বুঝছি।
আপনে থাইক্যাও নাই...
গতোকাল সকালে ঘুম থেকে উঠার পরই গিন্নী একটা খারাপ খবর শোনালো। আমাদের গ্রামের বাড়ির পাশের বাড়ির এক ছোটভাই প্লাস বন্ধু মারা গেছে। খবরটা শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম। ব্যসে আমার থেকে ছোট হলেও তার সাথে আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিলো ঈদ বা যেকোন উপলক্ষ্যে বাড়ি গেলেই তার সাথে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিতাম। ছোট বলে আমাকে খুব সম্মান করতো। সময়ে অসময়ে এটা ওটা করে আমার খুব উপকার করতো। বন্ধুটি বেশ সামাজিক ছিলো বলে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি নিয়ে প্রায়ই বন্ধু মহলে আলোচনা করতো আর নিজ উদ্যোগে সমাজ উন্নয়নের জন্য অনেক কিছুই করার চেস্টা করতো। একদিন আগে মাত্র করোনা টিকার প্রথম ডোজটা দিয়ে এসেছে। টিকা দেয়ার পর থেকেই একটু অস্বস্তি বোধ করতেছিলো। মাথা ঝিম ঝিম আর হাত পায়ের ব্যাথা অনুভব করতে থাকলেও এটাকে তেমন একটা আমল দেয়নি। এমনিতে সে নিরোগ দেহের অধিকারী ছিলো। সারা বছরে মাঝে মধ্যে জ্বর ঠান্ডা ছাড়া তেমন কোনো অসুখে কখনো পড়তে দেখিনি। আগের রাতে না খেয়ে ঘুমানোর কারনে ভোরে ফজরের নামাযে পর ক্ষুধা লাগায় ঘরে থাকা দু স্লাইস পাউরুটি আর একটা কলা খেয়েছিলো। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই পেটে ব্যথা অনুভব করছিলো। কিছুক্ষণ পর সেটা বুক ব্যথায় রূপ নিলো। ব্যাথাটা উত্তর উত্তর বাড়তে থাকায় বাড়িতে থাকা ছোট বোনের হাজব্যান্ডকে সাথে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলো। বাড়ি থেকে হেটেই বেড়িয়েছিলো গাড়িতে উঠার জন্য। হাসপাতালে পৌঁছে নিজে নিজেই হেটে হাসপাতালের ইসিজি রুমে যায়। ইসিজিতে হার্টের কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতালে নিয়ে যাবার পরামর্শ দেয়। তখনো সে ইসিজি বেডে শোয়া ছিলো। মিনিট খানেক পরে সমস্ত শরীর মোচড় দিয়ে সে ওখানেই বমি করে দেয়। এরপরেই সব নিস্তব্ধ। ডাক্তার সাথে সাথে আবারো ইসিজি করেন। কিন্তু ইসিজিতে সরল রেখা দেখা যায়।...
খবর শোনার পর পরই গ্রামের বাড়িতে ছুটে যাই। যোহর নামাযের পর জানাযা শেষে সামাজিক গোরস্তানে দাফন করে দিয়ে সন্ধ্যার পর আবার ফিরে এসেছিলাম। দাফন শেষে যখন ওদের বাড়িতে তার স্ত্রী-কন্যাদের সান্তনা দিতে গিয়েছিলাম, অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে সান্তনা দেবার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সত্যি বলতে তখন আমি এমন কাউকে খুঁজছিলাম যে আমাকে সান্তনা দিবে। নিজেকে কিছুতেই স্বাভাবিক করতে পারছিলাম না। এই করুণ দৃশ্য দেখে নিজেই শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছিলাম...