What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভোদাইয়ের ভূ-দর্শন (1 Viewer)

[HIDE]
--তিন্নি কোথায়?সুরোদি কি করছে?
--তিন্নি ওর বাবার কাছে,সুরোদিকে বললাম আলুভাতে ভাত করে দাও।
--একটু চা পেলে ভাল হত।থাক দরকার নেই।
--আমি চা করে আনছি।সুতন্দ্রা বলল।
--আমি একবার মাম্মীর ঘরে যাচ্ছি,তুই উপরে আয়।
কি করছে পাগলটা কে জানে।মাম্মী ওকে ঠিক চিনেছে।ডায়াল করলো।
--হ্যালো আমি মিমিদি....বাচ্চা ছেলে নাকি...এইতো ফোন করছি.....তাহলে একদম আসবো না...গিয়ে সব বলবো...একটূ দেরী হবে...শান্ত হয়ে থাকবে...হ্যা রাখছি। এই অবস্থায়ও সুভদ্রার হাসি পায়,এমন করছে যেন মা হারিয়ে গেছে। তিন্নিকে নিয়ে দিব্যেন্দু ঢুকলো, বড়দি তুমি এখানে?
--এসো কেমন আছো?
--মা জিনিকে এত ভালবাসতো,একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে বেচারা।একদিক দিয়ে ভালই হল,তোমার বিয়ে হলে মা একেবারে একা হয়ে যেতেন।
সুভদ্রার এসব কথা ভাল লাগছিল না। বুঝতে পারে কিছু একটা বলতে এসেছে সে কথা না বলে ভুমিকা শুরু করেছে।
--জিনি জিজ্ঞেস করছিল,দলিল আবার বদলাতে হবে?বললাম সেতো বদলাতে হবে মৃত মানুষকে তো সম্পত্তির ভাগ দেওয়া যায়না।
--তুমি ঠিকই বলেছো।
--এই সময় এসব কথা বলা ঠিক নয়।আচ্ছা বড়দি এখন ষাট ভাগ সমান দু-ভাগ হরে তাই না?
--তা কেন সমস্ত সম্পত্তি আধাআধি হবে। সুভদ্রা বলল।জিনি চা নিয়ে ঢুকতে কথা বন্ধ হয়ে যায়।
খাওয়া দাওয়ার পর সুভদ্রার গাড়িতে সবাই রওনা হল।সব ঘরে তালা চাবি দেওয়ার পর হাউ-হাউ করে কেদে ফেলে সুরবালা।
সুভদ্রা বলল,তুমি যদি আমার সঙ্গে থাকতে চাও যেতে পারো।এই নেও আমার ফোন নম্বর।তারপর ব্যাগ থেকে একহাজার টাকা বের করে সুরোদিকে দিল।কোনো দরকার পড়লে ফোন কোরো। গাড়ী পেট্রোলের ধোয়া ছেড়ে চলে গেল।সুরোবালা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে।
ময়না তদন্তের পর দেহ পেতে চারটে বেজে গেল।নিমতলা মহাশ্মশানে সুনন্দা মুখার্জিকে বিদ্যুৎ চুল্লিতে দাহ করা হল। সুভদ্রার মনে হল জীবনের একটা পর্ব শেষ হয়ে শুরু হল নতুন পর্ব।তার জন্য আকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছে একটা পাগল।সুভদ্রার মন প্রাণ ভীষণ ভাবে তার সঙ্গ পেতে ব্যাকুল।শ্মশান থেকে বেরিয়ে পেট্রোলের ট্যাঙ্ক ভরে নিল।জিনিদের বাড়ী পর্যন্ত পৌছে দিত কিন্তু জিনির আপত্তিতে মাঝখানে ওদের ট্যাক্সিতে
তুলে দিয়ে গাড়ী ছুটে চলল রাজার হাটের দিকে। গাড়ীতে বসে ভাবছে ফ্লাটে পৌছাতে হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।কোথায় গেছিলে,কি হয়েছে ইত্যাদি।কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দিল বৈদুর্য,চোখ মুখ লাল।আবার বিছানায় গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল। সুভদ্রা অবাক হয় কিছু তো জিজ্ঞেস করল না,অথচ ফোনে কত প্রশ্ন।
সুভদ্রা দরজা বন্ধ করে জামা খুলে খাটের পাশে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে বলল,মাম্মী মারা গেছে।
বালিশে মুখ গুজে বৈদুর্য বলল,আমি জানি।
--তুমি কি করে জানলে?
বৈদুর্য উঠে বসে নলল,তুমি কি আমাকে সত্যি করে বুদ্ধু ভাবো নাকি?
বৈদুর্যর মাথা বুকে চেপে ধরে সুভদ্রা বলল,না তুমি খুব চালাক।বোকার মত কাঁদছিলে কেন?
--কাঁদতে আমার বয়ে গেছে...মিমিদি আমাকে বিয়ে না করলে আজ তোমার এই অবস্থা হত না।বৈদুর্যর চোখের জলে সুভদ্রার ব্রেসিয়ার ভেসে যায়। মনে পড়ল মাম্মী লিখে গেছে জামাইটা খুব সরল ওকে দেখিস।ওকে দেখবো তাহলে আমাকে কে দেখবে?বৈদুর্যের মুখে মুখ ঘষে সুভদ্রা বলল,ছি কাঁদেনা।তুমি কাঁদলে আমার কান্না পায় না বুঝি?
কথাটা ম্যাজিকের মত কাজ করে বৈদুর্য চোখের জল মুছে বলল,মিমিদি আমি তোমাকে কিছুতেই দুঃখ পেতে দেবো না।
ফোন বেজে উঠল।বৈদুর্য বলল,ঐ দেখো আবার কে শোক জানাতে ফোন করেছে।
সুভদ্রা বুঝতে পারে ইতিমধ্যে অনেকে ফোন করে দুঃখ জানিয়েছে তাতেই বৈদুর্য সব জেনেছে।রিসিভার তুলে বলল,হ্যালো?...হ্যা কাল রাতে...এইমাত্র শ্মশান থেকে ফিরছি...কি করবো বলুন...আচ্ছা রাখছি।সুভদ্রা ফোন রাখতে গিয়ে আবার দ্রুত বলে, স্বামীজী...হ্যালো স্বামীজী....একটা কথা জিজ্ঞেস করছি...আপনি বলেছিলেন ক্যাটস আইতে ক্ষতি হতে পারে...বিশ্বাসের কথা নয়..শুভ সময়...আর ক্ষতি হবে না...ভাল হবে?...ধন্যবাদ।
ফোন রেখে সুভদ্রা পায়জামা খুলে ফেলল, নীচে প্যাণ্টি ছিল না। বৈদুর্য গভীর বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।
--তোমার আবার কি হল? সুভদ্রা জিজ্ঞেস করলো।
--শ্মশানে গিয়ে তুমি স্নান করোনি?
--কি করে করবো,আমি কি জামা কাপড় নিয়ে গেছি?
--চলো আমি তোমাকে স্নান করিয়ে দিই।
সুভদ্রা ভাবে বুদ্ধুটার সব দিকে খেয়াল আছে।মজা করে বলে,বউয়ের দিকে খুব যত্ন?
বৈদুর্য এগিয়ে গিয়ে দু-হাতে পাঁজাকোলা করে তুলে স্তনের মধ্যে মুখ গুজে বলল,আমার জিনিস আমি যত্ন করবো নাতো কে করবে বলো?
---হি-হি-হি। কি করছো?শোনো শুধু বউ নয় বইয়ের দিকেও যত্ন করতে হবে।সিভিল সার্ভিসে তোমাকে বসতে হবে,ভুলে যেও না।
সুভদ্রা মনে করিয়ে দিল।
--স্টেট না ইন্ডিয়া লেভেল?
--আই এ এস।ইণ্ডিয়া লেবেল।
--তাই হবে।এবার মুখ বন্ধ করো।বৈদুর্য মিমিদির ঠোটে ঠোট চেপে ধরে।বাথরুমে নিয়ে শাওয়ারের নীচে দাড় করিয়ে সারা শরীর কচলে কচলে সুভদ্রাকে স্নান করায়,প্রতিটি খাজে খাজে আঙ্গুল ঘষেঘষে পরিস্কার করতে করতে চেরার কাছে এসে থেমে যায়।মুখ তুলে মিমিদির দিকে তাকাতে ওর মতলব বুঝতে পেরে সুভদ্রা বলে,ভ
--তিন্নি কোথায়?সুরোদি কি করছে?
--তিন্নি ওর বাবার কাছে,সুরোদিকে বললাম আলুভাতে ভাত করে দাও।
--একটু চা পেলে ভাল হত।থাক দরকার নেই।
--আমি চা করে আনছি।সুতন্দ্রা বলল।
--আমি একবার মাম্মীর ঘরে যাচ্ছি,তুই উপরে আয়।
কি করছে পাগলটা কে জানে।মাম্মী ওকে ঠিক চিনেছে।ডায়াল করলো।
--হ্যালো আমি মিমিদি....বাচ্চা ছেলে নাকি...এইতো ফোন করছি.....তাহলে একদম আসবো না...গিয়ে সব বলবো...একটূ দেরী হবে...শান্ত হয়ে থাকবে...হ্যা রাখছি। এই অবস্থায়ও সুভদ্রার হাসি পায়,এমন করছে যেন মা হারিয়ে গেছে। তিন্নিকে নিয়ে দিব্যেন্দু ঢুকলো, বড়দি তুমি এখানে?
--এসো কেমন আছো?
--মা জিনিকে এত ভালবাসতো,একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে বেচারা।একদিক দিয়ে ভালই হল,তোমার বিয়ে হলে মা একেবারে একা হয়ে যেতেন।
সুভদ্রার এসব কথা ভাল লাগছিল না। বুঝতে পারে কিছু একটা বলতে এসেছে সে কথা না বলে ভুমিকা শুরু করেছে।
--জিনি জিজ্ঞেস করছিল,দলিল আবার বদলাতে হবে?বললাম সেতো বদলাতে হবে মৃত মানুষকে তো সম্পত্তির ভাগ দেওয়া যায়না।
--তুমি ঠিকই বলেছো।
--এই সময় এসব কথা বলা ঠিক নয়।আচ্ছা বড়দি এখন ষাট ভাগ সমান দু-ভাগ হরে তাই না?
--তা কেন সমস্ত সম্পত্তি আধাআধি হবে। সুভদ্রা বলল।জিনি চা নিয়ে ঢুকতে কথা বন্ধ হয়ে যায়।
খাওয়া দাওয়ার পর সুভদ্রার গাড়িতে সবাই রওনা হল।সব ঘরে তালা চাবি দেওয়ার পর হাউ-হাউ করে কেদে ফেলে সুরবালা।
সুভদ্রা বলল,তুমি যদি আমার সঙ্গে থাকতে চাও যেতে পারো।এই নেও আমার ফোন নম্বর।তারপর ব্যাগ থেকে একহাজার টাকা বের করে সুরোদিকে দিল।কোনো দরকার পড়লে ফোন কোরো। গাড়ী পেট্রোলের ধোয়া ছেড়ে চলে গেল।সুরোবালা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে।
ময়না তদন্তের পর দেহ পেতে চারটে বেজে গেল।নিমতলা মহাশ্মশানে সুনন্দা মুখার্জিকে বিদ্যুৎ চুল্লিতে দাহ করা হল। সুভদ্রার মনে হল জীবনের একটা পর্ব শেষ হয়ে শুরু হল নতুন পর্ব।তার জন্য আকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছে একটা পাগল।সুভদ্রার মন প্রাণ ভীষণ ভাবে তার সঙ্গ পেতে ব্যাকুল।শ্মশান থেকে বেরিয়ে পেট্রোলের ট্যাঙ্ক ভরে নিল।জিনিদের বাড়ী পর্যন্ত পৌছে দিত কিন্তু জিনির আপত্তিতে মাঝখানে ওদের ট্যাক্সিতে
তুলে দিয়ে গাড়ী ছুটে চলল রাজার হাটের দিকে। গাড়ীতে বসে ভাবছে ফ্লাটে পৌছাতে হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।কোথায় গেছিলে,কি হয়েছে ইত্যাদি।কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দিল বৈদুর্য,চোখ মুখ লাল।আবার বিছানায় গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল। সুভদ্রা অবাক হয় কিছু তো জিজ্ঞেস করল না,অথচ ফোনে কত প্রশ্ন।
সুভদ্রা দরজা বন্ধ করে জামা খুলে খাটের পাশে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে বলল,মাম্মী মারা গেছে।
বালিশে মুখ গুজে বৈদুর্য বলল,আমি জানি।
--তুমি কি করে জানলে?
বৈদুর্য উঠে বসে নলল,তুমি কি আমাকে সত্যি করে বুদ্ধু ভাবো নাকি?

।।উনচত্বারিংশতি পর্ব।।

গাড়ী ভি আই পি ছেড়ে যশোর রোডে পড়ল।সুরোদি গুছিয়ে কথা বলতে পারে না।কিছু একটা হয়েছে তাতে সন্দেহ নেই।বজ্রানন্দ কিছু একটা দুঃখজনক ঘটনার কথা বলেছিল। সুভদ্রার এইসব জ্যোতিষবিদ্যায় তেমন আস্থা নেই। রাস্তার দু-পাশে দোকানপাট খুলে গেছে।কাল রাতে বাড়ী থাকলে হয়তো এমন হত না।মাম্মী ফোনে দিব্যি কথা বলল, একরাতের মধ্যে কি এমন হতে পারে?
ঘুম ভেঙ্গে বিছানায় উঠে বসে বৈদুর্য,ভাল করে তাকিয়ে দেখল পাশে মিমিদি নেই।তাহলে কি স্বপ্ন দেখছিল? নিজের দিকে নজর পড়তে লজ্জা পায়,একেবারে উলঙ্গ।স্বপ্ন নয় সত্যি মনে হচ্ছে কিন্তু মিমিদি গেল কোথায়?ঐতো শাড়ী পড়ে আছে মেঝেতে। কোর্টে চলে গেলে বলে যাবে তো?
মুখার্জি ভিলার কাছে লোক জমেছে। দাঁড়িয়ে আছে একটা পুলিশের গাড়ী।সুভদ্রার বুকের মধ্যে ছ্যত করে উঠল।গাড়ী থেকে নামতে একজন সাব-ইন্সপেকটার এসে সেলাম করলো।
--কি ব্যাপার?সুভদ্রা জিজ্ঞেস করল।
--মনে হচ্ছে ঘুমের ওষুধ খেয়েছেন।
--সুইসাইড?
--প্রাথমিকভাবে সে রকম মনে হচ্ছে।একটা নোটও পাওয়া গেছে।
সুভদ্রা বাড়ীতে ঢুকে গেল।দিব্যেন্দু লোকজনের সঙ্গে কথা বলছে।জিনি গালে হাত দিয়ে বসেছিল,তাকে দেখে দিদিভাই বলে হাউ-হাউ করে কেদে ফেলে।ক্যাটস আইয়ের জন্য এমন হল?নিথর সুভদ্রা বোনকে জড়িয়ে ধরে কি যেন ভাবছে। সাব-ইন্সপেটর ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞেস করলেন,ম্যাডাম বডি পাঠিয়ে দিই পোষ্ট মর্টেমে?
--কোথায় পাঠাবেন?
--এন আর এসে খবর দিয়েছি।
সুভদ্রা একটু ইতস্তত করে জিজ্ঞেস করে,আপনাকে আগে কোথাও দেখেছি?
--আজ্ঞে তিনকড়ি দাস,বারাসাত কোর্টে দেখা হয়েছিল। তিনকড়ি বেশ বিগলিত বোধ করেন।
--আচ্ছা তিনকড়ি বাবু সুইসাইড নোটটা দেখতে পারি?
তিনকড়ি বাবু পকেট থেকে একটা চিরকুট বের করে এগিয়ে দিতে দিতে বলেন,ম্যাডামের অত্যন্ত শান্তভাবে লিখেছেন।এই অবস্থায় এত গুছিয়ে সুন্দর করে লেখা সাধারণত হয় না।সুভদ্রা চোখের সামনে মেলে ধরলেন।
"অনেক কাল বৈধব্য জীবন কাটালেম,এখন স্থির চিত্তে স্বেচ্ছায় এই পথ বেছে নিলাম। মেয়ে-জামাইকে আমার আশির্বাদ।জমাইটা খুব সরল ওকে দেখিস।জিনির প্রতি নজর রাখিস।"
চিরকুট পড়ে মনে হচ্ছে যেন তাকেই উদ্দেশ্য করে লেখা।চিরকুট ফেরত দিতে
তিনকড়িবাবু জিজ্ঞেস করলেন,হাতের লেখা ম্যাডামের তো?
--হ্যা আমার মাম্মীর লেখা।রুমাল বের করে চোখ মুছল।
চিঠি পড়ে মনে হল বৈদুর্যকে অপছন্দ নয় মাম্মীর তাহলে সুইসাইড করলো কেন? স্ট্রেচারে করে দোতলা থেকে ডেড বডি নামাচ্ছে,মনে হয় গাড়ী এসে গেছে।সাদা কাপড়ে ঢাকা সুনন্দা মুখার্জির দেহ।মুখে লেগে আছে তৃপ্তির হাসি।সুভদ্রা নিজেকে সামলাতে পারে না,মাম-ই-ই তুমি একি করলে?ডুকরে কেদে ফেলে।দিব্যেন্দু এগিয়ে এসে বলল,সুরোদি তুমি বড়দিকে দেখো।
সুরবালা এসে বড়বুনকে ধরে সামলায়,মনে দুশ্চিন্তা এ বাড়ীতে তার কাজ শেষ। তিনকড়িবাবু এসে বললেন,আমি আসি ম্যাডাম?
--কখন বডি দেওয়া হবে?
--তিনটে নাগাদ গেলে মনে হয় হয়ে যাবে।জটিল কিছু হলে অন্য কথা।আসি ম্যাম?
কৌতুহলী লোকজন চলে গেছে।সুভদ্রা নিজের ঘরে বসে আছে।চোখের সামনে অসীম শূণ্যতা।মাম্মী যথেষ্ট স্নেহ করে বৈদুর্যকে।
নোট পড়ে তাই মনে হল।তার বিয়ে হয়েছে জেনে নিশ্চিন্ত হয়ে সংসারের মায়া ছেড়ে চলে গেল। বিদ্যুতের ঝিলিকের মত একটা দৃশ্য ভেসে উঠল চোখের সামনে।মাম্মী প্রাণপণ বুকের উপর আকড়ে ধরে আছে বৈদুর্যকে। সেই লজ্জায় কি মাম্মী?সেই বৈদুর্য তার জামাই সেটাই কি মাম্মীর এই চলে যাওয়ার কারণ? জিনি ঢুকলো ঘরে।সুভদ্রা বলল,আয় বোন।
--দিদিভাই মাম্মী কেন এরকম করলো?
--আমিও তো সেই কথা ভাবছি।
--দিব্যেন্দুর উপর মাম্মীর আর রাগ নেই।
সুভদ্রা মুখ তুলে জিনিকে দেখল।জিনি তার বিয়ের কথা জানলে বুঝতে পারতো মাম্মী কি বলেছে।
--আশির্বাদ করে গেছে।দিব্যেন্দু অনেক বদলে গেছে। --তিন্নি কোথায়?সুরোদি কি করছে?
--তিন্নি ওর বাবার কাছে,সুরোদিকে বললাম আলুভাতে ভাত করে দাও।
--একটু চা পেলে ভাল হত।থাক দরকার নেই।
--আমি চা করে আনছি।সুতন্দ্রা বলল।
--আমি একবার মাম্মীর ঘরে যাচ্ছি,তুই উপরে আয়।
কি করছে পাগলটা কে জানে।মাম্মী ওকে ঠিক চিনেছে।ডায়াল করলো।
--হ্যালো আমি মিমিদি....বাচ্চা ছেলে নাকি...এইতো ফোন করছি.....তাহলে একদম আসবো না...গিয়ে সব বলবো...একটূ দেরী হবে...শান্ত হয়ে থাকবে...হ্যা রাখছি। এই অবস্থায়ও সুভদ্রার হাসি পায়,এমন করছে যেন মা হারিয়ে গেছে। তিন্নিকে নিয়ে দিব্যেন্দু ঢুকলো, বড়দি তুমি এখানে?
--এসো কেমন আছো?
--মা জিনিকে এত ভালবাসতো,একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে বেচারা।একদিক দিয়ে ভালই হল,তোমার বিয়ে হলে মা একেবারে একা হয়ে যেতেন।
সুভদ্রার এসব কথা ভাল লাগছিল না। বুঝতে পারে কিছু একটা বলতে এসেছে সে কথা না বলে ভুমিকা শুরু করেছে।
--জিনি জিজ্ঞেস করছিল,দলিল আবার বদলাতে হবে?বললাম সেতো বদলাতে হবে মৃত মানুষকে তো সম্পত্তির ভাগ দেওয়া যায়না।
--তুমি ঠিকই বলেছো।
--এই সময় এসব কথা বলা ঠিক নয়।আচ্ছা বড়দি এখন ষাট ভাগ সমান দু-ভাগ হরে তাই না?
--তা কেন সমস্ত সম্পত্তি আধাআধি হবে। সুভদ্রা বলল।জিনি চা নিয়ে ঢুকতে কথা বন্ধ হয়ে যায়।
খাওয়া দাওয়ার পর সুভদ্রার গাড়িতে সবাই রওনা হল।সব ঘরে তালা চাবি দেওয়ার পর হাউ-হাউ করে কেদে ফেলে সুরবালা।
সুভদ্রা বলল,তুমি যদি আমার সঙ্গে থাকতে চাও যেতে পারো।এই নেও আমার ফোন নম্বর।তারপর ব্যাগ থেকে একহাজার টাকা বের করে সুরোদিকে দিল।কোনো দরকার পড়লে ফোন কোরো। গাড়ী পেট্রোলের ধোয়া ছেড়ে চলে গেল।সুরোবালা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ে।
ময়না তদন্তের পর দেহ পেতে চারটে বেজে গেল।নিমতলা মহাশ্মশানে সুনন্দা মুখার্জিকে বিদ্যুৎ চুল্লিতে দাহ করা হল। সুভদ্রার মনে হল জীবনের একটা পর্ব শেষ হয়ে শুরু হল নতুন পর্ব।তার জন্য আকুল আগ্রহে অপেক্ষা করছে একটা পাগল।সুভদ্রার মন প্রাণ ভীষণ ভাবে তার সঙ্গ পেতে ব্যাকুল।শ্মশান থেকে বেরিয়ে পেট্রোলের ট্যাঙ্ক ভরে নিল।জিনিদের বাড়ী পর্যন্ত পৌছে দিত কিন্তু জিনির আপত্তিতে মাঝখানে ওদের ট্যাক্সিতে
তুলে দিয়ে গাড়ী ছুটে চলল রাজার হাটের দিকে। গাড়ীতে বসে ভাবছে ফ্লাটে পৌছাতে হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।কোথায় গেছিলে,কি হয়েছে ইত্যাদি।কলিং বেল টিপতে দরজা খুলে দিল বৈদুর্য,চোখ মুখ লাল।আবার বিছানায় গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল। সুভদ্রা অবাক হয় কিছু তো জিজ্ঞেস করল না,অথচ ফোনে কত প্রশ্ন।
সুভদ্রা দরজা বন্ধ করে জামা খুলে খাটের পাশে দাঁড়িয়ে মৃদু স্বরে বলল,মাম্মী মারা গেছে।
বালিশে মুখ গুজে বৈদুর্য বলল,আমি জানি।
--তুমি কি করে জানলে?
বৈদুর্য উঠে বসে নলল,তুমি কি আমাকে সত্যি করে বুদ্ধু ভাবো নাকি?
বৈদুর্যর মাথা বুকে চেপে ধরে সুভদ্রা বলল,না তুমি খুব চালাক।বোকার মত কাঁদছিলে কেন?
--কাঁদতে আমার বয়ে গেছে...মিমিদি আমাকে বিয়ে না করলে আজ তোমার এই অবস্থা হত না।বৈদুর্যর চোখের জলে সুভদ্রার ব্রেসিয়ার ভেসে যায়। মনে পড়ল মাম্মী লিখে গেছে জামাইটা খুব সরল ওকে দেখিস।ওকে দেখবো তাহলে আমাকে কে দেখবে?বৈদুর্যের মুখে মুখ ঘষে সুভদ্রা বলল,ছি কাঁদেনা।তুমি কাঁদলে আমার কান্না পায় না বুঝি?
কথাটা ম্যাজিকের মত কাজ করে বৈদুর্য চোখের জল মুছে বলল,মিমিদি আমি তোমাকে কিছুতেই দুঃখ পেতে দেবো না।
ফোন বেজে উঠল।বৈদুর্য বলল,ঐ দেখো আবার কে শোক জানাতে ফোন করেছে।
সুভদ্রা বুঝতে পারে ইতিমধ্যে অনেকে ফোন করে দুঃখ জানিয়েছে তাতেই বৈদুর্য সব জেনেছে।রিসিভার তুলে বলল,হ্যালো?...হ্যা কাল রাতে...এইমাত্র শ্মশান থেকে ফিরছি...কি করবো বলুন...আচ্ছা রাখছি।সুভদ্রা ফোন রাখতে গিয়ে আবার দ্রুত বলে, স্বামীজী...হ্যালো স্বামীজী....একটা কথা জিজ্ঞেস করছি...আপনি বলেছিলেন ক্যাটস আইতে ক্ষতি হতে পারে...বিশ্বাসের কথা নয়..শুভ সময়...আর ক্ষতি হবে না...ভাল হবে?...ধন্যবাদ।
ফোন রেখে সুভদ্রা পায়জামা খুলে ফেলল, নীচে প্যাণ্টি ছিল না। বৈদুর্য গভীর বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।
--তোমার আবার কি হল? সুভদ্রা জিজ্ঞেস করলো।
--শ্মশানে গিয়ে তুমি স্নান করোনি?
--কি করে করবো,আমি কি জামা কাপড় নিয়ে গেছি?
--চলো আমি তোমাকে স্নান করিয়ে দিই।
সুভদ্রা ভাবে বুদ্ধুটার সব দিকে খেয়াল আছে।মজা করে বলে,বউয়ের দিকে খুব যত্ন?
বৈদুর্য এগিয়ে গিয়ে দু-হাতে পাঁজাকোলা করে তুলে স্তনের মধ্যে মুখ গুজে বলল,আমার জিনিস আমি যত্ন করবো নাতো কে করবে বলো?
---হি-হি-হি। কি করছো?শোনো শুধু বউ নয় বইয়ের দিকেও যত্ন করতে হবে।সিভিল সার্ভিসে তোমাকে বসতে হবে,ভুলে যেও না।
সুভদ্রা মনে করিয়ে দিল।
--স্টেট না ইন্ডিয়া লেভেল?
--আই এ এস।ইণ্ডিয়া লেবেল।
--তাই হবে।এবার মুখ বন্ধ করো।বৈদুর্য মিমিদির ঠোটে ঠোট চেপে ধরে।বাথরুমে নিয়ে শাওয়ারের নীচে দাড় করিয়ে সারা শরীর কচলে কচলে সুভদ্রাকে স্নান করায়,প্রতিটি খাজে খাজে আঙ্গুল ঘষেঘষে পরিস্কার করতে করতে চেরার কাছে এসে থেমে যায়।মুখ তুলে মিমিদির দিকে তাকাতে ওর মতলব বুঝতে পেরে সুভদ্রা বলে,ভেতরে আঙ্গুল ঢোকাবে না।
--যথা আজ্ঞা ধর্মাবতার,আঙ্গুল ঢোকাবো না। বৈদুর্য মুখ এগিয়ে নিয়ে যোণীর মধ্যে জিভ পুরে দিয়ে চুষতে শুরু করে।
--এ্যাই দুষ্টু কি হচ্ছে..ই-হি-ই-হি-ই-হি।বৈদুর্যর মাথা সবলে চেপে ধরে গুদের উপর।
শির শির করে ওঠে সুভদ্রার সারা শরীর দু-পা দু-দিকে ছড়িয়ে দিল।জেলা দায়রা আদালতের নিরপেক্ষ ম্যাজিষ্ট্রেট আইনের প্রতি দায়ব্দধ ভয় ভীতি লোভ যার সিদ্ধান্তকে নড়াতে পারে না সেই সুভদ্রা সেন নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না।আঃ-হাআআআ আআআআআ শব্দে কুলকুল করে জল ছেড়ে দিল।হাত দিয়ে বৈদুর্যের মাথা ঠেলে সরিয়ে দিতে চেষ্টা করে,বড় বড় শ্বাস পড়ে সুভদ্রার,দুহাত দিয়ে দুই উরু চেপে ধরে বৈদুর্য চুক চুক করে রস পান করতে থাকে।ফোন বেজে উঠলো,সুভদ্রা বলল,গা মুছিয়ে দাও।দ্যাখো কে ফোন করলো।
সুভদ্রা ফোন ধরতে এগিয়ে গেল,পিছনে বৈদুর্য তোয়ালে নিয়ে গা মোছাতে থাকে।
--হ্যালো? জয়ীদি....আগে ফোন করেছিলে...আমি ছিলাম না...সব শুনেছো...মানসিক অবসাদ আর কি...হ্যা যেতে তো হবেই...দিন কয়েক পর যাবো আদালতে...রাখছি?
ফোন রেখে বৈদুর্যকে বলল,জামা প্যাণ্ট পরো,ডিনার করতে বের হবো।
[/HIDE]
 
[HIDE]।।চত্বারিংশ পর্ব।।


সুনন্দা মুখার্জির অস্বাভাবিক মৃত্যু তীব্রভাবে আলোড়িত করে সুভদ্রাকে।কেউ না জানলেও সভদ্রা বুঝতে পেরেছে মাম্মী কেন চলে গেল? শ্বাশুড়ীর মর্যাদা নিয়ে এক ছাদের নীচে বৈদুর্যের সং বসবার করা সুনন্দার পক্ষে কত কঠিন সুভদ্রা অনুভব করতে পারে। বজ্রানন্দ একটা আভাস আগেই দিয়েছিল কিন্তু আঘাতটা এভাবে আসবে অনুমান করতে পারেনি।আবার মনে হয় মাম্মীতো আশির্বাদ করে গেছেন,ওর সম্পর্কে ছিল স্নেহ সিক্ত মন্তব্য। তাহলে হয়তো অতীতের সেই ঘটনার কথা ভেবে লজ্জায় নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে। মনের মধ্যে নানা ভাবনার সমাবেশ।দিব্যেন্দুর চেষ্টায় এই অবস্থাতেও বাড়ী বিক্রি হয়ে যায়। সব আসবাব নিয়ে গেছে শুধু বাপির লাইব্রেরীর বই সহ চারটে আলমারি আর একটা সেক্রেটারিয়েট টেবিল খান কয়েক চেয়ার সুভদ্রা নিয়ে এসেছে রাজার হাট ফ্লাটে।রাতের একটা সীমা আছে,রাত ফুরায় আসে দিন। সুর্য ওঠে আবার ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।বৈদুর্যের চেহারা দেখে সুভদ্রা স্থির করে ওকে আইপিএস পরীক্ষায় বসাবে।মিমিদি যা বলবে তাতেই রাজি।শুয়ে বসে কেটেছে কটা দিন,নীরবে সেবা করে গেছে মিমদির।অনেকদিন হয়ে গেল এবার বেরোতে হয়।
এজলাসের দরজায় লেখা,সুভদ্রা মুখার্জি(সেন), সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। ধর্ষনের মামলা চলছে। আসামীদের পক্ষে ডাক সাইটে এ্যাডভোকেট কেকে। তদন্ত রিপোর্ট পেশ হয়েছে। বারো বছরের একটি মেয়েকে একাধিক ব্যক্তি উপর্যুপরি পশুর মত বলাৎকার করে হাইমেন ফাটিয়ে দিয়েছে।কিছুক্ষণ পর সুভদ্রা চোখ তুলে তদন্তকারী অফিসারকে জিজ্ঞেস করেন,পুলিশে কতদিন আছেন?
--আজ্ঞে হুজুর বিশ বছর।
--আপনি কি গল্প লেখেন?
তদন্তকারী অফিসার হকচকিয়ে যান,মুখে কোনো কথা যোগায় না।
--কয়েকজন দুস্কৃতি তার মানে কি? দুজন না তিনজন?তাদের নাম কি? তারা ধরা পড়েনি? সনাক্তকরণ করিয়েছেন?
--আপনি বললে করাবো।
--আদালতকে সব বলতে হবে? তাহলে আপনি কি করবেন?
সরকারী কৌশুলি এগিয়ে এসে বললেন, মাই লার্ড আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আর কিছুদিন সময় দিন।
--আপনাকে কেউ প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে কি?
--না হুজুর।
--রিপোর্টে সব কিছু তথ্য সহ স্পেসিফিক্যালি মেনশন করতে হবে, কোনো কাহিনী বা গল্প আদালত শুনতে চায় না।আমি হতভাগ্য মেয়েটার জবানবন্দী শুনেছি,এত অল্প বয়সে যেভাবে পুংখ্যানুপুঙ্খ্য বর্ণনা করেছে তা ঐটুকু মেয়ের পক্ষে বানিয়ে বলা সম্ভব নয়।কোথায় বাস করছি আমরা?আসামীদের হাজির করুণ।
কুঞ্জকিশোর নাগ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন। আদালত চত্বরে একটা কথা প্রচলিত আছে, কেকে দিনকে অনায়াসে রাত করে দিতে পারেন। সেই কেকে চোখ তুলে সুভদ্রার দিকে তাকাতে পারেন না। সুভদ্রার কথাগুলো তার মর্মে গিয়ে আঘাত করে। পনের দিন পর আবার দিন পড়লো।
দূরে ছাপড়ার চাল একটা চায়ের দোকানে এক গেলাস চা নিয়ে বসে আছে কেকে।এদিকটায় উকিলরা বেশি আসে না,ভীড় কম।হঠাৎ সমরবাবু এসে বলল,আরে কুঞ্জদা এখানে একা একা?
--সারদার মেয়ের কথা ভাবছি।ম্লান হেসে বলল কেকে।কতই বা বয়স হবে আম্মার মেয়ের মতই হবে।
--সুভদ্রা সেনের কথা বলছেন?সবে তো এল কদিন যাক ধীরে ধীরে লাইনে এসে যাবে।হে-হে-হে।
সমরের হাসিটা ভাল লাগে না,কেকে অন্য কথা পাড়ে,আজ কোনো কেস নেই?
--শনিবার।এখন আবার কেস কি?গাড়ীতে বসেও ঘুরে ফিরে আসছে মেয়েটির মুখ। নিজেকে সমাজের একজন হিসেবে ভাবতে লজ্জায় মাথা হেট হয়ে আসে।মানুষ কিভাবে এমন পশুর মত কাজ করতে পারে? ওদের বাড়ীতে মা-বোন নেই,একবারও কি তাদের কথা মনে পড়ল না? শনিবার তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায় আদালতের কাজ।
তিনতলায় উঠে কলিং বেল টিপে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে ভ্রু কুচকে যায়,কি ব্যাপার কেউ নেই নাকি? চাবি ঘুরিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে অবাক,কোথায় গেল বৈদুর্য? মেজাজ আরও খারাপ হয়ে যায়। চেঞ্জ করে রান্না ঘরে ঢুকলো চা করতে। একটা কাজের লোক রাখা দরকার। সোফায় বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছে,এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে। মনে হচ্ছে বাবু এলেন। দরজা খুলে বৈদুর্যকে দেখে বিষম খাবার অবস্থা।উস্কোখুস্কো বিধ্বস্ত চেহারা,জামা ছেড়া।বৈদুর্য ঢুকে বলল,তুমি এসে গেছো?বিস্কুট নেই।
--তোমার জামা ছিড়লো কিভাবে?
--মিমিদি একটূ চা দেবে? আচ্ছা আমি নিয়ে নিচ্ছি।
--তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করেছি।
--সে অনেক ব্যাপার।
--আমি সেইটাই শুনতে চাই,কি ব্যাপার?
--সেইদিন এসেছিল না আনিস না কি নাম? আমি হাটতে হাটতে যাচ্ছি ওকে আমি কিছুই বলিনি বিশ্বাস করো, আমার কলার ধরে একটা বিশ্রী কথা বলল। আমি ভাল করে বললাম কলার ছেড়ে দিতে অমনি তোমার নাম করে গালি দিল।হাত মুচড়ে ঘা কতক দিতে বাছাধনের হাত থেকে ছাড়া পাই।
সুভদ্রা হাসবে না কাদবে,বুঝতে পারে না। এ কার পাল্লায় পড়লো। নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,তোমার পরীক্ষা দিয়ে কোনো লাভ নেই।
--একথা বলছো কেন?আমি কি পড়ছি না?
--এভাবে গুণ্ডামী করে বেড়ালে পুলিশ ভেরিফিকেশনে আটকে যাবে।
বৈদুর্য মনে মনে কি চিন্তা করে বলল,তুমি কথাটা ঠিক বলেছো। লোকটা থানায় ডায়েরী করতে পারে।জেল খাটাবার হুমকি দিচ্ছিল।
--ঠিক আছে মুখ হাত ধুয়ে পড়তে বোসো।আমি চা দিচ্ছি।যেই বেরিয়েছি অমনি মস্তানি করতে বেরিয়ে পড়লে। আমি কোথায় ভাবছি একা একা কি করছে,তাড়াতাড়ি চলে এলাম।ফিরে দেখি বাবুর পাত্তা নেই।
বৈদুর্য চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে কোনো কথা বলে না। সুভদ্রা বলল,হা করে দাঁড়িয়ে থাকলে কি বললাম কানে যায় নি?
বৈদুর্যকে চা দিয়ে সুভদ্রা খাবার করতে রান্না ঘরে ঢুকলো। বৈদুর্য বুঝতে পারে কাজটা ঠিক হয়নি।কিন্তু লোকটা গায়ে পড়ে গোলমাল করতে এল। মিমিদির দুঃখ পেয়েছে,বৈদুর্যর মন খারাপ।না বেরোলেই ভাল হত। পড়তে পড়তে মাথা ধরে গেছিল তাই ভাবলো একটু ঘুরে এলে হয়তো ভাল লাগবে।বিস্কুটও ফুরিয়ে গেছে।
সুভদ্রা খাবার নিয়ে এসে দেখলো গুম হয়ে বসে আছে বৈদুর্য। এত বলা ঠিক হয়নি। টেবিলে খাবার দিয়ে বলল, নেও খেয়ে নেও।
বৈদুর্যর মাথা বুকে চেপে জিজ্ঞেস করে,বকেছি বলে রাগ হয়েছে?
বৈদুর্য মুখ তুলে বলল,তুমি তো আমার ভালর জন্যই বকেছো।রাগ করবো কেন? মিমিদি আমি আর এরকম করবো না।
--লক্ষ্মী ছেলে।সুভদ্রা দুগাল ধরে চুমু খেল।
ফোন বাজছে,সুভদ্রা ফোন ধরতে গেল।রিসিভার কানে লাগাতে শুনতে পেল, দিদিভাই কাল তোমার ওখানে যাচ্ছি।
জিনি কাল আসবে,একটু মাংস আনা দরকার। ফ্রিজ খুলে দেখলো কি কি আছে। বৈদুর্যর কাছে গিয়ে বলল, খাওয়া দাওয়ার পর বের হবো,বাজার করতে হবে। কলিং বেল বেজে উঠলো।আবার কে এলো?
বৈদুর্য উঠতে যাচ্ছিল সুভদ্রা বলল,তুমি পড়ো,আমি দেখছি।
দরজা খুলে অবাক,দে-বাবু সঙ্গে একটি ছেলে নাকের উপর ব্যাণ্ডেড লাগানো।ছেলেটিকে মনে হল কোথায় দেখেছে।জিজ্ঞেস করলো, কি ব্যাপার দে-বাবু?
দে বাবু দাত বের করে বললেন,একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। ম্যাডাম এর নাম আনিস, স্যারের কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছে।
--ওর নাকে কি হয়েছে?
--কিছু না,সামান্য কেটে গেছে। টিটেনাস ইঞ্জেকশন নিয়েছে।
সুভদ্রা বুঝতে পারে একেই শ্রীমান মেরেছে। জিজ্ঞেস করল,পুলিশে ডায়েরী করেনি?
--পাগল?গোবিন্দ শুনে খুব ক্ষেপে গেছে।ওইতো পাঠালো স্যারের কাছে ক্ষমা চাইতে,স্যার নেই?
--তুমি ওর কলার ধরেছিলে?
--আমি বুঝতে পারিনি,ভুল হয়ে গেছে।আমি উনার কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি।
--ঠিক আছে আমাকে বললেই হবে। মিটে গেলেই ভাল।
ছেলেটি চলে যেতে আশুবাবুকে বলল সুভদ্রা,এভাবে যাকে তাকে আনবেন না।
--না ম্যাডাম গোবিন্দ এত করে বল্ল....।
গোবিন্দ কে,নামটা শোনা-শোনা লাগছে।যাকে মারলো সেই ক্ষমা চাইতে এসেছে ভেবে মজা লাগে সুভদ্রার।বাসায় ফিরে শাস্তি,ওর কথা ভেবে বাইরে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না আবার বাসায় ফিরে ওর থেকে দূরে দুরে থাকতে হয়।ও ঘরে গেলেই হাবিজাবি গল্প শুরু করবে।তবু মাঝে মাঝে পড়ানোর আছিলায় যায় না তা নয়।লক্ষ্য করেছে হা-করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।কখনো গালে কি লেগেছে হাত দিয়ে মুছে দেয়,কখনো বিছানায় ছাই পড়বে দেখে এ্যাস্ট্রে এগিয়ে দেয়।সুভদ্রা দেখেছে ওর মেমারী খুব শার্প।সুভদ্রা কখনো ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখে কখনো লাইব্রেরি ঘরে বসে আইনের বই ঘাটাঘাটি করে কিন্তু মন পড়ে থাকে ঐ ঘরে যে ঘরে বৈদুর্য পড়ছে।

ক্রমশঃ]

[/HIDE]
 
[HIDE]
।।একচত্বারিশ পর্ব।।


সুভদ্রা দরজা বন্ধ করে পাশের ঘর থেকে বৈদুর্যকে আড়াল থেকে মুগ্ধ হয়ে দেখে।কেমন নিরীহ ভাবে বইতে ডুবে আছে গুণ্ডাটা। কিছুক্ষণ আগে মারামারি করে জামা ছিড়ে এসেছে দেখলে কে বলবে? সুভদ্রার ভুল হয় নি,একটাই দুশ্চিন্তা সারাদিন বাড়ীতে একা একা থাকে,কে ওকে সামলাবে? কড়া হতে হবে একদম প্রশ্রয় দেওয়া চলবে না।মনে মনে লজ্জা পেল এভাবে সব সময় নজরে নজরে রাখা যেন একটা বাচ্চা ছেলে। ঘড়ি দেখল আটটা বেজে গেছে,বেশি বেলা করলে বাজার উঠে যাবে। বৈদুর্যর পাশে গিয়ে দাড়ালো। মাথায় হাত রাখতে ঘুরে জড়িয়ে ধরে বৈদুর্য বলল,মিমিদি আমি আর এরকম করবো না।
--ঠিক আছে।এখন চলো বাজার করতে হবে।
বৈদুর্য উঠে তৈরী হতে থাকে। সুভদ্রার রাগ হয়,মানুষটা পাথর নাকি?নারীদেহ কি তাকে বিচলিত করে না? বাজার করতে যাবো বলতেই ওকে ছেড়ে দিয়ে অমনি জামা পরে বাজার যাবার জন্য তৈরী হচ্ছে। সুভদ্রা বলল, আমাকে একটা চুমু দাও।সেদিনের মত ঠোট কামড়ে ছিড়ে দিও না।
--ঠিক আছে দিচ্ছি।সুভদ্রার দু-গাল ধরে আলতো করে ঠোট স্পর্শ করে।
--এ আবার কি? মনে হচ্ছে খুব তাড়া আছে?
--আচ্ছা ভাল করে দিচ্ছি।বৈদুর্য এবার সুভদ্রাকে জড়িয়ে ধরে ঠোট মুখে নিয়ে চুষতে লাগলো। সুভদ্রা মনে মনে ভাবে এ কোন বলদকে নিয়ে তাকে কাটাতে হবে? সব কি ওকে বলে বলে করাতে হবে?নিজের কোনো ইছে-অনিচ্ছে থাকবে না?বয়স হচ্ছে অথচ ছেলে মানুষী গেল না। ঠোট ছাড়িয়ে নিয়ে বলল, আচ্ছা তোমার ভাল লাগেনি?
বৈদুর্য কিছু না বলে মাথা নীচু করে মিটমিট করে হাসে।
--হাসির কি হল? কি জিজ্ঞেস করলাম শোন নি?
--হুউউম।
--তাহলে তুমি জোর করো না কেন?
--আমি জানি সময় হলেই তুমি দেবে তাই জোর করিনা।
সব কথার উত্তর ঠোটের ডগায় সাজানো।সুভদ্রার ভালই লাগে ছেলে মানুষ লোকটাকে নিয়ে বেশ সময় কাটে।সন্তান পালনের হাতে খড়ি যেন।
বাজারে গিয়ে পাঁঠার মাংস ভেটকি মাছেরফিলে আরও কিছু কেনাকাটা করে একটা হোশিয়ারী দোকানে ঢুকে কালো আর খয়েরী রঙের দুটো টি-শার্ট কিনলো।বৈদুর্যর যা ফিগার দারুণ মানাবে। তারপর ওষুধের দোকানে গিয়ে কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল কিনে গাড়ী স্টার্ট করতে বৈদুর্য জিজ্ঞেস করে,মিমিদি তোমার শরীর খারাপ?
--কেন?
--তুমি ওষুধ কিনলে।তোমার শরীর খারাপ আমাকে বলোনি তো?অভিমানী সুরে বলল বৈদুর্য।
সুভদ্রা আড়চোখে দেখল মুখ গম্ভীর করে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। হাসি পেয়ে গেল,বা-হাতে গলা ধরে নিজের দিকে টেনে ফিসফিস করে বলে,তুমি কি জিজ্ঞেস করেছো কিসের ওষুধ?
--থাক আমি জানতে চাই না।বলতে হবে না।
--এ্যাই বোকা অত রাগ দেখাবে নাতো? যাতে সন্তান না এসে যায় সেই পিল।
বৈদুর্য চোখ বড় বড় করে মিমিদির দিকে তাকিয়ে থাকে। মনে পড়ল সন্তানহীনতার জন্য গোদেলিয়েভ ম্যামের মনে কি হাহাকার।সুভদ্রা জিজ্ঞেস করলো, কি ভাবছো?
--তার মানে তুমি সন্তান চাও না?
--আমি তা বলিনি। আমার সন্তান জন্মে দেখবে তার বাবা বেকার সেটা আমি চাই না।তুমি পাস করো তারপর দেখা যাবে।
--এই ব্যাপার?আমাকে বললেই হতো,ওষুধ খাবার কোনো দরকার ছিল না।
--তোমার না থাক আমার দরকার আছে।আজ আমরা এক বিছানায় ঘুমাবো।
বৈদুর্যর অভিমান কেটে যায় এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল,আজ আর তাহলে পড়বো না?
--আঃ কি হচ্ছে,এ্যাক্সিডেণ্ট করাবে নাকি? না পড়ার কি আছে?
বৈদুর্যের মন খুশিতে ভরপুর।আজ মিমিদির সঙ্গে ঘুমোবে।মিমিদির গায়ের গন্ধে এক অনির্বচনীয় মাতাল করা নেশা। মাতৃ গর্ভে শিশু যেমন নিরাপদ নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকে মিমিদির সঙ্গে গায়ে লাগিয়ে থাকলে অন্ধকারে তেমন যেন মনে হয় কেউ বুঝি নিরাপত্তার চাদরে তাকে মুড়ে রেখেছে।
--মিমিদি একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
--আবার কি কথা?
--মাছ কেটে কেটে আনলে কেন?
--ফিশ ফ্রাই করবো।ওকে ফিলে বলে।
--ফিশ ফ্রাই? আমার খুব ভাল লাগে।
--কাল করবো,আজ তৈরী করে রাখবো জিনি এলে সকালে ভাজবো।
গাড়ী চালাতে চালাতে সুভদ্রা কত কথা ভাবে। পাশে বসে আছে তার স্বামী ওর মধ্যে স্বামীত্ব ফলাবার চেষ্টা নেই বাধ্য ছেলের মত বসে আছে। বৈদুর্য যদি পাস করে সরকারী অফিসার হয় তাহলেও কি বদলাবে না? সেই ছবিগুলো মনে মনে কল্পনা করে সুভদ্রা বেশ আমোদ অনুভব করে। ছাত্র হিসেবে ও খুব ভাল,আগে যেমন দেখেছে পাস করার পরও সেই তেমনি আছে। ইচ্ছে করছে ওকে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে।নিজেকে সংযত করে বেশি প্রশ্রয় দিলে পেয়ে বসবে। পাস না করা অবধি দমন করতে হবে ইচ্ছেকে।
বৈদুর্য সব জিনিসপত্র নামিয়ে রাখল ডাইনিং টেবিলের উপর। সুভদ্রা টি-শার্ট দুটো ওর হাতে দিয়ে বলল,পরে দেখো।
বৈদুর্য বাধ্য ছেলের মত জামা খুলে কালো টি-শার্ট গায়ে দিয়ে দেখলো মিমিদি তার দিকে তাকিয়ে মুখে দুষ্টু হাসি।
--হাসছো কেন?
--একেবারে হিরো--দারুণ লাগছে।সুভদ্রা খিলখিল করে হেসে উঠলো।
বৈদুর্য লজ্জা পায়।কাল জিনির আসার কথা।এক সময় জিনি তাকে হিরো বলে ঠাট্টা করত।একই স্কুলে জিনির সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তো। ক্লাশের বা-দিকের বেঞ্চে মেয়েরা আর ডানদিকে ছেলেরা বসতো।সব ছেলেই চাইতো বেঞ্চের বা-দিক ঘেষে বসতে। তাই নিয়ে চলতো নিত্য রেষারিষি।একমাত্র অনিমেষ স্কুলে আসতো বাইক নিয়ে,ওর লক্ষ্য ছিল জিনি।শুভর ভাল লাগতো না কেননা জিনি ওদের পাড়ার মেয়ে।রমণী কত রমণীয় সে ব্যাপারে বৈদুর্যের কোনো ধারণা ছিল না। নিরীহ ভীতু প্রকৃতি,অবশ্য ক্ষেপে গেলে হিতাহিত জ্ঞান থাকতো না।
--হা করে দাঁড়িয়ে কি ভাবছো? যাও পড়তে বোসো, রান্না হলে ডাকবো।
--মিমিদি একটা কথা বলবো?কিভাবে ফিশ ফ্রাই বানায় আমাকে শেখাবে?
সুভদ্রা বুঝতে পারে না পড়ার ছল। চোখ পাকিয়ে বলে,পরে শিখিয়ে দেবো,এখন পড়তে বোসো।
অগত্যা বৈদুর্য নিজের ঘরে গিয়ে বই নিয়ে বসলো।জিনি ছিল খুব ফাটুশ,কোনো ছেলেকে পাত্তা দিতনা।একদিন স্কুল ছুটির পর জিনি ওর বন্ধুদের সঙ্গে দল বেধে ফিরছে। কোথা থেকে অনিমেষ ফটফটিয়ে এসে বাইক নিয়ে জিনির পাশে দাঁড়িয়ে বলল,উঠে এসো বাড়ী পৌছে দিচ্ছি।বাইক থাকতে হেটে যাবে কেন?
পিছনে ছিল বৈদুর্যর সঙ্গে শুভ। ব্যাপারটা ঠিক খেয়াল করেছে,ছুটে গিয়ে বলল, এ্যাই অনি যেখানে যাচ্ছিস সেখানে যা।
শুভর এই আগ বাড়িয়ে যাওয়া বৈদুর্যের ভাল লাগে না। সে বিরত করার জন্য এগিয়ে গেল।
--তুই কেন এর মধ্যে নাক গলাচ্ছিস,যেখানে যাচ্ছিস সেখানে যা।অনিমেশ বলল।
--জিনি আমাদের পাড়ার মেয়ে।অনেকদিন ধরে দেখছি কিছু বলছি না।
--কি করবি তুই?ফোট বেশি ঝামেলা করিস না।
--না গেলে কি করবি তুই?
কথা শেষ হবার আগেই অনিমেষ এমন আচমকা ধাক্কা দিল শুভ টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেল।মেয়েগুলো খিলখিল করে হেসে উঠলো।কি হল বৈদুর্যর কে জানে,এগিয়ে গিয়ে বাইকে এক লাথি কষাতে অনিমেষ বাইক সমেত মাটিতে পড়ে গিয়ে একেবারে হতভম্ভ,বৈদুর্যর মুখের দিকে তাকিয়ে কোনো কথা বলার সাহস পেল না। মাটি থেকে উঠে বাইকে স্টার্ট দিয়ে দ্রুত চলে গেল। বৈদুর্য মাটি থেকে শুভকে তুলে বলল,কি দরকার ওদের সঙ্গে লাগতে যাওয়ার?
--কি রে হিরোগিরি দেখাবার জন্য অনিকে শিখিয়ে আনিস নি তো?
বৈদুর্য পিছনে তাকিয়ে দেখল কথাটা বলে জিনি খিলখিল করে হাসছে। জিনির বিয়ে ঠিক হলে কার্ড দিয়ে বলেছিল,এ্যাই হিরো আসবি কিন্তু।আজ মিমিদি সেই কথা বলল।কাল জিনি আসছে সেদিনের কথা হয়তো আজ তার মনে নেই।কাল যখন দেখবে খুব অবাক হবে।
সুভদ্রা ঘরে ঢুকে টেবিলে একটা ফিশ ফ্রাই প্লেটে করে এগিয়ে দিয়ে বলল, দেখো তো কেমন হয়েছে?
বৈদুর্য তাকিয়ে দেখল মিমিদির একটা ব্রেসিয়ার গায়ে কোমরে বাধা টাওয়াল।হাতে জ্বলন্ত সিগারেট। সুভদ্রা কোমর জড়িয়ে ধরে বৈদুর্য জিজ্ঞেস করলো ,তুমি খাবে না?
--বললাম তো কাল করবো।সুভদ্রা সিগারেটে টান দিল।
--এখন শুধু আমার জন্য করেছো?
--উফস এত কথা বলে?খেয়ে বলো কেমন হয়েছে।
বৈদুর্য বুঝতে পারে তার জন্যই একটা ভেজেছে,ফিশ ফ্রাই তুলে মিমিদির মুখের কাছে ধরে বলল,তুমি এক কামড় খাও।
সুভদ্রা নীচু হয়ে সামান্য একটু কামড়ে বলল,তাড়াতাড়ি খেয়ে এসো।আমি ভাত বাড়ছি।



ক্রমশঃ]
[/HIDE]
 
[HIDE]।।দ্বাচত্বারিশ পর্ব।।

টেবিলে খাবার সাজিয়ে সুভদ্রা অপেক্ষা করে।বৈদুর্য এসে অবাক হয়ে একবার টেবিল আরেকবার মিমিদিকে দেখে বলল,এর মধ্যে এতসব করেছো?বসতে বসতে বলল,মিমিদি একটা লোক থাকলে তোমার সুবিধে হত। কোর্ট থেকে ফিরে তুমি যখন রান্না ঘরে ঢোকো আমার খুব কষ্ট হয়।
--একটা লোক রাখার কথা আমিও ভেবেছি। রান্না করার জন্য না,রান্না করতে আমার ভাল লাগে।তুমি তো বললে না ফিশ ফ্রাই কেমন হয়েছে?
--একেবারে দোকানের মত।সঙ্গে একটু স্যালাড থাকলে দারুণ হতো।
--তাড়াতাড়িতে ঐটাই আনতে ভুলে গেছি।অবশ্য পেঁয়াজ আছে।ইচ্ছে করে দিইনি মুখে গন্ধ হত।
মুখে গন্ধ শুনে বৈদুর্যর কান লাল হয়।মিমিদির মুখের গন্ধ ভাল লাগে।তাহলেও খেয়ে একবার দাত ব্রাশ করতে হবে। খেয়েদেয়ে মিমিদি বাথরুমে ঢোকার আগে বলল,মুখ ধুয়ে পড়তে বসবে।
বিয়ের পর থেকে শান্তি নেই খালি শাসন।একটা দিন না পড়লে কি ক্ষতি?বেচারি সারাদিন এত পরিশ্রম করছে মুখের উপর না বলতে সঙ্কোচ হয়। বৈদুর্য নিজের ঘরে গিয়ে পড়তে বসলো। সুভদ্রা সাবান মেখে স্নান করে বেরিয়ে সিগারেট ধরিয়ে লাইব্রেরীতে ঢোকার আগে বৈদুর্যকে বলল,আমাকে একটূ পড়াশোনা করতে হবে।সময় হলে শুতে ডাকবো।
সিগারেটের গন্ধ বেশ লাগে,বৈদুর্য বলল, মিমিদি একটা সিগারেট দেবে?
সুভদ্রা অবাক হয়ে ভাবে সিগারেট খাবার ইচ্ছে হল কেন? অবশ্য পুরুষ মানুষের মুখে সিগারেট দেখতে ভালই লাগে।হাতের জ্বলন্ত সিগারেট বৈদুর্যকে দিয়ে বলল,এইটা খাও গোটা খাওয়ার দরকার নেই। সুভদ্রা লাইব্রেরীতে ঢুকে জার্নালগুলো ঘাটতে থাকে।ধর্ষনের মামলায় বিভিন্ন আদালতের রায়গুলোতে চোখ বোলাতে লাগল।সুপ্রীম কোর্টের একটি নির্দেশিকায় চোখ আটকে যায়। ড্রয়ার থেকে মার্কার বের করে দাগ দিতে দিতে বইয়ের ভাজে একটি চিঠি নজরে পড়ে। বাপিকে লেখা মাম্মীর চিঠি। রোমাঞ্চবোধ করে,চিঠির এক জায়গায় এসে ভাল করে পড়ে। "....প্রশ্নটা অতৃপ্তির নয়, মানুষের মধ্যে যে তেজ থাকে সারাদিনের কাজের মাধ্যমে তার বিরেচন হয়। নানা কাজে ব্যস্ততায় সময় কাটে তোমার কিন্তু আমার অলস সময়ে সে সুযোগ কোথায়? সঞ্চিত তেজ রুপান্তরিত হয় কামে...।" নীচে স্বাক্ষর নন্দা, চিঠিটা ভাজ করে সরিয়ে রাখে সুভদ্রা। ঘড়ি দেখল কাটা বারোটার ঘর ছাড়িয়ে এগিয়ে চলেছে। অনেক রাত হল বৈদুর্যকে এবার ছুটি দিতে হয়। টাওয়াল খুলে রাখে,এখন কেবল প্যাণ্টি আর ব্রেসিয়ার।নিজের দিকে চোখ বোলায়।কাল আবার সকাল সকাল উঠতে হবে। সুভদ্রা বই-পত্তর গুছিয়ে রেখে বৈদুর্যর ঘরে গেল।
পাশে দাঁড়িয়ে নীচু হয়ে কপালে চুমু দিয়ে বলল,এখনো হিরো সেজে বসে আছো?ধড়াচুড়ো খুলে এবার শোবে এসো।
লাইট নিভিয়ে বৈদুর্য টি-শার্ট পায়জামা খুলে ফেলে,আলো থাকলে লজ্জা করে। মিমিদিকে কোলে করে বিছানায় নিয়ে শুইয়ে দিল।
সুভদ্রা প্যাণ্টি টেনে নীচে নামিয়ে দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে বলল,একটু আদর করবে না? কোমরের দু-পাশে হাটু গেড়ে বসে বৈদুর্য ঘাড় গলা ম্যাসাজ করতে থাকে। বগলের নীচে হাত দিতে সুভদ্রার শরীর কেপে ওঠে,পালটি খেয়ে চিত হয়ে যায়। বৈদুর্য বুকে মুখ ঘষতে
ঘষতে একসময় একটি স্তন মুখে নিয়ে চুষতে লাগল।সুখে সুভদ্রার শরীর ছটফটিয়ে উঠল।টেনে স্তন বের করে অপরটি মুখে ঢুকিয়ে দিল। বৈদুর্য স্তন ছেড়ে নাভিতে ঠোট রাখে। অন্ধকারে দেখা না গেলেও সারা শরীরে রক্তের প্লাবনে সুখানুভব প্রতিটি কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে। তারপর ঘুরে বৈদুর্য মাথা নীচু করে গুদে মুখ রেখে চুষতে লাগল। পাছা সুভদ্রার মুখের কাছে।সুভদ্রা হাত দিয়ে বৈদুর্যের ল্যাওড়া চেপে ধরে ছাল ছাড়িয়ে মুণ্ডিটা নাকে মুখে ঘষতে থাকে। একসময় দু-হাত দিয়ে বৈদুর্যের কোমর জড়ীয়ে ধরে উচু হয়ে পুরো ল্যাওড়া মুখে পুরে নিল।সুভদ্রা বুঝতে পারে তার শরীরের মধ্যে কেমন হচ্ছে। দু-পা মেলে দিল টান টান করে কুল কুল করে জল বেরিয়ে গেল।মুখ থেকে ল্যাওড়া বের করে সুভদ্রা বলল, দেখ যেন বিছানায় না পড়ে।
বৈদুর্য চুষে সমস্ত রস চুকচুক করে খেয়ে ফেলে। তারপর চেরার মুখে জিভ বুলিয়ে চুইয়ে চুইয়ে বেরিয়ে আসা রসটুকুও চেটে নিল।সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,বিছানায় পড়েনি তো?
বৈদুর্য মুচকি হেসে বলল,সব খেয়ে নিয়েছি।
সুভদ্রা লজ্জা পেয়ে যায়। রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করে এবার কি করে গুণ্ডাটা।
বৈদুর্য জিজ্ঞেস করলো, এবার করবো?
বলদটার কথায় গা জ্বলে যায় সুভদ্রা বলে,আমি জানি না।
বৈদুর্য জানে না করলে মুখে কিছু না বললেও মনে মনে রেগে যাবে মিমিদি।পিল খেয়ে নিয়েছে খালি খালি?মিমিদিকে হাসিখুশি দেখতেই ভাল লাগে,মুখ গোমড়া করে থাকলে তারও খুব খারাপ লাগে। আবার উলটো হয়ে পায়ের কাছে গিয়ে পাছার নীচে হাত দিয়ে টিপতে লাগলো। হাটু ভাজ করে বুকে চেপে ধরে।
--কি হচ্ছে পেটে লাগছে।
হাটূদুটো দুদিকে সরিয়ে কোমর নীচু করে হাত দিয়ে চেরা বের করে ল্যাওড়ার মুণ্ডিটা মুখে লাগালো।সুভদ্রার বুক কেপে ওঠে বলল,আস্তে আস্তে ঢোকাবে।
গুদ চিরে ল্যাওড়া পুরপুর করে ঢুকতে থাকে। সুভদ্রার বুক ঠেলে উঠল,দুহাতে বিছানা আকড়ে ধরলো। দাতে দাত চেপে চিবুক ঠেলে উঠলো।
--মিমিদি কষ্ট হচ্ছে?
--নাঁআআআ তুমি ঢো-কা-ওওওওওও।
বৈদুর্যের তলপেট মিমিদির তলপেটে সেটে গেল। সুভদ্রা বড় করে শ্বাস ছাড়ে। শরীরের মধ্যে কিছু একটা ঢুকেছে বেশ বুঝতে পারে। বৈদুর্য দুহাত মিমিদির বগলের তলা দিয়ে ঢুকিয়ে টেনে মিমিদিকে ঊঠিয়ে বসালো। সুভদ্রা দুহাতে বৈদুর্যের গলা জড়িয়ে ধরল। মিমিদির পাছার তলায় হাত দিয়ে বৈদুর্য মৃদু মৃদু ঠাপাতে থাকে। একসময় উষ্ণ ঘন বীর্য সুভদ্রার জরায়ুতে পড়তে সুভদ্রাও কুলকুল করে জল ছেড়ে দিল।বৈদুর্য গুদে নীচে হাত দিয়ে উপচে পড়া বীর্য আজলা করে ধরে। তারপর বিছানা থেকে মিমিদিকে তুলে বাথরুমে নিয়ে গেল। হাত ধুয়ে মিমিদির গুদ জল দিয়ে ধুয়ে কোলে করে আবার বিছানায় শুইয়ে দেয়। সুভদ্রা দুহাতে বৈদুর্যকে জড়িয়ে শুয়ে থাকে।

একপাশে তিন্নি ঘুমিয়ে সুতন্দ্রা পাশ ফিরে জিজ্ঞেস করল,কাল তুমি যাবে না?
--যাবো।তুমি তিন্নিকে নিয়ে সকাল সকাল চলে যেও,আমি একবার সাইট ঘুরে যাবো।দিব্যেন্দু বলল।
--রোববারও সাইট?
--এতো দশটা-পাঁচটার অফিস নয় যে গেলাম আর এলাম।
সুতন্দ্রার মনে হল দিব্যেন্দু কিছু ভাবছে।টেনে নিজের দিকে ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করলো, তুমি কি ভাবছো বলতো?
--তোমার দিদিভাই বেশ সেয়ানা কিন্তু....।
--কিন্তু কি?আর শোনো তুমি দিদিভাইয়ের সম্বন্ধে ওভাবে কথা বলবে না। কি সেয়ানাগিরি করেছে?
--একটা বেকার ছেলে...তুমি এত বড় পদে চাকরি করো...আরে বাবা আমায় বললে আছা-আচ্ছা ছেলের লাইন লাগিয়ে দিতাম...।
সুতন্দ্রা বুঝতে পারে দিব্যেন্দু কি বলতে চাইছে।বৈদুর্যকে আগে থেকেই চিনতো সুতন্দ্রা-হাবাগোবা ধরণের কিন্তু সাহস আছে।কথাটা তারও মনে হয়েছে তবু দিদিভাইয়ের প্রতি তার গভীর আস্থা।

ঘুম ভেঙ্গে সুভদ্রা দেখল বুকে মুখ গুজে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে বৈদুর্য। গায়ের উপর থেকে আলগোছে হাত সরিয়ে দিয়ে উঠে বসে দেখল নিমিলীত আঁখি যেন মাকালীর পদতলে দিগম্বর ভোলানাথ। দুই উরুর মাঝে দীর্ঘ পুরুষাঙ্গ মুলে কুঞ্চিত বালের ঝোপ।সারা শরীর শিরশির করে উঠল,ভেবে অবাক লাগলো কাল রাতে এটা তার শরীরে বিদ্ধ হয়েছিল।নিজেকে খুব সুখী অনুভব করে। মন একটা দুষ্টু বুদ্ধি এল।খাট থেকে নেমে একটা ছোটো কাঁচি আর সেভার মেশিন নিয়ে এল।
কাচি দিয়ে ছেটে সেভার চালিয়ে বস্তিদেশ একেবারে সাফা করে দেওয়ায় লিঙ্গটি আরও দীর্ঘ মনে হচ্ছে। মম-মম করে পাশ ফিরলো বৈদুর্য।ঘুমের মধ্যেও মিমিদি?হাসি ফুটলো সুভদ্রার মুখে। চাদর দিয়ে ঢেকে সুভদ্রা পোষাক পরে হাত মুখ ধুয়ে রান্না ঘরে ঢুকলো চা করতে। টুং টুং করে আটটা বাজলো ঘড়িতে।
ঘুম ভেঙ্গে চোখ মেলে তাকালো বৈদুর্য।সম্বিত ফিরতে বুঝতে পারে মিমিদি উঠে পড়েছে। রান্না ঘর থেকে শব্দ আসছে। খেয়াল হয় সে একেবারে উলঙ্গ তাড়াতাড়ি উঠে পায়জামা পরতে গিয়ে দেখল বস্তিদেশ একেবারে পরিষ্কার।মিমিদির কাজ ভেবে লজ্জায় লাল হয় মুখ। --ঘুম ভেঙ্গেছে?চা নিয়ে ঢুকলো সুভদ্রা।
লাজুক মুখে হাত বাড়িয়ে চা নিল বৈদুর্য।
--শোনো চা খেয়ে হাত-মুখ ধুয়ে পড়তে বোসো।কদিন পর পরীক্ষা মনে আছে তো?
বৈদুর্য চুপচাপ চায়ে চুমুক দেয়।মনে মনে ভাবে 'তুমি যখন আছো ভোলে কার বাপের সাধ্যি।'
--আর শোনো পরীক্ষার কথা কাউকে বলতে যেওনা--।
--পাগল পাস করব না ফেল করব তাই নিয়ে হাসাহাসি শুরু হবে।
সুভদ্রা ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে,তার মানে?
বৈদুর্য বুঝতে পারেনা সে কি এমন বলেছে?হেসে বলল,পাস করে সারপ্রাইজ দেব।
--আগে কি বল্লে?ফের ঐ কথা বললে ঠাষ করে এক চড় দেব।
বৈদুর্য মনে মনে হাসে মিমিদির মুখে একথা অনেক শুনেছে কোনোদিন একটা চড়ও মারেনি।
ফোন বাজতে সুভদ্রা ফোন ধরে বলে, বলুন দে-বাবু....আমার জন্য নয়...স্যারকে ড্রাইভিং শেখানোটাই আসল উদ্দেশ্য...আমাকে পৌছে দিয়ে তারপর...হ্যা-হ্যা..অনেক ধন্যবাদ... কিছু মনে করিনি মানে ঐসব লোক আমার বাসায় যাতায়াত করলে নানা কথা উঠতে
পারে.... হ্যা রাখছি?সুভদ্রা ফোন রেখে আবার রান্না ঘরে ঢুকলো।টোষ্টারে রুটী ঢুকিয়ে দুটো ফিশ ফ্রাই ভাজতে গিয়ে মনে এল মম-মম মানে মা-মা নয়তো? বৈদুর্যর কি মায়ের কথা মনে পড়ছিল?কথাটা মনে হতেই ইচ্ছে করছে ওকে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে আসে।
চোখ ঝাপসা হয়ে এল।
--মিমিদি একটা কথা বলব?
--উফস খালি কথা?বলো কি কথা?
--আজ তো জীনিরা আসছে।আমাকে যদি দেখে পড়ছি তাহলে সব জেনে যাবে মানে--।
--এখন পড়ো।ওরা এলে দেখা যাবে।কালি চালাকি তাই না?
বৈদুর্য ব্যাজার মুখে পড়ায় মন সংযোগ করে।

ক্রমশঃ]
[/HIDE]
 
[HIDE]।।ত্রয়োশ্চত্বারিশ পর্ব।।

মিমিদির দাগ দেওয়া চ্যাপটারগুলো প্রায় সবই পড়া হলেও বৈদুর্য সে কথা মিমিদিকে বলে না। কেন না বললেই আবার একগাদা দাগ দিয়ে দেবে। পরীক্ষা দেবে সে অথচ মিমিদি এমন করছে যেন তারই বেশি চিন্তা। বেকার স্বামীর জন্য মিমিদির মনে কোনো আক্ষেপ নেই তো? কথাটা মনে হতেই বৈদুর্য সঙ্কুচিত বোধ করে। সুভদ্রা দুটো প্লেটে ফিশ ফ্রাই আর কয়েক টুকরো স্যাকা রুটি নিয়ে ঢুকলো।পেয়াজ কুচি করে এনেছে। বৈদুর্য হেসে বলল, পেয়াজ এনেছো?
--আর কিছু নেই তো,পরে বেরিয়ে শশা নিয়ে আসতে হবে।সুভদ্রা সাফাই দিল।
--না মানে পেয়াজ খেলে মুখে গন্ধ হবে না?
একটু সময় নেয় সুভদ্রা তারপর কি বলতে চাইছে বৈদুর্য বুঝতে পেরে বলল,খুব বুদ্ধি? এই বুদ্ধি পড়াশোনায় দেখিও। প্লেট পাশে সরিয়ে রেখে সুভদ্রা উঠে বৈদুর্যর দুগাল চেপে ঠোট মুখে পুরে সবেগে চুষতে লাগলো। তারপর জিভ দিয়ে ঠোট মুছে বলল, খুশি?
--তুমি খুশি হলেই আমি খুশি। বৈদুর্য বলল।
সুভদ্রা কথাটা শুনে কেমন উদাস হয়ে যায়। তারপর আপন মনে খেতে থাকে। মিমিদির উদাসভাব ভাল লাগে না,বৈদুর্য জিজ্ঞেস করে, মিমিদি তুমি কি ভাবছো?
বৈদুর্যের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল সুভদ্রা,তুমি পাস করলে আমি খুব খুশি হবো।
--আমি বেকার বলে তোমার খুব লজ্জা তাইনা?
সুভদ্রা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে বৈদুর্যকে তারপর বলে,এসব কথা তোমার মাথায় কে ঢোকালো? লজ্জা পাওয়ার মত কোনো কাজ আমি করিনা।ফের একথা যেন না শুনি।
মিমিদির মুখ দেখে ঘাবড়ে যায় বৈদুর্য,বুঝতে পারে মিমিদি বিরক্ত হয়েছে। একথা না বললেই ভাল হতো। হাল্কাভাবে বলা কথাটায় কেউ আহত হতে পারে ভাবেনি। বৈদুর্য উঠে সুভদ্রার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,মিমিদি আমি এমনি বলেছি,তুমি রাগ কোর না।
সুভদ্রা হেসে ফেলে সত্যিই ছেলে মানুষ, কবে যে পরিণত হবে? সুভদ্রা বলল,আমার কথা ভাবিনা তোমার জন্যই বলছি।আমি পছন্দ করি মানুষের মত মানুষ।আর কিছু আমি চাই না।তোমার কথা ভেবেই যা করার করছি নিজের জন্য নয়।তুমি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সবার সামনে মাথা উচু করে দাড়াও,আমি চাই।তোমাকে কেউ ছোটো করলে আমি কত কষ্ট পাই তুমি জানোনা। আমার কাছে তুমি যা তাই কিন্তু সবার বিচারের মানদণ্ড এক নয়।
বৈদুর্য বুঝতে পারে মিমিদি কি বলতে চাইছে। তার ধারণা ছিল মিমিদি খুব বড়,খুব উদার কিন্তু এত গভীর তা আগে বোঝেনি।মাটিতে বসে বৈদুর্য মিমিদির কোলে মাথা রেখে বলল,মিমিদি তোমাকে ছাড়া আমি বাচবো না। মা নেই,অনেক কষ্ট নিয়ে চলে গেছে আমার মা।কিন্তু তোমাকে আমি কিছুতেই কষ্ট পেতে দেব না।
বাইরে কলিং বেল বেজে উঠল। সুভদ্রা বলল, ছেলে মানুষী করে না ওঠো। দেখি মনে হচ্ছে জিনি এল।দরজা খুলে সুভদ্রা বলল, আরে আপনি?
আশুবাবু বললেন,ম্যাডাম কাল আমি কলেজ স্ট্রিটে গেছিলাম আপনি বলেছিলেন বইয়ের কথ।একটা বই এগিয়ে দিলেন। জেনারেল নলেজের বইটা হাতে নিয়ে সুভদ্রা বলল,সত্যি দেবাবু আপনি যা করছেন....।
--আহা তাতে কি হয়েছে,দরকার হলেই বলবেন। সাহেব আসার কথা একটু তাড়া আছে।আমি আসি ম্যাডাম?
সুভদ্রা দরজা বন্ধ করে ভিতরে গিয়ে বৈদুর্যকে বলল,শোনো ক্যাজুয়ালি এই বইটার উপর চোখ বোলাবে। কি হল মুখটা প্যাঁচার মত হয়ে গেল যে?
--লক্ষীর বাহন প্যাঁচা নাতো কি হাঁস হবে?
--তুমি আগে বলেছিলে সরস্বতি এখন লক্ষী হয়ে গেলাম? বৈদুর্যের অপ্রস্তুতভাব দেখে হেসে বলল,এখন মন দিয়ে পড়ো।
সুভদ্রা প্লেট দুটো তুলে নিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল।বেলা হল রান্না শুরু করতে হয়।এখন মাংসটা চাপিয়ে দেওয়া যাক।জিনিরা আসলে ভাত চাপানো যাবে।মাম্মী আজ নেই,তখন ভাল করে বোঝেনি আজ বুঝতে পারছে।মেয়েদের কি দরকার মুখ ফুটে বলার আগেই মাম্মী বুঝতে পারতো।বাপি সকাল বেলা বেরিয়ে যেত বাড়ীতে থাকলে আইনের বইয়ে মুখ ডুবিয়ে বসে থাকতো।সুনন্দা মুখারজির সেদিকেও ছিল তীক্ষ্ণ নজর।কে কি ভাবছে কে জানে সুভদ্রার মনে কোনো আক্ষেপ নেই,সে তৃপ্ত।মনে হল কলিং বেল বাজলো বেরিয়ে দরজা খুলতে তিন্নি মাছি বলে জড়িয়ে ধরলো।সুভদ্রা তিন্নিকে কোলে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,দিব্যেন্দু আসেনি?
--ও একটু পরে আসবে। ব্যাস এর মধ্যেই বেশ সাজিয়েছো দিদিভাই।
একবার ব্যালকনিতে গিয়ে ফিরে এসে বলল,দারুণ হয়েছে।দিদিভাই তোমার বরকে দেখছি না,ও কোথায়?
সুভদ্রা জানে স্কুলে বৈদুর্যর সঙ্গে পড়তো জিনি। কিভাবে নেবে ওকে কে জানে। মৃদু স্বরে বলল সুভদ্রা,ঐ কোনার ঘরে কি করছে কে জানে।তুই আগে চেঞ্জ কর।
--দাড়াও হিরোটা আমার দিদিভাইকে কি করে ফাসালো দেখি।
--ওকি কথা? দ্যাখ জিনি তুই আর ছেলে মানুষ না।দিব্যেন্দু আসবে তো?
ফোন বেজে উঠল।সুভদ্রা ফোন ধরতে অন্য দিক থেকে দিব্যেন্দুর গলা পাওয়া গেল। হ্যা একটু আগে এল,তুমি কখন আসছো?...এগারোটা?..ঠিক আছে দেরী কোরনা..কথা বলবে?...আচ্ছা রাখছি?
মনে পড়ল মাংসের কথা।তিন্নিকে নামিয়ে দিয়ে বলল,যাও সোনা দেখো মা কোথায় গেল।
--আমি তোমার সঙ্গে নান্না করবো।তিন্নি মাসীকে ছাড়তে চায় না। অগত্যা তিন্নিকে নিয়ে রান্না ঘরে গেল সুভদ্রা। রান্না করছে নুন লঙ্কা হলুদ যখন যেটে দিতে হবে দিচ্ছে কিন্তু মন পড়ে আছে অন্যদিকে,কি করছে জিনি? মাংস নামিয়ে মাছ গুলো ভেজে গ্যাস নামিয়ে দেখল তিন্নি ব্যালকনিতে একা একা খেলা করছে।চুপি চুপি বৈদুর্যর ঘরের দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করে কি করছে?
জিনিকে দেখতে পেয়ে বই না সরিয়ে বলল,ভিতরে এসো।
--স্কুলে আমাকে দেখে তোর কেমন লাগতো?
--খারাপ লাগবে কেন?
--বাইকঅলা ছেলেটাকে কেন মেরেছিলি--আমার জন্য?
--শুভকে অপমান করলো কেন? শুভ কি ওর গায়ে হাত দিয়েছিল?
--এ্যাই হিরো বই রাখতো।আজ রবিবার কিসের এত পড়াশোনা?
--তোর দিদিকে বল না সে কথা।
--তুই তো ওর স্বামী শাসন করতে পারিস না?
--বহুকাল আগে থেকেই পুরুষরা মেয়েদের শাসন করে এসেছে তাতে কি ভাল হয়েছে? একটু অন্য রকম করে দেখি না কি হয়?
সুভদ্রার চোখে জল চলে এল।সুতন্দ্রা ভাবে দিব্যেন্দুর কথা।মাতাল হয়ে মুখ খারাপ করে, একদিন তার গায়েও হাত তুলেছিল। বৈদুর্যর যা শক্তি তার কাছে দিব্যেন্দু কিছুই না। মুচকি হেসে বলল,তার চেয়ে বল না তুই সুভদ্রা মুখার্জিকে ভয় পাস।
--ভয়? বৈদুর্য মুচকি হাসে।ভয় কিনা জানিনা তবে সব সময় চিন্তা করি আমার জন্য কখনো যেন ও অপমানিত বা অসম্মানিত না হয়।
--খুব সিনেমার ডায়লগ ঝাড়ছিস।
সুভদ্রা ঢুকে পড়ে বলল, জিনি আয় তোর জল খাবার করছি।
সুভদ্রার সঙ্গে বেরিয়ে গেল জিনি। স্কুলে কেমন মেনিমুখো ছিল বুঝতেই পারে নি। বাইরে থেকে মানুষ চেনা সহজ নয়। দিদিভাই ওকে কিভাবে জোটালো? সুতন্দ্রা বলল,দিদিভাই তুমি বৈদুর্যকে ভালই ট্রেনিং দিয়েছো।
--তুই আমার বরকে নাম ধরে ডাকবি না।
--বারে ও তো আমার ক্লাস মেট। ওকে কি জামাইবাবু বলতে হবে?
--সম্পর্কে কে তো তাই হয়।দিব্যেন্দু আমাকে দিদি বলে।
--ঠিক আছে আমি বৈদুর্যকে জাম্বু বলবো--খুশি তো?
--খেয়ে দ্যাখ কেমন হয়েছে?সুভদ্রা ফিশ ফ্রাই ভেজে টেবিলে রাখে। তিন্নিকে নিয়ে টেবিলে বসিয়ে দিল।
তিন্নি বলল,মাছি আমি আলেকটা খাবো।
--দেবো আগে ওটা খেয়ে নেও। সুভদ্রা একটা প্লেটে ফ্রাই নিয়ে বৈদুর্যর ঘরে গেল।
--আবার?তুমি খাবে না?
--ফ্রিজে আছে,তুমি খাও।
বৈদুর্য ফ্রাই তুলে মিমিদির মুখের সামনে নিয়ে বলল,এক কামড় খাও।
সুভদ্রা এদিক-ওদিক দেখে নীচু হয়ে ফিশ ফ্রাইয়ে কামড় দিয়ে উড়নি দিয়ে মুখ মুছে চলে গেল।
কলিং বেল বাজতে সুতন্দ্রা দরজা খুলে দিল।দিব্যেন্দুকে দেখে তিন্নি বলল,মাছি বাপি এসেছে বাপিকে দাও।
সুভদ্রা কলিং বেলের শব্দ শুনেছিল,তাড়াতাড়ি রান্না ঘরে গিয়ে ফ্রাই ভেজে দিব্যেন্দুকে এগিয়ে দিতে দিব্যেন্দু বলল, টোষ্ট গুলো তুলে নিন।
সুভদ্রা টোষ্ট তুলে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, কেমন আছো?
--প্রচণ্ড কাজের চাপ। সাইটে না গেলে কাজ হবে না,সব শালা ফাকিবাজ।কথাগুলো বলে দিব্যেন্দু এদিক-ওদিক দেখে জিজ্ঞেস করে, দিদি আপনার মিষ্টারকে দেখছি না।বাড়ীতে নেই নাকি?
সুভদ্রা বুঝতে পারে কৌতুহলের কারণ,কাকে বিয়ে করেছে,বিয়ে করে ঠকেছে কি না? স্মিত হাসি মিশিয়ে সুভদ্রা বলে, না বাড়ীতেই আছে,নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। গলা চড়িয়ে বলল,বৈদুর্য ফ্রি হলে একবার এদিকে আসবে?
দিব্যেন্দু অপেক্ষা করে কখন নাটকের পর্দা উঠবে?কিছুক্ষণের মধ্যে একমুখ হাসি নিয়ে বৈদুর্য এল।দিব্যেন্দুকে না চিনলেও অনুমানে বুঝতে অসুবিধে হয় না,জিজ্ঞেস করলো, কেমন আছেন?
আচমকা এ প্রশ্নের জন্য সম্ভবত তৈরী ছিল না সামলে নিয়ে দিব্যেন্দু বলল,ভাল, আপনি ভাল আছেন?
সুতন্দ্রা অস্বস্তি বোধ করে দিব্যেন্দুকে বিশ্বাস নেই কি বলতে কি বলে।বৈদুর্যের প্রতি তার ধারণা খুব ভাল নয়।
--আপনি তো কিছু করেন না,আসুন না আমার ব্যবসায়।একজন বিশ্বাসী লোকের খুব দরকার।
সুতন্দ্রা এই ভয় পেয়েছিল আড়চোখে দিদিভাইয়ের দিকে দেখল।সুভদ্রা মজা উপভোগের মত দিব্যি মিটমিট করে হাসছে।বৈদুর্য হেসে ফেলে।
দিব্যেন্দু বলল,আপনি হাসছেন? আমি কিন্তু সিরিয়াসলি বলছি।
--ব্যাবসা করতে গেলে লোক চিনতে হয়।চিনলে আমাকে এই প্রস্তাব দিতেন না।
কথাটার মধ্যে একটা অন্য অর্থ আছে সেটা সুভদ্রার বুঝতে অসুবিধে হয় না। দিব্যেন্দু বুঝেছে বলে মনে হল না।
--কেন প্রস্তাবটা খারাপ কি?দিব্যেন্দু জিজ্ঞেস করে।
--আমি প্রস্তাব নয় মানুষটার কথা বলেছি।ব্যাবসায় আমার এলেম কতদুর আমি জানি। ছোটোখাটো একটা চাকরির চেষ্টায় আছি।
--হ্যা-হ্যা-হ্যা একেবারে আমার বিপরীত টিপিক্যাল বেঙ্গলি।আমার আবার বাধাধরা চাকরি গোলামি পোষায় না। কথাটা বলে দিব্যেন্দু বেশ তৃপ্তি বোধ করে।
--আর আমাকে বলছেন গোলামি করতে?বৈদুর্য মজা করে বলে।
শালা ট্যাকস-ট্যাকস কথা আছে? চেহারা দ্যাখো নব কাত্তিক,কাজ নেই কাম নেই বোকাচোদা বউয়ের পয়সায় বসে বসে গিলছে আবার লপচপানি,দিব্যেন্দুর গা জ্বালা করে। এত লেখাপড়া জেনেও দিদি কেন যে এমন ভুল করলো?একদিন টের পাবে তাতে দিব্যেন্দুর বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
খাওয়া দাওয়া শেষ হতে হতে অনেক বেলা হয়ে গেল।সুভদ্রা ইতিমধ্যে তিন্নিকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।
সুতন্দ্রা বেসিনে মুখ ধুতে ধুতে ভাবে ভালয় ভালোয় মিটলো কোনো অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। দিদিভাই যা ভাল বুঝেছে তাই করেছে দিব্যেন্দুর সব ব্যাপারে মাথা ঘামানোর দরকার কি? বৈদুর্যটা আগের মত ক্যাবলা নেই,কেমন বিজ্ঞের মত কথা বলছিল। সুভদ্রা বলল, এবার একটু গড়িয়ে নে জিনি।
--না দিদি,এবার বেরোতে হবে।অনেক কাজ জমে আছে। কথাটা বলল দিব্যেন্দু।
সুতন্দ্রা কিছু একটা বলতে গিয়েও দিব্যেন্দুর দিকে তাকিয়ে বলে না।মনে মনে ভাবে কাজ না ছাই,খালি বড় বড় কথা। সুভদ্রার নজর এড়ায় না সে বলল, তাহলে চলো তোমাদের পৌছে দিয়ে আসি।
--হ্যা সেই ভাল।বৈদুর্য বলল।
সুভদ্রা অবাক হয়ে দেখল বাবু মুহুর্তের মধ্যে সেজে গুজে প্রস্তুত।প্যাণ্টের উপর কালো টি-শার্ট পরেছে বেশ লাগছে দেখতে। সুভদ্রা মজা করে জিজ্ঞেস করে,তুমি আবার কোথায় চললে?
--আমি যাবো না?বৈদুর্যের মুখটা কালো হয়ে যায়।
সুভদ্রা মনে মনে হাসে।খালি ফাকি দেবার ছল বলল,ঠীক আছে চলো।
সামনে বৈদুর্য আর গাড়ীর পিছনে দিব্যেন্দু আর ঘুমন্ত তিন্নিকে কোলে নিয়ে সুতন্দ্রা বসেছে। দিব্যেন্দু ভেবেছিল একান্তে দিদির সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে কিছু কথা বলবে সঙ্গে কাত্তিকটা আসায় বিরক্ত হয়।
সল্টলেকে নামিয়ে দিতে দিব্যেন্দু জিজ্ঞেস করে,দিদি নামবেন না?
--আজ না ভাই।বাসায় লোক আসার কথা আছে।

ক্রমশ]

[/HIDE]
 
[HIDE]।। চতুশ্চত্বারিশ পর্ব।।


দীর্ঘ ন'-মাস সময় যেন মুহুর্তে কেটে গেল।বৈদুর্য সেন র‍্যাঙ্ক ভাল করতে না পারলেও ১৯৭৯ ব্যাচে সুযোগ পেয়েছে। ট্রেনিংযের পর বর্ধমানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার পদে এখন বহাল,ভাল গ্রেড থাকলে হয়তো ককাতার কাছাকাছি কোথাও পোষ্টিং হতো।সুভদ্রার একবার মনে হয়েছিল উপর মহলে যোগাযোগ করে যদি কিছু করা যায় শেষ মুহুর্তে বিবেকের সাড়া না পেয়ে বাস্তবকে মেনে নিয়ে বিরত থেকেছে।একজন বারাসাত আরেকজন বর্ধমান ভাল লাগে? বৈদুর্যকে একা ছেড়ে রাখা এই মুহুর্তে সুভদ্রার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়।বৈদুর্য কি ছেলে মানুষ নাকি? না-হোক রাতে তাহলে সুভদ্রা ঘুমোতেই পারবে না।দরকার হলে চাকরি ছেড়ে বর্ধমান কোর্টে প্রাকটিশ করবে।এই সঙ্কটময় মুহুর্তে একটাই উপায়ের কথা মনে পড়ল।সুভদ্রা বর্ধমানে বদলি হবার আবেদন করবে,যতদিন না হয় ছুটি নিয়ে বৈদুর্যর কাছে চলে যাবে।যতক্ষণ বাড়ীতে থাকে বিড়ালের
মত গায়ে গায়ে লেগে থাকতো।এখন দিনগুলো অসহ মনে হয় তার কাছে।সেই মিমিদি-মিমিদি ডাক শোনার জন্য আকুলতা তাকে কুরে কুরে খায় সর্বক্ষণ।
গত সপ্তাহে ৩৭৬ ধারায় মামলা সেই সঙ্গে ১২০বি ২০১ ৩৪২ উপধারায় দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ খুন ও প্রমাণ লোপের চেষ্টায় অভিযুক্ত শেখ আনসার হাসান আলির যাবজ্জীবন এবং সুবল সর্দার আমিনুদ্দিন নূর মহম্মদের সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণার পর সিডিজেএম বীরেন্দ্র প্রতাপ সাবধানে চলাফেরা পরামর্শ দিয়েছেন।ওরা অবশ্য উচ্চ আদালতে গেছে রায়ের বিরোধীতা করে।সুভদ্রা এ সময় বৈদুর্যের অভাব বোধ করে।ভয়ে নয় তাহলে স্যারের নিরাপত্তা রক্ষীর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিত না।ফোন বাজছে সুভদ্রা রিসিভার তুলে কানে লাগিয়ে বলল,হ্যালো?
--ম্যাডাম সেন?অন্যপ্রান্ত থেকে মহিলা কণ্ঠ শোনা গেল।
--সুভদ্রা সেন,আপনি?
--স্যার আপনার সঙ্গে কথা বলবেন,একটু ধরুন।
সুভদ্রার বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায়।স্যার? নিজে ফোন করতে পারো না,দেখাচ্ছি মজা।
--তুমি কোর্টে যাওনি?ওখানে না পেয়ে এখানে ফোন করলাম।
--ঐ মহিলা কে? সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে।
--তোমার কি শরীর খারাপ?কোর্টে যাওনি কেন?
--আগে আমার কথার উত্তর দাও।ঐ মহিলা কে?
বৈদুর্য আড়চোখে মিস সরকারকে দেখে বলল,দেখা হলে বলবো।তুমি ভাল আছো তো?
--দেখা হলে বলবো।সুভদ্রা বলল।
--কেমন আছো মিমিদি? না বললে আমি কাজ করতে পারবো না।
সুভদ্রার মন ভরে গেল,বলল,আমি ভাল আছি খুব ভাল আছি।শোনো এবার কাজের কথা শোনো।কয়েকদিনের মধ্যে একটা পার্টির ব্যাবস্থা করছি।তুমি কি কাউকে বলবে?
--কে আমি?বৈদুর্য ভাবে কে আছে তার বলার মত? মনে পড়ল দেবী পার্বতী ছেলেদের পৃথিবী ঘুরে আসতে বললে কার্তিক পৃথিবী পরিভ্রমণে বেরিয়ে পড়ল।আর গণপতি তার জনণীকে একবার প্রদক্ষিণ করেছিল।মিমিদি ছাড়া তার কেই বা আছে।
--কি কেউ আছে?সুভদ্রা তাগাদা দিল।
--আমার মিমিদি থাকলেই সবার থাকা হবে।
সুভদ্রা বাম হাতের করতলে চোখ মোছে।
--হ্যালো?বৈদুর্য সাড়া না পেয়ে জিজ্ঞেস করে।
--আচ্ছা দিন ঠিক করে তোমাকে জানাবো।এখন রাখছি বলে ফোন কেটে দিল।
বৈদুর্য অবাক হয়,ফোন রেখে দিল কেন? কেউ কি এসেছে?সুভদ্রা সোফায় বসে পড়ে, আকাশের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত।চোখ ছাপিয়ে জল এল কেন? তার কি মনে হয়েছিল বৈদুর্য উচ্চ পদে নিযুক্ত হয়ে আর আগের মত নেই?অবচেতনে ছিল কোনো অপরাধবোধ?মনে মনে বলে তুমি আমার বৈদুর্য মণি একদম বদলাও নি আগের মতই উজ্জ্বল।
জিনি তো আছেই তাছাড়া অনেকে বিষয়টা সেলিব্রেট করার জন্য খুব ধরেছে। জয়ীদি বলছিল বিয়েতে ফাকি দিয়েছো। এবার ছাড়ছি না।চেম্বারে এসে কেকে অভিনন্দন জানিয়ে গেছেন। সুভদ্রা স্থির করে একটা পার্টি দেবে। সবাই ধরেছে বলে নয় বৈদুর্যর যাতে মনে না হয় তার মিমিদি এই উন্নতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না।সুভদ্রা জানে যে যাই বলুক যতক্ষণ তার মিমিদি কিছু না বলছে বৈদুর্যর মনে শান্তি নেই।
দেবাবুকে ফোন করলো সুভদ্রা।অফিসে নেই এলে জানাবে। কাগজ কলম নিয়ে একটা তালিকা করতে বসলো।ড্রিঙ্কের ব্যবস্থা রাখবে যদি কেউ খেতে চায়।মি.দাগা তো খান বিপি সিংও আছেন।বেশি ঝামেলা নয় বিরিয়ানি চিকেন চাপ আইস ক্রিম--।দেবাবুর সঙ্গে কথা
বলে ঠিক করবে ভেবে কলম বন্ধ করে রাখে।
রবিবার।আশুবাবু সকালে এসে কিছু জিনিস পত্র রেখে গেছেন।দিব্যেন্দু জিনিরা এখানেই খাওয়া দাওয়া করেছে। জনা কুড়ি-বাইশ লোকজনের আসার কথা সন্ধ্যে বেলা।সুভদ্রা ভাবছে যার জন্য এসব করা সে সময়মতো আসবে তো?সকালে ফোন করে শুনলো বাইরে
বেরিয়েছে। ফিরলে যেন ফোন করে বলে দিয়েছিল কিন্তু আর কখন ফোন করবে?সন্ধ্যের একটু আগে জিনি এসে চুপি চুপি বলল,দিদিভাই ও কিন্তু একটূ খেতে পারে তুমি কিছু মনে কোর না।
বোনের দিকে তাকিয়ে হাসলেন সুভদ্রা। সবার প্রথমে এলেন জয়ন্তীদি।হেসে জড়িয়ে ধরে বললেন,কনগ্রাচুলেশন।একদিকে বোতল দেখে স্বামীকে বললেন,বীরু দোন্ত ক্রশ লিমিট।
বিপি সিং বোতলের লেবেল দেখে বললেন,মিসেস সেন এগূলো কি করে যোগাড় করলেন?
--একজন আমাকে খুব হেল্প করেছেন।
-- আমার কোনো প্রেজুদিস নাই দেশি-বিদেশিতে ফ্যারাক দেখি না। বিপি সিং স্রাগ করলেন।
গোদেলিয়েভ ম্যাম ঢুকতে সুভদ্রা এগিয়ে গিয়ে বললেন,আসুন মিসেস চ্যাটার্জি,খুব ভাল লাগলো।
--হয়ার ইজ বাইদুজ?
--ও এসে পড়বে।
--হি ইজ ভেরি নাইস গায় লাভিং অলসো।সোফায় বসতে বসতে গোদেলিয়েভ বললেন।
সেদিন দুপুরের কথাটা মনে পড়ে গেল। সুভদ্রা সময় মতো না পৌছালে লাইফটা স্পয়েল হয়ে যেতো। কেকে এলেন,শেষদিকে সুভদ্রার সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠোতা হয়েছিল। কেকে জিজ্ঞেস করলেন,আর জয়েন করবেন না চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত?
--কি করবো বলুন,তাহলে আমাদের আলাদা থাকতে হবে।
--আপনাকে খুব মিস করবো।
বিপি সিং আড়চোখে দেখেন একজন অর্ডিনারি এ্যাডভোকেটের সঙ্গে মিসেস সেন কথা বলছেন।তার খুব ভাল লাগে না। চারজন বয় ঘুরে ঘুরে সার্ভ করছে। রাত বাড়তে থাকে বৈদুর্যের দেখা নেই সুভদ্রা নিজেকে অপমানিত বোধ করেন। সিদ্ধান্ত করেন মনে মনে যদি
না আসে তাহলে ছুটি বাতিল করে কালই তিনি আদালতে যাওয়া শুরু করবেন।মি.দাগার কি কাজ আছে দুঃখ প্রকাশ করে চলে গেলেন। কেকেও চলে গেলেন।
গোদেলিয়েভ জয়ন্তীদি ছাড়া সবাই রাত হচ্ছে দেখে একে একে চলে গেল।ঠিক সেই মুহুর্তে হাজির বৈদুর্য সেন। বিপি সিং জয়ন্তীদিকে নমস্কার করে বৈদুর্য বলল,আমি খুব দুঃখিত।একটা ঝামেলায় আটকে গেছিলাম।
--নো প্রবলেম।ঝামেলা তো জানান দিয়ে আসে না।আজ আসি মি.সেন আরেকদিন বরং আলাপ করা যাবে।
ওরা চলে যেতে বৈদুর্যর নজরে পড়ল গোদেলিয়েভ হাসি হাসি মুখে তার দিকে তাকিয়ে, কাছে গিয়ে বলল,ম্যাম ভাল আছেন?
--তুমি আনেক দেরি করেছো।আয় এ্যাম ভেরি প্লিজড।আমি জানতাম তুমি একদিন সাইন করবে।
বৈদুর্য দেখল মিমিদি নেই।জিনিকে দেখে জিজ্ঞেস করে,দিদিভাই কোথায়?
--ঘরে শুয়ে আছে,শরীর ভাল না।
--তোমরা আজ থাকবে?
--পাগল।তিন্নিকে নিয়ে শাশুড়ি মা একা রয়েছে।
--দিদিভাইয়ের কাছ থেকে গাড়ীর চাবিটা নিয়ে এসো।
দিব্যেন্দুকে ধরে ধরে নীচে নামালো বৈদুর্য।পিছনে দিব্যেন্দু আর জিনি সামনে বৈদুর্যের পাশে গোদেলিয়েভ ম্যাম।সল্ট লেকে জিনিদের নামিয়ে দিয়ে গাড়ী চলল শেল্টারের দিকে। গেট অবধি গোদেলিয়ভকে এগিয়ে দিয়ে বৈদুর্য এবার রাজার হাটের পথে। মিমিদির শরীর খারাপ কি করবে এত রাতে?
সুভদ্রা সেন বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে আছে।বৈদুর্য পিঠে হাত রেখে জিজ্ঞেস করে,মিমিদি তোমার শরীর খারাপ লাগছে?
এক ঝটকায় হাত সরিয়ে দিয়ে সুভদ্রা বলল,গায়ে হাত দেবে না।রাত দুপুরে এসে দরদ দেখানো হচ্ছে।
বৈদুর্য হাত সরিয়ে নিল।বুঝতে পারে মিমিদি রাগ করেছে শরীর খারাপ একটা বাহানা। নিজের মনে বলে,এই মহিলা একজন বিচারক।রায়দানের আগে ফাঁসির আসামীর বক্তব্যও মন দিয়ে শোনা উচিত।তা নাহলে নিরপেক্ষ বিচার প্রহসনে রুপান্তরিত হতে বাধ্য।
সুভদ্রা ঘুরে বৈদুর্যের দিকে তাকিয়ে বলল,শুনি ফাঁসির আসামীর বক্তব্য।
--আমি একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে তদন্ত সেরে ফিরছি কেন না আমাকে জরুরী ডাকে উপস্থিত হতে হবে। দুপাশে ধান ক্ষেত মাঝখানে জাতীয় সড়ক ধরে ছুটে চলেছে আমার জিপ।একটি সুমো গাড়ী দ্রুত আমার গাড়ীকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। ড্রাইভার বলল স্যার
এই গাড়ীটা একটা মোটর বাইককে ধাক্কা দিয়ে চলে গেল,অনুসরণ করবো?এক মুহুর্ত সময় নিয়ে বললাম,মোটর বাইকের কাছে চলো।গাড়ী ঘুরিয়ে কিছুটা যেতে নজরে পড়ল ধান ক্ষেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে একটি পুরুষ একটী মহিলা কিছুটা দূরে একটি শিশু কন্যা।
--আ-হা রে! কত বয়স হবে?
--দুই কি তিন?
--ইস এতো দুধের শিশু।তুমি কি করলে?
--নীচে নেমে শিশুটিকে কোলে নিয়ে জিপে শুইয়ে দিলাম।ড্রাইভারের সহায়তায় অন্য দুজনকে জিপে তুলে রওনা হলাম কাছা কাছি হাসপাতালে।
--ব্যাস দায়িত্ব শেষ?বাড়ীর লোককে খবর দাওনি?
--এরা কারা কোথা থেকে আসছে কোথায় যাচ্ছিল জ্ঞান না ফেরা অবধি কিছুই জানার উপায় নেই।বাচ্চাটির খুব একটা লাগেনি--।
--থ্যাঙ্ক গড।সুভদ্রা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
--ওদের জ্ঞান ফিরলো সন্ধ্যের সময়।মাথায় হেলমেট ছিল তাই রক্ষে।ছেলেটি তার দিদিকে বাইকে করে শ্বশুরবাড়ী পৌছে দিচ্ছিল।বর্ধমান শহরে দিদির শ্বশুরবাড়ী।
--একটা ফোন করতে কি হয়েছিল?সুভদ্রা বলল।
--চারদিকে গাছপালা মাঠে ধান ক্ষেত বহুদুরে গ্রাম একটা দোকান নেই যে দোকানে গিয়ে ফোন করবো।
--বাজে কথা বোলো না বর্ধমান থেকে ফোন করতে পারতে? চেঞ্জ করো,আমি বাথরুম থেকে ফিরে খাবার দিচ্ছি।সুভদ্রা বাথরুমে ঢুকে গেল।

ক্রমশঃ

[/HIDE]
 
[HIDE]।।পঞ্চচত্বারিশ পর্ব।।


বৈদুর্য সেন বাথরুমে ঢুকে শাওয়ার খুলে দিল।যাক বাবাঃ মিমিদির রাগ কমানো গেছে। গোদেলিয়েভ গাড়ী থেকে নামার আগে হাতের পাঞ্জায় উরুতে চাপ দিয়েছিল।আঙ্গুলে আঙ্গুলে জড়ানো ছিল আকুতি।বুঝেও না বোঝার ভান করে কেন না তাহলে ম্যামের চাহিদা বেড়ে যেতো। একটা কথা ভেবে মন খারাপ হয়ে গেল মিমিদিকে ছেড়ে আবার চলে যেতে হবে নির্বাসনে।স্নান করে শরীরটা ঝরঝরে লাগছে,খিধেও পেয়েছে।ফোন বাজছে, কেউ ধরছে না কেন? মিমিদি কি বের হয়নি বাথরুম থেকে?তাড়াতাড়ি গা মুছে বৈদুর্য বেরিয়ে এসে দেখল,মিমিদি ফোন ধরেছে। পরণে প্যান্টি আর ব্রেসিয়ার কি সুন্দর লাগছে মিমিদিকে।
--তোমার ফোন।মিমিদি ফোন এগিয়ে দিল।
বৈদুর্য ফোন ধরে বলল,হ্যালো?...ধরা পড়েছে?....ছেড়ে দিলেন কেন?...দেখেছেন কি অবস্থা হয়েছে বাইকের,এতো এ্যাটেম টু মার্ডার.....কি করে জামীন হল?....মন্ত্রী থানায় এসেছিল...ফোন করেছে?ঠিক আছে আপনার আর কি করার আছে?
..রাখছি? বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিল বৈদুর্য।
--কি ব্যাপার মুড অফ?
--সেই সুমোটাকে ধরেছিল গাড়ীতে ড্রাইভার ছাড়া জনা পাচেক লোক ছিল শাসক দলের কর্মী।এক মন্ত্রী তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে।
--এ দেশের এই রীতি ভেবে আর কি করবে?এসো খেতে এসো।সুভদ্রা বলল।
--মিমিদি তোমার চেহারা একটু খারাপ হয়ে গেছে।
--একা থাকি দেখা শোনা করার লোক নেই,খারাপ হবে না? মিমিদির গলায় অভিমানের সুর।
বৈদুর্যের মন খারাপ হয়ে যায়।আবার কালই তাকে ফিরে যেতে হবে। বৈদুর্য টেবিলে এসে বসল।প্লেটে খাবার সাজিয়ে একটা বোতল এনে রাখল।সেদিকে দেখে বৈদুর্য জিজ্ঞেস করে,কি ব্যাপার মিমিদি এটা?
--আজ একটু খাবো।মিমিদি বলল।
--আমাকেও খেতে হবে?
--তোমার ইচ্ছে।মিমিদি বলল।
--ঠিক আছে দাও এক চুমুক দিয়ে নিই।বৈদুর্য হেসে বলে।
সুভদ্রা গেলাসে পানীয় ঢালতে ঢালতে বলল,দেখো আবার নেতিয়ে পড়ে রাতটাকে মাটি কোরনা।
মিমিদি কি বলছে বুঝতে পেরে মনে মনে খুশি হয়।আজ রাতে তার মানে হবে।খাওয়া
দাওয়া শেষ।মিমিদি গোছগাছ করে ঘরে এসে জিজ্ঞেস করলো,গোদেলিয়েভকে পৌছে দিয়ে এসেছো?
--হ্যা জিনিকে নামিয়ে দিয়ে তারপর গোদেলিয়েভ ম্যামকে শেল্টারের নীচে নামিয়ে দিলাম।
--কিছু বলল না?
--কি বলবে?
--নামিয়ে দিলে নেমে চলে গেল?
বৈদুর্য হেসে ফেলে মিমিদি কি জানতে চায় বুঝে বলল,গাড়ীর ভিতর মুখ ঢূকিয়ে কিস করলো।
সুভদ্রা হেসে বলল,ও কিছু না।এটা ওদের আদব কায়দা।
বৈদুর্য আচমকা কোমর জড়িয়ে ধরে মিমিদিকে বুকে তুলে নিল।সুভদ্রা বৈদুর্যের কাধে মুখ রেখে বলল,কি হচ্ছে পড়ে যাবো।বৈদুর্য মুখ ঘষে মিমিদির বুকে।সুভদ্রা বৈদুর্যের ঠোট মুখে নিয়ে চুষতে থাকল।খাটের কাছে নিয়ে মিমিদিকে চিত করে শুইয়ে দিল।খাট থেকে পা
ঝুলছে। বৈদুর্য নীচু হয়ে মিমিদির বুকে তলপেটে মুখ ঘষে।প্যাণ্টি নামিয়ে গুদে চুমু খায়। সুভদ্রা চোখ নামিয়ে দেখে পাগলের কীর্তি। একসময় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হাপাতে হাপাতে জিজ্ঞেস করে,মিমিদি তুমি আজ ওষুধ খেয়েছো?
সুভদ্রা খাটে পা তুলে বিছানায় শুয়ে বলল,ওষুধ খাবো কেন?
--খাওনি তো? বৈদুর্য খাটে উঠে সুভদ্রার দু-পা দুদিকে সরিয়ে দিয়ে মাঝখানে হাটুগেড়ে বসলো।
সুভদ্রা দেখল বৈদুর্যের বাড়ার চারদিকে ছাটা ঘাসের মত বাল গজিয়েছে।তার মাঝে সুপারি গাছের মত খাড়া হয়ে আছে বাড়াটা।কি করবে বৈদুর্য কল্পনা করে বুকের মধ্যে শির শির করে ওঠে। বৈদুর্য গুদে হাত দিয়ে কপালে ঠেকায় হাত।
--এ আবার কি হচ্ছে?সুভদ্রা হেসে জিজ্ঞেস করে।
--পবিত্র মন নিয়ে আজ করবো।
সুভদ্রার মনেও প্রতিক্রিয়া হয়।চোখ বুজে ঈশ্বরকে স্মরণ করে।বৈদুর্য বাড়াটা গুদের মুখে নিয়ে চেরার মুখে নিয়ে চাপ দিল।সুভদ্রা চোখ বুজে চোয়াল চেপে থাকে,অনুভব করে তার শরীরের মধ্যে পড়পড় করে ঢুকছে।মনে হচ্ছে যেন নাভি পর্যন্ত ঢুকে গেছে।কোষে কোষে
ছড়িয়ে পড়ে সুখানুভুতি। দু-হাতে মিমিদির কাধ ধরে পাছা নাড়িয়ে বাড়া আগুপিছু করতে লাগলো। সুভদ্রা "আঃ-হুউম--আঃ-হুউম" শব্দ করে সামলাতে থাকে।
দেওয়াল ঘড়ির কাটা তির তির করে এগিয়ে চলেছে। মিনিন্ট দশেক পর বৈদুর্য ককিয়ে উঠল,মিমিদি হয়ে গেল....হয়ে গেলোওওওওও--উ-উ-উ।পিচিইইইক..পিচিইইইইক.. পিচিইইইক..পুউচ..পুউউচ।
--তুমি থেমো না থেমো না,করো করো.....আঃ-আ-আ-আ-মাগো-ও-ও-ও।আউছছছ...আউছছছ। সুভদ্রার জল খসে গেল।বৈদুর্যকে বুকে চেপে ধরলো।সারা মুখে চপাক-চপাক করে চুমু খায়।মনে হচ্ছে বৈদুর্যর রসে ভরে আছে তলপেটে।

সকালে উঠে চা খেলো।স্নান করে আগের দিনের খাবার গরম করে খেতে বসে সুভদ্রা জিজ্ঞেস করে,তোমার বংলোয় গ্যাসে ব্যবস্থা আছে?
--হ্যা গ্যস আছে।
--কটা ঘর?
--দুটো ঘর আর একটা অফিস ঘর।অফিসে স্টাফরা বসে তারপর একটা বড় প্যাসেজ পেরিয়ে একটা ঘর তারপর ডায়েনিং রুম তার পর আরেকটা ঘর।কেন?
--তার মানে ফ্যামিলি কোয়ার্টার?
--হ্যা তাছাড়া বাগানের দিকে একটা গেষ্ট রুমও আছে।
বৈদুর্য খাওয়া শেষ করে বেরোবার জন্য তৈরী হয়। সুভদ্রা চাবি দিয়ে বৈদুর্যকে বলল,তুমি গাড়ীতে বোসো।
--আমি ট্যাক্সি নিয়ে নেবো।বৈদুর্য আপত্তি করে।
--তোমাকে যা বলছি করো।
বৈদুর্য নীচে নেমে গাড়ীতে বসল।বুঝতে পারে না মিমিদির কি মতলব।কিছুক্ষণ পর একটা ট্রলি নিয়ে মিমিদি এসে বলল,এটাকে পিছনে তুলে দাও।
বৈদুর্য গাড়ী থেকে নেমে ট্রলি পিছনে তুলে দিয়ে এসে দেখল ড্রাইভারের সিটের পাশে মিমিদি বসে। বৈদুর্য অবাক হয়ে গাড়ীতে উঠে বলল,কি ব্যাপার তুমি কোথায় যাবে?
--পতি গৃহে।সুভদ্রা বলল।
বৈদুর্য এক মুহুর্ত সময় নিল কথা টা বুঝতে তারপর চাবি ঘুরিয়ে স্টার্ট দিল।ধোয়া ছেড়ে কম্পাউণ্ড ছেড়ে ছুটে চলল গাড়ী।

[/HIDE]

======☆□◇■●শেষ●■◇□☆======
 

Users who are viewing this thread

Back
Top