What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আসুন নির্জনে আড্ডা মারি-২০২০ (18 Viewers)

Status
Not open for further replies.
গরম ভাতের সাথে আলু ভর্তা থাকলে তাতে ঘি ঢালা তো অপরিহার্য্য হইয়া যায় !
আমার নানির বাড়িতে খাইতাম নানির হাতে রান্নাকরা গরম খিচুড়ি ঘি দিয়ে আর সাথে থাকতো ডিম ভাজা... সে একেবারেই অমৃত। নানির হাতের অনেক রান্নাই আজীবন মিস করবো। বিশেষ করে কাঁঠাল সেদ্ধ করে তা শুকনা মরিচ পোড়া, কাঁচা পেয়াজের কুচি, সরিষার তেল আর কাগজী লেবু দিয়ে মাখানোর পর কি যে অসাধারণ লাগতো খেতে...

নানি মারা গেছেন গত ৭ই মার্চ। আল্লাহ্‌ উনাকে বেহেস্ত নসীব করুন
 
আবারো এলাম লকডাউনের একটা রম্য নিয়ে আপনাদের সামনে, অবশ্যই ওপার বাংলার এসেন্সে লেখা আমি সংগ্রাহক মাত্র।

রম্য : লকডাউন, আমার বৌ ও গান

.......লকডাউনে লোকজনের হাতে অফুরান সময় থাকার ফলে কেউ ধুলো ঝেড়ে গিটার বের করেছে, কেউ মাউথ-অর্গান আবার কেউ রঙ-তুলি। আমার বউ বের করল হারমোনিয়াম।
সাংগীতিক পরিবেশ শুধু আমরা মনুষ্যজাতিই ভালবাসি না, আরশোলারাও ভালবাসে সেটা বুঝলাম যখন হারমোনিয়ামের বাক্স খোলা হল। শতাধিক আরশোলা বেরিয়ে উড়তে শুরু করে দিল। সে এক ডামাডোলিয়াস অবস্থা! বউ লাফাতে লাফাতে বলল, "দাঁড়িয়ে দেখছ কী? যাও গিয়ে লাল হিটটা নিয়ে এসো।"
অতঃপর হিট প্রয়োগ করে আরশোলাদের সংহার করা হল।

অনতিবিলম্বেই বউয়ের সংগীতচর্চা শুরু হল।
এর আগে বউ কিছুদিন মাস্ক তৈরির কাজে মেতেছিল। আমি অনলাইনে একটি মাস্ক আনিয়েছিলাম। তা যে এমন বিপত্তি ডেকে আনবে বুঝিনি। বউ মাস্কটা গভীর ভাবে নিরীক্ষণ করে জিগ্যেস করল,"কত পড়ল?"
একটু কমিয়ে বললেই ভাল হত কিন্তু আমি সত্যিটাই বলে দিলাম, "একশো ষাট টাকা।"
আমার কথা শুনে বউ বার কয়েক মাথা চাপড়ে বলল, "অ্যাঁ বলো কী! একশো ষাট টাকা এই ন্যাতা কাপড়ের মাস্কটার দাম? ওহ্ টুপি পরানোর জন্য কী পৃথিবীতে তুমি ছাড়া আর একটা মানুষও নেই?"
আমি গম্ভীর গলায় বললাম, "সবাই তো কিনছে।"
বউ বলল, "ঠিক আছে দাঁড়াও, আমি বিনা পয়সায় মাস্ক বানিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছি।"

অতঃপর শুরু হল বউয়ের মাস্ক প্রস্তুত অভিযান।
এখান থেকে ওখান থেকে যত পুরানো বাতিল গেঞ্জি, বারমুডা প্যান্ট, পায়জামা সব জড়ো করা হল।
রঙচটা জীর্ণ কাপড়ে তৈরি হতে থাকল ডজন ডজন মাস্ক।
দেখে আমি বললাম, "এই মাস্ক কে পরবে? আমি অন্তত পরছি না।"
বউ বলল, "আচ্ছা তোমার জন্য দুটো স্পেশাল মাস্ক বানিয়ে দেব।"
একদিন চকচকে দুটো মাস্ক আমার হাতে দিয়ে বউ বলল, "এগুলো তোমার। পরে দেখো কেমন হয়েছে।"
স্বীকার করলাম ভাল হয়েছে। জিগ্যেস করলাম, "কোন কাপড়ে বানালে? নতুন মনে হচ্ছে?"
বউ বলল, "তোমারই দুটো গেঞ্জির কাপড়ে।"
মুহূর্তে স্পেশাল মাস্কের রহস্য ফাঁস হয়ে গেল। কদিন আগেই অনলাইনে জকি'র দুটো কালো টি-শার্ট কিনেছিলাম হাজার খানেক টাকা দিয়ে, এখনও পরা হয়নি, সেইগুলো দিয়েই বউ মাস্ক বানিয়েছে!
আমি হায় হায় করে উঠলাম!

পরে বলেছিলাম, "অত যে মাস্ক বানালে কী হবে সেগুলো?"
বউ বলল, "গরিবদের বিলিয়ে দেব।"
পরদিন আমাদের বাড়িতে মাছওয়ালা এলো মাছ বেচতে। তাকে বউ দুটো মাস্ক দিতে গেল।
মাছওয়ালা বলল, "পুরানো কাপড়ের? নেবনি। আমার এই গামছাই ভাল।"
অপমানিত বউ তদ্দণ্ডেই সমস্ত মাস্ক জড়ো করে দেশলাই জ্বেলে দিল।
শুনে পরে মুড়িওয়ালা আফসোস করে বলেছিল, "এ বাবা জ্বালিয়ে দিলেন সব? আমাকে দিলেননি কেন?"
বউ উৎসাহী হয়ে বলল, "তুমি নিতে?"
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "দেখলে তো! হুহ্ কেউ নাকি নেবে না!"
মুড়িওয়ালা বলল, "মিছা নয় গো আমি সত্যিই নিতাম। আমার তিন-মাসের বাচ্চাটার গু পরিষ্কার করতে মেলা ন্যাকড়া লাগে যে!"
সৃষ্টিকর্মের এই অপমানে স্রষ্টা উদাস হয়ে বসে ছিল অনেকক্ষণ!

সন্ধ্যের পর আমায় চা দিয়ে বউ হারমোনিয়াম নিয়ে বসল। পড়ে থাকার জন্যই কিনা কে জানে হারমোনিয়াম দিয়ে বেখাপ্পা আওয়াজ বেরোতে লাগল। তারপরে বউ যখন গান ধরল তখন দীর্ঘকাল পড়ে থাকা দুটি বস্তু, হারমোনিয়াম ও গলা, এই দুইয়ের মহামিলনে যা বেরোলো তা মোটেই শ্রুতিমধুর নয়।
কিছুক্ষণ পরেই আমার ফোন বেজে উঠল। ডেন্টুকাকার ফোন। আমাদের সবচেয়ে নিকটবর্তী প্রতিবেশী হলেন ডেন্টুকাকা। তাঁর আবার এখন কী দরকার পড়ল!
আমি ফোন ধরতে ডেন্টুকাকা বললেন, "তোদের ঘরে দুটো বেড়াল তখন থেকে ঝগড়া করে যাচ্ছে, তাড়াতে পারছিস না?"
আমি অবাক হয়ে বললাম, "বেড়াল? কই না তো?"
ডেন্টুকাকা বললেন, "না বললেই হবে? ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে কান।"
এবার আমি বুঝতে পারলাম, আমার বউয়ের সংগীতচর্চা নিয়ে বলছে ডেন্টুকাকা।
আমি বললাম, "কোথায় বেড়াল ঝগড়া করছে? আমার বউ গান গাইছে। হারমোনিয়ামটা খারাপ হয়ে গেছে তাই অমন শুনতে লাগছে।"
ডেন্টুকাকা অবাক হওয়ার ভান করল। যদিও আমি ভালই বুঝতে পারছি বিদ্রুপ করছে ডেন্টুকাকা। নইলে এতটাও খারাপ শোনাচ্ছে না যে বেড়ালের ঝগড়া মনে হবে!
ডেন্টুকাকা বললেন, "বলিস কী! তোর বউ মানে বউমা গান করছে! আমি তো ভাবলাম... সে যাইহোক বাদ দে। তোর বউকে একটু ভলিউমটা কমাতে বল।"
এর পরেই আমি রেগে গেলাম এবং তার ফল সাংঘাতিক হয়েছিল!
বললাম, "হিংসে হচ্ছে কাকা? কেন হচ্ছে জানি তো! আমার বউ গাইছে বলে হিংসে হচ্ছে আপনার।"
ডেন্টুকাকা কেটে দিল ফোন রাগে। আসলে ডেন্টুকাকা দু'বার বিয়ে করেছে কিন্তু কোনও বিয়ে টেকেনি। দুটো বউই বিয়ের কিছুদিন পরেই ডেন্টুকাকাকে ছেড়ে চলে গেছে। কারণটা পাড়ার সবার কাছে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো মিস্ট্রিই রয়ে গেছে। তারপর থেকে পৃথিবীর সমস্ত স্ত্রীজাতির প্রতি ডেন্টুকাকার অসম্ভব রাগ।

এসব কালকের কথা। আজ সকাল দশটা নাগাদ আমাদের পাড়ায়, আমাদের বাড়ির উল্টোদিকেই, থানা থেকে সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। ওঁরা নাগরিকদের মনোবল বাড়ানোর জন্য পাড়ায় পাড়ায় এমন অনুষ্ঠান করছেন।
কিবোর্ড ও গিটার সহযোগে প্রথমে এক মহিলা পুলিশ কর্মী গাইলেন তারপর দুজন পুরুষ । পাড়ার বেশিরভাগ লোক বাড়িতে বসেই মাইকে শুনছে। দু-একজন বেরিয়েছে শুধু।

হঠাৎ চমকে গিয়ে শুনলাম পরবর্তী শিল্পী হিসেবে মাইকে আমার বউয়ের নাম অ্যানাউন্স হচ্ছে।
আমার মাথা ঘুরে গেল! বউয়েরও! গানের সঙ্গে তেমন সম্পর্কই নেই ওর। বিয়ের আগে টুকটাক গান শিখেছে। সব বাঙালি মেয়েরা যেমন শেখে।
বউ কেঁদে ফেলল। বলল, "বলতে গেলে গানের গ জানি না! একটা গানও পুরো গাইতে পারব না। আমি মাইকে গাইব? আমার দ্বারা কিছুতেই হবে না ব্যাস।"
আমি অতি সহজেই বুঝে গেলাম এসব ডেন্টুকাকার ষড়যন্ত্র। কালকের বদলা নিচ্ছে। পুলিশদের কাছে আমার বউয়ের নামটা ওই দিয়েছে।
বউকে বললাম, "দেখো যেতে হবেই। নইলে খুব খারাপ হবে। আর পাড়ায় মুখ দেখানো যাবে না।"
বউ কাঁদতে কাঁদতে বলল, "আর আমি গাইলে পাড়ায় মুখ দেখানো যাবে ভেবেছ? আমি পারব না।"
এমন সময় দরজায় ধাক্কা। দরজা খুলতে গিয়ে দেখি থানার বড়বাবু নিজে এসেছেন ডাকতে। পেছনে ভজহরিদা।
বড়বাবু বললেন, "ম্যাডাম কই? উনি খুব ভাল সিঙ্গার শুনলাম। এই সুযোগে আমরাও ওনার গান শুনতে পাব। উনি নাকি রেডিওতে নিয়মিত প্রোগ্রাম করেন। খুব ভাল। ম্যাডামকে নিয়ে আপনিও চলে আসুন। এখন যিনি গাইছেন তার পরেই ম্যাডাম গাইবেন। আর হ্যাঁ মাস্ক পরে আসবেন প্লিজ।"
এসব কী বলছেন বড়বাবু। রেডিও! প্রোগ্রাম!
আমার বুকে ড্রাম-মাদল সব একসঙ্গে বাজতে শুরু করল। ঘরে গিয়ে দেখি বউ বিছানায় মুখ গুঁজে শুয়ে আছে।
আমি যেতেই বলল, "তুমি কিছু বলতে পারলে না? আমি রেডিওতে প্রোগ্রাম করি?"
আমি বললাম, "আর কিচ্ছু করার নেই। তুমি রেডি হয়ে নাও। বলে দিও গলা খারাপ। দু লাইন গেয়ে নেমে যাবে।"
বউ বলল, "মাইক হাতে নিলে আমার নির্ঘাত হার্টফেল করে যাবে!"
অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বউকে রাজি করিয়ে দুজনে বেরোলাম। দুই ফাঁসির আসামি যেন কম্পিত চরণে বধ্যভূমির দিকে এগোচ্ছে।
কিন্তু কাছে যেতেই অবাক হয়ে দেখলাম বড়বাবু জিপে উঠে আমাদের সামনে দিয়ে ধাঁ করে চলে গেলেন। বাকি পুলিশ কর্মীরা মাইক, বাদ্যযন্ত্র গোছাচ্ছেন তড়িঘড়ি করে। একটা পুলিশের গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ওঁদের নিয়ে যাবে বলে।
আনন্দে আমার বউ বালিকার মতো লাফিয়ে উঠল, "কীয়ানন্দ! কীয়ানন্দ!"
ঘরে ফিরতেই ভজহরিদার ফোন এল। বলল, "মদের দোকান খুললেই আমাকে খাইয়ে দিস।"
আমি বললাম, "ভজহরিদা তুমি? এসব তোমার কীর্তি? কী হল কিছুই বুঝলাম না!"
ভজহরিদা বলল, "হ্যাঁ আমিই। তোর বউকে প্রফেশনাল গাইয়ে বানিয়ে বেইজ্জত করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পাড়ার প্রেস্টিজ তো পাংচার হতে দিতে পারি না। কী করলাম বুঝলি, থানায় নাম না বলে একটা ফোন করে দিলাম। ফোন করে বললাম, হাজার হাজার পাব্লিক মিছিল করে থানার দিকেই আসছে। মেয়েদের দাবি, বিউটি পার্লার খুলতে হবে আর ছেলেদের দাবি, সেলুন খুলতে হবে। আমার ফোন পেয়েই ওরা বড়বাবুকে সঙ্গে সঙ্গে জানিয়েছে। গান গাওয়া মাথায় উঠেছে তখন। সবাই মিলে দৌড় দিয়েছে থানায়।"
আমি আনন্দে লাফিয়ে উঠে বললাম, "নিশ্চই খাওয়াব ভজহরিদা। থ্যানক ইউ থ্যানক ইউ।"
দেদার আনন্দ হচ্ছে, ফোনটা কেটে দিতে গিয়েও থমকে গেলাম, উদ্বিগ্ন হয়ে বললাম, "কিন্তু ভজহরিদা বড়বাবু গিয়ে যখন দেখবে সব মিথ্যে কথা তখন তো তোমাকেই ওরা কেলাতে কেলাতে ধরে নিয়ে যাবে থানায়!"
ভজহরিদা হেসে বলল, "ও নিয়ে তুই ভাবিস না। আমি ডেন্টুকাকার ফোনটা চেয়েছিলাম, একটা দরকারি ফোন করতে হবে বলে। ও শালা তখন তোদের মুখে চুনকালি পড়বে সেই আনন্দেই মশগুল ছিল। কিছু না ভেবেই ফোনটা দিয়ে দিল। আর আমারও কাজ হয়ে গেল! ধরলে ওই খচরাকেই ধরবে। চাপ নিস না..."
চাপ মুক্ত হলাম, মামা !
এরকম রম্য পড়লে রোযার এই শেষ বিকেলেও ক্ষনে ক্ষনে ভুঁড়ি নেচে উঠে...
সেরকম জিনিষ শেয়ার দিছেন, মামা !
একেবারে চমেতকার...
 
যাতায়াত তাই‌লে ভা‌লোই ছি‌লো।
আমিই তখন জাহিদ কনস্ট্রাকশনে চাকরী করতাম, আর কোম্পানির শোরুম সেতু ভবনের উলটো দিকে। সুতরাং ঐটার সামনে দিয়ে তো যেতে হতোই
 
আমার নানির বাড়িতে খাইতাম নানির হাতে রান্নাকরা গরম খিচুড়ি ঘি দিয়ে আর সাথে থাকতো ডিম ভাজা... সে একেবারেই অমৃত। নানির হাতের অনেক রান্নাই আজীবন মিস করবো। বিশেষ করে কাঁঠাল সেদ্ধ করে তা শুকনা মরিচ পোড়া, কাঁচা পেয়াজের কুচি, সরিষার তেল আর কাগজী লেবু দিয়ে মাখানোর পর কি যে অসাধারণ লাগতো খেতে...

নানি মারা গেছেন গত ৭ই মার্চ। আল্লাহ্‌ উনাকে বেহেস্ত নসীব করুন
ছোটবেলায় বাবার সাথে বসে সকালের নাস্তা খাবার সময় গরম ভাতে ঘি'য়ের সাথে পরিচয় ঘটে...
ঐ সময় ওটা প্রায় নিত্যদিনই খেতাম...
 
আমিই তখন জাহিদ কনস্ট্রাকশনে চাকরী করতাম, আর কোম্পানির শোরুম সেতু ভবনের উলটো দিকে। সুতরাং ঐটার সামনে দিয়ে তো যেতে হতোই
দীপু মামা, পাখি মামা তো ফাঁক গলে পিছলে গেলো...
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top