devilsdong
Member
১১.
সূচনার মন থেকে এবার শেষ ভয়টুকুও উধাও হয়। তার একটু রাগ হয়:
-“তুমি এখানে কি করছো?” সে বলে ওঠে গলায় গাম্ভীর্য ফুটিয়ে।
-“জা… জাল ফেলব দিদিমণি,” হঠাতই যেন ছেলেটির কন্ঠ আবার নুয়ে যায় “ওই, যে হুথায় নৌকা।” হাত তুলে দেখায় সে।
সূচনা ওর নির্দেশ অনুসারে একটি নৌকার ছায়ামূর্তি দেখতে পায় অনতিদূরে। আসার সময় সে ওটা খেয়াল করেনি।
-“এত রাত্রে?” সূচনা কিঞ্চিত অবাক হয়েই শুধায়।
-“হ্যাঁ গো দিদিমণি, ভেড়ির মাঝে এই সময় লাক ভালো থাইকলে দু-তিনটা বড় বড় কাতলা ধরতে পারা যায়,… আর ভোরের আলো ফুটার আগে, যদি সবার আগে কয়েকটা মাছূলাদের গসাইতে পারি, তা হইলে দর ভলো ওঠে। বাড়তি ইনকাম আর কি দিদিমণি…”
সূচনা নিঃশব্দে হেসে ওঠে ছেলেটির গলায় ‘লাক’, ‘ইনকাম’ শব্দগুলি শুনে। তার কেমন যেন ভালো লেগে যাচ্ছে ওর সরলতাটা কে।
“তাছাড়া মাছেদের লগে তো খাবারও ছড়াইতে হইব। .. তা দিদিমণি, তুমি এত রাইতে উদলা শরীরে, শীত করতিসে না?”
খুবই সরলভাবে শুধানো হলেও ছেলেটির মুখে ‘উদলা’ কথাটি শুনে সূচনা ততক্ষনাত আত্মসচেতন হয়ে ওঠে। বুকের উপর দু-হাত আড়াআড়িভাবে জড়ো করে রাখে সে টর্চশুদ্ধ। ছেলেটি কি বুঝতে পেরেছে ম্যাক্সির তলায় সে আর কিছু… ভাবনাটাকে গুরুত্ব আরোপ না করে সূচনা মুখে একটি নারীসুলভ ঔদ্ধত্যমিশ্রিত গাম্ভীর্য ফুটিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বলে
“তুমি কেমন মাঝি? মাঝরাতে জাল ফেল? আর মেয়েদের সাথে সম্মান রেখে কথা বলতে শেখনি?”
ছেলেটি এতক্ষণ সূচনার মুখ দেখতে পায়নি। এবার জ্যোত্স্নার আলোয় ওর মুখ পরিস্ফুট হতেই চমকে ওঠে সে। এমন সুন্দরী রমণী সে ইহজীবনে পরিলক্ষ করেনি! সূচনার চাউনিতে একেবারে ঘাবড়ে যায় সে। কি করবে না বুঝতে পেরে সে দু-হাতজোর করে ফেলে “মাপ মাংছি দিদিমণি! আর এমনটি হবেনা! প্লিজ!”
-“হাহা” সূচনা এবার সশব্দে হেসে ওঠে ছেলেটির মুখে ‘প্লিজ’ শব্দটি শুনে। ওর ভঙ্গিটি তাকে আরও হাসি পায়ে দেয়…
ছেলেটি বুঝতে পেরে এবার সোজা হয়ে দাঁড়ায় “তুমি আমার লগে মশকরা করতিসো দিদিমুনি?”
-“হাহাঃ” সূচনা নুয়ে পড়ে হাসতে হাসতে। অনেকদিন বাদে সে প্রাণখুলে হাসছে।
-“তুমি হাইসতে থাকো! আমার তুমার লগে মশকরা করার সময় নাই! রাত বয়ে যায়…” রেগেমেগে ছেলেটি পেছন ফেরে।
-“আহা দাঁড়াও একটু.. যেও না!” সূচনা হাসতে হাসতে হাত বাড়িয়ে বলে।
ছেলেটি ফিরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে সূচনার নুয়ে পড়া শরীরের ম্যাক্সির গলার বাইরে বেরিয়ে আসতে চাওয়া দুটি ফর্সা আন্দোলিত মাংসপিন্ডে চোখ পড়ে যায়, জ্যোত্স্না ঠিকরে উঠছে তাদের উপর, যেন দুটি বড় বড় হাঁসের ডিম… ততক্ষনাত চোখ সরিয়ে নেয় সে। মাথায় ও বুকে হাজার ভোল্টের বাজ পড়ছে তার!
-“তুমি এখানে নতুন না?”
-“হ্যাঁ।” ছেলেটি পেছন ফেরে না এবার। সূচনার দিকে তাকাতে হঠাতই যেন ভয় পাচ্ছে সে।
-“তোমার গলায় অদ্ভূত টানটা শুনেই বুঝেছি! কেমন যেন বেমানান লাগছে!”
ছেলেটি কোনো উত্তর করেনা।
-“এই, আমার দিকে ফিরছ না কেন?” সূচনা গলায় উদ্গত চাপা হাসি নিয়ে শুধায়।
ছেলেটি ধীরে ধীরে যেন অপরাধীর মতো ফেরে সূচনার দিকে। জ্যোত্স্নাপ্লাবিত অষ্টাদশী তরুণীর দিকে তাকিয়ে যেন তার হৃদয় স্তব্ধ হবার উপক্রম হয়। এ যেন সাক্ষাত স্বর্গের কোনো দেবী নেমে এসেছেন! মিটিমিটি হাসতে থাকা ওই অপরূপ মুখটির উপর হাওয়ায় কিছু কেশগুচ্ছ এসে একপাশে লুটিয়ে পড়ছে,.. যেন চাঁদের গায়ে মেঘের মতো… বড় বড় দুটি চোখে কি যেন এক মায়াবী সংকেত… সে মুখ নামিয়ে নেয় আবার। পারেনা মন অবশ করে দেওয়া ওই রূপের জ্বলন্ত দীপশিখার দিকে তাকিয়ে থাকতে!
-“তা তোমার কোনো নাম নাই রাবণ-মাঝির পো?” সূচনা মুখ টিপে হাসে।
-“মধু।” মুখ নিচু রেখেই ছেলেটি বলে অস্পষ্ট স্বরে।
-“কি?”
-“মধু!” সে এবার গলা একটু চরায়।
-“মধু? মধুমাঝি! হাহা..” সূচনা আবার হেসে ওঠে।
মধু অপ্রস্তুতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
-“তা তুমি কি প্রতি রাতেই জাল ফেলো নাকি গো?”
-“নানা! শুধু মঙ্গল, বুধ আর বিষ্যুদবার..”
-“তার মানে কাল ফেলবে?” সূচনা টেরিয়ে তাকায় মুচকি হেসে।
-“হু”
সূচনার খুব হাসি পায়। একটু আগে তাকে অস্পষ্ট দেখে যে ছেলেটি এত হম্বিতম্বি করছিলো, এখন আধো জ্যোত্স্নায় তার রূপে ঘায়েল হয়ে একেবারে মিইয়ে গেছে বেচারী!
-“এই সময়েই?”
-“হু একই সময়।” মধু মাথা নিচু করা অবস্থাতেই দু-দিকে মাথা নাড়ে।
-“হম” সূচনা এবার কি ভেবে নিজের মনে মুচকি হেসে ওঠে। তারপর বলে “ঠিক হ্যায়. আমি চলি!”
বলে সে কথা না বাড়িয়ে পেছন ঘুরে হাঁটা লাগায়।
মধু যেন এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল। ছাড়া পেয়েই প্রায় দৌড়ে পালায়!
সূচনার মন থেকে এবার শেষ ভয়টুকুও উধাও হয়। তার একটু রাগ হয়:
-“তুমি এখানে কি করছো?” সে বলে ওঠে গলায় গাম্ভীর্য ফুটিয়ে।
-“জা… জাল ফেলব দিদিমণি,” হঠাতই যেন ছেলেটির কন্ঠ আবার নুয়ে যায় “ওই, যে হুথায় নৌকা।” হাত তুলে দেখায় সে।
সূচনা ওর নির্দেশ অনুসারে একটি নৌকার ছায়ামূর্তি দেখতে পায় অনতিদূরে। আসার সময় সে ওটা খেয়াল করেনি।
-“এত রাত্রে?” সূচনা কিঞ্চিত অবাক হয়েই শুধায়।
-“হ্যাঁ গো দিদিমণি, ভেড়ির মাঝে এই সময় লাক ভালো থাইকলে দু-তিনটা বড় বড় কাতলা ধরতে পারা যায়,… আর ভোরের আলো ফুটার আগে, যদি সবার আগে কয়েকটা মাছূলাদের গসাইতে পারি, তা হইলে দর ভলো ওঠে। বাড়তি ইনকাম আর কি দিদিমণি…”
সূচনা নিঃশব্দে হেসে ওঠে ছেলেটির গলায় ‘লাক’, ‘ইনকাম’ শব্দগুলি শুনে। তার কেমন যেন ভালো লেগে যাচ্ছে ওর সরলতাটা কে।
“তাছাড়া মাছেদের লগে তো খাবারও ছড়াইতে হইব। .. তা দিদিমণি, তুমি এত রাইতে উদলা শরীরে, শীত করতিসে না?”
খুবই সরলভাবে শুধানো হলেও ছেলেটির মুখে ‘উদলা’ কথাটি শুনে সূচনা ততক্ষনাত আত্মসচেতন হয়ে ওঠে। বুকের উপর দু-হাত আড়াআড়িভাবে জড়ো করে রাখে সে টর্চশুদ্ধ। ছেলেটি কি বুঝতে পেরেছে ম্যাক্সির তলায় সে আর কিছু… ভাবনাটাকে গুরুত্ব আরোপ না করে সূচনা মুখে একটি নারীসুলভ ঔদ্ধত্যমিশ্রিত গাম্ভীর্য ফুটিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বলে
“তুমি কেমন মাঝি? মাঝরাতে জাল ফেল? আর মেয়েদের সাথে সম্মান রেখে কথা বলতে শেখনি?”
ছেলেটি এতক্ষণ সূচনার মুখ দেখতে পায়নি। এবার জ্যোত্স্নার আলোয় ওর মুখ পরিস্ফুট হতেই চমকে ওঠে সে। এমন সুন্দরী রমণী সে ইহজীবনে পরিলক্ষ করেনি! সূচনার চাউনিতে একেবারে ঘাবড়ে যায় সে। কি করবে না বুঝতে পেরে সে দু-হাতজোর করে ফেলে “মাপ মাংছি দিদিমণি! আর এমনটি হবেনা! প্লিজ!”
-“হাহা” সূচনা এবার সশব্দে হেসে ওঠে ছেলেটির মুখে ‘প্লিজ’ শব্দটি শুনে। ওর ভঙ্গিটি তাকে আরও হাসি পায়ে দেয়…
ছেলেটি বুঝতে পেরে এবার সোজা হয়ে দাঁড়ায় “তুমি আমার লগে মশকরা করতিসো দিদিমুনি?”
-“হাহাঃ” সূচনা নুয়ে পড়ে হাসতে হাসতে। অনেকদিন বাদে সে প্রাণখুলে হাসছে।
-“তুমি হাইসতে থাকো! আমার তুমার লগে মশকরা করার সময় নাই! রাত বয়ে যায়…” রেগেমেগে ছেলেটি পেছন ফেরে।
-“আহা দাঁড়াও একটু.. যেও না!” সূচনা হাসতে হাসতে হাত বাড়িয়ে বলে।
ছেলেটি ফিরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে সূচনার নুয়ে পড়া শরীরের ম্যাক্সির গলার বাইরে বেরিয়ে আসতে চাওয়া দুটি ফর্সা আন্দোলিত মাংসপিন্ডে চোখ পড়ে যায়, জ্যোত্স্না ঠিকরে উঠছে তাদের উপর, যেন দুটি বড় বড় হাঁসের ডিম… ততক্ষনাত চোখ সরিয়ে নেয় সে। মাথায় ও বুকে হাজার ভোল্টের বাজ পড়ছে তার!
-“তুমি এখানে নতুন না?”
-“হ্যাঁ।” ছেলেটি পেছন ফেরে না এবার। সূচনার দিকে তাকাতে হঠাতই যেন ভয় পাচ্ছে সে।
-“তোমার গলায় অদ্ভূত টানটা শুনেই বুঝেছি! কেমন যেন বেমানান লাগছে!”
ছেলেটি কোনো উত্তর করেনা।
-“এই, আমার দিকে ফিরছ না কেন?” সূচনা গলায় উদ্গত চাপা হাসি নিয়ে শুধায়।
ছেলেটি ধীরে ধীরে যেন অপরাধীর মতো ফেরে সূচনার দিকে। জ্যোত্স্নাপ্লাবিত অষ্টাদশী তরুণীর দিকে তাকিয়ে যেন তার হৃদয় স্তব্ধ হবার উপক্রম হয়। এ যেন সাক্ষাত স্বর্গের কোনো দেবী নেমে এসেছেন! মিটিমিটি হাসতে থাকা ওই অপরূপ মুখটির উপর হাওয়ায় কিছু কেশগুচ্ছ এসে একপাশে লুটিয়ে পড়ছে,.. যেন চাঁদের গায়ে মেঘের মতো… বড় বড় দুটি চোখে কি যেন এক মায়াবী সংকেত… সে মুখ নামিয়ে নেয় আবার। পারেনা মন অবশ করে দেওয়া ওই রূপের জ্বলন্ত দীপশিখার দিকে তাকিয়ে থাকতে!
-“তা তোমার কোনো নাম নাই রাবণ-মাঝির পো?” সূচনা মুখ টিপে হাসে।
-“মধু।” মুখ নিচু রেখেই ছেলেটি বলে অস্পষ্ট স্বরে।
-“কি?”
-“মধু!” সে এবার গলা একটু চরায়।
-“মধু? মধুমাঝি! হাহা..” সূচনা আবার হেসে ওঠে।
মধু অপ্রস্তুতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
-“তা তুমি কি প্রতি রাতেই জাল ফেলো নাকি গো?”
-“নানা! শুধু মঙ্গল, বুধ আর বিষ্যুদবার..”
-“তার মানে কাল ফেলবে?” সূচনা টেরিয়ে তাকায় মুচকি হেসে।
-“হু”
সূচনার খুব হাসি পায়। একটু আগে তাকে অস্পষ্ট দেখে যে ছেলেটি এত হম্বিতম্বি করছিলো, এখন আধো জ্যোত্স্নায় তার রূপে ঘায়েল হয়ে একেবারে মিইয়ে গেছে বেচারী!
-“এই সময়েই?”
-“হু একই সময়।” মধু মাথা নিচু করা অবস্থাতেই দু-দিকে মাথা নাড়ে।
-“হম” সূচনা এবার কি ভেবে নিজের মনে মুচকি হেসে ওঠে। তারপর বলে “ঠিক হ্যায়. আমি চলি!”
বলে সে কথা না বাড়িয়ে পেছন ঘুরে হাঁটা লাগায়।
মধু যেন এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল। ছাড়া পেয়েই প্রায় দৌড়ে পালায়!