What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বিদ‘আত ও তার পরিণতি (৮ম পর্ব) (2 Viewers)


চতুর্থ দলীল :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا-
‘আল্লাহ নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা কর এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও’
(আহযাব ৩৩/৫৬)

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা ও তাঁর প্রতি সালাম জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আর এই উদ্দেশ্যেই ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপিত হয়।

জবাব :
সম্মানিত পাঠক! রাসূল (ছাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠের ফযীলত অনেক বেশী। যেমন তিনি বলেন, مَنْ صَلَّى عَلَىَّ وَاحِدَةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا ‘যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করে, এর প্রতিদানে আল্লাহ তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন’। (মুসলিম হা/৪০৮; মিশকাত হা/৯২১।)

অতএব মানুষ বেশী বেশী রাসূল (ছাঃ)-এর উপর দরূদ পাঠ করবে। ছাহাবায়ে কেরাম রাসূল (ছাঃ)-কে সবচেয়ে বেশী ভালবাসতেন। তাঁরা আমাদের চেয়ে অনেক গুণে বেশী দরূদ পাঠ করতেন। কিন্তু তাঁরা কি কখনো কোন দিনকে নির্দিষ্ট করে আনুষ্ঠানিকভাবে দরূদ পাঠ করেছেন? করেছেন কি কোন দরূদ পাঠের মিছিল? তাহ’লে আমাদের এ কেমন নবী প্রেম যে, প্রতিনিয়ত দরূদ পাঠের পরিবর্তে বছরের একটি দিনকে বেছে নিলাম দরূপ পাঠের জন্য? আনুষ্ঠানিকতার নাম নবী প্রেম নয়; বরং একান্ত আন্তরিকতার সাথে তাঁর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের নাম নবী প্রেম। তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করার নাম নবী প্রেম নয়; বরং তাঁর মর্যাদার স্থানে তাঁকে রাখাই নবী প্রেম। নিজের মন মত দ্বীন পালনের নাম নবী প্রেম নয়; বরং তাঁর আনীত দ্বীনকে সামান্যতম পরিবর্তন ছাড়াই পালনের নাম নবী প্রেম।
 

পঞ্চম দলীল :
সারা দুনিয়ার অধিকাংশ মুসলমানের নিকট ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ উত্তম বলে বিবেচিত। আর আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,
مَا رَأَى الْمُسْلِمُوْنَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللهِ حَسَنٌ، وَمَا رَآهُ الْمُسْلِمُوْنَ سَيِّئًا فَهُوَ عِنْدَ اللهِ سَيِّءٌ-
‘মুসলমানদের দৃষ্টিতে যা উত্তম আল্লাহর দৃষ্টিতেও তা উত্তম। আর মুসলমানদের দৃষ্টিতে যা নিকৃষ্ট আল্লাহর দৃষ্টিতেও তা নিকৃষ্ট’। (মুসনাদে আহমাদ হা/৩৬০০; সিলসিলা যঈফা হা/৫৩৩।)

জবাব :
প্রথমতঃ উল্লিখিত আছারটি মারফূ‘ সূত্রে ছহীহ না হওয়ায় দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। ইবনুল জাওযী (রহঃ) বলেন,
تفرد به النخعي، قال أحمد بن حنبل كان يضع الحديث، وهذا الحديث إنما يعرف من كلام بن مسعود-
‘এই হাদীছটি নাখ‘ঈ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন, তিনি (নাখঈ) হাদীছ জাল করতেন। আর এই হাদীছটি ইবনু মাসউদের বক্তব্য হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে’।
(আবু উসামাহ্ সালীম বিন ঈদ আল-হিলালী আস-সালাফী, আল-বিদ‘আতু ওয়া আছারুহুস সায়্যি ফিল উম্মাহ্, পৃঃ ৬০।) ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বলেন,
إن هذا ليس من كلام رسول الله وإنما يضيفه إلى كلامه من لا علم له بالحديث وإنما هو ثابت عن ابن مسعود من قوله-

‘এটা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কথা নয়। হাদীছ সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিরাই এটাকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সাথে সম্পৃক্ত করেছে। বরং এটা ইবনু মাসউদ (রাঃ)-এর উক্তি হিসাবে প্রমাণিত’। (ইবনুল ক্বাইয়িম, আল-ফুরূসিয়্যাহ, পৃঃ ৬১।)
 

আল্লামা নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) বলেন,

لا أصل له مرفوعا، وإنما ورد موقوفا على ابن مسعود-
‘মারফূ‘ সূত্রে এর কোন ভিত্তি নেই। বরং এটা ইবনু মাসউদ (রাঃ) হ’তে ‘মাওকূফ’ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে’।
(সিলসিলা যঈফা হা/৫৩৩-এর আলোচনা দ্রঃ।)

দ্বিতীয়তঃ আছারটি কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পরিপন্থী। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا-
‘রাসূল যা তোমাদের দেন তা তোমরা গ্রহণ কর আর যা হ’তে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা হ’তে বিরত থাক’ (হাশর ৫৯/৭)। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ- ‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করল যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত’।
(মুসলিম হা/১৭১৮।) আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, كُلُّ بِدْعَةٍ ضَلاَلَةٍ وَإِنْ رَآهَا النَّاسُ حَسَنَةً ‘সকল প্রকার বিদ‘আত ভ্রষ্টতা, যদিও মানুষ তাকে উত্তম মনে করে’। (সিলসিলাতুল আছারিছ ছহীহাহ্ হা/১২১; আলবানী, সনদ ছহীহ, তালখীছু আহকামিল জানায়েয ১/৮৩ পৃঃ।)

অতএব মুসলামানরা যা উত্তম মনে করবে তা কখনোই উত্তম হ’তে পারে না যতক্ষণ পর্যন্ত তা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ স্বীকৃত না হবে। বরং সে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। তা‘আলা বলেন,
قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِيْ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا-

‘বল, আমরা কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দেব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top