খলিফা হারুনের শাষনকাল ছিলো ২৩ বৎসরের। তাও আব্বাসীয় খেলাফত শুরুর মাত্র ৩৬ বৎসর পরেই তিনি খলিফা হিসাবে অধিষ্ঠিত হন। আব্বাসীয় খেলাফত তো সুদীর্ঘ ৭৬৭ বৎসর পর্যন্ত স্থায়ী ছিলো। তারমানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, খলিফা হারুনের পরে বাকি ৭০৮ বৎসরের আব্বাসীয় শাষনামলে তেমন কিছুই হয়নি ? অথচ ইতিহাস কিন্তু ভিন্ন কথা বলে, মামা।
ইতিহাসকে আপনি যেভাবে দেখতে চান সেভাবেই পাবেন অনেক সময়, ইতিহাসে ভিন্ন মত থাকেই। কিন্তু যা বলছেন যে সুদীর্ঘ কাল তাদের শাসন কার্য চলেছিল সেটা আপনাকে বলতে হলে দু চার দশ কথায় এখানে সম্ভব না। তাও কিছুটা সংক্ষেপে বলি যে আপনারা যে আরব্য রজনী, সিন্দবাদ, আলাদিনের চেরাগ, বাগদাদের চোরের (Thief of Baghdad) ব্যাপারে জানেন সেটা খলিফা হারুনুর রশিদের সমসাময়িক এবং তখনকার রাজধানী বাগদাদের উপর ভিত্তি করেই তৈরী হয়েছিল। যে বীজগণিত বা আলজেব্রার ব্যাপারে সবাই জানে সেটাও তার সময়ে ইবনে মুসা খয়রাজমির লেখা আল-জাহবার বই থেকেই উৎপত্তি হয়। এবং হারুনুর রশিদের স্ত্রী জুবাইদা বিনতে জাফর মক্কা এবং মদিনার প্রভূত উন্নতি সাধন করেন, মক্কায় হাজীদের সুবিদার্থে তিনি বিশাল এক কৃত্রিম পানির বহর তৈরী করান যেটা নাহরে-জুবাইদা নামে পরিচিত (সেটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল সচক্ষে)।
তার দুই যুগের শাসনেই সে যা করেছে তা আর কেউ তার আগে অথবা পরে আর তেমনটা দেখতে পারেনি কোনো আব্বাসীয় শাসক। ইতিহাসবিদেরা বলে থাকে যে হয়তো আব্বাসীয় খেলাফত থেমে যেত এক শতাব্দী পরেই যদি না খলিফা হারুনুর রশিদ ক্ষমতায় আরোহন করতো। নবম শতাব্দী থেকে ফাতিমিদ, জেনগীদ, আয়ুবিদ সহ বিভিন্ন সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে যারা কিনা স্বাধীনভাবেই নিজেদের শাসনকার্য চালাতে থাকে কিন্তু তারা আব্বাসীয় খিলাফতকেই তাদের প্রধান মনে করতো যেকারণে আব্বাসীয়দের বিরুদ্ধে কোনোপ্রকার বিদ্রোহ দেখায়নি। ইতিহাসবিদেরা এটাও বলে যে জেনগিদ অথবা ফাতিমিদদের হয়তো একদশকও লাগতোনা আব্বাসীয়দের উৎখাত করতে কিন্তু কোনোকারণে তারা বেশ সংযত ছিল (জেনগিদ এবং ফাতিমিদদের ভেতরে যদিও ছিল সঙ্ঘর্ষ, সেটা শুধু শিয়া সুন্নি বিষয়)
চমৎকার একটা আইডিয়া ধরাইয়া দিছেন, মামা। শীত চলে আসছে। পরবর্তী মিলনমেলায় না হলেও এরপরেরবার মাঠা ঢালাঢালি হতেই পারে ! আইডিয়া দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, মামা।