What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

বিদ‘আত ও তার পরিণতি (৮ম পর্ব) (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,615
Messages
121,990
Credits
324,673
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses

বিদ‘আত ও তার পরিণতি (৮ম পর্ব)


মীলাদপন্থীদের দলীলের জবাব

প্রচলিত প্রত্যেকটি বিদ‘আতের পিছনেই কিছু না কিছু দলীল লক্ষ্য করা যায়। অথচ যাচাই করলে সেগুলো যঈফ, জাল অথবা ছহীহ দলীলের অপব্যাখ্যা বলে প্রমাণিত হয়। দুষ্টমতি একশ্রেণীর আলেম এ সমস্ত দলীল অথবা যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ব্রেইন ওয়াশ (মগজ ধোলাই) করে। উদ্দেশ্য হ’ল তাদের দল ভারী করা এবং মানুষের পকেট ছাফ করে তাদের ব্যবসাকে মযবূত করা। ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ জায়েয করার জন্য অনুরূপই কিছু দলীল অথবা যুক্তি পেশ করা হয়ে থাকে। নিম্নে সেগুলি উল্লেখ করতঃ কুরআন ও ছহীহ হাদীছের মানদন্ডে তার গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা হল।

প্রথম দলীল :

হাদীছে এসেছে, عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنهما قَالَ قَدِمَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ، فَرَأَى الْيَهُوْدَ تَصُوْمُ يَوْمَ عَاشُوْرَاءَ، فَقَالَ مَا هَذَا؟ قَالُوْا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ، هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللهُ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ، فَصَامَهُ مُوسَى، قَالَ فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ، فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ-
ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, ইহুদীরা আশূরার দিন ছিয়াম পালন করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটা কিসের ছিয়াম? তারা বলল, এটি একটি উত্তম দিন। এই দিনে আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর (ফেরাউন) কবল হ’তে মুক্তি দান করেন। ফলে এদিনে মূসা (আঃ) ছিয়াম পালন করেছেন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, আমি তোমাদের অপেক্ষা মূসা (আঃ)-এর অধিক হক্বদার। অতঃপর তিনি এদিনে ছিয়াম পালন করেন এবং ছিয়াম পালনের নির্দেশ দেন। (বুখারী হা/২০০৪; ইবনু মাজাহ হা/১৭৩৪।) অপর একটি হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رضى الله عنه قَالَ كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ تَعُدُّهُ الْيَهُوْدُ عِيْدًا، قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم فَصُوْمُوْهُ أَنْتُمْ-
আবু মূসা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইহুদীরা আশূরার দিনকে ঈদ (উৎসবের দিন) মনে করত। নবী (ছাঃ) বললেন, ‘তোমরাও এদিনে ছিয়াম পালন কর’।
(বুখারী হা/২০০৫।)

উল্লিখিত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ তা‘আলা মূসা (আঃ)-কে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। বিধায় এদিনে রাসূল (ছাঃ) আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের জন্য নিজে ছিয়াম পালন করেছেন এবং ছাহাবায়ে কেরামকে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন। যদি মূসা (আঃ)-এর মুক্তির শুকরিয়া স্বরূপ ছিয়াম পালন করা বৈধ হয়, তাহ’লে মুহাম্মাদ (ছাঃ); যিনি বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ দুনিয়ায় প্রেরিত হয়েছেন, তাঁর দুনিয়ায় আগমনের শুকরিয়া স্বরূপ ছালাত, ছিয়াম, কুরআন তেলাওয়াতের মত ভাল আমলের মাধ্যমে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ উদযাপন করাও শরী‘আত সম্মত।
 
অনেক অনেক ধন্যবাদ ধন্যবাদ। ইসলামিক পোস্ট দেখতে ৃচাই
 
অনেক অনেক ধন্যবাদ ধন্যবাদ। ইসলামিক পোস্ট দেখতে ৃচাই

থ্রেড ভিজিটের জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, মামা।
 

জবাব :

প্রথমতঃ যেকোন ইবাদত করার প্রথমে দু’টি মৌলিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। (ক) এক আল্লাহর ইবাদত করতে হবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না। (খ) এমন ইবাদত করতে হবে, যা রাসূল (ছাঃ)-এর কথা, কর্ম ও মৌনসম্মতি দ্বারা স্বীকৃত এবং নিজেদের খেয়াল-খুশী মত ইবাদত নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيْعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ- إِنَّهُمْ لَنْ يُغْنُوْا عَنْكَ مِنَ اللهِ شَيْئًا وَإِنَّ الظَّالِمِيْنَ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ وَاللهُ وَلِيُّ الْمُتَّقِيْنَ-
‘এরপর আমরা তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের উপর; সুতরাং তুমি তার অনুসরণ কর, অজ্ঞদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর না। আল্লাহর মুকাবিলায় তারা তোমার কোনই উপকার করতে পারবে না। যালিমরা একে অপরের বন্ধু, আর আল্লাহ তো মুত্তাক্বীদের বন্ধু’ (জাছিয়া ৪৫/১৮-১৯)

সুতরাং রাসূল (ছাঃ)-এর আনীত বিধানের বাইরে কোন বিধানকে ওয়াজিব বা মুস্তাহাব মনে করা কোন মুসলিমের বৈশিষ্ট্য নয়; বরং কুরআন ও ছহীহ হাদীছের যথাযথ অনুসরণ করাই মুসলিমের বৈশিষ্ট্য ও কর্তব্য।

দ্বিতীয়তঃ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অত্যাচারী পাপিষ্ঠ ফেরাউনের কবল থেকে মূসা (আঃ)-এর নাজাতের শুকরিয়া স্বরূপ নিজে ছিয়াম পালন করেছেন এবং ছাহাবায়ে কেরামকে পালন করতে বলেছেন। কিন্তু তিনি কি কখনো ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ হিসাবে বিশ্ববাসীর নিকট প্রেরিত হওয়ার শুকরিয়া স্বরূপ জন্ম দিবস পালনের নামে কোন ইবাদত করেছেন? কিংবা ছাহাবায়ে কেরামকে করতে বলেছেন? যদি ইসলামী শরী‘আতে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’-এর সামান্যতম ফযীলত থাকত, তাহ’লে অবশ্যই তিনি উম্মতের সামনে তা সুস্পষ্ট ভাবে বলে যেতেন। খোলাফায়ে রাশেদীন, যারা দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলেন, দীর্ঘ ৩০টি বছর খেলাফতে অধিষ্ঠিত থাকা সত্ত্বেও তাঁরা কখনো রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনের শুকরিয়া স্বরূপ জন্ম দিবস পালন করেননি। তাহ’লে কি তাঁরা রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনের গুরুত্ব ও মর্যাদা বুঝেননি? কিংবা জন্ম দিবস পালন না করে তারা তাঁর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছেন? নাঊযুবিল্লাহ! আল্লাহ আমাদেরকে হেদায়াত দান করুন-আমীন!
 

দ্বিতীয় দলীল :
হাদীছে এসেছে,
قال عروة : وثويبة مولاة أبي لهب. وكان أعتقها حين بَشَّرته بميلاد رسول الله صلى الله عليه وسلم فأرضَعَتْ رسوْلَ الله صلى الله عليه وسلم فلما مات أبو لهب كافرا، رآه العباس في المنام بعدما أسلمَ العباسُ بشرِّ حيبة، فقال له: ماذا لقيت؟ قال: لم ألق خيرا بعدكم، غير أني سُقيت كل ليلة اثنين بعتاقتي ثويبة قال : وقال أبو عيسى : وكانت ثويبة حاضنة رسول الله -صلى الله عليه وسلم-
উরওয়াহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর জন্মের সুখবর দিলে তার দাসী ছুয়াইবাহকে আবু লাহাব মুক্ত করে দিয়েছিল। অতঃপর তিনিই (ছুয়াইবাহ) রাসূল (ছাঃ)-কে দুধপান করিয়েছিলেন। অতঃপর যখন আবু লাহাব কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করল, তখন আববাস (রাঃ) তাঁর ইসলাম গ্রহণের পরে স্বপ্নে আবু লাহাবকে চরম দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় দেখলেন। আববাস (রাঃ) তাকে বললেন, তুমি কি দেখছ? সে বলল, তোমাদের পরে আমাকে কল্যাণকর কিছুই প্রদান করা হয়নি। তবে ছুয়াইবাহ্কে মুক্ত করার জন্য আমি প্রত্যেক সোমবার রাত্রে পান করছি। আবু ঈসা বলেন, ছুয়াইবাহ রাসূল (ছাঃ)-এর লালনকারীণী ছিলেন। (ইবনুল আছীর, জামেউল উছূল ফী আহাদীছির রাসূল হা/৯০৩৬।)


কুফরীর চরম সীমায় উপনীত আবু লাহাব; যার বিরুদ্ধে আল্লাহ তা‘আলা ‘সূরা লাহাব’ নামক একটি সূরা নাযিল করেছেন। এমন কাফেরকে শুধুমাত্র রাসূল (ছাঃ)-এর জন্মের খবরে খুশি হয়ে তার দাসী মুক্ত করার কারণে যদি আল্লাহ জাহান্নামে পানি পান করিয়ে থাকেন, তাহ’লে একজন মুসলিম রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনে খুশি হয়ে তাঁর জন্ম দিবস উপলক্ষে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ উদযাপন করলে আল্লাহ তার উপর অত্যধিক খুশি হবেন।
 

জবাব :
উল্লিখিত দলীলের জবাব কয়েকভাবে দেওয়া যেতে পারে।
(১) উল্লিখিত খবরটি মুরসাল; যা উরওয়াহ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি কার নিকট থেকে শুনেছেন তা বলেননি। তাছাড়াও এটি সাধারণ মানুষের দেখা একটি স্বপ্নের ঘটনা, যা দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
(ফাৎহুল বারী ৯/১৪৫।)

(২) রাসূল (ছাঃ)-এর জন্মের খবরে খুশি হয়ে আবু লাহাব তার দাসী ছুয়াইবাকে মুক্ত করেছিল মর্মে বর্ণনাটি সঠিক নয়। বরং আবু লাহাবের দাসত্বে থাকা অবস্থাতেই ছুয়াইবাহ রাসূল (ছাঃ)-কে লালন করেছিলেন। খাদীজা (রাঃ) তাকে বিক্রি করার জন্য আবু লাহাবকে অনুরোধ করলে তাতে সে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছিল। পরবর্তীতে রাসূল (ছাঃ)-এর হিজরতের পরে আবু লাহাব ছুয়াইবাকে মুক্ত করে দিয়েছিল। (ইবনুল আছীর, আল-কামেল ফিত তারিখ ১/১৫৭; ইমাম যাহাবী, তারীখুল ইসলাম ২/৪৪৫; ত্ববারী, যাখায়েরুল উকবা ১/২৫৯; ফাৎহুল বারী ৯/১৪৫।)

(৩) আবু লাহাব একজন প্রসিদ্ধ কাফের। আর কাফেরের কোন ভাল আমল আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَقَدِمْنَا إِلَى مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنَاهُ هَبَاءً مَنْثُوْرًا-
‘আমরা তাদের (কাফেরদের) কৃতকর্মের প্রতি লক্ষ্য করব, অতঃপর সেগুলিকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করব’
(ফুরক্বান ২৫/২৩) তিনি অন্যত্র বলেন,
وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوْا بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهِ وَلَا يَأْتُوْنَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَى وَلَا يُنْفِقُوْنَ إِلَّا وَهُمْ كَارِهُوْنَ-
‘তাদের (কাফেরদের) দান গ্রহণ করা নিষেধ করা হয়েছে এজন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করে, ছালাতে শৈথিল্যের সাথে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে দান করে’
(তাওবা ৯/৫৪) তিনি অন্যত্র বলেন,
مَثَلُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِرَبِّهِمْ أَعْمَالُهُمْ كَرَمَادٍ اشْتَدَّتْ بِهِ الرِّيْحُ فِيْ يَوْمٍ عَاصِفٍ لَا يَقْدِرُوْنَ مِمَّا كَسَبُوْا عَلَى شَيْءٍ ذَلِكَ هُوَ الضَّلَالُ الْبَعِيْدُ-

‘যারা তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করে তাদের আমল সমূহের উপমা ভস্মসদৃশ, যা ঝড়ের দিনের বাতাস প্রচন্ড বেগে উড়িয়ে নিয়ে যায়। যা তারা উপার্জন করে তার কিছুই তারা তাদের কাজে লাগাতে পারে না। এটা তো ঘোর বিভ্রান্তি’ (ইব্রাহীম ১৪/১৮)। অতএব আবু লাহাব উল্লিখিত আয়াত সমূহের অন্তর্ভুক্ত। পার্থিব জীবনের ভাল কাজ পরকালে তার কোনই কাজে আসবে না।
 

(৪) আল্লাহ তা‘আলার স্পষ্ট বাণী হ’ল যে, কাফেরদের থেকে কখনোই আযাব হালকা করা হবে না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا لَهُمْ نَارُ جَهَنَّمَ لاَ يُقْضَى عَلَيْهِمْ فَيَمُوْتُوْا وَلاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمْ مِنْ عَذَابِهَا-
‘যারা কুফরী করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। তাদের প্রতি এমন কোন ফায়ছালা দেওয়া হবে না যে, তারা মারা যাবে এবং তাদের থেকে জাহান্নামের আযাবও লাঘব করা হবে না’
(ফাতির ৩৫/৩৬) তিনি অন্যত্র বলেন,
إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ أُولَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ- خَالِدِيْنَ فِيْهَا لاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنْظَرُوْنَ-
‘নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং কাফের অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতাগণ ও সকল মানুষের লা‘নত। তারা সেখানে স্থায়ী হবে। তাদের থেকে আযাব হালকা করা হবে না এবং তাদেরকে অবকাশও দেওয়া হবে না’
( বাক্বারাহ ২/১৬১-১৬২)
অতএব আবু লাহাবের আযাব কিভাবে হালকা হ’তে পারে যে রাসূল (ছাঃ) ও ইসলামের প্রকাশ্য শত্রু ছিল। যার বিরুদ্ধে আল্লাহ তা‘আলা একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা নাযিল করেছেন,
تَبَّتْ يَدَا أَبِيْ لَهَبٍ وَتَبَّ- مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ- سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ- وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ- فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِنْ مَسَدٍ-

‘ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুই হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ ও তার উপার্জন তার কোনই কাজে আসেনি। অচিরেই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে এবং তার স্ত্রীও, যে ইন্ধন বহন করে, তার গলদেশে পাকানো রজ্জু’ (লাহাব ১১১/১-৫)

 
তৃতীয় দলীল :
রাসূল (ছাঃ)-কে সপ্তাহের প্রতি সোমবারে ছিয়াম পালনের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ذَاكَ يَوْمٌ وُلِدْتُ فِيْهِ وَيَوْمٌ بُعِثْتُ أَوْ أُنْزِلَ عَلَىَّ فِيْهِ ‘এই দিনে (সোমবারে) আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনেই আমি নবুওত প্রাপ্ত হয়েছি। অথবা আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করা হয়েছে’। (মুসলিম হা/১১৬২, ‘প্রত্যেক মাসে তিনটি ছিয়াম পালন করা মুস্তাহাব’ অনুচ্ছেদ।) বুঝা গেল, রাসূল (ছাঃ) নিজেই তাঁর দুনিয়ায় আগমনের শুকরিয়া স্বরূপ প্রত্যেক সোমবার ছিয়াম পালন করতেন। অতএব আমরাও বিভিন্ন প্রকার ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর জন্ম দিবস পালন করতে পারি।

জবাব :
উল্লিখিত দলীলের জবাব কয়েকভাবে দেওয়া যেতে পারে।
(১) মীলাদপন্থীদের উদ্দেশ্য যদি রাসূল (ছাঃ)-এর জন্ম গ্রহণের শুকরিয়া আদায় করাই হয়, তাহ’লে রাসূল (ছাঃ)-এর ন্যায় প্রত্যেক সোমবার ছিয়াম পালন করতে হবে। কিন্তু তারা কি তা করে? কখনোই নয়। বরং তারা রাসূল (ছাঃ)-এর এই সুন্নাতকে উপেক্ষা করে বছরের একটি দিন ১২ই রবীউল আউয়ালকে ‘ঈদে মীলাদুন্নবী’ উদযাপনের জন্য নির্দিষ্ট করেছে, চাই তা সোমবার অথবা অন্য কোন দিন হোক। অথচ রাসূল (ছাঃ) ১২ই রবীউল আউয়ালে জন্ম গ্রহণ করেছেন মর্মে কোন দলীল নেই। রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর ছাহাবায়ে কেরাম সোমবার দিন ছিয়াম পালন করেছেন। কিন্তু ১২ রবীউল আউয়ালে কোন কিছুই করেননি। অতএব রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে উপেক্ষা করার নাম তাঁকে ভালবাসা নয়; বরং তাঁর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের নাম তাঁকে ভালবাসা।
(২) রাসূল (ছাঃ) শুধুমাত্র এই উদ্দেশ্যেই সোমবারের দিন ছিয়াম পালন করেননি। বরং অন্য একটি মহৎ উদ্দেশ্য রয়েছে। তা হ’ল, সপ্তাহের দু’টি দিন সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর নিকট বান্দার সাপ্তাহিক রিপোর্ট পেশ করা হয়। আর রিপোর্ট পেশ করার দিনে রাসূল (ছাঃ) ছিয়াম অবস্থায় থাকাকে অধিক ভালবাসতেন। হাদীছে এসেছে,
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تُعْرَضُ الأَعْمَالُ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ وَالْخَمِيْسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِى وَأَنَا صَائِمٌ-
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহর নিকট সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমল পেশ করা হয়। অতএব আমার আমল (আল্লাহর নিকট) পেশ করার সময় ছিয়াম অবস্থায় থাকাকে আমি অধিক ভালবাসি’।
(তিরমিযী হা/৭৪৭; নাসাঈ হা/২৩৫৮; মিশকাত হা/২০৫৬।)
 

(৩) রাসূল (ছাঃ) সোমবারে ছিয়াম পালন করেছেন। কিন্তু তিনি কি তাঁর জন্মদিবস উপলক্ষে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন? তিনি কি ছাহাবায়ে কেরাম কে নিয়ে কোন জালসা মাহফিল এবং ভাল খাবারের আয়োজন করেছেন? তিনি কি কোন আনন্দ মিছিল করেছেন? কখনোই নয়। তাহ’লে কি জান্নাতের সার্টিফিকেট প্রাপ্ত ছাহাবায়ে কেরাম, উম্মাহাতুল মুমিনীন, রাসূল (ছাঃ)-এর কন্যা ফাতেমা (রাঃ), হাসান-হুসাইন (রাঃ) তাঁরা কি রাসূল (ছাঃ)-কে ভালবাসতেন না? অথবা তাঁর আগমনে তাঁরা কি আনন্দিত ছিলেন না? মীলাদপন্থীরা কি তাঁদের চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-কে বেশী ভালবাসেন? তাহ’লে মীলাদপন্থীদের এ কেমন ভালবাসা যার মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে উপেক্ষা করা হয়? অথচ রাসূল (ছাঃ)-এর প্রকৃত ভালবাসা অর্জিত হবে তাঁর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণের মাধ্যমে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ- قُلْ أَطِيعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِيْنَ-
‘বল, যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। বল, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ আল্লাহ্ তো কাফেরদেরকে পসন্দ করেন না’ (আলে ইমরান ৩/৩১-৩২)।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top