর অফিসের চাকরি হারানো থেকে শুরু করে লোন নেয়া, লোনের টাকা শোধ দেয়ার কথা সব সবিস্তারে বর্ণনা করলো। কালু মোল্লা অবাক হয়ে শুনছিলেন, একজনকে টাকা চুরি না করলে ও টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এমন হেনস্থা করা যায়, জানা ছিলো না তার।
"বলিস কি বাদল! এই শালারা তো মানুষ না, তোরে এভাবে ফাসিয়ে দিলো...আল্লাহর গুজব পড়বো শালাগো উপর...কান্দিস না...একটা না একটা উপায় হবে...তুই নতুন চাকরীর চেষ্টা কর, এতো লেখাপড়া করলি, একটা ভালো চাকরী নিশ্চয় তুই পেয়ে যাবি..."-কালু মোল্লা ভাতিজাকে আশ্বাস দিলো।
"চাচা, সে তো ওদের যা হয় হবে, কিন্তু আমার যে খুব কঠিন সময় যাচ্ছে...এই মাসের মধ্যে ওদের টাকা শোধ করতে হবে, আর ২ মাস ধরে বাড়ির ভাড়া ও শোধ করতে পারি নাই, মেয়ের স্কুলের খরচ, সামনে ওর ফাইনাল পরীক্ষা, পরীক্ষার ফরম ফিলাপে অনেক টাকার দরকার...রোজ ঘরের বাজার করছি বিভিন্ন লোকের কাছে টাকা ধার করে করে...এমনকি আজ সকালে আপনি আসবেন বলে ও একজনের কাছ থেকে ধার করে বাজার করেছি...এদিকে আমি চাকরীর চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না...এখন আপনিই উপায় চাচাজি...আপনি আমাদের বাচান, না হলে আমরা পথে বসবো..."-বাদল এক হাতে চাচার কালো খসখসে হাতটা চেপে ধরে কান্না কণ্ঠে বললো।
"সে তো সমস্যা বুঝতেছি...কিন্তু আমার কাছে কি সাহায্য চাস, সেটা বল..."-কালু মোল্লা মোদ্দা কথায় আসলেন।
"আপনি আমার অফিসের এই দেনা থেকে আমাকে মুক্ত করেন...ওদের ২ লাখ টাকা দিতে হবে আর আমাকে কিছু টাকা দেন আমার সংসার টাকে আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে, এদিকে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি একটা চাকরীর জন্যে, হয়ে গেলেই, আমি আবার নিজের পায়ে দাড়িয়ে যাবো...আপনি ততদিন পর্যন্ত আমাদের একটু আর্থিক সাহায্য করেন...এখন আপনি ছাড়া আমার তো আর আপনজন বলতে কেউ নেই...বাবা মা দুজনেই মারা গেছেন, সে তো আপনি জানেনই...এখন তাই আপনিই ভরসা...না হলে আমাদের পথে বসতে হবে..."-বাদল কান্না করতে করতে বললো।
"আরে ব্যাটা!...কি মেয়ে মানুষের মত কাঁদছিস...এই বউমা, তুমি ওকে থামাও তো...আরে আমি আছি না, আমি যখন ফাউ ফুয়া এতগুলি টাকা পেয়েই যাচ্ছি, তাহলে তুই চিন্তা করিস না, আমি আছি, আমি দেখবো, তোর সব সমস্যা...তুই আমার আপন মায়ের পেটের ভাইয়ের ছেলে, তোকে বউমাকে, তোর দুটি ছেলে মেয়েকে কি আমি পথে বসিয়ে দিতে পারি...চিন্তা করিস না, আমি দেখবো তোদের..."-কালু মোল্লা মাথায় হাত দিয়ে সান্তনা দিলেন বাদলকে, আর সাথে দিলেন এক বিশাল আশ্বাস, যেই আশ্বাসের ফলে বাদল এই সাময়িক দুরাবস্থা থেকে উঠে দাড়াতে পারে।
"চাচাজি, আপনি আমাদের এই উপকারটা করেন, নাহলে সত্যিই আমাদের আর কোন পথ খোলা নেই...আমরা আপনার এই উপকার কোনদিন ভুলবো না চাচাজি..."-নন্দিনী ও স্বামীর সাথেই সুর মিলিয়ে সাহায্য চাইলো।
"আহা, বউমা, এক কথা বার বার বলতে হবে নাকি, আমি তো আছি, আমি দেখবো তোর সমস্যায়, একবার তো বললামই...তবে বাদল শুন...আমি কিন্তু কিছুদিন শহরে থাকতে চাই, মানে দরকার পড়লে তোদের এই রুমের ভাড়া দিবো আমি...শহরে তো তোরা ছাড়া আআম্র ও আপন কেউই নেই আর বাড়িতে কেউ তো নেই আমার আপনজন... তাই তোদের সঙ্গেই কিছুদিন কাটাতে চাই...তোদের যদি আপত্তি না থাকে..."-কালু মোল্লা নিজের ও শহরে থাকার কথাটা এই ফাকে পেরে নিলেন।
"কি বলছেন চাচাযান, আপনি আমার বাবার মতো, গুরুজন, আপনি যতদিন ইচ্ছা থাকেন, কোন ভাড়া দিতে হবে না...আমাকে নিজের ছেলে আর নন্দিনীকে নিজের ছেলের বউ ভেবেই থাকেন...আমাদের ও ভালো লাগবে আপনি সব সময় আমাদের সাথে থাকলে..."-বাদল খুশির আতিশয্যে বলে ফেললো।
"না মানে, কিছুদিন মানে, বেশ কিছু মাস...ভালো লাগলে, হয়ত বছর ও থাকতে পারি..."-কালু মোল্লা বুঝিয়ে বললেন।
"আহা, চাচাজি, সে বুঝেছি, আপনি বুঝাতে হবে না, আপনার যতদিন ইচ্ছা থাকেন। তবে কি চাচাজি...আমাদের তো মাত্র দুটা রুম, মেয়েটা বড় হচ্ছে, আপনার থাকতে হয়ত একটু কষ্ট হবে, তেমন আরাম আয়েস হয়ত দিতে পারবো না আপনাকে..."-বাদল বিনয়ের সাথে বললো।
"সে আমি মানিয়ে নিবো, তুই চিন্তা করিস না, কাল সকালে চল আমার সাথে লটারির অফিসে, তারপর দেখি কি আছে কপালে..."-কালু মোল্লা বললো। বাদল আর নন্দিনী হাসিমুখে ফিরলো কালু মল্লার সাথে কথা বলে।