একটা সময় ছিল যখন আমাদের গ্রামে ঘানি ছিল। যারা তেল ভাঙ্গাত তাদের খুলু বলা হত (কেন জানিনা)। ঘানিতে যে গরু ব্যবহার করা হত তার চোখ বেধে রাখা হত। কদাচিত সন্ধার আগে তাদের বাইরে চরতে দেয়া হত। গরুগুলিকে কেমন অসহায় দেখাত, খাওয়াতে খুব বেশি মনোযোগ দিত না বরং মনোযোগ বেশি দিত দেখায়, তাকিয়ে থাকত, সোজা হাটতেও বোধহয় কস্ট হত, হাঁটতে হাঁটতে বাম দিকে সরে যেত। আমাদের সরিষা, তিসি ওদের কাছ থেকেই ভাঙ্গায়ে আনতাম। বলে দিত বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দুইদিন রেখে দিবি তারপর অন্য পাত্রে ঢেলে নিবি। তাইলেই চকচকা খাটি তেল পাবি। দুদিন পর দেখাতাম তেলের নিয়ে গাদ জমেছে কিন্তু উপরের তেল হয়ে গেছে এক্কেবারে কাঁচা সোনার মত। ৮৮-র বন্যার পর ৮৯-৯০ এর দিকে শেষ ঘানির গরু মারা যাবার পর আর সে গরু কিনে ঘানি চালু রাখে নি।
তারপর থেকে জানি তেল খাঁটি হয় না, কারন এখানেও তেল ভাঙ্গাতে সরিষার ভেতর অন্তত গাদ মেশাতে হয় নাহলে ঘানিতেও ভাঙ্গানো যায় না।