কাছাকাছি টাইপের আমারও একটা অভিজ্ঞতা আছে...
মাখন, হাফেজ, রফিক আর আমি সন্ধ্যার পর মামাদের বাড়ির বারান্দায় বসে আড্ডা দিচ্ছি। এই সময়টা মামাদের বাংলা ঘরের বারান্দার দিকে সাধারনত কেউ আসে না। আমরা মনের সূখে বিড়ি টানছি আর টিনএজার আড্ডা দিয়ে যাচ্ছি। হঠাত করেই মেজো মামা এসে হাজির। হাতের বিড়ি ফেলে দিয়ে হাত ঝাপটায় ধোঁয়া সরিয়ে তাড়াতাড়ি আমরা ভদ্র ছেলে হয়ে গেলাম। যদিও মামার সামনে মাখন আর হাফেজ বিড়ি খেতো, তবুও দেখাদেখি তারাও সাফ সুতরো হয়ে গেলো। মামা প্রস্তাব দিলেন, চল তাস খেলি। এর আগে কখনো মামার সাথে বসে তাস খেলেনি। ভেবেছিলাম সটকে পড়বো। কিন্তু হঠাত করেই রফিকের পেট মোচর দিয়ে উঠাতে সে তড়িঘরি করে ছোট ঘরের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলো। অগত্যা আমাকে বসতে হলো তাদের সাথে। হাফেজ মামার সাথে খেলবে না বলে আগেই ঘোষনা দেয়াতে তাকে আর নেয়া হলো না সেই আসরে। সে উঠে চলে যেতেই মাসুম, মুশু আর মুশিভাই এসে হাজির হলো আমাদের আসরে। ইতিমধ্যে খেলা শুরু হয়ে যাওয়াতে তারা পাশে বসে খেলা দেখতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর দেখলাম, মাখন ফস করে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে বিড়ি ধরালো। সে আমার পাশে বসা বলে খেয়াল করে দেখলাম বিড়িটা ৫৫৫। সে তো এই বিড়ি খায় না। সে খায় স্টার ! তখনি হঠাত মনে পড়লো, মামা আসার আগে আমরা যখন বিড়ি খাচ্ছিলাম, তখনই সে আমার কাছ থেকে বিড়ির প্যাকেট নিয়ে ওটা থেকে একটা বিড়ি ধরিয়েছিলো। এরপর আর প্যাকেটটা আমাকে ফেরত দেয়নি। মনে মনে হিসাব করছি, কয়টা বিড়ি ছিলো প্যাকেটটায় ? চৌদ্দটা... মামার সামনে বিড়ি খাইনা আমি। তাই বিড়ির প্যাকেটও ফেরত চাইতে পারতেছি না। কিছুক্ষনের মাঝেই দেখলাম মাখনের বাম পাশে থাকা আমার সেই বিড়ির প্যাকেট থেকে মুশু একখান বিড়ি নিয়ে ধরালো। মাছুমও ধরালো তার সাথে সাথেই। ইতিমধ্যে রফিকও চলে এসেছে। এসেই ধরিয়েছে আরো একখান বিড়ি। সবাই হিসাব করছে কার হাতে কি তাস আছে, আর আমি হিসাব করছি প্যাকেটে আর কয়টা বিড়ি আছে ! এদিকে আস্তে আস্তে রাত বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমে আসছে আমার বিড়ির সংখ্যা ! খেলা ছেড়ে উঠতেও পারছি না, বিড়ির প্যাকেট নিজের কাছে ফেরতও আনতে পারছি না। সবাই যেনো আজ একেবারে চেইন স্মোকার হয়ে গ্যাছে। একটা ফেলে কিছুক্ষনের মাঝেই আরেকটা ধরাচ্ছে। মাঝে মধ্যে মাখন নিজে থেকেও অফার করছে মাছুম কিংবা মুশুকে। খেলতে গিয়ে বারবার ভুল করছি খেলায়। আসলে মাখনের উপর রাগটা আমার প্রতি ক্ষনে ক্ষনেই বাড়তেছিলো। রাত যখন প্রায় নয়টা বাজতে চললো, তখন মাখনের পেচ্ছাপ পেলো। সে পেচ্ছাপ করতে উঠার সাথে সাথে আমিও লাফ দিয়ে বেরিয়ে এলাম যেনো আমার পেচ্ছাপ পড়ে যায় যায় অবস্থা এমন ভাব করে। বেরিয়েই দেখলাম মাখন সামনে বসে ছরছর করে পেচ্ছাব করছে। রাগের মাথায় ঠেসে ধরলাম তাকে সেই পেচ্ছাবের উপরই... শালা, পরের ধনে পোদ্দারী !! আমার বিড়ি তুই এইভাবে বিলিয়ে যাচ্ছিস ক্যান ? মাখন কিন্তু একটুও রাগ করেনি আমার এই ব্যবহারে। সে হাসতে হাসতে বললো, আরে তোর লাইগ্যা তো একটা রাইখ্যাই লইছি। এই দ্যাখ !! প্যাকেটটা আমার হাতে দিতে দিতে সে জানালো, আমি জানি রাত্রে তোর একটা লাগবোই। আর এতো রাইতে বিড়ি পাইবি কই ? হের লাইগ্যাই আমি পেশাব করতে বাইর হইছি যাতে তোরে প্যাকেটখান দিতে পারি। আমি জানতাম, আমি পেশাব করতে বাইর হইলে তুইও বাইর হবি...